শুধু দৈহিক স্যবাস্থ ভাল হলেই কেউ সুখী হয় না, তাকে মানসিকভাবে এবং সামজিকভাবে ও স্বাস্থ্ন হতে হবে। যাই হোক একটা ভাল খবর হচ্ছে ,
থাইল্যান্ড সিঙ্গাপুর ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশী রোগীদের স্বল্প খরচে স্বাস্থ্য সেবা দেবে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন হাসপাতাল। বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে দেশটি স্বল্প খরচে উন্নত সেবা দেবে।
বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে হোটেল সোনারগাঁওয়ে তিন দিনের রবি এক্সপো মালয়েশিয়া ২০১২ প্রদর্শনী মেলার আয়োজন করে ঢাকাস্থ মালয়েশিয়া দূতাবাস।
বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তিনদিনের ওই মেলা ঘুরে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মতে, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছুটে যান। কিন্তু তারা ওই সব দেশে অধিক খরচে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেন। এতে করে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার বন্ধুত্ব আরো নিবিড় করতে সে দেশের শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো স্বল্প খরচে উন্নত মানের চিকিৎসা দেবে বাংলাদেশী রোগীদের।
তারা আরো বলেন, মালয়েশিয়া বর্তমানে চিকিৎসা ক্ষেত্রে ইউরোপ আমেরিকার তুলনায় পিছিয়ে নেই। বরং অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে।
এ ব্যাপারে মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সানওয়ে মেডিকেল সেন্টারের মেডিকেল টেঞ্জ এন্ড কর্পোরেট কেয়ার ম্যানেজার জয়সি ইউকো লি কু বার্তা২৪ ডটনেটকে জানান, মালয়েশিয়া চিকিৎসা খাতকে ব্যবসা হিসাবে না দেখে সেবার খাত হিসেবে দেখে থাকে। তাই আমরা অন্যান্য দেশের তুলনায় স্বল্প খরচে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকি। তারই ধারাবাহিকতায় সানওয়ে হাসপাতালটি উন্নত সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, উন্নত সেবার সঙ্গে ভালোবাসার সমন্বয় ঘটিয়ে হাসপাতালটি মালয়েশিয়ার শীর্ষ হাসপাতাল হিসাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে রয়েছে ৪০ জন মেডিকেল স্পেশালিস্ট, এক হাজার মেডিকেল প্রোসিডিউরস, আটটি আন্তর্জাতিকমানের অপারেশন থিয়েটার, ৩১টি আইসিইউ সিসিইউ, এনআইসিইউ । অপরদিকে দুটি আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব।
আমেরিকা, নিউজল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের উন্নত দেশ থেকে শিক্ষা নেয়া অভিজ্ঞ ১৫০ জন ডাক্তার, ৪৫০ জন অভিজ্ঞ নার্স। ৩৫০ বেড এবং চার ফ্লোরে বিলাসবহুল স্যুট। তিনটি ডায়ালোসিস মেশিনে ২০ জন হেমোডায়ালাইসিস কাজ করেন। ২৪ ঘন্টা রেডিওলোজি, ডায়াগনোস্টিক এন্ড ল্যাবরেটরি, ব্লাড ব্যাংক, ফার্সেসিসহ দুর্ঘটনা জনিত সকল সেবা দেয়ার ব্যবস্থা। এছাড়া ৭০০ গাড়ি পার্কিং এর সুবিধা রয়েছে ওই হাসপাতালে।
ইউকো লি কু জানান, বর্তমানে হাসপাতালটিতে কম খরচে এনেসথিউলোজি, এডিকশন থেরাপি, কার্ডিওলজি, চেস্ট ফিজিশিয়ান, ক্লিনিক্যাল সাইকোলোজি, ডেন্টাল সেন্টার, অর্থপেডিক, ডারমেটোলজি, এন্ডোক্রিনোলজি, ইএনটি, গেস্ট্রোএনট্রোলজি।
আই সেন্টার
অপথালমোলজি, অর্থোপটিকস
জেনারেল সার্জারি
কলোরেকটাল, হেপাটোবিলিয়ারি এন্ড পেনক্রিয়েটিক।
হ্যান্ড এন্ড মাইক্রো সার্জারি, ইন্টারনাল মেডিসিন, মেক্সিলোফেসিয়াল এন্ড ফেসিয়াল রিকস্ট্রাকটিভ সার্জারি, মেডিকেল অনকোলজি, নেফরোলজি, নিউরোলজি, নিউরোসার্জারি, অবসট্রাক্টিস এন্ড গাইনোকলজি, অর্থোপেডিক।
পেডিয়াট্রিক্স
কার্ডিওলজি, ডেভেলপমেন্টাল, নিওনেটলজি, নিউরোলজি।
পেইন ম্যানেজমেন্ট, প্লাস্টিক এন্ড রিকন্সস্ট্রাকটিভ, রিহেভিলিটেশন মেডিসিন, ইউরোলজি, ভাসকুলার সার্জারি সহ উন্নত মানের সকল চিকিৎসা দিচ্ছে।
এছাড়া স্বাস্থ্য সেবাকে সহজতর করতে ১৬টি আলাদা আলাদা বিভাগে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, হাসপাতালটির পাশে কয়েক একর জায়গা জুড়ে করা হয়েছে থিম পার্ক, হোটেল। রোগীদের সেবাকে সহজতর করতে দেয়া হয়ে থাকে ফ্রি ট্রা্ন্সপোর্ট সুবিধা। আমরা বাংলাদেশকে প্রিয় বন্ধু হিসাবে দেখি তাই বাংলাদেশের সাধারণ মানুষদের চিকিৎসা খরচ কম দিতে আমরা বিভিন্ন ছাড়ের ব্যবস্থা করেছি। শুধু আমরা নয় মালয়েশিয়ার অনেক হাসপাতাল বাংলাদেশীদের উন্নত চিকিৎসা দিতে সর্বদা প্রস্তুত।
বাংলাদেশে মালয়েশীয় দূতাবাস আয়োজনে রবির সহযোগিতায় ও টিউন এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস (টিমস্) এর ব্যবস্থ্যাপনায় মালয়েশিয়ার পণ্য, সেবা প্রতিষ্ঠান সহ বাংলাদেশের ৪৫ টি প্রতিষ্ঠান এতে অংশ গ্রহণ করে। তিনদিনের এই মেলা শনিবার শেষ হয়েছে।
বার্তা২৪ ডটনেট/এমসি/জাই