About us    Contact us Find us on:    Facebook Twitter YouTube

রোগ ব্যাধি

01-11-2013 রোগ ব্যাধি

আর্সেনিকজনিত সমস্যা

 

আর্সেনিক একটি মৌলিক পদার্থ। এর ধাতব এবং অধাতব উভয় বৈশিষ্ট্যই বিদ্যমান। একারণে আনের্সনিককে অপধাতু (Metalloid) বলা হয়। বিভিন্ন খনিজ, বিশেষ করে আগ্নেয়শিলা, আকরিক, লোহা, তামা, টিন ইত্যাদির সাথে আর্সেনিক বিদ্যমান। প্রকৃতিতে জৈব থেকে অজৈব আর্সেনিকই মানুষের জন্য বেশি ক্ষতিকর।

ভূ-গর্ভস্থ পানিতে যে- আর্সেনিক থাকে সেটি হলো অজৈব আর্সেনিক। দীর্ঘদিন যাবৎ এই আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করলে দেখা দেয় নানাবিধ ¯^v¯’¨ সমস্যা। বিশ্ব ¯^v¯’¨ সংস্থার ও বাংলাদেশ সরকারের হিসাব মতে, নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের গ্রহণীয় মাত্রা আমাদের দেশের জন্য ০.০৫ মি: গ্রাম/লিটার। তবে ইউরোপীয় বহু দেশে ও জাপানসহ আরো কিছু উন্নত দেশে এই গ্রহনীয় মাত্রা হলো ০.০১ মি: গ্রাম/লিটার। নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা ০ থেকে ০.০৫ মি: গ্রাম/লিটার পর্যন্ত হলে আমরা সাধারণত সেটিকে নিরাপদ মনে করি। মাঠকর্মীগণ এমন নলকূপের মুখে সবুজ রং লাগিয়ে খাবারযোগ্য বলে ঘোষণা দেয়; আর, কোনো নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা ০.০৫ মি: গ্রাম/লিটারের অধিক অঞ্চলেই সেটিকে লাল রঙে wPwýZ করে বুঝানো হয় যে, নলকূপের পানি বেশিমাত্রাই আর্সেনিক দূষণযুক্ত এবং উক্ত পানি পান করা Rb¯^v‡¯’¨i জন্য ûgwK¯^iƒc| বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার ভিতর ৬০ টি জেলায় বসবাসরত প্রায় ৫ কোটি লোক কমবেশি আর্সেনিক দূষণে আক্রান্ত। তবে সর্বাপেক্ষা বেশি দূষণযুক্ত হলো চাঁদপুর জেলা। এ-জেলার মতলব থানার আইসিডিডিআর,বি-এর গবেষণাধীন এলাকার ১৪২ টি গ্রামে আর্সেনিকজনিত একটি গভেষণা কার্যক্রম চালানোর সময় দেখা গেছে, অত্র এলাকায় ৬৫% নলকূপের পানিতে বিপদজনক মাত্রায় আর্সেনিক বিদ্যমান এবং পাঁচ বছরের চেয়ে বেশি বয়সের ১ লাখ ৬৬ হাজার লোকের মধ্যে এক জরিপে প্রায় ৫০৪ ব্যকিব্‌ত ইতোমধ্যে আর্সেনিক দূষণে আক্রান্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে। এ-তথ্য থেকে বাংলাদেশ আর্সেনিকের ভয়াবহতা সহজে অনুমেয়।

 

আর্সেনিকজনিত ¯^v¯’¨ সমস্যা

দীর্ঘদিন যাবত আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করার ফলে ধীরে ধীরে মানুষ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত সর্বনিম্ন ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ২০ বছর পর্যন্ত আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করলে মানুষের শরীরে এর বিষক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এটি নির্ভর করে ব্যক্তিবিশেষের পুষ্টিগত অবস্থা, খাবার পানিতে কী পরিমাণ আর্সেনিক আছে এবং কতদিন যাবত এই দূষণযুক্ত পানি পান করছেন তার ওপর।

আর্সেনিকজনিত ¯^v¯’¨ সমস্যার মধ্যে উলেব্লখযোগ্য হলো ত্বক, বিশেষ করে বুকে ও পিঠে ছিটছিটে কালো দাগ ((Melanisis) হওয়া, হাত ও পায়ের তালু শক্ত খসখসে হওয়া, এমনকি ছোট ছোট আঁচিলের মত গুটি (Keratosis) হওয়া। ক্ষেত্রবিশেষে আক্রান্ত ব্যক্তির চোখ লাল হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেকে খুব দূর্বল মনে করেন। গবেষণায় দেখা গেছে, আক্রান্ত ব্যক্তির দীর্ঘস্থায়ী কাশি, উচ্চ রক্তচাপ, বহুমুত্রসহ নানাবিধ জটিলতায় আক্রান্ত হতে পারেন, এমনকি আর্সেনিকে আক্রান্ত গর্ভবতী মায়ের অনাকাঙ্খিত পর্ভপাতের ঝুঁকি থেকে যায় এবং জন্ম নেওয়া শিশুটির জটিল এবং দূরারোগ্য রোগ হতে পারে। ত্বকের ক্যান্সার ছাড়াও ফুসফুস, মুত্রনালী, মুত্রথলী, এমনকি যকৃতের ক্যান্সার হতে পারে।

প্রতিরোধ ও প্রতিকার

আর্সেনিকজনিত বিষক্রিয়া থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রথম এবং প্রধান করণীয় হলো আর্সেনিকমুক্ত পানি পান করা এবং টাটকা শাক-সব্জি, ফলমূল আবেং আমিষজাতীয় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। নিম্নেবর্ণিত কয়েকটি উৎস থেকে আমরা আর্সেনিকমুক্ত পানি পেতে পারি:

 

১।       আর্সেনিকমুক্ত সবুজ নলকূপের পানি: বাড়িতে যদি কোনো meyRwPwýZ বা আর্সেনিকমুক্ত নলকূপ থাকে, তবে আমরা পান করা বা রান্নার কাজে সে-পানি ব্যবহার করতে পারে। বাড়িতে না থাকলেও যদি নিকটবর্তী বা পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশীর  কোনো সবুজ নলকূপ থাকে, তবে তেক্ষেত্রে সেই পানিও ব্যবহারের জন্য সংগ্রহ করা যেতে পারে।

২।       নদ-নদী, পুকুর বা জলাশয়ের পানি ফুটিয়ে পান করা: বাড়িতে বা পার্শ্ববর্তী কোনো স্থানে যদি কোন সবুজ নলকূপ না থাকে কিন্তু নিকটবর্তী যদি কোন নদী, বড় পুকুর বা জলাশয় থাকে,  তাহলে আমরা সেই পানি ফুটিয়ে খাবার বা রান্নার কাজে ব্যবহার করতে পারি। সাধারণত নদী বা পুকুরের পানি আর্সেনিকমুক্ত। পুকুর বা জলাশয়ের ক্ষেত্রে একটু দৃষ্টি রাখতে হবে যেন কোনো প্রকার পচনশীল বস্তু না থাকে এই বাইরে থেকে  কোনো প্রকার  নালা-নর্দমা থেকে ময়লা পানি পুকুরে প্রবেশ করতে না পারে। যেসব পুকুরে সার প্রয়োগে  মাছ চাষ করা হয় কিংবা কাপড় ধোঁয়া বা গোছল করা হয় সেসব পুকুরের পানি ব্যবহার করা যাবে না। নদী বা সংরক্ষিত পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করে প্রথমে এক টুকরো কাপড়ের সাহায্যে ছেঁকে নিতে হবে। এতে করে প্রাথমিকভাবে ময়লা আবর্জনা থাকলে সেটা দূর হয়ে যাবে। তারপর পানিটুকু একটা পাত্রে ফুটাতে হবে। পানি ফোটা শুরু হলে তখন থেকে আরো ৩০ মিনিট ফুটাতে থাকুন। অতঃপর পানিকে একটি কলসীতে সংগ্রহ করে খাওয়া ও রান্নার কাজে ব্যবহার করা যায়। পানি একটু ঘোলাটে হলে এক টুকরো ফিটকিরি এক টুকরো কাপড়ে বেঁধে নেড়ে নিতে পারি। তাহলে তলানী হিসিবে ময়লা কলসীর নিচে জমা হবে। সেক্ষেত্রে শুধু কলসের উপরিভাগের পানিটুকু ব্যবহার এবং নিচের অংশ পরিত্যাগ করতে হবে।

 

৩।      পুকুর বা নদীর পাড়ে বিশেষভাবে নির্মিত বালুর ফিল্টার (Pond or River Sand Filter) : এই পদ্ধতিতে নদী বা উপরোল্লিখিত সংরক্ষিত পুকুর থেকে পানি সরাসরি ফিল্টারে নেওয়া হয়। এই বিশেষ ফিল্টারটি ৫টি †P¤^viwewkó| প্রথম †h-‡P¤^v‡i পানি নেওয়া হয় সেটির ভিতর মাঝারি এবং ছোট ছোট সাইজের ইটের টুকরো থাকে, যাতে করে প্রাথমিক ময়লা ও আবর্জনা ফিল্টার হয়ে যায়। ফলে আরো ময়লা দূরীভূত হয়। তৃতীয় †P¤^v‡ii উপরিভাগে অসংখ্য ছিদ্রযুক্ত একটা পাটাতন থাকে। পানি দ্বিতীয় †P¤^vi থেকে ৩য় †P¤^v‡i ছিদ্রযুক্ত পাটাতন দিয়ে ছাঁকুনি হয়ে তৃতীয় †P¤^v‡ii নিচে পতিত হয়। তৃতীয় †P¤^vi থেকে পানি চতুর্থ †P¤^v‡i| চতুর্থ †P¤^v‡i আরো ছোট ছোট ইটের টুকরোর ভিতর দিয়ে পানি আসে পঞ্চম †P¤^v‡i| পঞ্চম †P¤^viwU সবচেয়ে বড়। পঞ্চম †P¤^v‡ii সবচেয়ে নিচে থাকে আস্ত ইটের স্তর। তার উপরিভাগে মাঝারি ছোট সাইজের ইটের স্তর। তার উপরিভাগে মোটা বালু (সিলেট স্যান্ড) এবং  সর্ব্বোচ্চ উপরিভাবে থাকে চিকন বালুর স্তর। পঞ্চম †P¤^v‡ii সঙ্গে দুটি পানি সংগ্রহের জন্য ট্যাপ লাগানো হয় এবং সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করা হয়।

আইসিডিডিআর,বি এবং ব্র্যাক-এর যৌথ উদ্যোগে মতলবে গবেষণাভুক্ত এলাকায় এমন ১৮ টি বালুর ফিল্টার তৈরি করা হয়েছে। এমন একটি বালুর ফিল্টারের নির্মাণ ব্যয় ৩৫,০০০.০০ টাকা এবং একটি গ্রামের জন্য প্রায় ১০০ টি পরিবার এ-থেকে সারা বছর খাবার ও রান্নার পানি সংগ্রহ করতে পারে। †P¤^v‡ii কাঁচামাল ইট এবং বালু মাঝে মাঝে পরিষ্কার করলে এটি দীর্ঘদিন ব্যবহারের উপযোগী থাকে। এই হিসেবে একটি বালুর ফিল্টার রক্ষণাবেক্ষণে বার্ষিক খরচ মাত্র ৪০০.০০ টাকা। এই পদ্ধতিটি কার্যকর করতে হলে ব্যক্তিগত উদ্যোগের চেয়ে প্রয়োজন সমাজের mgwš^Z উদ্যোগ।

 

৪।       বৃষ্টির পানি: বৃষ্টির পানি প্রকৃতির দান এবং আর্সেনিকমুক্ত। আমরা সম্পূর্ণ  নির্ভয়ে তা পান করতে পারি। বর্ষা মৌসুমে আমরা প্রায় ৪/৫ মাস অতি সহজেই আমাদের পানির প্রয়োজন এই উৎস থেকে মেটাতে পারি। বৃষ্টির শুরুর ৫ মিনিট পর থেকে আমরা আমাদের ঘরের টিনের চাল থেকে এ-পানি সংগ্রহ করতে পারে। টিনের চাল না থাকলে এক টুকরো বড় কাপড় চারটি লাঠির সঙ্গে টানিয়ে মাঝখানে একটু ভারী ইটের টুকরো রেখে পানি ঠিক নির্দিষ্ট স্থানে পড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নির্দিষ্ট স্থানে একটি পরিষ্কার বড় পাত্র রেখে আমরা প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহ করতে পারি।

 

৫।      বৃষ্টির পানি সংরক্ষণাগার (Rainwater Harvester): বর্ষাকালে আমরা বৃষ্টির পানি কোনো বড় সংরক্ষণাগারে জমিয়ে রেখে শুকনো মৌসুমে ব্যবহার করতে পারে। এক্ষত্রে টিনের চালের কিনারা বরাবর একটি টুমা লাগিয়ে একটি সংযোগের সাহায্যে পানি প্রথমে সংরক্ষণাগারে নিতে হবে। সাধারণত যে ছিদ্র দিয়ে সংরক্ষণাগারে পানি জমানো হয় সেটি বৃষ্টি শুরুর প্রথম ৫ মিনিট বন্ধ রেখে তারপর থেকে পানি জমানো হয়, কারণ ময়লা আবর্জনাযুক্ত পানি রাখলে পানি দুর্গন্ধযুক্ত হবে এবং তা পরবর্তী কালে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। যে-টিনের চাল থেকে পানি সংগ্রহ করতে হবে সেটির ওপর যেন কোনো গাছপালা লাতাপাতা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মতলবে আইসিডিডিআর,বি গবেষণাভুক্ত এলাকায় প্রায় ৬০টি সিমেন্ট দিয়ে বৃষ্টির পানি সংরক্ষাণাগার তৈরি করা হয়েছে। একটি ৩২০০ লিটার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন সংরক্ষাণাগার তৈরির নির্মাণ ব্যয় প্রায় ১০,০০০.০০ টাকা। এই পদ্ধতিটি একটি পরিবার-ভিত্তিক ব্যবস্থা এবং ৪/৫ জন সদস্যবিশিষ্ট কোনো পরিবার প্রায় ৫ মাসের পানির চাহিদা এর মাধ্যমে মেটাতে সক্ষম।

 

৬।      তিন কলসিবিশিষ্ট পদ্ধতি: এই পদ্ধতির সাহায্যে আর্সেনিকযুক্ত পানিকে আর্সেনিকমুক্ত করা যায়। এই পদ্ধতিতে চারটি মাটির কলস একটির ওপর আরেকটি কোনো স্ট্যান্ডের সাহায্যে রাখা হয়। ওপরের তিনটি কলসী ছিদ্রযুক্ত। সবচেয়ে ওপরের কলসীতে থাকে ইটের কলা এবং সিলেটের মোটা বালি। দ্বিতীয় কলসীতে থাকে চিকন বালি, সিলেটের মোটা বালি এবং লোহার গুড়ার মিশ্রণ, তৃতীয় কলসীতে থাকে শুধু কাঠ কয়লা। আর্সেনিকযুক্ত পানি প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় কলসীর মাধ্যমে ফিল্টার হয়ে সবচেয়ে নিচের কলসীতে আর্সেনিকযুক্ত  অবস্থায় ফোঁটায় ফোঁটায় জমা হয়। পদ্ধতিটি পরিবার-পরিকল্পনা এবং এক কালীন নির্মাণ খরচ প্রায় ৫০০.০০ টাকা এবং বাৎসরিক রক্ষণাবেক্ষণ খরচ খুব কম।

 

৭।      এ্যালকান (Alcan) ফিল্টার: এই পদ্ধতির সাহায্যেও আর্সেনিকযুক্ত পানিকে আর্সেনিমুক্ত করা হয়। এটি ওপর থেকে নিচের দিকে সাজানো ৩ প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট স্টিলো তৈরি একটি পাত্র বিশেষ। ওপর থেকে নিচের দিকে প্রথম প্রকোষ্ঠটি ফাঁকা যেখানে আর্সেনিকযুক্ত পানি ঢালা হয়। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রকোষ্ঠে ৩ কেজি পরিমাণে মোট ৬ কেজি এ্যাকটিভটেড এ্যালুমিনাম থাকে। প্রথম প্রকোষ্ঠ থেকে পানি দ্বিতীয়  এবং তৃতীয় প্রকোষ্ঠের মাধ্যমে ফিল্টার হয়ে আর্সেনিকমুক্ত হয় এবং সবচেয়ে নিচের (তৃতীয়) প্রকোষ্ঠের নিচের দিকে একটি ট্যাপ লাগিয়ে পানি সংগ্রহ করা হয়। এই পদ্ধতির নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৩০০০.০০ টাকা এবং দুবছর

অন্তর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ৭০০.০০ টাকা। প্রায় ১১,০০০ লিটার পানি ফিল্টার করার পর উপাদান এ্যালুমিনা পরিবর্তন করা হয় এবং নতুন করে ৬ কেজি এ্যালুমিনা যোগ করা হয়।

ব্যাপকভাবে আর্সেনিকযুক্ত নলকূপের পানি ব্যবহার করায় বাংলাদেশের জনগণ পৃথিবীর সবচাইতে বড় গণবিষক্রিয়ায় সম্মুখীন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ-অবস্থার উত্তরণ ঘটানো সম্ভব।

 

10-10-2013 রোগ ব্যাধি

টক্সিক শক সিনড্রোম

 

টক্সিক শক সিনড্রোম একটি মারাত্মক রোগ যা বেশ কিছু ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশনের  ফলে হয়। যেমন-  স্ট্রেপটোকক্কাস পায়োজেন, স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস ইত্যাদি। এই রোগটি খুব  কম হতে দেখা গেলেও এতে মৃত্যুর ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। সাধারণত মাসিক চলাকালীন অবস্থায় টেম্পন ব্যবহার কারী মেয়েদের এই রোগ বেশি হতে দেখা যায়। এর প্রকৃত কারণ জানা না গেলেও ধারণা করা হয় যে, মহিলাদের যোনীপথে থাকা জীবাণু এই পিরিয়ডের সময় এবং রক্তমাখা ট্যাম্পুনে অধিক হারে বৃদ্ধি পায় ও রোগ সৃষ্টি করে, যদিও এই রোগে আক্রান্ত মহিলাদের এক তৃতিয়াংশের যোনীপথে ঐ দুটি জীবাণুর কোনটিই পাওয়া যায় না। এ ছাড়াও কোন কোন সময় অপারেশনের পরবর্তিতে বা সন্তান প্রসবের পর মহিলাদের এমনকি কোন কোন পুরুষের যাদের চামড়ায় সট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস ইনফেকশন আছে, তাদের মধ্যেও এই ট্রক্সিক শক সিনড্রোম হতে দেখা গেছে।

 

রোগের লক্ষণসমুহ :

টি. এস. এস রোগে নিম্নোক্ত লক্ষণ দেখা যেতে পারে-

§        জ্বর

§        বমি

§        পাতলা পায়খানা

§        চামড়ায় লালচে দাগ

§        হাত ও পায়ের তালুতে চামড়া ওঠা

§        মাথা ব্যাথা

§        গা ও পা ব্যাথা

§        চোখ লাল হওয়া

§        গলা ব্যাথা

§        রক্ত চাপ কমে যাওয়া

§        অজ্ঞান হওয়া

এ ছাড়াও হাড় জোড়ায় ব্যাথা. আলোতে তাকাতে না পারা ইত্যাদি লক্ষন থাকতে পারে।

 

যে কারণে রোগ হয় :

স্ট্যাফাইলোকক্কাস আমাদের দেহে চামড়ায়, নাকে স্বাভাবিক ভাবেই অবস্থান করে, কোন রোগ তৈরী করে না। কিন্তু যদি কোনভাবে তা চামড়া ভেদ করে রক্তে মিশে যায়, সে ক্ষেত্রে নানা ধরনের জটির রোগ তৈরী করতে পারে। আর টক্সিক শক সিনড্রোম- মূলত ব্যাকটেরিয়া নির্গত টক্সিন বা বিষ দ্বারা হয়- সরাসরি ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির জন্যই হয় না। তাই টি. এস. এস হতে গেলে জীবাণু গুলিকে কয়েকগুন বৃদ্ধি পতে হয় এবং অনেক পরিমাণে নির্গত হতে হয়। আর এ দুটিই সুবিধা হয় যখন মহিলাদের মাসিক চলতে থাকে (এ সময় যোনী পথের অম্লত্ব কমে যায়) এবং তারা দীর্ঘক্ষণ  ট্যাম্পন পরে থাকে (বিশেষত্ব সুপার এবজরবেবল ভ্যারাইটির প্যাড) এবং যোনী পথের চামড়া যদি হালকা ভাবে ছিড়ে যায় বা ক্ষত হয়। এ সবের ফলে জীবাণু ও বিষ রক্তে মিশে যায় এবং  à¦Ÿà¦¿. এস. সি তৈরী করে।

চিকিৎসা :

টক্সিক শক সিনড্রোম হলে জরুরীভাবে হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। রক্তচাপ কমে গেলে স্যালাইন নিতে হবে। এন্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন আকারে গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়াও এ রোগে কিডনী ফেইলর হতে পারে বলে সম্ভাব্য সকল প্রকার প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

রোগের ঝুঁকি কমাবার কৌশল :

টেম্পন ব্যবহার করা ছাড়া এ রোগ হবার ঝুঁকি অনেক কম। তাই তা ব্যবহার করা বর্জন করলে সবচেয়ে নিরাপদ। তবে ব্যবহার করতে চাইলে যে যে বিষয় খেয়াল রাখতে হতে, তা হল :

§        নিয়মিত (৪-৫ ঘন্টা পর পর) তা পরিবর্তন করা।

§        উচ্চ সেশন ক্ষমতা সম্পন্ন টেম্পন ব্যবহার না করা।

§        বার বার হাত না লাগানো

§        ব্যবহারের আগে ও পরে বা ধরার পর সব সময় সাবান দিয়ে হাত ভাল করে ধুতে হবে।

§        আলতোভাবে ভেতরে ঢোকানো বা বের করা যাতে ভেতরের চামড়ায় ক্ষত না হয়।

§        রাতে ঘুমাবার সময় সাধারন প্যাড ব্যবহার করা।

 

যা যা মনে রাখতে হবে:

১. টক্সিক শক সিনড্রোম খুব কম হলেও তা অতি মারাত্মক ও জীবনের জন্য হুমকি

২। বিশেষ প্রকারের ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশনের কারণে হয়।

৩। মাসিক চলাকালীন যারা যোনীপথের ভেতরে ট্যাম্পন ব্যবহার করে তাদেরই বেশিরবাগ ক্ষেত্রে এই রোগ হতে দেখা যায়।

৪। স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি, পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা ও মাসিকের সময় সাধারণ স্যানিটারী প্যাড ব্যবহার করলে এ রোগ থেকে অনেকাংশে নিরাপদ থাকা যায়।

 

 

10-10-2013 রোগ ব্যাধি

কার্ডিওপালমোনারী রিসাসিটেশন

কার্ডিওপালমোনারী রিসাসিটেশন (CPR) হলো মুখে মুখ লাগিয়ে বাতাস দেওয়া (ফুঁ দেওয়া) ও বুকে চাপ দেওয়ার সমন্বয় যা হৃদপিন্ড বন্ধ হয়ে যাওয়া লোককে অক্সিজেন প্রদান করে এবং কৃত্রিমভাবে হৃদপিন্ড ও রক্ত সঞ্চালন পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে বাঁচিয়ে তোলার প্রাথমিক চিকিৎসা।

হুদপিন্ড অক্সিজেনের অভাব থাকলেই হার্ট এটাক হয়। হাট অ্যাটাক হৃদপিন্ডের স্পন্দন ও রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা বন্ধ করে দেয়। হৃদপিন্ড রক্ত পাম্প করা বন্ধ করে দিলে তাকে কার্ডিয়াক এরেষ্ট বলে। এতে মস্তিস্কে অক্সিজেনের অভাব হলে হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যায় এবং শ্বাস নেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। চিকিৎসা না করালে রোগী মারা যাবে।

কার্ডিয়াক এরেষ্টের কারণ:

  • হৃদরোগ
  • পানিতে ডোবা
  • শ্বাসরোধ
  • বিষাক্ত গ্যাস
  • মস্তিস্কে আঘাত
  • মাত্রাতিরিক্ত ঔষধ সেবন
  • বৈদ্যুতিক শক

CPR জীবন বাঁচানোর প্রাথমিক চিকিৎসা:

CPR জীবন বাঁচানোর প্রাথমিক চিকিৎসা যা পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় যদি হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে শুরু করা হয়। CPR না দিলে অক্সিজেনের অভাবে ৩-৪ মিনিটের মধ্যে মস্তিস্কে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কিন্তু CPR জীবন বাঁচানোর নিশ্চয়তা দেয় না। শুধু জীবন বাঁচানোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

মৌলিক ধাপমসমূহ:

CPR মৌলিক ধাপসমূহ যা বয়স্ক, শিশু ও নবজাতক সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এটা ২০০৬ সালে প্রণিত নির্দেশনা অনুসারে তৈরী যা মনে রাখা ও অনুসরণ করা সহজ। জীবিত থাকার কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত না হলে CPR শুরু করতে হবে। অর্থাৎ যখন রোগী-

  • অজ্ঞান
  • স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নিচ্ছে না
  • নড়ছে না
  • সাড়া দিচ্ছে না।

CPR  à¦à¦° ধাপ:

১।    ঝুঁকি পরীক্ষা : সতর্কতার সাথে এগোন যাতে   à¦­à¦¾à¦² করতে গিয়ে নিজে আপনি বিপদে না পড়েন।

২।    সাড়া দেয় কিনা দেখুন: জ্ঞান আছে কিনা? হালকাভাবে স্পর্শ করুন ও রোগীর সাথে কথা বলুন, জাগানোর চেষ্টা করুন। যদি কোন সাড়া না দেয় তাহলে অন্যদের সাহায্যের জন্য ডাকুন।

৩।   শ্বাসনালী পরীক্ষা করুন : রোগীকে সরানো যাবে না। মাথা পিছনের দিকে কাত করুন। মুখ খুলে দেখুন ভিতরে কোন তরল বা বাইরের বস্তু আছে কিনা। মাথা যে কোন এক পাশে ঘুরান এবং কোন বস্তু/তরল থাকিলে তা বের করুন।

৪।   শ্বাস/প্রশ্বাস পরীক্ষা করুন : দেখুন, শুনুন এবং অনুভব করুন যে, রোগী নিঃশ্বাস নিচ্ছে কি না? যদি শ্বাস নেয় তাহলে মাথা এক পাশে কাত করে রাখুন। আর না নিলে ৬ নং ধাপে

৫।    মুখে মুখ লাগান : স্বাভাবিক ভাবে নিঃশ্বাস না নিলে রোগীকে-

§         চিত করে শোয়ান।

§         মাথা পিছনের দিকে কাত ও থুতনি উপরের দিকে টেনে শ্বাস নালী খুলুন।

§         আঙ্গুল দিয়ে নাক বন্ধ করুন।

§         রোগীর মুখের সাথে মুখ লাগান ও মুখের মধ্যে বাতাস ঢুকান (ফুঁ দিয়ে)।

§         এভাবে ২ বার বাতাস ঢুকান।

§         এ সময় রোগীর বুক উঠা-নামা করছে কিনা খেয়াল করুন।না করলে নাক ভালভাবে টাইট করে বন্ধ করুন ও মুখের সাথে মুখ ভালভাবে লাগান যাতে কোন বাতাস বের হয়ে না আসে। তারপর আবার বাতাস ঢুকান। এতেও উঠানামা না করলে আবার পরীক্ষা করে দেখুন শ্বাস নালীর ভিতর কোন প্রতিবন্ধকতা আছে কিনা?

৬। হৃদপিন্ডর সংকোচন: বুকের সংকোচন (চাপ দিয়ে) শুরু করুন-

§         বুকের নিম্ন অর্ধাংশে এক হাতে তালু রাখুন।

§         প্রথম হাতের উপর আগাআড়ি ভাবে অন্য হাত রাখুন।

§         শক্তভাবে নীচের দিকে চাপ দিন। সংকোচন হবে বুকের গভীরতার ১/৩ অংশ। ৩ বার।

§         ২ বার বাতাস প্রবেশ করান (ফু দিয়ে)

§         এভাবে ৩০ বার চাপ ও ২ বার বাতাস প্রবেশ করান। এটা একাই করা যেতে পারে অথবা দ্বিতীয় ব্যক্তির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

§         চাপ দেয়ার হার হবে ১০০ বার/মিনিট।

§         চিত করে শোয়ান।

৭।   CPR চালিয়ে যাওয়া:

বরাবর ৩০ বার চাপ তারপর ২ বার বাতাস প্রবেশ চালিয়ে যান। পেশাদার সাহায্যকারী না আসা পর্যন্ত। এতে আপনি পরিশ্রান্ত হয়ে পড়লে CPR জানা অন্য লোকের সাহায্য নিন।

 

শিশু ও নবজাতকের CPR প্রয়োগ কৌশল:

আট বছর বা তার চেয়ে কম বয়সের জন্য CPR  à¦§à¦¾à¦ªà¦¸à¦®à§à¦¹ বয়স্ক এবং বড় বাচ্চাদের মত। কিন্তু প্রয়োগ কৌশল সামান্য ভিন্ন।

১-৮ বছরের শিশু:

o       বুকে চাপ দেওয়ার জন্য শুধুমাত্র এক হাতের তালু ব্যবহার করুন।এবং বুকের  গভীরতার১/৩ অংশ পার্যন্ত সংকোচন করুন।

o       উপরে বর্ণিত CPR এর মৌলিক ধাপসমূহ অনসরণ করুন।

নবজাতক ও শিশু (১২ মাস বয়স পর্যন্ত)

o       নবজাতককে চিত করে শোয়ান।

o       মাথা পিছনের দিকে কাত বা থুতনি উপরের দিকে টানা যাবে না।

o       মুখে মুখ লাগানোর সময় আপনার মুখ  দিয়ে নবজাতকের মুখ ও নাক ঢেকে ফেলুন এবং একবার মাত্র বাতাস ঢুকান। (১বার ফুঁ দিন)

o       বুকে চাপ দেওয়ার সময় এক হাতের শুধুমাত্র দুই আঙ্গুল ব্যবহার করুন ও বুকের গভীরতার ১/৩ অংশ পর্যন্ত সংকোচন করুন।

o       উপরে বর্ণিত CPR এর মৌলিক ধাপসমূহ অনুসরণ করুন।

CPR দেওয়ার সময় রোগী আরোগ্য লাভ করলে করণীয়:

A¨v¤^y‡jÝ à¦†à¦¸à¦¾à¦°  আগেই রোগী CPR দ্বারা ভাল হতে পারে।

o       জীবিত থাকার লক্ষণ দেখা দিলে (কাশি, স্বাভাবিক শ্বাস, নড়াচড়া ইত্যাদি) রোগীকে পর্যবেক্ষণ করুন।

o       যদি রোগী স্বাভাবিকভাবে নিজেই নিঃশ্বাস নেওয়া শুরু করে তাহলে CPR দেওয়া বন্ধ করুন এবং মাথা পিছনের দিকে কাত করে রাখুন।

o       শ্বাস না নিলে এম্বুলেন্স আসার আগ পর্যন্ত্য CPR চালিয়ে যান।

o       রোগীর যদি পুনরায় শ্বাস বন্ধ হয় বা অচেতন হয়ে যায় তাহলে আবার CPR শুরু করুন এবং মেডিকেল সাহায্য না আসার আগ পর্যন্ত চালিয়ে যান। জ্ঞান থাকলে রোগীর সাথে অভয়দান মূলক কথা বলুন। জীবিত থাকার লক্ষণ নিয়ে সন্দেহ থাকলে CPR চালিয়ে যান। CPR চালু থাকাবস্থায়ই জীবিত থাকার লক্ষণগুলো পর্যবেক্ষণ করুন। কারণ হৃদস্পন্দন চালু থাকাবস্থায় CPR  দিলে তেমন কোন ক্ষতিকর দিক আছে বলে দেখা যায় নি। হৃ‌দস্পন্দন (পাল্‌স) দেখার প্রয়োজন নাই। কারণ এতে CPR  à¦¬à§à¦¯à¦¹à¦¤ হয়।

CPR বন্ধ করা:

সাধারণত CPR  à¦¨à§€à¦šà§‡à¦° যে কোন একটি কারণে বন্ধ করা হয়:

1.       রোগীর পুনরুজ্জিবীত হয় এবং নিজেই স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নেওয়া শুরু করে।

2.            মেডিকেল সাহায্য যেমন এম্বুলেন্স ও দক্ষ সাহায্যকারী  চলে আসে এবং দায়িত্ব নিয়ে নেয়।

3.            যিনি CPR দিচ্ছেন তিনি যদি ভীষণ শারীরিক ক্লান্তিতে ভোগেন।

যা মনে রাখতে হবে:

o       CPR হলে মুখে মুখ লাগিয়ে বাতাস দেওয়া   (ফুঁ দেওয়া) ও বুকে চাপ দেওয়ার সমন্বয় যা রোগীকে অক্সিজেন প্রদান করে এবং কৃত্রিম ভাবে হার্ট ও রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে।

o       CPR একটি জীবন রক্ষাকারী দক্ষতা যা প্রত্যেকের জানা থাকা উচিত।

 

 

10-10-2013 রোগ ব্যাধি

অটো ইমিউন ডিসঅর্ডার

 

যখন মানুষের শরীরের প্রতিরক্ষা কোষ গুলো ভুল করে নিজের শরীরের কোন অংশকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে এবং তাকে ধ্বংস করার জন্য আক্রমণ করে এই  বিশেষ রোগ বা অবস্থাকে বলে অটো ইমিউন ডিসঅর্ডার। বিভিন্ন ধরনের আটোইমিউন রোগের মধ্যে অন্যতম হল: ডায়াবেটিস, আই.বি.এস, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস, রিউমাটয়েট আর্থাইটিস (গেটে বাত), স্ক্লেরোডার্মা, এস.এল.ই,  à¦¸à§‹à¦°à¦¿à§Ÿà¦¾à¦¸à¦¿à¦¸ ইত্যাদি। বিজ্ঞানীরা - বিভিন্ন মাত্রার প্রায় ৮০ ধরনের অটো ইমিউন ডিসঅর্ডার চিহ্নিত করেছেন।

মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাটি কিছু বিশেষ কোষ ও রাসয়নিক বস্তুর দারুন সমন্যয়ে গঠিত যা মূলত রোগ সৃষ্টিকারী জীবানু-ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে। কিন্তু এই রোগ হলে দেহের নিজস্ব অংশ বা অংশকে শত্রু/জীবানু হিসেবে চিহ্নিত করে দেহের মারাত্মক ক্ষতি করে।

 

প্রকার:

মূলত ২ ধরনের

v     অর্গান স্পেসিফিক -মূলত ১টি অঙ্গকে আক্রমণ করে।

v     নন-অর্গান স্পেসিফিক -সমস্ত শরীরে/বিভিন্ন অঙ্গকে আক্রমণ করে।

ছোট বা বড় মোট ৮০ ধরনের অটোইমিউন রোগ আবিস্কৃত হয়েছে। তবে ছেলেদের থেকে মেয়েদের এই রোগের হার বেশী। আর বেশিরভাগই হয় মধ্যবয়সে -প্রজনন সময়ে। এতে ধারনা হয়-মহিলাদের সেক্স হরমোন এক্ষেত্রে কিছুটা দায়ী হতে পারে। সাধারণভাবে এই রোগ একে বারে নির্মূল না হলেও ঔষধ বা অন্যান্য চিকিৎসায় অনেকটা সুস্থ থাকা যায়।

 

কি কি ধরনের রোগ/সমস্যা হয়:

অটোইমিউন রোগে শরীরের প্রায় সকল অংশ আক্রান্ত হতে পারে। যেমন-

ক) ডায়াবেটিস (টাইপ-১):

অগ্নাশয় বা প্যানক্রিয়াস আক্রান্ত হয়। এ রোগে ঘন ঘন প্রস্রাব, অরিরিক্ত পিপাসা, ওজন কম ইত্যাদি ঘটে।

খ) গ্রেভস ডিসিজ:

থাইরয়েড গ্রন্থি আক্রান্ত হলে হয়। লক্ষণসমুহ হল- ওজন কমা, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পাওয়া, ডায়রিয়া, উদ্বিগ্নতা।

গ) আই.বি.এস:

২ ধরনের- আলসারেটিভ কোলাইটিস ও ক্রনস ডিসিজ। এ ক্ষেত্রে পেটে পাতলা পায়খানা, আমাশা হয়।

ঘ) মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস:

শরীরের নার্ভ বা স্নায়ুকে আক্রান্ত করে। যে অংশকে আক্রান্ত করে সে সব স্থানে অবশভাব, প্যারালাইসিস হয়,  à¦…নেক সময় দৃষ্টি ত্রুটি ঘটে।

ঙ) সোরিয়াসিস:

চামড়া মোটা, শক্ত, লাল হয় এবং চামড়ায় পাতলা আবরণ উঠে যেতে থাকে।

চ) রিউমাটয়েড আর্থাইটিস:

মূলত অস্থিসন্ধিকে আক্রমণ করে। ফলে সন্ধিগুলি লাল হয়ে ফুলে উঠে, প্রচন্ড ব্যাথা হয়। এমনকি বাকা হয়ে যায়। অনেক সময় চোখ, ফুসফুস, হার্ট        à¦“ আক্রান্ত হয়।

ছ) স্ক্লেরোডার্মা:

চামড়া ও অন্যান্য অংশকে আক্রমণ  করে, চামড়াকে শক্ত, মোটা করে, চামড়ায় ঘা হয়, সন্ধি শক্ত হয়ে উঠে।

জ) এস.এল.ই:

 à¦®à§‚লত শরীরের যোজক কলা (কানেকটিভ টিস্যু) কে আক্রমণ করে। সমস্ত শরীরের সকল অংশের  অবিচ্ছেদ্য অংশ এই যোজক কলা। তাই জ্বর, ওজন কমা, ব্যাথা, চামড়ায় লালচে দাগ, কিডনী ব্রেইন ইত্যাদিতে নানা ধরনের সমস্যা দেখা  দেয়।

 

কিভাবে হয়:

 

শরিরের টি লিম্ফোসাইট (T Lymphocyte) নামক  কোষ থাকে যা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর  আবরনে অনেক ধরনের রিসেপটর থাকে যা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াকে সনাক্ত করে তার গায়ে লেগে যায়।  à¦…ন্যদিকে যে সমস্ত টি কোষ নিজের শরীরকে শত্রু ভাবে - থাইমাস নামক অংশ সেগুলিকে নষ্ট করে দেয়। কিন্তু অটোইমিউন রোগে থাইমাস ঐ টি কোষগুলিকে নষ্ট করতে পারে না। বিভিন্ন ভাইরাস এর আক্রমণ বা হরমোনের প্রভাবে এমন হতে পারে। ফলে টি সেল শরীরের অংশকে শত্রুভাবে -বি সেলকে এন্টিবডি তৈরীতে নির্দেশ দেয়; যা তখন ঐ অংশ বা কোষকে ধ্বংশ করে। এই ধরনের এন্টিবডিকে বলে অটো এন্টিবডি।

 

রিস্ক ফ্যাক্টর/কি কি কারণ দায়ী:

এই রোগের প্রকৃত কারণ এখনও অজানা। তবে যে সব কারণ/ফ্যাক্টরকে দায়ী ভাবা হয়-

১। জেনেটিক/জিনগত সমস্যা: পারিবারিক সূত্রতা পাওয়া যায় বিধায় জিনগত কারণটিকে অন্যতম কারণ ভাবা হয়। তবে একই পরিবারের একেকজন ভিন্ন ভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে, যেমন- একজনের ডায়বেটিক, অন্যজনের রিউমেটিক আর্থাইটিস। তাই শুধুমাত্র জিনগত সমস্যা একাই এ রোগের জন্য দায়ী নয়। অবশ্যই সাথে অন্য কারণ থাকতে হবে।

২। পরিবেশগত কারণ: অনেকক্ষেত্রে পারিবারিক বা জেনেটিক কারণের সাথে পরিবেশগত কারণ মিলে এই রোগ সৃষ্টি করতে পারে।

৩। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই রোগের প্রাদূর্ভাব বেশী। প্রায় ৭৫% রোগী  মহিলা।

৪। সেক্স হরমোন: ইস্ট্রোজেন, প্রজেস্টেরন এই রোগের ক্ষেত্রে কাজ করে। কেননা মহিলাদের বাচ্চা গর্ভকালীন সময়ে, বাচ্চা জন্ম দেবার সময় বা  মেনোপজের সময় এই রোগ বেড়ে যেতে  দেখা যায়।

৫। ইনফেকশন: কিছু কিছু ভাইরাস বা জীবানুর আক্রমনে এই রোগ বেড়ে যায়।

 

রোগ নির্ণয়:

প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় খুবই  জটিল, বিশেষ করে যখন অনেক অঙ্গ একত্রে আক্রান্ত হয়। রোগের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি ভিন্ন। যেমন:

v     শারীরিক পরিক্ষা

v     রোগের ইতিহাস

v     পারিবারিক ইতিহাস

v     রক্তের পরীক্ষা-অটো এন্টিবডি

v     বায়োপসি

v     এক্সরে

v      

চিকিৎসা ব্যবস্থা:

একেবারে ভাল না হলেও রোগের ক্ষেত্রে ব্যপকতা কমানো সম্ভব চিকিৎসার মাধ্যমে:

K)     এন্টি ইনফ্লামেটরী ড্রাগ ইনফ্লামেশন (প্রদাহ) ও ব্যাথা কমায়।

L)      স্টেরয়েড -প্রদাহ কমায়

M)      ব্যাথা নাশক ঔষধ -প্যারাসিটামল, কোডেইন

N)      ইমিউনিটি কমানোর ঔষধ

O)      ফিজিক্যাল থেরাপী

P)      ঘাটতি পূরণ -যেমনঃ ইনসুলিন, থাইরক্সিন

Q)      অপারেশন -যেমনঃ  ক্রনস ডিজিজ এ বন্ধ খাদ্যনালীর অপারেশন ।

 

যা অবশ্যই মনে রাখতে হবে:

  1. যখন মানুষের শরীরের প্রতিরক্ষা ভুল করে নিজের শরীরের কোন অংশকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে এবং তাকে ধ্বংস করার জন্য আক্রমণ করে এই  বিশেষ রোগ বা অবস্থাকে বলে  à¦…টো ইমিউন ডিসঅর্ডার।
  2. বিভিন্ন মাত্রারপ্রায় ৮০ ধরনের অটো ইমিউন ডিসঅর্ডার চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।
  3. এই রোগ পুরোপুরি নিরাময় না হলেও বিভিন্ন চিকিৎসা ও নিয়ম মেনে সুস্থ থাকা সম্ভব।

 

10-10-2013 রোগ ব্যাধি

রক্তের স্বল্পতা বা এনিমিয়া

 

রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়াকে রক্ত স্বল্পতা বলা হয়। এনিমিয়ার অর্থ রক্তশূন্যতা বা রক্ত স্বল্পতা যাই বলা হোক না কেন, প্রকৃতপক্ষে এর কোনোটাই সঠিক নয়। কারণ একজন বয়স্ক সুস্থ মানুষের শরীরে মোট যে-পরিমাণ (প্রায় ৫ লিটার) রক্ত থাকে, এনিমিয়া হলে সেই রক্তের পরিমাণ কমে না, কেবল রক্তে হিমোগ্লোবিন বা লাল-কণিকার পরিমাণ কমে যায়। একজন বয়স্ক পুরম্নষের রক্তে প্রায় ১৪.৮ গ্রাম/১০০ মি.লি. এবং একজন বয়স্ক মহিলার রক্তে প্রায় ১৩.৭ গ্রাম/১০০ মি.লি. হিমোগ্লোবিন থাকে। রক্তের সেই হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়াকেই রক্ত শল্পতা বলা হয়। এর সঙ্গে রক্তের লোহিত কণিকার সংখ্যাও কমে যেতে পারে। রক্ত শল্পতা একটি অতি সাধারণ ¯^v¯’¨mgm¨v| কিন্তু যদি এর সুচিকিৎসা না-করা হয় তবে মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি হয়ে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে।

রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরিতে যে-উপাদানটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হলো লৌহ। আমাদের শরীরে প্রায় ৪.৫ গ্রাম লৌহ থাকে। তার মধ্যে ২.৫ গ্রাম থাকে হিমোগ্লোবিন এর মধ্যে আর বাকিটা থাকে বিভিন্ন টিস্যুতে। একজন সুস্থ মানুষের জন্য দৈনিক ১ মি.গ্রা. লৌহের প্রয়োজন। কারণ শরীর থেকে প্রতিদিন প্রায় ১ মি.গ্রা. লৌহ বেরিয়ে যায়। এই ১ মি.গ্রা. লৌহ পেতে আমাদের দৈনন্দিন খাবারের মধ্যে পুরম্নষদের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫ মি.গ্রা. এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ৭ মি.গ্রা লৌহ থাকা প্রয়োজন। লৌহ ছাড়াও ফলিক এসিড এবং ভিটামিন বি১২-এর অভাবেও রক্ত শল্পতা দেখা দেয়। শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হলে, শরীরের অভ্যন্তরে লোহিত কণিকা নষ্ট হয়ে, কিংবা অন্য অনেক উপায়ে  à¦°à¦•à§à¦¤ শল্পতা দেখা দিতে পারে।

কারণ:

·        আমাদের খাদ্যাভ্যাস,পুষ্টিজ্ঞানের অভাব

·        স্বাস্থ্য সম্পর্কে অসচেতনতা, কুসংস্কার

·        কৃমি সংক্রমণ,

·        মেয়েদের বেলায় মাসিকের সময় বেশি রক্ত-যাওয়া,

·        ঘনঘন গর্ভধারণ এবং প্রসবকালীন রক্তক্ষরণও এর অন্যতম কারণ। এ ছারাও

  • জন্মগত রোগ-থ্যালাসেমিয়া, সিকলসেল ডিজিজ
  • অটোইমিউন রোগ - হেমোলাইটিক এনিমিয়া
  • দীর্ঘমেয়াদী রোগ - যক্ষা, রিউমাটয়েড আর্থাইটিস
  • হরমোনের রোগ  হাইপোথাইরয়েড
  • হাড় সহ অন্যন্ন ক্যান্সার
  • আঘাত, দূর্ঘটনা ইত্যাদিতে রক্তক্ষরণ
  • বিভিন্ন ইনফেকশন
  • বিভিন্ন ঔষধ, বিষক্রিয়া

অথচ আমরা যদি স্বাস্থ্য সচেতন হই, পুষ্টিকর সুষম খাবার খাই, তাহলেই রক্ত স্বল্পতা প্রতিরোধ করতে পারি।

রক্ত স্বল্পতা উপসর্গ

আমরা প্রতিনিয়ত শ্বাসের সঙ্গে যে-অক্সিজেন নিচ্ছি তা রক্তের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়ে। রক্তের হিমোগ্লোবিন এই কাজটি করে থাকে। ¯^fveZB যাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন কম, তাদের বিভিন্ন টিস্যুতে অক্সিজেন কম পৌঁছায়। ফলে, তাদের নানাবিধ উপসর্গ দেখা দেয়।

·        খুব দুর্বলতা বোধ করা/বুক ধড়ফড়-করা

·        মাথাঘোরা ও ঝিমঝিম-করা

·        খাবারে অরূচি

·        অল্প পরিশ্রমে ক্লান্তি বোধ-করা ও বেশি মাত্রায় ঘাম-হওয়া

·        হাত-পা জ্বালাপোড়া ও ঝিমঝিম-করা

·        বসা থেকে দাঁড়ালে চোখে অন্ধকার দেখা

 

রক্ত শল্পতা লক্ষণ

·        ফ্যাকাসে চেহারা

·        চোখের নিচের পাতায় কনজাংটিভা সাদা দেখানো

·        জিহ্বা, ঠোঁট ও হাতের তালু ফ্যাকাসে দেখানো

·        নখ সাদা-হওয়া ও মাঝখানে একটু নীচু-হওয়া

·        শিশুদের ক্ষেত্রে মাথা ঘামা

·        খাদ্যে অরুচী, ব্যতিক্রম খাদ্যচাহিদা

 

রোগ নির্নয়ঃ

·        রোগের ইতিহাস, রক্তপাতের কারন, খাদ্যগ্রহনের অভ্যাস

·        শারিরিক পরীক্ষা

·        রক্ত পরীক্ষা - সিবিসি, আয়রন লেবেল, ভিটামিন বি-৬ , বি-১২, ফলিক এসিড লেবেল,

·        প্রস্রাবে রক্তের উপস্থিতি

·        অস্থিমজ্জার পরীক্ষা

·        গ্যাস্ট্রোস্কপি, কোলনোস্কপি

·        পায়খানায় রক্তের উপস্থিতি অকাল্ট ব্লাড টেস্ট

 

চিকিৎসা:

সমস্যা নির্নয় করে চিকিৎসা করতে হবে। যেমন:

পুষ্টিকর আয়রন, ফলিক এসিড, ভিটামিন যুক্ত খাদ্য গ্রহন

কৃমি সহ অন্যান্ন রক্তক্ষরন এর কারন অপসারন

প্রয়োজনে আয়রন ইনজেকশন, ভিটামিন বি-১২ ইনজেকশন

ইনফেকশনের চিকিৎসা  প্রয়োজনে এন্টিবায়োটিক

প্রয়োজনে স্প্লিনেকটোমি অপারেশন

 à¦¯à§‡à¦¸à¦¬ খাবারে লৌহ-উপাদান বেশি থাকে

·        কলিজা

·        ডিম

·        মাংস

·        বরবটি

·        মটরশুটি

·        সীমের বীচি

·        কচু শাক

·        পালং শাক

·        লাল শাক

·        পুঁই শাক

·        কলা

যা যা করবেন

রক্তক্ষরণ হয় এমন রোগ, যেমন দাঁতের মাড়ীর রোগ, অর্শ, পেপটিক আলসার থাকলে বা মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে তা সারিয়ে ফেলবেন

   পেটে কৃমি থাকলে তার জন্য চিকিৎসা নেবেন

দীর্ঘদিনের প্রদাহ/জীবাণুর সংক্রমণ থাকলে তার জন্য সঠিক চিকিৎসা নেবেন

উন্নত মানের ক্লিনিকে/হাসপাতালে সন্তান প্রসবের কাজটি সম্পন্ন করবেন

দুই সন্তানের জন্মের মাঝে ৪-৫ বছর ব্যবধান রাখবেন

যা যা করবেন না

·        ঘনঘন সন্তান এবং দুই-এর অধিক সনত্মান নেবেন না

·        কখনো হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসা নেবেন না

·        যেখানে-সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করবেন না

·        মাঠে-ঘাটে খালি পায়ে হাঁটবেন না

যা যা খাবেন

·        পুষ্টিকর সুষম খাবার খাবেন

·        যেসব খাবারে লৌহ-উপাদান বেশি আছে সেসব খাবার খাবেন। মহিলা ও শিশুদের ক্ষেত্রে এসব খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে

·

09-10-2013 রোগ ব্যাধি

এলার্জি

 

যখন কোন মানুষের শরীর কোন কোন বিশেষ বস্তুতে (এলার্জেন) অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়, তখন তাকে এলার্জি বলে। যদিও সেই বিশেষ বস্তুতে বেশিরভাগ লোকের কিছুই হয় না। এ ধরনের এলার্জির সাধারণ উদাহরণ হলো- চুলকানি, একজিমা ও হাপানি, খাদ্যে এলার্জি, হে-ফিভার ইত্যাদি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ মেডিকেল চিকিসায় বা ঔষধে এলার্জির সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়া যায়, তবে চরম মাত্রায় এলার্জির থেকে এনাফাইলেকসিস হতে পারে। সে জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। আনুমানিক হিসাবে প্রতি ৪ জনে  ১ জন কোন না কোন বস্তুতে এলার্জিতে ভুগে এবং এদের মধ্যে অর্ধেক সংক্ষকই শিশু।  এলার্জির হলে খুব সামান্য হাঁচি, সর্দি বা গা চুলকানি হতে শুরু করে চরম বিপদজনক এনাফাইলেকসিস হয়ে রোগী মারাও যেতে পারে। তাই অনেক সময় জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

লক্ষণসমূহ:

একেক জনের ক্ষেত্রে লক্ষণ একেক রকম। আবার এলার্জেন বা বস্তুর ভিন্নতায় লক্ষণ বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমন-   হাঁচি, সর্দি, চোখ লালবর্ন হয়, চুলকায়, কাশি, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যাথা, চামড়ায় লালচে দাগ, চুলকানি, পেটে ব্যাথা, বমি ও পাতলা পায়খানা।

 

 

কোন কোন বস্তুতে এলার্জি হয়?

যে বস্তু কারও শরীরে এলার্জির সৃষ্টি করে তাকে এলার্জেন বলে। তবে তাদের মধ্যে একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো-সবগুলোতেই প্রোটিন একটি অংশ থাকে। আবার অনেক এলার্জেন প্রোটিন না হলেও তা শরীরের ভেতরে প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয়ে এলার্জেন রূপে কাজ করে। সাধাণভাবে পরিচিত এলার্জেন হল-

ক) খাদ্য: ডিম, মাছ, দুধ, বাদাম, বেগুন, সয়া জাতীয় খাদ্য

খ) উদ্ভিদ জাতীয়: ঘাস বা ফুলের রেনু।

গ) ঔষধ: এসপিরিন পেনিসিলিন, কোট্রাইমক্সাজল বা বিভিন্ন হার্বাল ঔষধ।

ঘ) পোকা মাকড়: কীট পতঙ্গ, মৌমাছির হুল, পিপড়া।

ঙ) পশু: কুকুর, বিড়াল, খরগোশ ইত্যাদির লোম, চামড়া।

চ) রাসয়নিক দ্রব্য: কলকারখানা বা ঘরবাড়িতে ব্যবহার্য্য বিভিন্ন রাসয়নিক দ্রব্য।

এলার্জির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা:

এলার্জি হল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা  কর্তৃক কোন বস্তুতে শত্রু গন্য করা ফলে সৃষ্ট শারিরিক প্রক্রিয়ার বাহ্যিকরূপ। যখন কোন এলার্জেন শরীরে প্রবেশ করে, তখন শরীর তাকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে যা এলার্জেনকে আক্রমণ করে, তখন শরীর  তার বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরী করে যা এলার্জেনকে আক্রমণ করে। ইমিউনোগ্লাবিউলিন ই (IGE) ধরনের এন্টিবডি এই ধরনের এলার্জেক রিএকশনের জন্য দায়ী।

 

 

     যখন ইমিউনোগ্লোবিউলিন ই কোন এলার্জেনকে চিহ্নিত করে, তখন সে এক ধরনের রাসয়নিক বস্তু নিঃসরন করে যা মাস্ট সেলের মধ্যে থাকে। এই রাসয়নিক বস্তু মূলত জীবানুকে ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়। এদের মধ্যে হিস্টামিন অন্যতম। অল্প পরিমাণ হিস্টামিন নিঃসৃত হলে তা শরীরে চুলকানি. চামড়ায় লালচে দাগ তৈরী করে, ফুলে যায়। কিন্তু বেশি পরিমাণে হলে তা রক্তনালীকে প্রসারিত করে এবং সেই অংশটতি পানি জমে ফুলে যায়।

     এই নিষ্ক্রিয় বস্তু (এলার্জেন) এর বিরুদ্ধে শরীরের বিশেষ প্রতিক্রিয়াটি জিনগত সমস্যার কারণে হয় এবং যাদের এই জেনেটিক সমস্যা আছে- তাদেরতে এটোপি বলা হয়। আর যারা এটোপি পরীক্ষা করলে তাদের শরীরে ইমিউনোগ্লোবিউলিন ই এর মাত্রা বেশি পাওয়া যায়।

নিজে নিজে এলার্জি চিহ্নিত করা উচিৎ নয়:

উপরের লক্ষণসমূহ দেখেই এলার্জি ভাবা ঠিক নয়। কেননা বিভিন্ন শারিরিক রোগ থেকেও একই ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। তাই অবশ্যই  ডাক্তারের শরনাপন্ন‌ হতে হবে।

যা অবশ্যই করতে হবে:

1.       যখন কোন মানুষের শরীর কোন কোন বিশেষ বস্তুতে (এলার্জেন) অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়, তখন তাকে এলার্জি বলে।

2.      এলার্জি বিভিন্ন ধরনের হয়:  চুলকানি, একজিমা ও হাপানি, খাদ্যে এলার্জি, হে-ফিভার ইত্যাদি।

3.      বিভিন্ন শারিরিক রোগ থেকেও একই ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। তাই অবশ্যই  ডাক্তারের শরনাপন্ন ‌ হতে হবে।

 

09-10-2013 রোগ ব্যাধি

বড়দের পেটে ব্যাথা

 

     প্রত্যেকেরই জীবনে এক বা একাধিক বার পেটের ব্যাথায় ভোগার অভিজ্ঞতা আছে। পাজরের হাড়ের নিচ থেকে শুরু করে তলপেট পর্যন্ত যে কোন স্থানেই এই ব্যাথা অনুভূত হতে পারে। এই ব্যাথা নানা কারণে হয়ে থাকে। হালকা চিনচিনে  ব্যাথা থেকে শুরু করে এপেনডিসাইটিস বা প্রসবকালীন ব্যাথার মত অতি তীব্র ব্যাথাও হয়ে থাকে। কখনও কখনও ব্যাথার সাথে বমি, পাতলা পায়খানা বা অন্যান্য সমস্যাও থাকে। মানুষের পেটে পাকস্থলী লিভার, অগ্নাশয়, ক্ষুদ্রান্ত, বৃহদান্ত, কিডনী, জননাঙ্গ ইত্যাদি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসহ বড় বড় রক্তনালী আছে। তবে বেশিরভাগ ব্যাথাই এমনিতে বা সামান্য ঔষধে সেরে যায়, কিছু ক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন হয়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ পেটের ব্যাথা চলে গেলেই খুশি, সমস্যা m¤^‡Ü খুব একটা জানতে চায় না। মাঝে মাঝে ঔষধে ব্যাথা চলে গেলেও পেটের সমস্যা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে ও এক পর্যায়ে মারাত্মক আকার ধারন করে।

 

কখন ডাক্তারের কাছে/ হাসপাতালে যাবেন: যদি-

১। প্রচন্ড ব্যাথা থাকে।

২। কয়েক ঘন্টায়ও ব্যাথা কমছে না।

৩। সব ©à¦…বস্থায় তীব্র পেটে ব্যাথা বা রক্ত পড়লে।

৪। ছেলেদের অন্ড কোষে ব্যাথা হলে।

৫। ব্যাথা ও বমি বা রক্তবমি।

৬। ব্যাথার সাথে জ্বর ও প্রচন্ড ঘাম হলে।

৭। যদি শরীর ফ্যাকাশে হয়ে ঠান্ডা হয়ে যেতে থাকে।

৮। অনেকক্ষণ ধরে প্রস্রাব করতে না পারলে।

৯। অনেকক্ষণ পায়খানা বা পায়ুপথে বাতাস না বের হলে।

 

লক্ষণসমূহ:

পেটের ব্যাথা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন-

K)       তীব্র, চিনচিনে, পেট ভার ভার, জ্বালা যন্ত্রনা, পেট মোচড়ানো ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।

L)       ব্যাথা দীর্ঘক্ষণ ধরে থাকতে পারে বা খুব অল্প সময়ের জন্য হয় অথবা আসে আবার চলে যায় -এমন হতে পারে।

M)       নির্দিষ্ট পজিশনে ব্যাথা বাড়তে বা কমতে পারে।

N)       পায়খানার সাথে সাথে ব্যাথা বা বমির সাথে ব্যাথা হতে পারে।

সম্ভাব্য কারণসমূহ:

নানা ধরনের কারণে পেটে ব্যাথা হয়। যেমন-

v     এপেনডিসাইটিস বা পুজ জমা হওয়া।

v     খাদ্যনালীতে ঘা বা আলসার।

v     প্রসবজনিত ব্যাথা।

v     ইনফেকশন, লিভারের প্রদাহ/হেপাটাইটিস।

v     প্রস্রাবের নালি, প্রস্রাবের থলির ইনফেকশন

v     পায়খানার নালীতে কাটা/ঘা

v     টিউমার

v     কিডনী/প্রস্রাবের নালীতে/থলিতে পাথর

এমনকি- হার্ট এটাক বা নিউমোনিয়া থেকে পেটে ব্যাথা মনে হতে পারে। এছারাও

মহিলাদের মাসিকের ব্যাথার কথাও মাথায় রাখতে হবে। তবে অনেক ক্ষেত্রে কারণ অজানা বা অস্পষ্ট হতে পারে।

পেটের ভেতরে এত বেশি অংশ, গ্রন্থি যে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পক্ষেও সঠিক কারণ নির্ণয় করা সব সময় সম্ভব হয় না। তাই ডাক্তার বিভিন্ন প্রশ্ন করে বা শারিরিক পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে দেন। অনেক সময় ডাক্তার কারণ বের করতে ব্যর্থ হলেও কয়েক ঘন্টার মধ্যে ব্যাথা ভাল হয়ে যায়। আবার অনেক ব্যাথা হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে অপারশেন করতে হয়।

রোগ নির্ণয়ঃ

পেটের ব্যাথার কারণ নির্ণয় করতে যে সকল শারীরিক বা ল্যাবরেটরী পরীক্ষা নিরীক্ষা দরকার তা হল:

v     মলদ্বারের পরীক্ষা।

v     যৌনাঙ্গে, অন্ডথলীর পরীক্ষা।

v     মহিলাদের প্রসাবের পরীক্ষা- ইনেফকশন/ প্রেগনেন্সি টেস্ট

v     রক্ত পরীক্ষা

v     রক্তের বিভিন্ন এনজাইমের পরীক্ষা, যেমন- লিভার, প্যানক্রিয়াস, হার্ট ইত্যাদির সমস্যা বোঝানোর জন্য।

v     ই, সি, জি

v     আলট্রাসনোগ্রাম

v     এক্সরে, সিটি স্ক্যান, এম আর আই।

চিকিৎসা ব্যবস্থাঃ

 à¦šà¦¿à¦•à¦¿à§Žà¦¸à¦¾ নির্ভর করে কারণের উপর। যেমন-

ক) ব্যাথা কমানো : ব্যাথার ঔষধে ব্যাথা একদম না সারলেও তীব্র ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

খ) স্যালাইন :  মুখে খাবার বন্ধ রেখে  শিরায় স্যালাইন দিলে বমি, পাতলা পায়খানা কম হয়, খাদ্যনালী      

    একটু বিশ্রাম পায়।

গ) মুখে খাবার, পানি না দেয়া।

ঘ) এন্টিবায়োটিক : ইনফেকশন থাকলে সে ক্ষেত্রে  এন্টিবায়োটিক দিযে চিকিৎসা করতে হয়।

ঙ) অন্যান্য ঔষধ : বমি, গ্যাস্ট্রিক বা পায়খানা হবার ঔষধ লাগতে পারে।

 

বাসায় কিভাবে যত্ন নিবেন:

বেশিরভাগ ব্যাথাই কোন বিশেষ চিকিৎসা ছাড়া এমনিতেই চলে যায়। এ ক্ষেত্রে আপনি নিজে নিজে  ব্যাথায় যা করতে পারেন তা হল:

  1. পেটে ১ টি গরম পানির বোতল বা ব্যাগ রাখতে পারেন।
  2. হালকা গরম পানিতে গোসল/গা চুবিয়ে রাখুন।
  3. প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন।
  4. চা, কফি, মদ, তৈলাক্ত ভাজা পোড়া খাবার কম খান।
  5. খাবার বন্ধ রেখে পরে খাবার শুরু করলে -প্রথমে তরল, পরে অর্ধতরল খাবার দিয়ে শুরু করুন।
  6. পর্যাপ্ত বিশ্যাম নিন।
  7. এন্টাসিড বা অন্যান্য গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ, প্যারাসিটামল ইত্যাদি ঔষধ নির্দিষ্ট ডোজে খেতে পারেন।

তবে সব ব্যাথ্যার জন্য উরোক্ত সব পদ্ধতি  ভাল নয়। 

 

যা মনে রাখা জরুরী:

  1. পাজরের নিচ থেকে শুরু করে কোমরের হার পর্যন্ত যে কোন স্থানে ব্যাথা অনুভুত হতে পারে।

     à§¨. তবে বেশিরভাগ ব্যাথাই এমনিতে বা সামান্য ঔষধে সেরে যায়, কিছু ক্ষেত্রে অপারেশনের  প্রয়োজন হয়।

৩। পেটের ভেতরে এত বেশি অংশ, গ্রন্থি যে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পক্ষেও সঠিক কারণ নির্ণয় করা সব সময় সম্ভব হয় না। তাই শারীরিক বা ল্যাবরেটরী পরীক্ষা নিরীক্ষা দরকার

09-10-2013 রোগ ব্যাধি

পাকস্থলীর ক্যান্সার

   উন্নত বিশ্বের তুলনায় উন্নয়নশীল দেশে পাকস্থলীর ক্যান্সারের প্রকোপ বেশী। খাদ্যাভ্যাস জনিত কারণ ও হেলিকোব্যাক্টর পাইলরী ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশন উভয় একত্রে এর জন্য অনেকাংশে দায়ী বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে ও সঠিক চিকিৎসা হলে পাকস্থলী ক্যান্সার নিরাময় যোগ্য, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যখন রোগীরা চিকিৎসার জন্য আসেন, ততক্ষনে রোগ অনেক দূর বিস্তৃত হয়ে গেছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায় মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের এই রোগ কিছুটা বেশী হয়। তাছাড়া যুবক বয়সে পাকস্থলি ক্যান্সার হতে দেখা গেলেও মূলত বৃদ্ধ বয়সে ৬০-৭০ বছরেই এই রোগ বেশী হতে দেখা যায়।

প্রকারভেদ ও কারণ : 

পাসস্থলীর ক্যান্সার মূলত ২ ধরনের হতে দেখা যায়। প্রথম ধরনের ক্যান্সার হয় এইচ  পাইলোরী নামক ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশনে শতকরা  ৪০ ভাগ লোকের পাকস্থলীর ভেতর কলায় এই জীবাণু স্বাভাবিক ভাবেই  à¦…বস্থান করতে দেখা যায়। পাকস্থলীর আলসার, ভিওডেনাম আলসারের জন্যও মূলত এই জীবাণু দায়ী। এ ছাড়াও এই জীবাণু হজমে ব্যাঘাত ঘটায়। সাধারণত এইচ পইলোরী জীবানু সুপারফিসিয়াল গ্যাস্ট্রাইটিস করে। তবে কখনও কখনও এট্রোফিক গ্যাস্ট্রাইটিস ও করে, যা থেকে পরবর্তিত স্টোমাক কারসিনোমা বা পাকস্থলির ক্যান্সার হতে পারে। তবে যত বেশি সংখ্যক লোক এই জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত, সে তুলনায় খুব কম সংখকই ক্যান্সারে  আক্রান্ত হয়।

২য় ধরনের ক্যান্সারটি এইচ পাইলোরী জীবাণু ইনফেকশনের সংগে জড়িত নয়। তবে এর প্রকৃত কারণও অজানা। এই ধরনের ক্যান্সারের প্রকোপ তূলনামূলকভাবে কম হলেও দিন দিন তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসিড রিফ্লাক্স ডিজিজ এবং অতিরিক্ত ওজনকে এর কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।

এদুটি প্রকার ছাড়াও MALT ও  GIST খুবই আনকমন ধরনের পাকস্থলী ক্যান্সার।

 

পাকস্থলী ক্যান্সারের ক্রম পরিবর্তনের ধাপ :

হঠাৎ করেই ক্যান্সার হয় না। ধীরে ধীরে পাকস্থলীতে পরিবর্তন হতে থাকে এবং ক্রমশ অবনতির ফলে ক্যান্সার হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় পাকস্থলী আবরনী কলা দ্বারা আবৃত থাকে, যাকে  à¦¬à¦²à§‡ এপিথেলিয়াম। উহা আবার মিউকোসা নামক আবরন দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। ক্যান্সারে রুপান্তরের অন্তবর্তি ধাপসমূহ  হল :

§        স্বাভাবিক মিউকাস আবৃত আবরনী কলা

§        সুপার ফিসিয়াল গ্যাস্ট্রাইটিস

§        ক্রনিক এন্ট্রেফিক গ্যাস্ট্রাইটিস

§        মেটাপ্লাসিয়া (অস্বাভাবিকপরিবর্তন)

§        ডিসপ্লাসিয়া ও কারসিনোমা (ক্যান্সার)

 

হেলিকো ব্যাক্টর পাইলোরী :

১৯৮৩ সালে এইচ পাইলোরী জীবাণু আবিস্কারের পূর্ব পর্যন্ত পাকস্থলীর ক্যান্সারের মূল কারণ হিসেবে খাদ্যাভ্যাস ও অতিরিক্ত শারীরিক ও মানসিক চাপকে দায়ী করা হত। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই জীবাণু ক্ষত সৃষ্টির জন্য দায়ী। জীবাণুটি পাকস্থলীতে ভেতরের আবরণী কলার তৈরী ও বিন্যাসে বাধা সৃষ্টি করে এবং এক ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য নিঃসরন করে যা আবরণী কলায় প্রদাহ সৃষ্টি করে ও ক্ষত তৈরী করে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের অভাব, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব এ রোগ বিস্তারের অন্যতম কারণ। উন্নত বিশ্বের তুলনায় অনুন্নত বিশ্বে তাই এ জীবাণু বেশি পাওয়া যায়।

 

গ্যাষ্ট্রিক আলসার হলেই ক্যান্সার হয় না : 

ক্যান্সার হবার পূর্বে গ্যাস্ট্রিক আলসার হয় ঠিকই, তবে যে কোন কারণে গ্যাস্ট্রিক আলসার হলেই তার ক্যান্সার হবার ঝুঁকি বেশি, তা প্রমাণিত নয়। মূলত এইচ পাইলোরী জীবাণুর ইনফেকশন এবং শরীরের প্রতিক্রিয়া এ ক্ষেত্রে বেশি ভূমিকা রাখে।

 

খাদ্যাভ্যাস ও জীবিকা :

এইচ পাইলোরী ইনফেকশনের সাথে সাথে খাদ্যাভ্যাস  ক্যান্সার হবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অধিক হারে লবন খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যে কারণে জাপানীদের  মধ্যে এর হার সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে ফল, শাক-সব্জি বিশেষত ভিটামিন সি এবং বিটা ক্যারোটিনয়েড সম্বৃদ্ধ খাবার ক্যান্সার হওয়া প্রতিরোধ ভূমিকা রাখে। এ ছাড়াও যারা লোহা-লক্কড়ের কারখানায় কাজ করে, তাদের ক্ষেত্রেও এই ক্যান্সার তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।

 

পারিবারিক/জীনগত কারণ :

পাকস্থলী ক্যান্সারের আক্রান্ত ব্যক্তিদের শতকরা ১০ জনের ক্ষেত্রে পারিবারিক ভাবে পাকস্থলী ক্যান্সারের রোগী থাকতে দেখা যায়। যারা রোগীর বাবা, মা, ভাই বা বোন এবং এ ক্ষেত্রে রোগী অল্প বয়সেই (২০-৩০ বছর) আক্রান্ত হতে পারে। পরীক্ষা করে এসব রোগীদের দেহে সমস্যাগ্রস্ত জীন পাওয়া গেছে।

 

ঝুঁকি কামাবার উপায় :

যেহেতু এইচ পাইলোরী জীবাণু রোগ সৃষ্টির সাথে সরাসরি জড়িত, সে ক্ষেত্রে জীবাণু নির্মূল করতে পারলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে লাঘব করা  সম্ভব। সামান্য পরীক্ষার মাধ্যমেই জীবাণু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। ইনফেকশন থাকলে যথার্থ এন্টিবায়োটিক খেলে জীবাণু ধ্বংস করা সম্ভব।

    এ ছাড়াও প্রতিদিন ফল-মূল, শাক-সব্জি খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি আরও কমিয়ে আনা সম্ভব। তাছাড়া পাকস্থলীতে ঘা, হজমের সমস্যা ইত্যাদি রোগে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে শুরুতেই চিকিৎসা করতে পারলে ক্যান্সার হবার ঝুঁকি কমে যাবে।

 

যা মনে রাথার মত :

১. উন্নত বিশ্বের তুলনায় অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহে পাকস্থলী ক্যান্সারের ঝুঁকি, প্রাপ্যতা অনেক বেশী।

২. মূলত হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরী নামক জীবাণুর ইনশেকশন এবং সাথে সাথে খাদ্যাভ্যাস- ক্যান্সার হবার জন্য অনেকাংশে দায়ী।

৩. জীবাণু ধ্বংস করা, ভিটামিন সি ও ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে পাকস্থলী ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব।

 

09-10-2013 রোগ ব্যাধি

ক্ষত বা ঘা এর যত্ন

 

চামড়ার কোন ঘা-যা শুকাচ্ছে না বা শুকাতে অনেক দেরী হচ্ছে অথবা শুকাবার পরে আবার ক্ষত হচ্ছে, এসব ক্ষতকে ক্রণিক বা দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষত বলে। নানা ধরনের কারণে এরুপ দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত হতে পারে। এসব ক্ষত সারাতে হলে বিশেষ যত্ন নিতে হয়।

 

দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতের কারণঃ

ক্রণিক বা দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতের অসংখ্য কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ সমূহ হল :

-         বেড সোর বা প্রেসার সোর : মূলত দীর্ঘ সময় অচল থাকার কারণে এবং সর্বসময় চাপের কারণে রক্ত  চলাচল কম হবার ফলে ক্ষতের সৃষ্টি হয়।

-         বড় বা মারাত্মক ধরনের আঘাত।

-         অপারেশনের স্থানে ইনফেকশন হলে।

-         আগুন বা রাসায়নিক পদার্থে লেগে গভীর ভাবে পুড়ে গেলে।

-         ডায়বেটিস বা অন্য কোন ধরনের রক্তনালীর রোগ।

-         ডায়বেটিক নিউরোপ্যাথি এবং কুষ্ঠ হলে অনুভুতি কমে যাবার কারণে বার বার ক্ষত বা আঘাত লাগলেও রোগী বুঝতে পারে না (ট্রপিক আলসার)।

-   বিশেষ ধরনের জীবাণু দিয়ে ইনফেকশন হলে (মাইকোব্যাকটেরিয়াম আলসারান্স)

চামড়ার ক্ষত পূরণ হবার স্বাভাবিক পদ্ধতিঃ স্বাভাবিক অবস্থায় কোন ক্ষত পুরণ হবার সময় কিছু নির্দিষ্ট ধাপ ও অবস্থা অতিক্রম করে। কোন কারণে ঐ ধাপ গুলি সঠিক ভাবে সম্পন্ন হতে না পারলে ঘা বা ক্ষত শুকাতে পারে না। ধাপগুলি হল:

১) ইনফ্লামেটরি স্টেজঃ

আঘাত বা ক্ষত স্থানে রক্ত নালী সংকুচিত হয়ে যায় এবং রক্তের অনুচক্রিকা এসে বাসা হয়ে ক্লট তৈরী করে ও রক্তপাত বন্ধ করে। রক্তপাত বন্ধ হওয়া নিশ্চিত হলে রক্তনালী গুলি খুলে যায় এবং রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায়, ফলে ক্ষত স্থানটি লাল ও গরম হয়ে ওঠে। রক্তের  à¦¸à§à¦¬à§‡à¦¤à¦•à¦£à¦¿à¦•à¦¾ এসে কোন জীবাণু থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় এবং ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। পরবর্তীতে ক্ষত স্থানটির চারদিকে কোষ বৃদ্ধি পেয়ে ক্ষতপূরণের চেষ্টা করে।

২) ফাইব্রোব্লাস্টিক স্টেজঃ

কোলাজেন নামক প্রোটিন তন্তু যা চামড়াকে দৃঢ়তা প্রদান করে, তা বৃদ্ধি পায় ও ক্ষতস্থানে জমা হতে থাকে। এটি নবগঠিত চামড়াকে চারদিক থেকে টান দেয় ও কুচকে গিয়ে জোড়া লাগাতে সাহায্য করে। নতুন রক্ত নালী তৈরী হয় এবং ক্ষতস্থানের কোষগুলিকে রক্ত, অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ করে।

৩) ম্যাচুরেশন স্টেজঃ

শরীর প্রতিনিয়ত ঐ স্থানে কোলাজেন ও ফাইব্রোব্লাস্ট পাঠাতে থাকে, যা ক্ষুদ্র ক্ষত পুরণ করা ও ক্ষতকে দৃঢ় করতে সাহায্য করে। পরিপূর্ণ হতে অনেক ক্ষেত্রে কয়েক মাস বা বছরও লেগে যেতে পারে। তাই ক্ষত পূরণ হবার পরও সম্পূর্ণ ঠিক হতে সময় দিতে হবে ও যত্ন নিতে হবে।

 

ক্ষতপূরণে যা যা বাধা হয়ে দাড়ায়ঃ

কিছু কিছু বিষয় ক্ষত স্থান পুরণে বাধা হয়ে দাড়ায়, ফলে ক্ষত শুকাতে বা পুরণ হতে বেশী সময় লাগে। যেমন:

১। মরা চামড়া বা কোষঃ ক্ষতস্থানে মরা চামড়া বা কোষ থেকে গেলে বা শরীরের অংশ নয় এমন কিছু রয়ে গেলে।

২। ইনফেকশনঃ ক্ষত স্থানে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করলে শরীর তখন ক্ষত পুরণ না করে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে ব্যস্ত থাকে।

৩। রক্তক্ষরণঃ ক্ষতস্থানে যদি রক্তপাত হতেই থাকে সে ক্ষেত্রে নতুন কোষ তৈরী, জোড়া লাগা, মজবুত হওয়া বন্ধ থাকে।

৪। রক্ত চলাচলে বাধাঃ বেড সোর বা প্রেসার সোর স্থানে রক্ত চলাচল বন্ধ থাকে বিধায় ক্ষত শুকাবে না।

৫। খাদ্য ও পুষ্টিঃ  ক্ষত পুরণের জন্য শরীরে পর্যাপ্ত প্রোটিন, জিংক, ভিটামিন সি প্রয়োজন। এদের ঘাটতি থাকলে ক্ষত শুকাবে না।

৬। কিছু রোগঃ ডায়বেটিস, রক্তশুন্যতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার চরম অভাব বা রক্তনালীর সমস্যা বা রক্ত চলাচলে সমস্যা জনিত রোগ থাকলে ক্ষত পুরণে দেরী হয়।

৭। ধুমপানঃ ধুমপানে ক্ষত পুরণে ধীরে হয় ও জটিলতা দেখা দিতে পারে।

৮। অতিরিক্ত ভেজা বা শুকনো হলেঃ নতুন জন্মানো কোষগুলির বেঁচে থাকা ও ক্ষত পূরণের জন্য নির্দিষ্ট আর্দ্রতা দরকার। তার চেয়ে কম বা বেশি হলে ক্ষত শুকাতে দেরী হয়।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

ক্ষত না শুকানো বা শুকাতে দেরী হবার মূল কারণটি বের করে তার চিকিৎসা না করলে ক্ষত সারানো সম্ভব না। তাই রোগ নির্ণয়ের জন্য :

-         ক্ষতস্থান, তার রক্তনালী ও স্নায়ুর শারীরিক পরীক্ষা, পর্যবেক্ষণ।

-         রোগীর অন্যান্য রোগের ইতিহাস, ঔষধ বা অভ্যাস ইত্যাদি জানা।

-         রক্ত, প্রস্রাব পরীক্ষা

-         ক্ষতস্থানের বায়োপাসি।

-         ক্ষতস্থানের রস বা কোষ নিয়ে ল্যাবরেটরিতে জীবাণু নির্ণয়।

চিকিৎসাঃ

বয়স, ক্ষত, ক্ষতের আকার, অবস্থান ও রোগের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা প্রযোজ্য। যেমন:

- ক্ষত হবার পর স্থানটি ভাল করে পরিষ্কার করা জীবাণু, মরা চামড়া, বাইরের কিছু থাকলে পরিষ্কার করা।

-         বিশেষ ধরনের ক্ষত হলে টিটেনাস ইনঞ্জেকশন নিতে হতে পারে।

-         কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপারেশন করে ক্ষত বড় করা বা পরিষ্কার করতে হতে পারে। সাধারণত ঐ স্থানটি অবশ করেই তা করা যায়।

-         ক্ষতের চারপাশেও যদি মরা চামড়া বা মরা কোষ থাকে তা অবশ করে কেটে পরিস্কার করতে হবে।

-         ক্ষতবড় হলে সেলাই দেয়া প্রয়োজন ।

-         নিয়মিত সঠিকভাবে, সঠিক জিনিস দিয়ে ড্রেসিং করা। এজন্য ডাক্তারের দেয়া পরমর্শ অনুযায়ী বস্তু দিয়ে ড্রেসিং করতে হবে।

-         ব্যাথা নাশক ঔষধ ব্যবহার করে ব্যাথা কমাতে হবে। কেননা ব্যাথা বেশি থাকলে রক্তনালী সংকুচিত থাকবে, ফলে ক্ষত শুকাতে অনেক দেরী হবে।

-         ক্ষতে ইনফেকশন হলে (জ্বর, ব্যাথা, পুজ হওয়া ইত্যাদি) এন্টিবায়োটিক খেতে হবে।

-         অনেক ধরণের ঔষধ আছে, যেমন স্টেরয়েড যা ক্ষত শুকাতে দেরী করে। তাই সে সব ঔষধ বন্ধ করতে হবে (ডাক্তারের পরামর্শে)।

-         অন্যান্য রোগ যেমন ডায়বেটিস, রক্তশুণ্যতা বা রক্তনালীর সমস্যা থাকলে তার ব্যবস্থা নিতে হবে।

-         অনেক ক্ষেত্রে স্কিন গ্র্যাফট (নিজের শরীরের অন্য স্থানের চামড়া এনে ক্ষতস্থানে লাগানো) করার প্রয়োজন।

নিজের যা যা করণীয়ঃ

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতের যত্নে রোগী নিজেই যা যা করবেনঃ

-         নিজে নিজে ঔষধ খাবেন না, কেননা কিছু কিছু ব্যাথা নাশক ক্ষত শুকাতে বিলম্ব ঘটায়।

-         সঠিকভাবে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন। খাদ্যে ভিটামিন সি ও আমিষ জাতীয় খাদ্যের পরিমাণ পর্যাপ্ত রাখুন। এছাড়াও জিংক ও কপার যুক্ত খাদ্য বেশী গ্রহণ করুন।

-         নিয়মিত ক্ষত ড্রেসিং করুন। যত দ্রুত সম্ভব ড্রেসিং করুন, কেননা ক্ষত বেশী ঠান্ডা থাকলে শুকাতে দেরী হয়।

-         ক্ষতস্থানে অধিক পরিমানে এন্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার করবেন না, কেননা তা নতুন সৃষ্ট কোষকে তৈরীতে বাধা দেয়।

-         নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এতে শরীরে রক্ত চলাচল বাড়বে এবং ক্ষত স্থান দ্রুত শুকাবে। তবে আপনার জন্য যে ব্যায়াম প্রযোজ্য তা জেনে নিয়ে ব্যায়াম করুন।

-         ধুমপান পরিহার করুন। ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখুন।

 

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেনঃ

দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতে নিচের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যাবেন।

-         রক্তপাত।

-         ব্যাথা বেড়ে গেলে।

-         ক্ষত থেকে পুঁজ বা কষ বের হলে।

-         জ্বর আসলে।

-         ক্ষত বড় হলে।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

১) চামড়ার যে কোন ঘা যা শুকাচ্ছে না বা শুকাতে অনেক দেরী হচ্ছে অথবা শুকাবার পরে আবার ক্ষত হচ্ছে সেসব ক্ষতকে ক্রণিক বা দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষত বলে।

 à§¨) বয়স, ক্ষত, ক্ষতের আকার,বিস্তারিত

-->

09-10-2013 রোগ ব্যাধি

লেগ আলসার/ পায়ের ঘা

 

নিচের পায়ের ঘা অনেক ক্ষেত্রেই ধমনী বা শিরা বা  উভয় নালীর সমস্যার জন্য হয়ে থাকে। আবার অনেক ক্ষেত্রে আঘাত, চামড়ার ক্যান্সার, চামড়ার রোগ অথবা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সমস্যার জন্য হতে পারে। হৃদপিন্ড থেকে দূরবর্তী স্থানে বলে প্রায়শই এই ঘা শুকাতে অনেক দেরী হয়, বিশেষত যদি রোগীর বয়স ৫০ এর অধিক হয় সে ক্ষেত্রে। তাই যদি পা এর নিচের অংশের ঘা শুকাতে বেশি দেরী হয় (যেমনঃ ১ মাসেও যদি ঘা এর অর্ধেক পরিমাণ না শুকায়) সে ক্ষেত্রে বিশেষ যত্ন ও চিকিৎসা নিতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

 

রক্ত সঞ্চালনের সমস্যাই প্রধান কারণঃ

আঘাত, ক্যান্সার, চামড়ার রোগ ইত্যাদি নানাবিধ কারণেই ঘা শুকাতে দেরী হতে পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা । যেমনঃ

-         শিরাঃ শতকরা ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে ভেরিকোস ভেইন থাকতে দেখা যায় এবং ঠিকভাবে ভেনাস রিটার্ন না হবার কারণে ঘা সৃষ্টি হয় এবং কম শুকায়

-         ধমনীঃ ধমনীর মধ্যে এথরোসা (চর্বি জমে নালী চিকন হওয়া) হবার ফলে রক্ত চলাচল কমে যায়। শতকরা ১০ ভাগ ক্ষত এ কারণে হয়।

-         শিরা ও ধমনী উভয়ের সমস্যাঃ শতকরা ১০ ভাগ ক্ষেত্রে শিরা ও ধমনী উভয়ই সমস্যাগ্রস্ত দেখা যায়।

 

লক্ষণসমূহঃ

শিরা পথের সমস্যার জন্য যে ঘা হয় তার লক্ষণ ধমনী সমস্যার জন্য হওয়া ঘা এর লক্ষণ থেকে ভিন্ন। যেমনঃ

ভেনাস আলসারঃ

সাধারণত পা এর নিচের এক তৃতিয়াংশে হয়। ক্ষতটি তেমন গভীর হয় না, কিন্তু রক্ত তরল নির্গত হয়, কিন্তু খুব একটা ব্যাথা থাকে না। ঘা এর আশেপাশের চামড়ার বর্ণ পরিবর্তিত হতে থাকে। দিন বাড়তে থাকলে ফুলাও বাড়তে থাকে, কিন্তু রাতে ঘুমালে ফুলা অনেক কমে যায়। জোরে চাপ দিয়ে ব্যান্ডেজ না করলে ঘা শুকাতে দেরী হয়।

আর্টারিয়াল আলসারঃ 

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পা এর পাতা বা পা এর পেছনে দিকে হয়। ক্ষতি বেশ গভীর হয় ও বেশ ব্যাথা থাকে। ক্ষতের  গভীরে মৃত কোষ থাকে, ইনফেকশন থাকে। এই ক্ষত শুকায় না বরং বাড়তে থাকে এবং জরুরী ভিত্তিতে অপারেশন দরকার হয়।

শিরা বা ভেইনের সমস্যার রিস্ক ফ্যাক্টরঃ

যে সমস্ত বিষয় ও কারণ শিরা পথের সমস্যার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় তা হল-

-         দিনের অধিকাংশ সময় বসে বা দাড়িয়ে থাকা।

-         ভেরিকোস ভেইন (শিরা ফুলে মোটা ও আঁকাবাঁকা হওয়া)।

-         পারিবারিক একই ধরণের রোগের ইতিহাস।

-         গর্ভকালীন অবস্থায় (কেননা পা এ রক্তচাপ বেড়ে যায়)।

-         আগে শিরায় রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা বা ডিপ ভেইন _ª‡¤^vwmm হয়ে থাকলে।

 

আর্টারী সমস্যার রিস্ক ফ্যাক্টরঃ

-         ধুমপায়ী।

-         ডায়বেটিক রোগী।

-         উচ্চ মাত্রায় চর্বিযুক্ত খাদ্যগ্রহণ।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

পা এর ঘা দেরীতে শুকালে তার প্রকৃত রোগ নির্ণয় করা জরুরী। একে শুধু মাত্র ১টি ঘা ভাবলে চলবে না। আবার সব ঘা এর কারণ শুধু রক্তনালীর সমস্যা ভাবলেও চলবে না।

রোগ নির্ণয়ের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। রোগ নির্ণয়ের জন্য-

-         ঘা বা ক্ষত এর সঠিক পরীক্ষা।

-         ঘা এ রক্ত চলাচলের ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ (এংকেল ব্রাকিয়াল ইনডেক্স-কালার ডপলার মেশিনের সাহায্যে)।

-         প্রয়োজনে এনজিওগ্রাম (রক্তনালীর বিশেষ ধরণের এক্স-রে) করে রক্তনালীর অবস্থা দেখতে হবে।

 

চিকিৎসাঃ 

-   ক্ষতস্থানটি নিয়মিতভাবে পরিস্কার করা, প্রয়োজনে মরা চামড়া মৃত কোষ ইনফেকশন ইত্যাদি কেটে কেটে পরিস্কার করা।

-         এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করে ইনফেকশন রোধ করা।

-         ব্যাথানাশক ঔষধ ব্যবহার।

-         অসুস্থ পা কে রেস্ট দেয়া যাতে পুণরায় কোন আঘাত না লাগে এবং ঘা দ্রুত শুকাতে পারে।

তবে ক্ষতের কারণের উপর নির্ভর করে চিকিৎসাও পরিবর্তন করতে হয়। যেমনঃ

ভেনাস আলসারঃ  এমন ধরণের ড্রেসিং ব্যবহার করা হয় যা ঐ স্থানের অতিরিক্ত পানি ও আর্দ্রতা শুষে নেয় এবং চাপ দিয়ে, প্রেসার দিয়ে ব্যান্ডেজ করা হয়। ফলে এতে ক্ষতস্থানের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় ও ক্ষত দ্রুত শুকায়। দেখা গেছে, সঠিক চিকিৎসা হলে প্রায় ৭০ ভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষত ভাল হয়ে যায়।

আর্টারিয়াল আলসারঃ 

এ ক্ষেত্রে অতি দ্রুত চিকিৎসা নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে চাপ দিয়ে ব্যান্ডেজ করলে বাধাগ্রস্থ হয়ে আরও ক্ষতি হবে। বরং ধমনীর যে অংশটি বন্ধ হয়ে আছে, অপারেশন করে ঐ স্থানটি মুক্ত করা প্রয়োজন (এনজিওপ্লাস্টি)। অনেক ক্ষেত্রে আটকে যাওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়া রক্তনালীকে বাদ দিয়ে ভিন্ন রক্তনালী বাইপাস সার্জারী করে রক্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হয়। আর এ দুটির কোনটি সফল না হলে আক্রান্ত পা কেটে ফেলতে (এমপুটেশন) হয়।

প্রতিরোধঃ

এ রোগ প্রতিরোধের জন্য জীবন যাপন পদ্ধতির পরিবর্তন আনতে হবে। রক্তনালীর প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয় এমন সব অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। যেমন-

পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ,

চর্বি বা তেলযুক্ত খাবার কম খাওয়া,

ধুমপান, মদ্যপান পরিহার করা,

নিয়মিত ব্যায়াম করা,

দীর্ঘক্ষণ দাড়ানো বা বসা পরিহার করা, ডায়বেটিস ঠিকমত নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদি । এবং ক্ষত দেখা দেবার সাথে সাথে চিকিৎসা গ্রহণ।

 

যা মনে রাখা দরকারঃ

1.      পা এর দীর্ঘ মেয়াদী ঘা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিরা বা ধমনীর রক্তপ্রবাহে বাধার ফলে সৃষ্টি হয়।

2.     এ সব ক্ষত শুকানোর জন্য ঐ স্থানে রক্ত প্রবাহে স্বাভাবিক করতে হয়।

3.     শিরা অথবা ধমনীর সমস্যার জন্য ঘা এর লক্ষণ ও চিকিৎসা ভিন্ন ভিন্ন।

 

 

09-10-2013 রোগ ব্যাধি

প্রোস্টেট ক্যান্সার রোগ নির্ণয় ও PSA টেস্ট

 

রক্তে PSA এর মাত্রা নির্ণয় করে প্রোস্টেট ক্যান্সারের ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যায়। প্রোস্টেট গ্রন্থি এক ধরনের প্রোটিন তৈরী করে যার নাম প্রোস্টেট স্পেসিফিক এন্টিজেন (PSA)।  এই প্রোটিন মূলত শুক্রানুকে পুষ্টি আর খুব সামান্য মাত্রায় রক্তে মিশে থাকে। প্রোস্টেট ক্যান্সার হলে এর স্বাভাবিক কাজ বাধাগ্রস্থ হয় এবং মাত্রাতিরিক্ত PSA  à¦®à¦¿à¦¶à§‡ যেতে থাকে। ফলে রক্তে যখন অতিরিক্ত মাত্রায় PSA পাওয়া যায়, তখন প্রোস্টেট ক্যান্সারের কথা মনে সন্দেহ হওয়া স্বাভাবিক| তবে ক্যান্সার ছাড়াও অন্যান্য সমস্যায়ও রক্তে PSA এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়। আবার রক্তে PSA  à¦¸à§à¦¬à¦¾à¦­à¦¾à¦¬à¦¿à¦• থাকলেও রোগীর প্রোস্টেট ক্যান্সার থাকতে পারে। তাই ক্যান্সার কিনা তা নিশ্চিত হবার জন্য আরও কিছু পরীক্ষা করতে হয়।

 

PSA  এর স্বাভাবিক মাত্রা:

বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে  প্রোস্টেট গ্রন্থির  আকারও বাড়তে থাকে, সেই সাথে PSA এর মাত্রা ২-৫.৬ ন্যানোগ্রাম/মি:লি (৪০ বছরের উর্ধ্ব বযসী পুরুষে) তবে মাত্রা ৪ এর বেশি হলেই নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে।

 

অন্যান্য যে কারণে PSA বেশি হয়:

প্রোস্টেট ক্যান্সার ছাড়াও এর মাত্রা বেশি হতে পারে এবং বলা হয়, PSA  à¦¬à§‡à¦¶à¦¿ এমন ৩ জন রোগীর মাত্র ১ জনের ক্যান্সার থাকার সম্ভাবনা।

 

ক্যান্সার ছাড়াও অন্যান্য যে সব কারণে PSA বাড়তে পারে তা হল :

-         প্রোস্টেটাইটিস (প্রোস্টেট গ্রন্থির ইশেকশন, প্রদাহ)

-          বিনাইন প্রোস্টেটিক এনলার্জমেন্ট (BPE/BPH)  à¦¤à¦¾à¦‡ PSA  à¦›à¦¾à§œà¦¾à¦“ ক্যান্সার নিশ্চিত হবার জন্য DRE (ডাক্তার রোগীর মলদ্বারে আঙ্গুল দিয়ে প্রোস্টেট গ্রন্থির আকার আকৃতি বুঝে ধারণা করতে পারে)।

এ ছাড়া আরও নিশ্চিত হতে হলে প্রোস্টেট গ্রন্থি থেকে মাংস কেটে বায়োপসি করলে ক্যান্সার কোষ পাওয়া যেতে পারে

যদি ক্যান্সার ধরা পড়ে সে ক্ষেত্রে ক্যান্সারের ধরণ, অগ্রগতি, বিস্তার ইত্যাদি বোঝার জন্য আরও কিছু পরীক্ষা যেমন : CT স্ক্যান এবং পেলভিক লিম্ফ নোড কেটে পরীক্ষা করা প্রয়োজন হতে পারে।

 

প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় ও স্কিনিং:

প্রোস্টেট ক্যান্সার এর অগ্রগতি খুব ধীর। অনেক সময় প্রোস্টেট ক্যান্সার এর লক্ষণ প্রকাশ হবারও  ৫-১০ বছর আগে থেকেই PSA এর মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। তাই PSA টেস্ট দ্বারা খুব প্রাথমিক পর্যায়ে প্রোস্টেট ক্যান্সার স্কিনিং করা যায়। তবে তাই বলে সবারই স্কিনিং করতে হবে, আর PSA বেশি হলেই অপারেশন করতে হবে তা নয়। এ ক্ষেত্রে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা জরুরী। বিশেষত যার বাবা বা ভাই প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত, তারা যেহেতু রিস্ক এর মধ্যে থাকে তাদের জন্য স্কিনিং জরুরী।  তবে PSA টেস্ট করার সাথে সাথে DRE অবশ্যই করতে হবে, নতুবা  ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে।

 

ক্যান্সারে অবস্থা পর্যবেক্ষণ PSA:

প্রোস্টেট ক্যান্সার নির্ণয় হযে গেলে নিয়মিত ভাবে রক্তে PSA এর মাত্রা মনিটর করতে হবে। সাধারণত ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রোস্টেট বৃদ্ধি পাবার সাথে সাথে PSA এর মাত্রাও বেশি হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই PSA এর মাত্রা দেখে ক্যান্সারের অগ্রগতি, স্থির অবস্থা   অথবা ঔষধ বা রেডিয়েশনের প্রভাবে ক্যান্সারের ধীরে ধীরে ছোট হওয়া অর্থাৎ চিকিৎসার অগ্রগতি বোঝা যায়।

 

যা মনে রাখা প্রয়োজন:

-         স্বাভাবিক ভাবেই পোস্টেট গ্রন্থি এক ধরনের প্রোটিন তৈরী করে যার নাম প্রোস্টেট স্টেসিফিক এন্টিজেন (PSA)

-          প্রোস্টেট ক্যান্সার হলে রক্তে PSA এর মাত্রা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়।

-          প্রোস্টেটের ক্যান্সার ছাড়াও অন্যান্য কিছু সমস্যায় PSA এর মাত্রা বাড়তে পারে, অন্যদিকে PSA এর মাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও ঐ ব্যক্তির প্রোস্টেট ক্যান্সার থাকতে পারে।

-          প্রোস্টেট ক্যান্সার নিশ্চিত হবার জন্য PSA এর পাশাপাশি আরও কিছু পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

-          PSA এর মাত্রা পরিমাপ করে ক্যান্সারের অগ্রগতি, স্থির অবস্থা ও চিকিৎসার অগ্রগতি বোঝা যায়।

 

 

09-10-2013 রোগ ব্যাধি

প্রেসার সোর

 

শরীরের কোন স্থানে দীর্ঘক্ষণ চাপ বা ঘর্ষনের ফলে ঐ স্থানে চামড়া ও নিম্নস্থ যোজক কলায় ক্ষত বা ঘা সৃষ্টি হয়, যাকে প্রেসার সোর বলে। যে কোন বয়সে শরীরে যে কোন স্থানেই ক্ষত হতে পারে। তবে বিশেষ করে যারা খুব কম চলাফেরা বা নড়াচড়া করেন, যেমন : দীর্ঘদিনের অসুস্থ রোগী বা খুব বৃদ্ধ ব্যক্তি যারা সারাক্ষণ বিছনায় শুয়ে বা চেয়ারে বসে থাকেন তাদের বেলায় বেশি দেখা যায়। এ সব ক্ষেত্রে এই ক্ষত সারানো বেশ কঠিন এবং চামড়ার ক্ষত থেকে দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা দেখা দেয় ।

 

এই রোগের অন্যান্য নাম হল- বেড সোর, প্রেসার আলসার। হাড়ের উপরিভাগের চামড়া যেমন : পায়ের গোড়ালী, কনুই, মাথার পেছনের  অংশ, কোমরের পেছনের অংশ যা শুয়ে বা বসে থাকলে উপরে হাড় ও নিচে বিছানা বা শক্ত বস্তুর চাপের মধ্যে, সেই স্থানে এই ক্ষত দেখা যায়।

চিত্রঃ প্রেসার সোর (১ম গ্রেড)

কেননা : চাপের ফলে ঐ স্থানে রক্ত চলাচল কমে যায়।

 

রোগের মাত্রা :

যখন কোন অসুস্থ ব্যক্তি দীর্ঘদিন একইভাবে শুয়ে থাকে, তার শরীরের বা চামড়ার যে
অংশটুকু সারাক্ষণ বা চেয়ারের সাথে লেগে থাকে এবং শরীরের ওজন বহন করে, ঐ স্থানের চামড়ার রং ধীরে ধীরে বদলাতে থাকে। অর্থাৎ ঐ অংশে ঘা হবার প্রক্রিয়া শুরুর পথে ।

প্রেসার সোরের মাত্রাকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায় :

ক. ১ম গ্রেড : চামড়ার বর্ন পরিবর্তন হওয়া।  সাধারণত লাল, নীল, বেগুনি বা কাল বর্ণ ধারণ করে।

খ. ২য় গ্রেড : চামড়ার উপর দিকের অংশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

গ. ৩য় গ্রেড : ঐ অংশের পুরো চামড়া ক্ষয় হয়, মরে যায়।

ঘ. ৪র্থ গ্রেড : চামড়ার সাথে সাথে নীচের অংশ যেমন: টেন্ডন, হাড়, জোড়া ইত্যাদিও ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

চিত্রঃ প্রেসার সোর (৪র্থ গ্রেড)

 

সম্ভাব্য জটিলতা :

সঠিক যত্ন ও চিকিৎসা না হলে এই ক্ষত থেকে-

সেপসিস (রক্তে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়া) সেলুলাইটিস (পার্শ্ববর্তি অংশে লাল হওয়া, ফুলে যাওয়া, হাড় ও জোড়ায় ইনফেকশন হতে পারে এবং ঐ স্থানে পুঁজ জমতে পারে।

 

রিস্ক ফ্যাক্টর :

অনেকের চামড়া পাতলা এবং কম দৃঢ়। তাই তাদের এই সমস্যা হবার ঝুঁকি বেশি। এ ছাড়াও-

-         শারীরিক দূর্বলতা, পুষ্টিহীনতা, যত্নের অভাব, বোধশক্তি  কম থাকা- ইত্যাদি ক্ষেত্রে জটিলতা দ্রুত হয় এবং মাত্রা বেশি হয়।

-         হুইল চেয়ারে বসা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে  পাছার নিচে, কাঁধের পেছনে, মেরুদন্ডে, হাতের কনুই, পায়ের পেছনের অংশে হবার ঝুঁকি বেশি।

-         দীর্ঘদিন শায়িত ব্যক্তির ক্ষেত্রে মাথার পেছনের অংশে, কানের ধার বরাবর, কাঁধের পেছনে, মাজার পেছনে, পুচ্ছদেশে, পায়ের গোড়ালির পেছনে ক্ষত হবার ঝুঁকি বেশি।

 

প্রতিরোধ :

প্রেসার সোর প্রতিরোধের জন্য যারা নড়াচড়া করতে পারে না, তাদের জন্য ঐসব স্থান থেকে চাপ কমিয়ে আনতে হবে। এ জন্য নিয়ম করে রোগীর পার্শ্ব পরিবর্তন করে সোয়ানো নরম কিছু ঐ স্থানে দিয়ে রাখা, যেন চাপ কম পড়ে, প্রতিদিন নিয়মিত ত্বকের যত্ন, পষ্টিকর খাবার এবং জীবন যাত্রার মান, ধরন পরিবর্তন করতে হবে।

- পার্শ্ব পরিবর্তন :  বিশেষজ্ঞদের মতে একইভাবে কোন ক্রমেই ২ ঘন্টার বেশি শুয়ে বা বসে থাকা যাবে না, অর্থাৎ ২ ঘন্টা পর পর রোগীকে এ পাশ ও পাশ করাতে হবে। তবে আরও ঘন ঘন করতে পারলে ভাল।

-   নিওমেটিক বিছানা (বিশেষভাবে তৈরী বিছানা যার ভেতরে বাতাস দিয়ে ফোলানো যায় এবং হালকা উঁচু নিচু করা যায়)

-   চাপ পড়ে এমন স্থানে বালিশ বা কুশন ব্যবহার করা।

 

নিয়মিত ত্বকের/চামড়ার যত্ন:

প্রতিদিন ঐ স্থানসমূহের চামড়া পরীক্ষা করে দেখা -লাল বা রং পরিবর্তন হচ্ছে কিনা?

-   চামড়ার স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখা কেননা খুব শুকনো চামড়া বা ভেজা উভয়ই দ্রাত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

-   প্রয়োজনে ক্রিম বা মলম ব্যবহার করা।

খাদ্য ও জীবন-যাপন :

প্রতিদিন পুষ্টিকর ব্যালান্সড খাদ্য গ্রহণ।

-         পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন

-         যতটুকু সম্ভব নড়াচড়া, কাজকর্ম করা একইভাবে পড়ে না থাকা,

-         ধুমপান পরিহার করা।

 

বেড সোর হয়ে গেলে করণীয়:

মাত্রার উপর নির্ভর করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

-         নিয়মিত পার্শ্ব পরিবর্তন

-         বিশেষ ধরনের তোষক, বিছানা ব্যবহার করা

-         নিয়মিত ড্রেসিং করে ক্ষত স্থানকে ভেজা ও ভাল চামড়াকে শুষ্ক রাখা

-         ইনফেকশন যেন না হতে পারে সেই লক্ষ্যে ক্ষতস্থান হালকাভাবে ঢেকে রাখা।

-         ক্ষত এর মাত্রা অনুযায়ী সঠিক ঔষধ দিয়ে প্রতিদিন পরিষ্কার করা

-         ইনফেকশন কমানোর জন্য সঠিক ঔষধ প্রয়োগ করা।

-         প্রয়োজনে শরীরের অন্য স্থান থেকে চামড়ার আবরণ নিয়ে প্রতিস্থাপন ( স্কিন গ্রাফ্‌ট) করা

-         পুষ্টিকর খাদ্যাভাস ও জীবন যাপন পদ্ধতি উন্নত করা।

 

যা মনে রাখতে হবে:

-         যে কোন ব্যক্তি দীর্ঘক্ষণ বা দীর্ঘদিন চেয়ারে বা বিছানায় শুয়ে বা বসে থাকলে শরীরের যে অংশে ওজন বহন করে এবং বিছানার সংস্পর্শে থাকে ঐসব অংশে প্রেসার সোর বা বেড সোর  হতে পারে।

-         প্রেসার সোর হলে চিকৎসা করা খুব কঠিন।

-         বেড সোর থেকে শরীরে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে।

-         নিয়মিত পার্শ্ব পরিবর্তন,  পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ, ও নিয়ম মত চামড়ার যত্ন নিলে বেড সোর হওয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব।

 

09-10-2013 রোগ ব্যাধি

প্রোস্টেট গ্রন্থি এবং প্রস্রাবের সমস্যা

 

প্রোস্টেট গ্রন্থি পুরুষ প্রজননতন্ত্রের একটি অংশ। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে অনেকের ক্ষেত্রেই প্রস্রাব করতে সমস্যা হয় যা মূলত প্রোস্টেট গ্রন্থির বড় হওয়া বা প্রদাহের কারণে হয়। আবার প্রেস্টেট  গ্রন্থি বড় হলেই সব সময় সমস্যা করবে, তাও ঠিক না। খুব সামান্য কিছু ক্ষেত্রে প্রস্রাবের সমস্যার জন্য প্রেস্টেটের ক্যান্সারও দায়ী।

 

প্রেস্টেট গ্রন্থি আকারে অনেকটা কাঠবাদামের মত এবং এটি মূত্রথলীর ঠিক নিচেই অবস্থান করে। মূত্রথলী থেকে মূত্রনালী বের হয়ে প্রেস্টেটের মধ্যখান দিয়ে গমন করে। প্রেস্টেট থেকে নিঃসৃত রস মূলত শুক্রানুকে খাদ্য জোগায় এবং দ্রুত মূত্রনালী পথে বের হয়ে যেতে সাহায্য করে।

 

 

প্রোস্টট গ্রন্থি যে ভাবে বড় হয়: 

প্রোস্টেট গ্রন্থি মূলত ২টি আলাদা আলাদা সময়ে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। ১ম দফায় বয়সন্ধিকালে হরমোনের প্রভাবে সাধারণ পূর্ণতা লাভ করে যা, প্রায় ২০ গ্রাম ওজনের হয়। ২য় দফায় ৪০ গ্রাম।

-এর পর থেকে আবার ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে।

পুরুষের বয়স  বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রস্রাবের সমস্যা:

অনেক বা অধিকাংশ পুরুষই বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রস্রাব করতে সমস্যায় ভুগে থাকেন। মূলত প্রেস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ (প্রোস্টেটাইটিস) অথবা বিনাইন হাইপারপ্লাসিয়া অফ প্রোস্টেট এ কারণে প্রোস্টেট গ্রান্থি বৃদ্ধি পেয়ে মূত্রনালীর উপর চাপ প্রয়োগ করে নালী পথকে সংকুচিত করে ফেলে। তাই মূলত পুরোপুরি প্রস্রাব শেষ করতে অর্থাৎ মূত্রথলী খালি করতে বেগ পেতে হয়।

 

 

লক্ষণসমূহ:

মনে রাখতে হবে যে, প্রস্রাবের সমস্যা কেবল মাত্র প্রোস্টেটের আকারে বড় হলেও সবার বেলায় সব ধরনের সমস্যা দেখা না। তবে সাধারণত যে সব সমস্যা হয়:

-         রাতে বার বার প্রস্রাব করতে হয়, দিনেও ঘনঘন প্রস্রাব হয়।

-         হঠাৎ প্রস্রাবের খুব বেগ হয়, এত বেশি যে টয়লেটে যাবার সময়ও পাওয়া যায় না।

-         প্রস্রাব শুরু হতে অনেক সময় লাগে।

-         প্রস্রাব শেষ পরেও ফোটা ফোটা প্রস্রাব বের হতে পারে। প্রস্রাব শেষ করার পরও মনে হয় যে, পেট খালি হয়নি।

-         প্রস্রাবের ধারা খুব ধীরে পড়ে।

-         প্রস্রাব শেষ করার পর আবারও করতে ইচ্ছা হয়।

 

যে অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসার জন্য যেতে হবে

-         যদি হঠাৎ প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, প্রস্রাব করতে না পারা।

-         প্রস্রাব করতে খুব ব্যাথা হওয়া।

-         প্রস্রাবে খুব সামান্য হলেও রক্ত যাওয়া, রক্ত বের হওয়া।

-         মুত্রনালী পথে কোন নিঃসরণ হওয়া।

-         প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা।

 

প্রস্টেটের প্রদাহ (প্রোস্টেটাইটিস)

ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ইনফেকশন হলে প্রোস্টেটের প্রদাহ হতে পারে। এ ছাড়াও অজানা অনেক কারণেও প্রদাহ হতে পারে। এ অবস্থায় যে সব লক্ষণ প্রকাশিত হয়-

- জ্বর

- তলপেটে

- কোমরে ব্যাথা

- পায়ের কুচকীতে ব্যাথা

- ঘন ঘন প্রস্রাব-

- প্রস্রাবের প্রচন্ড চাপ হওয়া

এ অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। ব্যাকটেরিয়া ঘটিত কারণে হলে এন্টিবায়োটিক দ্বারা চিকিৎসায় ভাল হবে। অনেক ক্ষেত্রে হাসাপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা প্রয়োজন। দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহে দীর্ঘদিন এন্টিবায়োটিক খেতে হতে পারে (ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী)।

 

বিনাইন এনলারজমেন্ট অব প্রোস্টেট :

ক্যান্সার নয়, তবে প্রস্টেট আকারে বেশ হড় হলে তাকে পি,পি,এইচ বলে। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে পি, পি,এইচ হবার সম্ভাবনাও বেশি হয়। এই ক্ষেত্রে প্রোস্টেট গ্রন্থে বড় হবার কারণে মধ্যখান দিয়ে যাওয়া চিকন মুত্রনালীর উপর চাপ সৃষ্টি করে, তাকে সংকুচিত করে। ফলে প্রস্রাবের সাধারণ প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় প্রস্রাব একেবারে বন্ধ হয়ে যায় এবং মুত্রনালী ফুলে উঠে, ব্যাথা হয়। এ ক্ষেত্রে জরুরী প্রস্রাবের রাস্তায় নল (কাথেটার) ঢুকিয়ে প্রস্রাব করানো হয়। যদিও এই অবস্থায হঠাৎ করে হলে কিডনীর তেমন কোন ক্ষতি করে না। তবে মনে রাখতে হবে যে, পি, পি, এইচ প্রস্রাবের সমস্যার অনেকগুলি কারণের মধ্যে কেবল ১টি। এছাড়া মুত্রথলী ঠিকমত সংকুচিত না হলেও প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

 

রোগ নির্ণয় :

প্রস্রাবের যে কোন সমস্যা হলে, তা যেই বয়সেই হোক, দ্রুত হাসপাতালে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ডাক্তার রোগের ইতিহাস নিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করতে পারেন। যেমন:

ক.শারীরিক পরীক্ষা:

পায়ুপথে আঙ্গুল দিয়ে প্রোস্টেটের আকার আকৃতি পরীক্ষা( সংক্ষেপে ডি,আর,ই বলে)

খ. প্রস্রাবের পরীক্ষা:

প্রস্রাব বা থলি বা গ্রন্থিতে ইনফেকশন আছে কিনা যাচাই করা।

গ. প্রস্রাবের  ধারার  পরীক্ষা ( ফ্লো- সাইটোমেট্রী)

ঘ. আলট্রাসনোগ্রাফী:

কিডনীর অবস্থা, প্রোস্টেটের আকার, মুত্রথলী ঠিকমত খালি হওয়া না হওয়া বোঝা যায়।

ঙ. ইউরোডাইনামিকস:

সামান্য কিছু ক্ষেত্রে  প্রয়োজন হতে পারে 

 

নিজের করণীয়:

-         প্রস্রাবের সমস্যা সামান্য হলে ঘাবড়াবার কিছু নেই। অনেক সময় পানি কম খাওয়ার জন্যও সমস্যা হতে পারে। প্রতিদিন কমপক্ষে ২ লিটার পানি পান করতে হবে।

-         কপি, চা, এলকোহল ইত্যাদি কম খাবার অভ্যাস করতে হবে, বিশেষত রাতে।

-         যদি প্রস্রাবের পর  ফোটা ফোটা প্রস্রাব পড়ে, সে ক্ষেত্রে অন্ডকোষের গোড়ার অংশ থেকে আঙ্গুল দিয়ে মূত্রনালীর মাথা পর্যন্ত ম্যাসেজ করলে  উপকার পাওয়া যায়।

-         প্রস্রাব শেষ করার পরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলে ফোটা ফোটা পড়ার সমস্যা কম হবে।

-         তলপেটের কিছু ব্যায়াম করতে হবে।

 

ঔষধ দ্বারা চিকিৎসা:

প্রস্রাবের সমস্যার নানা ধরনের ঔষধ আছে, যা নানা সাহায্য করে। যেমন: 

-         কিছু ঔষধ মুত্রনালী ও প্রোস্টেটের মাংসপেশীকে শিথীল করে, ফলে সংকুচিত কম হয়।

-         কিছু ঔষধ প্রোস্টেটের আকার বড় হওয়া বন্ধ করে, আকৃতি ছোট হতে সাহায্য করে।

-          à¦•à§‹à¦¨ কোন ঔষধ প্রসাবের থলির হঠাৎ সংকোচনকে বাধা দেয়, ফলে হঠাৎ প্রবল প্রসাবের চাপ হয় না।

-         তবে প্রেস্টেটের আকার খুব বড় হলে বা ঔষধে কাজ না করলে অপারেশন করে প্রেস্টেটে কেটে ফেলা হয়, বা  কেটে মুত্রনালী পথকে মোটা করা হয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে TURP, TUIP বা OPEN ENUCLIETIVE

   PROSTATECTOMY ইত্যাদি  à¦§à¦°à¦¨à§‡à¦° অপারেশন, করা হয়।

-         এ ছাড়াও লেজার রিসেকশন উইথ সেপারাইজেশন বর্তমানে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

         

যা মনে রাখতে হবে:

-   প্রস্টেট পুন:প্রজননতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা শুক্রানুকে খাবার জোগায় ও দ্রুত বের হতে সাহায্য করে।

-   অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুরুষদের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দেয়।

-   প্রস্রাবের সমস্যা হলে সমাধানের জন্য জীবনযাত্রার পরিবর্তন, ঔষধ বা অপারেশন বা সবগুলির প্রয়োজন হতে পারে

-   যদি মুত্রনালী দিয়ে রক্ত বের হয়, প্রসাব করতে ব্যাথা হয়

-   হঠাৎ প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়

-    à¦ªà§à¦°à¦¸à§à¦°à¦¾à¦¬ ধরে রাখা যায় না এ সব ক্ষেত্রে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে।

 

09-10-2013 রোগ ব্যাধি

পলিপ

 

পলিপ হলো যে কোন স্থানে আবরনী কলাসহ বের হয়ে আসা একটি বর্ধিতাংশ, যা দেখতে অনেকটা চিকন বোটা দিয়ে ঝুলে থাকা একটি ফলের মত দেখায়। শরীরের যে কোন স্থানেই পলিপ হতে পারে, তবে সাধারণত নাকের ভেতরের দিকে, ক্ষদ্রান্ত্রে এবং জরায়ুর ভেতরে পলিপ বেশি দেখা যায়। পলিপ ১টি থাকতে পারে, অথবা অনেকগুলি একত্রে গুচ্ছাকারে থাকতে পারে। বেশিরভাগ পলিপ তেমন ক্ষতিকর নয়, তবে সামান্য পলিপ আছে যা পরবর্তিতে ক্যান্সারের রূপ নেয়।

 

১। নাকের ভেতরের পলিপ:

চিত্রঃ নাকের ভেতরে পালিপ

 

নাকের ভেতরে পালিপ অনেক সময় বড় হয়ে নাক দিয়ে শ্বাস প্রশ্বাসে বাধার সৃষ্টি করে। বিশেষ করে যাদের এলার্জির সমস্যা বেশি, তাদের নাকে পলিপ হবার ঝুঁকি বেশি। এদের নাকের সাইনাসের আবরণ খুব দ্রুত  বাড়তে থাকে এবং কিছু কিছু অংশ এত দ্রুত বৃদ্ধি পায় যে, আশে পাশের আবরণ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে পলিপের আকার ধারণ  করে। নাকের পলিপ বিভিন্ন ধরনের জটিলতা তৈরী করে। যেমন: সাইনোসাইটিস। নাকের পলিপের লক্ষণগুলি হল:

-         নাক বন্ধ থাকা

-         নাক দিয়ে অতিরিক্ত পরিমাণ নিঃসরন

-         নাকে ঘ্রাণ বা গন্ধ কম অনুভূত হওয়া

-         মাথা ব্যাথা

২।  à¦•à§‹à¦²à§‹à¦°à§‡à¦•à¦Ÿà¦¾à¦² পলিপ :

খাদ্যনালীর ভেতরের পলিপ সাধারণত ক্ষুদ্রান্ত্রে ও মলাশয়ে হেত দেখা যায়্‌ এর প্রকৃত কারণ অজানা, তবে খাদ্যাভাস, জীবন যাপন এবং জীনগত কারণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।

চিত্রঃ রেক্টাল পলিপ

 

মূলত ২ ধরনের পলিপ দেখা যায়:

ক. এডেনোমেটাস পলিপ

খ. হাইপারপ্লাসটিক পলিপ

    গবেষনায় দেখা যায় প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ জনের এডেনোমেটাস পলিপ আছে এবং বেশিরভাগ বেলায়ই তা কোন সমস্যা সৃষ্টি করে না। তবে, এদের মধ্যে কোনটিকে বিশেষ করে সবচেয়ে বড়টি দীর্ঘসময পরে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। অন্যদিকে হাইপারপ্লাস্টিক পলিপ ও বেশ দেখা যায়, তবে এরা সাধারণত ক্ষতিকর হয় না। তবে, হাইপাপ্লাস্টিক পলিপের মধ্যেও এডেনোমা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ক্যান্সার হবার ঝুঁকি থাকে। এদেরকে মিক্সড হাইপারপ্লাস্টিক এডেনোমেটাস পলিপ বলে। সাধারণত কোলোরেকটাল পলিপের তেমন কোন লক্ষণ থাকে না, তবে যা যা হতে পারে তা হল :

-         পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া

-         পায়খানার সাথে মিউকাস নিঃসরন হওয়া

-         পাতলা পায়খানা বা কোষ্টকাঠিন্য

-         তলপেটে ব্যাথা ইত্যাদি।

 

৩। এন্ডোমেট্রিয়াল পলিপ:

জরায়ুর ভেতর দিকের আবরনের পলিপ হতে পারে। তবে অল্প বয়সে খুব কম দেখা যায়, বয়স্কদের ক্ষেত্রেই বেশি হয়। আবার মেনোপজের পরেও খুব কম দেখা যায়।

 

 

এই পলিপের জন্য অনেক সময় ফাইব্রয়েড ইউটেরাস রোগের মত লক্ষণ হতে পারে। যেমন:

·        অনিয়মিত মাসিক

·        দুই মাসিকের মাঝখানে হালকা রক্ত  à¦­à¦¾à¦™à§à¦—া

·        মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্ত যাওয়া (মেনোরেজিয়া)

 

রোগ নির্ণয়:

ক) নাকের পলিপ:

সাধারণত বাইরে থেকেই দেখা যায়।

খ) কোলেরেকটাল পলিপ:

কোলোনোস্কপি

বেরিয়াম মিল এক্স-রে

গ) এন্ডোমেট্রিয়াল পলিপ:

বেশ কয়েবভাবে করা যায়, যেমন:

- জরায়ুর ভেতরের আবরনী কলা মাইক্রোস্কোপে পরীক্ষা

- হিসটেরোস্কোপী (বিশেষ যন্ত্র  যাতে ক্যামেরা লাগানো আছে এবং তা জরুয়ু মুখ দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দেখা হয়।।

- আলট্রাসনোগ্রাফী

- হিস্টেরোগ্রাফী: (বিশেষ ধরনের এক্স-রে)

 

চিকিৎসা: 

ক)  নাকের পলিপ  ; 

   (১) স্টেরয়েড ব্যবহার করে, বৃদ্ধি,রোধ করা

    (২) অপারেশন করে কেটে ফেলা

    (৩) এলার্জি, হে-ফিভার খাকলে তার চিকিৎসা করা যাতে পরবর্তীতে না হয়।

 

খ)  কোলোরেক্টাল পলিপ:

1)     অপারেশন করে কেটে ফেলা

2)     কোলনোস্কপি করার সময় কেটে বা পুড়িয়ে ফেলা

3)    পরে পলিপগুলি ক্যান্সারের জন্য পরীক্ষা করতে হবে।

 

 

জটিলতার মধ্যে: রক্তক্ষরণ, মলাশয়ে ক্ষত হতে পারে।

গ) এন্ডোমেট্রিয়াল পলিপ:

কিউরেটজ নামক অপারেশনের মাধ্যমে পলিপ অপারেশন করা হয় এবং সাথে সাথে এন্ডামেট্রিয়ামও ফেলে দেয়া হয়।

 

যা যা মনে রাখা প্রয়োজন:

-         পলিপ যে কোন স্থানে হতে পারে তবে, নাকের ভেতর, জরায়ুর ভেতরে এবং খাদ্যনালীর ভেতরে বিশেষত মলাশয়ে বেশি দেখা যায়।

09-10-2013 রোগ ব্যাধি

প্লাস্টারের যত্ন

 

 

আঘাত বা দূর্ঘটনায় পড়ে শরীরের হাড় ভেঙ্গে যাওয়া খুবই পরিচিত একটি ঘটনা। সঠিক যত্ন নিলে ভাঙ্গা হাড় নির্দিষ্ট সময় পরে নিজে থেকেই জোড়া লাগে। তবে যে স্থানটি ভেঙ্গে গেছে, ঐ স্থানটি যাতে সহজে এবং সঠিকভাবে জোড়া লাগে সে জন্য প্লাস্টার কাস্ট দেয়া হয়।

গড়ে প্লাস্টার কাস্ট প্রায় ৬ সপ্তাহ রাখা লাগে। তবে তা কম বা বেশি দিন রাখার প্রয়োজন হতে পারে, যা নির্ভর করে রোগীর বয়স, শরীর স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং শরীরের কোন হাড় ভেঙ্গেছে তার উপর। প্লাস্টার দেয়া অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হয় -হাড় ঠিকমত জোড়া লাগছে কিনা অথবা প্লাস্টার ঠিকমত আছে কিনা তা জানার জন্য এবং অনেক সময় এক্স-রে করে দেখার প্রয়োজন হয়।

 

সাধারণ কিছু সমস্যাঃ

প্লাস্টার কাস্ট দেয়া থাকলে কিছু কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমনঃ

ব্যাথাঃ

মূলত হাড় ভাঙ্গার ব্যাথা খুবই তীব্র ।

তবে প্লাস্টার দিলে ধীরে ধীরে ব্যাথা কমতে থাকে। মূলত প্লাস্টার এর ফলে ভাঙ্গা হাড়ের নচাচড়া বন্ধ হয় এবং শরীরের ঐ অংশটি বিশ্রাম পায়, তাই ব্যাথা কমতে থাকে।

চুলকানিঃ

শরীরের প্লাস্টার লাগানো অংশে বেশ চুলকানী হয়, তবে তা স্বাভাবিক এবং ধীরে ধীরে কমে আসে।

 

ভাঙ্গা অংশের যত্নঃ

ভাঙ্গা হাড়ের জোড়া লাগতে, যাতে স্থানটি না নড়ে এবং সঠিক পজিশন থাকে সে জন্যই মূলত প্লাস্টার দেয়া হয়। তবে প্লাস্টার খুব টাইট হলে বেশ কিছু সমস্যা হতে পারে। যেমন : রক্ত চলাচলে সমস্যা, হাত পা ফুলে যাওয়া ইত্যাদি। সেজন্য-

-         হাতে প্লাস্টার থাকলে মাঝে মাঝে হাতের আঙ্গুলগুলি নাড়াতে হবে।

-         পায়ে প্লাস্টার করা থাকলে পায়ের আঙ্গুলগুলি মাঝে মাঝেই নাড়াতে হবে।

-         প্লাস্টার করা অংশটি উঁচু করে ধরে রাখতে হবে, বিশেষত প্রথম ২ দিন ৪৮ ঘন্টা, নইলে ঐ অংশে পানি জমে ফুলে যেতে পারে। যেমন : পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে পা উঁচু রাখা দড়ি দিয়ে হাতের প্লাস্টার উঁচু করে ঝুলিয়ে রাখা ইত্যাদি করতে হবে, তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।

 

প্লাস্টারের যত্নঃ

-         প্লাস্টার ঠিকমত শক্ত হতে সময় লাগে। তাই শুরুতে বিশ্রাম নিতে হবে, প্লাস্টারের উপর চাপ দেয়া যাবে না।

 

  

-         প্লাস্টার শুকনো রাখতে হবে। গোসল বা গা মোছার সময় ভিজে  যাবার সম্ভাবনা থাকে, তাই এই সময় মোটা প্লাষ্টিকের ব্যাগ দ্বারা পুরো  প্লাস্টার ঢেকে তার মাথা টাইট রাবার ব্যান্ড দিয়ে বেঁধে গোসল করতে হবে।

-         বৃষ্টিতে প্লাস্টার সহ ভেজা যাবে না।

-         প্লাস্টারের ভেতরে কোন কাঠি বা কোন কিছু প্রবেশ করানো যাবে না। এতে চামড়ার ক্ষতি হবে।

-         প্লাস্টারে শক্ত কিছু দিয়ে বাড়ি দেয়া বা ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করা যাবে না।

-         প্লাস্টারে ভর দিয়ে হাটা ঠিক না। প্রয়োজনে ক্র্যাচ ব্যবহার করে হাটতে পারেন।

-         প্লাস্টার করা হাতে ভারী জিনিস তোলা ঠিক না, কেননা ভেতরের হাড় তখনও সঠিকভাবে জোড়া লাগেনি।

 

কখন দ্রুত চিকিৎসার জন্য যাবেনঃ

-         প্লাস্টার দেবার পর পেইন কিলার বা ব্যাথা নাশক ঔষধ থেয়েও যদি ব্যাথা না কমে।

-         প্লাস্টার করা হাত বা পায়ের আঙ্গুল যদি সাদা বা নীল বর্ন ধারণ করে।

-         হাত বা পায়ের আগুল নাড়ানো যাচ্ছে না।

-         হাত বা পায়ের আঙ্গুল নাড়াতে খুব ব্যাথা হচ্ছে অথবা অবশ বোধ হচ্ছে অধবা সুই ফোটানোর মত যন্ত্রণা হচ্ছে।

-         অথবা প্লাস্টার ভিজে নরম হয়ে গেছে বা ভেঙ্গে গেছে।

 

প্লাস্টার খুলে ফেলার পর করণীয়ঃ

-         সাধারণত ঐ হাত বা পায়ে কিছুটা দূর্বলতা থাকে, নড়াচাড়া করতে কষ্ট হয়। এই সমস্যাটি অল্প কিছু দিন পরই চলে যায়। স্বাভাবিক কাজ কর্ম করা যায়।

-         মাঝে মাঝে ঐ হাত বা পায়ের ফিজিওথেরাপীর প্রয়োজন হয়। এতে মাংসপেশীর শক্তি, দৃঢ়তা, ব্যালান্স, অস্থিসন্ধির নড়াচড়া ঠিক হয়ে আসে।

-         এ অবস্থায়ও হাড়ের ভাঙ্গা অংশের ক্ষয় পূরণ হতে থাকে। তাই ভারী কাজ করা আরও ১ মাসের জন্য বন্ধ রাখা উচিত।

-         ভাঙ্গা অংশে হাড়টিতে বাড়তি উঁচু অংশের মত কিছু মনে হয়। মূলত ঐ উঁচুটি হল নতুন গঠিত হাড় যা ধীরে ধীরে আসল হাড়ের আকৃতি লাভ করবে।

 

যা মনে রাখা প্রয়োজনঃ

-         প্লাস্টার করা কিছুটা উঁচু করে রাখতে হবে। বিশেষত প্রথম ৪৮ ঘন্টা, নতুবা তা ফুলে উঠতে পারে

-         সাধারণত প্লাস্টার  à§¬ সপ্তাহ রাখা লাগে। তবে তা কম  বা বেশি রাখা নির্ভর করে রোগীর বয়স, স্বাস্থ্য বা শরীরের কোন হাড় ভেঙেছে ও কতটুকু ভেঙেছে তার উপর।

-         প্লাস্টার খোলার  ১ মাস এবং প্লাস্টার থাকা  অবস্থায় আহত অংশে ভারী কাজ করা নিষেধ কেননা এই পুরো সময় হাড় শক্ত হতে থাকে, ক্ষয়পূরণ হতে থাকে।

 

21-08-2013 রোগ ব্যাধি

পিত্তথলির পাথর

 

 

পিত্তথলির ভেতরে ছোট ছোট পাথর হয় যা মূলত কোলেস্টেরল, বাইল পিগমেন্ট ও ক্যালসিয়াম এর লবন দ্বারা একক বা যৌথভাবে গঠিত। পিত্তথলি হল ১টি ছোট থলে বা ব্যাগের মত, যার ভেতরে পিত্তরস জমা থাকে। পিত্তরস তৈরী হয় যকৃতে, আর উহা মূলত চর্বি জাতীয় খাবারের হজমে সহায়তা করে।

    পিত্তপাথর খুবই কমন একটি রোগ, বিশেষ করে ৫০ বছরের উর্দ্ধে শতকরা ১২ জনের পিত্তপাথর পাওয়া যায়। পিত্তপাথর হবার মূল কারণ হল অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের ক্রিস্টালাইজেশন এবং পিত্তথলি পুরোপুরি খালি হতে না পারা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীর তেমন কোন লক্ষন প্রকাশিত হয় না,তবে যদি পাথর দ্বারা নালী বন্ধ হয়ে যায়, বা পিত্তথলির প্রদাহ হয় বা প্যানক্রিয়াস (অগ্নাশয়) এর প্রদাহ হয়,সে ক্ষেত্রে মেডিকেল চিকিৎসা বা অপারেশন প্রয়োজন।

 

লক্ষণসমূহঃ

শতকরা ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে পিত্তপাথরের জন্য তেমন কোন লক্ষণ প্রকাশিত হয় না। তবে যে সব লক্ষণ প্রকাশ পায় তা হলঃ

·        পেটে ও পিঠের মাঝখানে প্রচন্ড ব্যাথা।

·        অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাদ্য গ্রহনের পর ব্যথা বেড়ে যাওয়া।

·        জন্ডিস।

·        জ্বর, ব্যাথা।

 

প্রকারভেদ ;

মূলত তিন ধরনের পাথর তৈরী হয়।

 

১। কোলেস্টেরল এর পাথরঃ

মূলত কোলেস্টেরল দ্বারা তৈরী। যে কোন প্রকারের হতে পারে, এমনকি বেশ বড় হয়ে পিত্তনালী বন্ধ করে দিতে পারে।

২। পিগমেন্ট পাথরঃ

বাইল এর মধ্যে বিশেষ পিগমেন্ট বা রং জাতীয় পদার্থ থাকায় এর রং হয় সবুজাভ বাদামী। এ ধরণের পাথর সাধারণত ছোট হয় কিন্তু সংখ্যায় অনেক বেশী হয়

৩। মিশ্র ধরনের পাথরঃ

এই ধরনের পাথরের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশী। এই পাথর কোলেস্টেরল এবং ক্যালসিয়াম লবনের মিশ্রনে তৈরী। ধাপে ধাপে একত্রে বেশ কিছু পাথর তৈরী হয়।

 

কারণ সমূহঃ

পুরুষের চেয়ে মহিলাদের মধ্যে হবার ঝুঁকি বেশী। এছাড়া মোটা ও যাদের পরিবারে পিত্তপাথর হবার ইতিহাস আছে তাদের হবার ঝুঁকি বেশী থাকে। পিত্তপাথর হবার একক কোন কারণ নেই। কারও কারও ক্ষেত্রে যকৃত বা লিভার বেশী পরিমানে কোলেস্টেরল তৈরী করে,যা একত্রিত হয়ে ক্রিস্টাল গঠন করে,পরবর্তিতে পাথরে পরিনত হয়।আবার অন্যদের ক্ষেত্রে পিত্তথলি সময়ে সময়ে পুরোপুরি খালি না হতে পারার কারণে পিত্তরস জমা থাকতে থাকতে অথবা পিত্তরসের উপাদানের পরিবর্তনের ফলে পাথর তৈরী হয়।

 

পিত্তপাথরের জটিলতা সমূহঃ

যদি পিত্ত পাথরের কারণে কোন অসুবিধা বা কোন লক্ষণ প্রকাশিত না হয় সে ক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্য খুব ব্যস্ত হবার কারণ নেই।যে যে জটিলতায় দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন তা হল:-

ক) বিলিয়ারী কোলিকঃ

কোন পিত্তপাথর যদি মলের মুখে, সিস্টিক ডাক্টে আটকে যায়, তবে প্রচন্ড ব্যাথ্যা, জ্বর ইত্যাদি হতে পারে।

খ) কোলোসিস্টাইসিসঃ

পিত্তথলীর নালী বন্ধ হয়ে গেলে ইনফেকশন হতে পারে, প্রদাহ হতে পারে। এক্ষেত্রে পেটে প্রচন্ড ব্যাথা, বমি ভাব, জ্বর, বমি ইত্যাদি হতে পারে।

 

 

গ) জন্ডিসঃ

পিত্তরস খাদ্যনালীতে যে নালী পথে পৌছে, পাথরের কারনে সেই নালী বন্ধ হয়ে গেলে পিত্তরস রক্তে মিশে যায়,ফলে চামড়া,চোখ,হাতেরতালু, হলুদাভ রং ধারণ করে।প্রস্রাবের রংও হলুদ বা বাদামী হয়।

ঘ) প্যানক্রিয়াটাইটিসঃ

পিত্তপাথর নিচে গিয়ে যদি অগ্নাশয়ের নালী বন্ধ করে দেয়, সে ক্ষেত্রে অগ্নাশয় নি:সৃত রস খাদ্যনালীতে পৌছাতে না পেরে অগ্নাশয়কেই হজম করা শুরু করে, ফলে প্রচন্ড ব্যাথা হয় ও পেটের ভেতরে রস নি:সৃত হয়।

ঙ) কোলানজাইটিসঃ

কোন বাইল ডাক্ট (নালী) পাথরের কারণে বন্ধ হয়ে গেলে যদি তাতে ইনফেকশন হয়, সে ক্ষেত্রে প্রচন্ড ব্যাথা, জ্বর, কাপুনী হয়, জন্ডিস দেখা দেয়।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

পিত্ত পাথর নির্ণয়ের জন্য নিচের পরীক্ষা গুলি করা প্রয়োজন।

ক) শারিরীক পরীক্ষা।

খ) এক্স -রে।

গ) আল্ট্রাসনোগ্রাফ

ঘ) ইআরসিপি

ঙ) এইচ,আই.ডিএ  à¦¸à§à¦•à§à¦¯à¦¾à¦¨à¥¤

চ) এমআরসিপি.(এমআরআই অফ লিভার বিলিয়ারীট্রাক্ট,প্যানক্রিয়াস)

 

চিকিৎসাঃ

পাথরের আকার, সংখ্যা, অবস্থান ও লক্ষন এর ওপর নির্ভর করে কী ধরনের চিকিৎসা হবে। যেমনঃ

- খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনঃ

চর্বি জাতীয় খাদ্য পরিহার করা, দুধ জাতীয় খাবার বর্জন করা।

- অপারেশনঃ

পিত্তথলি অপসারণ, বা বাইল ডাক্ট হতে পাথর অপসারন। পেট কেটে বা পেট ফুটা করে বিস্তারিত

-->

21-08-2013 রোগ ব্যাধি

পিত্তথলী অপসারন:

 

     

 

পিত্তথলীতে পাথর হলে এবং যদি তার লক্ষণ প্রকাশিত হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই থলিসহ পাথর অপসারন করা হয়। পিত্তথলী পিত্তরস ধারণ করে একে ঘনীভুত করে,যা চর্বি জাতীয় খাদ্য হজমে সাহায্য করে।তবে পিত্তথলী ফেলে দিলেও হজমে খুব একটা সমস্যা হয় না। পিত্তথলীর অপসারন ২ ভাবে করা যায়।

ক) পেট কেটে অপারেশন

খ) ল্যাপারোস্কপিক যন্ত্র দ্বারা পেট ফুটো করে অপসারন।

 

পিত্তপাথর থেকে যে ধরনের সমস্যা হতে পারেঃ

- পিত্তথলিতে ছোট বড় বিভিন্ন সাইজের বিভিন্ন ধরনের পাথর তৈরী হতে পারে। পাথরের আকার,অবস্থান,নড়াচড়ার উপর নির্ভর করে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে।যেমন :

১। পাথর পিত্তথলিতে আটকে গিয়ে বা কমন বাইল ডাক্টকে বন্ধ করে দিলে, পিত্তথলীর ইনফেকশন,জন্ডিস সহ ব্যাথা,বমি, জ্বর হতে পারে।

২। পাথর অগ্নাশয়ের নালীর মুখে আটকে গেলে প্যানক্রিয়াটাইটিস হলে প্রচন্ড ব্যাথা সহ পেট ফুলে যেতে পারে।

- যকৃতে প্রদাহ হতে পারে।

- পিত্তথলীতে ঘা সৃষ্টি হয়ে পরবর্তিতে ক্যান্সার হতে পারে।

 

অপারেশন পদ্ধতিঃ

অপারেশনের পূর্বে অবশ্যই অন্য কোন রোগ থাকলে বা নিয়মিত কোন ঔষধ খেলে তা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।সাধরণত ২ পদ্ধতিতে পিত্তপাথর ও পিত্তথলী অপসারন করা হয়।

ক)ল্যাপারোস্কপি খ)ল্যাপারোটমি

 

ক) ল্যাপারোস্কপিক কোলেসিস্টেকটমিঃ

 

 

·        পেটে মোট ৪টি ফুটো তৈরী করে তার ভেতর দিয়ে চিকন লম্বা যন্ত্র, লাইন, ক্যামেরা ইত্যাদি প্রবেশ করানো হয়।

·        একটি নালী দিয়ে হালকা চাপে পেটের ভেতরে ফাকা স্থানে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস প্রবেশ করিয়ে পেটের অঙ্গগুলি থেকে পেটের আবরনকে সরানো হয়।

·        লাইট ও ক্যামেরার মাধ্যমে ডাক্তারের কাছে পিত্তথলী সহ পেটের ভেতরের সবকিছু সম্মুখের টিভিতে ১০ গুন বড় আকারে দেখা দেয়।

·        পিত্তথলীর সাথে যুক্ত নালী ও রক্তনালীকে স্থায়ী ধাতব ক্লিপ দ্বারা আটকে দেয়া হয় ও কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়।

·        পিত্তথলীকে যকৃত থেকে ধীরে ধীরে ছাড়িয়ে আনা হয়।

·        এবার পাথর বা পুঁজ সহ পিত্তথলীকে ১টি বড় ফুটার মাধ্যমে পেটের বাইরে নিয়ে আসা হয়।

·        সবশেষে ক্যামেরা, মন্ত্র ও কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস বের করে আনা হয় এবং বড় বড় দুটি ফুটো সেলাই করা হয়, আর ছোট দুটি ফুটো আপনি আপনি বন্ধ হয়ে যায়।

 

খ) ওপেন কোলেসিস্টেকটোমিঃ

এ ক্ষেত্রে পেটের ডান পাজরের নিচ বরাবর চামড়া,মাংস কেটে একই পদ্ধতিতে পিত্তথলী ও পাথরকে যকৃত থেকে আলাদা করে বের করে নিয়ে আসা হয়।অনেক ক্ষেত্রে ল্যাপারোস্কপি ব্যার্থ হলে আবার এই পদ্ধতিতে অপারেশন করা হয়।

 

অপারেশনের পরবর্তী সমস্যাঃ

১। কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের জন্য কাধে ব্যাথা হতে পারে।

২। অজ্ঞান করার কারণে কাশি হতে পারে।

৩। অপারেশনের স্থানে বা ফুটো করা স্থানে ব্যাথা হতে পারে। এসকল ক্ষেত্রে করণীয়:

·        নিয়ম অনুযায়ী ব্যাথার ঔষধ ও এন্টিবায়োটিক সেবন।

·        যত দ্রুত সম্ভব হাঁটাচলা শুরু করা।

·        কাশি দিয়ে কফ বের করা।

ল্যাপারোস্কপি হলে ১দিন পরই রোগী বাসায় যেতে পারে।ওপেন কোলেসিস্টেকটমি হলে ৫-৭ দিন হাসপাতালে থাকা লাগে।

 

সম্ভাব্য জটিলতা সমূহঃ

সকল অপারেশনেই কিছু না কিছু জটিলতা থাকতে পারে। এক্ষেত্রে যা হতে পারে-

- রক্তক্ষরন

- ইনফেকশন

- বাইল ভাক্টে আঘাত

- লিভারে আঘাত

- খাদ্যনালীতে আঘাত বা ফুটো

- রক্তনালী ছিড়ে যাওয়া

- পেটের ভেতর পিত্তরস ক্ষরনহওয়া

 

অপারেশন পরবর্তি নিজের যত্নঃ

- ৪-৫ দিন যত সম্ভব বিশ্রাম নেয়া।

- কিছুদিন ভারী কাজকর্ম,ওজন নেয়া থেকে বিরত থাকা।

- কিছুদিন পেটে ব্যাথা,পেট ফাপা, হজমে সমস্যা হতে পারে। তা নিয়ে দু:শ্চিন্তা না করা।

- অপারেশনের ৭-১০ দিন পর সার্জনের সাথে সাক্ষাত করা এবং কোন জটিলতা থাকলে তার সমাধান করা।

 

অন্যান্য পদ্ধতিঃ

অপারেশন ছাড়া যেভাবে পাথর বের করা সম্ভব তা হলঃ

১) শব্দ তরঙ্গ প্রয়োগ করে পাথর ভেঙ্গে পায়খানার সাথে বের করে দেয়া।

২) ঔষধের মাধ্যমে পাথর গলিয়ে ফেলা।

    তবে দুই ক্ষেত্রেই স্বীকৃত সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেশী।

 

যা মনে রাখা প্রয়োজনঃ

১) পিত্তথলীতে পিত্তরস জমা থেকে ঘনীভুত হয়,যা চর্বি জাতীয় খাদ্যকে হজমে সাহায্য করে।

২) ৫০ বছরের অধিক বয়স্কদের মধ্যে পিত্তপাথর হবার সম্ভাবনা শতকরা ১০-১২ ভাগ।

৩) পেট কেটে বা পেট ফুটো করে এই দুই উপায়ে পিত্তপাথর অপসারন করা হয়।

 

পিত্তথলী অপসারন:

 

     

 

পিত্তথলীতে পাথর হলে এবং যদি তার লক্ষণ প্রকাশিত হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই থলিসহ পাথর অপসারন করা হয়। পিত্তথলী পিত্তরস ধারণ করে একে ঘনীভুত করে,যা চর্বি জাতীয় খাদ্য হজমে সাহায্য করে।তবে পিত্তথলী ফেলে দিলেও হজমে খুব একটা সমস্যা হয় না। পিত্তথলীর অপসারন ২ ভাবে করা যায়।

ক) পেট কেটে অপারেশন

খ) ল্যাপারোস্কপিক যন্ত্র দ্বারা পেট ফুটো করে অপসারন।

 

পিত্তপাথর থেকে যে ধরনের সমস্যা হতে পারেঃ

- পিত্তথলিতে ছোট বড় বিভিন্ন সাইজের বিভিন্ন ধরনের পাথর তৈরী হতে পারে। পাথরের আকার,অবস্থান,নড়াচড়ার উপর নির্ভর করে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে।যেমন :

১। পাথর পিত্তথলিতে আটকে গিয়ে বা কমন বাইল ডাক্টকে বন্ধ করে দিলে, পিত্তথলীর ইনফেকশন,জন্ডিস সহ ব্যাথা,বমি, জ্বর হতে পারে।

২। পাথর অগ্নাশয়ের নালীর মুখে আটকে গেলে প্যানক্রিয়াটাইটিস হলে প্রচন্ড ব্যাথা সহ পেট ফুলে যেতে পারে।

- যকৃতে প্রদাহ হতে পারে।

- পিত্তথলীতে ঘা সৃষ্টি হয়ে পরবর্তিতে ক্যান্সার হতে পারে।

 

অপারেশন পদ্ধতিঃ

অপারেশনের পূর্বে অবশ্যই অন্য কোন রোগ থাকলে বা নিয়মিত কোন ঔষধ খেলে তা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।সাধরণত ২ পদ্ধতিতে পিত্তপাথর ও পিত্তথলী অপসারন করা হয়।

ক)ল্যাপারোস্কপি খ)ল্যাপারোটমি

 

ক) ল্যাপারোস্কপিক কোলেসিস্টেকটমিঃ

 

 

·        পেটে মোট ৪টি ফুটো তৈরী করে তার ভেতর দিয়ে চিকন লম্বা যন্ত্র, লাইন, ক্যামেরা ইত্যাদি প্রবেশ করানো হয়।

·        একটি নালী দিয়ে হালকা চাপে পেটের ভেতরে ফাকা স্থানে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস প্রবেশ করিয়ে পেটের অঙ্গগুলি থেকে পেটের আবরনকে সরানো হয়।

·        লাইট ও ক্যামেরার মাধ্যমে ডাক্তারের কাছে পিত্তথলী সহ পেটের ভেতরের সবকিছু সম্মুখের টিভিতে ১০ গুন বড় আকারে দেখা দেয়।

·        পিত্তথলীর সাথে যুক্ত নালী ও রক্তনালীকে স্থায়ী ধাতব ক্লিপ দ্বারা আটকে দেয়া হয় ও কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়।

·        পিত্তথলীকে যকৃত থেকে ধীরে ধীরে ছাড়িয়ে আনা হয়।

·        এবার পাথর বা পুঁজ সহ পিত্তথলীকে ১টি বড় ফুটার মাধ্যমে পেটের বাইরে নিয়ে আসা হয়।

·        সবশেষে ক্যামেরা, মন্ত্র ও কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস বের করে আনা হয় এবং বড় বড় দুটি ফুটো সেলাই করা হয়, আর ছোট দুটি ফুটো আপনি আপনি বন্ধ হয়ে যায়।

 

খ) ওপেন কোলেসিস্টেকটোমিঃ

এ ক্ষেত্রে পেটের ডান পাজরের নিচ বরাবর চামড়া,মাংস কেটে একই পদ্ধতিতে পিত্তথলী ও পাথরকে যকৃত থেকে আলাদা করে বের করে নিয়ে আসা হয়।অনেক ক্ষেত্রে ল্যাপারোস্কপি ব্যার্থ হলে আবার এই পদ্ধতিতে অপারেশন করা হয়।

 

অপারেশনের পরবর্তী সমস্যাঃ

১। কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের জন্য কাধে ব্যাথা হতে পারে।

২। অজ্ঞান করার কারণে কাশি হতে পারে।

৩। অপারেশনের স্থানে বা ফুটো করা স্থানে ব্যাথা হতে পারে। এসকল ক্ষেত্রে করণীয়:

·        নিয়ম অনুযায়ী ব্যাথার ঔষধ ও এন্টিবায়োটিক সেবন।

·        যত দ্রুত সম্ভব হাঁটাচলা শুরু করা।

·        কাশি দিয়ে কফ বের করা।

ল্যাপারোস্কপি হলে ১দিন পরই রোগী বাসায় যেতে পারে।ওপেন কোলেসিস্টেকটমি হলে ৫-৭ দিন হাসপাতালে থাকা লাগে।

 

সম্ভাব্য জটিলতা সমূহঃ

সকল অপারেশনেই কিছু না কিছু জটিলতা থাকতে পারে। এক্ষেত্রে যা হতে পারে-

- রক্তক্ষরন

- ইনফেকশন

- বাইল ভাক্টে আঘাত

- লিভারে আঘাত

- খাদ্যনালীতে আঘাত বা ফুটো

- রক্তনালী ছিড়ে যাওয়া

- পেটের ভেতর পিত্তরস ক্ষরনহওয়া

 

অপারেশন পরবর্তি নিজের যত্নঃ

- ৪-৫ দিন যত সম্ভব বিশ্রাম নেয়া।

- কিছুদিন ভারী কাজকর্ম,ওজন নেয়া থেকে বিরত থাকা।

- কিছুদিন পেটে ব্যাথা,পেট ফাপা, হজমে সমস্যা হতে পারে। তা নিয়ে দু:শ্চিন্তা না করা।

- অপারেশনের ৭-১০ দিন পর সার্জনের সাথে সাক্ষাত করা এবং কোন জটিলতা থাকলে তার সমাধান করা।

 

অন্যান্য পদ্ধতিঃ

অপারেশন ছাড়া যেভাবে পাথর বের করা সম্ভব তা হলঃ

১) শব্দ তরঙ্গ প্রয়োগ করে পাথর ভেঙ্গে পায়খানার সাথে বের করে দেয়া।

২) ঔষধের মাধ্যমে পাথর গলিয়ে ফেলা।

    তবে দুই ক্ষেত্রেই স্বীকৃত সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেশী।

 

যা মনে রাখা প্রয়োজনঃ

১) পিত্তথলীতে পিত্তরস জমা থেকে ঘনীভুত হয়,যা চর্বি জাতীয় খাদ্যকে হজমে সাহায্য করে।

২) ৫০ বছরের অধিক বয়স্কদের মধ্যে পিত্তপাথর হবার সম্ভাবনা শতকরা ১০-১২ ভাগ।

৩) পেট কেটে বা পেট ফুটো করে এই দুই উপায়ে পিত্তপাথর অপসারন করা হয়।

 

21-08-2013 রোগ ব্যাধি

কর্ণ অথবা সেলাস

 

 

কর্ণ অথবা সেলাস হলো পায়ের  উপর এ ধরনের শক্ত, মোটা দাগ বা ক্ষত, যা সাধারণত  চাপের দ্বারা অথবা ঘর্ষন থেকে হয়। কর্ণ এবং সেলাস শরীরের ভেতরের অসুস্থ্যতার চিহ্ন প্রকাশ করে যেমন: অস্থি সন্ধিতে অস্বাভাবিকতা| কিছু কিছু মানুষ কর্ণ অথবা সেলাসের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে, যেমন: যারা অনেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকে, যারা ঢিলাঢালা জুতা পড়ে।  পডিয়াস্ট্রিট গণ কর্ন এবং সেলাসের চিকিৎসায় সাহায্য করে।

কর্ণ অথবা সেলাস শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতার একটি অংশ, যেটি শরীরের কোষসমূহকে রক্ষা করে। প্রেসারের কারণে যে সেলাস হয়, সেটি সরানোর পরও যদি না সারে, তাহলে সেলাস ব্যাথাযুক্ত হয়।

 à¦¯à¦¦à¦¿ চাপ একটি ছোট জায়গায় ঘনীভূত হয়, তখন শক্ত কর্ণ তৈরী হয়। কর্নের একটি কেন্দ্র বিন্দু থাকে। কর্ণ অথবা সেলাস সাধারণত পয়ের গোড়ালী, বৃদ্ধাঙ্গুলের নীচে, পায়ের আঙ্গুলের নীচে, আঙ্গুলের মাথায় হয়। নরম কর্ণগুলো দুই আঙ্গুলের মাঝে হয়, যেখানে চামড়া ভেজা ভেজা থাকে এবং শুকনা থাকার সম্ভাবনা পর্যাপ্ত নয়। মাঝে মাঝে কর্ণ এবং সেলাসের চাপের কারণে প্রদাহ সৃষ্টি হয় এবং যার ফলে আংশিক ব্যাথা, ফোলা এবং লালচেভাব দেখা যায়।

কর্ণ শরীরের ভেতরের অসুখের চিহ্ন হিসাবে প্রকাশ পায় যেমন: অস্থি সন্ধির অস্বাভাবিকতা, তাই নিজে নিজে এর চিকিৎসা না করে পেশাদার কারও সাহায্য নিতে হবে।

 

লক্ষনসমূহ:

 

-         পায়ে দাগ দাগ শক্ত চামড়া দেখা যায়।

-         শক্ত ছোট,  উঁচু জায়গা তৈরী হয়, যেখানে একটি কেন্দ্র থাকে।

-         সাদা এবং রাবারের মত চামড়া উঁচু হয়ে উঠে,

-         নরম কর্ণ দুই আঙ্গুলের মাঝে হয়।

-         মাঝে মাঝে সেলাস পায়ের ভিতরে ঢুকে যায়, তখর আর পায়ের পুরো অংশের ছড়ায় না।

-         যখন চাপ বা ঘর্ষন হয়, তখন ঐ জায়গায় ব্যাথা হয়।

 

কিছু মানুষ উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে:

যে কোন বয়সেই এটি হতে পারে, তবে তার মধ্যেও কেউ কেউ বেশি ঝুঁকিতে থাকে।

-         বয়স্ক মানুষ: বয়স হলে চামড়ার স্থিতিস্থাপকতা কমে যায় এবং চামড়ার নীচে চর্বি কমে যায়।

-         যারা অনেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকে, কারণ- শরীরের সব ভর পায়ের গোড়ালি বহন করে।

-         যারা পায়ে সমস্যা তাকে যেমন: (আর্থাইটিস, বাই-ইউনিয়ন) হাড়ের উদ্বৃ‌ত অংশ জুতার বা পার্শবর্তী আঙ্গুলের সাথে ঘর্ষনের ফলে সেলাস তৈরী হয়।

-         যারা পায়ের গোড়ালীঅথবা বৃদ্ধাঙ্গুলের উপর চাপ প্রুয়োগ করে তাদের এতে ঝুঁকি বেশি।

-         যারা উঁচু হিল পরে, টাইট জুতা অথবা বেশি লুজ ফিটিং জুতা পরে।

 

 

 

নিজে নিজে সেলাস অথবা  কর্ণের চিকিৎসা করা উচিত নয়:

শরীরের ভেতরের কোন অসুস্থ্যতা আছে কিনা তা না জেনে কর্ণের চিকিৎসা নিজে নিজে করা উচিত নয়। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা চামড়ার নীচের কোষগুলোকে স্বাভাবিক অবস্থায় চাপ, ক্ষত এবং চামড়া শক্ত হওয়া থেকে  রক্ষা করে। কিন্তু যদি এগুলো  সত্ত্বেও চাপ অথবা ঘর্ষণে কর্ণ তৈরী হয় এবং  এগুলো সরিয়ে নিলেও কর্ণ থেকে যায়, তখন কর্ণ বার বার হতে থাকে। এভাবে নিজে নিজে চিকিৎসা করলে  আশেপাশের ভালো কোষগুলো ও চামড়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কর্ণ বা সেলাস কাটা যাবে না। যদি কেউ এক্সিডেন্টালী কেটে ফেলে তাহলে তার মুজা বা জুতার সাথে ঘর্ষন লেগে ঐ জায়গায় প্রদাহ সৃষ্টি হয়।

 

21-08-2013 রোগ ব্যাধি

পা এর  ব্যাথা

 

 

পা এর আঘাত এবং ব্যাথা নানা কারণে নানা ভাবে হতে পারে। খেলাধূলা আঘাত ছাড়াও পা ও পায়ের  পাতা হাটা বা দৌড়াবার সময় সঠিকভাবে না ফেললেও পায়ে ব্যাথা হয়। পায়ে ব্যথার উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ হলঃ সিনস্প্লিন্ট,  à¦¸à¦¿à¦¸à¦¾à¦®à§Ÿà§‡à¦¡à¦¾à¦‡à¦Ÿà¦¿à¦¸, প্লান্টার ফ্যাসাইটিস ইত্যাদি।

 

ক)  সিনস্প্লিন্ট:

পায়ের হাটু থেকে গোড়ালী পর্যন্ত সম্মুখের  শক্ত হাড়যুক্ত স্থানটুকু বলে সিন। খেলাঘূলা করার সময় এবং পড়ে পায়ের সিনে ব্যাথা খুবই কমন। সিন এ অবস্থিত হাড়, মাংস, টেন্ডন, বা লিগামেন্ট ইত্যাদির যে কোনটিতে অথবা সংযোগ স্থলে ব্যাথা হতে পারে।

কারণ:

এই ব্যাথার মূল কারণ হল সঠিক নিয়মে পা, তালু গোড়ালী না ফেলে দৌড়ানো বা খেলাধূলা করা ওভার ট্রেইনিং বা ট্রেইনিং। তাছাড়া সঠিক জুতো না পড়া, সে স্থানে খেলা বা দৌড়ানো হচ্ছে তার অবস্থা ইত্যাদি অনেক বিষয়ের উপরই সিনস্প্লিন্ট হওয়া নির্ভর করে।

 

করণীয়:

ঠিকমত ট্রেইনিং নেয়া খেলা বা দৌড়ের আগে ওয়ার্ম আপ কার ইত্যাদি করলে ব্যাথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

 

খ)  ফুট পেইন (পা এর তলার ব্যাথা):

পা এর তলার বিভিন্ন ধরনের অংশের প্রদাহের জন্য মূলত এই ব্যাথা হয়।যেমন: সিসাময়েডাইটিস (বৃদ্ধাংগুলির সংযোগ স্থলের নিচের ছোট হাড়ের প্রদাহ) এবং প্লান্টার ফ্যাসাইটিস এর  মধ্যে অন্যতম। সকালে ঘুম থেকে উঠে পা ফেলতে কষ্ট হওয়া এটি প্লাস্টার ফ্যাসাইটিসের অন্যতম লক্ষণ।  দৌড়জনিত ব্যাথার মধ্যে এটি প্রায় শতকরা ১০ ভাগ। প্রথমে গোড়ালী ও পায়ের হালকা ব্যাথা হয়, পরবর্তীতে ব্যাথা আরও বেড়ে যায়।

কারণ:

সঠিক নিয়মে পা না ফেলা, সঠিক জুতা ব্যবহার না করা, সঠিক ট্রেইনিং টেকনিক না জানা ইত্যাদি কারণে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই এ সব সমস্যার সমাধান করলে, সঠিক জুতো ব্যবহার করলে রোগ অনেকটাই ভাল হয়।

 

তবে কখনও কখনও স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন নিতে হতে পারে। এমনকি অপারেশন করার ও প্রয়োজন হতে পারে।

 

গ)  ফ্ল্যাট ফিট বা ফলেন আর্চ:

পায়ের ভেতরের দিকের হাড় সাধারণত উঁজু গম্বুজের মত থাকে। এটি‌ কোন কারণে বসে গেলে বা উচ্চতা মারাত্মকভাবে কমে গেলে তাকে ফ্ল্যাট আর্চ বা ফলেন আর্চ বলে।

 

পূর্বে এই সমস্যাটিকে খুব বড় সমস্যা ধরা হলেও বর্তমানে প্রমাণিত যে, সঠিক নিয়মে    হাটলে হাই আর্চ বা ফ্লাট আর্চ কোনটিও তেমন কোন  কর্ণের সমস্যা সৃষ্টি করে না। বরং পায়ের আঘাত, ব্যাথা বা ক্ষত হবার অন্যতম কারণ সঠিক নিয়মে না হাটা।

 

 

21-08-2013 রোগ ব্যাধি

এপেনডিসাইটিস

এপেনডিক্স হল খুব চিকন j¤^v টিউবের মত সিকাম (বৃহদান্তের একটি অংশ) এর একটি বর্ধিতাংশ। এটি মূলত পেটের ডান দিকে নিচের অংশে থাকে।

অন্যান্ন পশুর ক্ষেত্রে এটি হজমে সাহায্য করলেও মানব দেহে এর কোন সুনির্দিষ্ট কাজ কি তা জানা যায় নি।  এপেনডিক্স এর ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ কে এপেনডিসাইটিস বলে।এতে রোগীর পেটে প্রচন্ড ব্যাথা, বমি সহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়। এটি একটি মারাত্বক বিপদজনক রোগ। এক্ষেত্রে জরূরী ভাবে অপারেশন করতে হয়।

নালী বন্ধ হবার কারণ:

এপেনডিক্সের নালীটি খুব চিকন। খাবার পর  শক্তপায়খানার অংশ গিয়ে নালীটি বন্ধ করতে পারে। বন্ধ হবার পর তা যদি ইনেফেকটেড হয়ে পড়ে, তখন এপেনডিক্স ফুলে উঠে এবং খাদ্য নালীর সাথের যোগাযোগ পথ বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে ইনফেনশনটি একটি বন্ধ প্রকোষ্ঠ (এপেনডিক্সের মধ্যে) আটক পড়ে এবং সঠিকভাবে চিকিৎসা না হলে এপেনডিক্সটি ফুলতে থাকে, ব্যাথা বাড়তে, এমনকি ভেতরে পুজ জমে এক পর্যায়ে ফেটে যেতে বা বাস্ট করতে পারে। অনেক গবেষনায় দেখা গেছে, যদি খাবারে ফাইবার বা আঁশ জাতীয় খাবার কম থাকে, সে ক্ষত্রে খাদ্যনালীতে খাদ্য বা পায়খানা খুব ধীরগতিতে চলার কারণে নালী  ব্লক হবাব চান্স বেশি। এনকক্ষেত্রে হজম না হাওয়া বাদাম বা বীজ জাতীয় বস্তু বা পাথরের কনা, এমনকি কেঁচো গিয়ে নালী বন্ধ করে বিপত্তি ঘটাতে পারে। অনেক সময় ভাইরাল ইনফেকশনে এপেনডিক্সে গোড়ার সব লিম্ফনোড/লসিকা গ্রন্থি ফুলে নালী বন্ধ করে এপেনডিসাইটিস করতে পারে।

এপেনডিসাইটিসের জটিলতা:

এপেনডিসাইটিস সঠিকভাবে চিকিৎসা না হলে তা ধীরে ধীরে ফুলতে থাকে, এমনকি বাস্ট হয়ে বা ফেটে ভেতরের সব পুজ বের হয়ে সমস্ত  পেটের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ইনফেকশনের পর থেকে ৩৬ ঘন্টা বা তার পরে যে কোন সময় এপনেডিক্স বাস্ট হতে পারে। এর ফলে জীবন হুমকীর সম্মূখীন হয়ে পড়ে।

রোগ নির্ণয় :

এপেনডিসাইটিস রোগ নিশ্চিতভাবে নির্ণয় বেশ কঠিন। কেননা এই রোগের লক্ষণগুলি অন্যান্য অনেক রোগ যেমন- গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস, একটোপিক প্রেগন্যান্সি বা বিভিন্ন ইনফেকশনের মত একই রকম লক্ষণ প্রকাশ করে।

তাই খুব সতর্কভাবে লক্ষণগুলি লক্ষ্য করা, শারিরিক পরীক্ষা প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা বা এক্স-রে করে অন্য রোগ আছে কিনা নিশ্চিত হওয়া, ইত্যদির মাধ্যমে যদি নিশ্চিত হওয়া না যায়, তথাপি এপেনডিসাইটিসের চিকিৎসা করা উচিত, যাতে কোন বড় দূর্ঘটনা না ঘটে।

চিকিৎসা:

সঠিক চিকিৎসা হল অপারেশন করে এপেনডিক্সটিকে ফেলে দেয়া। এই অপারেশনের বলে এপেনডিসেক্টমি। তলপেটে ছোট করে কেটে এপেনডিক্সটিকে বেধে কেটে ফেলে পেট সেলাই করে দেয়া হয়। বর্তমানে অনেকসময় পেট না কেটে ফুটো করে ল্যাপারোস্কপি যন্ত্রের  মাধ্যমে এপেনডিক্স অপারেশন করা হয়। আর যদি এপেনডিক্স ফেটে যায়- সেক্ষেত্রে ভেতর থেকে সব পুজ ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে ও ভালমানের এন্টিবায়োটিক দিতে হবে। ব্যাথার ঔষধ দিতে হবে।

     অপারেশনের পর সাধারণত ৩-৫ দিন হাসপাতালে থাকা লাগে। এপেনডিক্স অপারেশনের পর খাবার, হাটা বা কাজে হজমে কোন সমস্যা হয় না। কখনও কখনও অপারেশন করার মত অবস্থা  à¦¥à¦¾à¦•à§‡ না। তখন ইনজেকশন এন্টিবায়োটিকের মাধ্যমে আপাতত বা কনজারভেটিভ চিকিৎসা দেয়া হয়।

যা অবশ্যই মনে রাখতে হবে: 

- বৃহদান্তের সাথে যুক্ত ক্ষুদ্র ১টি নালী বা এপেনডিক্স এর ইনফেকশন হলে এপেনডিসাইটিস বলে।

- এটি একটি মারাত্মক রোগ, যার দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।

- অপারেশনের মাধ্যমে ইনফেকটেড এপেনডিক্স কেটে ফেলা ও  শিরা পথে এন্টিবায়োটিকই হল এর প্রকৃত চিকিৎসা।

 

21-08-2013 রোগ ব্যাধি

মলদ্বারের ব্যথা ও এনাল ফিসার

 

মলদ্বারের ভেতরের আবরন কোন কারনে ছিরে গেলে, বা কেটে গেলে তাকে এনাল ফিসার বলে। মলদ্বারের ব্যথায় অনেক সময় লোক ভূগে থাকেন। এই রোগে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া হয়।

মলদ্বারে কিছুক্ষনের জন্য মল বা পায়খানা জমা থাকে এবং মলদ্বার দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে।  সাধারণত শক্ত মল হলে বা ঘন ঘন মলত্যাগের কারণে মলদ্বার ফেটে ঘা  হয়ে যায়। সমস্যা হলো এই   à¦¯à§‡, এই ঘা শুকাতে চায় না সহজে। আবার কিছু কিছু রোগীর এই ঘা শকিয়ে গেলেও কিছুদিন পর মল শক্ত হলে একই সমস্যা আবার দেখা দেয়। এ রোগের উপসর্গও বেশ তারতম্য হয়। কোনো কোনো রোগীর মলত্যাগের পর সামান্য জ্বালাপোড়া হয় এবং তা ৫ থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলে। আবার কখনো ব্যথা তীব্র আকার ধারণ করে এবং কয়েক ঘন্টা এমনকি সারাদিন চলতে থাকে। জনসাধারণ এ রোগটিকে সাধারণত পাইলস হয়েছে বরে মনে করে থাকেন। এটি যেকোনো বয়সে হতে পারে। তবে তরুন ও যুবকদের বেশি হয়। পুরুষ অথবা নারী উভয়ের এ রোগটি সমানভাবে হয়ে থাকে।

কারণ এবং কি করে ঘটে?

সাধারণত কোষ্ঠ্যকাঠিন্য অথবা মলত্যাগের সময় কোঁত দেয়ার কারনে হয়ে থাকে । শক্ত মল বের হওয়ার সময় মলদ্বার ফেটে যায় বলে মনে করা হয়। যারা আঁশযুক্ত খাবার খান তাদের এ রোগ কম হয়। আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে শাকসব্জি, কাঁচা ফলমূল, ইসুপগুলের ভূসি ইত্যাদি। চা কফি বা মদ  খাওয়ার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। ঘন ঘন মলত্যাগ বা ডায়রিয়া হলে ফিসার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মলদ্বারের ভেতর সাপোজিটর জাতীয় ঔষধ  দেয়ার সময় মলদ্বারে যে ক্ষত হয় তা থেকেও অনেক রোগীর বিশেষ করে মহিলাদেরএ জাতীয় রোগ হতে  পারে।

উপসর্গ ও লক্ষণ:

মলদ্বারের ফিসারের প্রধান লক্ষণ হলো ব্যথা, জ্বালাপোড়া ও রক্তক্ষরণ। এ ধরনের ব্যথা সাধারণত মলত্যাগের অব্যবহিত পরে হয় এবং কয়েক মিনিট থেকে বহু ঘন্টা এমনকি সারাদিনও চলতে পারে পাইলেসের জটিলতা যেমন রক্ত জমাট বাঁধা, আলসার বা গ্যাংগ্রিন হলেও মলদ্বারে প্রচুর ব্যথা হয়। তবে তখন রোগী  à¦¤à¦¾à¦° মলদ্বারে বড় একটি মাংসপিন্ড আছে বলে অভিযোগ করেন।

মলদ্বারে সংক্রামন হয়ে ফোঁড়া হলে, ফিস্টুলা বা ভগন্দর এবং দূরারোগ্য ক্যান্সার হলে ও ব্যথা হয়। এ সব ক্ষেত্রে রোগের ইতিহাস ও রোগীকে ফিজিক্যাল পরীক্ষা করে রোগ সনাক্ত করতে হয়। 

 

দির্ঘস্থায়ী (ক্রনিক) মলদ্বারের ফিসারের উপসর্গ ভিন্ন ধরনের, যেমন- মলদ্বারে অতিরিক্ত মাংসপিন্ড, পঁজ পড়া, চুলকানি ইত্যাদি। এসব একত্রে অথবা আলাদা আলাদাভাবে হতে পারে। এ ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ থাকতে পারে  আবার না-ও থাকতে পারে। ব্যথা সাধারণত তীব্র হয় না আবার অনেক সময় ব্যথা একেবারেই থাকে না।

ফিসারের রোগীরা অনেক সময় প্রস্রাবের সনমস্যায় ভোগেন। অনেকে বহুদিন ধরে প্রস্রাব করতে কষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।

মহিলারা কখনো কখনো যৌন মিলনে ব্যথা অনুভব করেন।

ব্যথা ভয়ে রোগীরা টয়লেটে ও  যেতে চান না। এভাবে কোনো কোনো রোগী ৫-১০ দিন পর একবার টয়লেটে যান।

তীব্র ব্যথাসম্পন্ন ঘা:

এ অবস্থায় রোগীরা ভীষণ ব্যাথায় ভোগেন। এ সময় মলদ্বার পরীক্ষা করলে দেখা যায় যে, সেটি খুব সং‌কুচিত অবস্থায় আছে। তীব্র ব্যথার কারণে ভেতরের ঘা দেখা দুঃসাধ্য। কোনো যন্ত্র প্রবেশ করানো যায় না।

প্রতিরোধ:

কোষ্ঠকাঠিন্য যাতে না হয় সে ব্যবস্থা করা উচিত এবং বেশি শক্তি প্রয়োগে মলত্যাগ করা উচিত নয়। বারবার মলত্যাগের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে এবং ডায়রিয়া হলে দ্রুত চিকিৎসা করতে হবে।

চিকিৎসা

সীমিত চিকিৎসা

রোগটি শুরুর অল্প দিনের ভেতরে চিকিৎসা শুরু করা হলে বিনা অপারেশনে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে প্রথম প্রথম সামান্য জ্বালাপো এবং একটু রক্তক্ষরণ ছাড়া তেমন সমস্যা তাকে না, তাই কেউ কেউ ডাক্তারের কাছে যান না।

ঔষধের মাধ্যমে রয়েছে মল নরম করার এবং মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করা ঔষধ আঁশজাতীয় খাবার যেমন-জব্জ, টাটকা ফলমুল, ইসুপগুলে ভূসি খাওয়া যেতে পারে। ব্যথানাশক ঔষধ খাওয়া যেতে পারে। হিপ বাথ নিলে উপকার পাওয়া যায়। এটির নিয়ম হচ্ছে আধ গামলা লবণ মিশ্রিত গরম পানিতে নিতম্ব ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে। মলদ্বারের ব্যথানাশক মলম ব্যবহার করতে হয়। এতে যদি পুরোপুরি উপকার না পাওয়া যায় এবং রোগটি যদি বেশিদিন চলতে থাকে তাহলে অপারেশন করিয়ে নেয়া ছাড়া ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কমতে থাকে।

সার্জিক্যাল চিকিৎসা বা অপারেশন:

অপারেশ পদ্ধতি:

ক) মলদ্বারের মাংসপেশির সমপ্রসারণ (এনাল ডাইলেটেশন)-এ পদ্ধতিটির প্রতিক্রিয়া এবং সাফল্য খুবই সামান্য বলে বেশিরভাগ সার্জন এর বিপক্ষে।

খ) মলদ্বারের অভ্যন্তরীণ বৃত্তাকার মাংসপেশি কেটে দেয়া (লেটারাল ইন্টারনাল স্ফিংটারেকটোমী)। এই অপারেশন মলদ্বারের অভ্যন্তরীণ স্ফিংটারে( ইন্টারনাল স্ফিংটার ) একটি সুক্ষ্ণ অপারেশন করতে হয়। এটির কৌশলগত হেরফের হলে মল নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। অজ্ঞান না করে অপারেশন করা যায়। ১-২ দিন পর রোগী বাড়ি ফিরে যেতে পারে। তবে কাজে যোগদান করতে ৫-১০ দিন লাগতে পারে। বিদেশে রোগ জটিল হওয়ার আগেই অপারশেন করা হয়, ফলে তারা অল্প সময় পরে ¯^vfvweK কাজ করতে পারে। অপারেশনের ১-২দিন পর  বোগী চলে যেতে পারে। এরপর ৭দিন অন্তর অন্তর একবার চেকআপের জন্য আসতে হয়।  না এল জটিলতা হলে সনাক্ত করতে অসুবিধা হয়।

যা মনে রাখা প্রয়োজন:

  1. মলদ্বারের ভেতরের আবরন কোন কারনে ছিরে গেলে, বা কেটে গেলে তাকে এনাল ফিসার বলে।
  2. সাধারণত শক্ত মল হলে বা ঘন ঘন মলত্যাগের কারণে মলদ্বার ফেটে ঘা  হয়ে যায়।
  3. মলদ্বারের ফিসারের প্রধান লক্ষণ হলো ব্যথা, জ্বালাপোড়া ও রক্তক্ষরণ।
  4. মল নরম করার ঔষধের মাধ্যমে এবং মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করা ঔষধ ও আঁশজাতীয় খাবার যেমন- টাটকা ফলমুল, ইসুপগুলে ভূসি ইত্যাদি খাওয়ার ফলে উপকার পাওয়া যায়।
  5. রোগটি শুরুর অল্প দিনের ভেতরে চিকিৎসা শুরু করা হলে বিনা অপারেশনে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
  6. এ রোগের সঠিক অপারেশনের সাফল্য আর্ন্তজাতিকভাবে ৯৫-৯৯ শতাংশ এবং আবার হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

 

 

 

 

13-08-2013 রোগ ব্যাধি

মেনিনগোকক্কাল জনিত রোগ ও প্রতিরোধ

 

 

 

নেইজেরিয়া মেনিনজাইটিস নামক ব্যকটেরিয়া (যাকে মেনিনগোকক্কাই ব্যাকটেরিয়া নামে পরিচিত) দ্বারা ঘটিত যে কোন রোগকে মেনিনগোকক্কাল ডিজিজ বলে । এদের মধ্যে ২টি রোগ খুবই মারাত্মক, জীবনের জন্য হুমকি স্বরুপ ।

১। মেনিনজাইটিস

২। সেপটিসেমিয়া

এই জীবানুর অনেক ধরনের প্রজাতির মধ্যে বি ও সি গ্রুপ-টি  বেশী পরিচিত এবং বেশীরভাগ রোগের জন্য দায়ী । এই রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে যা সি গ্রুপের জীবানু প্রতিরোধ করে। দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য  বি গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে সক্ষম কোন টিকা এখনও আবিষ্কৃত হয়নি  অথচ এটি দিয়েই বেশী রোগ হয়।

 

কোথায় থাকে ও কিভাবে ছড়ায় :

এই জীবানু শতকরা ১০ জন জন ব্যক্তির মধ্যেই বাস করে কিন্তু কোন রোগ সৃষ্টি করে না। সাধারণতঃ নাকের ভেতরে পেছনের অংশে ও গলায় এরা  প্রাকৃতিকভাবে থাকে। তাই এরা একটা ছোঁয়াচে নয় । শুধুমাত্র জীবানু বহনকারী ব্যক্তি সাথে নিয়মিত ঘনিষ্ট সাক্ষাতে এবং নাকের পেছনে বা গলার থুতু কাশির মাধ্যমে তা অন্য ব্যক্তির মধ্যে সংকামিত হতে পারে। এমনকি প্রতিদিনের সৌজন্য সাক্ষাৎ বা  মুখের লালা, থুতু, একই পুকুর/সুইপংপুলে গোসল বা একই থালা বাসন ব্যবহারেও এই জীবানু অতটা  ছড়ায় না। এই জীবানু যদি কম ইমুনিটি (কম রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন) সম্পন্ন দেহে প্রবেশ করে বিশেষ করে  যার মেনিনগোকক্কাসের টিকা নেয়া নেই সেক্ষেত্রে রোগ সৃষ্টি করতে পারে।

 

লক্ষণসমূহ :

 

১। মাথা ব্যাথা 

২। উজ্জল আলোতে তাকাতে না পারা।

৩। জ্বর 

৪। বমি ও পাতলা পায়খানা

৫। ঘাড় ব্যাথা ও গা ব্যাথা ও ঘুম ঘুম ভাব

৬। চামড়ায় লালচে বাদামী ছোট বা বড় দাগ

৭। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে- খিটখিটে মেজাজ, অযথা ভীত থাকা, খেতে না চাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ থাকতে পারে।

লক্ষণসমূহ খুব দ্রুত প্রকাশ পায় এবং কিছুক্ষনের ভেতরে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়তে পরে। তাই এই রোগ দেখা দেয়ার সাথে সাথে উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ জরুরী ।

 

ভ্যাক্সিন

ক) কনজুগেন্ট ভ্যাক্সিনঃ

১২ মাস বয়সের বেশী বয়স থেকে দেখা যায়। এটি সি সেরোটাইপের জীবানু ঘটিত রোগ প্রতিরোধ করে এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরোধ দান  করে।

শিশু ছাড়া আর  যাদের নেয়া জরুরী :

-          যাদের ১ বার মেনিনগোকক্কাস ঘটিত রোগ হয়েছে এবং পূর্বে টিকা নেননি।

-          বাড়িতে রোগীর ঘনিষ্ট সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিগণ।

-          যে সব ব্যক্তির স্প্লীন/প্লীহা নষ্ট বা কাটা  হয়েছে ।

 

খ) পলিস্যাকারাইড ভ্যাক্সিনঃ

এই  মেনিনগোকক্কাস এর এ, সি ভ্যালু-১৩৫ ও ওয়াই (Y) সাবগ্রুপের  বিরুদ্ধে প্রতিরোধ দেয় তবে একবার টিকা দিলে তা মাত্র ৩ বছরের জন্য নিরাপত্তা দেয়। ২ বছরের কম শিশুদের প্রযোজ্য নয়।

 

যারা বেশী ঝুকিপূর্ণঃ

     ১। যে সব রোগীর স্প্লীন/প্লীহা নষ্ট হয়ে গেছে বা কেটে ফেলা হয়েছে।

     ২। প্যাথলজীতে কর্মরত ব্যক্তি যার নিয়মিত মেনিনগোকক্কাস জীবানু  নিয়ে কাজ করতে হয়।

এসব ব্যক্তির ক্ষেত্রে দুই ধরনের টিকাই নেয়া  উচিত।

 

রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যাক্তিদের দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ খেতে হবে।

 

টিকা নেবার সময় ডাক্তার বা নার্সকে বলুন যদি :

-          গত ৬ মাসে মেনিনগোকক্কাল টিকা নেওয়া থাকলে ।

-          প্রচন্ড জ্বর থাকলে।

-          কোন টিকা নিয়ে প্রচন্ড এলার্জি বা রিএকশন হয়ে তাকলে ।

 

সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া :

-          হালকা জ্বর, ক্ষুধামন্দা, খিদখিটে মেজাজ, বাচ্চা বেশী কান্নাকাটি করেত পারে।

-          ইনজেকশনের স্থান ফুলে লাল হয়ে ব্যাথা হতে পারে।

-          বড়দের মাথা ব্যাথা হতে পারে।

 

এক্ষেত্রে করণীয় :

সাধারণতঃ  এই  সকল সমস্যা ২-৩ দিনেই কেটে যায়। এ ক্ষেত্রে-

-          ইনজেকনের স্থানে ঠান্ডা ভেজা কাপড় দিয় চাপ দেবেন।

-          প্রচুর পরিমানে তরল খাবার খাবেন।

-          জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাবেন।

 

যা অবশ্যই মনে রাখতে হবে:

1.       নেইজেরিয়া মেনিনজাইটিস নামক ব্যকটেরিয়া  দ্বারা ঘটিত রোগকে মেনিনগোকক্কাল ডিজিজ বলে

2.      কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন দেহে এবং যাদের মেনিনগোকক্কাসের টিকা নেয়া নেই সেক্ষেত্রে রোগ সৃষ্টি করতে পারে।

3.      শুধুমাত্র জীবানু বহনকারী ব্যক্তি সাথে নিয়মিত ঘনিষ্ট সাক্ষাতে এ রোগ ছরায়

4.      একবার টিকা দিলে তা মাত্র ৩ বছরের জন্য নিরাপত্তা দেয়।

 

 

 

13-08-2013 রোগ ব্যাধি

চামড়ায় ইনফেকশন-ফোঁড়া, খোসপাচড়া:

ফোড়া বা পাচড়া মূলত চামড়ার লোমকুপের ইনফেকশন যা মূলত স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হয়। আবার শরীরের স্থানভেদে ফোড়ার নামও বিভিন্ন হয়, যেমন-  চোখের পাতায় হলে তাকে স্টাই বলে। আবার অনেকগুলি ফোড়া একত্রিতভাবে কোন স্থানে হলে বিশেষ আকৃতি ও বৈশিষ্ট্য ধারণ করে, তখন তাকে বলে কার্বঙ্কল।

     স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস নামক ব্যাকটেরিয়াটি সাধারণভাবে তেমন ক্ষতিকারক নয়। সুস্থ মানুষের চামড়ায়, নাকে এই জীবানু বসবাস করে। মাঝে মাঝে এটি মৃদু থেকে মাঝারি মানের ইনফেকশন করে। তবে চামড়ায়  বেশি গভীরে প্রবেশ করলে বা রক্তে মিশে গেলে মারাত্মক অসুস্থ্যতা সৃষ্টি হয়। সাধারণ ফোঁড়া, পাচড়া এমনিতেই ভাল হয়, তবে কোন কোন ক্ষেত্রে অপারশেন করে পূজ বের করে এন্টিবায়োটিক জাতীয় ঔষধ দেবার প্রয়োজন হয়।

লক্ষণসমূহ:

   

ফোঁড়া তৈরী হওয়া থেকে বড় হলে যে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়-

-          প্রথমে চামড়ার কিছু অংশ লাল হয়, ব্যথা হয়।

-          পরে ঐ স্থানে একটি ছোট শক্ত চাকার মত হয়, ব্যথা হয়।

-          কিছুদিন পর ঐ চাকাটি আরও বড় হয়, নরম হয় ও মাথায় সাদা/হলুদ মুখ বের হয়।

-          ফোঁড়াটি ফেটে যায়

-          পুজ ও রক্ত বের হয়।

-          স্থানটি, ক্ষতটি ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়।

-          খুব বড় হলে বা স্থান ভেদে ঐ স্থানে স্কার তৈরী হয় এবং স্থানটি শক্ত হয়।

রিস্ক ফ্যাক্টর / ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়সমূহ:

জীবাণু মূলত চামড়ায় অবস্থান করে। কোন কারণে চামড়া কেটে গেলে, ছিলে গেলে জীবানুটি শরীরের চামড়ায় ভেতরে ঢুকে পড়ে। এ ছাড়াও নিমোক্ত কারণে ইনফেকশন হবার ঝুঁকি বেশি। যেমন-

1. ডায়বেটিস :

ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিছুদিন পর পর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোড়া হয়।

2. পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব:

 à¦¨à¦¿à§Ÿà¦®à¦¿à¦¤ গোসল, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন না থাকলে শরীরের চাপানো অংশে, বগল তলে, কোমড়ে, উরুর ভেতরের দিকে ফোঁড়া হবার সম্ভাবনা থাকে।

3. পুষ্টি:

শরীরে অপুষ্টি থাকলে।

4. চামড়ায় ঘা:

একজিমা, চামড়া কাটা বা ছিলা থাকলে বা কোন ক্ষতিকারক দ্রব্য, পোকার কামড় ইত্যাদি স্থানে হবার ঝুঁকি বিশ।

5. অন্যান্য অসুখ: চামড়ায় ফোঁড়া, প্যাচড়া তৈরী করা ছাড়াও এই জীবানু শরীরের ভেতরে প্রবেশ করলে স্থান ভেদে নানা ধরনের জটিল রোগ তৈরী করে। যেমন-

     হাড়ে- অস্টিওমাইলাইটিস

     ফুসফুসে- নিউমোনিয়া

     হৃদপিন্ডে- এন্ডোকার্ডাইটিস

     মসিত্মস্কে- মেনিনজাইটিস

     রক্তনালীতে- সেপটিক ফ্লেভাইটিস

ব্যক্তিগত করণীয়: ফোঁড়া হলে যা করবেন, ও যা করবেন না-

     -    নিজে নিজে ফোড়া চাপাচাপি, ঘুটানো নিষেধ

     -    ফোড়াসহ চামড়ার স্থানটি এন্টিসেপটিক, সাবান দিয়ে পরিস্কার করুন।

     -    প্রতিদিন ৩-৪ বার, প্রতিবার ১২-১৫ মিনিট গরম ভেজা কাপড়ের সেক দিন যাতে ফোড়া নরম 

          হয় ও  সাদা মুখ বের হয়ে  আসে।

-          ফোঁড়া ফেটে গেলে সম্পূর্ণ পূজ বের করে দিন।

-          পরিস্কার সার্জিক্যাল গজ বা বেন্ড এইড দিয়ে ঢেকে রাখুন।

-          প্রতিবার ফোঁড়া, খোসপাচড়া ধরার আগে ও পরে ভালভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে যাতে জীবাণু না ছড়ায়।

-          প্রতিবার মোছার জন্য পরিস্কার করার জন্য পরিস্কার জীবাণুমুক্ত গজ বা নরম কাপড় ব্যবহার করুন।

-          বেশ কয়েকদিনেও পরিস্থিতি ভাল না হলে ডাক্তারের শরনাপন্ন হন।

 

চিকিৎসা: সাধারণ ফোড়ার জন্য টিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু খুব বড় হলে, ঘা না শুকালে, এক সাথে অনেক স্থানে ফোড়া হলে বা কিছুদির পর পর ফোড়া হলে সে ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হয়, অনেক সময় সার্জিক্যাল এর মাধ্যমে পুজ কেটে পরিস্কার করতে হয়।

     চোখ নাকের আসে পাশে বড় ফোড়া হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরী। না হলে জীবাণু রক্তে মিশে গিয়ে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে এমনকি মস্তিস্কে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

 à¦†à¦° ফিউরাংকুলোসিস হল বার বার এক সাথে অনেকগুলি ফোড়া হওয়া।

এ সব ক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্য-

·         ডায়বেটিস আছে কিনা পরীক্ষা করতে হবে।

·         দীর্ঘদিন এন্টিবায়োটিক (পুরো কোর্স) খেতে হবে।

·         এন্টিসেপটিক শ্যাম্পু ও সাবান ব্যবহার করতে হবে।

·         নাকের ভেতরের দিকে এন্টিবায়োটিক মলম লাগাতে হবে, কেননা স্টাফালোকক্কাস অরিয়াস মূলত নাকে বসবাস করে।

·         পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা Aej¤^b করতে হবে।

·         বাড়ির বিছানা চাদর বালিসের কভার, ব্যবহার্য্য জামা কাপড় নিয়মিত ভালভাবে সাবান দিয়ে ধূতে হবে।

·         বাসায় অন্য কারো এই রোগ থাকলে তাদেরও পূর্ণ চিকিৎসা প্রয়োজন।

যা মনে রাখা প্রয়োজন:

·         ফোঁড়া হল লোমকুপের গোড়ার ইনফেকশন, যা মূলত স্টাফালোকক্কাস অরিয়াস নামক ব্যাকটেরিয়া দিয়ে সংক্রমণ হয়।

·         সাধারণত ফোড়া আপনা আপনি সেরে যায়, তবে মারাত্মক হলে শরীরের ভেতরে মিশে গেলে, বার বার হলে এন্টিবায়োটিক প্রয়োজন হয়।

·         ঐ জীবানু রক্তে মিশে গেলে হাড়, ফুসফুস, মস্কিস্ত, হৃদপিন্ডে মারাত্মক রোগের সৃষ্টি করতে পারে।

 

13-08-2013 রোগ ব্যাধি

            à¦¸à§‹à¦°à¦¿à§Ÿà¦¾à¦¸à¦¿à¦¸

 

সোরিয়াসিস ত্বকের একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ।এই রোগ একজনের শরীর থেকে অন্যের শরীরে ছড়ায় না। মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ত্বকে এবং গিঁটে-গিঁটে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। জটিলতার মাত্রাভেদে শরীরের ছোট অংশ থেকে শুরু করে বড় এলাকা জুড়ে এই রোগ বিস্তার লাভ করতে পারে, যা চিকিৎসার মাধ্যমে সাময়িকভাবে প্রশমিত হলেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটে।

অতীতে মানুষ সোরিয়াসিস-কে কুষ্ঠরোগের একটি ধরন বলে মনে করতো। ১৮৪১ সালে প্রথম অস্টিয়্র চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ফার্দিনান্দ ফন হেবরা এ-রোগের নাম দেন সোরিয়াসিস। নামটি এসেছে গিক্র শব্দ

সোরা  à¦¥à§‡à¦•à§‡, যার অর্থ চুলকানি।

 

সোরিয়াসিস রোগে সাধারণত ত্বকের উপর লালচে বণের্র ফুস্কূরী মতো জন্মায়, যাকে সোরিয়াটিক প্লেক বলা হয়ে থাকে। এসব অংশে প্রদাহ হয় ও ত্বে কর মাত্রাতিরিক্ত বিদ্ধৃ ঘটে এবং ত্বকের উপাদানগুলো দ্রুত পুঞ্জিভূত হয়ে রুপালি-সাদা রঙ ধারণ করে। সাধারণত কনুই এবং হাঁটুর ত্বকে সোরিয়াসিসজনিত প্লেক্স বেশি দেখা যায়, তবে মাথা এবং যৌনাঙ্গের ত্বক সহ শরীরের যেকোনো অংশে এর বিস্টার ঘটতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গিটের  à¦¬à¦¾à¦‡à¦°à§‡à¦° দিকে এ-রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। অনেক রোগীর ক্ষেত্রে সোরিয়াসিস শুধু হাত ও পায়ের নখে আক্রমণ করে। সোরিয়াসিস শরীরের বিভিন্ন গিঁটে প্রদাহের সৃষ্টি করতে পারে। এই অবস্থাকে বলা হয় সোরিয়াটিক আর্থাইটিস। সোরিয়াসিস-আক্রান্ত ১০-১৫ শতাংশ রোগীর মধ্যে সোরিয়াটিক আর্থাইটিস দেখতে পাওয়া যায়। সোরিয়াটিক আর্থাইটিস অনেকসময় ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে, এমনকি মৃত্যুও কারণও হতে পারে। যেকোনো বয়সে পুরুষ বা মহিলা উভয়েরই এই রোগ হতে পারে। তবে, সাধারণত ১৫-২৫ বছর বয়সে প্রথম এই রোগ দেখা দেওয়ার সম্ভাভনা বেশি থাকে। শিশুদেরও সোরিয়াসিস হতে পারে। সোরিয়াসিস রোগীদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের বেলায় ২০ বছরের কম বয়সে এই রোগ ধরা পড়তে দেখা গেছে।

 

রোগ নিণর্য়ঃ

সোরিয়াসিস রোগ নিণর্য় করার জন্য নিদির্ষ্ট কোনো রক্ত-পরীক্ষা বা রোগ-নির্ণায়ক পদ্ধতি নেই। সাধারণত ত্বকের বাহ্যিক অবস্থা দেখে এ-রোগ সনাক্ত করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে ত্বে কর অন্যান্য অস্বাভাবিকতা থেকে একে আলাদা করে চিহ্নিত করার জন্য ত্বকের বায়োপসি করা হয়। সোরিয়াসিস চেনার আরেকটি উপায় হলো: শরীরের আক্রান্ত স্থান ঘষলে বা চলু কালে ত্বে কর নিচে সুক্ষ রক্তবিন্দু

দেখতে পাওয়া যায়।

 

কারণ

সোরিয়াসিস-এর নিদির্ষ্ট কোনো কারণ জানা নেই, তবে বংশানুক্রমিক ভাবে এ-রোগ বিস্তারের পব্রণতা রয়েছে। সোরিয়াসিস-এর কারণ-সংক্রান্ত ধারণামতে, ত্বকের অত্যধিক বৃদ্ধিই এ-রোগের জন্য দায়ী। শরীরের রোগ-প্রি তরোধ ক্ষমতার প্রভাবে ত্বকের কোষের মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধির ফলে এমনটি ঘটে।

বিভিন্ন রকমের সংক্রমণের হাত থেকে মানবদেহকে রক্ষাকারী টি-সেল অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে ত্বকের ডামির্স (dermis) স্তরে ঢুকে এধরনের জটিলতার সৃষ্টি করে। মানসিক চাপ, সহায়ক চিকিৎসায় বিরতি, অতিরিক্ত মদ্যপান এবং ধুমপান সোরিয়াসিসজনিত অবস্থার অবনতি ঘটাতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দ্রশ্যত  à¦•à§‹à¦¨à§‹ নিদির্ষ্ট কারণ ছাড়াই সোরিয়াসিস জনিত অবস্থার উনড়বতি বা অবনতি ঘটতে দেখা যায়। তৈলাক্ত বা আর্দ্র ত্বকের চেয়ে শুষ্ক ত্বকে সোরিয়াসিস বেশি দেখা যায় এবং অনেকসময় ত্বকে আঁচড় বা ক্ষত থেকে সোরিয়াসিস-এর উদেক হয়। ত্বকের আরদ্রতাকে ধরে রাখার জন্য সোরিয়াসিস রোগীদের সাবান ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে বলা হয় এবং গোসলের সময় শরীর ঘষার জন্য অমসৃন উপকরণ ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়, যা ত্বকে ছোট ছোট আঁচড় স্রিস্টি করে সোরিয়াসিস-এর প্রোকোপ বাড়াতে পারে।

 

সোরিয়াসিস প্রধানত সাত প্রকারঃ

বাহ্যিক লক্ষণ এবং প্রক্রিতির ওপর ভিত্তি করে সোরিয়াসিস-কে প্রধানত সাত ভাগে বিভক্ত করা

হয়। সেগুলো নিচের অংশে আলোচিত হলো:

 

ফ্লেক্সুরাল (flexural সোরিয়াসিস:

এধরনের সোরিয়াসিস সাধারণত শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও সন্ধিস্থলে এবং ত্বকের ভাঁজে-ভাঁজে বিসত্মার লাভ করে। যৌনাঙ্গের আশেপাশে, বগলের নিচে, মেদবহুল পেটের নিচের অংশে এবং সত্মনের নিচে এধরনের সোরিয়াসিস সৃষ্টি হয়, যা কাপড়ের ঘষায় এবং ঘামের ফলে বৃদ্ধি পায়।

 

গুটেইট (guttate) সোরিয়াসিস:

এক্ষেত্রে আক্রান্ত অংশজুড়ে ছোট ছোট গোল ফুসকুড়ির মতো জন্মে। পিঠ, হাত, পা এবং মাথার তালুর মতো শরীরের বিস্ত্রিত অংশগুলোতে এমন ফুসকুড়ি দেখা দেয়।

 

পাস্টুলার (pustular) সোরিয়াসিস:

এধরনের সোরিয়াসিস রোগে অসংক্রামক পুঁজযুক্ত ছোট ছোট গোটার মতো দেখা যায়, যার নিচের এবং চারপাশের নরম অংশ লাল রঙ ধারণ করে থাকে। এগুলো হাত বা পায়ের নির্দিষ্ট অংশে বা শরীরের যেকোনো অংশে হতে পারে।

 

প্লেক সোরিয়াসিস (plaque)  :

 à¦ ধরনের সোরিয়াসিস সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। ৮০-৯০ শতাংশ সোরিয়াসিস রোগী এর দ্বারা আক্রান্ত। এক্ষেত্রে শরীরের আক্রান্ত অংশের তক্ব কিছুটা উচু হয়ে ফুলে ওঠে, প্রদাহের সৃষ্টি হয় এবং  à¦°à§à¦ªà¦¾à¦²à¦¿à¦¸à¦¾à¦¦à¦¾ রঙের আবরণ পড়ে, যাকে প্লেক বলে।

 

নেইল (nail) সোরিয়াসিস:

নেইল সোরিয়াসিস- এর ফলে হাত ও পায়ের নখের কিছু অংশ বিবর্ণ হয়ে ওঠে, নখে j¤^v সাদা রেখার সৃষ্টি হয়, নখের নিচের ত্বক পুরু হয়ে যায় এবং অনেক সময় নখ পড়েও যায়।

 

সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিস (arthritis):

এক্ষেত্রে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সন্ধিস্থলে সংযোগকারী টিস্যু গুলোতে প্রদাহের স্রিস্টি হয়।  à¦¹à¦¾à¦¤ ও পায়ের গিটঁ গুলোতে এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, যার ফলে আঙলু গুলো ফুলে বিশ্রি আকার ধারণ করে।

এছাড়াও, নিতএমবি,হাঁটু ও শিরদাঁড়ায় সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিস দেখা যায়। এধরনের সোরিয়াসিস

অনেকসময় ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে।

এরিথ্রোডারমিক (erythrodermic) সোরিয়াসিস:

এধরনের সোরিয়াসিস রোগে শরীরের বিস্ত্রিত অংশে, এমনকি সারা শরীর জুড়ে , ত্বকের প্রদাহ ঘটে এবং আক্রান্ত স্থানগুলো ফুলে ওঠে, ভীষণ চুলকায় ও জ্বালাপোড়া হয়। এরকম অবস্থা কখনো কখনো মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে কারণ এক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা বণ্টনের প্রক্রিয়া বিপলু ভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়, যার ফলে নানারকম জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। সোরিয়াসিস একজন ব্যক্তির জীবনে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। সোরিয়াসিসজনিত চুলকানি, ব্যথা এবং A¯^স্তি রোগীর প্রাত্যহিক কাজে বিরাট

বাধার সৃষ্টি করে, ফলে তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। হাতে ও পায়ে প্লেক থাকলে খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে অন্যান্য নৈমিত্তিক কাজ ও হাঁটাচলায় রোগীকে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। উচ্চমাত্রার সোরিয়াসিস-এর ফলে জীবন বিপনড়ব হয়, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। সোরিয়াসিস-এর চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল, ফলে রোগীর আর্থিক অবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এছাড়াও,বিস্তারিত

-->

13-08-2013 রোগ ব্যাধি

                  à¦šà¦¿à¦²à¦¬à§à¦²à§‡à¦‡à¦¨à¦¸

 

চিলব্লেইনস হলো এক প্রকার লাল ফোলা এবং চুলকানী যুক্ত ক্ষত যা সাধারণত ঠান্ডা আবহাওয়া দেখা যায়। রক্ত পরিসঞ্চালন হলে এর প্রকোপ আরো বেড়ে যায়। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে হাত ও পায়ের আঙ্গুল, নাক ও কানের লতিতে হয়। সারা শরীর গরম রেখে এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বাড়িয়ে চিলব্রেইনস প্রতিরোধ করা যায়। ঠান্ডা আবহাওয়া ও রক্ত পরিসঞ্চালন এই দুই কারণের সমন্বয় হলে বেশী হয়। পায়ের কনিষ্ঠ আঙ্গুলেই বেশী দেখা যায়। এক ধরনের অস্বস্তি  à¦›à¦¾à§œà¦¾ চিলব্রেইনস কোষের স্থায়ী ক্ষতিকরে না।

উপসর্গসমূহ:

অধিক পরিলক্ষিত উপসর্গসমূহ-

-          ত্বকে জ্বালাপোড়া করা,

-          লাল, ফোলা ক্ষত,

-          অত্যধিক চুলকানি,

-          শুষ্ক ত্বক,  ত্বক ফেটে যাওয়া,

-          সেকেন্ডারী সংক্রামণ,

-          ঘা হয়ে যাওয়া (চিকিৎসা না করালে)।

রক্ত প্রবাহ তাপমাত্রার সাথে সম্পর্কযুক্ত :

চিলব্লেইনস এর সঠিক কারণ জানা না গেলেও ধারনা করা হয়, ইহা ঠান্ডা আবহাওয়ার সাথে শরীরের প্রতিক্রিয়ার সর্ম্পকযুক্ত। আমাদের শরীরে ধমনী, শিরা ও রক্ষ জালিকা নিয়ে সঞ্চালন তন্ত্র গঠিত। এই রক্ত সঞ্চালন তন্ত্র তাপমাত্রার  উপর সংবেদনশীল। গরমে রক্তনালী প্রসারিত হয় এবং ত্বকের কাছাকাছি চলে আসে। ফলে শরীর তাপ হারিয়ে ঠান্ডা হয়। আবার শীতে রক্তনালী  সংকুচিত হয় ও তাপ ধরে রাখে।

হঠাৎ তাপমাত্রার পরিবর্তন:

হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনের সাথে সাথে চিলব্রেইনস  এর উপসর্গগুলো বেড়ে যায়। যেমন - বাইরের ঠান্ডা পরিবেশ হতে হঠাৎ উষ্ণ কোন কক্ষে প্রবেশ করলে বা উষ্ণ কক্ষ হতে  হঠাৎ ঠান্ডা পরিবেশে বের হলে উপসর্গ বেড়ে যায়।

ঘরেই চিলব্রেইনস এর চিকিৎসা:

ঘরে বসেই চিকিৎসা করাতে হলে নিম্নলিখিত পরামর্শগুলো মেনে চলতে হবে-

-          ক্ষতস্থান চুলকানো থেকে বিরত থাকা। না হলে ত্বকের আরো ক্ষতি হাত পারে।

-          ক্যালামাইন লোশন ব্যবহার করা, যা ত্বককে মসৃণ করে এবং চুলকানি কমায়।

-          লোশন পায়ে মাখলে তা তাপ রক্ষাতে সাহায্য করে।

-          উল বা তুলার নরম মোজা পরা।

-          সারা শরীর উষ্ণ রাখা।

-          হালকা ব্যায়াম যা পায়ের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।

প্রতিরোধ মূলক পরামর্শ:

চিলব্লেইনস প্রতিরোধের মূল কথা হলো সমসময় পুরো শরীর উষ্ণ রাখা।

পরামর্শ:

-          দীর্ঘ সময় ঠান্ডা পরিবেশে না থাকা।

-          কয়েক স্তরের গরম কাপড় পরা।

-          মূল পোষাকের নীচে টাইট অর্ন্তবাস পরা।

-          নরম ও আরামদায়ক জুতা পরা, যাতে পায়ের আঙ্গুল কোনভাবেই ভাঁজ না থাকে।

-          গোসলের বা পা ধোঁয়ার পর তা মুছে ফেল॥

-          সমস্ত শরীর  উষ্ণ রাখা
উল বা তুলার নরম মোজা পরা।

-          হালকা ব্যায়াম করা যাতে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।

পেশাগত চিকিৎসা:

বিস্তৃত গভীর ক্ষতসহ চিলব্লেইনস বারবার হলে পেশাগত চিকিৎসার  প্রয়োজন হয়। একজন দক্ষ পা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা দিতে পারেন অথবা প্রতিরোধে উপদেশ দিতে পারেন। এক্ষত্রে করটিকোষ্টেরয়েড ক্রিম/অয়েন্টমেন্ট ব্রবহার করা যেতে পারে। বারবার হলে প্রতিরোধেও করটিকোসেটরয়েড দেওয়া হয়। ডায়াবেটিস থাকলে ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে থাকতে  হবে।

যা মনে রাখতে হবে:

-          চিলব্রেইনস এক প্রকার লাল, ফোলা ও চুলকানিযুক্ত ত্বকের ক্ষত।

-                      ধারণা করা হয় ঠান্ডা আবহাওয়া ও  রক্ত সঞ্চালনের কারণে এটা বেশি হয়।

-          হাত ও পায়ের আংগুল, নাক এবং কানের লতিতেই  বেশী হয়।

-          বয়স্ক ও কম কায়িক পরিশ্রমের মানুষ বেশী ঝুঁকির মধ্যে।

 

13-08-2013 রোগ ব্যাধি

অটো ইমিউন ডিসঅর্ডার

যখন মানুষের শরীরের প্রতিরক্ষা কোষ গুলো ভুল করে নিজের শরীরের কোন অংশকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে এবং তাকে ধ্বংস করার জন্য আক্রমণ করে এই  বিশেষ রোগ বা অবস্থাকে বলে অটো ইমিউন ডিসঅর্ডার। বিভিন্ন ধরনের আটোইমিউন রোগের মধ্যে অন্যতম হল: ডায়াবেটিস, আই.বি.এস, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস, রিউমাটয়েট আর্থাইটিস (গেটে বাত), স্ক্লেরোডার্মা, এস.এল.ই,  à¦¸à§‹à¦°à¦¿à§Ÿà¦¾à¦¸à¦¿à¦¸ ইত্যাদি। বিজ্ঞানীরা - বিভিন্ন মাত্রার প্রায় ৮০ ধরনের অটো ইমিউন ডিসঅর্ডার চিহ্নিত করেছেন।

মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাটি কিছু বিশেষ কোষ ও রাসয়নিক বস্তুর দারুন সমন্যয়ে গঠিত যা মূলত রোগ সৃষ্টিকারী জীবানু-ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে। কিন্তু এই রোগ হলে দেহের নিজস্ব অংশ বা অংশকে শত্রু/জীবানু হিসেবে চিহ্নিত করে দেহের মারাত্মক ক্ষতি করে।

 

প্রকার:

মূলত ২ ধরনের

v     অর্গান স্পেসিফিক -মূলত ১টি অঙ্গকে আক্রমণ করে।

v     নন-অর্গান স্পেসিফিক -সমস্ত শরীরে/বিভিন্ন অঙ্গকে আক্রমণ করে।

ছোট বা বড় মোট ৮০ ধরনের অটোইমিউন রোগ আবিস্কৃত হয়েছে। তবে ছেলেদের থেকে মেয়েদের এই রোগের হার বেশী। আর বেশিরভাগই হয় মধ্যবয়সে -প্রজনন সময়ে। এতে ধারনা হয়-মহিলাদের সেক্স হরমোন এক্ষেত্রে কিছুটা দায়ী হতে পারে। সাধারণভাবে এই রোগ একে বারে নির্মূল না হলেও ঔষধ বা অন্যান্য চিকিৎসায় অনেকটা সুস্থ থাকা যায়।

 

কি কি ধরনের রোগ/সমস্যা হয়:

অটোইমিউন রোগে শরীরের প্রায় সকল অংশ আক্রান্ত হতে পারে। যেমন-

ক) ডায়াবেটিস (টাইপ-১):

অগ্নাশয় বা প্যানক্রিয়াস আক্রান্ত হয়। এ রোগে ঘন ঘন প্রস্রাব, অরিরিক্ত পিপাসা, ওজন কম ইত্যাদি ঘটে।

খ) গ্রেভস ডিসিজ:

থাইরয়েড গ্রন্থি আক্রান্ত হলে হয়। লক্ষণসমুহ হল- ওজন কমা, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পাওয়া, ডায়রিয়া, উদ্বিগ্নতা।

গ) আই.বি.এস:

২ ধরনের- আলসারেটিভ কোলাইটিস ও ক্রনস ডিসিজ। এ ক্ষেত্রে পেটে পাতলা পায়খানা, আমাশা হয়।

ঘ) মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস:

শরীরের নার্ভ বা স্নায়ুকে আক্রান্ত করে। যে অংশকে আক্রান্ত করে সে সব স্থানে অবশভাব, প্যারালাইসিস হয়,  à¦…নেক সময় দৃষ্টি ত্রুটি ঘটে।

ঙ) সোরিয়াসিস:

চামড়া মোটা, শক্ত, লাল হয় এবং চামড়ায় পাতলা আবরণ উঠে যেতে থাকে।

চ) রিউমাটয়েড আর্থাইটিস:

মূলত অস্থিসন্ধিকে আক্রমণ করে। ফলে সন্ধিগুলি লাল হয়ে ফুলে উঠে, প্রচন্ড ব্যাথা হয়। এমনকি বাকা হয়ে যায়। অনেক সময় চোখ, ফুসফুস, হার্ট        à¦“ আক্রান্ত হয়।

ছ) স্ক্লেরোডার্মা:

চামড়া ও অন্যান্য অংশকে আক্রমণ  করে, চামড়াকে শক্ত, মোটা করে, চামড়ায় ঘা হয়, সন্ধি শক্ত হয়ে উঠে।

জ) এস.এল.ই:

 à¦®à§‚লত শরীরের যোজক কলা (কানেকটিভ টিস্যু) কে আক্রমণ করে। সমস্ত শরীরের সকল অংশের  অবিচ্ছেদ্য অংশ এই যোজক কলা। তাই জ্বর, ওজন কমা, ব্যাথা, চামড়ায় লালচে দাগ, কিডনী ব্রেইন ইত্যাদিতে নানা ধরনের সমস্যা দেখা  দেয়।

 

কিভাবে হয়:

শরিরের টি লিম্ফোসাইট (T Lymphocyte) নামক  কোষ থাকে যা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর  আবরনে অনেক ধরনের রিসেপটর থাকে যা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াকে সনাক্ত করে তার গায়ে লেগে যায়।  à¦…ন্যদিকে যে সমস্ত টি কোষ নিজের শরীরকে শত্রু ভাবে - থাইমাস নামক অংশ সেগুলিকে নষ্ট করে দেয়। কিন্তু অটোইমিউন রোগে থাইমাস ঐ টি কোষগুলিকে নষ্ট করতে পারে না। বিভিন্ন ভাইরাস এর আক্রমণ বা হরমোনের প্রভাবে এমন হতে পারে। ফলে টি সেল শরীরের অংশকে শত্রুভাবে -বি সেলকে এন্টিবডি তৈরীতে নির্দেশ দেয়; যা তখন ঐ অংশ বা কোষকে ধ্বংশ করে। এই ধরনের এন্টিবডিকে বলে অটো এন্টিবডি।

 

রিস্ক ফ্যাক্টর/কি কি কারণ দায়ী:

এই রোগের প্রকৃত কারণ এখনও অজানা। তবে যে সব কারণ/ফ্যাক্টরকে দায়ী ভাবা হয়-

১। জেনেটিক/জিনগত সমস্যা: পারিবারিক সূত্রতা পাওয়া যায় বিধায় জিনগত কারণটিকে অন্যতম কারণ ভাবা হয়। তবে একই পরিবারের একেকজন ভিন্ন ভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে, যেমন- একজনের ডায়বেটিক, অন্যজনের রিউমেটিক আর্থাইটিস। তাই শুধুমাত্র জিনগত সমস্যা একাই এ রোগের জন্য দায়ী নয়। অবশ্যই সাথে অন্য কারণ থাকতে হবে।

২। পরিবেশগত কারণ: অনেকক্ষেত্রে পারিবারিক বা জেনেটিক কারণের সাথে পরিবেশগত কারণ মিলে এই রোগ সৃষ্টি করতে পারে।

৩। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই রোগের প্রাদূর্ভাব বেশী। প্রায় ৭৫% রোগী  মহিলা।

৪। সেক্স হরমোন: ইস্ট্রোজেন, প্রজেস্টেরন এই রোগের ক্ষেত্রে কাজ করে। কেননা মহিলাদের বাচ্চা গর্ভকালীন সময়ে, বাচ্চা জন্ম দেবার সময় বা  মেনোপজের সময় এই রোগ বেড়ে যেতে  দেখা যায়।

৫। ইনফেকশন: কিছু কিছু ভাইরাস বা জীবানুর আক্রমনে এই রোগ বেড়ে যায়।

 

রোগ নির্ণয়:

প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় খুবই  জটিল, বিশেষ করে যখন অনেক অঙ্গ একত্রে আক্রান্ত হয়। রোগের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি ভিন্ন। যেমন:

v     শারীরিক পরিক্ষা

v     রোগের ইতিহাস

v     পারিবারিক ইতিহাস

v     রক্তের পরীক্ষা-অটো এন্টিবডি

v     বায়োপসি

v     এক্সরে

v      

চিকিৎসা ব্যবস্থা:

একেবারে ভাল না হলেও রোগের ক্ষেত্রে ব্যপকতা কমানো সম্ভব চিকিৎসার মাধ্যমে:

K)     এন্টি ইনফ্লামেটরী ড্রাগ ইনফ্লামেশন (প্রদাহ) ও ব্যাথা কমায়।

L)      স্টেরয়েড -প্রদাহ কমায়

M)      ব্যাথা নাশক ঔষধ -প্যারাসিটামল, কোডেইন

N)      ইমিউনিটি কমানোর ঔষধ

O)      ফিজিক্যাল থেরাপী

P)      ঘাটতি পূরণ -যেমনঃ ইনসুলিন, থাইরক্সিন

Q)      অপারেশন -যেমনঃ  ক্রনস ডিজিজ এ বন্ধ খাদ্যনালীর অপারেশন ।

 

যা অবশ্যই মনে রাখতে হবে:

  1. যখন মানুষের শরীরের প্রতিরক্ষা ভুল করে নিজের শরীরের কোন অংশকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে এবং তাকে ধ্বংস করার জন্য আক্রমণ করে এই  বিশেষ রোগ বা অবস্থাকে বলে  à¦…টো ইমিউন ডিসঅর্ডার।
  2. বিভিন্ন মাত্রারপ্রায় ৮০ ধরনের অটো ইমিউন ডিসঅর্ডার চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।
  3. এই রোগ পুরোপুরি নিরাময় না হলেও বিভিন্ন চিকিৎসা ও নিয়ম মেনে সুস্থ থাকা সম্ভব।

 

04-07-2013 রোগ ব্যাধি

ফুসফুসের রোগ COPD

 

ফুসফুসের এক ধরনের বিশেষ রোগ বা রোগ সমুহের নাম COPD।

মানব দেহে স্বাভাবিক ভাবে দুইটি ফুসফুস থাকে। শ্বাসনালী ফুসফুসে বাতাস বয়ে নিয়ে যায়। শ্বাসনালী গলা থেকে শুরু হয়ে গাছের শাখা-প্রশাখার  মত ছোট হতে থাকে। প্রতিটি শাখা- প্রশাখার প্রান্তে অনেকগুলো ছোট ছোট বেলুনের মত বায়ুথলি থাকে।

সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে প্রতিটি শ্বাসনালী  পরিস্কার এবং উন্মুক্ত থাকে। প্রতিটি ছোট বায়ুথলি বায়ুপূর্ণ থাকে। তখন

বাতাস দ্রুত বেরিয়ে যেতে পারে।

 

যদি আপনার COPD থাকে, তাহলে আপনার ফুসফুসের শ্বাসনালীর মুখ ছোট হযে যায়। কম পরিমাণ বাতাস ভিতরে ঢুকতে পারে, কারণ-শ্বানালীর দেয়াল মোটা হয়ে যায় এবং ফুলে যায়।


 

শ্বাসনালীগুলো তার চারপাশের ছোট ছোট মাংশপেশী দ্বারা সংকুচিত  হযে যায়। শ্বাসনালীর ভিতর আঠালো শ্লেষ্মা তৈরী হয়,যা সাধারণত কাশির সাথে বেরিয়ে আসে। অন্যদিকে ক্ষুদ্র বায়ুথলি গুলো সম্পূর্ণভাবে বাতাস বের করে দিতে পারে না, যার কারণে ফুসফুস পরিপূর্ণ অনুভূত হয়।

 

COPD দ্বারা বুঝায় -

chronic Obstructive Pulmonary Dieease.

Chronic বলতে বুঝায় যা দীর্ঘদিন

যাবৎ নিরাময় হয় না

Obstructive শব্দের অর্থ আংশিকভাবে বন্ধ

Pulmonary বলতে বুঝায় ফুসফুসের ভিতর,

Disease অর্থ রোগ।

মুলত COPD বলতে শ্বাস নালীর ৩ টি রোগের যে কোনো ১ টি বা একাধিকের উপস্থিতি নির্দেশ করে। এরা হল ক্রনিক ব্রংকাইটিস, এম্ফাইসিমা ও বিশেষ ধরনের হাপানী।

 

 

কাদের COPD হতে পারে?

·        অন্যের সংস্পর্শে COPD হয় না। সাধারণত প্রাপ্ত বয়স্কদের COPD হয়ে থাকে, বাচ্চাদের নয়।

·        বেশীর ভাগ COPD রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, হয় তারা ধূমপায়ী অথবা অতীতে ধূমপায়ী ছিলেন। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যে কোন ধূমপানই COPD তৈরী করতে পারে।

·        আবার কিছু COPD রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, তারা এমন বাসায় বসবাস করতেন সেখানে রান্নার স্টোভ বা ঘর গরম রাখার জন্য হিটার ব্যবহারের ফলে প্রচুর ধোঁয়া উৎপন্ন হতো।

·        আবার্‌ কখনো কখনো দেখা যায়, COPD রোগীরা বহু বছর যাবৎ ধূলিময় বা ধোঁয়াযুক্ত স্থানে কাজ

    à¦•à¦°à¦¤à§‡à¦¨à¥¤

·        বেশীরভাগ COPD রোগীর বয়স ৪০ এর বেশী, কিন্তু ৪০ এর কম বয়সেও COPD হতে পারে।

 

রোগ নির্নয়ঃ

প্রাপ্ত বয়স্কদের যদি শ্বাসকষ্ট থাকে কিংবা দীর্ঘদিন যাবৎ কাশি নিরাময় না হয়, তাহলে COPD থাকতে পারে। যদি একমাসের বেশী সময় ধরে আপনার শ্বাসকষ্ট বা কাশি থাকে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। বেশীরভাগ লোক যতদিন পর্যন্ত শ্বাকষ্টের সমস্যা খুব তীব্র না হয়, ততদিন পর্যন্ত ডাক্তারের কাছে যায় না।

যদি আপনি ডাক্তারের পরামর্শ মত চলেন, তাহলে -

·        আপনি কম শ্বাসকষ্ট বোধ করবেন।

·        আপনার কাশি কম হবে।

·        আপনি শারীরিকভাবে সবল বোধ করবেন এবং বাইরে ভালভাবে ঘোরাফেরা করতে পারবেন।

·        আপনি মানসিকভাবে উৎফুল্ল থাকবেন।

 

ডাক্তার কিংবা নার্স আপনাকে পরীক্ষা করে দেখবেন। তাঁরা রোগের ইতিহাস,  à¦¶à§à¦¬à¦¾à¦¸-প্রশ্বাস এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। তাঁরা আপনার বাসস্থান ও  কর্মস্থল সম্পর্কে জানতে চাইবেন।

আপনাকে শ্বাস-প্রশ্বাসের কিছু পরীক্ষা করতে হতে পারে। সাধারণত COPD  স্পাইরোমেট্রি নামক একটা সাধারণ পরীক্ষা দ্বারা নির্ণয় করা হয়। এ পরীক্ষা খুবই সহজ এবং ব্যাথামুক্ত। আপনাকে স্পাইরোমিটার নামক একটি যন্ত্রের সাথে যুক্ত একট রাবারের নলের মধ্যে জোরে শ্বাস ছাড়তে বলা হবে।

এ ছারাও বুকের এক্স-রে করেও রোগ নির্নয় করা যায়।

 

প্রকার ভেদ ও লক্ষনঃ

 

যদি COPD অতটা খারাপ না হয়, তাহলে তাকে মৃদু COPD বলে ।

যদি COPD এর অবস্থা খারাপ থাকে, তাকে মাঝারি মাপের COPD  বলে।

COPD এর অবস্থা খুব খারাপ হলে, তাকে তীব্র COPD বলে।

 

মৃদু COPD

·        আপনার অনেক কাশি হতে পারে।

·        মাঝেমাঝে কাশির সাথে আঠালো শ্লেষ্মা বের হতে পারে।

·        অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে বা দ্রুত হাঁটলে অল্প শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

 

মাঝারি COPD

·        আপনার আরো বেশী কাশি হতে পারে এবং কাশির সাথে আঠালো শ্লেষ্মা বের হবে।

·        অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে বা দ্রুত হাঁটলে প্রায়ই মনে হতে পারে যে দম ফুরিয়ে আসছে।

·        কষ্টসাধ্য কাজ  করা আপনার জন্য কঠিন হবে।

·        সর্দি বা বুকের সংক্রামণ নিরাময় হতে কয়েক  সপ্তাহ লাগতে পারে।

 

তীব্র বা খুব খারাপ COPD

·        আরো বেশী কাশি হতে পারে এবং অনেক শ্লেষ্মা বের হতে পারে।

·        দিনে এবং রাতে সবসময়ই আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা হতে পারে।

·        সর্দি বা বুকের সংক্রামণ নিরাময় হতে কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে।

·        আপনি কাজে যেতে পারেন না এবং বাড়ীর কাজকর্ম করতে পারেন না।

·        আপনি সিরি বেয়ে উঠতে পারেন না বা  এক রুম থেকে  আরেক রুমে  সহজে যেতে পারেন না।

·        আপনি দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন।

বিস্তারিত

-->

28-06-2013 রোগ ব্যাধি

উইলসন ডিজিজ

 

মেটাবলিজম বা বিপাক হল আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে কোষে অনবরত চলমান শত সহস্র রাসায়নিক কার্যক্রম, যার ফলে আমরা সঠিকভাবে কাজকর্ম করতে পারি ও বেঁচে থাকি। উইলসন ডিজিজ একটি জীনগত রোগ যা মূলত জন্মগত বিপাকীয় ত্রুটির কারনে হয়। এই রোগে শরীরের থেকে কপার নামক ধাতব মৌল নিষ্কাষণে বাধা সৃষ্টি হয়। এটি খুব অপ্রতুল একটি রোগ, সচরাচর তেমন দেখা যায় না। এই রোগের ফলে শরীরে কপার নামক মৌল বেড়ে যায় এবং তা শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষত যকৃত বা লিভার, মস্তিষ্ক ও স্নায়ু তন্ত্রে, কিডনীতে ও চোখে জমা হয় ও তাদের স্বাভাবিক কাজকর্মকে বাধাগ্রস্থ করে। প্রায় অর্ধেক ক্ষেত্রে শুধু লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। জন্ম থেকেই যদিও কপার শরীরে জমতে থাকে, তবু যুবক বয়সের আগে তেমন কোন সমস্যা দেখা দেয় না। চিকিৎসা না করালে এই রোগে মৃত্যু অবিসম্ভাবী। এর কোন প্রকৃত চিকিৎসা নেই যাতে রাগ সম্পূর্ণ সেরে যাবে তবে সুস্থ থাকা সম্ভব।

  গড়ে প্রতি ৩০,০০০ জন ১ জন এই রোগে আক্রান্ত। মূলত এটি জীনগত সমস্যা যা বাবা মা উভয়েরই কাছে থেকে সন্তানের কাছে আসে। তবে অনেক ক্ষেত্রে নতুন করে জীনগত ত্রুটি হবার কারণেও এই রোগ হয়। এর অপর নাম হল হেপাটোলেনটিকুলার ডিজেনারেশন।

লক্ষণ সমূহঃ

 

মূলত কপার যে যে অংশে জমা হয়ে ক্ষতি

 à¦•à¦°à§‡ সেই হিসেবে নানা ধরনের লক্ষন দেখা দেয়।

 

 

যেমনঃ

-         পেট ফুলে বড় হওয়া, পেটে ব্যাথা, ক্ষুধামন্দা।

-         রক্তবমি।

-         স্পলীন বা প্লীহা বড় হওয়া বা ফুলে যাওয়া।

-         জন্ডিস।

-         হাতের কাপুনী (ট্রেমর)।

-         হাত পা নড়াচড়ায় সমস্যা।

-         শরীরের নড়াচড়া ধীরগতি ও ঝাঁকুনী দিয়ে দিয়ে হওয়া।

-         কথা বলতে সমস্যা।

-         আচরণগত সমস্যা।

-         মারাত্মক বিষন্নতা বা আক্রমণাত্মক আচরণ।

-         মহিলাদের রক্তস্রাব না হওয়া।

-         সন্দেহ, ভুলোমন ইত্যাদি।

 

জীন ও এনজাইমের ত্রুটিঃ

শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন ধরনের এনজাইম, উইলসন ডিজিজে কপার শরীর থেকে বের করার রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জড়িত এনজাইমের ঘাটতি বা সমস্যা থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই এনজাইম তৈরীর যে জীন, তা বাবা মা দুজনের কাছ থেকে শিশু জন্মের সময় লাভ করে তাতে সমস্যা থাকে। যদি ১টিতে সমস্যা থাকে ও অপরটি ভাল থাকে সে ক্ষেত্রে রোগ লক্ষণ প্রকাশ পায় না (যেমন তার বাবা ও মা এর ক্ষেত্রে লক্ষণ প্রকাশ পায় নি)। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাবা মা এর শরীরে সমস্যাগ্রস্থ জীন না থাকলেও জন্মের সময় কোন কারণে জীনে সমস্যা হতে পারে, এবং সে ক্ষেত্রেও রোগ দেখা দিবে।

 

কপার কিভাবে ক্ষতি করেঃ

কপার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় একটি খনিজ পদার্থ। বিভিন্ন খাবারে কপার আছে। তবে আমাদের শরীরে এটি খুব অল্প পরিমানে লাগে, বাকিটুকু শরীর থেকে বের হয়ে যায়। উইলসন ডিজিজে কপার বের হতে না পেরে শরীরের বিভিন্ন অংশে জমা হয়। অতিরিক্ত পরিমানে জমা হলে কপার কোষকে মেরে ফেলে এবং ঐ কোষের স্থানটি যোজক কলা দ্বারা পূরণ হয়। এভাবে ধীরে ধীরে কোন অংশের অধিকাংশ কোষ যখন নষ্ট হয়ে যায় এবং যোজক কলা দ্বারা ভর্তি হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে ঐ অংশ সঠিক ভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়।

 

জটিলতাঃ

সঠিক চিকিৎসা না হলে সে সব জটিলতা দেখা দেয়ঃ

-         লিভারের রোগ যেমন হেপাটাইটিস, নেকরোসিস, সিরোসিস।

-         ঘন ঘন ইনফেকশন হওয়া।

-         প্লীহা বড় হওয়া।

-         রক্তশুণ্যতা।

-         মাংসপেশী দুর্বল ও শুকিয়ে আসা।

-         হাড় নরম হওয়া।

-         বুদ্ধি, চিন্তাশক্তি লোপ পাওয়া।

-         স্বাভাবিক চলা ফেরা, কথা বলায় সমস্যা ইত্যাদি।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

শারীরিক পরীক্ষা, রোগের ইতিহাস, চোখের কর্ণিয়া ও সাদা অংশের সংযোগ স্থলে বাদামী রং এর গোলাকার আবরণ (কে. এফ. রিং),

 

রক্তে কপারের মাত্রা, প্রস্রাবে কপারের মাত্রা এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এম. আর. আই, লিভারের কোষ নিয়ে পরীক্ষা ইত্যাদি।

 

 

চিকিৎসাঃ

চিকিৎসা না করলে মৃত্যু এবং যত বেশী কপার জমা হবে রোগ সারানো তত কঠিন। তাই দ্রুত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা জরুরী। চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হল শরীর থেকে অতিরিক্ত কপার অপসারন করা ও জটিলটা হ্রাস করা। চিকিৎসা আজীবন চালাতে হবে। চিকিৎসা বন্ধ করে দিলে কয়েক মাসেই রোগী মারা যেতে পারে। চিকিৎসার জন্য -

-         ভিটামিন বি-৬ নিয়মিত গ্রহন।

-         খাবারের পূর্বে পটাসিয়াম খেতে হবে যাতে কপার হজম না হয়।

-         জিংক ট্যাবলেট কেতে হবে যেন কপার হজম না হয়।

-         এমন খাবার খেতে হবে যাতে কপারের পরিমান কম।

-         পেনিসিলামিন জাতীয় ঔষধ, যা শরীরের কপারের সাথে লেগে তাকে প্রস্রাবের সাথে বের করে দেয়।

-         প্রয়োজনে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট।

-         পরিবারের লোককে রোগটা বোঝানো ও পরবর্তি সন্তান নেবার বেলায় উপদেশ প্রদান।

 

যে সব খাবারে কপার বেশীঃ

চকলেট, শুকনো সীম, ডাল, শুকনো ফল, বিস্তারিত

-->

28-06-2013 রোগ ব্যাধি

প্যারা থাইরয়েড গ্রন্থি

প্যারা শব্দের অর্থ হলো নিকটে। মানব শরীরে গলায় থাইরয়েড গ্রন্থির নিকটেই ৪টি ছোট ছোট গ্রন্থি থাকে- যাদেরকে একত্রে প্যারা থাইরয়েড গ্রন্থি বলে। এরাও শরীরের হরমোন গ্রন্থির অংশ। যেখান থেকে প্যারা হরমোন নামক হরমোন নি:সৃত হয়।

 

এই বিশেষ হরমোন আমাদের শরীরের অতি প্রয়োজনীয় কিছু লবনের (যেমন- ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস) মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

     ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস সুস্থ সবল হাঁড় গঠনের জন্য একান্ত আবশ্যকীয়। তাছাড়াও আয়নিত ক্যালসিয়াম রক্তে অবস্থান করে মাংসপেশী ও স্নায়ুর কাজকে  স্বাভাবিক রাখে। রক্তে আয়নিত ক্যালসিয়ামের মাত্রা কম বা বেশি হলে মাংসপেশী ও স্নায়ু সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।

 à¦¤à¦¾à¦‡ যখনই রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা খুব কমে যায়, তখন থাইরয়েড গ্রন্থি অধিক পরিমাণে প্যারাথরমোন নামক হরমোন নি:সৃত করে। এই হরমোনের  প্রভাবে কিডনী অধিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম রি-এবজরবসন (শোষণ) করে এবং হাড় থেকে ক্যালসিয়াম বের করে রক্তে ক্যালসিয়াম এর মাত্রা ঠিক রাখে।

অন্যদিকে রক্তের ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থি হরমোন নি:সরন কমিয়ে দেয়।

প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থিতে সমস্যা হলে তা অতি সক্রিয় (হাইপার প্যারাথাইরয়েডিজম) বা নিষ্ক্রীয় (হাইপো প্যারাথাইরয়েডিজম) হতে পারে।

হাইপার প্যারাথাইরয়েডিজম :

গবেষনায় দেখা যায় প্রায় প্রতি ২০০০ জনে ১ জনের হাইপার প্যারাথাইরয়েডিজম রোগ আছে। বিশেষত ৫০ বছরের অধিক বয়সী মহিলাদের এই রোগ বেশি হতে দেখা যায়। এই রোগে প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থি থেকে অধিক হারে প্যারাথরমোন হরমোন নি:সৃত হয়, যা রক্তে ক্যালসিয়াম রা মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং তা করতে গিয়ে হাড় থেকে প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম বাইরে বেরিয়ে আসে এবং কিডনরি উপর চাপ পড়ে। এই রোগীদের শতকরা ৫০ ভাগের ক্ষেত্রে কিডনীতে পাথর হতে দেখা যায়। মূল কারণ হিসাবে এডেনোমা প্রধানত দায়ী। এ ছাড়াও কিছু ঔষধ যেমন- এন্টিকনভালসেন্ট এর কারণের  হাইপার প্যারাথাইরয়েড হয়।

 

লক্ষনসমূহ :

-    à¦¹à¦¾à§œ ও অস্থি সন্ধিতে ব্যাথা

-    à¦¸à¦¹à¦œà§‡à¦‡ বা অল্প আঘাতে হাড় ভেঙে যাওয়া

-    à¦¶à¦°à§€à¦°à§‡à¦° উচ্চতা কমতে থাকা

-    à¦ªà¦¿à¦ à¦¬à§à¦¯à¦¾à¦¥à¦¾

-    à¦®à¦¾à¦‚সপেশীর ব্যাথা

-    à¦ªà¦¿à¦ªà¦¾à¦¸à¦¾

-    à¦˜à¦¨ ঘন প্রস্রাব

-    à¦ªà§‡à¦Ÿà§‡ ব্যাথা

-    à¦¦à§‚র্বলতা, অবসাদ

-    à¦¬à¦®à¦¿ বমি ভাব, ক্ষুধামন্দা

-    à¦¬à¦¿à¦·à¦¨à§à¦¨à¦¤à¦¾à¥¤

 

হাইপোপ্যারাথাইরয়েডিজম :

প্যারা থাইরয়েড গ্রন্থি নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়লে স্বাভাবিক প্রয়োজনের তুলনায় কম মাত্রায় প্যারাথরমোন নি:সরন করলে ঐ রোগকে হাইপো প্যারাথাইরয়েডিজম বলে। এর ফলে রক্তে আয়নিত ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমে যায়। ফলে মাংসপেশী ও স্নায়ু সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। এর কারণ সমূহ হল : ম্যাগনেসিয়ামের অভাব,

গ্রন্থিতে কোন আঘাত,

থাইরয়েড গ্রন্থির অপারেশনের সময় গ্রন্থিতে কোন ক্ষতি,

জীনগত সমস্যা অথবা

জন্মগতভাবে গ্রন্থি সৃষ্টি না হওয়া।

এর  রোগ লক্ষনসমূহ হল :

-    à¦¶à§à¦•à¦¨à§‹, খসখসে চামড়া

-    à¦®à¦¾à¦‚সপেশীতে চাবানো ব্যাথা

-    à¦¨à¦–, চুল, ভঙ্গুর হয়ে পড়া

-    à¦¶à¦°à§€à¦°à§‡ সুই ফোটানোর যন্ত্রণা

-    à¦–িচুনী।

 

জটিলতা :

সঠিক চিকিৎসা না হলে প্যারা থাইরয়েড গ্রন্থির রোগে যে ধরনের জটিলতা হতে পারে তা হল-

ক. হাইপারপ্যারাথাইরয়েডিজম : কিডনীতে পাথর,  মুত্রনালীর ইনফেকশন, প্যানক্রিয়াটাইটিস এবং হাড়ের ক্ষয়।

খ. হাইপোপ্যারাথাইরয়েডিজম : দাত উঠতে দেরী হয়, ঠিকমত দাত হয় না। বুদ্ধিমত্তা কম হয়, মহিলাদের মাসিকের ব্যাথা হতে পারে।

 

রোগ নির্ণয় :

রক্তে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ও প্যারাথরমোন হরমোনের মাত্রা নির্ণয় করে রোগ  নির্ণয় করা যায়।

এ ছাড়াও ইসিজি করার প্রয়োজন হয়।

 à¦Ÿà¦¿à¦‰à¦®à¦¾à¦° চিন্তা করলে বায়োপসি করতে হয়।

চিকিৎসা :

রোগের মাত্রা, কারণ ইত্যাদির উপর নির্ভর করে চিকিৎসা দেয়া হয়।

হাইপার প্যারাথাইরয়েডিজম :

খুব মারাত্মক পর্যায় হলে অপারেশন করে টিউমার সহ গ্রন্থিও ফেলে দেয়া হয়। তবে কমপক্ষে ১টিকে টিকিয়ে রাখা হয়।

হাইপো প্যারাথাইরয়েডিজম:

আজীবন ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি নির্দিষ্ট মাত্রায় গ্রহণ করতে হয়।

হঠাৎ বেশি অসুস্থ হলে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে নিয়মিত ক্যালসিয়াম নিতে হয়।

 

মাল্টিপল এন্ডোক্রাইন নিওপ্লাসিয়া :

প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থিসহ বা ছাড়া ২ বা ততোধিক হরমোন গ্রন্থিতে টিউমার হলে তাকে মাল্টিপল এন্ডোক্রাইন নিউপ্লাসিয়া বলে। আক্রান্ত গ্রন্থির উপর নির্ভর করে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। অপারেশন বা রেডিও থেরাপী দিয়ে চিকিৎসা করে পরবির্ততে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট করে চিকিৎসা করা হয়।

 

যা মনে রাখতে হবে :

১। মানব শরীরে গলায় থাইরয়েড গ্রন্থির নিকটেই ৪টি ছোট ছোট গ্রন্থি থাকে- যাদেরকে একত্রে প্যারা থাইরয়েড গ্রন্থি বলে।

২। প্যারাথাইরয়েডের গ্রন্থিতে সমস্যা বা রোগ হলে তা অতি সক্রিয় (হাইপারপ্যারাথাইরয়েডিজম) বা নিষ্ক্রীয় (হাইপারপ্যারাথাইরয়েডিজম) হতে পারে।

৩। এই গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোন আমাদের শরীরের অতি প্রয়োজনীয় কিছু লবনের যেমন-ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

 

 

 

28-06-2013 রোগ ব্যাধি

বাংলাদেশে আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যা ও তার সমাধানঃ

 

একটি দেশের উন্নয়ন নির্ভর করে সে-দেশের জনগণের সঠিক মেধাশক্তি এবং কর্মদক্ষতার ওপর। সুস্থ-সবল ও মেধাবী মানুষের সংখ্যাধিক্যের কারণেই গড়ে উঠতে পারে একটি সমৃদ্ধ দেশ। আয়োডিনের অভাবে বাংলাদেশের জনগণের এক বিপুল অংশ শারীরিক ও মানসিকভাবে উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে অসমর্থ। শুধুমাত্র আয়োডিনযুক্ত লবণের ব্যাপক প্রচলনই পারে বিপুল জনশক্তিকে একই সঙ্গে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ এবং স্বাভাবিক রাখতে; এতে মানুষের কর্মদক্ষতা ও চিন্তাশক্তি বাড়বে। ফলে, দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদনেও গতির সঞ্চার হবে।

আয়োডিন কী

আয়োডিন মানবদেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি রাসায়নিক উপাদান। বিশেষত মস্তিস্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের স্বাভাবিক বিকাশের জন্য এবং তা কার্যকর রাখার জন্য মানবদেহে আয়োডিন দরকার। শরীরে থাইরয়েড হরমোন তৈরির জন্য আয়োডিন প্রয়োজন। থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের মাধ্যমে থাইরয়েড হরমোন তৈরি হয়। গলার সামনের দিকে প্রজাপতির আকারে এই গ্রন্থি অবস্থিত। থাইরয়েড হরমোন রক্তের মাধ্যমে চলাচল করে দেহের বিভিন্ন অংশের বিপাক ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। মানবদেহে যখন যথেষ্ট পরিমাণে আয়োডিন না-থাকে তখন প্রয়োজনীয় থাইরয়েড হরমোন তৈরি হতে পারে না। তখন আয়োডিনের অভাবে নানা রকম অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। শরীরের তাপরক্ষা ঠিকমত হয় না।

 

আয়োডিন কোথায় পাওয়া যায়?

আয়োডিন প্রাকৃতিকভাবে মাটি ও পানিতে পাওয়া যায়। যেসব প্রাণী ও উদ্ভিদ মাটিতে উৎপাদিত খাদ্য খায় তাদের মাধ্যমেও মানুষ আয়োডিন পায়, কিন্তু বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রচুর বৃষ্টিপাত ও বন্যার ফলে মাটি থেকে এই আয়োডিন ধুয়ে চলে যাচ্ছে। ফলে, আমাদের খাদ্যে আয়োডিনের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। যদি এ-দেশে আয়োডিনের ঘাটতিজনিত সমস্যার সমাধান করতে হয়, তাহলে আমাদের খাদ্যে অবশ্যই বাড়তি আয়োডিন গ্রহণ করতে হবে। এর সবচেয়ে সহজ পথই হলো খাবারের লবণকে আয়োডিনযুক্ত করা। আয়োডিন কখনো শরীরে বেশি পরিমাণে সংরক্ষণ করে রাখা যায় না। তাই নিয়মিত এবং অল্প পরিমাণে আয়োডিন গ্রহণ করতে হবে। শরীরের পক্ষে বেশি পরিমাণে আয়োডিন ধরে রাখা সম্ভব নয় বলে প্রয়োজনেরঅতিরিক্ত আয়োডিন গ্রহণ করলেও তা প্রস্রাবের সাথে শরীর থেকে বের হয়ে যায়।

 

আয়োডিনের অভাব জনিত রোগঃ

আয়োডিন একটি পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরে অতি সামান্য পরিমাণে প্রয়োজন হলেও এর ভূমিকা Ab¯^xKvh©| এর অভাবে -

·        গলাফোলা রোগ (যাকে গলগ- বা ঘ্যাগ বলা হয়), মেধাহীনতা,

·        বামনত্ব ও বধিরতা দেখা দেয়।

·        মানুষ বোবা ও ট্যারা হতে পারে,

·        কথাবার্তায় তোতলানো, ইত্যাদি ¯^v¯’¨mgm¨v দেখা দেয়।

·        শিশুর চিন্তাশক্তি ও মেধা স্বাভাবিক ভাবে বিকশিত হয় না।

·        গর্ভাবস্থায় শিশুর মৃত্যুও হতে পারে।

 

বাংলাদেশে আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যা

বাংলাদশের শতকরা প্রায় ৭০ জন মানুষের মধ্যে আয়োডিনের অভাব রয়েছে। প্রায় ১ কোটি মানুষ

দৃশ্যমান ও ৪ কোটি মানুষ অদৃশ্যমান গলগ- বা ঘ্যাগে আক্রান্ত। ৫ লক্ষ লোক মারাত্মক শারীরিক বিকলাঙ্গতা নিয়ে মানসিক প্রতিবন্ধীত্বের শিকার হয়ে বেঁচে আছে। ধনী-গরীব, গ্রামবাসী-শহরবাসী শিক্ষিত-অশিক্ষিত যেকোনো মানুষের আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশের সর্বত্রই খাদ্যসামগ্রীতে আয়োডিনের কম-বেশি ঘাটতি রয়েছে। তাই আমরা কেউই বিপদমুক্ত নই। শিশু ও মহিলারা এ-সমস্যায় জর্জরিত। আয়োডিনের এই অভাবজনিত ভয়াবহ সমস্যাগুলো এড়ানোর একমাত্র উপায় যথেষ্ট পরিমাণে আয়োডিন গ্রহণ করা।

 

কী মাত্রায় আয়োডিন প্রয়োজন

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য গড়ে প্রতিদিন ১৫০ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিনের দরকার হয়। গর্ভকালীন ও দুগ্ধদানকারী মায়েদের প্রতিদিন ২০০ মাইক্রোগ্রাম, ছোট বাচ্চাদের ১২০ মাইক্রোগ্রাম, এবং অপেক্ষাকৃত বড় শিশুদের ক্ষেত্রে ৯০ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন লাগে।

 

কীভাবে আমরা প্রয়োজনীয়মাত্রায় আয়োডিন পেতে পারি

আয়োডিনের অভাব পূরণের অন্যতম উপায় হচ্ছে খাবারে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করা। এর কোনো বিকল্প নেই। তাছাড়া, সমুদ্রের মাছ ও সমুদ্র থেকে প্রাপ্ত খাদ্য থেকেও আমরা যথেষ্ট পরিমাণে আয়োডিন পেতে পারি।

আয়োডিনযুক্ত লবণ গ্রহণের শারীরিক ও মানসিক ইতিবাচক দিকগুলো আমাদের সুস্পষ্টভাবে জানা দরকার।

 

আয়োডিনযুক্ত লবণ খেলে গলাফোলা রোগ হবে না

স্বাভাবিক আকারের চাইতে বড় থাইরয়েড গ্ল্যান্ড থাকলে তাকে গলগন্ড বা গলাফোলা রোগ বলা হয়। শরীরে আয়োডিনের ঘাটতির একটি স্পষ্ট লক্ষণ হলো গলাফোলা। আয়োডিনের অভাবে এই লক্ষণটিই সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান হয়, কারণ

আয়োডিনের অভাবে শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে থাইরয়েড হরমোন তৈরি হয় না।

 

হাইপোথাইরয়ডিজম থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে

শরীর যখন যথেষ্ট পরিমাণে থাইরয়েড হরমোন পায় না তখন সেই অবস্থাকে হাইপোথাইরয়-ডিজম বলা হয়। এর উপসর্গগুলো হলো:

·        কুঁড়েমি,

·        নিদ্রাহীনতা,

·        চামড়া শুকনো হয়ে-যাওয়া

·        ঠান্ডা সহ্য করতে না-পারা

·        খুব ছোট শিশুরা এর ফলে মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ে।

কোনো কোনো শিশু দেখতে-শুনতে স্বাভাবিক হয়, কিন্তু কাজে বা পড়াশুনায় মনোযোগ দিতে পারে না বা খুবই ধীর গতিতে কাজ করে।এটি যে আয়োডিনের অভাবের কারণে হয়েছে তা তার মা-বাবা বুঝতেই পারেন না।

 

ক্রিটিনিজম (হাবাগোবা হওয়া ও বামনত্ব), বধিরতা, ট্যারা দৃষ্টি সম্পন্ন মানুষের সংখ্যা কমবে

হাবাগোবা মানুষদের মারাত্মক শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীত্ব রয়েছে। এর সাথে তারা বোবা-কালা এবং বামনও হয়ে থাকে। যখন একজন গর্ভবতী মহিলা আয়োডিনের প্রকট অভাবে ভোগেন তখন তিনি হাবাগোবা সন্তানের জন্ম দেন। ভ্রূণের বৃদ্ধির বিশেষ পর্যায়ে যথেষ্ট পরিমাণে আয়োডিন না-পেলে শিশুর মস্তিস্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে থাকে। সুতরাং গর্ভাবস্থায় ভ্রূণে আয়োডিনের অভাব পূরণ হলে শিশুর শারীরিক ও মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ হওয়ার ভয় থাকবে না এবং গর্ভাবস্থায় শিশুমৃত্যুর হারও হ্রাস পাবে।

 

প্রজনন সমস্যা দূরীভূত হবে

যেসব মহিলার আয়োডিন ঘাটতি আছে তাদের ক্ষেত্রে অন্যান্য মহিলাদের চেয়ে বেশি গর্ভপাতের ঝুঁকি থাকে ও তারা মৃত শিশুও জন্ম দেয়।বেশিরভাগ মহিলাই বুঝতে পারেন না যে, আয়োডিনের অভাবই এর মূল কারণ।

শিশুমৃত্যুর হার কমবে

আয়োডিনের অভাবে শিশুমৃত্যুর হার বেড়ে যায়। আয়োডিনের অভাবগ্রস্ত শিশুরা অন্যান্য শিশুদের চেয়ে বেশি মাত্রায় অপুষ্টির সমস্যায় ভোগে এবং তাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। আয়োডিনযুক্ত লবণ খেলে শিশুর বোধশক্তি ও মেধার স্বাভাবিক বিকাশ ঘটে। আয়োডিনের অভাবজনিত এলাকায় যেসব শিশুর আয়োডিনের অভাব রয়েছে তারা সঠিক পরিমাণে আয়োডিনযুক্ত লবণ খেলে তাদের মেধা ও বুদ্ধি (আইকিউ) ১০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

কর্ম-উদ্দীপনা বেড়ে যাবে

আয়োডিনযুক্ত লবণ খেলে সব বয়সের মানুষেরই কর্ম-উদ্দীপনা বেড়ে যায় এবং এরা প্রাণোচ্ছল থাকে। মানুষের স্বাভাবিক শারীরিক বৃদ্ধি ঘটে।

 

 

 

আয়োডিনযুক্ত লবণের মান নিয়ন্ত্রণ

আর্দ্রতা এবং সূর্যের আলোর প্রতি আয়োডিন সহজে ক্রিয়াশীল। এতে লবণে আয়োডিনের পরিমাণ কমে যেতে পারে। এর অর্থ হলো: লবণ সতর্কতার সাথে সংরক্ষণ ও প্যাকেট করতে হবে এবং উৎপাদক থেকে গ্রহণকারী পর্যন্ত সকল স্তরে নিয়মিতভাবে আয়োডিনের পরিমাণ পরীক্ষা করতে হবে। লবণে আয়োডিনের পরিমাণ পরীক্ষা করে দেখার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে মাঠকর্মীরা আয়োডিন পরীক্ষা-কিট ব্যবহার করবেন। বাড়িতেও নিজে-নিজেই লবণে আয়োডিনের উপস্থিতি পরীক্ষা করা যায়। ভাতের সাথে লবণ মিশিয়ে তাতে সামান্য কফোটা লেবুর রস দিলে যদি ভাতের রঙ বেগুনী হয়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে লবণে আয়োডিন আছে।

বিস্তারিত

-->

28-06-2013 রোগ ব্যাধি

থাইরয়েড গ্রন্থি

 

থাইরয়েড গ্রন্থি হল একটি অন্ত:ক্ষরা গ্রন্থি অর্থাৎ যে গ্রন্থি থেকে হরমোন নি:সৃত হয়। এই গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন ও ট্রাইআয়োডো থাইরনিন নামক হরমোন নি:সৃত হয় যা আমাদের শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের মানুষের শরীরে গলার সম্মুখভাগে কন্ঠনালীর ল্যারিংস (উচু হাড়) বরাবর অবস্থান করে। এর দুটি লোব বা অংশ শ্বাসনালীর দুই পাশে অবস্থান করে এবং সম্মুখভাগে ইস্থমাস নামক অংশ দ্বারা পরস্পরযুক্ত অবস্থান থাকে।

: বর্তমান বিশ্বে হরমোন ঘটিত রোগের মধ্যে ডায়বেটিসের পরেই থাইরয়েড গ্রন্থির হরমোনঘটিত রোগই অধিক হারে দেখা যায়। এই থাইরয়েড গ্রন্থি অতি সক্রিয় হলে বা নিষ্ক্রীয় হলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা ও জটিলতা দেখা দেয়।

 

গয়টার বা গলগন্ড :

থাইরয়েড গ্রন্থি কোন কারণে আকারে বড় হলে তাকে গয়টার বা গলগন্ড বলে। মূলত খাদ্যে আয়োডিনের ঘাটতি হল এর প্রধান  কারণ। কেননা আয়োডিনের অভাবে হরমোন তৈরী হতে পারে না, অন্যদিকে হরমোন কম বলে থাইরয়েড গ্রন্থি তার কাজ ও চেষ্টা বাড়িয়ে দেয়, ফলে গ্রন্থি ফুলে বড় হয়, তবু হরমোন তৈরী হয় না। আর চেষ্টা করতে করতে গ্রন্থি বড় থেকে আরও বড় হতে থাকে। আয়োডিনের ঘাটতি ছাড়াও আন্ডার একটিভ থাইরয়েড থাকলে পিটুইটারীর নির্দেশে ও হরমোনের প্রভাবে গ্রন্থি বেশি কাজ করতে পারে, ফলে গয়টার তৈরী হয়।

আবার অতি সক্রিয় হলেও গয়টার দেখা দিতে পারে, তাছাড়া গ্রন্থিতে টিউমার হলে বা সিস্ট থাকলেও বড় দেখাতে পারে।

 à¦¹à¦¾à¦‡à¦ªà¦¾à¦° থাইরয়েডিজম :

 à¦¥à¦¾à¦‡à¦°à§Ÿà§‡à¦¡ গ্রন্থি কোন কারণে অতি মাত্রায় সক্রিয় হয়ে  গেলে ঐ রোগকে হাইপারডিজম বলে। গড়ে প্রায় প্রতি ২০ জনে ১ জনের ক্ষেত্রে জীবনে কোন না কোন অবস্থায় থাইরয়েড গ্রন্থির এরূপ অতি সক্রিয় অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। থাইরয়েড গ্রন্থির প্রদাহ, গ্রন্থিতে টিউমারসহ নানাবিধ কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। তবে ইমিউন সিস্টেমের সমস্যা ঘটিত গ্রেভস ডিজিজ হল অন্যতম প্রধান কারণ।

  গবেষনায় দেখা যায়, পুরুষের তুলনায় মহিলারা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। গড়ে শতকরা ২ জন মহিলা কোন না কোন  মাত্রার হাইপার থাইরয়েডিজমে আক্রান্ত থাকতে দেখা যায়। তবে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ থেকে পুরোপুরি সুস্থ থাকা সম্ভব।

 

হাইপোথাইরয়েডিজম : যখন থাইরয়েড গ্রন্থি সঠিকভাবে বা সঠিক মাত্রায় হরমোন নি:সরন করতে ব্যর্থ হয়, ঐ অবস্থাকে হাইপো থাইরয়েডিজম বলে। এর ফলে শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হয়, ধীর গতি সম্পন্ন হয়ে পড়ে। হাইপো থাইরয়েডিজম রোগটি খুবই কমন একটি রোগ, বিশেষত মহিলাদের বেশি হয়। বিশ্বব্যাপী শতকরা ৬-১০ ভাগ মহিলা এই রোগে আক্রান্ত দেখা যায়। বিশেষত বয়স বৃদ্ধি পেলে এর হার বৃদ্ধি পায়। যেমন- ৬৫ বছরের অধিক বয়স্ক মহিলাদের প্রায় এক চতুর্থাংশ (শতকরা ২৫ ভাগ) হাইপোথাইরয়েডে ভূগছে। তবে এই রোগ পুরুষ এবং শিশুদেরও হতে পারে। হাইপোথাইরয়েডিজম মূলত ২ ধরনের হয়ে থাকে।  (ক) প্রাইমারী অর্থাৎ থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যার কারণে

(খ) সেকেন্ডারী গ্রন্থি ঠিক আছে কিন্তু তাকে নিয়ন্ত্রণকারী পিটুইটারী গ্রন্থির সমস্যা।

 

থাইরয়েডের অন্যান্য রোগ :

নডিউল :

থাইরয়েড গ্রন্থির ভেতরে দলাকৃত কোষ বা টিউমার। কিন্তু নডিউল অতি মাত্রায় সক্রিয়। যাদেরকে হট নডিউল বলে। আবার কিছু আছে যাদেরকে কোল্ড নডিউল বলে, এরা ততটা সক্রিয় নয়, তবে শতকরা ২০ভাগ ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে।

ক্যান্সার :

থাইরয়েডের ক্যান্সার খুব একটা কমন নয়। আবার যদিও হয়, তা প্রথম দিকে নির্ণয় করতে পারলে চিকিৎসা করে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্ভব।

আয়োডিন কেন?

থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন (T4) আয়োডোথাইরনিন (T3) নামক যে হরমোন নি:সৃত হয় তাতে 4 ও  3 মূলত আয়োডিনের পরমাণুর সংখ্যা নির্দেশ করে। অর্থাৎ এই দুটি হরমোন তৈরীতেই অত্যাবশ্যকীয়ভাবে আয়োডিন প্রয়োজন। যে কারণে সুস্থ্যতার জন্য ১ জন সম্পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক কমপক্ষে ১৫০ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন গ্রহণ করতে হয়। অনেক খাদ্যেই বিশেষত সামুদ্রিক খাবার, মাছে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন আছে। তবে সমুদ্র থেকে দুরবর্তী এলাকায় মাটিতে আয়োডিন কম থাকে বিধায়, কোন কোন এলাকায় ফসল ও খাদ্যে আয়োডিনের ঘাটতি থাকে। তাই তে ক্ষেত্রে আয়োডিনযুক্ত লবন খেলে চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। শরীরে আয়োডিন কম থাকলে যেমন সমস্যা তেমনি বেশি হলেও ক্ষতি।

    থাইরক্সিন (T4) ও ট্রাই আয়োডো থাইরনিন (T3) দুটির মধ্যে (T3) অধিক পরিমাণে সক্রিয়, কিন্তু এর পরিমাণ খুব কম। অন্যদিকে (T4) পরিমাণে বেশি কম সক্রিয়।  তবে (T4) ১টি আয়োডিন ত্যাগ করে (T3) রুপান্তরিতহয় ও বিপাক প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। অর্থাৎ শরীরে (T3), (T4) এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায় এবং কমে গেলে মেটাবলিজম বা বিপাক হ্রাস পায়।

 

পিটুইটারী গ্রন্থি ও হাইপোথ্যালামাস:

থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যক্রম সহ সকল গ্রন্থির কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করে পিটুইটারী গ্রন্থি। যাকে মাস্টার গ্লান্ড বলা হয়।

আর পিটুইটারী গ্রন্থির কাজ নিয়ন্ত্রিত হয় মস্তিস্কের অন্য একটি অংশ হাইপোথ্যালামাস দ্বারা।

 

হাইপো ও হাইপার থাইরয়েডের চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয় ;

নডিউল ও ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য রক্তের পরীক্ষার সাথে সাথে আল্ট্রাসনোগ্রাফী, বিশেষ ধরনের এক্স-রে, কোষ নিয়ে বায়োপসি, প্রয়োজনে সিটি স্ক্যান বা এম আর, আই করতে হতে পারে।

হট নডিউল হলে অপারেশন বা রেডিও একটিভ আয়োডিন দ্বারা নির্মূল করা হয়। কোল্ড হলে শুধু পর্যবেক্ষণ, যদি না ক্যান্সারে রূপ নেয়।

ক্যান্সার হলে অপারেশন করার পর রেডিও একটিভ আয়োডিন দ্বারা ছড়িয়ে পড়া কোষ ধ্বংস করা হয়।

 

যা যা মনে রাখতে হবে :

1.      গড়ে প্রায় প্রতি ২০ জনে ১ জন কোন না কোন ধরনের থাইরয়েডের সমস্যায়  ভূগেছেন।

2.     সাধারণ সমস্যার মধ্যে গলগন্ড, হাইপো ও হাইপারথাইরয়েড হতে দেখা যায়।

3.     বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অটোএন্টিবডি অর্থাৎ অটোইমিউন ঘটিত সমস্যা দেখা যায়, জীনগত সমস্যা যার জন্য দায়ী।

 

28-06-2013 রোগ ব্যাধি

হাইপোথাইরয়েডিজম

 

থাইরয়েড গ্রন্থি হল একটি অন্ত:ক্ষরা গ্রন্থি। অর্থাৎ (যে গ্রন্থি থেকে হরমোন নি:সৃত হয়) এই গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন ও ট্রাইআয়োডো থাইরনিন নামক হরমোন নি:সৃত হয় যা আমাদের শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের মানুষের শরীরে গলার সম্মুখভাগে কন্ঠনালীর ল্যারিংস (উচু হাড়) বরাবর অবস্থান করে। এর দুটি লোব বা অংশ শ্বাসনালীর দুই পাশে অবস্থান করে এবং সম্মুখভাগে ইস্থমাস নামক অংশ দ্বারা পরস্পরযুক্ত অবস্থান থাকে।

যখন থাইরয়েড গ্রন্থি সঠিকভাবে বা সঠিক মাত্রায় হরমোন নি:সরন করতে ব্যর্থ হয় ঐ অবস্থাকে হাইপো থাইরয়েডিজম বলে। এর ফলে শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হয়, ধীর গতি সম্পন্ন হয়ে পড়ে। হাইপো থাইরয়েডিজম রোগটি খুবই কমন একটি রোগ, বিশেষত মহিলাদের বেশি হয়। বিশ্বব্যাপী শতকরা ৬-১০ ভাগ মহিলা এই রোগে আক্রান্ত দেখা যায়। বিশেষত বয়স বৃদ্ধি পেলে এর হার বৃদ্ধি পায়। যেমন- ৬৫ বছরের অধিক বয়স্ক মহিলাদের প্রায় এক চতুর্থাংশ (শতকরা ২৫ ভাগ) হাইপোথাইরয়েডে ভূগছে। তবে এই রোগ পুরুষ এবং শিশুদেরও হতে পারে।

 

হাইপোথাইরয়েডিজম মূলত ২ ধরনের হয়ে থাকে।

(ক) প্রাইমারী - অর্থাৎ থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যার কারণে

(খ) সেকেন্ডারী - গ্রন্থি ঠিক আছে কিন্তু তাকে নিয়ন্ত্রণকারী পিটুইটারী গ্রন্থির সমস্যা।

প্রাইমারী হাইপোথাইরয়েডিজমের এর অন্যতম কারণ হল অটোইমিউন থাইরয়েডাইটিস বা হাসিমটো থাইরয়েডাইটিস।

 

লক্ষণসমূহ :

রোগের লক্ষণ রোগের মাত্রা অনুযায়ী প্রকাশিত হয়। অল্প, মাঝারী বা মারাত্মক পর্যায়ের রোগ থাকতে পারে। মারাত্মক পর্যায়ে, যেমন- মিক্সইডিমা-কমা হলে রোগী মারা যেতে পারে। অন্যদিকে খুব অল্প মাত্রার হলে কোন লক্ষণই প্রকাশ পাবে না। সাধারণত যে সব লক্ষণ প্রকাশিত হয়, তা হল :

-     à¦…ল্পতেই দূর্বল ও অবসাদ গ্রস্ত হওয়া, কাজ করার শক্তি না পাওয়া।

-     à¦¬à¦¿à¦·à¦¨à§à¦¨à¦¤à¦¾

-     à¦¹à§ƒà¦¦à¦¸à§à¦ªà¦¨à§à¦¦à¦¨ গতি কমে যাওয়া।

-     à¦•à§‹à¦¨ কারণ ছাড়াই ওজন বৃদ্ধি পাওয়া

-     à¦ à¦¾à¦¨à§à¦¡à¦¾ সহ্য করতে না পারা।

-     à¦šà¦¾à¦®à§œà¦¾ শুকনো ও খসখসে, মুখ ফোলা ফোলা

-     à¦šà§à¦² পড়ে যাওয়া

-     à¦•à§‹à¦·à§à¦Ÿ-কাঠিন্য

-     à¦—লগন্ড

-     à¦®à¦¾à¦‚সপেশীর সমস্যা

থাইরয়েড হরমোন :

মস্তিস্কের মধ্যখানে অবস্থিত পিটুইটারী গ্রন্থি থেকে থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন TSH নি:সৃত হয়, যা থাইরয়েড গ্রন্থিকে হরমোন তৈরীতে নির্দেশ করে। থাইরয়েড গ্রন্থি মূলত ২ ধরনের হরমোন তৈরী করে।

১। থাইরস্কিন (T4) এবং

২। ট্রাই-আয়োডাথাইরনিন (T3)

এই উভয় হরমোন তৈরীতে আয়োডিন নামক খনিজ লবন প্রয়োজন। প্রতিদিন ১৫০ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন প্রয়োজন হয়, যাতে হরমোনের মাত্রা সঠিক থাকে। রক্তে  T3   ও     T4  এর মাত্রা কমে গেলে  TSH  à¦¬à§‡à§œà§‡ যায়, ফলে বেশিভাগ T3   ও     T4   à¦¤à§ˆà¦°à§€ হয়। আর বেড়ে গেলে TSH এর মাত্রা কমে যায়।

 

হাইপোথায়রয়েডিজমের কারণ সমূহ :

১।        à¦†à§Ÿà§‹à¦¡à¦¿à¦¨à§‡à¦° ঘাটতি জনিত কারণ : খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়োডিন না থাকলে সঠিক মাত্রার থাইরয়েড হরমোন তৈরী হতে পারে না। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় হরমোন তৈরী করার জন্য থাইরয়েড গ্রন্থি প্রচন্ডভাবে কাজ করতে থাকে এবং আকারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই অবস্থা যদি শিশু অবস্থায় হয় বা গর্ভস্থ অবস্থায় হয়, তাতে শিশুর মস্তিস্কের গঠন মারাত্মকভাবে ব্যহত হয়, শিশুর বুদ্ধি  কম হয় এবং শারীরিক বৃদ্ধিও কম হয়।

২।       à¦¹à¦¾à¦¸à¦¿à¦®à¦Ÿà§‹ থাইরয়াডাইটিস -

এটি একটি অটোইমিউন রোগ। কেন কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী ব্যবস্থা (শ্বেত রক্ত, এন্টিবডি) নিজ শরীরের থাইরয়েড গ্রন্থির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং তাকে ধ্বংস করে। সঠিকভাবে চিকিৎসা না করলে ১০-১৫ বছরের মধ্যে রোগী মারা যায়।

৩।    à¦¹à¦¾à¦‡à¦ªà¦¾à¦° থাইরয়েডিজমের চিকিৎসায়ঃ

হাইপার থাইরয়েডিজমের চিকিৎসায় (ঔষধ, অপারেশন বা রেডিওথেরাপীর ফলে) প্রায়ই সব থাইরয়েড কোষ নষ্ট হয়ে যায় এবং রোগী হাইপোথাইরয়েড হয়ে যায়।

 

4.           à¦à¦•à§à¦¸-রে :

পূর্বে কিছু কিছু রোগের চিকিৎসায় (টনসিলাইটিস, এডেনয়েড) এক্স-রে ব্যবহৃত হয় যা থাইরয়েড গ্রন্থিকে অকার্যকর করে দেয়। ফলে থাইরয়েড হয়। বর্তমানে আর করা হয় না।

5.                 জন্মগত ত্রুটি : কখনও  কখনও শিশু জন্মগতভাবে থাইরয়েড গ্রন্থির ত্রুটি নিয়েই জন্মগ্রহণ  করে, যা swavabik হরমোন তৈরী করতে ব্যর্থ হয় অথবা পুরো থাইরয়েড গ্রন্থি নাও থাকতে পারে।

6.                  à¦ªà¦¿à¦Ÿà§à¦‡à¦Ÿà¦¾à¦°à§€ গ্রন্থির সমস্যা : পিটুইটারী গ্রন্থি সঠিক মাত্রায় থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন তৈরী করতে না পারলে।

7.                  à¦¹à¦¾à¦‡à¦ªà§‹à¦¥à§à¦¯à¦¾à¦²à¦¾à¦®à¦¿à¦• ডিসফাংসন : পিটুইটারী কাজ কে নিয়ন্ত্রণ করে হাইপোথেলামাস নামক মস্তিস্কের একটি অংশ। তাই ঐ অংশের সমস্যার কারণে পিটুইটারী ও ফলশ্রুতিতে থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ ব্যাহত হয়।

 

রোগ নির্ণয় :

শারীরিক লক্ষণ, রোগের ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা করে রোগ সম্বন্ধে ধারনা পাওয়া যায়। নিশ্চিত হবার জন্য রক্তে হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে থাইরয়েড গ্রন্থির আল্ট্রাসাউন্ড, রেডিও একটিভ আয়োডিন স্ক্যান ইত্যাদি করতে হয়।

চিকিৎসা :

যদি আয়োডিনের অভাবের কারণে হয, তা সহজেই আয়োডিনযুক্ত খাদ্য  গ্রহণের মাধ্যমে সমাধান করা যায়। আর যদি থাইরয়েড গ্রন্থি, পিটুইটারী গ্রন্থি বা থ্যালমাসের হরমোন নিয়মিত গ্রহণের মাধ্যমে লক্ষণ ও সমস্যার সমাধান করা যায়।

অটোইমিউন থাইরয়াডাইটিস এর কোন চিকিৎসা নেই। বরং আজীবন নির্দিষ্ট মাত্রায় ঔষধ খেতে হবে। তবে সঠিক মাত্রায় ঔষধ খাওয়া একান্ত জরুরী। কেননা কম খেলে সুস্থ হবে না। আর বেশি মাত্রায় খেলে হাইপার থাইরয়েডজম এর লক্ষণ দেখা দেবে। যেমন : বুক ধড়ফড় করা, ওজন কমা, ভীত হওয়া, প্রচন্ড ঘাম,  ঘুম কম হওয়া, পাতলা পায়খানা, গরম অসহ্য লাগা ইত্যাদি।

যা মনে রাখতে হবে :

-         থাইরয়েড গ্রন্থি থাইরস্কিন ও ট্রাই আয়োডা থাইরনিন নামক হরমোন নি:সরন করে যা শরীরের বিভিন্ন ক্রিয়া, শরীরের বৃদ্ধি ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে।

-         হাইপোথাইরয়েড হলে থাইরয়েড গ্রন্থি সঠিকভাবে সঠিক মাত্রায় হরমোন নি:সরন করতে পাà

27-06-2013 রোগ ব্যাধি

এনকাইলোজিং স্পন্ডাইলাইটিস

 

     এটি এক ধরনের আর্থাইটিস বা অস্থিসন্ধির প্রদাহ -যা মূলত মেরুদন্ডের হাড় (কশেরুকা) বিশেষ করে কোমর ও মাজার হাড় ও এদের সংযোগস্থলে হয়ে থাকে। এই ধরনের আর্থাইটিসে রোগীর কোমর ব্যাথা, কোমর ভাজ করতে কষ্ট সহ নড়াচড়াতেও সমস্যা হয়। এই সমস্যা কালো নিগ্রোদের চেয়ে ককেশানদের বেশী হয়। অন্যদিকে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের এই রোগের হার দ্বিগুন। এটি মূলত মধ্যবয়সীদের রোগ। ১৫-২০ বছরে এই রোগের উপস্থিতি বেশী। অন্যন্ন আর্থাইটিসের মত এই আর্থাটিস ও একেবারে নির্মূল হয় না বরং চিকিৎসা,  নিয়মিত জীবন-যাপন করলে কিছুটা আরামে থাকা যায়।

কেন এই সমস্যা:

প্রকৃত কারণ অজানা, যদিও জেনেটিক বা বংশগত কিছু মিল দেখা যায়। যেমন-এনকাইলোজিং স্পনডাইলাইটিস রোগের অধিকাংশেরই HLA-B-27 নামক জীনের অধিকারী। আবার অন্যভাবে বলতে গেলে HLA-B-27 জীনধারী প্রতি ২০ জনে ১ জন এই রোগে ভুগে। তাই শুধু একা এই জিন দায়ী নয়, বরং এই জীনধারী ব্যক্তির সাথে অন্যান্য কারণ বা ফ্যাক্টর যুক্ত হলে তার এই রোগ হয়। তবে অন্যান্য ফ্যাক্টরগুলো অজানা।

কি হয় শরীরে ?

 à¦à¦‡ রোগে কশেরুকায় প্রদাহ হয় (ব্যাথা, ফুল যাওয়া) পরিবর্তিতে মেরুদন্ডের বর্ধিত হাড়ের চারপাশে নতুন করে হাড় বড় হতে এবং বর্ধিত হাড়ের অংশগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে (বর্ধিত হাড়কে সিনডেসমোফাইট বলে)। অন্যদিকে আক্রান্ত কশেরুকা একটি অপরটির সাঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়লে মেরুদন্ডের নমনীয়তা ও ভাজ হবার ক্ষমতা হ্রাস পায়। তাই পরবর্তিতে ব্যাথাসহ নড়াচড়ায় মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়। তাই নতুন হাড় বৃদ্ধি পাবার পূর্বেই ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুবা নতুনভাবে  হাড়া জোড়া লেগে গেলে সম্মুখে

বা পশ্চাতে বা পাশে বাকাভাবে জোড়া লাগে।

লক্ষণসমূহ:

 

ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন হয়। তাছাড়া রোগের মাত্রার উপরও নির্ভর করে।

v     ক্রনিক (দীর্ঘমেয়াদী) কোমর ব্যাথা, পিঠে ব্যাথা।

v     কোমর ছাড়াও অন্যান্য সন্ধিতে যেমন-হাটু, পায়ের গোড়ালী, কাঁধ ইত্যাদিতে ব্যাথা, ফোলা বা পায়ের তালুর নিচে ব্যাথা।

v     সোজা হয়ে দাড়াতে সমস্যা, ব্যাথা হয়।

v     অনেকক্ষণ কাজ ছাড়া স্থিরভাবে থাকার পর নড়াচড়ায় ব্যাথা বাড়ে।

v     মেরুদন্ড ঠিকমত সবদিকে নড়াতে সমস্যা।

v     হাটতে সমস্যা।

v     ব্যায়াম ও কাজের পর কম ব্যাথা অনুভূত হওয়া।

শরীরের অন্যান্য অংশে প্রদাহ:

মেরুদন্ড  ছাড়াও বিভিন্ন  স্থানে প্রদাহ-

-          ইউভিয়াইটিস বা আইরাইটিস

-          হৃদপিন্ড ও ধমনীর রোগ (এয়োটাইটিস)

রোগ নির্ণয়:

 à¦¯à¦¤ দ্রুত রোগ ধরা যায়, ততই মঙ্গল. বিশেষ করে হাড্ডি নষ্ট হবার পূর্বে। রোগ নির্ণয়ের জন্য -শারিরিক পরীক্ষা, রোগের ইতিহাস, পারিবারিক রোগের ইতিহাস, এক্সরে, সিটি স্ক্যান, এম.এর.আই. রক্তের পরীক্ষা, জেনেটিক পরীক্ষা ইত্যাদি করা হয়।

চিকিৎসা:

 à¦ রোগ পুরোপুরি ভাল হয়না। চিকিৎসা উদ্দেশ্যে হল-

-          ব্যাথা কমানো, প্রদাহ কমানো, পরবর্তি জটিলতা কমানো।

-          রোগের অগ্রগতি হ্রাস করা, জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করা।

এ জন্য নিচের ওষধ ব্যবহার করা যেতে পারে-

v           এন. এস. এইড (NSAID)

v           ডিসিজ মডিফাইড এন্টি  রিউমাটয়েড জাতীয় (DMARD).

v           টিউমার নেকরোসিস ফ্যাক্টর (TNF).

v           করটিকো স্টেরয়েড।

v           এনালজেসিক বা ব্যাথানাশক ঔষধ।

 

ব্যায়াম:

সুস্থ অসুস্থ  সবার জন্যই ব্যায়াম অতি গুরুত্বপূর্ণ। তবে এনকাইলোজিং  স্পন্ডলাইটিসের ক্ষেত্রে ব্যায়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা। ব্যায়ামের  একদিকে যেমন ব্যাথা নিয়ন্ত্রণ হয়, অন্যদিকে হাড়ের মেরুদন্ডের ¯à¦¸à§à¦¬à¦¾à¦­à¦¾à¦¬à¦¿à¦• নড়াচড়ায় সাহায্য করে। ব্যায়ামের ফলে মাংসপেশী টান খায়, পেশীকে শক্ত হতে দেয় না। অন্যদিকে ব্যায়ামে হাড়ের  প্রতিনিয়ত নড়াচড়া হয় বলে বর্ধিত হাড়গুলি একটি আরেকটির মাথে জোড়া লাগতে  পারে না। তবে এজন্য প্রতি সপ্তাহে  অন্তত ৫-৬ দিন ব্যায়াম করতে হবে।

     হালকা গরম পানিতে ব্যায়াম বেশ কার্যকর-যাকে বলে হাইড্রোথেরাপী।  à¦¤à¦¬à§‡ ব্যায়ামের মাধ্যমে  সর্বোচ্চ উপকার পেতে চাইলে একজন ফিজিওথেরাপিস্ট বা ব্যা‌য়ামের ভালো প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত টেকনিশিয়ান থেকে ব্যায়াম শিখে অনুশীলন করতে হবে।

যা অবশ্যই মনে রাখতে হবে:

১. এনকাইলো স্পনডাইলাইটিস এক ধরনের আর্থাইটিস বা অস্থিসন্ধির প্রদাহ -যা মূলত মেরুদন্ডের হাড় (কশেরুকা) বিশেষ করে কোমর ও মাজার হাড় ও এদের সংযোগস্থলে হয়ে থাকে।

২. অন্যন্ন আর্থাইটিসের মত এই আর্থাটিস ও একেবারে নির্মূল হয় না বরং চিকিৎসা  নিয়মিত জীবন-যাপন করলে কিছুটা আরামে থাকা যায়।

৩. এনকাইলোজিং  স্পন্ডলাইটিসের ক্ষেত্রে ব্যায়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা।

 

 

27-06-2013 রোগ ব্যাধি

হাড়, মাংস ও অস্থিসন্ধিতে বয়সের প্রভাব

 

     মাংস পেশী ও হাড় জোড়ায় বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে  নানা ধরনের পরিবর্তন আসে। সাথে সাথে বৃদ্ধি পায় এ সব অংশের রোগ। যেমন- অস্টিও আর্থাইটিস, অস্টিও পরোসিস, রিউমাটয়েড আর্থাইটিস। ঔষধ ও ব্যায়ামের মাধ্যমে হাড় ও মাংসের গঠন, কার্যক্ষমতা অনেকাংশে ঠিক রেখে সুস্থভাবে জীবন যাপন করা সম্ভব।

     বয়স বাড়ার সাথে সাথে চুল. দাড়ি সাদা হবে, চামড়ায় ভাজ পড়বে- এটিই  à¦¸à§à¦¬à¦¾à¦­à¦¾à¦¬à¦¿à¦• ও অপরিবর্তনীয় এবং এক সময় ভাবা হত যে বয়স বাড়ার সাথে সাথে  মাংস, হাড়, অস্থিসন্ধির ক্ষয় হবে, দূর্বল হবে এবং তা রোধ করার কোন উপায় নেই। কিন্তু বর্তমানে রিসার্চে দেখা গেড়ছে যে, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া, হাড়-মাংস দূর্বল হওয়ার পেছনে জেনেটিক ফ্যাক্টরের পাশপাশি অন্যতম বা উল্লেখযোগ্য কারণ  হল- শারিরিক পরিশ্রম বিমুখতা( Inactivity),  à¦…ন্যদিকে সঠিক মাত্রায় পরিশ্রমের মাধ্যমে হাড়, মাংস জোড়া সব সুস্থ রাখা সম্ভব।

বয়সকালে অস্থি ও মাংসে যে পরিবর্তন  à¦“ রোগ সৃষ্টি হয়:

 à§¬à§¦ বছরের পর থেকেই বাংলাদেশী মানুষের  মাংস ও হাড় জোড়ায় যা হয়-

v     অস্টিও আথাইটিস

v     অস্থি সন্ধির কার্টিলেজ বা আবরনী হাড়টি ভেঙ্গে যায়, ফলে ব্যাথা হয়ও জোড়া শক্ত হয়ে যায়।

v     অস্টিওমেলেসিয়া - ভিটামিন  ডি এর হজমের সমস্যার কারণে হাড় নরম ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।

v     অস্টিওপরোসিস -হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে, ক্ষয় হয় এবং প্রায়ই হাড়  অল্প আঘাতে ভেঙ্গে যায়।

v     রিউমাটয়েড আর্থাইটিস -হাড় জোড়ায় প্রদাহ (ব্যাথা, ফুলা, লাল)

v     মাংসের পেশি দূর্বল হওয়া ও ব্যাথা হওয়া -মূলত উপরোক্ত ৪ টি কারণে হাড়ের সাথে যুক্ত মাংসপেশীর কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। এ ছাড়া সব সময় বিছানায় শায়িত থাকলে প্রতিদিন মাংসপেশির কর্মক্ষমতা ৫% হারে কমতে থাকে।

 

হাড়ে বয়স জনিত পরিবর্তন:

 

 à¦†à¦®à¦¾à¦¦à§‡à¦° শরীরের হাড় একটি জীবন্ত কলা (কোষের সমষ্ঠী) যা প্রতিনিয়ত বয়স অনুযায়ী বা বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত হতে থাকে। বযস হলে হাড় এ ক্ষয় হতে থাকে এবং হাড় ধীরে ধীরে দূর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। তবে-

v     পরিশ্রমহীন অলস  জীবন-যাপনে হাড় দ্রুত ক্ষয় হয়, চিকন হয়।

v     হরমোনের প্রভাব -মহিলাদের মনোপজের পর হাড়ের ক্যালসিয়াম ও লবন খুব দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে। অন্যদিকে পুরুষদের ক্ষেত্রেও সেক্স হরমোন হ্রাস পাবার সাথে সাথে হাড়ের ঘনত্ব হ্রাস পেতে থাকে।

v      

মাংসপেশিতে বয়সজনিত পরিবর্তন:

আমাদের বয়স যতই বাড়তে থাকে মাংসপেশী ধীরে ধীরে ছোট ও দূর্বল হতে থাকে। ফলে আমরা অল্পতেই ক্লান্ত-দূর্বল হয়ে পড়ি, কার্যক্ষমতা হারাতে থাকি। বয়সের সাথে সাথে যে পরবির্তন হয় তা হল-

v     মাংসপেশীর সংখ্যা ও দৈর্ঘ্য ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে।

v     কোন কোন স্থানে মাংসপেশী হ্রাস পেয়ে যোজক কলা যুক্ত হয়।

v     স্নায়ু দূর্বল হয়ে পড়ে, ফলে মাংসপেশীকে দ্রুত সিগন্যাল দিতে, পারে না, এতেও মাংসপেশী কাজের অভাবে শুকিয়ে যেতে থাকে।

অস্থি সন্ধিতে বয়সের প্রভাব:

 à¦…স্থিসন্ধিতে ১টি হাড় কখনও আরেকটি হাড়ের সাথে একত্রে সরাসরি লেগে থাকে না। বরং হাড়ের অগ্রভাগ কার্টিলেজ নামক নরম হাড়ের অংশ দ্বারা আবৃত থাকে, তার উপর সাইনোভিয়াল পর্দার আবরণ থাকে এবং মাঝখানে একটি পিচ্ছিলকারক সাইনোভিয়াল রস থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সেই রস এর পরিমাণ কমতে থাকে এবং নরম কার্টিলেজ শুকিয়ে যায়। ফলে সন্ধির নড়াচড়ায় ব্যাথা অনুভূত হয়। পুরোপুরি নড়তে কষ্ট হয়। এ ছাড়াও হাড়সমূহ লিগামেন্ট বা তন্তু দ্বারা পরস্পর যুক্ত থাকে-যা খুবই নমনীয়। কিন্তু বয়স বাড়লে এদের নমনীয়তা হ্রাস পায় বিধায় হাড়ের নড়াচড়া কঠিন হয়ে পড়ে।

     আর ব্যায়াম বা শারিরিক পরিশ্রম কম করলে এসব পরিবর্তন খুব দ্রুত হতে থাকে।

ব্যায়াম ও শারিরীক পরিশ্রম:

শারিরিক পরিশ্রম ও ব্যায়ামের ফলে বার্ধ্যক্য জনিত এসব পরিবর্তন রোধ করা সম্ভব। এমনকি আরও মজবুত করা সম্ভব। তাই দেরিতে শুরু করা-একেবারে না করার চেয়ে ভাল। যখন থেকে ব্যায়াম শুরু, তখন থেকেই উপকার পাওয়া যাবে। গবেষনার ফলে দেখা গেছে-ব্যায়ামের/পরি শ্রমের ফলে-

v     হাড় শক্ত ও মজবুত হয়, ক্ষয় রোধ হয়।

v     বৃদ্ধ ব্যক্তির মাংসপেশী ও সবল, কর্মক্ষম এবং  à¦¦à§ƒà§ হয়।

v     ভারী কাজ, হাটা, দৌড়ানো, ওজন বহন করা ইত্যাদির ফলে। এদিকে পেশি শক্তিশালী হয়, অন্যদিকে হাড় মজবুত হয়।

v     হাড়-সন্ধি নমনীয় থাকে, নড়াচড়া করা সহজ হয়।

ব্যায়ামের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ:

যদি আপনি-

v     বহুদিন পর ব্যায়াম শুরু করে থাকেন,

v     দীর্ঘমেয়াদী রোগে (আর্থাইটিস) ভুগে থাকেন,

v     হৃদরোগে আক্রান্ত হন

- তবে অবশ্যই আপনার ডাক্তার, ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করতে হবে।

 

যা অবশ্যই মনে রাখতে হবে:

১। মাংসপেশী, হাড়, অস্থি-সন্ধির দ্রুত বয়সজনিত পরিবর্তন ও রোগের ৫০% কারন হল শ্রমবিমুখতা অলস জীবন-যাপন।

২। শারিরিক পরিশ্রম ও ব্যায়ামের ফলে মাংসপেশী দৃঢ হয়, হাড় মজবুত হয়, হাড়ের ক্ষয়রোধ হয় এবং অস্থিসন্ধি নমনীয় থাকে।

৩। ব্যায়াম শুরু করার পূর্বে ডাক্তার, ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

 

 

27-06-2013 রোগ ব্যাধি

সারকয়ডসিস

 

সারকয়ডসিস হল এক প্রকার রোগ যেখানে শরীরে প্রদাহজনিত দলা বা নডিউল তৈরী হয় এবং বিশেষত উহা ফুসফুস ও বুকের ভেতরের লসিকা গ্রন্থিতে তেরী হয়। সাধারণত মধ্যবয়সী ২০-৪০ বছরের মধ্যেই রোগীরা আক্রান্ত হয়। কাশি শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি সমস্যার নিয়ে রোগীরা আসে। এই রোগের কারণ অজানা, তবে এটি কোন ক্যান্সার রোগ নয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সামান্য চিকিৎসায় ভাল হয়ে যায়।

সারকয়ডসিস এক ধরনের গ্রানুলোমেটাস ডিসঅর্ডার।  গ্রানুলোমা হল শরীরেরই রোগ প্রতিরোধকারী কিছু কিছু ইমিউন কোষ একত্রিত হয়ে দলা পাকিয়ে কোন অংশে বা কলায় অবস্থান করে।

 

রোগের কারণ :

এই রোগের প্রকৃত কারণ আবিষকৃত হয় নি। তবে ধারণা করা হয় যে, এটি এক ধরনের এলার্জিক জনিত রিএকশান। কোন জীবাণু, ফুলের রেনু, ধোয়া, ধুলা বা কোন এলার্জেনের বিরুদ্ধে শরীরে রোগ প্রতিরোধকারী ইমিউন কোষ সমূহ একত্রিত হয়ে ফুস ফুস বা লসিকাগ্রন্থিতে দলা তৈরী করে। তবে নির্দিষ্ট কারণ এখনও নিশ্চিতরুপে প্রমাণ হয়নি।

 

কাদের হয়?

যে কোন বয়সে যে কারও এই রোগ হতে পারে। তবে সাধারণত ২০ এর পরে ও ৪০ এর পূর্বে এই বয়সে এই রোগ বেশি দেখা যায়। গড়ে প্রতি ১০,০০০ জনে ১ জনের এই রোগ হতে দেখা যায়। আবার কখনও কখনও কোন পরিবারে এই রোগ বেশি হয়, জীনগত সম্পর্ক থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার সাদা ককেশিয়ানদের তুলনায় কালো নিগ্রোদের এই রোগ বেশি হয় এবং অস্ট্রেলিয়ান ও এশিয়ানদের প্রায় হয় না বললেই চলে।

 

রোগ লক্ষণ :

শরীরের যে কোন অংশে সারকোয়ডোসিস হতে পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোন কারণে বুকের এক্স-রে করতে গিয়ে দেখা যায় ফুস ফুসে বা বুকের ভেতরের লসিকা গ্রন্থিতে সারকোয়ডোসিস আছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে ঘাড়ে দেখা যায়। পা এর  শিরে হলে তাকে ইরাইথেমা নডোসাম ও বলে।

 

এ ছাড়াও চোখ কিডনী অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তেমন কোন লক্ষণ দেখা যায় না। যখন লক্ষণ থাকে, তখন সাধারণত নিচের লক্ষণসমুহ _v‡K

o       পরিশ্রম করলে শ্বাসকষ্ট হওয়া।

o       অল্পতেই হাঁপিয়ে যাওয়া, ক্লান্তিবোধ।

o       কাশি, বুকে চাপ বোধ হওয়া।

 

o       মুখ মুকিয়ে যাওয়া, চামড়ায়, চোখে ঘাঁ।

o       বুকের ২ পাশে তীব্র ব্যাথা বা বুকের সামনে চাপা ব্যাথা

o       সন্তান গর্ভে থাকাকালীন রোগের লক্ষণ কমে যায়, আবার সন্তান প্রসবের পর বেড়ে যেতে দেখা যায়।

 

চিকিৎসা :

সাধারণত তেমন কোন চিকিৎসা দরকার হয় না। কয়েক বছরের মধ্যে আপনা আপনি গ্রানুলোমা চলে যায়। তবে শতকরা ২০ ভাগ ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট, দূর্বলতা দীর্ঘদিন থাকতে পারে বা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে স্টেরয়েড দ্বারা চিকিৎসা করতে হয়। রোগের মাত্রার উপর নির্ভর করে ডোজ, মাত্রা ও মেয়াদ ঠিক করতে হয়। নিয়মিত শারীরিক চেক-আপে থাকা জরুরী।

 

যা যা মনে রাখতে হবে :

১।। সারকয়ডসিস হলে শরীরে বিশেষত ফুসফুস ও বুকের ভেতরের লসিকা গ্রন্থিতে প্রদাহজনিত দলা বা নডিউল তৈরী হয়।

২। গড়ে প্রতি ১০,০০০ জনে ১ জনের এই রোগ হতে দেখা যায়। সাধারণত ২০ এর পরে ও ৪০ এর পূর্বে এই বয়সে এই রোগ বেশি দেখা যায়।

৩। শ্বাসকষ্ট, অল্পতেই হাঁপিয়ে যাওয়া, ক্লান্তিবো্‌ কাশি, বুকে চাপ বোধ, চামড়ায়, চোখে ঘাঁ ইত্যাদি লক্ষন দেখা দিতে পারে ।

 

 

27-06-2013 রোগ ব্যাধি

গ্যাস্ট্রোএন্টারাইটিস

 

গ্যাস্ট্রোএন্টারাইটিস অথবা পাকস্থলীর প্রদাহ হলো এক প্রকার অসুস্থতা, যেটি পরিপাক তন্ত্রের প্রদাহ এবং সংক্রমনের দ্বারা ত্বরান্বিত হয়। লক্ষণসমুহের মধ্যে রয়েছে : পেটে খিচুনি দিয়ে ব্যাথা, ডায়রিয়া এবং বমি। এর কারণ সমুহের মধ্যে রয়েছে - ভাইরাস, ব্যাটেরিয়া, পরজীবি, নির্দিষ্ট ক্যামিকেল এবং কিছু ওষুধ সমূহ। গ্যাস্ট্রোএন্টারাইটিস এর প্রধান জটিলতা হল পানিশুণ্যতা। কিন্তু এই পানিশুণ্যতা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ অবস্থা অল্প কিছু দিনের মধ্যে নিজে নিজে ঠিক হয়ে যায় । যারা পানিশুণ্যতায় ভূগে তাদেরকে মুখে অথবা শিরাপথে পানি বা স্যালাইন দিতে হবে।

 

লক্ষণসমূহ :

·        ক্ষুধামন্দা

·        পেট ফাপা

·        বমি বমি ভাব 

·        বমি

·        পেটে খিচুনি দিয়ে ব্যাথা 

·        ডায়রিয়া

·        রক্ত পায়খানা

·        শরীর অসুস' লাগা

·        শরীর ব্যাথা

·        অবসাদগ্রস্থতা

 

কারণসমূহ :

ভাইরাস :-

ক্যালসিভাইরাস,রোটাভাইরাস, এডেনোভাইরাস।

ব্যাকটেরিয়া :-

ক্যামপাইলোব্যাকটার, ই-কোলাই, সিগেলা।

পরজীবী :-

এন্টামিবা-হিস্টোলাইটিকা, ক্রিপটোস্পারিডিয়াম।

ব্যাকটেরিয়াল টক্সিন :-

ব্যাকটেরিয়া সমূহ নিজেরা অসুস্থতা সৃষ্টি করে না, কিন্তু তাদের থেকে বিষাক্ত পদার্থ নি:সৃত হয়ে খাদ্য দ্রব্য সংক্রমিত করে পাকস্থলীর প্রদাহ ঘটায়।

ক্যামিকেলঃ- সীসা বিষ্ক্রিয়া

ঔষধ সমূহঃ- এন্টিবায়োটিক সমূহ।

 

সংক্রমিত গ্যাস্ট্রোএন্টারাইটিসঃ- সংক্রামিত গ্যস্ট্রএন্টারাইটিস ভাইরাস, ব্যাকটেরিযা বা পরজ়ীবির দ্বারা ঘটতে  পারে। খাদ্য দ্রব্যের মাধ্যমে যখন জীবাণু গলাধঃকরন করা হয় তখনই এ সংক্রমন বেশী ঘটে।

১। ইস্টেরেসিয়া কলাই দ্বারা সংক্রামনঃ- যেখানে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা দুর্বল, সেখানে এ সংক্রমণ বেশী ঘটে।  সাধারণত দূষিত পানি পান করলে, কাঁচা ফল বা সব্জি আধোয়া খেলে এ সংক্রমণ ঘটে।

২। ক্যামপাইলো ব্যাকটার সংক্রমণঃ-

এ জীবাণু প্রাণীদের মলে পাওয়া যায়। আক্রান্ত প্রাণীদের পরিচর্যার পর হাত না ধূলে,অরন্ধনকৃত খাদ্য (বিশেষ করে মুরগী) খেলে এ সংক্রমণ ঘটে।

৩। স্ক্রিপোস্পেরিডিয়াম সংক্রমণঃ- পরজীবীর বাস হল মানবদেহে তথা প্রণীদেহের অন্ত্রে। যেমন:- যদি কেউ  দুষিত পানিতে সাঁতার কাটে এবং হঠাৎ সে পানি গিলে ফেলে তখন এর সংক্রমন ঘটে।

ব্যাকটেরিয়া প্রাণীসমূহের মলে পাওয়া যায়। আক্রান্ত প্রাণী ধরলে বা খেলাধুলা করার পর হাত না ধূলে এবং দুষিত খাবার  খেলে এবং দুষিত পানি পান করলে এ সংক্রমন ঘটে।

৪। সিজেলোসিসঃ-

এটি প্রাণীদের মলে পাওয়া যায়। আক্রান্ত ব্যক্তি এ সংক্রমণ ছড়াতে পারে, যদি তারা বাথরুম ব্যবহারের পর ভালভাবে হাত না ধোয়।

৫। ভাইরার গ্যাস্ট্রএন্টারাইটিসঃ- ভাইরাস সমূহ মানবদেহের মলে পাওয়া যায়। এ সংক্রমণ আক্রান্ত ব্যক্তির হাত,বমি বা মল থেকে সহজেই ছড়াতে পারে।

 

রোগ চিহ্নিত করণঃ- চিকিৎসা করার আগে কোন প্রকার কারনের জন্য গ্যাস্ট্র এন্টেরাইটিস হল তা বের করতে হবে। কারন একেকটি গ্যাস্ট্রএন্টেরাইটিসের চিকিৎসা একেক রকম। রোগ চিহ্নিত করনের পদ্ধতি সমূহের মধ্যে রয়েছেঃ-রোগীর ইতিহাস

শারীরিক পরীক্ষা

রক্ত পরীক্ষা

পায়খানা বা মল পরীক্ষা

 

চিকিৎসাঃ-

·        প্রচুর পানি পান করা

·        মুখে স্যালাইন খাওয়া

·        মারাত্মক ক্ষেত্রে শিরা পথে স্যালাইন চালু করা

·        ব্যাকটেরিয়া জনিত কারনে হলে এন্টিবায়োটিক

·        পরজীবীর কারণে হলে- এন্টিপ্যারাসাইটিক ঔষধ

·        ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিভমেটিক (বমির) ঔষধ সেবন

 

প্রতিরোধঃ-

·        টয়লেট ব্যবহার করার পর, বাচ্চাদের ন্যাপি পরিবর্তনের পর, রুমাল বা টিস্যু ব্যবহারের পর এবং খাবার  গ্রহনের আগে হাত গরম পানি এবং সাবান দিয়ে ভালভাবে ধুতে হবে।

·        রান্না করার আগে হাত ধুতে হবে।

  

·        হাত ধোয়ার পর মোছার জন্য টিস্যু ব্যবহার করা ভাল, কারণ তোয়ালেতে জীবাণু থাকতে পারে।

·        কাঁচা সজ্বি এবং রান্না করা সজ্বি একই জিনিষ দিয়ে নাড়া যাবে না।

·        রান্নাঘর এবং বাহিরের অংশ পরিষ্কার রাখতে হবে।

·        ঠান্ডা খাবার ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে এবং গরম খাবার ৬০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের উপর রেখে সংরক্ষন করতে হবে।

·        খাবার ভালভাবে সেদ্ধ এবং রান্না করতে হবে। টয়লেট এবং বাথরুম প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে।

·        পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না থাকলে সেক্ষেত্রে বোতলজাত পানি পান করাতে হবে এবং ব্যবহার করতে হবে।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ-

১। গ্যাস্ট্রএন্টেরাইটিস হলো একটি স্বল্প সময়ের অসুস্থতা যেটি পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহ এবং সংক্রমণ দ্বারা তরান্বিত হয়।

২। লক্ষণ সমুহের মধ্যে রয়েছে পেটে খিচুনি দিয়ে ব্যথা,ডায়রিয়া,বমি

৩। কারণ সমূহের মধ্যে রয়েছে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া,পরজীবী,নির্দিষ্ট ক্যামিকেল, কিছু ওষুধ ইত্তাদি।

৪। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও নিয়ম কানুন মেনে চললে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

27-06-2013 রোগ ব্যাধি

স্ট্রোক ও উচ্চ রক্তচাপ

 

স্ট্রোকের সম্ভাব্য সকল ঝুঁকির মধ্যে অন্যতম ঝুঁকি হল উচ্চ রক্তচাপ। যারা নিয়মিত উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখেন না, তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি অন্যদের চেয়েও চারগুন বেশি। অনেক ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ আক্রান্ত ব্যক্তির কোনই লক্ষণ থাকে না, তাই তারা সে সম্বন্ধে সচেতন থাকেন না। অন্যদিকে উচ্চ রক্তচাপের ফলে সর্বক্ষন রক্তনালীর উপর একটি বারতি চাপ বিদ্যমান থাকে। ফলে যে কোন সময় মস্তিস্কে রক্তনালী ছিড়ে গিয়ে স্ট্রোক হতে পারে। তাই উচ্চ রক্তচাপকে নীরব ঘাতক বা সাইলেন্ট কিলার বলা হয়।

রক্ত তার নালী পথে চলার সময়, রক্তনালীর দেয়ালে যে পার্শ্বচাপ প্রদান করে, তাকেই রক্তচাপ বলা হয়। বয়স ও লিঙ্গ ভেদে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি হলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলে। উচ্চ রক্তচাপ আবার মাত্রা অনুযায়ী মৃদু (মাইল্ড) মধ্যম, অথবা মারাত্মক (সিভিয়ার) হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই যেহেতু উচ্চ রক্তচাপের কোন লক্ষন থাকে না, তাই নিয়মিত উচ্চ রক্তচাপের আক্রান্ত রোগীর কেবল স্ট্রোকের ঝুঁকিই নয়, সাথে সাথে আরও অনেক জটিল রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। যেমনঃ হার্ট এটাক, হার্ট ফেইলর, কিডনীর রোগ। তাছাড়া এদের চোখ স্থায়ী ভাবে দৃষ্টিহীন হতে পারে।

 

রক্তচাপ মাপাঃ

স্ফিগমো ম্যানোমিটার নামক যন্ত্র দ্বারা ধমনীতে রক্তচাপ মাপা হয়। রক্তচাপ মাপতে ২টি মান জানতে হয়। তা হলঃ

১। সিস্টোলিক প্রেসারঃ

ধমনীর অভ্যন্তরে হৃদপিন্ড সংকোচনের ফলে সৃষ্ট সর্বোচ্চ চাপ। এর ¯^vfvweK মাত্রা- সুস্থ, মধ্যবয়স্ক ব্যক্তির জন্য ১৪০ মি.মি. পারদ সৱম্ভ হল স্বাভাবিকের সর্বোচ্চ মান।

২। ডায়াস্টোলিকঃ

ধমনীর অভ্যন্তরে ২টি সিস্টোলিক প্রেসারের মধ্যবর্তী সর্বনিন্ম রক্তচাপ যা হৃদপিন্ড প্রসারিত অবস্থায় থাকার ফলে হয়। এর স্বাভাবিক মাত্রার সর্বোচ্চ মান ৯০ মি. মি. পারদ সৱম্ভ।

সাধারন ভাবে স্বাভাবিক রক্তচাপ হল ১২০/৮০, আর স্বাভাবিকের সর্বোচ্চ মান হল ১৪০/৯০ পর্যন্ত। যখন রক্তচাপ সর্বক্ষন ১৪০/৯০ এর অধিক থাকে, তখন তাকে উচ্চ রক্তচাপবা হাইপারটেনসন বলা হয় ।

 

উচ্চ রক্তচাপের প্রভাবঃ

-         উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের ঝুঁকি ৪গুন বাড়িয়ে দেয়। বিভিন্ন ভাবে তা প্রভাব ফেলে। যেমনঃ

-         উচ্চ রক্তচাপের ফলে এথোরোস্ক্লেরোসিস (রক্তনালীর ভেতরে চর্বি জমে চিকন হওয়া) হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

-         রক্তনালীর ভেতরে জমে থাকা পেস্নাক ছুটে গিয়ে মসিৱষ্কের রক্তনালী বন্ধ করে দিতে পারে।

-         উচ্চ রক্তচাপের ফলে দুর্বল রক্তনালী ছিড়ে গিয়ে মসিৱষ্কে রক্তক্ষরন হতে পারে।

-         সর্বক্ষন উচ্চ রক্তচাপের কারণে রক্তনালী মোটা শক্ত ও অনমনীয় হয়ে পড়ে।

-         জন্মগত রক্তনালীর ত্রম্নটি থাকলে উচ্চ রক্তচাপের কারনে তা ছিড়ে মসিৱষ্কে রক্তক্ষরন হয়, ফলে হেমোরেজিক স্ট্রোক হয়।

উচ্চ রক্তচাপের প্রধান প্রধান রিস্ক ফ্যাক্টকঃ

নানাবিধ কারনে উচ্চ রক্তচাপ হয়। এর মধ্যে প্রধান প্রধান কারন সমূহ হলঃ

-         খাদ্যে চর্বি ও লবনের পরিমান বেশি থাকা।

-         পরিশ্রম, ব্যায়াম কম করা

-         ওজন বেশি, স্থূলকায় দেহ

-         ধুমপান করা

-         উচ্চমাত্রায় মদ্যপান

-         দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ

-         রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকা

-         বংশগত কারন

-         বার্ধক্য জনিত কারন

-         ডায়বেটিস

-         পুরুষদের ঝুকি বেশি।

 

ঝুঁকি কমাবার উপায়ঃ

বয়স, লিঙ্গ, পারিবারিক ইতিহাস পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তবে যা যা করা সম্ভব তা হলঃ

-         স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন

-         অতিরিক্ত লবন, চর্বি জাতীয় খাদ্য পরিহার

-         আশযুক্ত খাদ্য গ্রহন ও ওজন নিয়নৱন

-         ধুমপান পরিহার করা

-         মদ্যপান পরিহার করা

-         নিয়মিত ব্যয়াম করা

-         স্ট্রেস ম্যানেজম্যান্ট শেখা ও পরিচর্যা করা

-         সাথে সাথে অবশ্যই ডাক্তরের পরামর্শ মোতাবেক নিয়মিত ঔষধ গ্রহন আবশ্যক

 

যা যা মনে রাখতে হবেঃ

-         উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের অন্যতম কারন

-         উচ্চ রক্তচাপের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তেমন কোন লক্ষন থাকে না। তাই নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা দরকার।

-         ঔষধ খেয়ে এবং জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করা যায়।

 

 

 

27-06-2013 রোগ ব্যাধি

রিউমেটিক ফিভার

 

রিউমেটিক ফিভার এক ধরনের অটোইমিউন ডিজিজ। অর্থাৎ শরীরের রোগ প্রতিরোধ কারী ব্যবস্থা কোন জীবাণুর বিরুদ্ধে সক্রিয় অবস্থান নেয়ার ফলে শরীরে আন্যান্য বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা রোগ দেখা দিতে পারে। রিউমেটিক ফিভার, গ্রুপ এ স্ট্রেটোকক্কাস ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশনের পরে দেখা দিতে পারে, যদিও খুব কম সংখ্যাই আক্রান্ত হয়।

মূলত ঐ জীবাণুর বিরুদ্ধে ইমিউন সিস্টেমের রিএকশনের ফলে এই সমস্যা দেখা দেয়। যে কোন বয়সেই এই রোগ হতে পারে, তবে বিশেষ করে ৫ - ১৪ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের এই রোগ বেশি হয়। সঠিকভাবে চিকিৎসা না করলে পরবর্তিতে মারাত্মক জটিলতা যেমন- রিউমেটিক হার্ট ডিজিজ হতে পারে।

রোগের লক্ষণসমূহঃ

-         বড় বড় অস্থি সন্ধির প্রদাহ, ব্যাথা, নাড়তে সমস্যা

-         চামড়ায় উচু হয়ে উঠা লাল বর্ন (ইরাইথেমা মারজিনেটাম)

-         চামড়ার নিচে নডিউল (বিশেষত আক্রান্ত সন্ধির আশেপাশে)

-         সিডেনহামস কোরিয়া (অনিচ্ছাকৃত নড়াচড়া, কাপুনি)

-         কার্ডাইটিস (হৃদপিন্ডের প্রদাহ)

এছাড়াও জ্বর, হাত-পায়ে ব্যাথা, দূর্বলতা, বুকে ব্যাথা, শ্বাস-কষ্ট ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

 

রিউমেটিক হার্ট ডিজিজঃ

সাধারণত কারও যদি ছোট বেলায় বার বার রিউমেটিক ফিভার হয় অথবা দীর্ঘদিন রিউমেটিক ফিভারে আক্রান্ত থাকে তাদের ক্ষেত্রে রিউমেটিক হার্ট ডিজিজ দেখা দেয়। তবে প্রায় ১ বারের রিউমেটিক ফিভারের পরও হার্ট ডিজিজ হতে পারে। এটি রিউমেটিক ফিভারের একটি স্থায়ী জটিলতা।

এ রোগে হার্টের বিভিন্ন স্তরে নানা ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে, যেমন- হৃদপিন্ডের মাংসে, আররণী পর্দায় বা ভাল্বের ক্ষতি হতে পারে। রোগী শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যাথা করা ইত্যাদি সমস্যায় ভোগে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তেমন কোন লক্ষণ নাও প্রকাশ পেতে পারে।

 

রিস্ক ফ্যাক্টরঃ

1.      স্ট্রেপটোকক্কাস ইনফেকশন ঠিকমত চিকিৎসা না করানো।

2.     দরিদ্র, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বসবাস, স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব।

3.     চামড়ায় কাটা, ঘা ইত্যাদি।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

মূলত রোগের ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা দ্বারা রোগ নির্ণয় করা হয়। তবে কিছু কিছু পরীক্ষা করে রোগ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

1.      বিগত সময়ে স্ট্রেপটোকক্কাস জীবাণুর ইনফেকশনের ইতিহাস

2.     শারীরিক পরীক্ষা

3.     গলার শ্লেষ্মা, আবরণ নিয়ে গ্রুপ এ স্ট্রেপটোকক্কাস জীবাণুর উপস্থিতি নির্ণয়

4.     রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রদাহ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া

5.     বুকের এক্স-রে, ইসিজি করে হার্টের সমস্যা নির্ণয়।

 

চিকিৎসাঃ

হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা ও বিশ্রাম

-         পেনিসিলিন ইঞ্জেকশন অথবা ট্যাবলেট

-         এসপিরিন

-         দীর্ঘমেয়াদী এন্টিবায়োটিক চিকিৎসা (প্রায় ৫ বছর বা তারও বেশি)

-         হার্ট ডিজিজ হয়ে  ভাল্ব নষ্ট হলে অপারেশন

দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবঃ

সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা হলে এই রোগের কোন জটিলতা হয় না। তবে, এই রোগ বার বার হতে পারে ও প্রতিবারই জটিলতা হবার ঝুঁকি থাকে। তাই দ্রুত  চিকিৎসা নিতে হবে। এখন পর্যন্ত এই রোগের কোন ভ্যাক্সিন বের হয় নি।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

1.      রিউমেটিক ফিভার একটি অটো ইমিউন রোগ, যা গ্রুপ এ স্ট্রেপটোকক্কাস জীবাণু দ্বারা ইনফেকশনের পরবর্তিতে হতে পারে।

2.     সঠিক চিকিৎসা না হলে এই রোগ থেকে রিউমেটিক হার্ট ডিজিজ হতে পারে।

3.     ৫-১৪ বছরের শিশু কিশোরদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি।

 

 

27-06-2013 রোগ ব্যাধি

রিউমেটিক হার্ট ডিজিজ

 

রেউমেটিক হার্ট ডিজিজ মূলত ছোট বয়সে হয় এবং রিউমেটিক ফিভারের পরে সৃষ্টি হয়। রিউমেটিক হাট ডিজিজে হার্টের বিভিন্ন অংশের ক্ষয় ক্ষতি হয়। যেমন- হার্টের ভাল্ব, মাংশপেশী, আবরণী ইত্যাদি। রিউমেটিক ফিভার মূলত গ্রুপ -এ  স্ট্রেপকোক্কাস জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হবার পর শরীরের ইমিউন সিস্টেমের রিএকশনের ফলে হয়। আর একবারের ফিভারের পরেই অথবা বার বার রিউমেটিক ফিভার হলে পরবর্তীতে রিউমেটিক হার্ট ডিজিজ হতে পারে।

 

রিস্ক ফ্যাক্টরঃ

মূলত দরিদ্র জনগোষ্ঠি যারা খুব ঘনবসতিপূর্ণ অবস্থায় অবস্থান করে, স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা সঅম্পর্কে সচেতনতা কম এবং রোগের দ্রুত চিকিৎসা করাতে অক্ষম, তাদের ক্ষেত্রেই রিউমেটিক ফিভার ও রিউমেটিক হার্ট ডিজিজ বেশি দেখা যায়। সাধারণত ৫-১৪ বছরেএই রোগ জবার প্রকোপ বেশি।

রোগ লক্ষণঃ

রিউমেটিক হার্ট ডিজিজে সব ক্ষেত্রে লক্ষণ থাকে না। তবে যে সব লক্ষণ তাকতে পারে তা হলঃ

·        বুকে ব্যাথা

·        বুক ধরফড় করা

·        হালকা পরিশ্রমের কাজ করলে শ্বাস কষ্ট হওয়া

·        অজ্ঞান হওয়া ইত্যাদি।

হার্ট ডিজিজে ভাল্ব আক্রান্ত হয়ঃ 

মানব দেহের হৃদপিন্ডে মোট ৪টি  প্রকোষ্ট এবং এরা মিলে একত্রে ২টি পাম্পের কাজ করে। প্রতিটি প্রকোষ্ট ১টি করে ভাল্ব দ্বারা আটকানো। এই ভাল্বগুলি কেবল ১ দিকে খোলে অর্থাৎ রক্ত এই ভাল্বের ভেতর দিকে শুধু একটি নির্দিষ্ট দিকে যেতে পারে। উল্টাদিকে আসতে পারে না। রিউমেটিক ফিভারে প্রায়শই হার্টের ভাল্ব আক্রান্ত হয় এবং আক্রান্ত ভাল্ব সঠিকভাবে খোলা বা বন্ধ হওয়ার কাজটি করতে পারে না। ফলে এই ভাল্বের ভেতর দিয়ে রক্ত স্বাভাবিকভাবে চলাচলে বাধাগ্রস্থ হয়। চিকিৎসা না হলে ভাল্বের ক্ষয়-ক্ষতি আরও বাড়তে থাকে এবং পরবির্ততে হার্ট ঠিকমত রক্ত পাম্প করতে পারে না (হার্ট ফেইলর হয়) এবং হার্ট দূর্বল হয় ও আকারে বড় হয়ে যায় এবং রোগীর বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশিত হতে থাকে।

 

রিউমেটিক হাট ডিজিজ রোগ নির্ণয়ঃ

রোগ নির্ণয়ের জন্য-

-         রোগের ইতিহাস, পূর্বে স্ট্রেপটোকক্কাস ইনফেকশন বা রিউমেটিক ফিভার হয়েছিল কিনা, কি চিকৎসা নিয়েছে ইত্যাদি।

-         শারীরিক পরীক্ষা

-         রক্ত পরীক্ষাঃ প্রদাহের উপস্থিতি, পূর্বের ইনফেকশনের প্রমাণ।

-         বুকের এক্স-রে - হার্টের আকার বড় হয়েছে কিনা, বা ফুসফুসে পানি জমেছে

 à¦•à¦¿à¦¨à¦¾ তা জানা যায়।

-         ই, সি, জি

-         ইকোকার্ডিওগ্রাম- হার্টের ভাল্বের কোন সমস্যা, ক্ষয়ক্ষতি, মাংশপেশীর সমস্যা, হার্ট ফেইলর ইত্যাদি বোঝা যায়।

 

চিকিৎসাঃ

রোগের মাত্রার উপর নির্ভর করে নিচের চিকিৎসা দেয়া হয়।

-         হাসপাতালে ভর্তি রেখে পূর্ণ বিশ্রাম

-         এন্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন

-         হার্টের ভাল্বের অপারেশন করে ত্রুটি সারানো

-         প্রয়োজনে কৃত্রিম ভাল্ব প্রতিস্থাপন করা হয় এবং সে ক্ষেত্রে আজীবন রক্ত তরল রাখার ঔষধ খেতে হবে।

 

হার্ট ডিজিজের জটিলতা প্রতিরোধে ব্যবস্থাঃ  রিউমেটিক হার্ট ডিজিজ থেকে  নানা ধরনের জটিলতা হবার সম্ভবনা থাকে। তাই এগুলি প্রতিরোধের জন্য কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে। যেমন-

-         হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ, হার্টের চেকআপ

-         সময় মত ইফ্লুয়েঞ্জা রোগের টিকা নিতে হবে।

-         স্ট্রেপটোকক্কাস ইনফেকশন হলে দ্রুত চিকিৎসা করানো

-         মুখের সঠিক যত্ন, মুখে কোন ক্ষত বা অপারেশনের পূর্ব থেকেই এন্টিবায়োটিক সেবন (কেননা ইনফেকটিভ এন্ডোকার্ডাইটিস হতে পারে)।

-         গর্ভবতির বিশেষ যত্ন- কেননা গর্ভকালীন সময়ে রিউমেটিক হার্ট ডিজিজের অসুস্থ্যতার মাত্রা বেড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।

-         দীর্ঘমেয়াদী, অনেক ক্ষেত্রে আজীবন এন্টিবায়োটিক সেবন।

প্রতিরোধে করণীয়ঃ

1.      রিউমেটিক ফিভার হলে দ্রুত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা

2.     কম মাত্রায় দীর্ঘদিন নিয়মিত এন্টিবায়োটিক সেবন

3.     খোলামেলা, স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস

যা মনে রাখতে হবেঃ

1.      রিউমেটিক হার্ট ডিজিজ হলে হৃদপিন্ডের বিভিন্ন অংশের সমস্যা ও ক্ষতি সাধন হয়, বিশেষ করে হার্টের ভাল্ব, মাংশপেশী, আবরণ ইত্যাদি।

2.     দীর্ঘমেয়াদী বা পুণঃপুণঃ রিউমেটিক ফিভারের জটিলতা হিসেবে রিউমেটিক হার্ট ডিজিজ হয়ে থাকে।

3.     প্রতেরোধই সর্বোৎকৃষ্ট সমাধান।

 

27-06-2013 রোগ ব্যাধি

বাচ্চাদের শ্রুতি ক্ষয়ঃ

 

পূর্বে ধারণা করা হত যে, শব্দ দূষণের জন্য প্রাপ্তবয়স্কদের শ্রূতিক্ষয় হয়, বাচ্চাদের হয় না। কিন্তু ইঊএস সেন্টার ফর ডিজীজ  কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশান  à¦à¦° মতে, আমেরিকান ৬ থেকে ১৯ বছর বয়সের বাচ্চাদের মধ্যে ১২% বাচ্চার শ্রুতিক্ষয়ের কারন হল  কোলাহল এবং এর মধ্যে ৫% এর শ্রুতিক্ষয় স্থায়ী হয়।

প্রতি ৫ জন এর ১ জন, যারা ঊচ্চ আওয়াজ (যেমন রক কনসার্ট) এ আসক্ত এবং ৪ ভাগের ৩ ভাগ মানুষ যারা নাইট ক্লাব, ডিস্কো তে আসা যাওয়া করে পরবর্তীতে তারা টিনিটাস বা কানে এক ধরণের আওয়াজ শোনা সমস্যায় এ ভোগে।

 

বাচ্চাদের শ্রুতি ক্ষয়ের জন্য শব্দ-দূষণ সহ আরও কিছু কারণ হলো, অটাইটিস মিডিয়া বা মধ্য কানের প্রদাহ, বংশগত, কিছু রোগ যেমন মেনিনজাইটীস।

 

প্রতি ১০০০০ বাচ্চার মাঝে ১২ জন জন্মগ্রহন করে উভয় কানে মাঝামাঝি ধরণের শ্রুতি ক্ষয় নিয়ে ,এছাড়া  ১০০০০ এর মধ্যে ২০ জনের ১৭ বসরের মধ্যে স্থায়ীভাবে হিয়ারিং-এইড  à¦à¦° প্রয়োজন হয়।

 

বাচ্চাদের অস্থায়ীভাবে শ্রুতিক্ষয় হওয়ার কিছু কারণ

·        মধ্য কানে ময়লা জমা হলে

·        বাইরের কোন বস্তু (যেমন কটন বাড) মধ্য কর্ণে প্রবেশ করালে

·        ইউসটেসিয়ান টিউব এ অতিরিক্ত mucus জমা হলে (আনেক ঠাণ্ডা লাগার জন্য হয়)

·        অটাইটিস মিডিয়া( মধ্য কর্ণের প্রদাহ )

 

বাচ্চাদের স্থায়ী ভাবে শ্রূতি ক্ষয়ের কিছু কারন

·        জন্মগত সমস্যা (আন্তঃ কর্ণ অস্বাভাবিক ভাবে বর্ধিত হলে)

·        কিছু বংশগত সমস্যা (অষ্টিওজেনেসিস ইম্পারফেকটা, ট্রাইসমি১৩ এস)

·        যখন বাচ্চা মায়ের গর্ভে থাকে তখন মা কিছু রোগে ভোগে (যেমন রুবেলা, জার্মান মিসেলস) যা বাচ্চার কর্ণ বিকাশ করতে বাধা প্রদান করে

·        শব্দ দূষণ (আতশবাজি, রক কনসার্ট আথবা হেড ফোন)

·        দুর্ঘটনা (মাথার হাড় ভেঙে গেলে)

·        কিছু রোগ (ব্রেইন এর প্রদাহ, মাম্পস)

 

বাচ্চার কানে শুনতে পাওয়ার কিছু নমুনা

·        ০ থেকে ৮ সপ্তাহঃ আশেপাশে হঠাৎ শব্দ হলে বাচ্চা ঘুম থেকে জেগে উঠলে

·        ৮ সপ্তাহ থেকে ৪ মাসঃ শব্দ শুনলে সামনে তাকায় এবং মাঝে মাঝে আশেপাশে তাকিয়ে শুনে

·        ৬ থেকে ১২ মাসঃ পরিচিত শব্দ শুনলে সামনের দিকে তাকায় এবং মুখে বুদবুদ শব্দ করে

·        ১২ থেকে ১৮ মাস; পছন্দের খেলনার নাম জানে, কিছু শব্দ করতে পারে

·        ১৮ থেকে ২৪ মাস; ছোট ছোট বাক্য বলতে এবং বুঝতে পারে, কিছু নির্দেশনা বুঝতে পারে (যেমন, মাকে বলটা দাও)

·        ২থেকে ৩ বছর; পরিষ্কার এবং সুন্দর করে কথা বলতে পারে

 

শ্রবণ জনিত সমস্যার উপসর্গ

·        যখন ডাকা হয় তখন সাড়া না দেওয়া

·        স্কুল এ গ্রেড নিচে পাওয়া(সারের কথা শুনতে না পারার কারণে)

·        কানের মধ্যে আওয়াজ শুনতে পায় (টিনিটাস)

·        অনেক জোরে কথা বলে

·        অনেক উচ্চ ভলিউমে টিভি দেখা

·        অশুদ্ধ শব্দ উচ্চারন

·        দেখতে অমনযোগী লাগে, মনে হয় দিনের বেলা স্বপ্ন দেখে

যেভাবে রোগ নির্ণয় করা হয়

এটা বাচ্চার বয়স এবং নিম্নোক্ত বিষয়ের উপরে নির্ভর করে

·        অবজেকটিভ টেস্ট যেমন: অডিটরি ব্রেইনস্টিম রেসপন্স টেস্টিং -  à¦¯à¦¾ কোন শব্দ করার পরে মস্তিস্কের বাদ্দুতিক ক্ষমতা পরিমাপ করে।

·        সাধারণ টেস্ট, যেমন কাছাকাছি হাত তালি দিয়া দেখতে হবে বাচ্চা কি করে (বিহাভিয়ার  à¦…ব্জেরভাশন অডিওমেট্রি)

·        অডিওমিটার টেস্ট; অডিওমিটার হলো একটা মেশিন যা কিছু শব্দ করবে এবং বাচ্চা এটা শুনলো কি না তার উপরে নির্ভর করে একটা পরিমাপ দিবে যে কতটুকু শুনছে বা শুনছেনা অথবা কত টুকু শ্রবণ ক্ষমতা নষ্ট হয়েছে।

 

চিকিৎসা পদ্ধতি

চিকিৎসা নির্ভর করে কি কারণ এবং কতটুকু শ্রুতি ক্ষয়ে গেছে তার উপরে। কিছু সহজ ও সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতি নিম্নে দেওয়া হলো,

·        অটাইটিস মিডিয়ার এর জন্যে এনটিবাইয়েটিক

·        কান পরিষ্কার রাখা,কিছু ঢুকলে বের করে দেয়া

·        প্রয়োজনে হেয়ারিং এইড ব্যবহার করা

·        শ্রুতি ক্ষয় মারাত্বক হলে ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার করা

·        ভাইব্রেশন এইড ব্যবহার করা যা শব্দকে স্পন্দনে রূপান্তরিত করে

·        স্পিচ থেরাপি

·        বাচ্চাকে নিম্নতম শব্দ শোনানর চেষ্টা হিশেবে যারা বধির ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করার ব্যপারে বিশেষজ্ঞ তাদের সাহায্য নেওয়া

 

স্মরণ রাখতে হবে

·        বাচ্চাদের শ্রুতি ক্ষয়ের কারন অটাইটিস মিডিয়া (মধ্য কর্ণের প্রদাহ), বংশ গত সমস্য্‌  আনেক বেশী শব্দ দূষণের মধ্যে থাকলে এবং কিছু রোগ (মস্তিস্কের প্রদাহ)

·        আমেরিকায় শব্দ দূষণের  জন্য ৬ থেকে ১৯ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে ১২% এর শ্রুতি ক্ষয়ে যায় এবং তা স্থায়ী হয় ৫% এর।

·        যদি আপনার বাচ্চার শ্রবণ শক্তি নিয়ে কোন সন্দেহ হয়, তখন এটা পরীক্ষা করতে হবে। এটা আগে নির্ণয় করা গেলে তা এটা বাচ্চাকে চিকিৎসার জন্য, শেখানোর জন্য  এবং সব দিক দিয়ে উন্নত করার জন্যে ভাল ।

 

19-06-2013 রোগ ব্যাধি

থ্যালাসেমিয়া

 

থ্যালাসেমিয়া হলো এক ধরনের জীনগত রোগ যা রক্তে অক্সিজেন বহনকারী হিমোগ্লোবিন তৈরীতে সমস্যা সৃষ্টি করে। সঠিকভাবে চিকিৎসা না হলে এই রোগে মারাত্মক রক্তশূন্যতা, জন্ডিস দেখা দেয় এবং রোগীর মৃত্যু হতে পারে। এই রোগের সম্পূর্ণ চিকিৎসা নেই বললেই চলে, তবে নিয়মিত রক্ত দিতে পারলে অন্যান্য চিকিৎসা ঠিকমত করতে পারলে দীর্ঘদিন সুস্থ্যভাবে বাঁচা সম্ভব।

    থ্যালাসেমিয়া রোগটি জেনেটিক রোগ, অর্থাৎ মা-বাবার কাছ থেকে সন্তান এই রোগে আক্রান্ত হয়। হিমোগ্লোবিন তৈরী করে যে জীন তা পরিবর্তিত হবার কারণে এই রোগ হয়।  পরিবর্তিত হবার কারণে হিমোগ্লোবিন ঠিকভাবে অক্সিজেন পরিবহন করতে পারেন না। তাছাড়া গঠনগত সমস্যার কারণে খুব সহজে নষ্ট হয়ে যায় - ফলে রক্ত শুন্যতা দেখা দেয়।

 

পরিবর্তিত জীনের কারণে হয় বলে পৃথিবীর যে কোন দেশে, যে কোন বংশে, বর্ণের ছেলে বা মেয়ে সবাই আক্রান্ত হতে পারে, তবে ভূ-মধ্য সাগরীয় এলাকা, মধ্য আরব ও দক্ষিণ এশিয়া এলাকায় এই রোগ বেশি দেখা যায়। সাধারণত জন্মের ৬ মাসের মধ্যেই এই রোগের লক্ষণ প্রকাশিত হয়ে পড়ে এবং চিকিৎসা না হলে শিশুকালেই রোগী মারা যায়।

 

প্রকারেভদ :

হিমোগ্লোবিনে ২টি আলফা চেইন ও ২টি বিটা চেইন থাকে। জীনগত সমস্যার কারণে আলফা বা বিটা চেইন তৈরীতে সমস্যা দেখা দেয়। সেই অর্থে আলফা থ্যালাসেমিয়া এবং বিটা থ্যালাসেমিয়া, এই ২ ধরনের থ্যালাসেমিয়া দেখা যায়। তবে এদের মধ্যে বিটা থ্যালাসেমিয়া বেশি কমন।

এছাড়াও রোগের প্রকৃতির উপর নির্ভর করেও প্রকারভেদ আছে। যেমন-

ক. থ্যালাসেমিয়া মাইনর :

বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর বেশি কমন। যারা বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর রোগী তাদের ১টি বিটা চেইন ঠিক থাকে। ধারণা করা হয় যে, বিশ্বে শতকরা ৫ ভাগ লোক বিটা

    থ্যালাসেমিয়া মাইনর রোাক্রান্ত এবং তারা সমস্যাযুক্ত জীন বহন করে। তবে তারা সুস্থ্যভাবেই জীবন-

    যাপন করতে পারে, তেমন কোনই রোগ লক্ষণ প্রকাশিত হয় না। কেবল রক্তের ইলেকট্রোফোসিস

    পরীক্ষা করে তা নিশ্চিত হওয়া যায়।

খ. থ্যালাসেমিয়া মেজর :

এই রোগীর দুটি বিটা চেইনের সমস্যাগ্রস্থ, তাই তার হিমোগ্লোবিনে কোন বিটা

   চেইন  থাকে না, যার ফলে এ ক্ষেত্রে রোহিত রক্ত কনিকা মাত্র কয়েক সপ্তাহ বাঁচতে পারে, সেখানে

   স্বাভাবিক লোহিত রক্ত কনিকা প্রায় ৪ মাস বাঁচে। কিন্তু থ্যালাসেমিয়া মেজর হলে মাত্র কয়েক দিন বাচে। তা খুব দ্রুত ধ্বংস হয় বলে মারাত্মক রক্তশূন্যতা দেখা দেয় এবং শরীরের সব কোষে অক্সিজের সরবরাহ করতে পারে না বলে নানা ধরনের সমস্যা ও রোগ লক্ষণ দেখা দেয় ।

 

রোগ লক্ষণসমূহ :

§    à¦®à¦¾à¦°à¦¾à¦¤à§à¦®à¦• রক্তশূন্যতা।

§    à¦¹à¦¾à¦¤, চোখের পাতা, নখ, মুখ-ফ্যাকাসে-সাদা বর্ণ ধারণ করা।

§    à¦•à§à¦·à§à¦§à¦¾à¦®à¦¨à§à¦¦à¦¾, অরুচি।

§    à¦¸à¦ à¦¿à¦•à¦­à¦¾à¦¬à§‡ বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া।

§    à¦…ল্প পরিশ্রমে হাপিয়ে উঠা, দূর্বলতা।

§    à¦˜à§à¦®à§‡à¦° সমস্যা।

§    à¦ªà§‡à¦Ÿà§‡ শক্ত চাকার মত অনুভব হওয়া,  à¦²à¦¿à¦­à¦¾à¦°, প্লীহা বড় হওয়া।

 

রিস্ক ফ্যাক্টর :

যখন ২ জন আপাত সুস্থ পুরুষ ও মহিলা (যারা থ্যালাসেমিয়া মাইনর রোগে আক্রান্ত অর্থাৎ বাহক যাদের নিজেদের কোন রোগ লক্ষণ নেই) বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, তাদের সন্তানদের মধ্যে :

§        ২৫ ভাগ ক্ষেত্রে সম্পূর্ন সুস্থ শিশু জন্ম লাভ করতে পারে।

§        শতকরা ২৫ ভাগ ক্ষেত্রে থ্যালাসেমিয়া মেজর রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

§        শতকরা ৫০ ভাগ ক্ষেত্রে বাবা বা মায়ের মত রোগের বাহক হতে পারে।

 

রোগ নির্ণয় :

রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীর রক্ত পরীক্ষা করা, রক্তের ফিল্ম দেখা ও রক্তের হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস পরীক্ষা করতে হয়। এ ছাড়াও মাথার এক্স-রে করেও রোগের সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যায়।

 

চিকিৎসা : 

থ্যালাসেমিয়া মেজর রোগের সম্পূর্ন আরোগ্য লাভকারী কোন চিকিৎসা নেই। আজীবন চিকিৎসা নিতে হবে। প্রথম প্রধান চিকিৎসা হলো রক্ত গ্রহণ করা। আর প্রতিনিয়ত রক্ত ভাঙ্গার কারণে জন্ডিসসহ আয়রন অতিরিক্ত হারে শরীরের বিভিন্ন অংশে কবার কারণে নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- ডায়বেটিস, লিভারের রোগ, হার্ট ফেইলর ইত্যাদি। তাই রক্ত গ্রহণের পাশাপাশি অতিরিক্ত আয়রন শরীর থেকে নিষ্কাশনের জন্য ঔষধ (ইঞ্জেকশন আকারে বা মুখে খাবার মাধ্যমে) যাকে আয়রন চিলেটিং এজেন্ট বলা হয়, তা নিয়মিত গ্রহণ করতে হয়।

এছাড়াও রক্ত উৎপাদনের জন্য ফলিক এসিড গ্রহণ করা, প্রয়োজনে স্প্লীহা অপারেশন করে ফেলে দেয়া ইত্যাদিও চিকিৎসার অংশ।

 

বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট : 

এখন পর্যন্ত এটিই কেবল একমাত্র নির্মূলকারী চিকিৎসা হিসেবে ধরা হয়, যদিও এর রিস্ক অনেক বেশি। মাত্র ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে সঠিক বা মিলমত ডোনার পাওয়া যায় এবং অধিকাংশই ভাই-বোন। তাছাড়া এই পদ্ধতি খুব অল্প বয়সীদের ক্ষেত্রে কার্যকর, যাদের শরীরে এখনও মাত্রাতিরিক্ত আয়রন জমা হয়নি। তবে বোনমেরো ট্রান্সপ্ল্যান্ট পরবর্তি ফলরূপে - গ্রাফ্‌ট ভার্সাস হোস্ট রিএকশন হয়ে গ্রাফ্‌ট রিজেকশন (ফেইলর) হতে পারে। এমনকি রোগী মারাও যেতে পারে। তাছাড়া এটি এত খরচবহুল যে, অনেক পরিবারের পক্ষেই তা বহন করা সম্ভবপর না। তাই নিয়মিত রক্তগ্রহণ ও আয়রন কমিয়ে রাখাটাই এখন পর্যন্ত মূল চিকিৎসা। বিজ্ঞানীরা এখনও গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছেন এর পরিপূর্ণ সুস্থ্যতার উপায় বের করার।

 

প্রতিরোধ :

এই রোগ প্রতিরোধ করতে হলে জাতীয়ভাবে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেমন :

§    à¦¥à§à¦¯à¦¾à¦²à¦¾à¦¸à§‡à¦®à¦¿à§Ÿà¦¾ মাইনর (বাহক) স্বামী-স্ত্রী নতুন করে সন্তান নিবেন না।

§    à¦¦à§à¦‡à¦œà¦¨ বাহকের মধ্যে বিবাহ বন্ধ করা।

§    à¦à¦•à¦œà¦¨ বাহক হলে বিবাহের সময় অপর পক্ষের রক্ত পরীক্ষা করে নেয়া।

§    à¦¦à§à¦œà¦¨à¦‡ বাহক হলে এবং স্ত্রী গর্ভধারণ করলে গর্ভের সন্তানের পরীক্ষা করে সন্তান সুস্থ হলে গ্রহণ করা মেজর রোগে আক্রান্ত হলে সন্তান গ্রহণ না করা।

§    à¦—র্ভস্থ সন্তানের পরীক্ষা- এমনিও সিনটেসিস ও কোরিয়নিক ভিলাস স্যাম্পলিং করে পরীক্ষা করা যায়।

§    à¦†à¦•à§à¦°à¦¾à¦¨à§à¦¤ পরিবারের নিজেদের আত্মীয়দের মধ্যে বিয়ে না করানো ।

 

যা যা মনে রাখতে হবে :

১. থ্যালাসেমিয়া হল রক্তের হিমোগ্লোবিনের গঠনগত সমস্যা সম্পর্কিত এক ধরনের জেনেটিক রোগ।

২. থ্যালাসেমিয়া মেজর রোগেআক্রান্ত শিশুর জন্মের ৬ মাসের মধ্যেই রোগ লক্ষণ- রক্ত শূন্যতা,

বিস্তারিত

-->

19-06-2013 রোগ ব্যাধি

টার্নার সিনড্রোম

 

টার্নার সিনড্রোম একধরনের জীনগত রোগ (জেনটিক ডিস অর্ডার) যা কেবল মেয়ে শিশু অর্থাৎ স্ত্রী লিঙ্গেই দেখা যায়। সাধারনভাবে মহিলাদের জীনে ২২ জোড়া অটোজমের সাথে ২টি ´ ক্রোমোজোম থাকে। টার্নার সিনড্রোম এ ১টি ´ ক্রোমোজোম কম থাকে বা অস্বাভাবিক থাকে। এর আরও কিছু নাম আছে যেমনঃ মনোজমী ´, 45´, ইত্যাদি। মূলত এই রোগে আক্রান্ত মহিলারা আকারে খর্বকায় হয় এবং তারা সন্তান ধারনে অক্ষম হয়। এছাড়াও ক্রোমোজোমের পরিবর্তনের মাত্রার উপর নির্ভর করে নানা ধরনের শারীরিক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। গড়ে প্রায় ২০০০ মেয়ে শিশুর মধ্যে ১টি শিশুর টার্নার সিনড্রোম হতে দেখা যায়। প্রকৃত পক্ষে এ ধরনের জীনগত সমস্যা নিয়ে অনেক শিশুই গর্ভাবস্থায় মারা যায়, কেবল শতকরা ১ভাগ শিশু জন্মগ্রহন করে।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নত প্রযুক্তির ফলে জন্মের পূর্বেই এ রোগ নির্ণয় করা যেতে পারে। যেমনঃ

ক) জন্মের পূর্বেঃ

এমনিওসেনটেসিস করে ক্রোমোজোমের বিশ্লেষণ করলে এবং অনেক ক্ষেত্রে আল্ট্রাসনোগ্রাম করেও এটি বোঝা যেতে পারে।

খ) জন্মের পর পরঃ

কিছু নির্দিষ্ট শারীরিক ত্রুটি লক্ষ করা যায়।

গ) শিশু বয়সেঃ

যখন মেয়ে শিশুটি অন্যান্য শিশুর মত বেড়ে উঠছে না তখন পরীক্ষা করলে রোগ নির্ণয় করা যায়।

ঘ) কৈশর বয়সেঃ

সঠিক সময়ে বিভিন্ন শারীরিক লক্ষন প্রকাশ না হবার কারনে পরীক্ষা নীরিক্ষা করার ফলে রোগ নির্ণয় হয়।

ঙ) পূর্ণ যৌবনেঃ

সন্তান ধারনে অক্ষম হওয়ায় রোগ নির্ণয়।

 

কিছু বিশেষ লক্ষনঃ

টার্নার সিনড্রোমের কিছু বিশেষ লক্ষন থাকে। যেমনঃ

1.      আকারে ছোট হওয়াঃ গড়ে উচ্চতা মাত্র ৪ ফুট ৮ ইঞ্চির বেশী হয় না।

2.     জন্মগত ভাবে হার্ট বা হৃদপিন্ডে ত্রুটি (শতকরা ৫০ ভাগ ক্ষেত্রে)

3.     মানসিক দক্ষতার অভাবঃ বিশেষত অংক সমাধান করা।

4.     বয়সন্ধিকাল না আসাঃ অর্থাৎ ঋতুস্রাব না হওয়া।

5.     কানে শুনতে সমস্যা, কম শোনা, না শোনা।

6.     ইনফারটাইল অর্থাৎ সন্তান জন্মদানে অক্ষম হওয়া।

আরও কিছু লক্ষনঃ

উপরিউক্ত লক্ষন সমূহ ছাড়াও আরও কিছু শারীরিক সমস্যা থাকতে পারে। যেমনঃ

-         চওড়া বুক, নিপল দুই পাশের দিকে ছড়ানো।

-         ঘাড়ে ভাজ করা অতিরিক্ত চামড়া।

-         হাত ও পা ফোলা ফোলা।

-         হাতের কনুই পুরোপুরি সোজা করতে না পারা।

-         চুলের লাইন অনেক নিচের দিকে থাকা।

  যে সব সমস্যার চিকিৎসা দরকারঃ

1.      জন্মগত হার্টের ত্রুটিঃ জন্মগত ভাবে হৃদপিন্ডের ভেতরের কিছু অংশ, পর্দা, ভালব তৈরী হতে পারে না। তবে কিছু কিছু অংশ ধীরে ধীরে তৈরী হয়। আর কিছু অংশ সার্জারী করে ঠিক করতে হয়।

2.     কানে শুনতে সমস্যাঃ টার্নারে কানে সমস্যা ছোটবেলায় কানের ইনফেকশন থেকে হতে পারে। অথবা জন্মগত ত্রুটির কারনে অডিটরী নার্ভের ডিজেনারেশনের কারনেও শ্রবণ ত্রুটি হতে পারে।

3.     মধ্যকর্ণের প্রদাহঃ টার্নার সিনড্রোমের শিশুদের ইয়ার টিউব তুলনামূলক সরু হবার কারনে এদের অটাইটিস সিডিয়া বা মধ্য কর্ণের প্রদাহ হবার ঝুঁকি বেশী। এক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা করতে হবে।

4.     উচ্চ রক্তচাপঃ বয়সন্ধিকালীন ও বয়স্ক টার্নার মহিলাদের উচ্চরক্তচাপ ¯^vfvweK মহিলাদের তুলনায় বেশী হয়ে থাকে। কেননা এদের মূল ধমনীতে জন্মগত ত্রুটি (কো:আর্কটেশন অফ এওর্টা - রক্ত নালী সরু ও বাকা) থাকে। তবে এটি সার্জারী করে ঠিক করা সম্ভব। অনেক ক্ষেত্রে অজ্ঞাত কারনেও তাদের উচ্চরক্তচাপ থাকতে দেখা যায়।

5.     কিডনীঃ আল্ট্রাসনোগ্রামে কিডনীতে কিছু জন্মগত ত্রুটি থাকতে দেখা যায়।

6.     হরমোন এর সমস্যাঃ টার্নার সিনড্রোমে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের তুলনায় অধিক হারেটাইপ-২ ডায়বেটিস ও থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা হতে দেখা যায়।

 

রোগের কারনঃ

ত্রুটি একটি জীনগত ত্রুটি। জীন হল আমাদের দেহের একটি ব্লু প্রিন্ট। যা মূলত দেহের বৃদ্ধি, স্বাভাবিক কার্যক্রম, জৈবিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রন করে। প্রতিটি মানুষের ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে। যার ২২ জোড়া শরীরের বিভিন্ন বৈশিষ্ট নিয়ন্ত্রন করে, আর ১  à¦œà§‹à§œà¦¾ সেক্স ক্রোমোজম যা মানুষের লিঙ্গ নির্ধারন করে। প্রতিটি ক্রোমোজোম হাজার হাজার জীন দ্বারা গঠিত। স্বাভাবিক ভাবে যখন ২ টি সেক্স ক্রোমোজোম ´ nq (৪৬ ´´), সেই ব্যক্তিটি মেয়ে হয়ে জন্মে। কিন্তু টার্নার সিনড্রোমের ২ টি ´ ক্রোমোজমের মধ্যে একটি ক্রোমোজম পুরোপুরি অনুপস্থিত থাকে নতুবা মারাৱকভাবে অকার্যকর থাকে। আর এই অনুপস্থিতি বা অস্বাভাবিক জীনের কারনেই নানাবিধ শারীরিক ত্রুটি দেখা দেয়।

 

অপরিনত মেনোপজ, বিলম্বিত ধাতুস্রাবঃ যেহেতু ´ ক্রোমোজোমই নারী বৈশিষ্ট্র গ্রহণ করে এবং টার্নারে ১টি ´ কম থাকে সে কারনে টার্নারে আক্রান্ত মহিলাদের বিভিন্ন ধরনের স্ত্রী বৈশিষ্ট্যের ঘাটতি থাকে। তাদের বাহ্যিক স্ত্রী বৈশিষ্ট্য কম থাকে। wW¤^vkq সঠিকভাবে তৈরী হতে পারে না বলে সঠিক সময়ে বয়সন্ধি হয় না। গর্ভধারন করতে পারে না এবং তাদের  খুব দ্রুত মেনোপজ বা রজ:নিবৃত হয়। শতকরা 5 ১০ ভাগ টার্নার সিনড্রোম এর ঠিক মত রজ:স্রাব হয়, আর অধিকাংশেরই হরমোন থেরাপীর প্রয়োজন হয়।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

1.      এমনিওসেনটেসিস ও কোরিয়নিক ভিলাস স্যাম্পলিং করে জন্মের পূর্বেই গর্ভস্থ্য শিশুর ক্রোমোজোম এনালাইসিস করে রোগ নির্ণয় করা যায়।

2.     এছাড়া শিশু জন্মের পর রোগের ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা, ব্যক্তির মানসিক ও লেখাপড়ার অবস্থা জেনে বিভিন্ন রক্তর পরীক্ষা ক্রোমোজম এনালাইসিস ও জেনেটিক টেস্ট করে রোগ নির্ণয় করা যায়।

 

চিকিৎসাঃ

এটি একটি জন্মগত জীনগত সমস্যা যার পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা নেই। তবে রোগীর বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে অনেকটা সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপনে সাহায্য করা যায়। যেমনঃ

19-06-2013 রোগ ব্যাধি

জেনেটিক ডিসঅর্ডার  à¦¬à¦¾  à¦œà§€à¦¨à¦—ত সমস্যা

 

 

    বংশগতির ধারক ও বাহক হল জীন।এই জীন যে কোন ভাবে পরিবর্তিত হয়ে গেলে জীনগত সমস্যা দেখা দেয়।যাদেরকে সাধারণ নামে জেনেটিক ডিসঅর্ডার বলে।জেনেটিক ডিসঅর্ডারকে মূল ৪টি বড় গ্রুপে ভাগ করা যায়।যথাঃ

- সিঙ্গেল জীন ডিসঅর্ডার

- ক্রোমোজম এবনরমালিটি

- মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিসঅর্ডার

- মাল্টি ফ্যাক্টোরিয়াল ডিসঅর্ডার

    চার ভাবে এই জীন পরিবর্তিত হতে পারে।যেমনঃ

১। অটোজমাল ডমিনেন্ট,

২। অটোজমাল রিসেসিভ,

৩। এক্স-লিংকড ডমিনেন্ট,

৪। এক্স-লিংকড রিসেসিভ। পরিবর্তিত জীনের কারনে প্রায় ৬০০০ ধরনের জেনেটিক ডিসঅর্ডার এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়েছে।

১। সিংগেল জীন ডিসঅর্ডারঃ

মানব শরীরে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে। প্রতিটি ক্রোমোজোম জোড়ায় জোড়ায় থাকে।যার একটি আসে বাবার কাছ থেকে আর অপরটি আসে মায়ের কাছ থেকে।প্রতিটি ক্রোমোজোম লক্ষ লক্ষ জীন দ্বারা গঠিত। প্রায় ৬০০০ এর অধিক জেনেটিক ডিসঅর্ডারের জন্য কোন না কোন পরিবর্তিত জীন দায়ী। পরিবর্তিত বলতে বোঝায়- জীনের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়, গুনাগুন ইত্যাদি তথ্য থাকে যা পরিবর্তিত হয়ে যায় বা থাকে না।এই পরিবর্তন নিম্নোক্ত ৪ ভাবে ঘটে।

ক) অটোজমাল ডমিনেন্টঃ

এই ধরনের জীনগত পরিবর্তন বংশানুক্রমিক ভাবে প্রতি জেনারেশনেই থাকে এবং প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই রোগের লক্ষন প্রকাশ করে।কারন এই পরিবর্তিত জীনটি তার জোড়ার অন্য জীনের চেয়ে (সুস্থ্য জীন) শক্তিশালী ও প্রভাব বিস্তারকারী। আরও কারও ২টি জীনই যদি ডমিনেন্ট হয়, সে ক্ষেত্রে তার প্রতিটি বাচ্চাই আক্রান্ত হবে।উদাহরন: হানটিংটনস ডিজিজ, ফ্যামিলিয়াল হাইপার কোলেস্টেরলেমিয়া।

খ) অটোজমাল রিসেসিভঃ

আক্রান্ত ব্যক্তির দুটি জীনই পরিবর্তিত জীন,যা বাবা ও মা এর কাছ থেকে একটি একটি করে পাওয়া।যদিও এই পরিবর্তিত জীন কম প্রভাব বিস্তারকারী,কিন্তু কোন সুস্থ্য জীন না থাকাতে রোগ লক্ষন প্রকাশিত হয়। উদাহরন:- সিস্টিক ফাইব্রোসিস, সিকলসেল এনিসিয়া, ফিনাইল ফিটো নিউরিয়া, থ্যালাসেমিয়া।

গ) এক্স -লিংকড ডমিনেন্টঃ

এ ধরনের ডিসঅর্ডার অধিকাংশ ক্ষেত্রে মহিলাদের হয়।এক্স-হল লিঙ্গ নির্ধারনকারি দুটি ক্রোমোজোমের একটি।মায়ের কাছ থেকে শিশু সবসময় এক্স-ক্রোমোজোম পায়, আর বাবার কাছ থেকে আসে x বা y।মা এর এই x ক্রোমোজোম যদি কোন ডমিনেন্ট (শক্তিশালী / প্রভাবশালী) পরিবর্তিত জীন থাকে, তবে তা অন্য সুস্থ্য সেক্স ক্রোমোজোমের উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং রোগ প্রকাশিত হয়। উদাহরন:- হাইপোফসফেটেমিক রিকেটস বা ভিটামিন ডি রেসিসট্যান্ট রিকেটস।

ঘ) এক্স-লিংকড রিসেসিভঃ

এই রোগটি পুরুষদের মধ্যে বেশিরভাগ পাওয়া যায়।

যেহেতু পুরুষদের একটি x ক্রোমোজোম এবং অপরটি y ক্রোমোজোম, সে ক্ষেত্রে x ক্রোমোজোমে পরিবর্তিত জীন থাকলেই রোগ প্রকাশিত হয়। যেমন: হেমোফিলিয়া, ডুচেনী মাসকুলার ডিসট্রফি।

 

২। ক্রোমোজোমের অস্বাভাবিকত্বঃ প্রায় সহস্রাধিক (১০০০ এর বেশী) রোগ আছে যা ক্রোমোজমের ত্রুটির কারনে হয়। প্রায় ২০০০ জীন যা মানুষের সকল বৈশিষ্ট, কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রন করে, একত্রিত হয়ে শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ থেকে ডি-অক্সি- রাইরো নিউক্লিকএসিড তৈরী করে। এই জীনই শরীরের বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ তৈরীর নির্দেশনা দেয় এবং প্রতিটি জীন বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক বস্তু তৈরী করে। আর এসব জীন একত্রিত হয়ে লম্বা সুতার ন্যায় সংগঠিত থাকে যার নাম ক্রোমোজোম।

    ক্রোমোজোম ডিসঅর্ডার বলতে বুঝায় ক্রোমোজোমের সংখ্যাগত বা গঠনগত কোন সমস্যা। এই সমস্যা মূলত ৩ ভাবে হতে পারে।

ক) ক্রোমোজোমের সমস্যা বাবা বা মায়ের ছিল,সেখান থেকে পরিবর্তিত ক্রোমোজম সন্তানের শরীরে প্রবেশ করে।

খ) শুক্রানু বা ডিম্বানু তৈরীর সময় সমস্যা যুক্ত ক্রোমোজোম অংশগ্রহন করে।

গ) গর্ভধারনের সময় থেকে সন্তান এই সমস্যা যুক্ত ক্রোমোজম বহ করে।

এর বৈশিষ্ট সমূহ হল:

১)সংখ্যাগত পরিবর্তনঃ

প্রতিটি ব্যক্তি জন্মগ্রহন কাল থেকে ২৩ জোড়া বিস্তারিত

-->

19-06-2013 রোগ ব্যাধি

 à¦¡à¦¾à¦‰à¦¨ সিনড্রোম (Down Syndrome)

 

ডাউন সিনড্রোম একধরনের জেনেটিক রোগ। একটা বাড়তি ক্রোমোসোম-২১ শারীরিক ও গাঠনিক চরিত্রের জন্য দায়ী।

তিন ধরনের ডাউন সিনড্রোম-

1.      ট্রাইসোমি-২১

2.     মোজাইক ডাউন সিনড্রোম এবং

3.     ট্রান্সলোকেশন ডাউন সিনড্রোম

 

ক্রোমোসোম দেহের বৃদ্ধির জন্য নীল নকশা হিসাবে কাজ করে। তারা আমাদের দেহের প্রতিটি কোষে বিদ্যমান থাকে। এবং আমাদের শারীরিক এবং মানসিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।  ক্রোমোসোমের সংখ্যা সাধারণত ৪৬ (২৩ জোড়া হিসাবে থাকে)। যাদের এ রোগ হয় জিনের গঠনে একটা অতিরিক্ত ক্রোমোসোম-২১ বিদ্যমান থাকে। ডাউন সিনড্রোম -এর  সাথে অন্যান্য কিছু চরিত্র পাওয়া যায়।

 

প্রকারভেদ:

কিভাবে সিনড্রোম হয় তা আমরা জানলেও কেন হয় তা জানিনা। তিন ধরনের ডাউন সিনড্রোম-

ক) ট্রাইসোমি-২১ :

শরীরের প্রতি কোষে অতিরিক্ত ক্রোমোসোম-২১ থাকে। বেশিরভাগ লোক (শতকরা ৯৫ ভাগ) ডাউন সিনড্রোম মানেই হল ট্রাইসোমি-২১ এটি একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা এবং কোন বংশীয় ব্যাপার না।

খ) মোজাইক ডাউন সিনড্রোম:

কোন কোন কোষে (সবার না) অতিরিক্ত পরিমাণ ক্রোমোসোম বিদ্যমান। এটা ১-২% ব্যক্তির ক্ষেত্রে ঘটে।

গ)  ট্রান্সলোকেশন ডাউন সিনড্রোম: ক্রোমোসোম-২১ এর কিছু অংশ ভেঙ্গে অন্য ক্রোমোজোমের সাথে লেগে থাকে। ইহা বাচ্চা হবআর আগে বা হবার সময় ঘটে। এই ধরনের ডাউন সিনড্রোম ৩-৪% ক্ষেত্রে ঘটে। এক তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রে সন্তানের পিতামাতাও একই ধরনের ট্রান্সলোকেশন থাকে। এর জন্য  Genetic counseling শিশুর পিতামাতার জন্য খুবই জরুরী। কি ধরনের ডাউন সিনড্রোম  তা আমরা জেনেটিক পরীক্ষা দ্বারা বুঝতে পারি।

 

শারীরিক বৈশিষ্ট্যাবলী:

ডাউন সিনড্রোম  এর সাধারণ শারীরিক বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপ:

 

চক্ষু- চোখের চামড়ার কিছু অংশ ভিতরের দিকে ভাজ হয়ে থাকে (এপিক্যানথাল ফোল্ড)।

আইরিসে ব্রাস ফিল্ড দাগ থাকতে পারে।

মুখ- প্রায় গোলাকার এবং চ্যাপ্টা।

 

 

গঠন- শিশুরা সাধারণত আকারে ছোট এবং ওজন কম থাকে। শিশুর বৃদ্ধির হার কম থাকে, তাদের বয়সী শিশুর তুলনায় তারা সাধারণত ছোট হয়।

হাতঃ

ক্লিনোড্যাক্টাইলি ও সিমিয়ান ক্রীস থাকে।

 

 

বেড়ে উঠাঃ

ডাউন সিনড্রোমের শিশুরা অন্যান্য শিশুর মতই বেড়ে ওঠে তবে, খুবই ধীর গতিতে (যেমন- হাসতে পারা, বসতে শিখা, হামাগুড়ি, হাটা, কথাবলা ইত্যাদি)। সবচেয়ে দেরী হয় কথা বলতে এবং ভাষা শিখতে। এ সব শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন সকলের সাহায্য। কোন কোন শিশুর অনেক দেরি হয়, আবং অনেক বেশি সাহায্যের প্রয়োজন।

 

রোগ নির্ণয়:

 

সাধারণত জন্মের পরই ডাউন সিনড্রোম বুঝা যায় এবকং চূড়ান্ত করা যায় রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে। শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলির মাধমে একজন চিকিৎসক সহজেই বলতে পারে শিশুটির ডাউন সিনেড্রাম আছে কিনা।

শিশু ভুমিষ্ট হবার আগে যে সমস্ত পরীক্ষা দ্বারা বুঝা যায় শিশুটির ডাউন সিনড্রোম আছে, সেগুলো হল-

·        আণ্ট্রা সাউন্ড

·        মায়ের সিরাম পরীক্ষা

·        এমনিওসেন্টেসিস

·        করিওনিক ভিলাই স্যাম্প্লিং

জেনেটিক কাউন্সিলিং-

ডাউন সিনড্রোম শিশুর জন্য পিতা মাতাকে জেনেটিক কাউন সিলিং করতে হবেএবং পরবর্তি বাচ্চা নেয়ার ব্যাপারে উপদেশ দিতে হবে।

 

বিশেষ যত্নঃ

এ সব শিশুর যন্য বিশেষ স্কুল ও বিশেষ যত্ন নিতে হয়। তাই তাদের পিতামাতার জন্য সাহায্য খুবই প্রয়োজন

 

মনে রাখা দরকার:

১। ডাউন সিনড্রোম এক ধরনের জেনেটিক সমস্যা যা ক্রোমোসোম-২১ এর আধিক্যের ফলে হয়।

২। ডাউন সিনড্রোমের শিশুরা অন্যান্য শিশুর মতই শুধু পার্থক্য দেখা যায় তাদের বিচার-বুদ্ধিতে দূর্বলতা।

৩। ডাউন সিনড্রোম শিশুর, তাদের পারিবারের এবং তাদের পিতামাতার জন্য সাহায্য খুবই প্রয়োজন।

 

19-06-2013 রোগ ব্যাধি

এলার্জি

যখন কোন মানুষের শরীর কোন কোন বিশেষ বস্তুতে (এলার্জেন) অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়, তখন তাকে এলার্জি বলে। যদিও সেই বিশেষ বস্তুতে বেশিরভাগ লোকের কিছুই হয় না। এ ধরনের এলার্জির সাধারণ উদাহরণ হলো- চুলকানি, একজিমা ও হাপানি, খাদ্যে এলার্জি, হে-ফিভার ইত্যাদি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ মেডিকেল চিকিসায় বা ঔষধে এলার্জির সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়া যায়, তবে চরম মাত্রায় এলার্জির থেকে এনাফাইলেকসিস হতে পারে। সে জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। আনুমানিক হিসাবে প্রতি ৪ জনে  ১ জন কোন না কোন বস্তুতে এলার্জিতে ভুগে এবং এদের মধ্যে অর্ধেক সংক্ষকই শিশু।  এলার্জির হলে খুব সামান্য হাঁচি, সর্দি বা গা চুলকানি হতে শুরু করে চরম বিপদজনক এনাফাইলেকসিস হয়ে রোগী মারাও যেতে পারে। তাই অনেক সময় জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

লক্ষণসমূহ:

একেক জনের ক্ষেত্রে লক্ষণ একেক রকম। আবার এলার্জেন বা বস্তুর ভিন্নতায় লক্ষণ বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমন-   হাঁচি, সর্দি, চোখ লালবর্ন হয়, চুলকায়, কাশি, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যাথা, চামড়ায় লালচে দাগ, চুলকানি, পেটে ব্যাথা, বমি ও পাতলা পায়খানা।

কোন কোন বস্তুতে এলার্জি হয়?

যে বস্তু কারও শরীরে এলার্জির সৃষ্টি করে তাকে এলার্জেন বলে। তবে তাদের মধ্যে একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো-সবগুলোতেই প্রোটিন একটি অংশ থাকে। আবার অনেক এলার্জেন প্রোটিন না হলেও তা শরীরের ভেতরে প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয়ে এলার্জেন রূপে কাজ করে। সাধাণভাবে পরিচিত এলার্জেন হল-

ক) খাদ্য: ডিম, মাছ, দুধ, বাদাম, বেগুন, সয়া জাতীয় খাদ্য

খ) উদ্ভিদ জাতীয়: ঘাস বা ফুলের রেনু।

গ) ঔষধ: এসপিরিন পেনিসিলিন, কোট্রাইমক্সাজল বা বিভিন্ন হার্বাল ঔষধ।

ঘ) পোকা মাকড়: কীট পতঙ্গ, মৌমাছির হুল, পিপড়া।

ঙ) পশু: কুকুর, বিড়াল, খরগোশ ইত্যাদির লোম, চামড়া।

চ) রাসয়নিক দ্রব্য: কলকারখানা বা ঘরবাড়িতে ব্যবহার্য্য বিভিন্ন রাসয়নিক দ্রব্য।

এলার্জির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা:

এলার্জি হল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা  কর্তৃক কোন বস্তুতে শত্রু গন্য করা ফলে সৃষ্ট শারিরিক প্রক্রিয়ার বাহ্যিকরূপ। যখন কোন এলার্জেন শরীরে প্রবেশ করে, তখন শরীর তাকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে যা এলার্জেনকে আক্রমণ করে, তখন শরীর  তার বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরী করে যা এলার্জেনকে আক্রমণ করে। ইমিউনোগ্লাবিউলিন ই (IGE) ধরনের এন্টিবডি এই ধরনের এলার্জেক রিএকশনের জন্য দায়ী।

     যখন ইমিউনোগ্লোবিউলিন ই কোন এলার্জেনকে চিহ্নিত করে, তখন সে এক ধরনের রাসয়নিক বস্তু নিঃসরন করে যা মাস্ট সেলের মধ্যে থাকে। এই রাসয়নিক বস্তু মূলত জীবানুকে ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়। এদের মধ্যে হিস্টামিন অন্যতম। অল্প পরিমাণ হিস্টামিন নিঃসৃত হলে তা শরীরে চুলকানি. চামড়ায় লালচে দাগ তৈরী করে, ফুলে যায়। কিন্তু বেশি পরিমাণে হলে তা রক্তনালীকে প্রসারিত করে এবং সেই অংশটতি পানি জমে ফুলে যায়।

     এই নিষ্ক্রিয় বস্তু (এলার্জেন) এর বিরুদ্ধে শরীরের বিশেষ প্রতিক্রিয়াটি জিনগত সমস্যার কারণে হয় এবং যাদের এই জেনেটিক সমস্যা আছে- তাদেরতে এটোপি বলা হয়। আর যারা এটোপি পরীক্ষা করলে তাদের শরীরে ইমিউনোগ্লোবিউলিন ই এর মাত্রা বেশি পাওয়া যায়।

নিজে নিজে এলার্জি চিহ্নিত করা উচিৎ নয়:

উপরের লক্ষণসমূহ দেখেই এলার্জি ভাবা ঠিক নয়। কেননা বিভিন্ন শারিরিক রোগ থেকেও একই ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। তাই অবশ্যই  ডাক্তারের শরনাপন্ন‌ হতে হবে।

যা অবশ্যই করতে হবে:

1.       যখন কোন মানুষের শরীর কোন কোন বিশেষ বস্তুতে (এলার্জেন) অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়, তখন তাকে এলার্জি বলে।

2.      এলার্জি বিভিন্ন ধরনের হয়:  চুলকানি, একজিমা ও হাপানি, খাদ্যে এলার্জি, হে-ফিভার ইত্যাদি।

3.      বিভিন্ন শারিরিক রোগ থেকেও একই ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। তাই অবশ্যই  ডাক্তারের শরনাপন্ন ‌ হতে হবে।

 

19-06-2013 রোগ ব্যাধি

থাইরয়েড ক্যান্সার

 

থাইরয়েড বিভিন্ন রোগের মধ্যে থাইরয়েড ক্যান্সার অন্যতম। থাইরয়েড গ্রন্থিতে ৪ ধরনের ক্যান্সার ও এক ধরনের লিম্ফোমা হতে দেখা যায়। ধরন ভিন্ন হলেও এদের থাইরয়েড ক্যান্সারে অনেকটা একই রকমের। গড়ে প্রায় প্রতি ১০০০ জনের ১ জন এই থাইরয়েড ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। এদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা পুরুষদের চেয়ে বেশি। ক্যান্সারের ধরণ নির্ভর করে তাদের বৃদ্ধি পাবার হার, কোন ধরণের কোষ আক্রান্ত বা শরীরে ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা ইত্যাদির উপর। আবার ক্যান্সারের ধরণ সহ ক্যান্সারের পর্যায়, রোগীর বয়স, স্বাস্থ্য, ছড়িয়ে পড়া না পড়া ইত্যাদির উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা দেয়া হয় ও এদের ফলাফলও বিভিন্ন রকমের হতে দেখা যায়।

 

থাইরয়েড গ্রন্থি হরমোন: 

থাইরয়েড গ্রন্থি হল একটি অন্ত:ক্ষরা গ্রন্থি। অর্থাৎ (যে গ্রন্থি থেকে হরমোন নি:সৃত হয়) এই গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন ও ট্রাইআয়োডো থাইরনিন নামক হরমোন নি:সৃত হয়, যা আমাদের শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের মানুষের শরীরে গলার সম্মুখভাগে কন্ঠনালীর ল্যারিংস (উচু হাড়) বরাবর অবস্থান করে। এর দুটি লোব বা অংশ শ্বাসনালীর দুই পাশে অবস্থান করে এবং সম্মুখভাগে ইস্থমাস নামক অংশ দ্বারা পরস্পরযুক্ত অবস্থান থাকে।

 

লক্ষণসমূহ : ক্যান্সারের প্রকার ভেদে লক্ষণে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও সাধারণ যে সব লক্ষণ দেখা যায় তা হলো-

-   থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যাওয়া

-   সব সময়/দীর্ঘ মেয়াদী কাশি

-   গলার স্বর ফ্যাসফ্যাসে হওয়া

-   স্বর পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া

-   পায়খানার সমস্যা যেমন- কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া

প্রকারভেদ :

ক. প্যাপিলারী কারসিনোমা : এই প্রকারটি সবচেয়ে কমন। শতকরা ৭০-৮০ ভাগ ক্ষেত্রে এই ধরনের কারসিনোমা হতে দেখা যায়। থাইরয়েড হরমোন উৎপন্নকারী কোষসমূহ আক্রান্ত হয় এবং খুব ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।

খ. ফলিকুলার কারসিনোমাঃ এই ক্যান্সারও মূলত থাইরয়েড হরমোন উৎপন্নকারী কোষের ক্যান্সার। তবে এই ক্যান্সার খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। শতকরা ১০ ভাগ ক্ষেত্রে এই ক্যান্সার দেখা দেয়।

গ. মেডুলারী কারসিনোমা : এই প্রকারের ক্যান্সার অনেকটা পারিবারিক ভাবে বিস্তার লাভ করে। এর লক্ষণ- সমূহ অনেকটা কুশিং সিনড্রোমের যত লক্ষণ নিয়ে প্রকাশিত হয়। শতকরা ৫-১০ ভাগ ক্যান্সার এই ধরণের হয়। এটি থরিয়েড হরমোন তৈরী কোষকে আক্রান্ত  করে না।

ঘ. এনাপ্লাস্টিক কারসিনোমা : এটি হল সবচেয়ে আগ্রাসী ও মারাত্মক ধরণের থাইরয়েড ক্যান্সার। এটি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে শ্বাস নালীর পথ বন্ধ করে দেয়। শতকরা ৭ ভাগ ক্ষেত্রে এই ধরণের ক্যান্সার দেখা যায়।

 

থাইরয়েড লিম্ফোমা :

এই ধরণের ক্যান্সারে রক্তের বিশেষ শ্বেত কনিকা (লিম্ফোসাইট) থাইরয়েড গ্রন্থির ভেতরে প্রবেশ করে ও বৃদ্ধি পেতে থাকে। শতকরা ৪ ভাগ ক্ষেত্রে এই ধরণের থাইরয়েড ক্যান্সার হতে দেখা যায়।

রিস্ক ফ্যাক্টর :

যে কোন বয়সের যে কোন ব্যক্তি মহিলা বা পুরুষ থাইরয়েড ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে। থাইরয়েড ক্যান্সারের যে সব রিস্ক ফ্যাক্টর সমূহ বিদ্যমান-

-         রেডিয়েশন : পূর্বে গলা, টনসিল ইত্যাদির বিভিন্ন চিকিৎসায় উচ্চ মাত্রার রেডিয়েশন ব্যবহার করা হত, ফলে অধিক হারে থাইরয়েড ক্যান্সার হত। তা ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে আনবিক বিচ্ছুরনে সৃষ্ট তেজষ্ক্রিয়তায় থাইরয়েডের ক্যান্সার বেশি হতে দেখা যায়।

-         ক্রনিক গয়টার : দীর্ঘমেয়াদী  গলগন্ড রোগ পরবর্তিতে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে।

-         পারিবারিক বিস্তৃতি : কিছু কিছু থাইরয়েড ক্যান্সার পারিবারিকভাবে বিস্তার লাভ করে থাকে।

-         লিঙ্গ : পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের থাইরয়েড ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।

 

রোগ নির্ণয় :

নিম্নোক্ত পরীক্ষাসমূহ করে থাইরয়েড ক্যান্সার নির্ণয় করা সম্ভব।

-         শারীরিক পরীক্ষা

-         রক্তের T3, T4, TSH সহ এন্টিবডি পরীক্ষা

-         থাইরয়েড গ্রন্থির আল্ট্রাসনিক স্ক্যান

-         ভোকাল কর্ডের পরীক্ষা

-         থাইরয়েড গ্রন্থির কোষ নিয়ে (বায়োপসি) পরীক্ষা

 

চিকিৎসা :

মূলত চিকিৎসা নির্ভর করে ক্যান্সারের ধরণ, আকৃতি, ক্যান্সারের স্টেজ, বিস্তৃতি, রোগীর বয়স, ¯^v¯’¨ ইত্যাদি বিষয়ের উপর। যে যে প্রকারের চিকিৎসা প্রচলিত, তা হলো-

ক. সার্জারী/অপারেশন : প্যাপিলারী, ফলিকুলার ও মেডুলারী কারসিনোমার জন্য সবচেয়ে উপযোগী চিকিৎসা হল থাইরয়েডের অপারেশন। এই অপারেশনকে বলা হয় থাইরয়েডেকটোমি, যেখানে সম্পূর্ণ বা  আংশিক থাইরয়েড গ্রন্থি কেটে ফেলে দেয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে পার্শ্বস্থ লিম্ফনোডও ফেলে দেয়া হয়।

চিত্রঃ থাইরয়েডেকটোমি,

 

খ) রেডিয়েশন থেরাপী :

রেডিও একটিভ আয়োডিন ব্যবহার করা। হয়, যা থাইরয়েড হরমোন উৎপন্নকারী কোষ দ্বারা শোষিত হয়, পরবর্তিতে ঐ কোষকেই ধ্বংস করে। এই চিকিৎসার শুরুতে কিছুদিন রোগী থাইরেডিও হরমোন গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন। ফলে TSM এর পরিমাণ বাড়বে। এতে থাইরয়েড কোষ সহজেই অধিক মাত্রায় রেডিও একটিভ আয়োডিন গ্রহণ করবে। এই চিকিৎসার পরে রোগী সাধারণত হাইপো থাইরয়েড হয়ে পড়ে।

    এ ছাড়াই রেডিও থেরাপীর মাধ্যমে মেডুলারী ও এনাপ্লাস্টিক ক্যান্সার এর চিকিৎসা করা হয় এবং যে সব ক্যান্সার রেডিও আয়োডিন কার্যকর না তাদেরকে ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়।

গ) হরমোন থেরাপী : সার্জারী বা রেডিয়েশন থেরাপীর পরে রোগীকে থাইরক্সিন হরমোন নিয়মিত গ্রহণ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে হরমোনের মাত্রা সাধারণ হাইপো থাইরয়েডের চেয়ে বেশি করতে হয় যাতে TSM  à¦à¦° মাত্রা কম থাকেও গ্রন্থি আকারে ছোট থাকে।

ঘ) কেমোথেরাপী : সাধারণত যে সব ক্যান্সারে হরমোন তৈরীকারী কোষ ছাড়া অন্যান্য কোষকে আক্রান্ত করে যে সব ক্যান্সারে কোষকে মারার জন্য কেমোথেরাপী ঔষধ ব্যবহার করা হয়।

জেনেটিক টেস্টং :

মেডুলারী কারসিনোমা সাধারণত অস্বাভাবিক জীনগত ত্রুটির ফলে হয়ে থাকে। যদি পরিবারে বা রক্ত সম্পর্কিয় কারো এই ধরণের মেডুলারী কারসিনোমা থাকে এবং ঐ ব্যাক্তির সমস্যা গ্রস্থ জীন থেকে থাকে, কিন্তু এখনো ক্যান্সার হয়নি, তথাপি গ্রন্থি অপসারণ করলে ভবিষ্যতে ক্যান্সার হবার  সম্ভাবনা নষ্ট করা যায়।

 

যা মনে রাখতে হবে:

1.      থাইরয়েড হরমোন শরীরের বিপাক ক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে, শরীরে শক্তি খরচ হওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।

2.     থাইরয়েড গ্রন্থিতে ৪ ধরণের ক্যান্সার ও ১ ধরনের লিম্পোমা হয়ে থাকে।

3.     সার্জারী, রেডিও থেরাপী, কোমেথেরাপী ও হরমোন থেরাপী দ্বারা বিভিন্ন ধরনের থাইরয়েড ক্যান্সারের চিকিৎসা করা যায়।

4.     সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা করলে থাটইরয়েড ক্যান্সারকে সহজেই নির্মূল করা সম্ভব।

 

19-06-2013 রোগ ব্যাধি

গলার ক্যান্সার

 

প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের সংখ্যাই অধিক। তাছাড়া ৫০ এর অধিক বয়স্কদের মধ্যে ক্যান্সারের ঝুঁকি কম বয়সীদের তুলনায় অনেক বেশি। যারা ধুমপায়ী ও সাথে সাথে অধিক মদ্যপানে আসক্ত তারা গলার ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হন।

    গলার ক্যান্সার বলতে গলার ভেতরের আবরণী কলার ক্যান্সার এবং সাথে সাথে খাদ্যনালীর উপরিভাগ (ল্যারিংস) থাইরয়েডের ক্যান্সার সহ ঐ স্থানের সকল ক্যান্সারকে বোঝায়। এ সব ক্যান্সার খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে খুব মারাত্মক।

লক্ষণসমূহ :

-         গলায় ফোলা বা চাকা বা দলা

-         দীর্ঘমেয়াদী কাশি

-         রক্ত মিশ্রিত লালা, কাশি

-         গলায় কোন কিছু আটকে আছে এমন বোধ হওয়া

-         গলার স্বর পরির্তিত হওয়া, ফ্যাসফ্যাসে শব্দ হওয়া

-         গলায় ব্যাথা, কানে ব্যাথা, ঢোক গিলতে ব্যাথা।

-         শ্বাসকষ্ট, গলার গ্রন্থি ফুলে যায়

-         হজমের সমস্যা, ডায়রিয়া, কোষ্ঠ কাঠিন্য

 

গলার ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়তে পারে :

গলার যে সব ক্যান্সার স্কোয়ামাস কোষ আবরণী কলা থেকে উৎপন্ন হয়, তা গলার ভেতরের দিকে মাংসপেশীতে সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। কিছু কিছু শ্বাসনালী , ট্রাকিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে শ্বাসনালীর উপর চাপ সৃষ্টি করে, শ্বাসকষ্ট হয়। এছাড়াও রক্তের মাধ্যমে ছড়িয়ে গিয়ে ফুসফুসে আক্রমণ করতে পারে।

 

রিস্ক ফ্যাক্টর :

গলা ক্যান্সারের প্রকৃত কারণ জানা যায় নি। তবে ধুমপান অন্যতম প্রধার কারণ, কেননা শতকরা ৮০ ভাগ ক্যান্সারের রোগীই ধুমপায়ী। এ ছাড়াও অন্যান্য রিস্ক ফ্যাক্টারের মধ্যে আছে-

-         নিয়মিত এবং উচ্চ মাত্রায় মদ্যপান

-         দীর্ঘমেয়াদী গলগন্ড

-         রেডিয়েশেন

-         পারিবারিক ক্যান্সারের ইতিহাস

 

রোগ নির্ণয় :

নিম্নোক্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়-

-         রোগের ইতিহাস

-         শারীরিক পরীক্ষা

-         ল্যারিংগোস্কোপী,

-         বায়োপসি

-         এক্স-রে

-         আল্ট্রাসনোগ্রাফী

-         সিটি স্ক্যান, এম আর আই

-         পি,ই,টি (পজিশন ইমিশন টোমোগ্রাফী) স্ক্যান

-         রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা

-         থাইরয়েড স্ক্যান

 

চিকিৎসা :

চিকিৎসা মূলত নির্ভর করে গলার কোন অংশের ক্যান্সার, ক্যান্সারের মাত্রা, এটি ছড়িয়ে পড়েছে কিনা, এবং সাথে অন্যান্য সমস্যা কি কি হচ্ছে তার উপর। যে সব চিকিৎসা প্রচলিত তা হল।

সার্জারী :

টিউমারটি অপারেশন করে ফেলে দেয়া হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী সম্পূর্ণ বা আংশিক অংগ কাটা হয়। অনেক ক্ষেত্রে চারপাশের লিম্ফনোড সহ কেটে ফেলা হয়।

রেডিও থেরাপী :

নির্দিষ্ট মাত্রার রেডিয়েশন, নির্দিষ্ট অংশে দিয়ে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা হয়।

কেমোথেরাপী :

সাধারণত রেডিও থেরাপীর সাথে সাথেই কেমোথেরাপী (বিশেষ ধরণের ঔষধ যা রক্তের মাধ্যমে সমস্ত শরীরে পৌছে এবং ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করে) দেয়া হয়। যদি ক্যান্সার ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়ে থাকে।

এডজুভেন্ট বা মাল্টি মডালিস্ট ট্রিটমেন্ট : সাধারণত টিউমার বড় হলে বা ছড়িয়ে পড়লে সার্জারী, রেডিও থেরাপী সবই দেয়া হয়, যাকে এডজুভেন্ট বলে।

মনিটরিং :

চিকিৎসার পরও আবার ক্যান্সার বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই এক্স-রে রক্তের পরীক্ষা করে নিয়মিতভাবে মনিটর করতে হয়।

রিহেবিলিটেশন :

গলার ক্যান্সারের ফলে বা চিকিৎসার ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীর কথা বলা, খাওয়া, ঢোক গিলা ইত্যাদি সমস্যার সৃষ্টি হয় । তাই এসব ক্ষেত্রে রিহেবিলিটেশন থেরাপী প্রয়োজন।

 

ক্যান্সারের চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া :

১। বমি : রেডিও বা কেমোথেরাপীর কারণে প্রচুর বমি হয়, বমিভাব, খাদ্যে অরুচি হয় এবং চুল পড়ে যায়। তবে কিছুদিন পর সব ঠিক হয়ে যায়।

২। স্থায়ী আকৃতিগত পরিবর্তন : অপারেশন বা রেডিয়েশনের স্থানে স্কার টিস্যু তৈরী স্থায়ী বিকৃতি লাভ করতে পারে।

৩। কথা বলার সমস্যা : অপারেশনের ফলে স্থায়ীভাবে বা আংশিক সামিয়ক কথা বলার সমস্যা হতে পারে। গলার স্বর নিচু, ফ্যাসফেসে হয়ে বা একেবারে ¯^i বন্ধ হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে ভয়েস থেরাপী দেয়া যেতে পারে।

-         রিমুভেবল সিলিকন ভয়েস প্রসেসটিক ব্যবহার করে অনেকটা স্বাভাবিক কথা বলা যেতে পারে।

-         অনেক ক্ষেত্রে কৃত্রিম ল্যারিংস সংযোজন করে, বা মুখের ভেতর বা গলার সামনে চেপে ধরে কিছুটা কথা বলা সম্ভব।

এ সবই স্পিচ প্যাথালজিস্টের মাধ্যমে শেখানো হয়।

৪। গিলতে সমস্যা : গলার ঘা না শুকানো পর্যন্ত কৃত্রিম নলের মাধ্যমে খাবার পাকস্থলীতে পৌছানো হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ন্যাজোগ্যাস্ট্রিক টিউব (চিকন সিলিকনের নল যা নাক দিয়ে প্রবেশ করিয়ে পাকস্থলীতে পৌছানো হয়) দেয়া হয়। তবে গলার স্থায়ী সমস্যা হলে PEG (পারকিউটেনিয়াস এন্ডোস্কপিক গ্যাসস্ট্রেকটোসি) ১টি নল পেটের চামড়া কেটে সরাসরি পাকস্থলীতে পৌছানো হয় -যার মধ্য দিয়ে খাবার দেয়া হয়।

৫। ট্রাকওস্টমি : অনেক ক্ষেত্রে টিউমার এত বড় হয় যে, শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হয়। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে ল্যারিংস এর অপারেশন করতে হয়। এ সব ক্ষেত্রে ট্রাকিওস্টমি করে গলার সামনের শ্বাসনালী কেটে চিকন ১টি কৃত্রিম নালী যুক্ত করে সেখান দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা হয়। গলার ঘা শুকিয়ে গেলে তা অপারেশন করে কৃত্রিম ছিদ্র করে দেয়া হয়, তখন আর গলার টিউব রাখতে হয় না।

 

হরমোন থেরাপী

19-06-2013 রোগ ব্যাধি

ক্যান্সার চিকিৎসায় রেডিওথেরাপী

 

রেডিওথেরাপী হল ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ মারার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাপের বিশেষ  à¦§à¦°à¦¨à§‡à¦° এক্স-রের  à¦¬à§à¦¯à¦¬à¦¹à¦¾à¦°à¥¤ রেডিও থেরাপীর সাহায্যে শরীরের বিভিন্ন স্থানের ক্যান্সার সম্পূর্ণ নিরাময় হয়। আবার রেডিও থেরাপী দেয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস/যন্ত্র ব্যবহৃত হয়। রেডিও থেরাপীতে সাধারণ কোষের কিছু ক্ষতি হলেও তা আবার ঠিক হয়ে যায়। রেডিও থেরাপী কতদিন দেয়া হবে তা রোগীর বয়স, অবস্থা, টিউমারের আকার স্টেজ ইত্যাদি বিষয়ের উর নির্ভর করে। কোন কোন ক্ষেত্রে ক্যান্সারে শুধুই রেডিও থেরাপী চিকিৎসা করা হয়, আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে কেমোথেরাপীর সাথে বা সার্জারীর পরে রেডিও থেরাপী দেয়া হয়। রেডিও থেরাপীতেও নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। যেমন- দূর্বলতা, বমি, চূলপড়া, ইত্যাদি। তবে সমস্যার চেয়ে উপকারীতাই বেশি।

বিশেষজ্ঞ দল এর সম্মিলিত মতামত:

ক্যান্সারের চিকিৎসায় রেডিওথেরাপীর এককভাবে না কেমো বা সার্জারীর সাথে করা হবে বা কতদিন, কত ডোজে দেয়া হবে তা নির্ণয়ের পূর্বে সাধারণত বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতামত বা পরামর্শ নেয়া হয়। যাদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত দরকার তারা হলেন-

¨      বিশেষ্‌জ্ঞ সার্জন।

¨      মেডিকেল অনকোলজিস্ট

¨      রেডিয়েশন অনকোলজিস্ট।

¨      প্যাথলজি স্পেশালিস্ট

¨      রেডিওথেরাপীস্ট

 

কতক্ষণ, কত দিন দিতে হয় ?

কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ প্রয়োজনে কেবল এক বার রেডিয়েশন দিতে হয়। অন্যদিকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনেকদিন ধরে কয়েক সাইকেল রেডিওথেরাপী নিতে হয়। সাধারণত দিনে এক বার, সপ্তাহে ৫দিন । রেডিওথেরাপী নিতে হয় ৩-৬ সপ্তাহ। মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য।

মূলত ২ ধরনের মেশিনের সাহায্যে দেয়া হয়।

ক) বহিস্থ বা এক্সটার্নাল রেডিওথেরাপি

খ)  ইন্টারনাল বা ব্রাকিথেরাপী

বহিস্থ রেডিওথেরাপী সাধারণত যে যন্ত্র থেকে দেয়া হয় তার নাম লিনিয়ার এক্সেলারেটর সাধারণত ১জন রোগীকে ১টি থেকেই দেয়া হয়। তবে ভিন্নতায় ২টি থেকেই দেয়া লাগতে পারে।

রেডিওথেরাপীর বিভিন্ন ব্যবহার:

টিউমারের অবস্থান, প্রকার সৌজ ইত্যাদির উপর নির্ভর করে নানা কারণে নানাভাবে রেডিও থেরাপী দেয়া হল। যেমন-

-          শুধু রেডিও থেরাপী দিয়ে চিকিৎসা।

-          কেমোথেরাপীর সাথে রেডিওথেরাপীর দিয়ে চিকিৎসা।

-          অপারেশনেরর পূর্বে টিউমারকে ছোট করতে।

-          অপারেশনের পর থেকে খাওয়া ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে।

-          ব্যথা কমানো, জীবন দীর্ঘায়িত করা।

এক্সর্টানাল রেডিওথেরাপী:

এই মেশিনটি হাসপাতালে রেডিওথেরাপীস্ট ও রেডিয়েশন অনকোলজিস্টের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। প্রথমে রোগীর দেহের কোন স্থানে রেডিয়েশন দেয়া হবে তা সিমুলেটর দিয়ে আলাদা করা হয় এবং মার্কার দিয়ে মার্ক করা হয়, কখনও CT, MRI এর সাহায্য দরকার হয়।

এরপর কতদুর থেকে কত ডোজে, কত ডোজে কতদিন দেয়া  হবে তা রেডিয়েশন অনকোলজিস্ট রিপোর্ট ও  রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে ঠিক করেন। রেডিয়েশন দেবার সময় রোগীকে নির্দিষ্ট পজিশনে শোয়ানো হয়। এবং রেডিয়েশনের  স্থানটিতে কালি দিয়ে রং করা, যাতে প্রতিদিন একই স্থানে রেডিয়েশন পড়ে। কখনও রোগীকে বিশেষ ধরনের ঔষধ খাওয়ানো হয়।

কিভাবে দেওয়া হয়? কি ঘটনা ঘটে?

রেডিও থেরাপী নেয়াটা অনেকটা এক্সরে করার মত ঘটনা । এজন্য রোগীকে অচেতন করার প্রয়োজন হয় না এবং এর জন্য সাধারণত কোন ঔষধও লাগে না। তবে যদি রোগীর বমি হয় বা বমি বমি ভাব হয়, সেক্ষেত্রে বমির ঔষধ খাওয়া যেতে পারে।

মূলত খুব শক্তিশালী এক্স-রে শরীরে চালনা করা হয় এবং যে যন্ত্র দ্বারা দেয়া হয় তার নাম  মেগাভোল্টেজ মেশিন  à¦¬à¦¾  à¦²à¦¿à¦¨à¦¿à§Ÿà¦¾à¦° একসেলারেটর রেডিওথেরাপী দেয়ার পদ্ধতি হল:

-          মেশিনের নিচে টেবিলের উপর রোগী শুয়ে থাকবেন।

-          রেডিয়েশন অনকোলজিস্টের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী যিনি টেকনশিয়ান তিনি সঠিক পজিশনে নিয়ে সঠিক স্থানটি বের করবেন।

-          শরীরের অন্যান্য অংশকে  সিল্ডিং (ঢেকে দেয়া) করবেন যাতে অযথা রেডিয়েশন না যায়।

-          অপারেটর এই রুম থেকে বের হয়ে কন্ট্রোল রুমে যাবেন। তবে টিভি মনিটরে রোগীর অবস্থা দেখতে পারবেন এবং ইন্টরকমে কথাও বলতে পারবেন।

-          মাত্র কয়েক মিনিট রেডিয়েশন দেয়া হয়। এতে কোন ব্যথা হয় না। মেশিন চলার সময় হালকা শব্দ হতে পারে।

-          শরীরের ২ বা ততোধিক স্থানে রেডিয়েশন প্রয়োজন হলে রোগীকে সরিয়ে বা মেশিন ঘুরিয়ে আবার  একই নিয়মে থেরাপী দেয়া হয়।

-          মেশিন বন্ধ হয়ে গেলে রেডিওএকটিভেটি ও বন্ধ হয়ে যায়। তখন রুমে বা রোগীর সাথে সবাই দেখা সাক্ষাত বা কথা, চলা উঠা বসা করতে কোন সমস্যা নেই।

 

ব্রাকি থেরাপী (ইন্টারনাল থেরাপী):

ব্রাকি একটি গ্রীক শব্দ যা অর্থ অতি নিকটে। অর্থাৎ টিউমারের খুব নিকট থেকে থেরাপী দেয়া হয়। পদ্ধতি হল:

-          খুব সরু নল বা চিকন  à¦­à§‡à¦¤à¦°-ফাকা সূচ শরীরের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে টিউমারের কাছাকাছি নেয়া হয়।

-          নলের মধ্য দিয়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে রেডিয়েশন নির্দিষ্ট স্থানে দেয়া হয়।

-          কতক্ষণ সময় ধরে দেয়া হবে তা রোগ, টিউমারের আকার ইত্যাদির উপর নির্ভর করে।

-          কেবলমাত্র ১ বার বা একাধিক দিনও দেয়া হতে পারে।

সাধারণত জরারু মুখের ক্যান্সার, জরায়ু, যোনীপথ, খাদ্যনালী, প্রস্টেটের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিতে রেডিও থেরাপী দেয়া হয়।

দুই ধরনের রেডিয়েশন দেয়া হতে পারে।

 (১)  ধীর গতির রেডিয়েশন যা কয়েকদিন ধরে অল্প অল্প  মাত্রায় দিয়া হয়।

(২) খুব উচু মাত্রায় রেডিয়েশন যা মাত্র কয়েক মিনিটেই দেয়া  হয়।

ইমপ্লান্ট:

যার ভেতর দিয়ে রেডিয়েশন দেয়া হয়, যে যন্ত্রটি শরীরে প্রবেশ করানো হয় তার নাম ইমপ্লান্ট। এটি বিভিন্ন ধরনের, বিভিন্ন আকারের  বিভিন্ন সাইজের হয়। যেমন- সুচের মত, প্লাষ্টিকের মত, ক্যাথেটার, ক্যাপসুল, রড ইত্যাদির মত। কোন কোনটি শরীরের ভেতরের ফাকা স্থান দিয়ে প্রবেশ করানো হয়, কোন কোনটি চামড়ার ভেতর দিয়ে শরীরে প্রবেশ  করানো হয়। ইমপ্লান্ট ঢোকানোর সময় রোগীকে অচেতন করা হয়। এটি স্থায়ী বা অস্থায়ী উভয় ধরনের হতে পারে।

অস্থায়ী ইমপ্লান্ট: 

এ ধরনের ইমপ্লান্ট প্রতিবার রেডিওথেরাপী দেয়ার পর খুলে ফেলা হয, পরবর্তি থেরাপীর সময় আবার ঢুকিয়ে দেয়া হয়। অথবা টানা কিছুদিন দিলে শরীরে রেখে দেয়া হয়। দেয়া শেষ হলে বের করে ফেলা হয়বিস্তারিত

-->

19-06-2013 রোগ ব্যাধি

রেক্টাল বা মলাশয়ের ক্যান্সার

 

  

রেক্টাম বা মলাশয় হল আমাদের খাদ্য পরিপাক তন্ত্রের একবারে শেষের অংশ যার দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ সে.মি.। খাবার ক্ষুদ্রান্ত্রে হজম হবার পর তা বৃহদান্তে আসে। সেখানে খাবারের সাথে থাকা অবশিষ্ট পানিটুকু শোষিত হয় এবং (বাকি বর্জ পদার্থ) এসে রেক্টাম বা মলাশয়ে কিছুক্ষণের জন্য জমা থাকে।  মলাশয় থেকে এক ধরনের পিচ্ছিল কারক বস্তু নিঃসৃত হয় যা সহজে পায়ুপথ দিয়ে বাইরে বের করে দেয়।

    

 

রেক্টামে ক্যান্সার মূলত শুরু হয় এর ভেতরের আবরণী কলার সবচেয়ে উপরের অংশ থেকে। সাধারণত এই ক্যান্সার ৫০ বছরের অধিক বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা দেয় এবং মহিলাদের চেয়ে পুরুষদের হবার ঝুঁকি বেশি। কারও কারও ক্ষেত্রে  জীনগত কারণে এই রোগ হবার ঝুঁকি বেশি এবং তা ৪০ বছরের পরেও হতে পারে। যদি ক্যান্সারটি প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে ও সঠিক ভাবে চিকিৎসা করা যায়, সে ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ থাকার যথেষ্ঠ সম্ভাবনা। কিন্তু দেরী হলে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।

 

লক্ষনসমূহঃ

মলাশয়ের ক্যান্সারে যে সব লক্ষণ দেথা দিতে পারে তা হলঃ

-         স্বাভাবিক পায়খানার পরিবর্তন, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য।

-         পায়খানার বেগ হলে ধরে রাখতে কষ্ট হওয়া।

-         পায়খানা করার পরও পেট থালি হয়নি, এমন অস্বস্তিহওয়া।

-         পায়ু পথ দিয়ে রক্ত পড়া।

-         পেটে ব্যাথা ইত্যাদি।

 

রিস্ক ফ্যাক্টারঃ

যে সব ক্ষেত্রে রেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়-

-         বয়স বেশি হলে ঝুঁকি বেশি।

-         পরিবারে কারও মলাশয়ের বা কোলন ক্যান্সার এর ইতিহাস থাকলে।

-         রেক্টামে পলিপ থাকলে।

-         আগে থেকেই ইফ্লামেটরি বাউল ডিজিজ (যেমনঃ ক্রনস বা আলসারেটিভ কোলাইটিস) থাকলে।

-         বেশি মাত্রায় চর্বিযুক্ত খাবার ও কম আঁশযুক্ত খাবার খেলে।

-         ওজনে মোটা বা স্থূলকায় হলে।

রোগ নির্ণয়ঃ

বেশ কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায়।

ক. শারীরিক পরীক্ষা-

রেক্টাল এক্সামিনেশন (ডাক্তার গ্লাফ্‌স পড়া অবস্থায় রোগীর মলদ্বারে আঙ্গুল ঢুকিয়ে     পরীক্ষা করবে)।

খ. পায়খানায় রক্ত আছে কিনা (অকাল্ট ব্লাড টেস্ট)।

গ. প্রোকটোস্কপি বা কোলনের ভেতরের চিত্র দেখা।

ঘ. বায়োপসিঃ

মলাশয়ের ক্যান্সার বা পলিপ বা টিউমার থেকে মাংশ কেটে নিয়ে ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করা।

ঙ. বেরিয়াম এনেমাঃ  বিশেষ ধরনের রং মলদ্বার দিয়ে প্রবেশ করিয়ে এক্স-রে নেয়া।

চ. এন্ডারেক্টাল আল্ট্রাসনোগ্রামঃ

ছ. এম. আর. আই

 

রোগের পর্যায় ও মাত্রাঃ 

মলাশয়ের ক্যান্সারকে তার অবস্থা, অবস্থান ও ছড়িয়ে পড়া না পড়ার উপর ভিত্তি করে ৫টি মাত্রা বা স্টেজে ভাগ করা হয়ঃ

1.      স্টেজ-০ : মলাশয়ের আবরণী কলাতেই ক্যান্সার সীমাবদ্ধ

2.     স্টেজ-১ : মলাশয়ের ভেতরের দিকে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়লে।

3.     স্টেজ-২ : মলাশয় সংলগ্ন এলাকায় ক্যান্সার বিস্তৃত, কিন্তু লিম্ফনোড আক্রান্ত হয়নি।

4.     স্টেজ-৩ : পার্শ্ববর্ণিত লিম্ফনোড (লসিকা গ্রন্থি) আক্রান্ত হলে।

5.     স্টেজ-৪ : শরীরের দূরবর্তী স্থানেও ক্যান্সার (সেকেন্ডারী মেটাস্টেসিস)

 

চিকিৎসাঃ

স্টেজ বা মাত্রার উপর নির্ভর করে চিকিৎসা দেয়া হয়। যেমন:

অপারেশনঃ পেট কেটে অথবা পায়ু পথ দিয়ে যন্ত্র ঢুকিয়ে ক্যান্সার সংলগ্ন মলাশয়ের অংশ পার্শ্ববর্তি লসিকা গ্রন্থি কেটে বের করে ফেলা হয়। মলাশয় যদি বেশি অংশ কাটতে হয় সে ক্ষেত্রে কোলোস্টমি (পেটের পাস দিয়ে যন্ত্রের অংশ বের করে মল নির্গমনের ব্যবস্থা) করে দেয়া হয়। একটি প্লাষ্টিকের ব্যাগ যুক্ত করে দেয়া হয় যার মধ্যে মল এসে জমা থাকে। পরবর্তীতে ব্যাগ ফেলে নতুন ব্যাগ লাগানো হয়।

রেডিওথেরাপী ও

কেমোথেরাপীঃ

 

যা মনে রাখা প্রয়োজনঃ

-         রেক্টাম বা মলাশয় হল আমাদের খাদ্যনালীর শেষের অংশ যার দৈর্ঘ প্রায় ২০ সে.মি. বা ৮ ইঞ্চি।

-         এর মূল কাজ গল মল বা বার্জ্য কিছু সময়ের জন্য জমা করে রাখা ও নির্দিষ্ট সময় পর পর বাইরে বের করে দেয়া।

-         সাধারণত ৫০বছরের উর্দ্ধ বয়সীদের ক্যান্সার বেশি হয়, তাছাড়া পারিবারিক রোগ থাকলে ঝুঁকি বেশি।

-         চিকিৎসার মধ্যে আছে অপারেশন, রেডিও ও কেমোথরাপী।

 

14-06-2013 রোগ ব্যাধি

প্রোস্টেট ক্যান্সার

 

বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে প্রোস্টেট ক্যান্সারের হার খুব বেশি। আমাদের দেশে তূলনামূলক কম হলেও উন্নত বিশ্বে, যেখানে রোগ নির্ণয়ের সুবিধা বেশি, সেখানে দেখা যায়, ৬৫ বছরের উর্দ্ধে পুরুষদের মধ্যে প্রস্টেট ক্যান্সার খুবই কমন। অস্ট্রেলিয়ায় এক জরীপে দেখা যায় যে, সেখানে বয়স্ক পুরুষদের প্রতি ১১ জনে ১ জন প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং সেখানে ভিক্টোরিয়া প্রদেশেই প্রতি বছর প্রায় ৩০০০ নতুন প্রেস্টেট আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়। তবে রোগটি খুব ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় বলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তেমন মারাত্মক হুমকির কারণ হয় না।

 

 

লক্ষণসমূহ:

প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রাথমিক অবস্থায় তেমন কোন লক্ষণ প্রর্দশন করে না। তবে নিম্নোক্ত লক্ষণসমূহ দেখা দিতে পারে।

-         প্রস্রাব শুরুতে করতে এবং শেষে করতে কষ্ট হয়।

-         প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া করে।

-         সাধরণের চেয়ে বেশি ঘন ঘন প্রস্রাব করা, বিশেষত রাতে।

-         প্রস্রাব শেষ করার পরও পেট খালি হয়নি বলে মনে হওয়া।

-         প্রস্রাব শেষেও ফোটা ফোটা প্রস্রাব পড়া।

-         প্রস্রাবের সাথে বা বীর্যপাতের সাথে রক্ত পড়া।

-         বীর্যপাতের সময় ব্যাথা অনুভব হওয়া।

তবে এসব লক্ষণ মানেই যে প্রেস্টেট ক্যান্সার তা নয়, কেননা অন্যান্য রোগেও এ সব লক্ষণ থাকতে পারে, তাই  চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরী।

 

প্রোস্টেট ক্যান্সারের কারণ:

প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রোস্টেট ক্যান্সার  হবার ঝুঁকি বেশি।

-         বয়স বেশি।

-         পরিবারে প্রোস্টেট ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে (বাবা, দাদা, ভাই) এবং তারা যদি অল্প বয়সে আক্রান্ত হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে ঝুঁকি আরও বেশি।

 

রোগ নির্ণয়: 

বেশি কিছু সংখ্যক পরীক্ষার দ্বারা রোগ নির্ণয় করা যায়।

১.  PSA টেস্ট:

প্রোস্টেট এক ধরনের প্রোটিন তৈরী করে, যার নাম প্রোস্টেট স্পেসিফিক এন্টিজেন (PSA) রক্তে এর মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণ হলে ধারণা করা যায় প্রোস্টেট ক্যান্সার বা প্রোস্টেটের অন্য কোন রোগ।

২.   DRE: (ডিজিটাল রেক্টাল এক্সামিনেশন) মূলত এটি একটি শারীরিক পরীক্ষা ডাক্তার রোগীর মলদ্বার দিয়ে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে প্রস্টেটের আকার, আকৃতি, অবস্থা দেখে রোগ নির্ণয়ে ধারণা লাভ করেন।

৩.   বায়োপসি :

প্রোস্টেট থেকে ৬-১২ খন্ড মাংশ কেটে মাইক্রোস্কোপে পরীক্ষা করা হয়।

 à¦¤à¦¬à§‡ যদি প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়ে, সে ক্ষেত্রে রোগের মাত্রা, বিস্তার, অগ্রগতি বা ছড়িয়ে পড়া ইত্যাদি দেখার জন্য নানা ধরনের পরীক্ষা করতে হতে পারে।

 

চিকিৎসা:

অনেকগুলি বিষয়ের উপর চিকিৎসা নির্ভর করে, যেমন: রোগীর বয়স, ক্যান্সারের মাত্রা, অগ্রগতি এবং রোগীর ইচ্ছা।

চিকিৎসার যে সব ধরনের হতে পারে তা হলো:

ক) সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ(অব্জার্ভেশন);

কোন চিকিৎসা না দিয়ে কেবল নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর PSA এর মাত্রা দেখা।

খ) অপারেশন:

পুরো প্রোস্টেট কেটে ফেলা। (রেডিকেল প্রস্টেটেটোমি)। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ৭-১০ দিন অবস্থান করতে হবে। এছাড়া পুরো প্রোস্টেট না কেটে শুধু মুত্রনালীর পারপাশ কেটে মোটা করা যেতে পারে, প্রস্রাবের কষ্ট লাঘব করার জন্য। এজন্য YURP  à¦¨à¦¾à¦®à¦• অপারেশন করা হয়।

গ)  রেডিও থেরাপী:

ক্যান্সার ধ্বংস করার জন্য এক্স-রে নির্দিষ্ট মাত্রায় কয়েক সপ্তাহ ধরে চালানো হয়।

ঘ) ব্রাকি থেরা‌পী:

এটি বিশেষ ধরনের রেডিও থেরাপী, যেখানে প্রোস্টেটের ভেতরে ১টি রেডিও একটিভ ইমপ্লান্ট সেট করা হয় এবং ঐ ইমপ্লান্ট থেকে রেডিও থেরাপী চলতে থাকে। এটি স্থায়ী বা ক্ষণস্থায়ী হতে পারে।

ঙ) হরমোন থেরাপী:

টেস্টোস্টেরন নামক হরমোন এই গ্রন্থির বৃদ্ধির জন্য অধিকাংশ মাত্রায় দায়ী। এ ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমানোর জন্য হরমোন (মুখে খাবার বা ইঞ্জেকশন আকারে)ঔষধ প্রয়োগ করা হয়  যা প্রোস্টেটের বৃদ্ধিকে রহিত করে। সাথে সাথে অন্ডকোষ (যেখান থেকে টেস্টোস্টেরন হরমোন থাকে) অপারেশনের মাধ্যমে কেটে ফেলা হয়।

 

চিকিৎসার সম্ভাব্য জটিলতা:

১। অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রেই প্রস্রাব আটকে রাখতে সমস্যা হয়।

২। বেশিরভাগ পুরুষেরই যৌনক্রিয়ার সমস্যা দেখা দেয় এবং অনেকেরই ইরেকটাইল ডিসফাংসন (লিঙ্গ উত্থানে সমস্যা) দেখা দেয়।

৩। রেডিও থেরাপী:

অনেকেরই পায়খানার সমস্যায় ভোগেন এবং শতকরা ৫০-৮০ ভাগ ইরেকটাইল ডিসফাংসনে ভোগেন।

৪। ব্রাকি থেরাপী:

ইরেকটাইল ডিসফাংশন এবং হজম ও  পায়খানার সমস্যা দেখা দিতে পারে। বেশিরভাগ রোগী ব্রাকি থেরাপী দেবার পর কয়েক মাস প্রস্রাবের সময় কষ্ট পান।

৫। হরমোন থেরাপী:

ইরেকটাইল ডিসফাংশন, খুব দূর্বল লাগা, শরীরে জ্বালা-পোড়া হয় এবং যৌন আবেদন কমে যায়।

 

যা মনে  রাখা জরুরী:

-         বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে ৬৫ বছরে উর্দ্ধে প্রোস্টেট ক্যান্সারের হার খুব বেশি।

-         চিকিৎসার জন্য পর্যবেক্ষণ, অপারেশন, রেডিও থেরাপী, ব্রাকি থেরাপী ও হরমোন থেরাপী ব্যবহৃত হয়।

-         চিকিৎসা পদ্ধতিজটিলতার মধ্যে প্রস্রাব আটকে রাখতে না পারা, প্রস্রাব করার সময় জ্বালা-যন্ত্রণা, যৌন চাহিদা কদে যাওয়া, লিঙ্গ উত্থানে সমস্যা এবং পায়খানার সমস্যা হতে পারে।

 

 

 

08-05-2013 রোগ ব্যাধি

শুক্রাশয়ে ক্যান্সার

 

শুক্রাশয়ের ক্যান্সার খুব একটা কমন ক্যান্সার না হলেও প্রতি বছর অনেকে এতে আক্রান্ত হয়। এটি সাধারণভাবে মাঝবয়সী পুরুষদের হয়, সাধারণত ২৫-৪৫ বছরের মঝে। এতে রোগীর অন্ডকোষ ফুলে যায়, শুক্রাশয় শক্ত  চাকার মত হয় এবং আক্রান্ত স্থানে বা তলপেটে ব্যথা হয়। তবে শুক্রাশয় বা অন্ডকোষ ফোলা মানেই ক্যান্সার নয়, অন্যান্য অনেক রোগ হতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় ও সঠিক চিকিৎসা হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই  পুরপুরি  ভাল হয়।

পুরুষ মানুষের শুক্রাশয় ২টি ছোট, চ্যাপ্টা, গোলাকার, দৃঢ় বস্তু -যা পুরুষাংগের পিছনে, গোড়ার দিকে, অন্ডবোষের ভেতরে অবস্থান করে। এটি হল পুরুষ প্রজনন অংশের গুরুত্বপূর্ণ  অংশ।

 à¦šà¦¿à¦¤à§à¦°à¦ƒ শুক্রাশয়

এখানে শুক্রানু ও পুরুষ হরমোন তৈরী হয়।

 

লক্ষণসমূহ :

শুক্রাশয়ের ক্যান্সারের লক্ষণসময়হ হল-

§        শুক্রাশয়ে শক্ত চাকা কা ফোলা

§        অন্ডকোষ ভারী মনে হওয়া

§        তলপেটে ও আক্রান্ত শুক্রাশয়ে সবসময় ব্যাথা

ক্যান্সারে যে চাকাটি হয় তা খুব ছোট আকারেরও হতে পারে, আবার অনেক বড় আকারেরও হতে পারে। সাধারণত যে কোন ১টি শুক্রাশয় আক্রান্ত হয়।  তবে এ স্থান ক্যান্সার শরীরের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষত ফুসফুসে। সে ক্ষেত্রে কাশি, শ্বাসকষ্ট আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

নিজে নিজে পরীক্ষা করা :

এই ক্যান্সার শুরুতে ধরা পড়লে পুরোপুরি আরোগ্য লাভ  করা সম্ভব, তাই প্রত্যেক মাঝবযসী পুরুষের মাঝে মাঝে নিজের শুক্রাশয় ধরে পরীক্ষা করে দেখা দরকার।

কোন অবাঞ্চিত চাকা বা ফোলা তৈরী হয়েছে কিনা। এ ছাড়াও এই অভ্যা‌সটি আরও বেশি দরকার ঐ সব পুরুষদের যাদের পারিবারিক টেস্টিকুলার ক্যান্সারের উতিহাস থাকে এবং তাদের যাদের ছোটবেলায় জন্মগতভাবে শুক্রাশয় অন্ডকোষে নামতে দেরী হয়েছিল (আনডিসেন্ডেড টেস্টিস)।

 

প্রকারভেদ : 

প্রধানত ২ ধরনের ক্যান্সার দেখা যায়-

ক. টেরাটোমা : সাধারণত ১৫-৩৯ বছরের মধ্যে অধিক দেখা যায়।

খ. সেমিনোমা : সাধারণত ২৫-৫৫ বছরের মধ্যে অধিক হারে হতে দেখা যায়

চিত্রঃ সেমিনোমা

এ ছাড়াও কখনও কখনও এই দুই ধরনের ক্যান্সারের মিশ্র অবস্থা পাওয়া যায়। তখন তহাকে জার্মসেল বলে।

 

কারণ ও সম্ভাব্যতা :

এই রোগের কারণ সুনির্দিষ্ট নয়, মতবে বেশ কিছু কারণে এ রোগ হবার ঝুঁকি থাকে। এ সব রিস্ক ফ্যাক্টরসমুহ হল-

ক. আন-ডিসেন্ডেড টেস্টিস (ক্রিপ্টরকিডিজম) : যদি ১১  বছর বয়সের মধ্যে তা অপারেশন করে ফেলে না দেয়া হয়, সেক্ষত্রে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।

খ. পারিবারিক রোগের ইতিহাস : পরিবারে বাবা, ভাই যদি এই রোগে আক্রান্ত থেকে থাকে।

গ. মামস এর জটিলতা হিসেবে  অরকাইটিস হয়ে থাকলে ঝুঁকি বেশি।

ঘ. হাইপোসপেডিয়াস থাকলে সাধারণের তুলনায় দ্বিগুন ঝুঁকি।

 

রোগ নির্ণয় :

ডাক্তার মূলত রোগের ইতিহাস নিবেন, পারিবারিক ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা করে রোগ সন্দেহ করবেন। নিশ্চিত হবার জন্য কিছু পরূক্ষা করতে হবে। যেমন- আল্ট্রাসনোগ্রাফী, রক্তে ক্যান্সারের মার্কার দেখা। আর যদি সন্দেহ হয় যে ক্যান্সার সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে সে ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান, এম আর আই ইত্যাদি করে আক্রান্ত স্থান সমূহ নির্ণয় করতে হবে। আর শুক্রাশয় অপারেশন তকরআর পর কেটে অনুবিক্ষণ যন্ত্রে পরীক্ষা করলে ক্যান্সার সম্বন্ধে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যায়।

চিকিৎসা :

সার্জারীঃ

অপারেশন করে শুক্রাশয়  অপসারন করা (অর্কিডেকটমি বা অর্কিএকটমি) হল প্রথম চিকিৎসা। যদি শরীরের কোথাও ক্যান্সার না ছড়িয়ে পড়ে, সে ক্ষেত্রে অপারেশন করলেই ভাল হয়ে যায় এবং রোগী ২য় দিন বাড়ি যেতে পারে। তবে কযেক বছর ধরে ফলোআপ করতে হবে।

এছাড়াও রেডেওথেরাপী দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। সাধারণত সেমিনোমা জাতীয় ক্যান্সার যা অপারেশনের পরে আবারও শুরু হয়েছে বা শুক্রাশয়ের বাইরেও কিছু লসিকা গ্রন্থিতে ছড়িয়ে পড়েছে। এ সব রেডিওথেরাপী দিয়ে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে।

কেমোথেরাপী :

সাধারণত টেরাটোমা জাতীয় ক্যান্সার  -যা শুক্রাশয় ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে গেছে, যে সব ক্ষেত্রে ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরকে ক্যান্সার বিধাবংসী ঔষুধ দিয়ে শরীরে ছড়িয়ে পড়া ক্যান্সার কোষ  ধ্বংস করা হয়।

পুনরায় অপারেশন :

অনেক ক্ষেত্রে অর্কিডেকটমি করার পর রেডিও বা কেমোথেরাপী দেবার পরও দেখা যায় তলপেটে কিছু কিছু লিম্ফরোড বা লসিকা গ্রন্থি আক্রান্ত হয়ে আছে। এ ক্ষেত্রে  পুনরায় অপারেশন করার প্রয়োজন হতে পারে।

 

যৌন ক্ষমতা :

অপারেশন, রেডিওথেরাপী বা কেমোথেরাপীর ফলে অনেক ক্ষেত্রে সন্তান জন্মদান  ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তবে যৌন চাহিদা ও যৌন ক্ষমতা অক্ষুন্ন থাকতে পারে।

 

যা যা মনে রাখতে হবে :

১. শুক্রাশয়ে ক্যান্সার অতটা কমন নয় এবং যে কোন ফোলা বা চাকা মানেই ক্যান্সার নয়।

২. পুরুষ মানুষের সাধারণত ২৫-৪৫ বছর বয়সী ব্যক্তিরা আক্রান্ত হয়ে থাকে।

৩. এতে ওন্ডকোষ ও শুক্রাশয়ে ফোলা, চাকা, ব্যাথা হতে পারে।

৪. প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে কেবল অপারেশন করেই রোগ ভাল হয়।

   

 

 

08-05-2013 রোগ ব্যাধি

জড়ায়ু ক্যান্সার

 

জড়ায়ু  ক্যান্সার সাধারণত ৫০ বছরের অধিক বয়স্ক মহিলাদের হয়। এর অন্যান্য নাম হল ইউটেরাইন ক্যান্সার, এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার। জড়ায়ু হল মহিলা প্রজনন তন্ত্রের একটি অংশ। এটি দেখতে তিন কোনাকার, অনেকটা উল্টানো কনিক্যাল ফ্লাক্সের মত। এটি তলপেটে পেলভিসের  ভেতর মুত্রশলী ও মলাশয়ের মাঝখানে অবস্থান করে।  মানব ভ্রুন এই জড়ায়ুর ভেতরই বড় হয়। জড়ায়ু ও জড়ায়ুর মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আমাদের দেশেও প্রচুর।

 

 

প্রকার ভেদঃ

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জড়ায়ুর ভেতরের আবরণী কলায় ক্যান্সার দেখা দেয়। তবে অন্যান্য স্থানেও বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার হতে পারে। যেমনঃ

ক. এডোনা কারসিনোমা অব এন্ডোমেট্রিয়ামঃ

জড়ায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর শতকরা ৮৫ ভাগই এই প্রকার ক্যান্সারে আক্রান্ত। এটি জড়ায়ুর ভেতরের আবরণের ক্যান্সার যা ভেতরকার গ্রন্থি (গ্ল্যান্ডুলার টিস্যু) থেকে উৎপন্ন।

 

খ. হাই রিস্ক ক্যান্সারঃ

এই ধরণের ক্যান্সার সমুহ (যেমন- এডেনোস্কোয়ামাস কারসিনোমা, প্যাপিলারী সেরাস কারসিনোমা এবং ক্লিয়ার সেল কারসিনোমা) কম দেখা যায় তবে বেশি দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ও বেশি মারাত্মক।

গ. এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্লাসিয়াঃ

এটি মূলত ক্যান্সার নয় তবে এ ক্ষেত্রে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। এ রোগে জড়ায়ুর ভেতরের আবরণ অনেক পুরু হয় এবং মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্ত যায়।

 

কারণসমুহঃ

জড়ায়ু ক্যান্সারের প্রকৃত কারণ নির্দিষ্টভাবে জানা যায় নি। তবে কিছু কিছু কারণে ক্যান্সার বেশি দেখা যায়। যেমন-

-         এন্ডামেট্রিয়াল হাইপারপ্লাসিয়া

-         যাদের বাচ্চা হয়নি, বন্ধা এবং এখন মেনোপজ হয়ে গেছে

-         ওজন বেশি, স্থূলকায়

-         উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিসে আক্রান্ত

-         পারিবারিকভাবে জড়ায়ু, স্তন বা অন্ত্রের ক্যান্সারের ইতিহাস আছে।

-         শুধুমাত্র ইস্ট্রোজেন হরমোন থেরাপী পাচ্ছেন।

-         স্তন ক্যান্সারের জন্য ট্যামিফ্রেন বা এনাস্ট্রজোল নামক ঔষধ খাচ্ছেন।

এই রোগ যৌনবাহিত নয় । তবে এ সব রিস্ক ফ্যাক্টর থাকা সত্ত্বেও অনেক মহিলার জড়ায়ু ক্যান্সার হয় না, আবার অনেকের এ সমস্যা না থাকলেও জড়ায়ু ক্যান্সার হতে দেখা যায়।

 

লক্ষনসমূহঃ

জড়ায়ু ক্যান্সারের মাত্রা বা প্রকার অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা যায়। সাধারণত যা যা হতে পারে-

-         অনিয়মিত, অস্বাভাবিক রক্তপাত (ক্যান্সার ছাড়াও নানা কারণে হতে পারে)

-         যোনীপথে তরল বা রক্তের মত নিঃসরণ (দূর্গন্ধযুক্ত হতে পারে)।

-         পেটে A¯^w¯—, পেট ফাপা।

-         দূর্বলতা, ওজন কমা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ব্যাথা ইত্যাদি হতে পারে।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগের ইতিহাস নিয়ে নিচের পরীক্ষাগুলো করাতে হবে।

-         শারীরিক পরীক্ষা

-         আল্ট্রাসনোগ্রাফী (ট্রান্সভ্যাজাইনাল হলে ভাল)

-         বায়োপসি (ডি এন্ড সি করে টিস্যু নিয়ে ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করা)

-         এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এম আর আই

-         রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা।

 

চিকিৎসাঃ

রোগ শুরুতে, ছড়িয়ে পড়ার পূর্বে নির্ণয় করতে পারলে চিকিৎসায় ভাল ফল পাওয়া যায়। রোগের মাত্রা অনুযায়ী চিকিৎসা । যেমন-

ক) সার্জারীঃ

সব ধরনের জড়ায়ু ক্যান্সারের ১ম চিকিৎসা হল (জড়ায়ু কেটে ফেলা) হিস্টেরেকটোমি, সাথে ফ্যালপিয়ান টিউব বা ওভারী কাটতে হতে পারে। যদি ক্যান্সার জড়ায়ু মাংসপেশী পর্যন্ত বিস্তৃত হয়, সে ক্ষেত্রে পাশের লিম্ফনোডও অপসারণ করতে হবে। যদি জড়ায়ুর মূলেও ক্যান্সার ছড়িয়ে থাকে, সেক্ষেত্রেই সার্বিক্স ও যোনীপথের উপরের অংশও কাটতে হবে।

খ) রেডিও থেরাপীঃ

এক্সটারনাল বা ইন্টারনাল রেডিও থেরাপী দেয়া হয়। সার্জারীর আগে বা পরেও দেয়া যেতে পারে।

গ) হরমোন থেরাপীঃ

ইস্ট্রোজেন ব্লকিং জাতীয় হরমোন দ্বারাও জড়ায়ু ক্যান্সারের বিস্তৃতি বা অগ্রগতি বন্ধ করা যেতে পারে।

ঘ) কোমোথেরাপীঃ

সাধারণত ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়লে বা ছড়াবার আশংকা থাকলে কেমোথেরাপী দিয়ে ক্যান্সার কোষ মারা হয়।

প্রতিটি চিকিৎসারই কিছু কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। তাই তা চিকিৎসার সময় ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

1.      মহিলাদের প্রজনন সম্পর্কিত ক্যান্সারের মধ্যে জড়ায়ু ক্যান্সারই সবচেয়ে বেশি হয়।

2.     জড়ায়ু ক্যান্সারের শতকরা ৮০ ভাগই এন্ডামেট্রিয়াল ক্যান্সার।

3.     সার্জারী, রেডিও বা  কেমোথেরাপীর মাধ্যমে জড়ায়ু চিকিৎসায় সফলতার হার অনেক বেশি।

 

08-05-2013 রোগ ব্যাধি

স্তন সমস্যায় সচেতনতা

স্তনে যে কোন ধরনের পরিবর্তনের ব্যপারে মহিলাদের  খুব সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সকল পরিবর্তন ক্যান্সার নয় কিন্তু তা অবশ্যই ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষা করিয়ে  নিশ্চিত হতে হবে। সাধারনত সে সকল পরিবর্তন হতে পারে।

·        ব্যথা

·        স্তনে শক্ত মাংসপিন্ড অনুভুত হওয়া

·        বোটায় পরিবর্তন দেখা যাওয়া

·        বোটা দিয়ে পূজ বা অন্য কিছু নির্গত হওয়া।

http://t3.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcTJi56onuIKrMq2Xh-ImXySbUzvCzpEmKyLu4OtabAgMPm-_mky

স্তন সংক্রান্ত কোন সমস্যা যাতে সৃষ্টি না হয়, সে জন্য  মহিলাদের নিজেদের স্তনের কোন পরিবর্তন হচ্ছে কিনা- সে ব্যপারে সচেতন হতে হবে। স্তনে কোন কোন ধরনের পরিবর্তন পরবর্তীতে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে।  সকল বয়সী মহিলাদেরই সমস্যা হতে পারে তবে বয়স্ক মহিলাদের ক্যান্সার হওয়া হার বেশী।

নিম্নলিখিত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অবশ্যই  ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে;

·        স্তনের কোন অংশ শক্ত পিন্ডের মত হয়ে গেলে

·        আকারে পরিবর্তন হলে

·        আকৃতিতে কোন পরিবর্তন হলে

·        স্তনের চামড়ায় কোন পরিবর্তন দেখা দিলে

·        কোন অংশে চামড়া মোটা হয়ে গেলে

·        বোটায় কোন পরিবর্তন হলে

·        বোটা দিয়ে কোন কিছু  নির্গত হলে

·        কোন অংশ অন্যান্য অংশের মত মনে না হলে

·        যে কোন ব্যথা অনুভুত হলে।

যদি এ সকল সমস্যা বগলের নিচেও দেখা যায় তাহলেও অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

 

জানতে হবে স্বাভাবিক অবস্থাঃ

সমস্যা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা পাবার জন্য স্বাভাবিক স্তন সমন্ধে ভাল ধারনা রাখা জরুরী।

·        নিয়মিত আয়নায় দেখে নিজের স্তনের স্বাভাবিক আকার সম্বন্ধে  à¦§à¦¾à¦°à¦¨à¦¾ নিতে হবে।

·        হাত দিয়ে স্পর্শ করে স্তন সম্বদ্ধে স্পষ্ট ধারনা নিতে হবে। গোসলের সময, কাপড় বদলানোর সময় অথবা রাতে ঘুমানোর সময় এটা সহজেই কারা যেতে পারে ।

·        কন্ঠাস্থি থেকে ব্রা লাইন এর নিচ পর্যন্ত স্তনের মাংশপেশী দেখতে হবে কোন জায়গায় শক্ত হয়ে গেছে কিনা।

·        আঙ্গুল একত্রিত করে উপরের অংশ দিয়ে  স্পর্শ করে স্তন পরীক্ষা করতে হবে।

http://t0.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcT02SCe9rmVO9Qkn7YQfH_Q6RU-ulZp2SbgUoaZbrJuSvOM6H8T

স্তন ক্যানাসার ও জেনেটিকস:

অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বহু দেশে সবচেয়ে বেশি হয় স্তন ক্যান্সার। গড়ে অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি ১১ জন মহিলার ১ জনের স্তন ক্যান্সার আছে। যদিও  স্তন ক্যান্সার হবার সাথে নানা রকম কারণ ও ফ্যাক্টর জড়িত, তবু সবচেয়ে বড় কারণ হল- নারী হওয়া ও বেশী বয়স্ক হওয়া। তবে এই স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে পারিবারিক রোগের ইতিহাস বেশ পাওয়া যায়। যদিও পারিবারিক সম্পর্কযুক্ত ক্যান্সার আক্রান্তদের প্রতি ২০ জনে ১ জন (৫%)।

স্তন ক্যান্সার ও ওভারিয়াল ক্যান্সারঃ

পারিবারিক ক্যান্সারের ঝুকির মধ্যে স্তন ক্যান্সার ও ওভারিয়ান ক্যান্সারের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশী। যদি কোন পরিবারের ৩ বা ততোধিক ব্যক্তির স্তন ক্যান্সার বা ওভারিয়ান ক্যান্সার থাকে তাহলে ঐ পরিবারের (মহিলা) ব্যক্তিদেরকে হাইরিস্ক গ্রুপে ফেলা যায়। এছাড়াও ২ জনের যদি ক্যান্সার থাকে সে ক্ষেত্রেও পরিবারের সদস্যগণ হাইরিস্ক গ্রুপে পড়তে পারে, যদি-

আত্মীয় যাদের ক্যান্সার আছে তার -

Æ   à¦¸à§à¦¤à¦¨ ক্যান্সার উভয় দিকে থাকে

Æ   ৪০ বছরের পূর্বে স্তন ক্যান্সার ধরা পড়লে

Æ   ৫০ বছরের পূর্বে ওভারিয়ান ক্যান্সার হলে

Æ   একই আত্মীয়ের স্তন ও ওভারিয়ান বিস্তারিত

-->

26-04-2013 রোগ ব্যাধি

প্রোস্টেট ক্যান্সারের চিকিৎসায় -হরমোন থেরাপী

    

প্রোস্টেট ক্যান্সার অপারেশন ছাড়াও হরমোন থেরাপী দ্বারা চিকিৎসা করা যায়। পুরুষ শরীরের হরমোন যেমন: টেস্টোস্টেরন প্রোস্টেট গ্রন্থির ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। হরমোন থেরাপীর উদ্দেশ্য হল, টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমাবার মাধ্যমে ক্যান্সারের অগ্রগতি রোধ করা। ইঞ্জেকশন বা মুখে খাবার ঔষধ দ্বারা এই হরমোন থেরাপী দেয়া যায়। অপারেশনের মাধ্যমে শুক্রাশয়ের যে অংশ হরমোন তৈরী করে, তাকে নষ্ট করে দেয়া বা অপসারণ করা যায়। তবে এর বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে।

 

প্রোস্টেট গ্রন্থি :

প্রোস্টেট গ্রন্থি পুরুষ প্রজননতন্ত্রের একটি অংশ। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে অনেকের ক্ষেত্রেই প্রস্রাব করতে সমস্যা হয় যা মূলত প্রোস্টেট গ্রন্থির বড় হওয়াবা প্রদাহের কারণে হয়। আবার প্রেস্টেট  গ্রন্থি বড় হলেই সব সময় সমস্যা করবে, তাও ঠিক না।

 à¦–ুব সামান্য কিছু ক্ষেত্রে প্রস্রাবের সমস্যার জন্য প্রেস্টেটের ক্যান্সারও দায়ী। প্রেস্টেট গ্রন্থি আকারে অনেকটা কাঠবাদামের মত এবং এটি মূত্রথলীর ঠিক নিচেই অবস্থান করে। মূত্রথলী থেকে মূত্রনালী বের হয়ে প্রেস্টেটের মধ্যখান দিয়ে গমন করে। প্রেস্টেট থেকে নিঃসৃত রস মূলত শুক্রানুকে খাদ্য জোগায়।

এবং দ্রুত মূত্রনালী পথে বের হয়ে যেতে সাহায্য করে।

 

বেশী বকয়সী পুরুষদের মাঝে ক্যান্সারের হার:

বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে প্রোস্টেট ক্যান্সারের হার খুব বেশি। আমাদের দেশে তূলনামূলক কম হলেও উন্নত বিশ্বে, যেখানে রোগ নির্ণয়ের সুবিধা বেশি, সেখানে দেখা যায়, ৬৫ বছরের উর্দ্ধে পুরুষদের মধ্যে প্রস্টেট ক্যান্সার খুবই কমন। অস্ট্রেলিয়ায় এক জরীপে দেখা যায় যে, সেখানে বয়স্ক পুরুষদের প্রতি ১১ জনে ১ জন প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং সেখানে ভিক্টোরিয়া প্রদেশেই প্রতি বছর প্রায় ৩০০০ নতুন প্রেস্টেট আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়।

 

প্রোস্টেট ক্যান্সার যেভাবে ছড়ায়:

প্রথম অবস্থায় প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রোস্টেট গ্রন্থির মধ্যেই থাকে। ক্যান্সার যখন মারাত্মক পর্যায়ে পৌছায়, তখন তা রক্তের মাধ্যমে বা লসিকা তন্ত্রের মাধ্যমে প্রোস্টেট গ্রন্থির বাইরে চলে আসে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষত হাড়ের ভেতরে সেকেন্ডারী টিউমার তৈরী করে।

 

হরমোন থেরাপী দ্বারা ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ :

হরমোন থেরাপী দ্বারা প্রোস্টেট  ক্যান্সার চিকিৎসা  ও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্রোস্টেট গ্রন্থির স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং অস্বাভাবিক (ক্যান্সার) বৃদ্ধি মূলত পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরনের উপর নির্ভর করে। হরমোন থেরাপী দ্বারা টেস্টোরনের মাত্রা কমিয়ে রাখা হয়। এর ফলে প্রোস্টেট ক্যান্সার আর বৃদ্ধি পেতে পারে না। উপরন্তু ধীরে ধীরে আকারে ছোট হয়ে আসে। তাই রেডিও থেরাপী দ্বারা ক্যান্সার চিকিৎসার শুরুতেও হরমোন থেরাপী ব্যবহার করা হয়, টিউমারের আকার ছোট করার জন্য। অন্যদিকে যখন ক্যান্সার শরীরের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে, সে অবস্থায়ও ক্যান্সারের পুন:বিস্তার রোধেও হরমোন চিকিৎসা কার্যকর।

 

পুরুষ হরমোন: 

হরমোন হলো এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ যা শরীরের বিভিন্ন অন্ত:ক্ষরা গ্রন্থি থেকে নিসৃত হয়। পরে তা রক্তের সাথে মিশে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পৌছে যায় এবং উৎস থেকে দূরবর্তী স্থানে গিয়ে কাজ করে। পুরুষের শুক্রাশয়ে শুক্রানু তৈরীর পাশপাশি টেস্টোস্টেরন নামক হরমোন তৈরী করে। এই হরমোন তৈরীর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্কের ২টি পৃথক অংশ- (১) পিটুইটারী গ্রন্থি (২) হাইপোথ্যালামাস । এ ছাড়াও শতকরা ৫ ভাগ টেস্টোস্টেরন তৈরী হয় এড্রেনাল গ্রন্থি থেকে যা কিনা ২টি কিডনীর উপরে অবস্থান করে।

    এই টেস্টেস্টেরন হরমোনের প্রভাবে পূরুষালী শরীর কাঠামো মাংসপেশী, শক্ত হাড়, গলার মোটা ¯^i, শরীরের লোমি ঘন ও মোটা হওয়া ইত্যাদি নিয়ন্ত্রিত হয়।

 

টেস্টোস্টেরন ও প্রোস্টেট ক্যান্সার :

টেস্টোস্টেরন হরমোনের প্রভাবে প্রোস্টেট গ্রন্থির স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং ক্যান্সার হলে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে, এমনকি ক্যান্সার কোষ শরীরের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়লে সেখানেও তার বৃদ্ধি ঘটে এই হরমোনের প্রভাবে। অন্যদিকে টেস্টোরনের মাত্রা কমে গেলে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হয়। তবে কিছু কিছু ক্যান্সার কোষ এই হরমোনের ঘাটতিতেও বেঁচে থাকতে এবং বৃদ্ধি পেতে সক্ষম। যে কারণে অনেক সময় হরমোন চিকিৎসার পরও ক্যান্সার থেকে যায়।

হরমোন থেরাপী : 

টেস্টোস্টেরনের মাত্রা নিয়ন্ত্রনের জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করা যায়, যেমন :

K.    ঔষধ (ইঞ্জেকশন) :

এই ঔষধগুলি (LHRH) লুইটিনাইজিং হরমোন রিলিজিং হরমোন এর সাদৃশ্য। ফলে এটি ঐ হরমোনের স্থান দখল করে এবং পিটুইটারী গ্রন্থি থেকে লুইটিনাইজিং (LH) নিঃসরনে বাধা দেয়। আর এই LH হরমোন না থাকলে পুরুষের শুক্রাশয় থেকে টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরী হয় না। একটি ইঞ্জেকশনের প্রভাব ১-৪ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

L.     ঔষধ মুখে খাবার :

এটি মূলত ইঞ্জেকশন এর ফলে বা অপারেশন করে শুক্রাশয় অপসারনের ফলে সৃষ্ট জটিলতা হ্রাস করার জন্য দেয়া হয়। তবে এতে শরীরের জ্বালা-পোড়া কিছুটা কমলেও লিভারে সমস্যা করতে পারে।

M.     অরকিডেকটোমি :

এই অপারশেনের মাধ্যমে শুক্রাশয় কেটে ফেলা হয়, ফলে ৯৫% হরমোন তৈরী বন্ধ হয়ে যায়

N.     সাব-ক্যাপসুল অরকিডেকটোমি :

এই অপারেশনের দ্বারা পুরো শুক্রাশয় না ফেলে কেবল যে অংশ হরমোন তৈরী করে, ওই অংশটি অপাসারণ করা হয়।

 

পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া :

পুরুষ হরমোন তৈরী বন্ধ হবার ফলে নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাই অবশ্যই এই চিকিৎসায় আগে রোগীর সাথে খোলামেলা আলাপ করে সম্মতি নিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। নইলে রোগী মানসিকভাবে পারিবারিকভাবে যন্ত্রণায় পতিত হবে।

সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াসমূহ:

-         লিঙ্গ উত্থান না হওয়া

-         সন্তান প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হওয়া

-         যৌন চাহিদা কমে যাওয়া

-         দূর্বল ও অবসাদ বোধ হওয়া

-         শরীরের পশমের বৃদ্ধি পরিবর্তন হওয়া

-         শরীর জ্বালা পোড়া করা

-         অবসাদগ্রস্থতা

-         হাড় ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়া, মাংসপেশী শুকিয়ে আসা

-         শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমা হওয়া

-         পুরুষের স্তন বৃদ্ধি পাওয়া

-         চিন্তা শক্তি হ্রাস পাওয়া, মনোসংযোগের অভাব

 

হরমোন চিকিৎসা ব্যর্থ হলে :

হরমোন চিকিৎসা নেয়া শতকরা ২০ ভাগের বেলায় ১ বছরের মাথায় আবার ক্যান্সার বিস্তারিত

-->

26-04-2013 রোগ ব্যাধি

প্রোস্টেট ক্যান্সার চিকিৎসায়  প্রেস্টেটেক্টমি

 

প্রোস্টেট ক্যান্সারের অন্যতম চিকিৎসার নাম হল রেডিক্যাল প্রস্টেটেকটোমি । এই অপারেশনের মাধ্যমে প্রোস্টেট গ্রন্থি এবং সেমিনাল ভেসিকল কেটে ফেলে দেয়া হয়। কখনও অপারেশনের সময় সার্জন প্রয়োজন মনে করলে পার্শ্ববর্তি লিম্ফ নোড বা লসিকা গ্রন্থিও অপারেশন করে ফেলে দেন।

 

প্রোস্টেট গ্রন্থি -অবস্থান ও কাজ :

প্রোস্টেট গ্রন্থি পুরুষ প্রজননতন্ত্রের একটি অংশ। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে অনেকের ক্ষেত্রেই প্রস্রাব করতে সমস্যা হয় যা মূলত প্রোস্টেট গ্রন্থির বড় হওয়াবা প্রদাহের কারণে হয়। সামান্য কিছু ক্ষেত্রে প্রস্রাবের সমস্যার জন্য প্রেস্টেটের ক্যান্সারও দায়ী।

 

 à¦ªà§à¦°à§‡à¦¸à§à¦Ÿà§‡à¦Ÿ গ্রন্থি আকারে অনেকটা কাঠবাদামের মত এবং এটি মূত্রথলীর ঠিক নিচেই অবস্থান করে। মূত্রথলী থেকে মূত্রনালী বের হয়ে প্রেস্টেটের মধ্যখান দিয়ে গমন করে। প্রেস্টেট থেকে নিঃসৃত রস মূলত শুক্রানুকে খাদ্য জোগায় এবং দ্রুত মূত্রনালী পথে বের হয়ে যেতে সাহায্য করে।

 

প্রোস্টেট ক্যান্সারের হার :

বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে প্রোস্টেট ক্যান্সারের হার খুব বেশি। আমাদের দেশে তূলনামূলক কম হলেও উন্নত বিশ্বে, যেখানে রোগ নির্ণয়ের সুবিধা বেশি, সেখানে দেখা যায়, ৬৫ বছরের উর্দ্ধে পুরুষদের মধ্যে প্রস্টেট ক্যান্সার খুবই কমন। অস্ট্রেলিয়ায় এক জরীপে দেখা যায় যে, সেখানে বয়স্ক পুরুষদের প্রতি ১১ জনে ১ জন প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং সেখানে ভিক্টোরিয়া প্রদেশেই প্রতি বছর প্রায় ৩০০০ নতুন প্রেস্টেট আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়।

 

কাদের অপারেশন করা হয় :

সব প্রোস্টেট ক্যান্সার রোগীর জন্য রেডিকেল প্রোস্টেটেকটোমী প্রযোজ্য নয়। এই অপারেশন মূলত তাদের জন্যই প্রযোজ্য যারা-

-         বাকি সব দিক দিয়ে সুস্থ এবং স্বাভাবিক ভাবেই  à¦•à¦®à¦ªà¦•à§à¦·à§‡ আরও ১৫ বছর বাঁচবে আশা করা যায়।

-         যাদের প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রোস্টেট গ্রন্থিতেই সীমাবদ্ধ আছে. শরীরের অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়ে নাই।

-          

 

অর্থাৎ এই অপারেশনের উদ্দেশ্য হলো ছড়িয়ে পড়ার আগেই ক্যান্সারকে  সমূলে

উৎপাটন করা।

 

সার্জারী বা অপারেশনের ক্ষেত্রে রিক্স বা ঝুঁকিসমূহ :

প্রতিটি অপারেশনেই কিছু না কিছু ঝুঁকি থাকে। তাই রোগীর এইবিস্তারিত

-->

26-04-2013 রোগ ব্যাধি

গর্ভজনিত ক্যান্সার

 

গর্ভজনিত ক্যান্সারের প্রধান লক্ষণ হল মাত্রাতিরিক্ত বমি বা সকাল বেলার অসুস্থ্যতা অথবা গর্ভকালীন অস্বাভাবিক রক্তপাত বা গর্ভ নষ্ট হওয়া। গর্ভধারনের পর গর্ভফুল বা প্লাসেন্টার কোষগুলি ক্যান্সার কোষের ধারন করলে সেই রোগ গুলিকে একত্রে জেস্টেশনাল ট্রোফোব্লাস্টিক ডিজিজ নাম দেয়া হয়।

 

 

এ ক্ষেত্রে টিউমারকে বলা হয় মোল, আর গর্ভাবস্থাকে বলে মোলার প্রেগন্যান্সি। এই ধরনের অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধি বা ক্যান্সারের হার গড়ে প্রতি ১২০০-১৫০০ টি গর্ভধারনের মধ্যে ১টি।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভের শুরুতেই গর্ভস্থ বাচ্চা নষ্ট হয় এবং শরীর থেকে এমনিতেই মোল বের হয়ে যায় অথবা ডিএন্ডসি করে বের করতে হয়। অন্যথায় মোল বড় হয়ে ক্যান্সারের রূপ নেয় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।

 

লক্ষণসমূহ:

মর্নিং সিকনেস এর মাত্রা অত্যন্ত বেশি হয়। কেননা মোল থেকে প্রচুর পরিমাণে গর্ভকালীন হরমোন (HCG) নিঃসৃত হয়। এ ছাড়াও-

-         গর্ভাবস্থায় যোনীপথে রক্তক্ষরণ

-         জরায়ু গর্ভস্থ শিশুরা অনুপাতে বেশি বড় বা খুব ছোট

-         বাচ্চারা নড়াচড়া বোঝা না যাওয়া

-         বাচ্চার হৃদকম্পন বোঝা না যাওয়া

 

রিস্ক ফ্যাক্টর:  

এর কারণে জানা যায় না, তবে রিস্ক ফ্যাক্টরগুলি হল:

-         গর্ভকালীন মা এর বয়স ২০ এর কম বা ৪০ এর  বেশি

-         তুলনামূলক এশিয়ান মহিলাদের মধ্যে বেশি হয়।

-         খাদ্যে ফলেট, প্রোটিন, বিটা ক্যারোটিনের অভাব থাকলে

-         পূর্বে এ ধরনের সমস্যা থাকলে (কেননা আবার হবার সম্ভাবনা ১%)

 

হাইডাটিডি ফরম মোল: 

নিষেকের পর ভ্রুণ তৈরী হয়। ভ্রুনের কো‌ষগুলি মূলত ২ ভাগে ভাগ হয়ে যায়। এক অংশ শরীর তৈরী করে, অন্য অংশ প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল তৈরী করে। এবং প্লাসেন্টার মধ্যে লক্ষাধিক আঙ্গুলির ন্যায় ভিলাই থাকে যা মা এর জরায়ুর গায়ে লেগে থাকে এবং রক্ত পরিবহন করে। ট্রোফোব্লাস্টিক  রোগের ক্ষেত্রে শিশুর দেহ গঠনের কোষগুলি বৃদ্ধি পায় না, বরং প্লাসেন্টের কোষগুলি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। প্রতিটি ভিলাই আকারে বড় হয়ে ফোষ্কার আকার ধারণ করে। এই ফোস্কা আকারের ভিলাই কে মোল বলে এবং গর্ভাবস্থাকে  à¦®à§‹à¦²à¦¾à¦° প্রেগন্যান্সি বলে।  এ অবস্থায় শিশুবড় না হলেও গর্ভকালীন হরমোনের কারণে (বা মাত্রাতিরিক্তি হরমোনের প্রভাবে) গর্ভকালীন সব লক্ষণই বেশি করে প্রকাশিতহয় এবং এতবেশি হয় যে, হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।

 

মোলার প্রেগন্যান্সির সম্ভাব্য জটিলতা:

-         রক্তক্ষরণ

-         ওভারিয়ান সিস্ট

-         প্রি-একলামশিয়া

-         লিভাবর ও কিডনীর সমস্যা

-         শ্বাসকষ্ট (যদি ফুসফুসে আক্রান্ত করে)

-         থায়রয়েড হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া

 

মারাত্মক জটিলতা :

যদি সঠিক সময়ে পুরোপুরি মোল অপারেশন করা না হয় সে ক্ষেত্রে মারাত্মক জটিলতা হতে পারে, যেমন:

-         মোল আকারে বিশাল বড় হতে পারে।

-         জরায়ুর দেয়ালের ভেতরে বিস্তারলাভ করতে পারে।

-         মেটাস্টেটিক মো: শরীরের অন্যান্য স্থানে যেমন: ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়ে, সেখানে বৃদ্ধি লাভ করতে পারে।

-     à¦œà§‡à¦¸à§à¦Ÿà§‡à¦¶à¦¨à¦¾à¦² করিওকারসিনোসা: রক্ত বা লসিকার সাথে মিশে খুব দ্রুতশরীরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

 

রোগ নির্ণয়:

গর্ভকালীন ট্রোফোব্লাস্টিক ডিজিজ রোগ নির্ণয় করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে, কেননা:

-         যে সব মহিলার এবরশন বা গর্ভপাত হয়ে যায়, সে বুঝতেও পারে না যে সে কি ভ্রুণ বের করল নাকি মোল, যদি না তা ল্যাবেটরিতে পরীক্ষা করা হয়।

-         গর্ভকালীন অবস্থায় মোলার প্রেগন্যঅন্সিতে গর্ভধারণকালীন লক্ষণগুলিই প্রকাশ পায়। তাই আল্ট্রাসনোগ্রাম না করলে সন্দেহ হবার কোন কারণ নাই।

 

রোগ নির্ণয় পদ্ধতি:

রোগের ইতিহাস- যেমন: গর্ভধারনের সময়, গর্ভপাত বা আগে কোন সমস্যা ইত্যঅদি জানা। শারীরিক পরীক্ষা, রক্তে উচ্চ মাত্রার গর্ভকালীন হরমোনের (HCG) উপস্থিতি, আল্ট্রসনোগ্রাফী এবং যদি ধারণা করা হয় যে তা শরীরে অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়েছে, সে ক্ষেত্রে এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এম, আর, আই ইত্যাদি করে দেখতে হবে।

 

চিকিৎসা:

রোগ ধরা পড়ার সাথে সাথেই চিকিৎসা করতে হবে। এ রোগের চিকিৎসা ১০০ ভাগ কার্যকর, তবে চিকিৎসা নির্ভর করে, রোগটি শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে কিনা তার উপর।

মূলত: যা যা করা হয়:

ক) ডিএন্ডসি: (ডাইলেশন এন্ড কিউরেটেজ) জরায়ুর মুখকে ধীরে ধীরে খুলে দেয়া হয় এবং গর্ভস্থ সমস্ত কিছু কিউরেট করে (চেছে) পরিষ্কার করে নিয়ে আসা হয়।

 

খ) হিস্টোরেকটোমি:

রোগী আর সন্তান নিতে ইচ্ছুক না হলে জরায়ু কেটে অপসারণ করা হয়।

গ) শরীরে ছড়িয়ে পড়লে :

রেডিওথেরাপী, কেমোথেরাপী দিতে হয়।

 

মোলার প্রেগন্যান্সি কি পুনরায় হতে পারে? এই রোগটি যার ১ বার হয়, তার আবারও হবার সম্ভাবনা থাকে। শতকরা ১০০ জনে ১ জনের আবার হতে পারে। তাই নিয়মিত চেকআপে থাকতে হবে। রক্তে (HCG) এর মাত্রা চেক করে দেখতে হবে। যদি মোলার   প্রেগন্যান্সির চিকিৎসা (ডি এন্ড সি) করার বহুদিন পরর পর্যন্ত (HCG)  à¦¬à§‡à¦¶à¦¿ মাত্রায় থাকে, সে ক্ষেত্রে পুনরায় হবার চিন্তা মাথায় রাখতে হবে। তাই ১ বার মোলার প্রেগন্যান্সি হবার পরবর্তি ১ বছরের মধ্যে সন্তান না নেয়া ভাল। কেননা সাধারণ গর্ভকালীন (HCG)  à¦à¦° মাত্রাও বুদ্ধি পাবে। সে ক্ষেত্রে পুনরায় মোল হলে বা অন্য কোথাও তা বুদ্ধি পেতে থাকলে ধরা কঠিন হবে।

 

যা মনে রাখতে হবে:

-         জেস্টেশনাল (গর্ভকালীন) ট্রোফোব্লাস্টিক ডিজজ বলতে গর্ভকালীন এমন কতগুলি রোগ বা অবস্থাকে বোঝায়  সেখানে পর্যন্ত কোষগুলি ক্যান্সারের রূপ ধারণ করতে পারে।

-         মোলার প্রেগন্যান্সির প্রাথমিক লক্ষণ অনেকটা গর্ভধারনের পরবর্তী মর্নিং সিকনেস এর মতই, তবে মাত্রাটা খুব বেশি।

-         রোগের প্রকৃত কারণ জানা যায়নি, তবে রোগীর বয়স ২০ এর কম বা ৪০ এর বেশি হলে হবার ঝুঁকি বেশি।

-  

26-04-2013 রোগ ব্যাধি

প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার

 

 

প্যানক্রিয়াস বা অগ্নাশয় হল খাদ্য পরিপাক তন্ত্রের একটি গ্রন্থি। অগ্নাশয় থেকে আসা হজমে সহায়তাকারী রস ১টি নালী পথে ক্ষুদ্রান্তে এসে উন্মুক্ত হয়। অগ্নাশয়ের ক্যান্সার ঐ নালীর আবরণী কোষ থেকে উৎপত্তি হয়, পরে পুরো অগ্নাশয়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তিতে পার্শ্ববর্তী রক্তনালী ও স্নায়ুকে আক্রান্ত করে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে তা পেটের ভেতরের সকল অংশে ছড়িয়ে পরে। তাছাড়া লসিকা তন্ত্রের মাধ্যমে এই ক্যান্সার পেট ছাড়াও শরীরের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়তে পারে।

 

অগ্নাশয়ের কাজঃ

মূলত ২ ধরনের কাজ করে।

ক) বিশেষ কিছু এনজাইম তৈরী করে যা খাবারের আমিষ, শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাদ্যকে ভেঙ্গে হজম সাহায্য করে।

খ) ইনসুলিন ও গ্লুকাগন হরমোন তৈরী করে যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে।

 

কারণ ও রিস্ক ফ্যাক্টরঃ

অগ্নাশয়ের ক্যান্সার হয় মূলত জীনগত সমস্যার হবার কারণে। আর এই জীনগত পরিবর্তন ঠিক কোন কারণে হয় তা সঠিকভাবে আবিস্কৃত হয় নি। তবে এর প্রধানতম রিস্ক ফ্যাক্টর হল ধুমপান। এছাড়াও অন্যান্য রিস্ক ফ্যাক্টর সমূহ হলঃ

 

বয়সঃ

৬৫ বছরের উর্দ্ধে এই ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশী, যদি পরিবর্তিত জীন থেকে থাকে বা নষ্ট হয়ে থাকে।

 

ডায়বেটিসঃ

প্যানক্রিয়াস ক্যান্সারের শতকরা ১০ থেকে ২০ ভাগ রোগীই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত থাকতে দেখা গেছে।

পাকস্থলীতে বা আশেপাশে অপারেশনের পর প্রবণতা দেখা যায়।

 

রোগের লক্ষণ সমূহঃ

সুনির্দিষ্ট লক্ষণ নেই বরং ক্যান্সার  ছাড়া অন্যান্য অগ্নাশয়ের সমস্যার মতই উপসর্গ দেখা দেয়। যেমনঃ

-         পেটে ব্যাথা।

-         ক্ষুধা মন্দা।

-         বমি বমি ভাব।

-         ওজন কমে যাওয়া।

-         পায়খানার পরিবর্তন (কখনও পাতলা কখনও কোষ্ঠ কাঠিন্য)

-         মাঝে মাঝে প্রচন্ড পিঠ ব্যাথা।

এর সাথে প্রায়ই পিত্তনালী বন্ধ থাকতে দেখা যায়, সেক্ষেত্রে চোখ, মুখ হলুদ হওয়া, গায়ে চুলকানি, ঘন রং এর প্রসাব, ফ্যাকাশে, পিচ্ছিল পায়খানা ইত্যাদি।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

ক্যান্সার সন্দেহ করলে নিচের পরীক্ষা করা

প্রয়োজন হতে পারে। যেমনঃ

·        সিবিসি,

·        লিভার ফাংশন টেস্ট,

·        রেনাল ফাংশন টেস্ট,

·        CA-19×9

·        সি টি স্ক্যান (পেটের)

·        পেটের এম আর আই,

·        আল্ট্রাসনোগ্রাফী,

·        এন্ডোস্কপি,

·        ই.আর.সি.পি,

·        ল্যাপারোস্কপি,

·        টিস্যু বায়োপসি

·                    পজিশন ইমিশন টমোগ্রাফী স্ক্যান (PET Scan) - ইনযেকশনের মাধ্যমে গ্লুকোজের স্যালাইন ও সাথে সামান্য রেডিও একটিভ মিনারেল দিয়ে স্ক্যান করা হয়। ক্যান্সার থাকলে সেখানে দ্রুত গ্লুকোজ গ্রহণ করবে এবং স্থানটি  à¦¹à¦Ÿ স্পট রূপে চিহ্নিত হবে। মূলত এই পরীক্ষা দ্বারা ক্যান্সার অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়লে তা বোঝা যাবে। ফলে রোগের স্টেজিং করতে সুবিধা হবে ফলে চিকিৎসা ও সম্ভাবনা বোঝা যাবে।

 

চিকিৎসাঃ

অগ্নাশয়ের ক্যান্সারের চিকিৎসা মূলত নির্ভর করে ক্যান্সারের আকার, অবস্থান, মাত্রা, ছড়িয়ে পড়া না পড়া এবং রোগীর বয়স ও স্বাস্থ্যের উপর। এসব কিছুর উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসার ১টি বা কয়েকটি নিতে হতে পারে।

চিকিৎসাগুলি হলঃ

১। সার্জারীঃ

যখন ক্যান্সার শুধুমাত্র অগ্নাশয়েই অবস্থান করে এবং অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়েনি সে ক্ষেত্রে ভাল ফল পাওয়া যায়। অপারেশনের মাধ্যমে অপসারণ করলে।

এর নাম হইপল রিসেকসন। যেখানে প্রয়োজনে ক্ষুদ্রান্তের, পাকস্থলির কিছু অংশ, পিত্তথলী ও পিত্তনালীর অংশ অপসারণ করতে হতে পারে। তবে এ অপারেশন সহ্য করার মত শারীরিক থাকতে হবে।

২। রেডিওথেরাপীঃ

অপারেশনের পর যদি কোন ক্যান্সার কোষ থেকে যায় তা সারার জন্য রেডিও থেরাপী দেয়া হয়। অথবা যেখানে অপারেশন প্রযোজ্য নয় বা সম্ভব নয়, সেখানে কেমোথেরাপীর সাথে রেডিও থেরাপী দেয়া হয়।

৩। কেমোথেরাপীঃ

মুখে খাবার ট্যাবলেট অথবা শিরা পথে

 à¦‡à¦žà§à¦œà§‡à¦•à¦¶à¦¨à§‡à¦° মাধ্যমে কেমোথেরাপী দেয়া হয়, যা ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করে, বৃদ্ধি রোধ করে। সার্জারীর সাথে অথবা সার্জারী ছাড়া রেডিওথেরাপী সহ বা ছাড়া কেমোথেরাপী সহ বা ছাড়া কেমোথেরাপী দেয়া হয়।

 

যে অবস্থায় আরোগ্য সম্ভব নয়ঃ

যখন ক্যান্সার অগ্নাশয় ছাড়াও সমস্ত পেটে অথবা শরীরের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে এবং অপারেশন করে টিউমার সরানো সম্ভব নয়, সে ক্ষেত্রে ডাক্তার চেষ্টা করে যাতে যতটুকু সম্ভব রোগীর কষ্ট কমানো যায় এবং ক্যান্সারের অগ্রগতি যতটুকু সম্ভব হ্রাস করা। একে বলে পেলিয়েটিভ বা সান্তনামূলক চিকিৎসা ক্ষেত্রে -

যা যা করা সম্ভব তা হলঃ

১। এন্ডোস্কপিক চিকিৎসাঃ

ক্যান্সারের কারণে পিত্তথলী বন্ধ হয়ে থাকলে এবং সে কারণে জন্ডিস হলে সে ক্ষেত্রে এন্ডোস্কপিক সার্জারীর মাধ্যমে পিত্তনালীর ভেতরে ধাতব বা প্লাস্টিকের পাইপ ঢুকিয়ে তা খোলা রাখা। কখনও কখনও টিউমার খাদ্যনালীকেও চাপ দিয়ে বন্ধ করে রাখতে পারে। সে ক্ষেত্রে চাপ অপসারণ করা।

২। সার্জারীঃ

খাদ্যনালী চাপে পড়ে বন্ধ হয়ে গেলে সে অংশ কেটে ফেলে ২ কাটা মাথা জোড়া লাগানো বা সরাসরি পাকস্থলীর সাথে যোগাযোগ সৃষ্টি করা।

৩। ট্যাবলেটঃ

প্যানক্রিয়াটিক এনজাইম এর ট্যাবলেট সেবন করে হজমে সহায়তা করা।

৪। ব্যাথা নাশক ঔষধঃ

ট্যাবলেট দ্বারা বা প্রয়োজনে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ব্যাথা বোধ কমিয়ে রাখা।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

-         অগ্নাশয় থেকে হজমে সহায়তাকারী এনজাইম ও রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রন কারী হরমোন ইনসুলিন তৈরী হয়।

-         অগ্নাশয়ে ক্যান্সার হলে তার লক্ষণ সমূহ অনেকটা সাধারণ অগ্নাশয়ের রোগের মতই প্রকাশিত হয়।

-         প্রায় ক্ষেত্রেই অগ্নাশয় ক্যান্সার খুব মারাত্মক পর্যায়ে ধরা পড়ে, যখন তা অনেক স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে এবং এ অবস্থায় চিকিৎসা করা কঠিন।

 

26-04-2013 রোগ ব্যাধি

ক্যান্সারজনিত ব্যথার উপশম

     ক্যান্সারের কারণে শরীরে মারাত্মক ব্যথা হয়। আর ক্যান্সার থাকলে ব্যথা থাকবে, এটাই ¯^vfvweK| তবে এই ব্যথা কমাতে পারলে রোগী যতদিন বাঁচে, ভালভাবে বাঁচতে পারে।

 

এবং স্বাভাবিক অনেক কাজ কর্ম করতে পারে।

শুধু তাই নয়, ব্যথা কম থাকলে রোগীর রাতের ঘুম ভাল হয় এবং দিনেও রোগী সবল থাকে, কর্মঠ থাকতে পারে। আর কমর্ঠ থাকলে নানা শারীরিক জটিলতা যেমর- নিউমোনিয়া, বেড সোর, ডিপ ভেইন থ্রম্বসিস ইত্যাদি অচলাবস্থার রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়। আর এই ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল থেকে শুরু করে রোগীর অবস্থা, ব্যথার পরিমাণ অনুযায়ী অপিঅয়েড জাতীয় ব্যথানাশকও ব্যবহার করা হয়। তা ছাড়া রেডিও  বা কেমোথেরাপী, সার্জারী, হরমোন থেরাপী ব্যক্তিদের দ্বারা ক্যান্সার টিউমারের আকার ছোট করার মাধ্যমেও ব্যথা কমানো হয়। আর এ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যায়াম, অনুশীলনের মাধ্যমে ব্যথা অনুভব কমানো যায়।

ব্যথার উপর নির্ভর করে  ঔষধ:

ব্যথার জন্য কোন ধরনের ব্যথানাশক ব্যবহৃত হবে- তা মূলত নির্ভর করে-

¨      ব্যথার স্থান।

¨      ব্যথার মাত্রা।

¨      ব্যথার ধরন (ভোতা, ঘোচা, জ্বালাপোড়া)।

¨      ব্যথার স্থায়ীত্ব-সবসময় থাকে নাকি আসে-যায়

¨      কোন কোন সময় বা কারণে বৃদ্ধি পায় বা হ্রাস পায়।

¨      কোন ধরনের ঔষধ চলছে ও তা কতটুকু কাজ করছে।

¨      আনুষঙ্গিক দৈনন্দিন কার্যক্রম ইত্যাদির উপর।

     এছাড়া ব্যাথা নাশকের প্রতি ব্যক্তি বিশেষের সহনশীলতা ও কার্যকারিতা বিভিন্ন ধরনের। কোন ঔষধ কোন ব্যক্তির ব্যথা কমালেও অপর ব্যক্তি ক্ষেত্রে অতটা কার্যকর হয়না। তাই বিভিন্ন দিক চিন্তা করে বিভিন্ন ধরনের ব্যথায় ঔষধ ১টি বা একাধিক একত্রে ব্যবহৃত হয়।

এসপিরিন জাতীয় ঔষধ:

 à¦ ধরনের ঔষধ মূলত হাড় ও জোড়ার ব্যথা ও প্রদাহজনিত ব্যথায় ব্যবহৃত হয়। তবে এতে পাকস্থলিতে ঘা, বদহজম ইত্যাদি হবার ঝুঁকি বেশি।

প্যারাসিটামল:

ক্যান্সারের ব্যথা নিরাময়ে খুবই ভাল ঔষধ। এটি ব্যথা, জ্বর কমায়, কিন্তু এসপিরিনের মত এসিডিটির বা রক্ত পাতলা করার মত জটিলতা করে না। তবে অনেক ক্ষেত্রেই ক্যান্সারের ব্যাথায় অপিয়য়েড ঔষধের সাথে প্যারাসিটামল ব্যবহৃত হয়।

অপিয়য়েড জাতীয়  ঔষধ:

যেমন- কোডেইন, মরফিন, তীব্র ব্যথা নাশক। তবে বমি বমিভাব, বমি হওয়া, ঝিমানী, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি হতে পারে। তবে এতে এডিকশন বা নির্ভরশীলতা তেমন তৈরী হয় না। অনেকে মনে করেন তীব্র ব্যথাতেই কেবল এই ঔষধ গ্রহণীয়, নতুবা পরে কাজ করবে না বা অভ্যস্থ হয়ে পড়বে। কিন্তু গবেঝনায় দেখা গেছে, যখন থেকে স্থায়ী ব্যথা শুরু  হয়ে যায়, তখন থেকেই কার্যকর এবং উপযোগী অপিয়য়েড ঔষধ রোগীর জীবন-যাত্রা অনেক সহজ ও আরামদায়ক করে ।

বিভিন্ন রূপে, বিভিন্ন পথে ব্যথানাশকের ব্যবহার:

ক. ট্যাবলেট বা সিরাপ আকারে মুখে খাওয়া।

খ. ইঞ্জেকশনের আকারে রুক্তনালী বা মাংসে নেয়া।

গ. পায়ুপথে নেয়া।

ঘ. স্টাইনাল ইঞ্জেকশন (এটি অবশ্যই এনেসথেসিওলজিস্ট দ্বারা নিতে হবে। আর এই ঔষধ তখনই ব্যবহার্য্য যখন অন্য কোনভাবে রোগীর ব্যথা নিরাময় হচ্ছে না।

ব্যাথানাশক গ্রহণে উপদেশ:

ক্যান্সারের ব্যথা স্থায়ী হয়। তাই সবসময় নিয়মিত ঔষধ নেয়া উচিত। ব্যথা উঠলে ঔষধ খাবে আর না উঠলে ঔষধ খাওয়া ঠিক না। কেননা, ব্যথা কমতে সময় লাগে। আর ব্যথা অনুভব না করণে স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করা যায় ও বিভিন্ন অনাকাঙ্খিত সমস্যা থেকে বাঁচা যায়।

আরও কিছু পরামর্শ হল-

¨      ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট ডোজে ও নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ঔষধ খাবেন।

¨      আপনার নিয়মিত ঔষধ সম্বন্ধে  à¦¬à¦¿à¦¸à§à¦¤à¦¾à¦°à¦¿à¦¤ জানার চেষ্ট করুন- কিভাবে কাজ করে? কতক্ষণ কাজ করবে? পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি কি হতে পারে?

¨      আপনার ঔষধের তালিকা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন।

¨      পর্যাপ্ত সময়ে এমন মাত্রার ঔষধ খাবেন যাতে রাতে সুন্দর ঘুম হয়। রাতে মাঝখানে উঠে যেন কোন ঔষধ খাওয়া না লাগে।

¨      নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র, ডোজ ঠিকঠাক করে নিন। কেননা, ক্যান্সারের স্টেজ ও মাত্রা অনুযায়ী ঔষধের ডোজ ও পরিবর্তন হতে পারে।

অপিয়য়েড ব্যথা নাশক সম্পর্কিত সাধারণ ভয় ও জিজ্ঞাসা:

এ ধরনের ব্যথানাশক সম্পর্কিত সাধারণ প্রশ্নসমূহ হল:-

¨      এত বেশি শক্তিশালী ব্যথানাশক ঔষধ খেলে কি আমি বুঝতে পারব যে, আমার ক্যান্সার খারাপের দিকে যাচ্ছে কি না?

¨      আমি কি এই ঔষধের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ব?

¨      একবার এই  ঔষধ শুরু করলে কি পরে অন্যান্য ব্যশানাশকে আমার ব্যথা কমবে?

¨      এই ঔষধে কি আমার আয়ু কমে আসবে?

¨      বেশি ব্যথা হলে এই ঔষধ খেতে হয়। আমারও সারাদিন ব্যথা থাকে। তাহলে আমি কি করবো?

ব্যথা কমানোর ঔষধবিহিন পদ্ধতি:

শারীরিক বা মানসিক গভীর প্রশান্তি আসলে মানুষের উদ্বিগ্নতা কমে যায় ও ব্যথা অনেক কম অনুভূত হয়। যেমন-

·         শ্বাস প্রশ্বাস ও রিলাক্সেশন:  সঠিক নিয়মে পেট ও বুকের মাধ্যমে সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাস করে রিলাক্সেশন ব্যায়াম করলে ব্যথা কম বোধ হয়।

·         হিপনোথেরাপী: কল্পনায় ঘুম ঘুম ভাব ও রিলাক্সেশর এনে মনকে প্রশান্ত করার মাধ্যমেও ব্যথা অনুভুতি হ্রাস করা সম্ভব।

·         ম্যাসেজ:  à¦¤à§à¦¬à¦• হল  লক্ষ কোটি স্নায়ূর উৎস। তাই  ম্যাসেজের মাধ্যমে ত্বক ও নরম পেশিকে রিলাক্ত করার মাধ্যমে স্নায়ুকেও শীতল করা হয়। ফলে ব্যথার অনুভুতি হ্রাস পায়।

·         মেডিটেশন: এর মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী অনেক উপকার পাওয়া যায়।

·         যোগ ব্যায়াম: নির্দিষ্ট আসন ও ব্যায়ামে অনেক সুস্থ বোধ হয়।

·         আকুপাংচার- অতি প্রাচীন কাল থেকে চীনদেশে ব্যথা নাশকসহ অনেক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এ ক্ষেত্রে ত্বকের নির্দিষ্ট কিছু স্থানে  সরু সুই বা আলপিন প্রবেশ করিয়ে ব্যথা নাশ করা হয়।

·         ট্রান্সকিউটেনিউয়াস ইলেকট্রিক নার্ভ স্টিমূলেশন থেরাপী: ত্বকের মধ্য দিয়ে খুব অল্প মাত্রার বিদুৎ প্রবাহ ঘটিয়ে শরীরের ব্যথা নাশক প্রতিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা হয়।

যা অবশ্যই মনে রাখতে হবে:

  1. ক্যান্সার থাকলে ব্যথা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে এই ব্যথা কমাতে পারলে রোগী যতদিন বাঁচে, ভালভাবে বাঁচতে পারে এবং স্বাভাবিক অনেক কাজ কর্ম করতে পারে।
  2. ক্যান্সারের ব্যাথা নিরাময়ে এসপিরিন, প্যারাসিটামল,কোডেইন, বিস্তারিত

    -->

26-04-2013 রোগ ব্যাধি

ক্যান্সারের সম্ভাব্যতা যাচাইএ জীনগত পরীক্ষা

 

    

কিছু কিছু ক্যান্সার জীনগত পরিবর্তনের কারনে ঘটে। জেনেটিক টেস্টিং এর মাধ্যমে জীনগত পরিবর্তন বোঝা যায় ও তার ফলে কোন ব্যক্তির ক্যান্সার হবার সম্ভাব্যতাও জানা যায়। আর বিশেষত এই পরীক্ষা ঐ সমস্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে বেশী প্রযোজ্য যাদের পারিবারিক ক্যান্সারের ইতিহাস আছে অথবা ব্রেস্ট ক্যান্সার, ওভারিয়ান বা অন্ত্রের ক্যান্সার হবার জীনগত ত্রুটি বিদ্যমান।

 

জন্মসূত্রে বা বংশগতির ধারার ক্যান্সারঃ

মানবদেহের প্রতিটি কোষ অঙ্গের বৃদ্ধি, বিভাজন এবং জীবন চক্র নিয়ন্ত্রন করে ক্রোমোজোমের মধে থাকা জীন। এই জীন থাকে জোড়ায় জোড়ায়। যার ১ টি আসে পিতা ও অন্যটি মা এর কাছ থেকে। এই জোড়া জীনের কোনটিতে যদি ত্রুটিপূর্ণ জীন থাকে, সে ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির বিশেষ কোন ক্যান্সার হবার ঝুঁকি থাকে। যেমন: কোন মহিলার কোন জীনে যদি ব্রেস্ট ক্যান্সার ধারী জীন ( BRCA 1 এবং BRCA 2) থাকে, সে ক্ষেত্রে তার ব্রেস্ট ক্যান্সার হবার ঝুকি বেশী। তবে দেখা গেছে যে ক্যান্সারে আক্রান্ত মাত্র শতকরা ৫ ভাগের বেলায় এই জন্মগত ত্রুটি যুক্ত জীন এর কারনে ক্যান্সার হয়।

যে সকল ক্যান্সারের সাথে জীনগত সম্পর্ক বেশী:

1.      স্তন ক্যান্সার

2.     খাদ্যনালীর ক্যান্সার

3.     পাকস্থলির ক্যান্সার

4.     প্রোটেস্ট ক্যান্সার

 

 <

26-04-2013 রোগ ব্যাধি

ক্যান্সার চিকিৎসায় কেমোথেরাপী

ঔষধের মাধ্যমে ক্যান্সার ধ্বংস করার চিকিৎসা পদ্ধতির নাম কেমোথেরাপী। ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপী ঔষধ ট্যাবলেট আকারে অথবা  à¦‡à¦žà§à¦œà§‡à¦•à¦¶à¦¨ আকারে দেয়া হয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্যালাইনের মাধ্যমে সরাসরি রক্তনালীতে দেয়া হয়। বিভিন্ন ধরনের কেমোথেরাপী ঔষধ আছে যারা সরাসরি ক্যান্সার কোষগুলিকে মারে অথবা ক্যান্সার কোষের দ্রুত বৃদ্ধিকে ব্যহত করে। এসব ঔষধকে সাইটোট্রফিক বা এন্টি ক্যান্সার ড্রাগ্‌স বলা হয়। কোমোথেরাপীর ফলে শরীরে দূর্বলতা, বমিভাব, ক্ষুধামন্দ, বমি, চুল পড়ে যাওয়া মুখে বা ত্বকে ঘা সহ নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। আর এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম রেখে কার্যকর ঔষধ  তৈরীতেই বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টা

 

 

কোমোথেরাপীর বিভিন্ন ব্যবহার:

ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা, বয়স, ক্যান্সারের প্রকারভেদ, কব্যান্সারের বিস্তৃতি ইত্যাদির উপর নির্ভর করে কেমোথেরাপী বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। যেমন-

¨     ক্যান্সারের চিকিৎসায় একমাত্র ঔষধ হিসেবে।

¨     রেডিওথেরাপীর সাথে কার্যকারীতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে।

¨     অপারশেনর পূর্বে টিউমারকে ছোট করার উদ্দেশ্যে।

¨     অপারশেনের পর অবশিষ্ট ক্যান্সার কোষধ্বংসের উদ্দেশ্যে

কেমোথেরাপীর প্রধান উদ্দেশ্য:

¨     ক্যান্সারকে পুরোপুরি নির্মূল করা বা করার চেষ্টা।

¨     রোগের লক্ষণ, ব্যাথা, কষ্ট লাঘব করে।

¨     ক্যান্সারের দ্রুত অগ্রগতি হ্রাস করার মাধ্যমে কেছুটা সময় বেশি বাচাবার চেষ্টা।

 

কিভাবে দেয়া হয়?

ট্যবলেট বা ক্যাপসুল আকারে কিছু কেমো ঔষধ আছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোমোথেরাপী ঔষধগুলি খুবই শক্তিশালী ও ক্ষতিকর বিধায় তা স্যালাইনের সাথে মিশিয়ে ধীরে ধীরে ডিশরায় প্রবেশ করানো হয়। তাই রোগীকে হাসপাতালে এসে কেমোথেরাপী নিতে হয়।

 

 à¦¤à¦¬à§‡ অনেকসময় ইঞ্জেশন শিরাভিন্ন অন্ন স্থানেও দেয়া হয়। যেমন:

¨     চামড়ায নিচে

¨      à¦®à§‡à¦°à§à¦¦à¦¨à§à¦¡à§‡à¦° ভেতরে স্পাইনাল ফ্লুইডে

¨     বৃকের খাচার ভেতরে, ফুসফুসের  দুই আবরনের মাঝখানে

¨     পেটের ভেতরে।

ধমনী পথে দেবার জন্য সাধারণত ক্যানুলা করে (শিরার মধ্যে প্রায় ১১/২

26-04-2013 রোগ ব্যাধি

ক্যান্সার

 

শরীরের যে কোন অঙ্গ বা কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ক্যান্সার বলে। বর্তমানে সারা বিশ্বে ক্যান্সার হল সবচেয়ে বড় মরণ ব্যাধি। এ পর্যন্ত প্রায় ২০০ অধিক প্রকারের ক্যান্সার এবং শরীরের প্রায় সব অঙ্গই আক্রান্ত হতে পারে।  অনেক ক্যান্সার আছে যার রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো থেকে বেঁচে থাকতে পারলে ক্যান্সার হবার ঝুঁকি অনেক কমানো যায়। আর অনেক ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করলে রোগমুক্তি লাভ করা যায়।

ক্যান্সার হলে কি হয়?

আমাদের শরীরের কোষ প্রতিনিয়ত বড় হয়, বৃদ্ধি পায় বা ক্ষয়পূরণ হয়। এর একটি স্বাভাবিক গতি ও মাত্রা আছে। কোটি কোটি বিভিন্ন কোষের mgš^‡q গঠিত আমাদের শরীর। আর প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ কোষ মারা যাচ্ছে, আবার নতুন কোষের জন্ম হচ্ছে। এর ফলেই বড় হই, পুরোনো কোষ বদলে নতুন কোষ সঠিকভাবে কাজে সহযোগীতা করে, ক্ষয়পূরণ হয়। শরীরের বিভিন্ন জীন মিলে এই নতুন কোষ তৈরী ও আচরণ সঠিক হচ্ছে কিনা তা নিয়ন্ত্রণ করে। আর কোন কারণে এ সব নিয়ন্ত্রণকারী জীন যদি নষ্ট হয় বা সঠিকভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়, তখন শরীরের কোষ অস্বাভাবিক  à¦­à¦¾à¦¬à§‡ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং এক সময় তা ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। আর যখন কোন অংশের অধিকাংশ ভাল কোষের স্থলে ক্যান্সার কোষ জায়গা দখল করে নেয়-তখন তা আর সঠিকবাবে কাজ করতে পারে না।

কোথায় কোথায় ক্যান্সার হয়?

শরীরের যে কোন অংশে ক্যান্সার হতে পারে। আবার এক স্থনে শুরু হয়ে তা সমস্ত শরীরে, বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে উৎপত্তি স্থলের ভিন্নতায় ক্যান্সারের নামকরণও ভিন্ন হয়। যেমন-

কারসিনোমা: শরীরের আবরনী কলায় (চামড়া বা শরীরের গহবর, নালীর আবরন ক্যান্সারকে বলে কারসিনোমা।

সারকোমা: মাংসপেশী, হাড়, যোজক কলা ইত্যাদির ক্যান্সারকে সারকোমা বলে।

লিউকোমিয়া: অস্থিমজ্জার যে কোষকলা থেকে শ্বেতকনিকা তৈরী হয়, এবং রক্তে শ্বেতকনিকায় সংখ্যা ও গঠনে পরিবর্তন দেখা দিয়।

মায়োলোমা: প্লাজমা কোষের ক্যান্সার।

লিম্ফোমা: লিম্ফোটিক সিস্টেম বা লসিকা তন্ত্রের ক্যান্সার।

টিউমার কি?

টিউমার হলো অস্বাভাবিক ভাবে বর্ধিত কোষের একটি চাকা বা দলা। এটি ক্যান্সারও হতে পারে বা নাও হতে পারে (বিনাইন) হতে পারে। বিনাইন টিউমার অর্থাৎ ক্যান্সার নয় এমন টিউমারের কোষের গঠন ও কাজ  à¦¸à§à¦¬à¦¾à¦­à¦¾à¦¬à¦¿à¦• কোষের মতই। তাই এটি খুব একটা সমস্যা করে না। তবে অত্যধিক বড় হয়ে গেলে বা খুব দ্রুত বড় হলে আশে পাশর অংশে চাপ প্রয়োগ করে সমস্যা করে। অন্যদিকে ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের কোষগুলি ক্যান্সার কোষ-যা স্বাভাবিক কোষের চেয়ে ভিন্ন গঠন ও কাজের এবং তা এত দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং সঠিক চিকিৎসা না হলে শরীরের অন্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে একইভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে ও সমস্যা তৈরী করে।

ক্যান্সার কিভাবে ছড়ায়? ক্যান্সার কোষ তার উৎপত্তি স্থলে বড় হতে থাকে। ঐ টিউমার থেকে কোন কোষ বা কোষগুচ্ছ ভেঙ্গে রক্ত বা লসিকার মাধ্যমে শরীরের অন্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে এবং যে স্থানে একইভাবে টিউমার তৈরী করতে থাকে। যখন ক্যান্সার তার উৎপত্তি স্থল থেকে   পার্শ্বস্থ কোষে  ছড়িয়ে পড়ে, তাকে ইনভেসিভ ক্যান্সার বলে। আর যখন দূরবর্তী কোষ বা অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে তখন তাকে সেকেন্ডারী ক্যান্সার বা মেটাসটেসিস বলে।

 

     ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধির জন্য তাদের ভেতরে নতুন রক্তনালীর সৃষ্টি করে। তাছাড়া স্বাভাবিক কোষ যেমন- একটি অপরটির সাথে লেগে থাকে, ক্যান্সার  কোষ সেভাবে লেগে থাকে না, ফলে সহজেই ভেঙ্গে দূরবর্তী স্থানে চলে যায় এবং সেখানে নতুন করে বৃদ্ধি পেয়ে টিউমার তৈরী করে।

ক্যান্সার কোষ মূলত ৩টি উপায়ে ছড়ায়-

  1. প্রথম টিউমারের আশে পাশে ধীরে ধীরে ছড়াতে থাকে।
  2. রক্তের মাধ্যমে সমস্ত শরীরে।
  3. লসিকার মাধ্যমে সমস্ত শরীরে।

ক্যান্সারে বিভিন্ন স্টেজ: চিকিৎসার সুবিধার্থে ক্যান্সারের আকার এবং কতটুকু বিস্তৃতি তার উপর ভিত্তি করে কয়েকটি স্টেজে ভাগ করা হয়-

q       ক্যান্সারের আকার;

q       পার্শ্ববর্তি স্থানে কতটুকু ছড়িয়েছে;

q       পার্শ্ববর্তি লসিকানালীতে কতটুকু ছড়িয়েছে;

q       দূরবর্তী স্থানে ছড়িয়েছে কিনা।

ক্যান্সারের রিস্ক ফ্যাক্টর: ক্যান্সারের সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি, তবে এটা বোঝা গেছে যে, ১টি কারণেই ক্যান্সার হয় না, বরং অনেকগুলি বিষয় ও অবস্থার সম্মিলনে ক্যান্সার হয়। অনেকগুলি ফ্যাক্টর আছে যারা কম, বেশি ক্যান্সার ঘটাতে উৎসাহিত করে বা ক্যান্সারকে দ্রুতগামী করে। মূলত ক্যান্সারের জন্য জীনগত সমস্যা, পরিবেশ গত কারণ ও বিভিন্ন রিস্ক ফ্যাক্টর একত্রিতভাবে দায়ী। ক্যান্সারের বিভিন্ন রিস্ক ফ্যাক্টরগুলি হল-

q       বয়স: বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্যান্সারের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

q       জীনগত পরিবর্তন: কারও কারও ক্ষেত্রে জীনগত পরিবর্তন ক্যান্সার তৈরীতে ভুমিকা রাখে।

q       পরিবারিক ক্যান্সারের ইতিহাস: কোন কোন ক্যান্সার পরিবারিকভাবে বাবা-মার কাছ থেকে বাচ্চার কাছে যায়, ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

q       জীবন যাত্রা : অলস জীবন যাপন।

q       পরিবেশগত কারণ: প্রচন্ড রোদে সূর্য থেকে রেডিয়েশনের ফলে বা রেডন গ্যাসের কারণে চামড়ায় ক্যান্সার হতে পারে।

q       রাসয়নিক দ্রব্য: বিভিন্ন ধরণের রং, রাবার, গ্যাস, এসবেসটস ইত্যাদি কেমিক্যাল বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার হতে পারে।

q       মানুষ সৃষ্ট বিভিন্ন রেডিয়েশন।

q       বিভিন্ন ধরণের ভাইরাস।

 

q       রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাব।

ক্যান্সার নির্ণয়ে স্কিনিং:

ক্যান্সার পুরোপুরি হবার আগে বা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ার আগে অনেক সময় কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না। আর যখন লক্ষণ বা সমস্যা প্রকাশ পায় তখন কিছু করার থাকে না। তাই খুব প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরার জন্য নির্দিষ্ট গ্রুপের লোকদের কিছু পরীক্ষা করা হয়-যাকে স্ক্রিনিং বলে। এর ফলে-

q       প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়;

q       কম খরচে সহজে রোগ নির্ণয়;

q       প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করলে ভাল হবার সম্ভাবনা বেশি।

 

 

চিকিৎসা:

মূলত ৩টি লক্ষ্যে চিকিৎসা করা হয়।

q       পুরোপুরি ক্যান্সার নিরাময়;

q       রোগীর কষ্ট, ব্যথা লাঘব করা।

q       ক্যান্সারের অগ্রগতি রোধ করা।

অপারেশন: মূলত ক্যান্সার বা টিউমার অপারেশন করা হয় যদি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে। এটি মূলত প্রথম ধাপ, যদি ক্যান্সার ছড়িয়ে না পড়ে। তবে যদি লিম্ফনোড  à¦†à¦•à§à¦°à¦¾à¦¨à§à¦¤ হয়,বিস্তারিত

-->

26-04-2013 রোগ ব্যাধি

ক্যান্সার স্ক্রিনিং - প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানাসার নির্ণয়

     যখন কিছু লোককে কোন নির্দিষ্ট রোগ বা ক্যান্সার নিরুপনের জন্য পরীক্ষা করে দেখা হয়, যাদের আপাতত সে রোগ বা ক্যান্সার নেই, তখন তাকে স্ক্রিনিং বলে। সাধরণত যে সব ব্যক্তির ঐ রোগ বা ক্যান্সার হবার ঝুঁকি রয়েছে (তাদের বয়স, লিঙ্গ বা ফ্যাক্টর থাকার কারণে) তাদেরকেই স্ক্রিনিং পরীক্ষা করে দেখা হয়। উদ্দেশ্য হলো প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নিরুপন করে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা। সাধরণত স্তন ক্যান্সার, জরায়ু এবং অন্ত্রের ক্যান্সারে ব্যক্তিকেই স্ক্রিনিং করা হয়। সাধারণ পরীক্ষার মাধ্যমে। অন্যদিকে যাদের এসব ক্যান্সারের  à¦ªà¦œà¦¿à¦Ÿà¦¿à¦­ ফ্যামিলি হিস্ট্রি আছে তাদেরকে জেনেটিক স্ক্রিনিং টেস্ট করা হয়। তবে এই স্ক্রিনিং টেস্ট দ্বারা সব সময় সঠিক রোগ নির্ণয় করা যায় না। অনেক সময় ফলস পজিটিভ হয় অর্থাৎ টেস্টের রেজাল্ট পজিটিভ কিন্তু ব্যক্তির ক্যান্সার নেই অথবা ঠিক তার বিপরীত ফলস নেগেটিভ হতে পারে।

স্ক্রিনিং:

রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলোকে ধরতে চেষ্টা করে: ক্যান্সার স্ক্রিনিং মূলত ক্যান্সার হলে তার প্রাথমিক পর্য্যায়ে যে সব লক্ষণ বা পরিবর্তন হবে তা ধরার চেষ্টা করে, অথবা কোন ব্যক্তির ক্যান্সার হবার খুব বেশী  সম্ভাবনা রয়েছে তা নির্ণয়ের চেষ্টা করে। তাই প্রা‌থমিক পর্যায়ে  রোগ ধথরা পড়লে চিকিৎসাও ভাল হয়। তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, স্ক্রিনিং এ ধরা পড়লে নিশ্চিত

চিত্র; প্রস্টেট কেন্সার স্ক্রিনিং

 

হবার জন্য অবশ্যই পূনাঙ্গ পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে।

চিত্র; জরায়ু কেন্সার স্ক্রিনিং

 

বিভিন্ন ধরনের স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম:

মোট ৩ ধরনের স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম আছে।

১. সবার স্ক্রিনিং: (আমাদের দেশে নেই, উন্নত দেশসমূহে) আছে নির্দিষ্ট বয়স গ্রপের সবাইকে স্ক্রিনিং করে দেখা হয়। যেমন- জরায় মুখের ক্যান্সার স্ক্রিনিং।

২. নির্দিষ্ট কিছু লোকের স্ক্রিনিং: যারা ঐ ক্যান্সারের জন্য হাই রিক্স অর্থাৎ বিভিন্ন ফ্য্‌ক্টরের উপস্থিতির 

    কারণে যাদের আক্রানস্ত হবার সম্ভাবনা বেশি। যেমন- পারিবারিক স্তন ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে তার জেনেটিক স্ক্রিনিং করা।

৩. রুটিন চেকআপ: নিয়মিত কঠিন চেক আপ থেকে ভাগ্যক্রমে প্রাথমিক লক্ষণ পেয়ে যাওয়া, পরবর্তীতে

জেনেটিক স্ক্রিনিং করা। যেমন- অন্ত্র, স্তন, ত্বকের, ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

আমাদের দেশে স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম:

স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম করতে হলে যা প্রয়োজন:

ক. যে ক্যান্সারটি হবার ঝুঁকি এবং হার বেশী , সে ধরনের ক্যান্সারে।

খ. স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে রোগীটিকে প্রাথমিক অবস্থায় নিরুপন করা সম্ভব।

গ. প্রাথমিক স্ক্রিনিং এ ধরা পড়লে রোগটি কায্যকর, নিসরাপদ ও সামর্থযোগ্য চিকিৎসা সম্ভব।

ঘ. নির্দিষ্ট গ্রুপে সহজে চিহ্নিত করা যায়, প্রয়োজনে ফলোআপ করা সম্ভব।

     আমাদের দেশে কেবলমাত্র জরায়ু মুখের ক্যান্সার নিরুপনের জন্য সকল জেলা সদর হাসপাতালে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসমূহ, বিশেষায়িত মা ও শিশু হাসপাতালে VIA পরীক্ষা করা হয়।

স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের কিছু সমস্যা:

1.       অনেক স্ক্রিনিং পরীক্ষা কষ্টদায়ক, ঝামেলাকর অথবা অস্বস্তিকর|

2.      যেহেতু ব্যক্তির কোন লক্ষণ নেই, তাই অনেকেই আগ্রহ করতে চায় না।

3.      অনেকে পরীক্ষা/চেক আপ শুনলেই ভয় পান।

4.      সচেতনতার অভাব।

5.      ফলস পজিটিভ ও ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট হয়। তাই ১০০% নিশ্চিত হওয়া যায় না।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে করণীয়:

¨      ধুমপান পরিত্যাগ করা, মদ্যপান  ত্যাগ করুন।

¨      অন্য ব্যক্তির ধুমপানের ধোয়া যাতে শ্বাসে না ডোকে, সেজন্য সচেষ্ট থাকুন।

¨      শারীরিকভাবে সচল কর্মঠ থাকুন।

¨      শরীরের সঠিক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

¨      স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ করুন, পরিমিত আকারে।

যা মনে রাখা দরকার:

¨      ক্যান্সার স্ক্রিনিং এর উদ্দেশ্য হল রোগটিকে প্রাথমিক অবস্থায় ধরে ফেলা। যখন তার শারীরিক লক্ষণ প্রকাশ পায়নি এবং সঠিক চিকিৎসায় রোগটিকে নির্মূল করা।

¨      স্তন, অন্ত্র, জরায়ু ক্যান্সার এর স্ক্রিনিং টিস্ট করা যায়।

¨      রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলি জেনে নিন ও  প্রয়োজনে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

 

26-04-2013 রোগ ব্যাধি

বংশগতি ও ক্যান্সার

    

জীন হলো বংশগতির ধারক ও বাহক। কিছু কিছু ক্যান্সারের জন্য জীন সরাসরি ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে মহিলাদের স্তন ক্যান্সার এবং পাকস্থলি ও অন্ত্রের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর জীনের প্রভাব অত্যন্ত বেশি। তবে আধুনিক গবেষনায় প্রমানিত হয়েছে যে, পরিবেশগত বিভিন্ন কারণ, যেমন- তামাক, খাদ্য, ইনফেকশন, মদ, ঔলধ, রেডিয়েশন বা বিকিরন এবং বিভিন্ন  রাসয়নিক দ্রব্য অনেক ক্যান্সাস সৃষ্টিতে জীনের চেয়েও বেশি ভূমিকা রাখে। যদিও সব ক্যান্সারের ক্ষেত্রেই পরিবর্তিত জীন ক্যান্সার বৃদ্ধিকে Zivwš^Z করে, তবে ৫ - ১০% ভাগ ক্ষেত্রে ক্যান্সার মূলত বংশানুক্রমিক হয় এবং এ ক্ষেত্রে একই পরিবারে একই ধরনের ক্যান্সার হতে দেখা যায়।

যে সকল ক্যান্সারের সাথে জীনগত সম্পর্ক বেশী:

  1. স্তন ক্যান্সার
  2. খাদ্যনালীর ক্যান্সার
  3. পাকস্থলির ক্যান্সার
  4. প্রোটেস্ট ক্যান্সার

স্তন ক্যানাসার ও জেনেটিকস:

অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বহু দেশে সবচেয়ে বেশি হয় স্তন ক্যান্সার। গড়ে অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি ১১ জন মহিলার ১ জনের স্তন ক্যান্সার আছে। যদিও  স্তন ক্যান্সার হবার সাথে নানা রকম কারণ ও ফ্যাক্টর জড়িত, তবু সবচেয়ে বড় কারণ হল- নারী হওয়া ও বেশী বয়স্ক হওয়া। তবে এই স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে পারিবারিক রোগের ইতিহাস বেশ পাওয়া যায়। যদিও পারিবারিক সম্পর্কযুক্ত ক্যান্সার আক্রান্তদের প্রতি ২০ জনে ১ জন (৫%)।

 

জেনেটিকস এবং অন্ত্রের ক্যান্সার: অন্ত্রের ক্যান্সারে আমাদের দেশসহ বিশ্বের সকল দেশে অসংখ্য ব্যক্তি আক্রান্ত হন। তবে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে  à¦à¦‡ ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কেননা, অন্ত্রের ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রতি ১০ জনের ৮ জনের বয়স ৬০ বছরের উর্দ্ধে এবং অন্ত্রের ক্যান্সারের জন্য খাদ্যাভ্যাস ও জীবন যাত্রা দায়ী।  সঠিকভাবে জীবন যাপন ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের ফলে শতকরা ৬০ ভাগ অন্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ক্যান্সারের পরিবারিক ইতিহাস: একই পরিবারের বিভিন্ন জেনারেশনে যদি একই ধরনের ক্যান্সার বেশী হয, তাহলে ঐ ক্যান্সারের জন্য ঐ ব্যক্তিকে পজিটিভ ফ্যামিলি হিস্ট্রি বলা হবে। এ ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির জেনেটিক টেস্টিং করে বা স্ক্রীনিং করলে ঐ ক্যান্সার খুব অল্প অবস্থায় ধরা সম্ভব হতে পারে এবং চিকিৎসা করে সুস্থ হতে পারে।

সমস্যাগ্রস্থ জীনধারীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি: জীনগত সমস্যার জন্য কোন কোন ব্যক্তির ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক বেশি। তবে এ ক্ষেত্রে পরিবশেগত কারণ ও উপস্থিত  থাকা লাগবে। অর্থাৎ একই ধরনের পরিবেশে, যার জীনগত সমস্যা আছে তার ক্যান্সার হবার ঝুকি জীন গত সমস্যা না থাকা ব্যক্তির চেয়ে অনেক বেশি।

যা জানা দরকার:

১. ক্যান্সারের সাথে জীনগত বা বংশীয় সম্পর্ক থাকলেও মূলত পরিবেশগত বিভিন্ন ফ্যাক্টরই ক্যান্সারের জন্য অধিক দায়ী।

২. স্তন ক্যান্স্যার অন্ত্রের  ক্যান্সার, পকিস্থলি ও  প্রোটেস্ট ক্যান্সাসারের সাথে জেনেটিক বেশি জড়িত।

৩. স্ট্রং ফ্যামিলি হিস্ট্রি  à¦¥à¦¾à¦•à¦²à§‡ অবশ্যই নিয়মিত স্ক্রীনিং ও জেনেটিক টেস্টিং করা উচিত। এতে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসা করা সম্ভব হবে।

 

 

26-04-2013 রোগ ব্যাধি

ক্যান্সার ও বিভিন্ন ধরনের খাদ্য

বিভিন্ন ধরনের খাবার কিছু কিছু ক্যান্সারকেযেমন- পাকস্থলি, ফুসফুস, জরায়ু ও প্রস্টেট ত্বরান্নিত  à¦•à¦°à§‡ । এ ধরনের ক্যান্সার তাদের হয়ে থাকে, যাদের খাদ্য তালিকায় চর্বি বেশি থাকে, ফলমূল, শাক-সবিজ কম থাকে এবং আঁশ জাতীয় খাবার কম থাকে। তবে এমন প্রমাণ নেই যে, নির্দিষ্ট কিছু খাবার ই ক্যান্সার সৃষ্টি করে এবং নির্দিষ্ট খাদ্য নির্দিষ্ট ক্যান্সার ভালো করে। উচ্চ মাত্রার প্রোটিন এবং চর্বি সমৃদ্ধ খাবার শরীর স্থূলকায় করে এবং ক্যান্সার হওয়ার আশংকা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। কিছু খাদ্য যেমন- শাক সব্জি, ফল-মূল কিছু ক্যান্সাররোধ করতে সাহায্য করে। খাদ্য তালিকা মানুষের জীবনের একটি অংশ যেটা ক্যান্সার হওয়ার আশংকাকে বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া ধুমপান, স্থূলতা, মদ্যপান, সূর্য রশ্মি এবং শারীরিক পরিশ্রমও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ফুসফুসের ক্যান্সার:

বিশ্বে ক্যান্সার এর কারণে মৃত্যুর প্রধান কারণ ফুসফুসের ক্যান্সার এবং এ ক্যান্সারের জন্য প্রধানভাবে দায়ী ধুমপান। কিছু শাকসব্জি এবং ফলের মধ্যে ক্যান্সার প্রতিরোধক কিছু উপাদান আছে, যাদের নাম ক্যারটিনয়েড এবং এগুলো স্বল্প পরিমানে কিছু শাকসব্জি ও ফলের মধ্যে আছে। এন্টি অক্সিডেন্টের ব্যবহার যেমন- বিটাক্যারোটিন এবং ভিটামিন-ই যা ফুসফুসের ক্যান্সাকে প্রতিরোধ করে বা এর চিকিৎসায় সাহায্য করে-এরকম কোন প্রমাণ নেই। যদিও শকসব্জি খাওয়া ফুসফুসের ক্যান্সার রোধে কিছু ভূমিকা রাখে তারপরও প্রধান প্রতিরোধ হলো ধুমপান থেকে বিরত থাকা।

ব্রেস্ট ক্যান্সার :

পৃথিবীতে মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে কমন ক্যান্সার হলো ব্রেস্ট ক্যান্সার। ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার কারণসমূহ:

-          শরীরের অতি বৃদ্ধি;

-          অতিরিক্ত  à¦®à§‡à¦¦;

-          অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি।

সবচেয়ে বেশি ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার আশংকা থাকে, ইস্ট্রোজেন হরমোন ব্যবহার করার জন্য।

মাসিক শুরু হওয়ার পর থেকে মাসিক কম হওয়ার আগ পর্জন্ত এই সময়টুকু ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য দ্বিগুণ পরিমাণ ভয়াবহ ঝুকি।. কম চর্বিযুক্ত খাবার, শাকসব্জি এবং ফলমূল ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, কিন্তু এলকোহল জাতীয় খাদ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

প্রস্টেট ক্যান্সার :

অস্ট্রেলিয়ার পুরুষের মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ হলো প্রস্টেট ক্যান্সার। শাকসব্জি-বিশেষ করে সয়াজাতীয় খাদ্য প্রস্টেট ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতাকে কমায়। অন্যদিকে প্রাণীজ পদার্থ যেমন-দুগ্ধজাত খাদ্য, চর্বি জাতীয় খাদ্য প্রস্টেট ক্যান্সার হওয়ার প্রবণাকে বাড়িয়ে দেয়। টমেটো এবং টমেটোজাত খাদ্যতে, তরমুজে, স্ট্রবেরিতে লাইকোপিন নামে একটি অক্সিডেন্ট পাওয়া গেছে, যা  à¦ªà§à¦°à¦¸à§à¦Ÿà§‡à¦Ÿ ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

অন্ত্রের ক্যান্সার :

পৃথিবীতে চতুর্থ প্রধান ক্যান্সার হলো  অন্ত্রের ক্যান্সার। ৭০% ক্ষেত্রে এটি প্রতিরোধ করা যায় সমৃদ্ধ জীবন অতিবাহনের মাধ্যমে। সঠিক জ্ঞান, কায়িক পরিশ্রম এবং শাকসবিজ ও  আঁশজাতীয়, ফলমূল সমৃদ্ধ খাবার প্রস্টেট ক্যান্সারকে প্রতিরোধ করে। অন্যদিকে লাল মাংস, অসিদ্ধ মাংস এবং Alcohol অন্ত্রের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

খাদ্য তালিকায় সীমিত রাখতে হবে:

-          চর্বিযুক্ত মাংস;

-          অতিরিক্ত লবনাক্ত এবং টক খাবার।

খাদ্য তালিকায় বেশি রাখতে হবে:

-          শাকসব্জি, বিশেষ করে শাকসব্জি অথবা সালাদ

-          সবুজ শাক সব্জি, গাজর

-          টমেটো, ভিটামিন  সি সমৃদ্ধ ফল

সপ্তাহের প্রতিটি দিন বিভিন্ন শাকসব্জি, গুল্ম, শস্যদানা, শস্য জাতীয় খাদ্য বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এ ক্ষেত্রে কম সিদ্ধ সব্জি ভালো। পরিশুদ্ধ উচ্চ পরিমাণে শ্বেতসার এবং চিনি জাতীয় খাদ্য পাকস্থলীর ক্যান্সার এবং অন্ত্রের ক্যান্সার এর প্রবনতা বাড়িয়ে দেয়।

মাংস এবং অন্ত্রের ক্যান্সার:

বর্তমানে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিত হয়েছে যে, Processed মাংস অন্ত্রের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। The World Cancer Research Fund (WCRF) অতি সম্প্রতি প্রকাশ করেছে, মানুষ যেন Processed বা সংরক্ষিত মাংস, যেগুলো ব্যবহার করা হয় এবং কেমিক্যাল উপাদান দিয়ে সংরক্ষিত করা হয়, সেগুলো খাওয়া থেকে বিরত  থাকা। এসব মাংস বার্গার, হটডগ এবং কিছু  সসেজে ব্যবহার করা হয়।

সমপ্রতি আরও প্রকাশ করা হয়েছে যে, বাচ্চাদের সম্পূর্ণভাবে Processed মাংস খাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। এগুলো অভ্যাস ছোট থেকেই গড়ে তুলতে হবে, যেন সেটা বড় হয়েও থাকে। বাচ্চাদের জন্য Processed মাংস কম চুর্বিযুক্ত পনির গ্রহনযোগ্য। WCRF আরও প্রকাশ করেছে যে, সপ্তাহে ৫০০ গ্রাম ওজনের (রান্না করা মাংস) লাল মাংস খাওয়া যেতে পারে। কিছু রিসার্চার বলেছেন যে, পোড়া মাংসও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, যদিও এ সত্য পরিস্কারভাবে জানা যায়নি।

চর্বি এবং ক্যান্সার:

চর্বিযুক্ত খাবার এবং ক্যান্সার এর মধ্যে একটা শক্ত সম্পর্ক আছে। তবে সরাসরি এটা প্রমাণিত হয়নি যে, চর্বিযুক্ত খাবার খেলেই নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্যান্সার হবে। যদিও চর্বিযুক্ত খাবার বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। যেমন- কোলন ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার, কিডনি, খাদ্যনালী, পিত্তথলী।

কিছু সংখ্যক খাবার আছে, যেগুলো ক্যান্সার হওয়ার অনততম কারণ। সেগুলো হলো:

কৃত্রিম মিষ্টান্ন: কৃত্রিম মিষ্টান্নর মধ্যে আছে স্যাকারিন, Cyclamate ল্যাবরেটরীতে ইদুরের উপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, ইদুরের যদি প্রচুর পরিমাণে স্যাকারিন খাওয়ানো হয়, তার তবে ব্লাডার ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। মানুষের ক্ষেত্রেও এটি সত্য তবে ইদুরের মত এত দ্রুত আক্রান্ত নাও হতে পারে।

লবনাক্ত খাবার:  লাল মাংস থেকেই যে ক্যান্সার হয় এরকম কোন শক্ত প্রমাণ নেই। তবে Cured অথবা Pickled মাংস নাইট্রেট নামে একটি উপাদান ধারন করে, যেটা ক্যান্সার এর কারণ। এটি  ল্যবরেটরীতে প্রাণীর উপর পরীক্ষা চালিয়ে পাওয়া গেছে, তবে মানুষের ক্ষেত্রে এরূপ গবেষণা অতটা পরিস্কার নয়। সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো Cured মাংস সীমিত পরিমাণে খাওয়া, কারণ এগুলো উচ্চ মাত্রার চর্বি এবং লবন ধারন করে। অন্যদিকে লবন পাকস্থলীর ক্যান্সারের জন্য অনেকাংশে দায়ী।

পোড়া খাবার:

খাবার যখন অতিরিক্ত জ্বাল দেয়া হয় বা পোড়ানো হয়, তখন সেটি Carcinogenic সমৃদ্ধ উপাদান ধারন করে, যাকে বলা হয় Polyelic aromatic hydrocarbon। ধোয়াযুক্ত (smoked) খাবারও তা কিছু পরিমাণ ধারণ করে। রান্নার সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো অল্প জ্বালে রান্না করা। যেমন- সিদ্ধ পোস, ভাপে রান্না করা, বেক করা, মাইক্রোওভেনে রোস্টিং করা।

26-04-2013 রোগ ব্যাধি

স্তন সমস্যায় সচেতনতা

স্তনে যে কোন ধরনের পরিবর্তনের ব্যপারে মহিলাদের  খুব সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সকল পরিবর্তন ক্যান্সার নয় কিন্তু তা অবশ্যই ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষা করিয়ে  নিশ্চিত হতে হবে। সাধারনত সে সকল পরিবর্তন হতে পারে।

·        ব্যথা

·        স্তনে শক্ত মাংসপিন্ড অনুভুত হওয়া

·        বোটায় পরিবর্তন দেখা যাওয়া

·        বোটা দিয়ে পূজ বা অন্য কিছু নির্গত হওয়া।

http://t3.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcTJi56onuIKrMq2Xh-ImXySbUzvCzpEmKyLu4OtabAgMPm-_mky

স্তন সংক্রান্ত কোন সমস্যা যাতে সৃষ্টি না হয়, সে জন্য  মহিলাদের নিজেদের স্তনের কোন পরিবর্তন হচ্ছে কিনা- সে ব্যপারে সচেতন হতে হবে। স্তনে কোন কোন ধরনের পরিবর্তন পরবর্তীতে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে।  সকল বয়সী মহিলাদেরই সমস্যা হতে পারে তবে বয়স্ক মহিলাদের ক্যান্সার হওয়া হার বেশী।

নিম্নলিখিত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অবশ্যই  ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে;

·        স্তনের কোন অংশ শক্ত পিন্ডের মত হয়ে গেলে

·        আকারে পরিবর্তন হলে

·        আকৃতিতে কোন পরিবর্তন হলে

·        স্তনের চামড়ায় কোন পরিবর্তন দেখা দিলে

·        কোন অংশে চামড়া মোটা হয়ে গেলে

·        বোটায় কোন পরিবর্তন হলে

·        বোটা দিয়ে কোন কিছু  নির্গত হলে

·        কোন অংশ অন্যান্য অংশের মত মনে না হলে

·        যে কোন ব্যথা অনুভুত হলে।

যদি এ সকল সমস্যা বগলের নিচেও দেখা যায় তাহলেও অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

 

জানতে হবে স্বাভাবিক অবস্থাঃ

সমস্যা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা পাবার জন্য স্বাভাবিক স্তন সমন্ধে ভাল ধারনা রাখা জরুরী।

·        নিয়মিত আয়নায় দেখে নিজের স্তনের স্বাভাবিক আকার সম্বন্ধে  à¦§à¦¾à¦°à¦¨à¦¾ নিতে হবে।

·        হাত দিয়ে স্পর্শ করে স্তন সম্বদ্ধে স্পষ্ট ধারনা নিতে হবে। গোসলের সময, কাপড় বদলানোর সময় অথবা রাতে ঘুমানোর সময় এটা সহজেই কারা যেতে পারে ।

·        কন্ঠাস্থি থেকে ব্রা লাইন এর নিচ পর্যন্ত স্তনের মাংশপেশী দেখতে হবে কোন জায়গায় শক্ত হয়ে গেছে কিনা।

·        আঙ্গুল একত্রিত করে উপরের অংশ দিয়ে  স্পর্শ করে স্তন পরীক্ষা করতে হবে।

http://t0.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcT02SCe9rmVO9Qkn7YQfH_Q6RU-ulZp2SbgUoaZbrJuSvOM6H8T

স্তন ক্যানাসার ও জেনেটিকস:

অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বহু দেশে সবচেয়ে বেশি হয় স্তন ক্যান্সার। গড়ে অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি ১১ জন মহিলার ১ জনের স্তন ক্যান্সার আছে। যদিও  স্তন ক্যান্সার হবার সাথে নানা রকম কারণ ও ফ্যাক্টর জড়িত, তবু সবচেয়ে বড় কারণ হল- নারী হওয়া ও বেশী বয়স্ক হওয়া। তবে এই স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে পারিবারিক রোগের ইতিহাস বেশ পাওয়া যায়। যদিও পারিবারিক সম্পর্কযুক্ত ক্যান্সার আক্রান্তদের প্রতি ২০ জনে ১ জন (৫%)।

স্তন ক্যান্সার ও ওভারিয়াল ক্যান্সারঃ

পারিবারিক ক্যান্সারের ঝুকির মধ্যে স্তন ক্যান্সার ও ওভারিয়ান ক্যান্সারের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশী। যদি কোন পরিবারের ৩ বা ততোধিক ব্যক্তির স্তন ক্যান্সার বা ওভারিয়ান ক্যান্সার থাকে তাহলে ঐ পরিবারের (মহিলা) ব্যক্তিদেরকে হাইরিস্ক গ্রুপে ফেলা যায়। এছাড়াও ২ জনের যদি ক্যান্সার থাকে সে ক্ষেত্রেও পরিবারের সদস্যগণ হাইরিস্ক গ্রুপে পড়তে পারে, যদি-

আত্মীয় যাদের ক্যান্সার আছে তার -

Æ   à¦¸à§à¦¤à¦¨ ক্যান্সার উভয় দিকে থাকে

Æ   ৪০ বছরের পূর্বে স্তন ক্যান্সার ধরা পড়লে

Æ   ৫০ বছরের পূর্বে ওভারিয়ান ক্যান্সার হলে

Æ   একই আত্মীয়ের স্তন ও ওভারিয়ান

26-02-2013 রোগ ব্যাধি

পায়ের নখের সমস্যা

 

          বাড়ন্ত বয়সে পায়ের নখের সমস্যা বেশী দেখা দেয়। নখের কোনা ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া, নখে ফাংগাল ইনফেকশন এবং নখ ভেঙ্গে যাওয়া ইত্যাদি নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। পা বা নখে আঘাত,জুতার সমস্যা বা ইনফেকশন ইত্যাদি নানা কারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

 

ইনপ্রোন টো নেইল/ নখ ভেতরের দিকে বড় হওয়াঃ

 

 

মূলত পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে এই সমস্যা দেখা দেয়। নখের কোনা ভেতরের দিকে বড় হতে থাকে এবং পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা হয়।

 

প্রতিরোধের জন্যঃ

    Æ à¦¨à¦– কাটার সময় নখের সম্মুখের বাড়তি অংশ কাটতে হবে। নখ গোল করে কাটা যাবে না।

    Æ à¦Ÿà¦¾à¦‡à¦Ÿ শক্ত জুতা পড়া যাবে না, যাতে নখের উপর প্রেসার না পড়ে।

 

ফাংগাল ইনফেকশনঃ

নখে ফাংগাল ইনফেকশন হলে নখ কালো হয়ে যায়, মোটা হয়ে যায় এবং নখ আলাদা হয়ে পড়ে। অনেক সময় দুর্গন্ধযুক্ত সাদা ময়লা বেন হয়। ঠিক মত চিকিৎসা না করলে নখের নিচের অংশেও ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ে।

 

 

এর চিকিৎসায় করণীয়ঃ

১)  à¦®à§à¦–ে খাওয়ার বা নখে ব্যবহার উপযোগী এন্টি ফাংগাল ঔষধ সেবন বা প্রয়োগ।

২)  à¦à¦•à§à¦¸à¦ªà¦¾à¦°à§à¦Ÿ দ্বারা নখ কাটানো, আকৃতি ঠিক রাখা।

৩)  à¦¨à¦– ভেজা না রাখা, শুকনো রাখা, ময়লা না জমানো।

 

পেরোনাইকিয়া / নখের চারপাশে চামড়ার ইনফেকশনঃ

নখের গোড়া বা পার্শ্বে সংযুক্ত চামড়ায় ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিশেষত স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস দ্বারা ইনফেকশন হয়। একে পেরোনাইকিয়া বলে। এতে পায়ে ব্যাথা, লাল হওয়া, ফুলে যাওয়া এবং হলুদ রং এর পুঁজ বের হয়। এ অবস্থায় এন্টিবায়োটিক দ্বারা চিকিৎসা করতে হবে। তবে দীর্ঘ দিন স্থায়ী রোগ (ক্রনিক পেরোনাইকি) হলে সারানো কঠিন। এক্ষেত্রে নখের বর্ন, আকৃতি পরিবর্তিত হয়ে যায়, এমনকি নখ আঙ্গুল থেকে আলাদা হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে এক আঙ্গুলের নখ থেকে ইনফেকশন পাশের আঙ্গুলের নখকে আক্রান্ত করে। মূলত এই রোগে একত্রে কয়েক ধরনের জীবাণু আক্রমণ করে।

এসময় করনীয়ঃ

          ১. পা যথা সম্ভব শুকনো রাখা।

          ২. এন্টিসেপটিক এবং এন্টিফাংশাল লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা।

          ৩. এন্টিবায়োটিক ঔষধ গ্রহন।

 

ব্রিটল নেইল / ভঙ্গুর নখঃ

আঘাত জনিত কারনে অনেক সময় নখে মারাত্মক আঘাতের ফলে নখের ¯^vfvweK আকার আকৃতি পরিবর্তিত হয়ে যায়, এবং নখ অস্বাভাবিক ভাবে  à¦¬à§‡à§œà§‡ ওঠে।

 

 

নখ খুব পুরু হয় অথবা নখের মধ্যে ভাজ পড়ে। সাধারনভাবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে নখ মোটা হতে থাকে। তবে বিভিন্ন রোগের কারনেও (যেমন : সেরিয়াসিস) নখ মোটা, ভঙ্গুর হতে থাকে। এ ক্ষেত্রে নখ কাটা, পরিষ্কার করা, নিয়ম মেনে পরামর্শ নিয়ে করতে হবে। নতুবা পরবর্তিতে মারত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে।

 

 

26-02-2013 রোগ ব্যাধি

পা এর গোড়ালীর ব্যাথা / হিল পেইন

 

 

পা এর তলা, গোড়ালী হল পা এর একটি সুরক্ষা ব্যবস্থা। পা এর তলায় এবং গোড়ালিতে চর্বি দ্বারা তৈরী একটি লেয়ার আছে যা পায়ের হাড়কে সুরক্ষা দেয় এবং সাথে সাথে হাতের নিচ দিয়ে যাওয়া অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সংবেদনশীল অংশকে শরীরের ভার থেকে রক্ষা করে। পা এর তলায় প্রায়ই ব্যাথা হতে পারে। মূলত প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস এবং হিল স্পারস নামক রোগের কারণেই ব্যাথা বেশী হয়, আর বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সেভারস ডিজিজ অন্যতম কারণ।

 

কাদের বেশী হয়ঃ

যে কোন বয়সের ব্যক্তিই পা এর গোড়ালী বা তলার ব্যাথায় ভুগতে পারেন। তবে নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ রোগ হবার সম্ভানা বেশী।

Æ   à¦®à¦§à§à¦¯ বয়সী নারী ও পুরুষ

Æ   à¦¶à¦¾à¦°à§€à¦°à¦¿à¦• ভাবে কর্মঠ ব্যক্তিগণ।

Æ   à¦¯à¦¾à¦¦à§‡à¦° শরীরের ওজন বেশী বা মোটা

Æ   à¦¯à¦¾à¦°à¦¾ অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকার কাজ করে।

Æ   à§® -১৩ বছরের বাচ্চাদের।

Æ   à¦—র্ভবতী মহিলাদের।

    

কারণঃ

মূলত যে সব কারণে ব্যাথা হয় তা হলঃ

Æ    à¦¹à¦¾à¦Ÿà¦¾à¦° ভঙ্গি সঠিক না হলে।( যেমন- পায়ের তালু ভেতরের দিকে ঘুরিয়ে হাঁটা)।

Æ    à¦¸à§à¦¥à§à¦²à¦•à¦¾à§Ÿ দেহ, অতিরিক্ত ওজন।

Æ    à¦œà§à¦¤à¦¾ সঠিক মাপ মত না হলে।

Æ    à¦¶à¦•à§à¦¤ বস্তুর ওপর বেশী হাটাহাটি, লাফালাফি, দৌড়াদৌড়ি করা।

Æ    à¦¬à¦¾à¦°à¦¸à¦¾à¦‡à¦Ÿà¦¿à¦¸ (বারসা-র প্রদাহ), গোড়ালিতে আঘাত পেলে (স্ট্রেস ফ্যাকচার), নিউরোমা।

Æ    à¦¡à¦¾à§Ÿà¦¬à§‡à¦Ÿà¦¿à¦¸ আর্থাইটিস।

 

হিল পেইন এর জটিলতাঃ

প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস, হিল স্পার।

 

প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসঃ  

প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস হল যোজক কলায় তৈরী শক্ত পর্দা বা ব্যান্ডের মত, যা গোড়ালী থেকে পায়ের আঙ্গুলের গোড়া পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি পায়ের অসংখ্য হাড় জোড়াকে সঠিক পজিশনে রাখে এবং পায়ের হাড়ের নিচ দিয়ে যাওয়া রক্তনালী, লিগামেন্ট, মাংস পেশীকে সুরক্ষা দেয়।

 

কোন কারণে এতে আঘাত লাগলে, বেশী জোড়ে চাপ পড়লে বা  à¦›à¦¿à§œà§‡ গেলে প্রদাহ হয় এবং ব্যাথা হয়। বেশী জোরে চাপ পড়লে যদি এটি ছিড়ে যায় তাহলে ফ্ল্যাট ফিট নামক রোগ হয়। সাধারণত প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসে সকালে ব্যাথা বেশী হয়। অনেকদিন প্রদাহ থাকলে বার বার আঘাতের ফলে পরবর্তিতে হিল স্পার দেখা দেয়।

 

হিল স্পারঃ

নানা কারণে দীর্ঘ দিন প্ল্যান্টার ফ্যাসার  à¦‰à¦ªà¦° চাপ পড়তে থাকলে দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহের কারণে গোড়ালির হাড়ে বর্ধিত অংশ অর্থাৎ স্পার তৈরী হয়। গোড়ালীর এক্স-রে করলে স্পার দেখা যেতে পারে। তবে শুধু স্পার থাকলেই সবার ব্যাথা হবে তা নয়, কেননা প্রায় শতকরা ১০ ভাগ লোকের ক্ষেত্রেই স্পার দেখা যায়, যারা কোন সমস্যা অনুভব করেন না। মূলত ঐ স্থানে প্রদাহ বা রক্ত জমলে বা বার বার ঘষা লগলেই ব্যাথা হয়।

 

সেভারস ডিজিজঃ

৮ থেকে ১০ বছর বা কখনও ১৬ বছর বয়সী বাচ্চাদের মধ্যে পায়ের তলার বা গোড়ালীর ব্যাথার অন্যতম কারন হল সেভারস ডিজিজ। মূলত গোড়ালির হাড়ের বর্ধনশীল অংশে অতিরিক্ত চাপ, আঘাত, অতিরিক্ত লাফালাফি ইত্যাদির ফলে প্রদাহ হয় এবং ব্যাথা হয়। এ জন্য পা-এর বিশ্রাম, পা উচু করে তুলে ধরে রাখা, বরফ দ্বারা সেক দেয়া ইত্যাদির ফলে ব্যাথা কমে যায়।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

রোগের ইতিহাস, এক্স-রে, শারীরিক কিছু পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করা যায়।

 

চিকিৎসাঃ

মূলত কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে। যেমনঃ

    Æ à¦ªà¦¾ কে রেস্ট দিতে হবে। খুব বেশী লাফালাফি, দৌড়াদৌড়ি করা যাবে না।

    Æ à¦¨à¦¿à§Ÿà¦® মত পা ম্যাসেজ করতে হবে, পায়ের গম্বুজাকৃতি অর্থাৎ তল অবতল আকৃতি ঠিক রাখতে হবে।

    Æ à¦ªà¦¾à§Ÿà§‡à¦° ব্যায়াম করতে হবে।

    Æ à¦°à¦¾à¦¤à§‡ স্প্লিন্ট পড়ে শুতে হবে।

    Æ à¦ à¦¿à¦• মাপমত জুতা পড়া, হাটার স্টাইল ঠিক করা ইত্যাদি।

    Æ à¦¬à§à¦¯à¦¾à¦¥à¦¾à¦¨à¦¾à¦¶à¦• ঔষধ খেতে হতে পারে কখনও এন্টি ইনফ্লামেটরি ইঞ্জেকশন নিতে হতে পারে।

    Æ à¦¨à¦¿à¦‰à¦°à§‹à¦®à¦¾, বারসাইটিস, হিল স্পার থাকলে অপারেশন করতে হবে।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

বিস্তারিত

-->

26-02-2013 রোগ ব্যাধি

ডুপাইট্রেন্স কনট্রাকচার:

 

হাতের তালু থেকে আঙ্গুল পর্যন্ত শক্ত পর্দার মত অংশ থাকে-একে বলে  পামার ফাঁসা। ডুপাইট্রেন্স কন্ট্রাকচার এর ফলে এই ফাঁসা খাটো এবং মোটা হয়ে যায়। স্বাভাবিক ভাবে রিং ফিঙ্গার এবং কনিষ্ঠা এ রোগে আক্রান্ত হয় কিন্তু  যে কোন আঙ্গুল আক্রান্ত হতে পারে।এ রোগে টিস্যু খাটো এবং মোটা হয়ে যায়। ফলে হাত গুটিয়ে যায়। এর কারণ এখনও জানা যায়নি। কিন্তু মনে করা হয় এটা একটা বংশীয় ব্যাপার।

অন্যন্য কারণের মধ্যে আছে বৃদ্ধ বয়স এবং এলকোহল সেবন, মৃগী রোগ এবং ডায়াবেটিকস। চিকিৎসার মধ্যে আছে শল্য চিকিৎসা। নিচের ক্ষেত্রে এ রোগ হবার সম্ভাবনা  বেশি থাকে:

·        বয়স্ক লোক

·        ডায়াবেটিকস ব্যক্তি

·        মৃগী রোগী -যারা ফেনিটয়িন্‌স খায়।

·        এলকোহল সেবন কারী।

এ রোগ অনেক সময় পরিবারের মধ্যেও দেখা যায়। চিকিৎসা সেবা সাধারণত কতটা ভয়াবহ তার উপর নির্ভর করে, তবে ইঞ্জেকশন কার্টিকোস্টোরয়েড এবং সার্জারী বা শল্য চিকিৎসা অন্যতম।

উপসর্গসমূহ:

  

   

 

·        রিং ফিঙ্গার এবং কনিষ্ঠার সংযোগ স্থলে ফুলে যায় বা একটা গোটা দেখা যায়।

·        হাতের তালুতে শক্ত কার্ডের মত মনে হয়।

·        হাট বেকে গুটিয়ে আসে।

·        তালুর চামড়া কুচকে যায়।

·        কদাচিৎ ব্যথা অনুভব হয়।

 

কারণ:

সঠিক কারণ  এখনও অজানা। অন্যান্য উপদান যার ফলে এর প্রভাব দেখা যায়, তা হল-

·        বয়স- মাঝারী থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সম্ভাবনা বেশি।

·        লিঙ্গভেদ- মহিলাদের থেকে  পুরুষের ১০ গুন বেশি সম্ভাবনা।

·        বংশ- বংশীয় ক্ষেত্রে এ রোগ দেখা যায়।

·        চিকিৎসা বিষয়- যারা মৃগী রোগ ও ডায়াবেটিকস -এ ভূগছেন।~M‡Qb

·        এলকোহল।

 

অন্যান্য বিষয়াদি:

প্রায় সব  ক্ষেত্রে - শুধুমাত্র  হাত আক্রান্ত হয়। অন্যান্য বিষয়-

·        গারোড্‌স প্যাড -

এতে হাতের আঙ্গুলের সংযোগস্থল মোটা ও বড় হয়ে যায়।

·        লেডার হাউস রোগ

পায়ের ফাসা ছোট্ট ও মোটা হয়ে যায়

·         à¦ªà§‡à¦°à§‹à¦¨à¦¿à¦¸ রোগ-

পেনিসের টিস্যুও খাটো ও মোটা হয়ে যায়।

 

চিকিৎসা:

চিকিৎসা রোগের ভয়াবহতার উপর নির্ভর করে। প্রাথমিক অবস্থায়- ইঞ্জেকশন কর্টিকস্টেরয়েড তালুতে দেওয়া যায়। এর ফলে ব্যথা দূর হয় এবং টিস্যুগুলোর ক্রমশ মোটা হওয়ার ক্ষেত্রে বাঁধা দেয়।

রোগ বেড়ে গেলে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়। রোগী হাত সোজা করতে ব্যর্থ হয় এবং হাত দিয়ে সে কোন কাজ করতে পারে না। তখন সার্জারি/শল্য চিকিৎসা একমাত্র উপায়। সার্জারী করার পর কখনও কখনও এ রোগটা আবার হতে পারে।

 

সার্র্জারীর মধ্যে আছে:

       

·        হাতের তালুতে ছোট করে ব্যান্ডগুলোকে ছড়িয়ে দেয়া।

·        মোটা হয়ে যাওয়া টিস্যু ফেলে দেওয়া

·        সেখানে চামড়ার পুণঃস্থাপন করা।

·        আক্রান্ত আঙ্গুলকে কেটে ফেলা।

 

পেশাগত চিকিৎসা:

সার্জারির পর দ্রুত সেরে উঠার জন্য এবং কন্ট্রাকচার  এর রিস্ক কমানোর জন্য পেশাগত চিকিৎসার প্রয়োজন। এগুলো হল-

·        কয়েক মাস হাতে স্পিন্ট পরে থাকা, যাতে আঙ্গুল সোজা হয়।

·        প্রয়োজন মত দিনেও পরতে হবে।

·        আদ্র ক্রিম দিয়ে হাত ম্যাসেজ করা।

 

 

মনে রাখা প্রয়োজন:

·        ডুপাইট্রেন্স কন্ট্রাকচার -এ  তালুর পেশীগুলো খাটো ও মোটা হয়ে যায়- হাতকে গুটিয়ে ফেলে

·        সঠিক কারণ জানা যায়নি, তবে বয়স বাড়লে, মৃগী রোগ, এলকোহল এবং ডায়াবেটিকস রোগীর ক্ষেত্রে এর প্রভাব লক্ষ্যণীয়।

·        কর্টিকস্টেরয়েড ইঞ্জেকশন এবং সার্জারি চিকিৎসার দ্বারা উপকার পাওয়া যায়।

 

 

26-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস

 

থ্রম্বোসিস হল রক্তনালীর ভেতর জমাট বাধা রক্ত।  ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস বলতে পায়ের গভীরে যে রক্তনালী আছে তাতে রক্তজমাট হওয়া বোঝায়। এই জমাট বাধা রক্ত যে কোন সময় পালমোনারী এমবোলিসম (ফুসফুসের রক্তনালীর ভেতর জমাট বাধা রক্ত) তৈরী করে জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ হতে পারে। পায়ের রক্তনালী থেকে জমাট রক্তপিন্ড বা তার অংশবিশেষ ভেঙ্গে ছুটে গিয়ে ফুসফুসের চিকন রক্তনালীর পথ বন্ধ করে দিতে পারে এবং যদি তা যে কোন রক্তনালীকে বন্ধ করে দেয়- মৃত্যু ঘটতে পারে।

 

    

 

পা শরীরের নীচের অংশে থাকায় পায়ের রক্ত হৃদপিন্ডে পৌঁছাতে যেহেতু তাকে মধ্যাকর্ষের বিপরীতে কাজ করতে হয়, তাই বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক সহায়তা যেমন- পায়ের গোছার মাংসের সংকোচন ও প্রসারণ ইত্যাদির উপর নির্ভর করতে হয়। আর পায়ের গভীরের এসব রক্তনালীতে একধরনের বিশেষ ভাল্ব থাকে যা রক্তকে নিচে নামতে বাধা দেয়, বরং মধ্যাকর্ষের বিপরীতে অর্থাৎ নিচ থেকে উপরের দিকে তুলে দেয়।

 

লক্ষণসমূহ:

o       পায়ে ব্যাথ্যা।

o       পায়ের গোড়ালী, পায়ের পাতা ফুলে যাওয়া।

o       পায়ের গোছা নাড়াতে ব্যাথা হওয়ো।

o       পায়ের চামড়া লাল হয়ে নরম হওয়া।

 

ব্লাড ক্লট বা রক্ত জমা :

রক্তেরমধ্যে অনুচক্রিকা ও আরও কিছু ক্লটিং ফ্যাক্টর থাকে। অনুচক্রিকা মূলত রক্তকে আঠাল ও থক থকে বানিয়ে জমাট বাধায়। এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এটি রক্তের নালীর দেয়ালে একটি আরেকটির গায়ে লেগে থাকতে চায়। যখন রক্তনালীর কোন অংশ কেটে যায়, সেই স্থানে অনুচক্রিকাসমূহ এসে জমতে থাকে, এবং একটির গায়ে একটি লাগতে থাকে।  আর ক্লটিং এজেন্ট এর সাথে মিশে একটি জালের মত তৈরী করে, সেখানে আরও অজস্র অনুচক্রিকা এসে জমা হয়ে  প্লাগ তৈরী করে এবং কাটা অংশকে আবৃত করে ফেলে এবং রক্তপাত বন্ধ করে। তাই আমাদের বেঁচে থাকার জন্য, রক্তপাত বন্ধ করার জন্য এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, তবে এই পদ্ধতিতেই থ্রোম্বাস তৈরী হয়, যা কিনা অনেক সময় ঝুঁকির কারণ।

 

 

রিক্স ফ্যাক্টরসমূহ :

থ্রম্বোস তৈরীর জন্য নিচের রোগগুলিকে রিক্স ফ্যাক্টর হিসেবে গণ্য করা হয়-

o       করোনারী হার্ট ডিজিজ

o       অতিরিক্তি মোটা বা ওজন বেশি হওয়া।

o       ধুমপান

o       গর্ভবর্তী

o       বেশি মাত্রায় গর্ভনিরোধক পিল খাওয়।

o       অধিক সময় ধরে নড়াচড়া না করে বসে বা শুয়ে থাকা।

o       মারাত্মক কোন আঘাত বা অপারেশনের পর

o       বিশেষ কিছু ক্যান্সার।

o       কনজেসটিভ হার্ট ফেইলর।

o       পূর্বে থ্রোম্বোসিস হয়ে থাকলে।

o       পারিবারিক থ্রোম্বোসিসের ইতিহাস থাকলে।

 

ডিডিটির পরবর্তী জটিলতা :

যদি পায়ের শিরায় থ্রম্বোস (ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস) থেকেই যায়, তা থেকে নানা ধরননের জটিলতা হতে পারে। যেমন- ফ্লেবাইটিস বা শিরায় প্রদাহ-

o       পায়ে ঘা, সেলুলাইটিস।

o       পালমোনারী এমবোলিসম (যদি জমাট রক্ত ছুটে গিয়ে শ্বসতন্ত্রের রক্তনালীকে বন্ধ করে দেয়) এবং এই রোগের শতকরা ৮০ ভাগই ডিডিটির জটিলতা থেকে সৃষ্ট।

 

ইকোনমিক্লাস সিনড্রোম :

ইংল্যান্ডের একটি গবেষনায় বলা হয়েছে- কোন কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় বিমানে ভ্রমণ করলে ডিডিটি হবার ঝুঁকি আছে। তাদের জন্য পরামর্শ-

o       ঢিলেঢালা পোষাক পরে বিমানে আরোহণ।

o       ধুমপান ও মদ পরিহার করা।

o       প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা।

o       যতক্ষন সম্ভব হাটাহাটি করা, প্লেনে এক কেবিন থেকে অন্য কেবিনে হাটাহাটি।

o       ভাঁজ করে বেশিক্ষণ না বসা।

o       বসে থাকাবস্থায় পা নড়াচড়া করা, ব্যায়াম করা।

o       ভ্রমনের পূর্বে ও পরে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া।

 

রোগ নির্ণয় :

ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস কে লিম্ফোডেমা বা ক্রনিক ভেনাস ডিজিজ থেকে আলাদা করে বোঝা কঠিন। তবে ভেনাস আল্ট্রাসাউন্ড ও কনট্রাস্ট ভেনোগ্রাফী করে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়।

 

চিকিৎসা :

o       রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে রক্ত তরলকারী ঔষধ দিতে হবে।

o       দীর্ঘদিন যাবত ওয়ারফারিন জাতীয় ঔষধ দিতে হবে, যাতে পুনরায় থ্রম্বোসিস না হয়।

o       নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করে রক্তের তারল্য বা আঠাল ভাব দেখতে হবে।

o       রিক্স ফ্যাক্টরসমূহ থাকলে পরিহার করতে হবে।

 

প্রতিরোধের উপায় :

ü     অতিরিক্ত ওজন কমানো।

ü     ধুমপান ও মদ পরিহার করা।

ü     নিয়মিত ব্যায়াম করা।

ü     চর্বিযুক্ত খাবার কম  খেয়ে আঁশযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া।

ü

26-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

কার্পাল টানেল সিনড্রোম

 

কার্পাল টানেল সিনড্রোম হল হাতের একটি বিশেষ রোগ, যেখানে হাতে প্রচন্ড ব্যথা হয় এবং হাতের বড় বড় স্নায়ুর উপর চাপ পড়ার ফলে এই ঘটনা ঘটে। এই রোগে কব্জির ভেতর দিয়ে যে সকল নার্ভ বা স্নায়ু চলাচল করে, আঙ্গুল নাড়াতে, অনুভব করতে সাহায্য করে, সেইগুলির  উপর প্রচন্ড চাপ পড়ে বলে হাতে আঙ্গুল অবশভাব, ব্যথা, পিন ফোটানোর মত যন্ত্রণা হয়। কব্জির ভেতরে কোন কিছু কোন কারণে ফুলে গেলেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

 

কার্পাল টানেল কি?

কার্পাল টানেল হল কব্জির মধ্যেকার একটি সরু পথ (টানেলর মত) যার ভেতর দিয়ে রুক্তনালী, স্নায়ু হাতে পৌছায়। এর নিচে আছে কব্জির আটটি হাড়, আর উপর দিকে ট্রান্সভার্স কার্পাল লিগামেন্ট নামক এক ধরনের লিগামেন্ট।

এই টানেলের ভেতর দিয়ে মূলত মিডিয়ান নার্ভ নামক স্নায়ু গিয়ে হাতে পৌছে হাতের তালুর অর্ধেক, বৃদ্ধাঙ্গুল, নির্দেশিকা আঙ্গুল, মধ্যমা এবং অনামিকার অর্ধেক পর্যন্ত অনুভূতি দান করে।

            এই টানেলের মধ্য দিয়ে ফ্লেক্সর মাসল টেন্ডনগুলো গিয়ে হাতে পৌছে এবং টেন্ডনগুলি টেনোসাইনোভিয়াম নামক পিচ্ছিল আবরণ দ্বারা আবৃত থাকে যা হাতের বিভিন্ন নড়াচড়ার সাহায্য করে।

            কার্পাল টানেলে কোন কারণে  à¦¬à¦¾ প্রদাহের ফলে টেন্ডন ফুলে গেলে তা সরু স্থানটিকে আরও সরু করে এবং মিডিয়ান নার্ভের উপর চাপ পড়ে এবং সঠিক চিকিৎসা না হলে নার্ভ ঠিকমত কাজই করতে পারে না। ফলে আঙ্গুলে অবশবোধ হয়, ব্যথা হয়, আলপিন ফোড়ানোর মত যন্ত্রণা হয়। বৃদ্ধাঙ্গুলের সাথে যুক্ত থেনার মাসল মিডিয়ান নার্ভ দ্বারা চালিত হয়। তাই কার্পাল টানেল সিনড্রোম মারাত্মক হলে বৃদ্ধাঙ্গুল নাড়াতে সমস্যা হয়, কোন কিছু জোরে ধরতে পারা যায় না।

লক্ষণসমূহ:

  • অবশ অবশ বোধ হওয়া
  • সুই ফোটানোর মত যন্ত্রণা
  • হাতে ব্যথা হয় (বিশেষত রাতে)
  • কব্জিতে তীব্র ব্যথা
  • বাহু বা কাঁধে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
  • হাতে কম জোর পাওয়া
  • কনিষ্ঠা আঙ্গুলে কোন ব্যথা হয় না

কারণ কি?

কখনও কখনও কোন কারণ খুজে পাওয়া যায়না, আবার কখনও কখনও অনেকগুলো কারণের ফলে হয়। যেমন-

·        আর্থাইটিস: (যার ফলে প্রদাহ হয় এবং ফুলে যায়)

·        গর্ভাবস্থা: গর্ভকালীন বিভিন্ন হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যে কারণে শরীরে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ও কার্পাল টানেল সিনড্রোম দেখা দিতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে বাচ্চা জন্মানোর পরই পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে।

·        কব্জির হাড় ভেঙ্গে বা মচকে গেলে: ভাঙ্গা হাড়ের চাপে বা নিয়মিত খোচার কারণে কব্জির ভেতরে ফুলে যেতে পারে ও ব্যথা হতে পারে।

·        জন্মগত ত্রুটি: কারও কারও ক্ষেত্রে কার্পাল টানেল স্বাভাবিকের চাইতেও চিকন হয়।

·        অতিরিক্ত ব্যবহারজনিত কারণ: বার বার কব্জির নাড়াচাড়া অথবা সঠিকভাবে না নাড়লে অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ফ্লেক্সেরে মাসল টেন্ডনগুলিতে প্রদাহ হতে পারে এবং ফুলে গিয়ে নার্ভের উপর চাপ ফেলতে পারে। এ ধরনের কার্পাল টপানেল সিনড্রোমকে   ওভার ইউজ ইনজুরি  à¦¬à¦²à§‡à¥¤

সঠিক সময়ে চিকিৎসা করাতে হয়:

কার্পাল টানেল সিনড্রোম হলে সঠিক ভাবে কাজ করা যায় না। প্রথমে ব্যথা, অস্বস্তিবা অবশ বোধ কম থাকে। কিন্তু চিকিৎসা না করালে বা কারণ দূর করতে না পারলে ব্যথা ও অবশভাব দ্রুত বাড়তে থাকে,

এমনকি স্থায়ী   ত্রুটি দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসা:

চিকিৎসার জন্য যা যা করণীয়:

·        সেই সেই কাজে বা যে যে পজিশনে হাতে ব্যথা বৃদ্ধি পায় তা বন্ধ করতে হবে। বিশ্রাম  দিতে হবে।

·        ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম।

·        রিস্ট স্প্লিন্ট ব্যবহার করতে হবে-বিশেষত রাতে

·        কার্টিসোল ট্যাবলেট বা ইঞ্জেকশন নিতে হবে-প্রদাহ কমানোর জন্য।

·        ফ্রুসেমাইড জাতীয় ঔষধ-অতিরিক্ত পানি কমানোর জন্য।

·        অপারেশন।

অপারেশনের মাধ্যমে নার্ভের চাপ কমানো:

ফিজিওথেরাপী বা অন্যান্য ঔষধে ব্যথা না কমলে অপারেশন হলো প্রকৃত চিকিৎসা। এ ক্ষেত্রে হাতের ও কব্জির কিছু অংশের চামড়া কেটে ট্রান্সভার্স কার্পাল লিগামেন্ট উন্মমুক্ত করা হয়। পরে লিগামেন্ট কেটে ফেলা হয়।

এতে মিডিয়ান নার্ভের উপর চাপ কমে, পরে চামড়া সেলাই করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে অপারেশনের পর পরই ব্যথা, অবশ ভাব দুর হয়ে যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থা হতে কিছু সময় লাগে। অপারেশনের পরে কয়েক সপ্তাহ হাতকে বিশ্রাম দিতে হবে।

যা মনে রাখা দরকার:

১. হাতের কব্জিতে মিডিয়ান নার্ভের উপর বিভিন্ন কারণে সাময়িক চাপের ফলে হাতে ব্যথা ও অবশভাব   

    দেখা দিয়-যাকে কার্পাল টানেল সিনড্রোম বলা হয়।

২. কার্পাল টানেল দিয়ে গমণকারী বিভিন্ন মাসেলের টেন্ডনে নানা কারণে প্রদাহ হবার ফলে ফুলে গিয়ে মিডিয়ান নার্ভে চাপের সৃষ্টি করে। যেমন- আর্থাইটিস, হাতের অতিরিক্ত নড়াচড়া, গর্ভাবস্থা, কবযি মচকে যাওয়া ইত্যাদি।

৩. বিশ্রাম, স্প্লিন্টিং, করটিসোল ইঞ্জেকশন অথবা সার্জারীর মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়।

26-02-2013 রোগ ব্যাধি

পেটের মহাধমনী ফুলে যাওয়া

 

এওর্টা - যাকে বলা হয় মহাধমনী। মানবদেহের সর্ববৃহৎ রক্তনালী, যা হার্ট থেকে উৎপত্তি হয়ে হার্টের পেছন দিয়ে ক্রস করে ডায়াফ্রামের নির্দিষ্ট ছিদ্র দিয়ে পেটের অংশে আসে - তাকে বলে এওর্টা।  à¦ªà§‡à¦Ÿà§‡ নাভীর লেভেলে এসে তা ইলিয়াক আর্টারি নামে দুইভাগে ভাগ হয়েযায়।  অবস্থানের কারণে এটির কয়েকটি নাম হয়। শুরুতে বলা হয় উর্ধ্বগামী মহাধমনী, (Ascending Aorta) তারপর ধনুকের মতো দেখায় বলে Arch of the Aorta , বক্ষে অবস্থানের জন্য থোরাসিক এওর্টা ও পেটে অবস্থানের কারণে এবডমিনাল এওর্টা ।

 

আমাদের আলোচ্য বিষয় এবডমিনাল এওর্টা। এই অংশটি প্রধানত কিডনী, অস্ত্র ও শরীরের নিচের অংশে শোধিত রক্ত সরবরাহ করে। ইলিয়াক আর্টারি তলপেটে ও দুই পাশে রক্ত সরবরাহ করে। যথন পেটের মহাধমনীর কোনো অংশ স্বাভাবিকের চেয়ে আকারে ফুলে যায় তখন তাকে বলে এবডমিনাল এওর্টিক এনিউরিজম বা  Abdominal Aortic Aneurysm (AAA).

 

মহাধমনীর দেয়ালে যখন কোনো দূর্বলতা পরিলক্ষিত হয়, তখন তার নিজস্ব উচ্চ রক্তচাপ ধমনীকে বেলুনের মতো ফুলিয়ে দেয়। একজন বয়স্ক মানুষের মহাধমনীর ব্যস ১ ইঞ্চির মতো (২ সে.মি)। কিন্তু Aneurysn  à¦¹à¦²à§‡ এই আকার নিরাপদ মাত্রা ছড়িয়ে যেতে পারে। তখন ঝুঁকি হলো মহাধমনী ফেটে যাওয়া। হঠাৎ ফেটে গেলে পেটে-পিঠে তীব্র ব্যথা, অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ, অজ্ঞান হওয়া ও রোগীর মৃত্যু হতে পরে। কখনো কখনো ফুলা-ফাঁপা অংশে জমাট বাঁধা রক্ত (Thrombus) ছুটে গিয়ে পায়ে রক্ত চলাচল বন্ধ করে দেয়, যা একটি অতি জরুরী পরিস্থিতি।

বাংলাদেশে বছরে এই রোগে কত রোগী আক্রান্ত হয়, তবে পরিসংখ্যান আমার জানা নেই। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বছরে প্রায় দুই লাখ লোকের

26-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

গোড়ালীতে ব্যথা / পা মচকে যাওয়া

            খেলাধূলা বা যারা দৌড়াদৌড়ী করেন তাদের সবচেয়ে কমন বা বেশি যে সমস্যা হয় তা হল গোড়ালীর ব্যথা বা পা মচকানো। সাধারণত যে সব খেলাধূলায় জোরে দৌড়ানো লাগে বা লাফালাফি করতে হয় বা হঠাৎ  ঘুরে যেতে হয় সেব সব ক্ষেত্রে পা মচকানোর সম্ভাবনা বেশি। হঠাৎ ঘুরে গেলে বা বেশি চাপ পড়লে গোড়ালীর অস্থিসন্ধির লিগামেন্টগুলিতে টান পড়ে ও ছিড়ে যায়, ফলে পা ফুলে যায়, ব্যথা হয়। বরফ দিয়ে রাখা (ICE PACK) বিশ্রাম ও সঠিক নিয়মে ব্যায়াম ভাল ফল পাওয়া যায়।

 

গোড়ালীর গঠন:

গোড়ালী মূলত ৩টি হাড়ের সন্ধি এবং তিনটি হাড়ের মাথা বা দেহ এমনভাবে তৈরী যে একটি  আরেকটির সাথে সুন্দরভাবে ঢুকে যায়, লেগে  থাকে এবং সবদিকে ঘুরানো যায়। শক্ত ক্যাপসুল দ্বারা পুরো সন্ধিটি আবৃত। এ ছাড়াও অনেকগুলি লিগামেন্ট এই সন্ধিটিকে দৃঢ়তা প্রদান করে, নাড়তে সাহায্য করে।

 

কেন হয়?

কোন কারণে পা যদি ঘুরে যায়, হঠাৎ বেকে যায় তাহলে লিগামেন্টের উপর অনেক প্রেসার পড়ে, ফলে কিছু লিগামেন্টে ছিড়ে যায়, ভেতরের রক্তপাত হয়।

লক্ষণসমূহ :

পা, গোড়ালী ফুলে যাওয়া, পায়ে প্রচন্ড ব্যথা, বিশেষত হাঁটলে, গোড়ালী ঘুরালে এবং যখন হাটু পায়ের চেয়ে সমনে চলে যায়।

 

প্রাথমিক চিকিৎসা : সাথে সাথে যে কাজগুলো করা দরকার-

Ø      হাটা, চলা, গোড়ালী বন্ধ রাখা।

Ø      আঘাত প্রাপ্ত পায়ে বরফ/আইসপ্যাক দেয়া -১৫মিনিট ধরে ২ ঘন্টা পর পর।

Ø      ক্রেপ ব্যান্ডেজ দিয়ে পায়ের তালু থেকে উপরে কাফ মাসল পর্যন্ত ভাল করে বেধে রাখা।

Ø      পা যথাসম্ভব উচু করে রাখা। বসা বা শোয়ার সময় বালিশ দিয়ে  উচু করে রাখা।

Ø      প্রথম ২ দিন কোন ব্যায়াম, গরম সেক, এলকোহল, ম্যাসাজ করা নিষেধ এতে সমস্যা বাড়তে পারে।

 

বারে বারে পা  মচকানো:

অনেকে বার বার পা মচকানোতে ভূগেন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ফ্যাক্টর কাজ করতে পারে। যেমন-

Ø      পুর্বের পা মচকানোর ফলে লিগামেন্ট খুব বেশি নরম অথবা অতিরিক্ত শক্ত হয়ে যেতে পারে।

Ø      পূর্বে পা মচকানো সঠিকভাবে চিকিৎসা না হওয়াতে গোড়লীর চারপাশের মাংসপেশী বিশেষ করে পেরোনিয়াল মাংসপেশী দূর্বল হয়ে পড়ে। এতে পা সঠিক স্থানে ফেলার ক্ষমতা হ্রাস পায়।

Ø       à¦ªà§à¦°à¦ªà§à¦°à¦¿à¦“সেপিভ ডেফিসিট- এতে বার বার পা বেকায়দায় পড়ে, বা বাকাভাবে পড়লেও মাংসপেশী ও লিগামেন্ট নরম থাকায় তাকে ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় আবার পা মচকায়।

 

যখন হাসপাতালে যাবেন:

১।         যখন দেখবেন আপনি পায়ে ভর দিতেই পারছেন না- তখন অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে যাবেন। এক্স-রে করে দেখতে হবে। হাড় ভেঙ্গে গেছে কিনা?

২।         অনেকদিন পরেও যদি ব্যথা ভাল না হয়।

৩।         যদি বার বার পা মচকায়।

 

ফিজিওফেরাপিস্টের সাহায্য:

Ø      ফিজিওথেরাপিস্টের নিকট থেকে ব্যায়াম  শিখে গোড়ালির নড়াচড়া সাবলিল করা।

Ø      ব্যায়ামের মাধ্যমে পেরোনিয়াস মাসলসহ আশেপাশের মাংস পেশীর শক্তি ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

Ø      প্রয়োজনে ব্যান্ডেজ বা এংকেল ব্রেস ব্যবহার করা।

Ø      যদি এ ধরনের ফিজিকাল থেরাপীতে কাজ না হয় তবে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।

 

প্রতিরোধের উপায়: কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন-

Ø      ব্যায়াম, দৌড় বা খেলার পূর্বে  ওয়ার্ম আপ করে নেয়া।

Ø      খেলার উপযোগী নরম কিন্তু মজবুত জুতা ব্যবহার করা।

Ø      ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী  এংকেল ব্রেস ব্যবহার করা।

Ø      পা মচকানোর পর কয়েক সপ্তাহ সাবধানতার সাথে চলাচল করা।

 

যা মনে রাখতে হবে:

  1. খেলাধূলা ও দৌড়াদৌড়ীতে পা মচকানো খুবই স্বাভাবিক ও কমন ঘটনা।
  2. গোড়ালীতে অতিরিক্ত চাপের ফলে জোড়ার লিগামেন্ট দিয়ে ভেতরে রক্তপাত হয় ও ব্যথা হয়।
  3. সঠিক নিয়ম মেনে চলা,ব্যায়াম ইত্যাদির মাধ্যমে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পা মচকানো সেরে যায়। মাঝে মাঝে এক্স-রে করে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।

 

 

23-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

হাইপার থাইরয়েডিজম

 

থাইরয়েড গ্রন্থি কোন কারণে অতি মাত্রায় সক্রিয় হয়ে  গেলে ঐ রোগকে হাইপার-থাইরয়েডিজম বলে। গড়ে প্রায় প্রতি ২০ জনে ১ জনের ক্ষেত্রে জীবনে কোন না কোন অবস্থায় থাইরয়েড গ্রন্থির এরূপ অতি সক্রিয় অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। থাইরয়েড গ্রন্থির প্রদাহ, গ্রন্থিতে টিউমারসহ নানাবিধ কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। তবে ইমিউন সিস্টেমের সমস্যা ঘটিত গ্রেভস ডিজিজ হল অন্যতম প্রধান কারণ।

থাইরয়েড গ্রন্থি হল একটি অন্ত:ক্ষরা গ্রন্থি। অর্থাৎ (যে গ্রন্থি থেকে হরমোন নি:সৃত হয়) এই গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন ও ট্রাইআয়োডো থাইরনিন নামক হরমোন নি:সৃত হয়, যা আমাদের শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের মানুষের শরীরে গলার সম্মুখভাগে কন্ঠনালীর ল্যারিংস (উচু হাড়) বরাবর অবস্থান করে। এর দুটি লোব বা অংশ শ্বাসনালীর দুই পাশে অবস্থান করে এবং সম্মুখভাগে ইস্থমাস নামক অংশ দ্বারা পরস্পরযুক্ত অবস্থান থাকে।

  গবেষনায় দেখা যায়, পুরুষের তুলনায় মহিলারা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। গড়ে শতকরা ২ জন মহিলা কোন না কোন  মাত্রার হাইপার থাইরয়েডিজমে আক্রান্ত থাকতে দেখা যায়। তবে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ থেকে পুরোপুরি সুস্থ থাকা সম্ভব।

 

লক্ষনসমূহ :

হাইপার থাইরেডিজমের সাধারণ লক্ষণগুলি হল-

-   হৃদ স্পন্দনের গতি বৃদ্ধি পাওয়া, বুক ধড়ফড় করা।

-   হাত, পা কাপা, দূবর্লতা

-   পাতলা পায়খানা

-   অতিরিক্ত ঘাম

-   অকারণে হঠাৎ ওজন হ্রাস পাওয়া

-   গরম লাগা

-   উদ্বিগ্নতা, অস্থিরতা, দু:শ্চিন্তাগ্রস্ত থাকা

-   মহিলাদের মাসিক অনিয়মিত হওয়া অল্প রক্তপাত হওয়া।

 

গ্রেভস ডিজিজ :

হাইপার থাইরয়েডিজমের অন্যতম কারণ হল গ্রেভস ডিজিজ। এটি মূলত ইমিউন সিস্টেমের সমস্যা ঘটিত রোগ। এই রোগে রোগীর শরীরে কোন কারণে এমন ধরনের এন্টিবডি তৈরী হয় যা কিনা থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোনের ন্যায় কাজ করে। থাইরয়েড গ্রান্থকে  বেশি বেশি হরমোন তৈরীতে বাধ্য করে। মধ্য বয়সে এই রোগ যদি বেশি দেখা দেয়। তবে বৃদ্ধ বা কৈশরেও হতে পারে। আর মহিলারা পুরুষের  তূলনায় ৮ গুণ বেশি হারে  আক্রান্ত হয়ে থাকে।

 

কারণ :

এই রোগের প্রকৃত কারণ- ইমিউন সিস্টেমের সমস্যা। কেন হয় তার কারণ জানা যায়নি। তবে শারীরিক ও মানসিক স্ট্রেস বা চাপ ইমিউন সিস্টেম এর সমস্যা করে, তাই অনেক ক্ষেত্রে গ্রেভস ডিজিজ হতে দেখা যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিকভাবে এই রোগ বেশি হতে দেখা যায়। এ ছাড়াও অতি মাত্রা আয়োডিন গ্রহণ,  এক্স-রে কন্টাক্ট মিডিয়া এবং কিছু কিছু জীবাণু নাসকের ব্যবহারেও কারও কারও ক্ষেত্রে গ্রেভস ডিজিজ হতে পারে।

 

লক্ষণ :

হাইপার থাইরয়েডিজমের লক্ষণ ছাড়াও গ্রেভস ডিজিজে আরও বিশেষ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যেমন-

-         চোখের প্রদাহ, চোখ অক্ষিকোটর থেকে বাইরের দিকে বেরিয়ে আসে (শতকরা ৫০ভাগ ক্ষেত্রে)।

-         পা এর সম্মুখ ভাগের (সিনের উপরের) চামড়া লালচে ও খসখসে হওয়া।

 

রোগ নির্ণয় :

রক্তে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা পরিমাপ করে সহজেই রোগ নির্ণয় করা যায়। হাইপার থাইরয়েড রোগীর থাইরক্সিন হরমোন (T4) এর মাত্রা বেশি থাকে এবং TSH এর মাত্রা কম থাকে। তবে গ্রেভস ডিজিজ আছে কিনা, নির্ণয় করতে হলে রক্তে থাইরয়েড স্টিমুলেটিং এন্টিবডি থাকতে হবে। আর যদি থাইরয়েডে নডিউল থাকে সে ক্ষেত্রে রেডিও একটিভ স্ক্যান করে নডিউলের অতি মাত্রায় সক্রিয়তা নির্ণয় করতে হবে।

 

চিকিৎসা :

এর নিরাময়কারী চিকিৎসা নেই, তবে নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাবস্থা আছে। যেমন-

ঔষধ :

থাইরয়েড হরমোন তৈরীতে আয়োডিনকে ব্যবহার করতে হয়। এন্টি থাইরয়েড গ্রন্থিকে আয়োডিন ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে অতিমাত্রায় থাইরয়েড হরমোন তৈরী হতে পারে না। ১ বছর বা তার কিছু অধিককাল ঔষধ ব্যবহারে শতকরা ২৫ ভাগ রোগী দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতে দেখা গেছে। তবে, এই ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে হাড়-জোড়ায় ব্যাথা ও চামড়ায় লালচে দাগ হতে পারে। এই ঔষধে যেহেতু ইমিউন সিস্টেমকে নিবৃত করে রাখে, তাই জ্বর বা ফ্লু এর লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হতে হবে।

রেডিও আয়োডিন থেরাপী : 

রোগী রেডিও একটিভ আয়োডিন তরল পানীয় আকারে গ্রহণ করে। এই  আয়োডিন শরীরে শোষণ হয় ও থাইরয়েড গ্রন্থিতে গিয়ে উপস্থিত হয়। অতি সক্রিয় গ্রন্থির কোষে আয়োডিন শোষিত হয় ফলে কোষটি মারা যায়। স্বাভাবিক  সক্রিয় কোষ এই আয়োডিন শোষণ করে না। পরবর্তীতে ঐ আয়াডিন প্রসাবের সাথে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। সাধারণত কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। ১ বার ঔষধ খেলেই হয়, তবে কখনও কখনও ২য় বা ৩য় বার ঔষধ খেতে হতে পারে। তবে চিকিৎসা চলাকালীন কিছু দিন রোগী অন্য বয়স্ক লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবে না। আর শিশু ও মহিলাদের (গর্ভবতী) বহুদিন ঐ চিকিৎসা প্রাপ্ত রোগীর কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে।

সার্জারী :

রোগীকে অজ্ঞান করে থাইরয়েড গ্রন্থির কিছু অংশ বা সম্পূর্ণ অংশ অপসারণ করা হয়।

অপারেশনের সাধারণ রিস্ক ছাড়াও এই অপারেশনে প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থি ও ভোকাল কর্ডের নার্ভে সমস্যা হবার ঝুঁকি থাকে।

হাইপার থাইরয়েড থেকে হাইপো থাইরয়েড : হাইপার থাইরয়েডের রোগীদের নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করে থাইরয়েড পরীক্ষা করে থাইরয়েড হরমোন ও TSH এর মাত্রা চেক করা প্রয়োজন। কেননা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হাইপার থাইরয়েডের চিকিৎসা প্রাপ্ত রোগীরা পরবর্তীতে হাইপোথাইরয়েডে আক্রান্ত হয়। কেননা চিকিৎসার ফলে থাইরয়েড গ্রন্থি অনেকাংশে নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়ে এবং এ সময় রোগীর হাইপো থাইরয়েডের লক্ষণ প্রকাশিত হয়। এ অবস্থায় ক্রত্রিম থাইরক্সিন নির্দিষ্ট মাত্রায় সেবন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, হাইপোথাইয়েড কেবল নির্দিষ্ট ঔষধ সেবনে ভাল থাকা যায়, কিন্তু হাইপার থাইরয়েড হলে সঠিক চিকিৎসা না হলে রোগী মারা যায়।

 

যা মনে রাখতে হবে :

1.      থাইরয়েড হরমোন শরীরের স্বাভাবিক বিপাকীয় প্রক্রিয়া, বৃদ্ধি, বুদ্ধি ও শক্তি খরচ এর প্রক্রীয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।

2.     হাইপার থাইরয়েড মানে হল থাইরয়েড গ্রন্থির  অতিমাত্রায় সক্রীয় অবস্থা।

3.     গ্রেভস ডিজিজ নামক অটো ইমিউন রোগ হল এর অন্যতম কারণ।

4.     হাইপোথাইরয়েড চিকিৎসা পাওয়া রোগীর অধিকাংশ পরবর্তিতে হাইপোথাইরয়েড আক্রান্ত হয়।

 

23-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

হাসিমোটোস ডিজিজ

 

হাসিমোটোস ডিজিজ, হাইপোথাইরয়েডের অন্যতম প্রধান কারণ। এটি একটি অটোইমিউন ডিজিজ। অর্থাৎ শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী কোষ নিজস্ব শরীরের থাইরয়েড গ্রন্থিকে আক্রমণ করে, প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং থাইরয়েড গ্রন্থিকে ক্রমশ নি:ষ্ক্রীয় করে দেয়। ফলে থাইরয়েড গ্রন্থি সঠিক ভাবে, সঠিক মাত্রায় হরমোন তৈরীতে ব্যর্থ হয় ও হাইপোথাইরয়েডের লক্ষণ প্রকাশিত হয়। এ অন্য নাম হল

হাসিমোটো থাইরয়াডাইটিস,

অটোইমিউন থাইরয়াডাইটিস।

 

থাইরয়েড গ্রন্থির অবস্থান ও থাইরয়েড হরমোন :

মানুষের শরীরে গলার সম্মুখভাগে কন্ঠনালীর ল্যারিংস (উচু হাড়) বরাবর অবস্থান করে। এর দুটি লোব বা অংশ শ্বাসনালীর দুই পাশে অবস্থান করে এবং সম্মুখভাগে ইস্থমাস নামক অংশ দ্বারা পরস্পরযুক্ত অবস্থান থাকে।

থাইরয়েড গ্রন্থি হল একটি অন্ত:ক্ষরা গ্রন্থি। অর্থাৎ (যে গ্রন্থি থেকে হরমোন নি:সৃত হয়) এই গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন (T4 ) ও ট্রাইআয়োডো থাইরনিন (T3 ) নামক হরমোন নি:সৃত হয় যা আমাদের শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।

 

লক্ষণ :

এই রোগটি দীর্ঘদিন যাবৎ (কয়েক বছর ধরে) ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়। তাই এর লক্ষণসমূহ হঠাৎ টের পাওয়া যায় না। তাছাড়া রোগের মাত্রার উপরও লক্ষণ নির্ভর করে। যে সব লক্ষণ সাধারণত দেখা যায় :

-     à¦…বসাদ

-     à¦¸à¦¬ সময় ঠান্ডা অনুভূতি

-     à¦•à§‹à¦·à§à¦  কাঠিন্য

-     à¦®à§à¦– চোখ ফোলা ফোলা দেখানো

-     à¦¶à§à¦•à¦¨à§‹ খসখসে চামড়া

-     à¦¶à§à¦•à¦¨à§‹ চুল, সহজেই ভেঙ্গে যায়

-     à¦­à¦¾à¦™à§à¦—া, ফ্যাসফ্যাসে গলার স্বর

-     à¦¶à¦°à§€à¦°à§‡ পানি জমা

-     à¦¹à¦ à¦¾à§Ž শরীরের ওজন বৃদ্ধ পাওয়া

       (যার সাথে সাথে খাবার ওজীবন  à¦¯à¦¾à¦¤à§à¦°à¦¾à¦° সম্পর্ক নেই)

-     à¦°à¦•à§à¦¤à§‡ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া

-     à¦¹à¦¾à¦¤, পা, হাটুর অস্থি সন্ধি শক্ত, অনমনীয়   à¦¹à¦“য়া, ব্যাথা হওয়া

-     à¦¬à¦¿à¦·à¦¨à§à¦¨à¦¤à¦¾, ভুলে যাওয়া

-     à¦—লগন্ড (থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যাওয়া- ফলে গলার সামনে ফোলা দৃশ্যমান হওয়া)

-     à¦®à¦¹à¦¿à¦²à¦¾à¦¦à§‡à¦° মাসিক রক্তস্রাব পরিমাণ বেড়ে  যাওয়া (মেনোরেজিয়া)।

তবে এই রোগ খুব ধীর গতিতে অগ্রসর হয় বলে অনেকের ক্ষেত্রে তেমন কোন লক্ষণই প্রকাশিত হয় না। অন্য কোন রোগের পরীক্ষা করতে গিয়ে এই রোগ ধরা পড়ে।

সম্ভাব্য কারণ :

শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী ব্যবস্থা মূলত শরীরে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করলে তাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়, তাদেরকে ধ্বংস করে, কখনও শরীরের নিজস্ব কোষকে আক্রমণ করে না। কিন্তু হাসিমোটো রোগে কেন থাইরয়েড গ্রন্থির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তার সঠিক কারণ নির্ণয় হয়নি। তবে বিজ্ঞানীরা এর পেছনে জীনগত সমস্যা ও সাথে সাথে পরিবেশগত কিছু ফ্যাক্টর এর সমন্ব্যকে দায়ী মনে করছেন। এ সম্পর্কে যে সব মতবাদ  প্রচলিত তা হল :

-         কোন কোন বিশেষ জীবাণু (ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া) শরীরে প্রবেশ করে ইমিউন সিস্টেমকে উদ্দিপ্ত করে এবং থাইরয়েডের বিপক্ষে সক্রিয় করে।

-         জীনগত সমস্যার কারণে ইমিউন সিস্টেম নিজ শরীরের থাইরয়েডের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এ কারণেই পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বেশি হতে দেখা যায়।

-         বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে রোগের মাত্রা ও সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

 

সাধারণ জটিলতা :

হাসিমোটো রোগ চিকিৎসা না হলে যে সব জটিলতা দেখা যায় তা হল-

ক. গয়টার (গলগন্ড) : থাইরয়েড গ্রন্থি বড় হয়ে গলগন্ড দেখা দেয়। বেশ বড় হলে দেখতে মনে হয় যেন ১টি টনসিল গলার চামড়ার নিচে আটকে আছে। খুব বেশি বড় হলে শ্বাসকষ্ট ও ঢোক গিলতে সমস্যা হয়।

খ. মানসিক সমস্যা : হাইপোথাইরয়েডের কারণে বিষন্নতা দেখা দেয় ও যৌন চাহিদা কমে যায়।

গ. হৃদ রোগ : হাসিমোটো ডিজিজ রক্তে খারাপ কোলেস্টরল (L.D.L.)  à¦¬à§‡à§œà§‡ যায়, ফলে হার্ট এর্টাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ছাড়াও হৃদপিন্ড আকারে বড় হওয়া, হার্ট ফেইলর দেখা  দিতে পারে।

ঘ. জন্মগত ত্রুটি : গর্ভবতী মহিলা এই রোগে আক্রান্ত থাকলে ও চিকিৎসা না হলে গর্ভস্থ শিশুর বিভিন্ন জন্মগত ত্রুটি যেমন- ঠোট ও  তালু কাটা, হার্ট, কিডনী ও ব্রেইনের ত্রুটি থাকতে পারে।

ঙ. মিক্সিডিমা : খুব কম হয়, তবে খুব মারাত্মক। রোগী মারা যেতে পারে।

 

রোগ নির্ণয় :

রোগের ও পারিবারিক ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা। রক্তে T3, T4, ও TSH এর মাত্রা নির্ণয় এবং রক্তে এন্টিবডির মাত্রা নির্ণয় করে রোগ নির্ণয় করা যায়।

 

চিকিৎসা :

কৃত্রিমভাবে তৈরীকৃত থাইরস্কিন হরমোন নির্দিষ্ট মাত্রায়, প্রতিদিন গ্রহণ করতে হবে। এতে রোগ বাল হয় না, কিন্তু স্বাভাবিক জীবন যাপন করা যায়। আর এই ঔষধ আজীবন খেতে হবে। নিয়মিতভাবে রক্ত পরীক্ষা করে রক্তে হরমোনের মাত্রা নির্দিষ্ট কাঙ্খিত মাত্রায় রাখতে হয়। আর গলগন্ড যদি এত বড় হয় যে শ্বাসকষ্ট বা খাদ্যগ্রহণে সমস্যা করে সে ক্ষেত্রে অপারেশন করতে হবে।

যা মনে রাখতে হবে :

1.      হাইপোথাইরয়েডির অন্যতম কারণ হলো হাসিমোটো ডিজিজ।

2.     এটি একটি অটোইমিউন রোগ, মহিলারা বেশি আক্রান্ত হয়।

3.     নিয়মিত নির্দিষ্ট মাত্রায়  হরমোন গ্রহণ হরে  সুস্থ্যভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব।

4.     সঠিক চিকিৎসা না করালে গলগন্ড, হৃদরোগ, মানসিক সমস্যা সহ মারাত্মক অসুস্থ্যতা এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

 

23-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

গাউট

গাউট হলো বিশেষ ধরনের আর্থ্রাইটিস, অনেকে তাই এই রোগকে গাউটি আর্থ্রাইটিস বলেন। সাধারণত পায়ের বুড়ো আগুলের সন্ধিতে, গোড়ালী, কনুই  ইত্যাদিতে সাধারণত এই ধরনের বাত রোগ হয়। গাউটে হঠাৎ  তীব্র ব্যাথ্যা হয়,আক্রান্ত স্থান ফুলে যায়,লাল বর্ণ ধারন করে এবং বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এর ব্যাথ রিকারেন্ট অর্থাৎ প্রায়ই ফিরে আসে। মূলত ইউরিক এসিড নামক শরীরের এক বর্জ্য পদার্থের আধিক্য হলে এবং তা অস্থি সন্ধিতে জমা হলে সেখানে প্রদাহ হয় ও আর্থ্রাইটিস দেখা দেয়। উন্নত বিশ্বে মেদ ও স্থুলতা বৃদ্ধির সাথে সাথে গাউটের উপস্থিতি বেশি দেখা যায় এবং মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশী

 

 

রোগের কারণ:

রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে ইউরিক এসিড ক্রিস্টাল আকারে বিভিন্ন অস্থি সন্ধিতে জমা হয়। মূলত কিডনী দিয়ে ইউরিক এসিড সম্পূর্ণভাবে প্রসাবের সাথে বের হতে না পারলে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। আমরা শরীরে কোন কারণে মাত্রাতিরিক্তি পরিমাণে ইউরিক এসিড উৎপন্ন হলেও এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

 

 

অনেকের রক্তে জন্মগত বা বংশগতভাবেই অনান্যদের তুলনায় অধিক পরিমাণে ইউরিক এসিড থাকে, এ অবস্থাকে হাইপার ইউরেসেমিয়া বলে। আবার কখনও কথনও ডাইউরেটিকস জাতীয় প্রস্রাব তৈরী কারী ট্যাবলেট ব্যবহারের ফলে রক্তে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।

 

রিস্ক ফ্যাক্টর: 

যাদের ক্ষেত্রে গাউট হবার ঝুঁকি বেশি-

- রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেশি থাকলে

- অতিরিক্ত পরিমাণে এলকোহল (বিশেষত বিয়ার) সেবন

- অতিরিক্ত পরিমাণে পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার (যেমন: মাংস, মিষ্টি, পাউরুটি, সিম, মটরশুটি, শেলফিস, ফ্রুকটোজ, সফট ড্রিংকস) খেলে।

- যারা স্থুলকায়।

- যারা প্রসাবের জন্য ডাইউরেটিক ঔষধ খান

- কোন অস্থিসন্ধিতে আঘাত প্রাপ্ত হলে সে স্থানে

 

গাউটের ব্যাথায় করণীয়:

সাধারণত কোন চিকিৎসা না করালেও ১-২ সপ্তাহে ব্যাথা  কমে যায়। আগে থেকে গাউট হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত না হলে ডাকতারের নিকট যেতে হবে। ডাক্তার পরীক্ষা করে নিশ্চিত হবেন। গাউট রোগ নির্ণয়ের জন্য রক্তে ইউরেক এসিডের পরিমাণ নির্ণয় এবং আক্রান্ত সন্ধি থেকে রস নিয়ে মাইক্রোসকোপে পরীক্ষা করলে প্রচুর পরিমাণে ইউরিক এসিড ক্রিস্টাল দেখা যাবে।

 

চিকিৎসা:

১. ব্যাথা নাশক হিসেবে NSAID জাতীয় ঔষধ সেবন: আইবুপ্রোফেন,ন্যাপ্রোক্সেন।

২. ককস-২ ইহিবিটর যেমন: সেলেকক্রিব

৩. করটিকো স্টেরয়েড

প্রতেরোধের জন্য বা নিয়ন্ত্রণেরর জন্য করণীয়:

গাউট এটাক হলে ব্যাথা কমানোর মূল লক্ষ্য,আর অন্য সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যে রক্তে ইউরিক এসিড এর মাত্রা কম থাকে কেননা বেশি থাকলে

- কিডনীতে ইউরিক এসিড জমা হয়ে রোগ সৃস্টি করতে পারে।

- হার্ট ডিজিজ হবার সম্ভাবনা থাকে।

তাই বার বার গড়াউট আক্রান্ত হন তাদের জন্য

- ইউরেক এসিনড তৈরী কমানোর ঔষধ (এলোপিউরিনল)

- ইউরিক এসিড বের করে দেবার ঔষধ (প্রোবেনেসিড) খেতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।

- ওজন কমিয়ে আদর্শ ওজনে নিয়ন্ত্রন রাখা

- এলকোহল সেবন বন্ধ করা।

- সফট ড্রিংকস কমিয়ে বিশুদ্ধ পানি বেশি পান করা

- পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার কম খাওয়া

- নিয়মিত ব্যায়াম

- উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করা।

- নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শে রক্তের পরীক্ষা করা ও ঔষধ সেবন।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

- গাউট হল বিশেষ ধরনের আর্থ্রাইটিস বা বাত রোগ যা মূলত রক্তে মাত্রাতিরিক্তি ইউরিক থাকলে হয়।

- অতিরিক্ত ইউরিক এসিড ক্রিস্টাল রূপে অস্থিসন্ধিতে জমা হয় ও প্রদাহের সৃষ্টি করে।

- আদর্শ জীবন-যাপন ও নিয়ম মেনে চললে গাউট সহ কিডনী ও হার্ট ডিজিজ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।

 

23-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

গয়টার/গলগন্ড

 

থাইরয়েড গ্রন্থি আকারে বড় হলে তাকে আমরা গলগন্ড বলি। গলগন্ড হলো গলার সামনের দিকে থাকা থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যায়। যা ছোট আকারে হতে পারে,আবার বিশাল বড় আকারেও হতে পারে। এ ছাড়া রোগীর ঢোক গিলতে সমস্যা হতে পারে, এমনকি শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে।

থাইরয়েড গ্রন্থির ২টি লোব-গলার উচু হাড়ের ঠিক নিচে নিচে,শ্বাস নালীর ২ পার্শ্বে বাকা ভাবে অবস্থান করে। আর মাঝখানে শ্বানলীর সম্মুখ দিক দিয়ে ইস্থমাস নামক অংশ  দ্বারা যুক্ত।

থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন নামক হরমোন নি:সৃত হয়, যা শরীরের অনেক বিপাকিয় কাজে সরাসরি ভূমিকা রাখে। এ ছাড়াও শরীরের বৃদ্ধি,বুদ্ধিমত্তা ও শক্তি খরচ করতেও এই হরমোন ভুমিকা রাখে। আর থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে কি পরিমাণ হরমোন নিসৃত হবে, তা সম্পূর্ণ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে পিটুইটারী গ্রন্থি- যা মাথায়  অবস্থিত। পিটুইটারী গ্রন্থি থেকে থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন (TSH) নিঃসৃত, হয় যা থাইরয়েডের হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে। আবার শুধু TSH থা‌কলেই হবে না,থাইরয়েড হরমোন তৈরী হতে শরীরের পর্যাপ্ত আয়োডিন লাগে, যা খাবারের মাধ্যমে আমরা পাই। কোন কারণে খাবারে আয়োডিনের অভাব হলে থাইরয়েড হরমোন তৈরী হতে পারেনা। অথচ পিটুইটারী থেকে TSH হরমোন নিঃসৃত হতে থাকে এবং তার সাথে মিল রেখে আকারে বড় হতে থাকে থাইরয়েড গ্রন্থি এবং ফলশ্রুতিতে গয়টার দেখা যায়। আয়োডিনের অভাব ছাড়া‌ও নডিউল,ক্যান্সার,হাইপার থাইরয়েড ও হাইপো থায়রয়েডিজমের কারণেও গয়টার হয়।

 

লক্ষনসমূহ:

গলগন্ডের লক্ষণগুলো হল-

- গলায় ছোট,মাঝারি বা বেশ বড় আকৃতির ফোলা বা মাংসের দলার মত।

- খুব বড় আকারের হলে গিলতে সমস্যা হওয়া।

- খুব বড় আকৃতির হলে শ্বাসকষ্ট হওয়া।

 

 

প্রকারভেদঃ

গলগন্ডকে মূলত ২ টি গ্রুপে ভাগ করা যায়।

ক) এনডেমিক গয়টারঃ

এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এলাকার অনেকের মধ্যেই আয়োডিনের অভাবের কারণে গলগন্ড হতে দেখা যায়। মূলত জমিতে বা মাটিতে আয়োডিনের অভাব এবং সামুদ্রিক খাবার এর অভাবের কারণে সবাই আক্রান্ত হয়। তবে বর্তমানে লবনেও আয়োডিন যুক্ত খাবার এর কারণে উন্নত দেশে এর পরিমান খুব কমে গেছে।

খ) স্পোরাডিক গয়টারঃ

এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিশেষ আক্রান্ত হয়। এর রিস্ক ফ্যাক্টর সমূহ হলঃ

খাবার,

পারিবারিক গয়টারের ইতিহাস,

বয়স ৪০ বছরের অধিক,এবং

মহিলারা তুলনামূলক ভাবে বেশী।

গয়টারের কারণ সমূহঃ

১. খাবারের আয়োডিনের অভাব।

২. আয়োডিনকে নিষ্ক্রিয় করে দেয় এমন খাবার অধিক পরিমানে গ্রহন করলে যেমন : বাধাকপি,ফুলকপি,ব্রকলি,সয়া ইত্যাদি।

৩. লিথিয়াম,ফিনাইল বিওটাজোন নামক ঔষধ।

৪. থাইরয়েড ক্যান্সার।

৫. থাইরয়েড গ্রন্থিতে নডিউল সৃষ্টি হওয়া।

৬. হাইপার থাইরয়েডিজম - অতি সক্রীয় থাইরয়েড।

৭. হাইপো থাইরয়েডিজম - থাইরয়েডের নিষ্ক্রিয়তা

 

হাইপার থাইরয়েডিজমঃ

থাইরয়েড গ্রন্থি অতি মাত্রায় সক্রিয় হলে তাকে হাইপার থাইরয়েডিজম বলে। এর অন্যতম কারণ হল গ্রেভস ডিজিজ, যেখানে শরীরে TSH এর মত এন্টিবডি তৈরী হয় যা থাইরয়েড গ্রন্থিকে নিয়মিত উত্তেজিত করে বেশী বেশী করে থাইরক্সিন নি:সরনে বাধ্য করে।এবং গ্রন্থি ফুলে যায়। হাইপার থাইরয়েডিজমে হৃদপিন্ডের গতি খুব দ্রুত হয়,অস্থিরতা হয়,রোগীর ওজন কমতে থাকে,অধিক মাত্রায় গরম লাগে এবং ডায়রিয়া দেখা দেয়।

 

হাইপোথাইরয়েডিজমঃ

এই রোগে থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারীতা সক্রিয়তা দারুনভাবে হ্রাস পায়। কিন্তু পিটুইটারীর TSH হরমনের প্রভাবে গ্রন্থি বড় হতে থাকে। আয়োডিনের অভাব ছাড়াও এর অন্যতম কারণ হল হাসিমোটোস ডিজিজ যা একধরনের অটোইমিউন রোগ। এর লক্ষণ সমূহ হল : অবসাদ,ঠান্ডা বোধ করা, কোষ্ঠকাঠিন্য,শরীরে শক্তি কম পাওয়া ইত্যাদি।

 

থাইরয়েড নডিউলঃ

থাইরয়েড গ্রন্থির ভেতরে নডিউল তৈরী হতে পারে।মূলত দুই ধরনের নডিউল দেখা যায়।

ক) হট নডিউল বা ওয়ার্ম নডিউল :

শতকরা ১৫ ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এবং এতে হাইপারথাইরয়েডিজম দেখা দেয়। এতে ক্যান্সারের সম্ভাবনা তুলনামূলক কম।

খ) কোল্ড নডিউল :

শতকরা ৮৫ ভাগ নডিউল কোল্ড নডিউল হয়। তবে এর শতকরা ২০ ভাগ পরবর্তিতে ক্যান্সারের রূপ নেয়।

 

থাইরয়েড ক্যান্সারঃ

থাইরয়েড গ্রন্থির ক্যান্সারের কারণেও গ্রন্থি বড় হয়। যে কোন বয়সে, যে কারও থাইরয়েড ক্যান্সার হতে পারে। তবে শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের তুলনায় এই ক্যান্সারের হবার শতকরা হারও কম এবং চিকিৎসার ফলে পরিপূর্ণ আরোগ্যের হারও বেশী। থাইরয়েড

ক্যান্সারের রিস্ক ফ্যাক্টর সমূহ হল :

১। ক্রনিক গয়টার : থাইরয়েড গ্রন্থির সার্বক্ষনিক বৃদ্ধি

২। পারিবারিক ইতিহাস : পরিবারে থাইরয়েড ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে রিস্ক বেশী।

৩। লিঙ্গ : পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ক্যান্সারের ঝুকি বেশী।

৪। অতিমাত্রায় রেডিয়েশন।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

শারীরিক পরীক্ষা

রক্তে থাইরয়েড হরমোন ,এন্টিবডি ইত্যাদির মাত্রা

থাইরয়েড গ্রন্থির আল্ট্রাসনোগ্রাম

বায়োপসি

রেডিও একটিভ আয়োডিন স্ক্যান

 

চিকিৎসাঃ

রোগের মূল কারনের উপর চিকিৎসা নির্ভর করে।

ক) আয়োডিনের অভাবের কারনে গয়টারঃ আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার,লবন ও সামুদ্রিক মাছ ও খাবার গ্রহণ।

খ) হাইপারথাইরয়েডিজমঃ

প্রথমে ঔষধের মাধ্যমে থাইরয়েডের কার্যকারিতা কম রাখা হয়। সম্ভব না হলে গ্রন্থির অনেক অংশ সার্জারি করে ফেলে দেয়া হয়। তাতেও যদি ঠিক না হয় তবে রেডিও একটিভ আয়েডিন দ্বারা ধ্বংস করা হয়।

গ) হাইপোথাইরয়েডিজমঃ

কৃত্রিম থাইরয়েড হরমোন সমৃদ্ধ ট্যাবলেট

নির্দিষ্ট মাত্রায় আজীবন বা নির্দিষ্ট মেয়াদে খেতে হবে।

ঘ) বিনাইন থাইরয়েড মডিউলঃ

প্রকারের উপর নির্ভর করে অপারেশন, ঔষধ বা রেডিও একটিভ আয়োডিন দ্বারা চিকিৎসা করা হয।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

১। গয়টার হল থাইরয়েড গ্রন্থির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি।

২। আয়োডিনের অভাব,হাইপার থাইরয়েডিজম,হাইপোথাইরয়েডিজম, থাইরয়েড নডিউল বা থাইরয়েড ক্যান্সার ইত্যাদি নানা কারণে গয়টার হয়।

৩। কারণের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা যেমন: আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার,হরমোন সমৃদ্ধ,সার্জারী,রেডিও একটিভ আয়েডিন রেডিয়েশন এর ব্যবহার।

 

23-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

ডায়াবেটিস

 

২০২৫ সালে বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬% ডায়াবেটিসে ভুগবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, অর্থাৎ তখন বাংলাদেশে দুই কোটির বেশি ডায়াবেটিক রোগী থাকবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ডায়াবেটিসের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি দ্রুত গতিতে। এর অন্যতম কারণ হলো মানুষের আয়ুষ্কাল বেড়েছে কয়েক বছর করে।  বাংলাদেশসহ সব উন্নয়নশীল দেশে খুব দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে, মানুষের দৈহিক ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে আনুপাতিক ও কাঙ্খিত হারের চেয়ে বেশি হারে, মানুষের দৈহিক শ্রম দিন দিন কমে যাচ্ছে, মানসিক চাপ বেড়েছে অনেকগুণ। সর্বোপরি বেশিসংখ্যায় রোগ শনাক্ত করা যাচ্ছে, যেটা আগে ছিল না। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেগশের মানুষের মধ্যে ডায়াবেটিস ভিন্নতা রয়েছে। উন্নত দেশে মহিলাদের বেশি সংখ্যায় টাইপ-২ ডায়াবেটিসে ভুগতে দেখা যায়, আর উন্নয়নশীল দেশে পুরুষেরা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে বেশি সংখ্যায় ভোগে।

 

ডায়াবেটিস কি বা কেন হয়?

আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষের শক্তির জন্য প্রয়োজন গ্লুকোজ। খাবার খাওয়ার পর জটিল বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় তৈরি হওয়া গ্লকোজ কোষে পৌঁছে যায়। তবে তার জন্য একান্ত প্রয়োজনীয় চাবি হলো ইনসুলিন, যা অগ্নাশয় থেকে নিঃসৃত হয়ে কোষের রুদ্ধ দুয়ার খুলে দেয়। আর তারপরই গ্লুকোজ পৌঁছে যায় কোষের ভেতরে, শক্তি জাগিয়ে উজ্জীবিত করে তোলে দেহকে। কিন্তু যদি কোনো কারণে গোলযোগ দেখা দেয় অগ্নাশয়ে, ইনসুলিন আর ঠিকমতো বেরোতে পারে না।  ফলে গ্লুকোজের জোগানও ব্যাহত হয়; রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়তে থাকে, শক্তির অভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে কোষ। মোদ্দাকথা  অগ্নাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণ আংশিক সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেলে তখনই শরীরের ভেতর নানা জৈব-রাসায়নিক হেরফের হয়। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণও বেড়ে যায়। আর এ অবস্থাকেই বলে ডায়াবেটিস।

প্রকারঃ

অগ্নাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে ইনসুলিন নির্ভর (ইনসুলিন ডিপেন্ডেন্ট ডায়াবেটিস মেলাইটাস) ডায়াবেটিক মেলিটাস বা টাইপ-১ ডায়াবেটেস হয়।

অন্যদিকে প্রয়োজনের তুলনায় কিছুটা কম ইনসুলিন নিঃসরণ হলে বা প্রতিবন্ধকতার কারণে ইনসুলিন ঠিকমতো কাজ করতে না পারলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস মেলিটাস (ইনসুলিন ইনডিপেডেন্ট ডায়াবেটিস মেলিটাস) ।

অন্যান্য দেশে টাইপ-১  ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা মোট ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যার ৫% থেকে ৭%। আমাদের দেশে এর হার ১%। আমাদের দেশে টাইপ-২ প্রধান ডায়াবেটিস।

এ ছাড়া কিছু কিছু হরমোনের তারতম্যের জন্য, অগ্নাশয়ের প্রদাহ বা অন্য কোনো সমস্যা হলে, ইনসুলিন সরবরাহে ত্রুটি দেখা গেলে, কেজনো ওষুধ (স্টেরয়েড হনমোন, ডাইরেটিক ইত্যাদি) বা  রাসায়নিক প্রভাবে বা কুশিং সিন্ড্রোম, হাইপারথাইরয়েডিজম, ফিওক্রোমোসাইটোমা জাতীয় অসুখের জন্যও সেকেন্ডারী ডায়াবেটিস হতে পারে।

 

ডায়াবেটিস পরীক্ষা-নিরীক্ষা

শুরুতে ডায়াবেটিস ধরা পড়লে সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আর ডায়াবেটিস ধরা পড়তে দেরি হলে অনেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গে  ক্ষতি সাধিত হবে।

খালি পেটে (কমপক্ষে ৮ ঘন্টা না খেয়ে থাকার পর) রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক পরিমাণ ৩.৫ থেকে ৫.৫ মিলিমোল/লিটার ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিলিটার পানিতে মিশিয়ে পাঁচ মিনিট ধরে ধাকার ২ ঘন্টা পর রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক পরিমাণ হবে ৭.৮ মিলিমোল/লিটার সর্বোচ্চ। যদি খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ ৫.৫ থেকে ৬.৯ মিলিমোল/লিটার বা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাবার ২ ঘন্টা পর ৭.৮ থেকে ১১.১ মিলেমোল/লিটার হয়, তাকে বলা হবে IGT(Impared Glucose Tolerence)  এদের এক-তৃতীয়াংশ পরবর্তীকালে পরিপূর্ণভাবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। আর এক-তৃতীয়াংশ এ অবস্থাতেই থেকে যায়। বাকি এক-তৃতীয়াংশ স্বাভাবিক অবস্থায়ই থাকে। খালি পেটে রক্ত পরীক্ষায় যদি গ্লুকোজের পরিমাণ ৭.০ মিলিমোল/লিটারের বেশি হয় অথবা ৭৫ গ্লুকোজ খাবার ২ ঘন্টা পর ১১.১ মিলিমোল/লিটারের বেশি হয়, তবে তার ডায়াবেটিস আছে বলে ধরে নেয়া হবে।

 

ডায়াবেটিস : কারণ ও লক্ষণ

 

দিন দিন খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হচ্ছে।

 à¦¹à¦ à¦¾à§Ž হজমশক্তি বেড়ে গেল; কিন্তু চেহারা হচ্ছে তালপাতার সেপাইয়ের মতো। ডায়াবেটিসের অন্যতম লক্ষণ অনেকটা এ রকমই। তাছাড়া-

·        ঘন প্রস্রাব হওয়া,

·        দুর্বলতা বোধ করা,

·        ঘন ঘন তেষ্টা পাওয়া

·        বারবার শরীরের বিভিন্ন অংশের ত্বকে নানা রকম জীবাণু সংক্রমণ ও ফোড়া হয়।

·        অনেকেরই শুধু বার বার চশমার পাওয়ার বদল করতে হয়।

·        কোনো ছোট কাটা বা জুতোর ফোসকা সহজে সারে না, ঘা হয়ে যায়;

·        মাথা ঘোরে;

·        অনেকেরই সহবাসে অনীহা দেখা দেয়।

 

ডায়াবেটিস চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

রক্তের গ্লুকোজের নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনটি পদ্ধতির একেকটি পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করা যায় অথবা কারো কারোর জন্য যেকোনো দুটি বা তিনটিই ব্যবহার করা হতেমপারে। আমরা একটি করে আলোচনা করছি।

(ক) খাদ্যাভাস

(খ) নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়াম

(গ) ওষুধ গ্রহণ  করা

 

ক. খাদ্যাভাসের পরিবর্তন :

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বেলায় একটি কথা কখনোই ভুললে চলবে না যে শুধু ওষুধ দিয়ে পুরোটা কাজ আদায় করা সম্ভব নয়। অন্য দুটি মাধ্যম সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম দিকে শুধু খাদ্যাভাস পরিবর্তন করেই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছার চেষ্টা করা হয়।

 

যেসব ডায়াবেটিক রোগীর ওজন স্বাভাবিক, তাদের বয়স ও উচ্চতা হিসাব করে তার জন্য আদর্শ ক্যালরি থেকে ২০০-৩০০ ক্যালরি বাদ দিয়ে প্রতিদিন গ্রহণ করতে হবে। এ জন্য শর্করা যেমন কমবে, চর্বি জাতীয় খাদ্যও তেনমি কমবে। এর জন্য ভাত, রুটি, আলু আগের চেয়ে কম খেতে হবে।  চিনি বা গ্লুকোজ পাওয়া যায় তেমন খাদ্য বর্জন করতে হবে বা খুব কম পরিমাণে খেতে হবে। ফলে মিষ্টি, শরবত, গ্লুকোজ, পায়েস ও এ জাতীয় খাদ্য ইত্যাদি খাওয়া †hgb গোশতের চর্বি, হাঁস-মুরগির চামড়া, ঘি, ডালডা, মাখন পনির ইত্যাদি খাওয়া কমিয়ে আনতে হবে। তবে ভোজ্যতেল (উদ্ভিদ) পরিমাণ মতো খাওয়া যাবে। মাছের চর্র্বি বরং ভালো। মাছ ও গোশত কম পরিমালে প্রতিদিন খাওয়া যাবে। তবে ফাস্টফুড জাতীয় খাদ্য ও কোমল পানীয় পুরোপুরি বর্জন করতে হবে। ফাস্টফুড প্রচুর ক্যালরি-সমৃদ্ধ খাবার এবং এগুলো খাওয়ার পর  আমরা ভুলে যায়, ক্যালরির বিশাল উৎস আমরা গলাধঃকরণ করছি। আর এতে যে মিয়োনিজ থাকে, তাতে প্রচুর কোলেস্টেরল আছে। এসব কমিয়ে তাজা শাকসব্জি, ফলমূল বেশি করে  খাওযার অভ্যাস করতে হবেবিস্তারিত

-->

23-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

কুশিং সিনড্রোম:

কুশিং সিনড্রোম হল করটিসল নামক হরমোনের আধিক্য জনিত বিশেষ রোগ। তাই এর অন্য নাম হাইপার করটিসলিজম। পিটুইটারী ও এড্রেনাল গ্রন্থির টিউমার ছাড়াও স্টেরয়েডের চিকিৎসার ফলেও এ রোগ হতে পারে। পৃথিবীর প্রায় প্রতি ৫০,০০০ জনে ১ জন এই রোগে আক্রান্ত। সঠিক চিকিৎসা না হলে এ রোগে রোগী মারা যায়।

রোগের লক্ষণসমমূহ:

·        ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, মুটিয়ে যাওয়া

·        হাত পা সরু হয়, কিন্তু পেট মোটা হওয়া

·        ঘাড়ে চর্বি জমা

·        চাদের মত গোল, ফোলা ফোলা মুখ

·        চামড়া পাতলা হয়ে যাওয়া, সহজেই লাল হওয়া, ঘা হওয়া

·        মাংসপেশী দূর্বল হওয়া

·        অতিরিক্ত পিপাসা

·        বার বার/ঘন ঘন প্রস্রাব

·        মাথা ব্যথা

·        উচ্চ রক্তচাপ

·        রক্তে পটাসিয়ামের পরিমাণ কমে যাওয়া

·        রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে যাওয়া

·        মানসিক অস্থিরতা, বিষন্নতা. চড়া মেজাজ

·        মাসিক অনিয়মিত হওয়া

·        হাড় ক্ষয় হয়ে হাড় নরম হওয়া ইত্যাদি।

করটিসোল হরমোন কি?

কিডনির মাথায় অবস্থিত এড্রেনাল গ্রন্থি থেকে করটিসোল হরমোন নিঃসৃত হয়। তকে তার নিঃসরন নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিস্কের পিটুইটারী গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হওয়া এড্রোনোকটিকোট্রপিক হরমোন (ACTH) রক্তে করটিসোল খুব কমে গেলে তা পিটুইটারীকে সিগ্যাল পাঠায়, পিটুইটারী  থেকে ACTH  হরমোন বের হয়ে এড্রেনাল গ্রন্থির উপর কাজ করে। ফলে এড্রনাল গ্রন্থি থেকে করটিসল নিঃসৃত হয়। আবার করটিসোল বেড়ে গেলে ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটে।

            এই হরমোনটি শরীরের জন্য অতি জরুরী কেননা এর কাজ হল:

q       যে কোন স্ট্রেস ও কষ্ট সহ্য করতে শরীরকে প্রস্তুত করে।

q       রক্তে গ্লুকোজ বা সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।

q       উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।

q       রোগ প্রতিরোধ সিস্টেমকে সাহায্য করে।

 

রোগের কারণসমূহ:

দীর্ঘদিন ধরে রক্তে উচ্চ মাত্রায় করটিসল হরমোন থাকলে শরীরে কোষে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। যে যে কারণে করটিসোল এর মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে তা হলো-

1.       পিটুইটারী গ্রন্থির টিউমার

2.      এড্রেনাল গ্রন্থির টিউমার

3.      শরীর অন্য কোন স্থানে ACTH প্রস্তুতকারী টিউমার হলে।

4.      মাল্টিপল এন্ডাক্রাইন নিউপ্লাসিয়া (একাধিক হরমোন তৈরীকারী গ্রন্থির টিউমার।

5.      স্টেরয়েড (গ্লুকোকরটিকয়েড) থেরাপী।

১। পিটুইটারী গ্রন্থির টিউমার:

শতকরা ৭০ ভাগ কুশিং সিনড্রোমের জন্য পিটুইটারী গ্রন্থির টিউমার দায়ী। তাই এ রোগকে কুশিং রোগ বলে। এ ক্ষেত্রে টিউমার থেকে যে অতিরিক্ত ACTH হরমোন নিঃসৃত হয়, তার প্রভাবে এড্রেনাল গ্রন্থি থেকে আরও বেশি মাত্রায় করটিসল নিঃসৃত হয়, ফলে কুশিং সিনড্রোম দেখা দেয়। এই ধরনের টিউমার মূলত বিনাইন (নন-ক্যান্সার) এডেনোমা। মহিলাদের পুরুষদের চেয়ে ৩ গুণ বেশি হয়। এ রোগের জটিলতা হিসেবে ডায়াবেটিস, কিডনীতে পাথর সহ বিভিন্ন মানসিক রোগ (সাইকোসিস) দেখা দেয়।

২। এড্রেনাল গ্রন্থির টিউমার: এড্রেনাল গ্রন্থির টিউমারের কারণে কুশিং সিনড্রোম হওয়ায় এই রোগকেও কুশিং ডিজিজ বলে। এ ক্ষেত্রে টিউমার থেকে সরাসির অতিরিক্ত মাত্রায় করটিসোল হরমোন নিঃসৃত হয় ও রোগ সৃষ্টি করে। এটিও মূলত বিনাইন (নন-ক্যান্সার) টিউমার। এ ক্ষেত্রে উচ্চ মাত্রার করটিসোলের কারণে পিটুইটারী থেকে ACTH  à¦¹à¦°à¦®à§‹à¦¨ নিঃসরন কমে যায়। ফলশ্রুতিতে মূল এড্রেনাল গ্রন্থি ছোট ও নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়ে। সাধারণত ৪০ বছরের কাছাকাছি সময়ে এ রোগ বেশী হয় এবং খুব দ্রুত বাড়তে থাকে।

৩। ACTH তৈরীকারী টিউমার:

শরীরের কোথাও ACTH তৈরীকারী টিউমার (সাধারণত ক্যান্সার জাতীয়) হলে এ রোগ হয়। শতকরা ১৭ ভাগ কুশিং সিনড্রোম এভাবে হয়। যার ৫০ ভাগ হয় ফুসফুসের ক্যান্সার থেকে এ ছাড়াও থাইমাস, থাইরয়েডে ও প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সার থেকেও উচ্চ মাত্রার ACTH নিঃসরনের ফলে কুশিং সিনড্রোম হয়ে থাকে। ভিন্ন স্থান থেকে হয় বলে একে  à¦à¦•à¦Ÿà§‹à¦ªà¦¿à¦•  à¦¬à¦²à§‡à¥¤

৪. মাল্টিপল এন্ডোক্রাইন নিউপ্লাসিয়া-১

(MEN-1)

আমাদের শরীরে পিটুইটারী, প্যানক্রিয়াস, এড্রেনাল, থাইরয়েড ও প্যারাথয়েড গ্রন্থিসমূহ হরমোন তৈরী করে। এদের ২ বা ততোধিক গ্রন্থি আক্রান্ত হয়ে যদি কুশিং সিনড্রোম হয়, তাহলে তাকে মাল্টিপল  এড্রাক্রাইন নিউপ্লাসিয়া বলে।

৫.  গ্লুকো করটিকয়েড হরমোন থেরাপী: হাপানী, আর্থাইটিস, এসএল ই  ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের প্রদাহজনিত রোগের চিকিৎসায় গ্লুকোকরটিকয়েড জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা হয়। আর এই ঔষধে  কারণে কুশিং সিনড্রোম হতে পারে। তবে ঔষধ বন্ধ করে দিলে অবস্থা আবার ভাল হতে থাকে।

 

রোগ নির্ণয়:

এ রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে রক্তে উচ্চ করটিসোল মাত্রা এবং তার কারণ বের করতে হয়। এজন্য-

q       শারীরিক পরীক্ষা ও রোগের পরিবারিক ও ঔষধের ইতিহাস।

q       রক্তে ACTH এর মাত্রা

q       প্রস্রাবের পরীক্ষা

q       ডেক্সামিথাসন সাপ্রেশন টেস্ট (স্টেরয়েড ব্যবহার করে)।

q       প্রয়োজনে CT Scan, MRI  à¦•à¦°à¦¾ হয়। টিউমারের অবস্থান ও আকার জানতে।

 

চিকিৎসা:

রোগের উৎস বা কারণের উপর নির্ভর করে চিকিৎসা। যেমন-

1.       পিটুইটারী গ্রন্থির টিউমার: মূলত অপারেশন করে টিউমার অপসারন করা হয়। এ ছাড়াও রেডিওথেরাপী বা কেমোথেরাপী দিয়ে টিউমারের আকার

23-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

অস্টিওআর্থ্রাইটিস

 

ব্যথা কী - এটা কারোর ই অজানা নয়। পৃথিবীতে এমন অনেক লোক পাওয়া যাবে যে  ব্যথায় আক্রান্ত হয়নি। ব্যথার মধ্যে হাঁটুর ব্যথা অন্যতম। হাঁটুর ব্যথা আমাদের একটি প্রচলিত সমস্যা, বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। বিভিন্ন কারণে এই সমস্রার সৃষ্টি হতে পারে, তার মধ্যে অতিরিক্ত শারীরিক ওজন ও নিয়মের ব্যাঘাত অন্যতম। এর প্রতিকারের জন্য আমাদের উচিৎ নিয়মিত কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে পরিমিত ওজন নিয়ন্ত্রণ করা এবং যেসব কারণে ব্যথার সৃষ্টি সেগুলো পরিত্রাণ করে নিয়ম মতো চলাফেরা করা।

 

হাঁটুর ব্যথার কারণ

·        আঘাতজনিত (ট্রমাটিক)

·        অস্টিওআর্থ্রাইটিস

·        ইনফেকটিভ আর্থ্রাইটিস

·        রিউমাটিয়েড আর্থ্রাইটিস (সন্ধিবাত)

·        গাউট আর্থ্রাইটিস (বাত)

 

 

 

অস্টিও আর্থ্রাইটিস কী?

অস্টিও আর্থ্রাইটিস হচ্ছে অস্থিসন্ধির ক্ষয়জনিত রোগ বা অবস্থা। এ ক্ষয় সাধারণত দুই প্রকার, প্রাইমারী ও সেকেন্ডারী অস্টিও আর্থ্রাইটিস। আমরা এই ক্ষয়জনিত পরিবর্তন দেখতে পাই হাঁটুসন্ধির হাড়গুলোতে ও কার্টিলেজে। এ ছাড়াও এ ক্ষেত্রে জোড়ার মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গা (জয়েন্ট স্পেস) কমে যাবে এবং জয়েন্ট ফ্লুইড শুকিয়ে

যায়।

 

কাদের হয় এবং কখন হয়

প্রাইমারী অস্টিওআর্থ্রাইটিস সাধারণত ৩৫-৪০ বছরের বেশি বয়সের লোকদের হয়ে থাকে এবং নারী ও পুরুষ উভয়েই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে নারীদের আক্রান্ত হওয়ার হার পুরুষদের তুলনায় বেশি। কারণঃ

·        অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ না করা,

·        বংশগত,

·        একটানা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার কাজ করা বা খেলাধুলা করা,

·        নিয়মতো চলাফেরা না করা।

 

সেকেন্ডারী অস্টিওà¦

22-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

আর্থাইটিস / বাত রোগ

 

            সাধারণভাবে আমাদের দেশে পায়ে, হাতে বা অস্থিসন্ধিতে ব্যাথা হলে তাকে বাত রোগ বলে। যদিও সাধারণভাবে শরীরের যে কোন অস্থি সন্ধির প্রদাহ, ব্যাথা, তাপ হওয়া, ফুলে যাওয়া ও নাড়াতে সমস্যা হলে তাকে আর্থাইটিস বলে। এই আর্থাইটিস আবার শত প্রকারের হয়। হিসেব করলে ৫-৬ জনে একজন কোন না কোন ধরনের আর্থাইটিসে  ভূগে। তবে খুব কমন আর্থাইটিস হলো অস্টিও আর্থাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থাইটস এবং গাঊট। আর্থাইটিস সম্পূর্ণ নির্মূল হয় না তবে ঔষধ, ফিজিও থেরাপী ও নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে অনেকাংশে ভাল থাকা সম্ভব।

লক্ষণসমূহ:

 

যে কোন বয়সে যে কোন অস্থিসন্ধিতে আর্থাইটিস বা বাত রোগ হয়। কিছু কিছু আর্থাইটিস মধ্য বয়সে বা বৃদ্ধ বয়সে বেশি দেখা যা‌য়। লক্ষণসমূহ হল-

-          ব্যাথা, হাড়জোড়া, ফুলে যাওয়া, রাড়তে বা চলাচলে সমস্যা।

-          অস্থিসমন্ধি পুরোপুরি কাজ করছেনা, দূর্বলতা

-          নড়ার সময় শব্দ হয় (অস্থিসন্ধিতে)

অনেক সময় এ সব লক্ষণসমূহকে এ ক্ষেত্রে রিউমাটয়েড বলা হয়।

প্রকৃত রোগ নির্ণয়:

যেহেতু আর্থাইটিস বিভিন্ন রকমের হয়, তাই প্রকৃত রোগ নির্ণয় করা একান্ত প্রয়োজন। কেননা একেক ধরনের আর্থাইটিসের চিকিৎসা, পরিণতি একেক ধরনের। তাই সঠিক রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা ও উপদেশে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। রোগ  নির্ণয়ের সময়- রোগের ইতিহাস, পারিবারিক রোগের ইতিহাস, শারিরিক পরীক্ষা, এক্সরে বা রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষার সাহায্য দরকার হয়। প্রয়োজনে রিউমাটলজিস্টের শরনাপন্ন হতে  হবে।

 

আর্থাইটিসের চিকিৎসা ব্যবস্থা:

আর্থাইটিস যেমন বিভিন্ন ধরনের, আবার এক  à¦§à¦°à¦¨à§‡à¦° আর্থাইটিস নানা ধরনের সমস্যা তৈরী করে। এমনকি একই ব্যক্তিতে একেক দিন একেক প্রকারের বা ভিন্ন  তিব্রতার ব্যাথা বা সমস্যা অনুভূত হয়। তাই এ রোগের চিকিৎসার সময় নির্দিষ্ট রোগ, রোগীর বয়স, কোন কোন অস্থি সন্ধিতে সমস্যা এবং কি পর্যায়ের সব হিসেব করে চিকিৎসা করতে হয়। তবে আর্থাইটিস কন্ট্রোল করতে নিচের উপদেশগুলো সাহায্য করবে।

ক) কর্মব্যস্ত থাকুন: শারিরিক পরিশ্রমই হলো আপনার হাড় ও মাংসপেশীর কর্মক্ষমতা রক্ষা করা, অস্থি সন্ধির নড়াচড়া ও ব্যাথা কমিয়ে রাখার মহৌষধ। তবে যেন তেনভাবে কাজ বা ব্যায়াম করলে চলবে না। বরং ফিজিওথেরাপী এর পরামর্শ করতে হবে।

খ) ঔষধ: আর্থাইটিসের ধরন, রোগীর বয়স, লিঙ্গ, রোগের প্রকোপ ইত্যাদির উপর বিভিন্ন ধরনের ব্যাথানাশক ঔষধ ও রোগের  অগ্রগতি থামানোর জন্য নতুন ধরনের ঔষধ ব্যবহৃত হয়। যেমন-

- ব্যাথা নাশক -এ ধরনের ঔষধ রোগের কোন পরিবর্তন আনে না এবং ব্যাথার অনুভূতিকে হ্রাস করে।

- ব্যাথানাশক ক্রিম বা অয়েন্টমেন্ট - ব্যাথার স্থানে অস্থিসন্ধিতে মালিশ করলে ব্যাথা কম অনুভূত হয়।

- এন. এস. এ. আই. ডি - হাড়ের প্রদাহ, ফোলা কমাতে সাহায্য  করে।

- করটিকোস্টেরয়েড ও অস্থিসন্ধির ইনফেকশন -ব্যাথা ও অসুখ চরম মাত্রা ধারন করলে করটিকোস্টেরয়েড ঔষধ নিতে হবে। এই ঔষধ ট্যাবলেট বা  ইনজেক আকারে নেয়া যায়। অনেক সময় অস্থি সন্ধির ভেতরে ইনজেকশন দেয়া হয়।

- এন্টি রিউমাটয়েড ঔষধ-রিউমাটয়েড আর্থাইটিসে ডিসিজ মডিফাইং এন্টি রিউমাটয়েড ঔষধ ব্যবহার করা হয়। কেননা  এই রোগে ধীরে ধীরে হাড়, সন্ধি বাকা হয়ে বিকলাঙ্গ হয়ে যায়-যা এই ঔষধ প্রতিরোধ করে।

গ) ব্যক্তিগত পরিচর্যা: এই রোগ সম্পর্কে জেনে নিজই নিজের হাড় ও জোড়ার যত্ন নিতে হবে। এই অসুখ যেহেতু পুরোপুরি ভাল হয় না, তাই এই রোগকে জেনে নিয়ন্ত্রনে রাখার উপায় শিখে নিজেই রোগের নিয়ন্ত্রনে ভুমিকা রাখতে হবে।

 

যাদের সাহায্য দরকার:

-          ডাক্তার, নার্স, ফিজিওফেরাপিস্ট, অকুপেশনাল থেরাপিস্ট (কর্মস্থলে)

-          ব্যায়ামের ইন্সট্রাক্টর

 

যা অবশ্যই মনে রাখতে হবে:

  1. সোজা বাংলায়-হাড়, মাংস, অস্থিসন্ধির ব্যাথা, প্রদাহকে একত্রে সাধারণভাবে আথাইটিস বা বাতরোগ বলে।
  2. প্রায় ১০০ র  à¦…ধিক প্রকারের আর্থাইটিস আছে।
  3. শারিরিক পরিশ্রম, ব্যায়াম ইত্যাদির মাধ্যমে হাড় ও জোড়াকে সচল, সবল ও কর্মক্ষম রাখা যায়।

 

 

22-02-2013 রোগ ব্যাধি

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস

 

 

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস হলো এক ধরনের প্রদাহ জনিত রোগ (আক্রান্ত স্থানে ব্যাথা হয়, গরম হয় ও ফুলে যায়) যা মূলত অস্থি সন্ধিকে আক্রান্ত করে এবং সাথে সাথে শরীরের অন্যান্য অংশেও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। মূলত হাত-পা এর অস্থি সন্ধি এবং হাটু বেশি আক্রান্ত হয়। তবে, শরীরের যে কোন সন্ধিই আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত জোড়ায় প্রচন্ড ব্যাথা হয়, ফুলে  যায় ও নাড়াতে কষ্ট হয়। বিশেষ করে সকালে আক্রান্ত সন্ধি নাড়ানো যায় না, শক্ত হয়ে থাকে। এই রোগে হাড়ের, জোড়ার স্থায়ী ক্ষতি হয়।

 

কারা আক্রান্ত হয়ঃ

সাধারণত মধ্য বয়সে রোগ শুরু হয়, ২৫-৫০ বছরের মধ্যে। তবে বৃদ্ধ বয়সেও আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মহিলারাই অধিক, প্রায় পুরুষের ৩ গুণ। তবে প্রায় একই ধরনের রোগ শিশুদের হতে পারে, যার নাম জুভেনাইল রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ।

 

রোগের লক্ষণসমূহঃ

সাধারণত যে সব লক্ষণসমূহ দেখা যায়, তা হল-

1.      আক্রান্ত সন্ধিস্থল ফুলে উঠে, গরম অনুভূত হয় ও প্রচন্ড ব্যাথা থাকে।

2.     আক্রান্ত সন্ধি (জোড়া) নাড়াতে ব্যাথা লাগে, বিশেষ করে সকালে বেশি।

3.     ব্যাথার জন্য ঘুম কম হয়। অবসাদ বোধ হয়।

4.     সাধরণত ২ পাশের অস্থি সন্ধিই একত্রে আক্রান্ত হয়।

 

দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজনঃ

এই রোগ দ্রুত নির্ণয় করা যায় ও সঠিক চিকিৎসা করা যায়, ততই সুস্থ থাকার সম্ভাবনা ও দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা হবার সম্ভবনা কমে যায়। তাই এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে, সাধারণ ব্যাথার ঔষধ খেয়ে কমিয়ে না রেখে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শে সঠিক চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

 

রোগের কারণঃ

এই রোগের মূল কারণ এখনও  সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে গবেষনায় প্রমাণিত যে, এটি মূলত শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী ব্যবস্থার (ইমিউন সিস্টেমের) মাত্রাতিরিক্ত

রিএকশনের কারণেই হয়। অর্থাৎ শরীরের ইমিউন সিস্টেম শরীরেরই অস্থি সন্ধির বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে এবং  তাকে ধ্বংস করার চেষ্টা চালায়।

 

 

ফলশ্রুতিতে সেখানে ব্যাথা হওয়া, ফুলে উঠা, গরম হয়ে উঠা, চামড়ায লালচে বর্ণ ধারণ করা ইত্যাদি লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় এবং ধীরে ধীরে অস্থিসন্ধি ক্ষপ্রাপ্ত হয় ও আকার আকৃতি পরিবর্তিত হতে থাকে। ঠিক কি কারণে শরীর নিজের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তা এখনও আবিস্কার করা যায় নি, তবে অনেক ক্ষেত্রে জীনগত সমস্যার মিল পাওয়া যায়। এই রোগ পুরোপুরি ভাল হয় না, তবে চিকিৎসার মাধ্যমে রোগের অগ্রগতি কমানো ও লক্ষণ থেকে আরাম পাওয়া যায়।

রিউমাটয়েড আর্থাইটিসের চিকিৎসাঃ রোগটির সঠিক চিকিৎসার জন্য রোগীকে রোগীর সম্বন্ধে বুঝতে হবে ও করণীয় জানতে হবে। তার সাথে সাথে যে সব ব্যবস্থা নিতে হকে তা হল-

ঔষধঃ

1.      ব্যাথা ও প্রদাহ কমাবার জন্য NSAID জাতীয় ব্যাথানাশক ঔষধ

2.     রোগ প্রতিরোধকারী  ব্যবস্থার অনাকাঙ্খিত আক্রমণ রোধে স্টেরয়েড ঔষধ

3.     রোগের অগ্রগতি বন্ধ করার জন্য DMARD জাতীয় ঔষধ ব্যবহার

(বর্তমানে বায়োলজিক্যাল DMARD  à¦¬à§à¦¯à¦¬à¦¹à§ƒà¦¤ হচ্ছে)

4.     হাটা, চলা ও কাজ কর্মের জন্য সহায়ক যন্ত্রপাতির ব্যবহার

5.     পরিমিত এবং নিয়মিত যথাযথ ব্যায়াম

6.     ফিজিওথেরাপী

7.     প্রয়োজনে বিশ্রাম

8.     পুষ্টিকর খাদ্যাভাসঃ সঠিক পরিমাণে নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ। তাছাড়া নিয়মিত ক্যালসিয়াম জাতীয় খাদ্য গ্রহণ ও  সাম্রদ্রিক তৈলাক্ত মাছ -সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন (যেমন-বেলে, রিডা,চান্দা,টুনা, স্যামন, ম্যাকারেল) খেতে হবে, কেননা এতে ওমেগা-৩  ফ্যাটি এসিড আছে যা শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

9.     অপারেশনঃ খুব বেশি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্থ হলে আক্রান্ত অস্থিসন্ধি অপারেশন করার প্রয়োজন হতে পারে।

 

কক্স-২ জাতীয় ব্যাথানাশক ঔষধঃ লুমেরাকক্সিব ও রোফেকক্সিব জাতীয় ব্যাথানাশক ঔষধ হার্ট এটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই ব্যবহার না করা ভাল। তবে, মেলেকক্সিব জাতীয় ঔষধ দৈনিক ২০০ মিঃগ্রাঃ পর্যন্ত সেবনে অসুবিধা নেই। আর মেলক্সিকেম জাতীয় ঔষধ দৈনিক ১৫ মি:গ্রা: পর্যন্ত সেবনযোগ্য।

তবে ঔষধের ব্যাপারে  নিজে নিজেই কোন ঔষধ গ্রহণ বা বর্জন বা মাত্রাতিরিক্ত সেবন করা ঠিক নয়, ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতিত।

যা যা মনে রাখা জরুরীঃ

1.      এটি একটি প্রদাহজনিত রোগ যা মূলত অস্থিসন্ধিকে আক্রান্ত করে।

2.     এর প্রকৃত কারণ জানা যায় নি, তবে এটি অটোইমিউন রোগ

3.     এই রোগ পুরোপুরি নির্মূল হয় না, তবে সঠিক সময়ে সঠিক ঔষধ সেবন করলে ভাল থাকা যায় ও রোগের অগ্রগতি  কম হয়।

 

 

22-02-2013 রোগ ব্যাধি

Back Pain  - পিঠে ব্যথা

            পিঠে ব্যথা বা ব্যাক পেইন খুবই পরিচিত এবং কমন সমস্যা। এটি যে খুব মারাত্মক কোন রোগ তা নয়। বেশির ভাগ পিঠের ব্যাথা এমনিতেই ভাল হয়ে যায়।  আঘাত বা আঘাতজনিত বা কোন ধরনের প্রেসার প্রদাহ জনিত ইত্যাদি নানা কারণে পিঠের হাড় বা মাংসে ব্যথা হতে পারে। আর্থাইটিস, অস্টিও পরোসিস (হাড়ের ক্ষয় জনিত রোগ) সায়াটিক নার্ভ বা স্নায়ুর প্রদাহ স্ট্রেস বা মাংসপেশির উপর  মাত্রারিতিরিক্ত  প্রেসারের ফলে পিঠে ব্যথা হয়। তবে প্রকৃত কারণ বের করে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, ব্যায়াম, ঔষধ এবং কর্মতৎপর থেকে এই সমস্যা থেকে উপকার পাওয়া যায়।

 

মানব দেহের পিঠের গঠন:

মেরুদন্ডে হল শরীরের মূল ভিত্তি। এটি উপরের দিকে মাথাকে ধরে রাখে। দুইপাশে হাত ও পাজড়ের হাড়কে সংযুক্ত করে। নিচের দিকে পেলভিক বোন এর সাথে যুক্ত হয় ও পায়ের মাধ্যমে মাটির সঙ্গে যুক্ত। মেরুদন্ড কোন একক অস্থি নয় বরং অনেকগুলি ছোট ছোট হাড়ের সংযুক্তিকে নমনীয়, অনেকটা ÒSÓ à¦†à¦•à¦¾à¦°à§‡à¦° একটি অংশ। প্রতিটি ছোট হাড়কে ভার্টিব্রা বলে। প্রতিটি ভাট্রিবা উপরে ও নিচে কার্টিলেজ ও স্পন্ডিকলা দ্বারা তৈরী  à¦‡à¦¨à§à¦Ÿà¦¾à¦°à¦­à¦¾à¦Ÿà¦¿à¦¬à§à¦°à¦¾à¦² ডিস্ক।

নামক বস্তু দ্বারা অপরের সাথে যুক্ত থাকে যা একটিকে অপরটির সাথে নমনীয়ভাবে যুক্ত করে । তার চারপাশে মাংসপেশি যুক্ত থেকে একটি সুন্দর আকার দান করে ও নড়াচড়ায় সাহায্য করে। অন্যদিকে মেরুদন্ডের মধ্যখানের ফাকা নলের মত জায়গা দিয়ে মস্তিস্ক থেকে স্পাইনাল কড নেমে এসে সমস্ত শরীরের সাথে যুক্ত হয়।

 

পিঠে ব্যথার কারণসমূহ

            নানা কারণেই পিঠে ব্যথা হতে পারে। পিঠের মেরুদন্ড বা পাজরের হাড়, লিগামেন্ট বা মাংসপেশি এদের কোন একটি কারণেই পিঠে ব্যথা হতে পারে। সাধারণত কারণসমূহ হল:

১। আর্থাইটিস: অস্টিওআর্থাইটিস এবং এনকাইলোসিং স্পন্ডাইলাইটিস এই দুই ধরনের আর্থাইটিসে পিঠে ব্যথার সাথে যুক্ত।

২। মাংপেশীতে টান খাওয়া:

মাংপেশী বা লিগামেন্টে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হঠাৎ বল প্রয়োগ করলে বা চাপ প্রয়োগ করলে মাংসেপেশী বা লিগামেন্টের কিছু তন্তু ছিড়ে যায়। এ ছাড়াও হঠাৎ ভিন্নভাবে ভারী ওজন বা অতিরিক্ত ব্যায়াম করে অথবা বসা বা শোয়ার সমস্যা কারণে টান পড়তে পারে।

৩। অস্টিওপরোসিস: এর ফলে ভাটিব্রার হাড় ক্ষয় হয়ে হাড় পাতলা হয়ে ভেঙ্গে যেতে পারে। তার ফলে পিঠে ব্যথা হবে।

৪। সায়াটিকা: কোমরের নিচ থেকে নার্ভ বের হয়ে পায়ের মাংসপেশীতে  পৌছেছে। কোন কারণে কোমরের কশেরুকার মধ্যবতি ইন্টার ভাটিব্রালডিস্ক চাপের কারণে বা হাড় ক্ষয়ের কারণে বর্ধিত হয়ে নার্ভের উপর চাপ প্রয়োগ করলে ঔ নার্ভের সাথে যুক্ত অংশে ব্যথা বোধ হয়।

৫। স্ট্রেস: কোন কারণে মাংসপেশীতে চাপ পড়লে, অতিরিক্ত চাপে ঐ অংশে ব্যথা হয়, নড়তে কষ্ট হয়। আর বহুদিন ধরে এরকম চাপ থাকলে ব্যক্তির দাড়ানো, বসা, চলাফেরার পরিবর্তন চলে আসে এমনকি মেরুদন্ড বাকা হয়ে যেতে পারে।

৬। জীবন-যাপন পদ্ধতি:

বেশির ভাগ পিঠে ব্যথার জন্য জীবন-যাপন পদ্ধতি সমস্যা বেশি দায়ী। যেমন-

-          ব্যায়াম ও শারিরিক পরিশ্রমের অভাব।

-          অতিরিক্ত ওজন

-          অলস জীবন-যাপন।

-          সঠিক নিয়মে উঠা বসা না করা।

-          অতিরিক্ত শারিরিক চাপ।

-          সঠিক নিয়মে কাজ না করা।

-          অতিরিক্ত নরম বিছানায় শোয়া।

পিঠে ব্যথা প্রতিরোধের উপায়:

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিছু নিয়ম মেনে চলা, জীবন যাত্রার মান পরিবর্তনেই পিঠে ব্যথা থেকে মুক্ত থাকা যায়। যেমন-

 

নিয়মিত ব্যায়াম:

 

এর ফলে মাংসপেশী, হাড় মজবুত হয়, গঠন দৃঢ হয়।  তাই বলে মাত্রাতিরিক্ত ব্যায়াম করা যাবে না। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট বা ৩৫ মিনিট করে দিনে ২ বার ব্যায়াম করা উচিত।

ভার বা ওজন নেয়ার সময় সতর্কতা:

এক সাথে ভারী ওজন না নিয়ে কম কম করে বারে বারে নেয়া উচিত। ভারী ওজন তুলতে হলে কোমর ভাজ না করে এবং হাটু ভাজ করে বসে কোমর পিঠ সোজা রেখে, ওজনটার কাছে এসে তোলা দরকার। আর অনেক বেশী ভারী হলে ট্রলি বা অন্য ব্যক্তির সাহায্য নিন।

ওজন সঠিক রাখুন/নিয়ন্ত্রনে রাখুন: ওজন বেশী হলে মেরুদন্ডে হাটুতে বেশী চাপ পড়ে। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে ওজন কমাতে হবে, নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

সঠিক নিয়মে উঠা, বসা, শোয়া: 

উঠা, বসা, শোয়া, হাটা চলায় সঠিক নিয়ম মেনে চলুন। অনেকক্ষন ধরে চেয়ারে বসে কাজ করতে হলে পিঠ সোজা রেখে বসুন এবং কোমর সাপোর্ট দেয়ার মত কুশন পায়ের নিচে ফুট  টুল ব্যবহার করুন।

নিয়মিত বিরতিতে কাজ করুন:  একটানা কাজের ফাকে বিশেষত বসা, ড্রাইভিং, একটানা বেশিক্ষন করা ঠিক না। মাঝে মাঝে বিরতি দিন। অন্তত ১ ঘন্টা পর পর। এতে মসাংপেশী নরম হবে, জোড়াগুলি নমনীয় থাকবে। অতিরিক্ত স্ট্রেস থেকে বিশ্রাম নিন।

রিলাক্সেশন শিখুন: ফিজিওফেরাপিস্টের নিকট থেকে মাসেল রিলাক্সেশন টেকনিক শিখুন। প্রয়োজনে হালকা গরম বা ঠান্ডা সেক দেয়া, ব্যায়াম করা ইত্যাদির মাধ্যমে অতিরিক্ত স্ট্রেস রোধ করুন।

ঘুমানো: বেশি নরম বা বেশি শক্ত  উভয় স্থানে শোয়া বর্জন করুন। উভয়ক্ষেত্রে পিঠের ব্যথা বাড়বে। অনদিকে উপুড় হয়ে শোয়াও স্বাস্থের জন্য খারাপ। কাত হয়ে শোয়া ও ঘুমানোর চেষ্টা করুন যাতে মেরুদন্ড সোজা থাকে।

কখন হাসপাতালে/ ডাক্তারের নিকট যাবেন?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাসায় নিয়ম কানুন মেনে বিশ্রামে ব্যথা ভালো হয়ে যায়। তবু কখনও কখনও ব্যথা বাড়তে থাকে। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন । যদি ব্যথার সাথে-

-          ব্যথা না কমে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।

-          ব্যথার সাথে সাথে জ্বর বা অন্যান্য অসুস্থ্যতাবিস্তারিত

-->

22-02-2013 রোগ ব্যাধি

পিঠে ব্যথা-মেরুদন্ডের ডিস্ক সমস্যা

 

ইন্টার ভার্ট্রিব্রাল ডিস্ক (মেরুদন্ডের ২টি কশেরুকার মধ্যবর্তী যোজক কলা) এর বিশেষ কিছু  সমস্যা যেমন- ভেঙ্গে যাওয়া বা সরে যাওয়ার ফলে দীর্ঘস্থায়ী পিঠে ব্যথা হতে পারে। আবার বয়স বা অন্যকারণে ইন্টার ভার্ট্রিব্রাল ডিস্ক এর  ক্ষয় এর ফলেও মারাত্মক পিঠে ব্যথা/ কোমর ব্যথা হতে পারে। এর বিভিন্ন কারণের মধ্যে অতিরিক্ত ওজন, ব্যায়াম বা পরিশ্রম না করা, আঘাত এবং মাংসপেশীর দৃঢ়তার অভাব।

এই ডিস্ক মানব শরীরের সহজ, সাবলীল চালাচল, ঘুর্ণনসহ অনেক কাজ করে যেমন- ধাক্কা সামলানো, মেরুদন্ডকে দৃঢ় রাখা । এর দুটি অংশ- (ক) বাইরের দিকের ইলাস্টিক টিস্যু এমুলাস ফাইব্রোসাস

(খ) মধ্যখানের নরম জেলির ব্যয় নিউক্লিয়াস পাল্পোসাস।

লক্ষণসমূহঃ

ডিস্কের স্থান ও ক্ষতির পরিমাণের উপর  রোগের লক্ষণ নির্ভর করে। যেমন-

-          ডিস্কের স্থানটিতে মারাত্মক ব্যথা।

-          ব্যথা নিচের দিকে, পায়ের দিকে যায়।

-          বেশ কিছুক্ষণ বসে  থাকলে বা বাকা হয়ে থাকলে ব্যথা বৃদ্ধি পায়।

-          হাচি কাশি, ওজন তোলা ইত্যাদি কাজে ব্যথা বৃদ্ধি পায়।

-          হাতে বা পায়ে অবশ ভাব বা সুই এর খোচার মত ব্যথা হয়।

 

রিস্ক ফ্যাক্টরঃ  কোন কোন ব্যক্তি অন্যদের চেয়ে  এই রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশি। যেমন-

অতিরিক্ত মোটা, মাংসপেশির দৃঢ়তার অভাব, নিয়মিত ব্যায়াম না করা, অধিক বয়স,

 à¦¸à¦ à¦¿à¦• নিয়মে যারা বসেন না বা শোন না, যারা ভুলভাবে ওজন উত্তোলন করেন।

ডিস্ক এর ক্ষয়জনিত সমস্যাঃ

ছোটবেলায় বা শিশুদের ক্ষেত্রে এ ডিস্ক থাকে নরম জেলির মত, বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে তা শক্ত হয় ও পাতলা হয়। এর চারপাশে হাড়ের অংশ বর্ধিত হয়। অনেকের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা না করলেও কারও কারও ক্ষেত্রে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ডিস্কের ক্ষয় দেখা দেয়, নমনীয়তা হ্রাস পায়। এ সময় দীর্ঘক্ষণ কোন নির্দিষ্ট অবস্থায় থাকলে ব্যথা বৃদ্ধি পায়।

ডিস্ক ছিড়ে যাওয়ার সমস্যা :

ইন্টার ভাট্রিবাল ডিস্ক কশেরুকার হাড়, মাংস, লিগামেন্ট দ্বারা নির্দিষ্ট  স্থানে আটকে থাকে। তারপরও বিভিন্ন কারণে এর  বাইরের শক্ত আবরণটিকে ছিড়ে ভেতরের নরম অংশ বেরিরে রেরিয়ে আসতে পারে এবং  এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোমরের নিচের অংশে হয়ে থাকে। এর ফলে কোমরে প্রচন্ড ব্যথা হয় এবং ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়। তবে বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে ভেতরের নরম অংশটি  ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায় বলে এ ধরনের সমস্যা কম হয়।

সায়াটিকা :

সায়াটিক নার্ভ কোমরের নিচ থেকে বের হয়ে পাছায় ও রানের পেছনের দিকে নেমে যায়। এই নার্ভের উপর চাপ পড়লে পিছনে সহ পুরো পায় ব্যাথা অনুভূত হয়। ডিস্ক ছিড়ে গিয়ে এই সায়াটিকা মারাত্মক সমসম্যা দেখা দেয়।

রোগ নির্ণয়

রোগের ইতিহাস ও শারিরিক পরীক্ষা

অনেক ক্ষেত্রে এক্স রে, এম,আর,আই করতে হয়।

চিকিৎসা :

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তেমন কোন চিকিৎসা ছাড়াই ব্যথা ধীরে ধীরে কমে যায়। প্রাথমিক অবস্থায় ব্যায়াম একান্ত জরুরী। পরবর্ত্তীতে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। এ ছাড়াও-

-          ঠান্ডা বা গরম থেকে

-          ম্যাসাজ করা

-          নির্দিষ্ট নিয়মের ব্যায়াম ও চলাচল

-          NSAID যাতীয় ব্যথানাশক ঔষধ

বিশেষ ক্ষেত্রে ল্যামিনেকটোমি অপারেশন করে ছিড়ে যাওয়া অংশ কেটে ফেলে বা ক্ষয় হয়ে যাওয়া ডিস্ক ফেলে দুই কশেরুকাকে দুই দিকে দিয়ে জোড়া লাগিয়ে দেয়া।

নিয়ম মেনে চললে :

অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চললে কিছুদিন পর অনেকটাই সুস্থভাবে কাজ করা যায়। যা মেনে চলতে হবে-

-          অধিক সময় ধরে একই ভাবে বসে বা শুয়ে না থাকা

-          অধিক ভারী জিনিস না উঠানো।

-          একই সাথে কোমর ভাজ করা এবং কোমর মোচড়ানো নিষেধ।

-          পেট ও পিঠের মাংসপেশির দৃঢ়তার বৃদ্ধি ব্যায়াম করা প্রয়োজন।

-          সঠিক পজিশন করে হাটা, চলা, উঠা বসা শোয়া।

-          শেখানো নিয়ম মেনে নিয়মিত ব্যায়াম করা।

-          ইয়োগা/যোগ ব্যায়াম অনেক ক্ষেত্রে বেশ উপকারী।

 

যা অবশ্যই মনে রাখতে হবে :

1.       ইন্টার ভার্ট্রিবাল ডিস্ক হল মেরুদন্ডের ২টি কশেরুকার মধ্যবর্তী যোজক কলা যা শরীরের সহজ, সাবলীল চালাচল, ঘুর্ণনসহ অনেক কাজ করে যেমন- ধাক্কা সামলানো, মেরুদন্ডকে দৃঢ় রাখা।

2.      ইন্টার ভার্ট্রিবাল ডিস্ক এর বিশেষ কিছু  সমস্যা যেমন- ভেঙ্গে যাওয়া বা সরে যাওয়া বা ক্ষয় এর ফলে মারাত্মক পিঠে/ কোমরে ব্যথা হতে পারে।

3.      অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চললে কিছুদিন পর অনেকটাই সুস্থভাবে কাজ করা যায়।

 

22-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

টিনিয়া / দাদ রোগ

    

টিনিয়া একধরনের ছত্রাকজনিত চর্মরোগ। আমাদের দেশে এটি দাদ রোগ নামে সহজেই সবার কাছে পরিচিত।এটি মারাত্ম্বক ছোঁয়াচে রোগ। এটি সরাসরি চামড়া থেকে চামড়ায় ছাড়াতে পারে। সাধারণ ভাবে শরীরের অপেক্ষাকৃত কম উন্মুক্ত স্থান যেমন: পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে, কুঁচকিতে, মহিলাদের স্তনের নিচে হয়ে থাকে। এছাড়াও শরীরের যে কোন স্থানে মাথার চামড়াতেও এই রোগ হতে দেখা যায়। তবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চললে ও এন্টি ফাংগাল ঔষধে সহজেই রোগ ভাল হয়।

     সব ধরনের ছত্রাক জীবাণু সাধারণত আদ্র, উষ্ণ স্থানে বৃদ্ধি লাভ করে। তাই এ কারনে টিনিয়াও শরীরের ভেজা ও উষ্ণ স্থানে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। আর খুব ছোয়াচে হবার কারনে যে স্থানে একসাথে অনেক লোক থাকে, কাছিকাছি থাকে সেখানে এ রোগের প্রকোপ বেশী। সরাসরি ত্বকের সংস্পর্শ ছাড়াও এক জনের ব্যবহৃত জামাকাপড় তোয়ালে ইত্যাদি মাধ্যমেও সুস্থ্য ব্যক্তি আক্রান্ত হতে পারে।

 

প্রকারভেদঃ

সাধারণত শরীরের আক্রান্ত স্থানে নামানুসারে এর নামকরন করা হয়। সবচেয়ে বেশী প্রচলিত কমন প্রকারভেদ সমূহ হলঃ

ক) এথলেটস ফুটঃ যা পায়ে হয়। এর অন্য নাম টিনিয়া পেডিস।

 

খ) জক ইচঃ কুচকির দাউদ। এর অন্য নাম টিনিয়া ক্রুরিস।

 

গ) রিং ওয়ার্ম অফ স্কাল্পঃ মাথার চামড়ার দাউদ। এর অন্য নাম টিনিয় ক্যাপিটিস। সাধারনত বাচ্চাদের বেশী হয়।

ঘ) রিং ওয়ার্ম অফ দি বডিঃ শরীরের দাদ। অন্য নাম টিনিয়া করপোরিস।

ঙ) অনাইকো মাইকোসিসঃ হাত বা পায়ের নখের ছত্রাক ঘটিত ইনফেকশন। অন্য নাম টিনিয়া আনগুইয়াম।

 

লক্ষন সমূহঃ

1.      চুলকানি।

2.     চামড়ার লাল বর্ণের গোল রেশ

3.     গোল বর্ণের চারপাশ উচু, মাঝখান মসৃণ ও নিচু।

4.     পা এর আঙ্গুলের ফাক ফেটে যায়, চাড়া উঠে যায়।

5.     নখ হলদে বা কাল বর্ণ ধারণ করে।

6.     মাথার আক্রান্ত স্থানে চুল পড়ে যায়, কষ ঝড়ে।

 

প্রতিরোধের উপায়ঃ

ভেজা, স্যাতসেতে ও উষ্ণতা ছত্রাক ইনফেকশনের অন্যতম কারন। তাই টিনিয়া প্রতিরোধের জন্যঃ

1.      হাত, পা বা শরীরের যে কোন স্থান ধুবার পর ভালভাবে মুছে শুকাতে হবে।

2.     শরীরের চামড়ার ভাজসমূহ যতটুকু সম্ভব বাতাসে শুকাতে হবে।

3.     সিনথেটিক কাপড়ের বদলে সুতি কাপড়, বিশেষত সুতি মোজা ব্যবহার করা।

4.     অতিরিক্ত ঘাম হলে তার ব্যবস্থা নেয়া।

5.     সুইমিংপুল, লকার রুম, জিমনেসিয়াম ইত্যাদি কমন স্থানে নিজস্ব কাপড় তোয়ালে ব্যবহার করা।

চিকিৎসাঃ

সাধারণত এন্টি ফাংগাল ক্রিম বা অয়েন্টমেন্ট এর ব্যবহারেই রোগ ভাল হয়। যেমনঃ ইকোনাজল। তবে অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। মারাৱক হলে মুখে খাবার এন্টি ফাংগাল ঔষধ ফ্লুকোনাজল খেতে হয়। আর চুলকানির জন্য এন্টি হিস্টাসিন জাতীয় ঔষধ।

 

রোগ যাতে না ছড়ায়ঃ

আপনার অজান্তেই এই রোগ অন্যের দেহে ছড়াতে পারে কেননা এটি মারাৱক ছোয়াচে। তাই রোগ ছড়ানো প্রতিরোধের জন্যঃ

-         দ্রুত এন্টিফাংগাল ঔষধ দ্বারা চিকিৎসা।

-         আক্রান্ত স্থান ভালভাবে হাত ধোয়া।

-         ব্যবহৃত কাপড়, তোয়ালে অন্যজনকে ব্যবহার করতে না দেয়া।

-         টিনিয়া পেডিস থাকলে খালি পায়ে চলাচল না করা।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

-         টিনিয়া বা দাদ হল ছত্রাকজনিত চামড়ার মারাত্ম্বক সংক্রামক রোগ।

-         শরীরের অতিরিক্ত ঘামযুক্ত, উষ্ণ স্থান যেমন : কুচকি, পায়ের আঙ্গুলের ফাক ইত্যাদি স্থানে এ রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করে।

-         পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চললে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

 

 

22-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

পায়ের দুর্গন্ধ - কারন ও প্রতিকার

 

পায়ের ঘাম ও অতিরিক্ত দুর্গন্ধ খুব কমন একটি সমস্যা। অতিরিক্ত ঘাম ও তাতে ব্যাকটেরিয়ার বিস্তারের ফলেই এই দুর্গন্ধের সৃষ্টি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে চলার পরও অনেকেই এই সমস্যায় ভুগেন। অনেকের উপস্থিতিতে এই সামান্য সমস্যাটি সবার বিরক্তির কারন হয়ে দাড়ায়, আক্রান্ত ব্যক্তিও লজ্জিত হন। অথচ সাধারন কিছু চিকিৎসা ও ব্যবস্থা গ্রহন করলেই সমস্যা থেকে উপকার পাওয়া যায়।

 

পা ব্যাকটেরিয়া জন্মের ও বংশ বিস্তারের আদর্শ স্থানঃ

আমাদের প্রতিটি পায়ে লক্ষাধিক (প্রায় আড়াই লক্ষ) ঘর্ম গ্রন্থি আছে, এবং প্রতিদিন এখান থেকে প্রায় ১ কাপের সমান ঘাম তৈরী হয়। অতিরিক্ত ঘাম হলে এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া বিস্তার লাভ করলে তাতে দুর্গন্ধ তৈরী হয়। মূলত পায়ের ব্যাকটেরিয়াগুলি এক ধরনের গ্যাস তৈরী করে, যা পনির তৈরীতে ব্যবহৃত ব্যাকটেরিয়া দ্বারা তৈরী গ্যাসের মত।

সমস্যা সমাধানে করনীয়ঃ পায়ে ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার কমাতে হবে। আর এ কারনে পায়ের ঘর্মাক্ত গরম অবস্থার অবসান ঘটানো দরকার। নিচের কাজগুলো এ ক্ষেত্রে সহায়ক :

Æ   à¦®à§ƒà¦¦à§ শক্তি বিস্তারিত

-->

22-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

Eczima (GKwRgv) :

 

একজিমার লক্ষণগুলো সাধারণত আবহাওয়া, বাসায় ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং মানসিক অশানিত্মর জন্য মারাত্মক আকার ধারন করে। এসব লক্ষণ থেকে রক্ষার মধ্যে রয়েছে-

o       পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা

o       সাবান পরিত্যাগ করা।

o       এলার্জি জাতীয় জিনিস যেমন- ধূলিকনা, মাছি, ছাতা এবং পশুর পশম।

তবে মানসিক অশান্তির জন্য উয়োগা বা মেডিটেশন সাহায্য করে। কিন্তু খাদ্য তালিকা এক্ষেত্রে খুব একটা সাহায্য করে না।

একজিমা হলো চামড়ার প্রদাহজনিত অবস্থা।

 à¦¯à§‡à¦–ানে চামড়া শুষ্ক হয়ে চুলকানির সৃষ্টি করে এবং চামড়া লাল হয়ে প্যাচ তৈরী করে। এটি পুরোপুরি নিরাময় হয় না, তবে অবস্থার পরিবর্তন হয়। চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে : বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য স্টেরয়েড ক্রিম এবং মুখে খাওয়ার জন্য এন্টিহিস্টাসিন।

 

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা জরুরী :

একজিমা দ্বারা আক্রানত্ম চামড়া বেশি ভয়ানক বা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ইমপোটগো অথবা ওয়ার্ট এর তুলনায় এটা বলা হয় যে, শুধুমাত্র স্টেফাইলোকক্কাস বেকটিরিয়াই এজিমার জন্য দায়ী, এর সাথে সাথে সেকেন্ডারী ইনফেকশন যেমন-ইমপেটিগো, এগুলোও দায়ী।

 à¦•à¦¿à¦›à§ সাজেশন:

o       প্রতিদিন নিয়মিত গোসল করতে হবে।

o       সাবানবিস্তারিত

-->

22-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

 (actopic dermatitis) এটোপিক ডারমাটাইটিস

      এটোপিক ডারমাটাইটিস বা একজিমা হলো চামড়ার এমন একটি অবস্থা যেটি সাধারণত শিশুকালে হয় এবং বংশগত ভাবে হয়। এখানে চামড়া শুষ্ক এবং লাল হয়ে চুলকায়। এখানে চামড়ার প্রতিবন্ধকতা ক্ষতিগ্রস্থ হয়, ফলে আর্দ্রতা হারিয়ে যায় এবং এলার্জি জাতীয় পদার্থ এবং জীবাণু সহজেই ভেতরে ঢুকে যায়। এর ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে চামড়াতে প্রদাহ ঘটায়।

একজিমা চামড়ার একটি প্রদাহজনিত অবস্থা, যেটি শিশুকালে হয় এবং এতে চামড়া শুষ্ক হয়ে লাল হয় এবং চুলকানি হয়। একজিমা ছোঁয়াচে নয়। মাঝে মাঝে ছোট ছোট ফোসকার তৈরী করে যেটি পরিষ্কার তরল পদার্থ ধারণ করে এবং চামড়াকে ক্রন্দনরত করে তোলে। ডারমাটাইটিস সাধারনত ব্যকটেরিয়াস স্টেফাইলোকক্কাস অরিয়াম দ্বারা সৃষ্টি হয়।

একজিমা ভয়াবহতা নির্ভর করে প্রকারভেদ এবং লক্ষনসমূহের উপর, যেখানে কখনও উত্তেজিত হতে পারে এবং কমে যেতে পারে। আর্দ্রতা ধরে রাখার লোশন অথবা ফর্টিসোনভিত্তিক মলম এ ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। যেগুলো চামড়াতে বিরক্তিকর সৃষ্টি করে, সেগুলো ত্যাগ করতে হবে। যেমনঃ- এলার্জেন, সাবান,বিস্তারিত

-->

21-02-2013 রোগ ব্যাধি

খুশকি ও মাথার চুলকানি:

 

 

শতকরা প্রায় ৫০ শতাংশ লোক খুশকিতে আক্রান্ত। খুসকি বলতে মাথার ত্বকের পাতলা আঁশ ছাড়ানো ও চুলকানীকে বোঝায়। খুশকির ফলে মাথার সাদা ত্বক পাতলা একটি স্তর তৈরী হয়। খুসকি নাশক শ্যাম্পু এক্ষেত্রে কার্যকরী। সেবোরিক ডরমাটাইস এ খুসকিমুক্ত উপসর্গ দেখা দেয়। শিশুদের ক্রাডল ক্যাপ এক প্রকার সেবোরিক ডারমাটাইটিস।  সোরিয়াসিস হলেও মাথায় চুলকানি দেখা দেয়। শতকরা

 

কেন খুস্‌কি হয়?

আমাদের ত্বকের উপরের স্তর প্রতিনিয়ত খসে  পড়ে ও নতুন করে তৈরী হয়। এরা সারা শরীরের ত্বকে হয় এবং মাথা বাদে অন্য স্থানে বোঝা যায় না। কিন্তু মাথার চুল খসে পড়া স্তরকে আটকিয়ে রাখে এবং খুসকি তৈরী হয়।

 

মাথার চুলকানি:

 

খুশ্‌কী সহ/খুসকি ছাড়া মাথার ত্বকের চুলকানি একটি বহুল প্রচলিত সমস্যা। কোন স্পষ্ট কারণ না থাকলে ও মধ্যবয়স্ক মানুষের খুশকি বেশী দেখা যায়। চুলকানোর ফলে মাথার ত্বকে আচঁড়ের দাগ ও কখনো কখনো ছোট ক্ষত তৈরী হতে পারে। খুসকি ছাড়াও অন্য কিছু ত্বকের সমস্যায়ও চুলকানি হয়।

 

সেবোরিক ডারমাটাইটিসের কারণে মাথার চুলকানি :

সেবোরিক ডারমাটাইটিস অনেকটা খুস্‌কির মত, এতে ত্বকের উপরের অংশ বেশী খসে পড়ে ও প্রদাহ পরিলক্ষিত হয়। অর্থাৎ ত্বক থাকে লাল, ফোলা, অত্যন্ত চুলকানিযুক্ত। শরীরের অন্যান্য অংশ, যেমন-মুখ, ভ্রু, দাড়ি, বুকের কেন্দ্রস্থল ইত্যাদি স্থানে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

 

সোবারিক ডারমাটাইটিসের উপসর্গসমূহ:

o       মাথার ত্বকের ও পাতলা  আঁশ ছড়ানো। এটাই প্রধান বৈশিষ্ট্য।

o       এ রোগের প্রকট প্রাদুর্ভাবে চুলের প্রান্ত ঘেষে ভ্রু, বুকের কেন্দ্রস্থলে নাক ও ঠোটের খাঁজে, কানের মধ্যে হলুদাভ-লাল খসে যাওয়া ত্বকের স্তর জমতে দেখা যায়।

 

কেন হয়?

অধিক ঘনত্ব ও বড় তৈলগ্রন্থি সমৃদ্ধ ত্বকে সেবোরিক ডারমাটাইটিস হয়। ত্বকের ছত্রাক ও তৈল গ্রন্থি হতে উৎপন্ন কিছু উপাদান আমাদের শরীরের সাথে প্রতিক্রিয়া করে এবং প্রদাহ সৃষ্টি হয়।

 

ক্রাডল ক্যাপ:

ক্রাডল ক্যাপ-নবজাতকের এক প্রকার সেবোরিক ডারমাটাইটস। ইহা মাথার ত্বকে পুরু-হলুদ স্তরযুক্ত ক্ষত সৃষ্টি করে। অন্যান্য উপসর্গসমুহ-

o       মাথা ছাড়া ত্বকের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে কানের পিছনে।

o       লাল মুখ, পূজযুক্ত ফোঁড়া।

 

নিয়ামক যা  সেবোরিক ডারমাটাইটিসের প্রকোপ বাড়িয়ে দেয়:

o       কিছু রোগ, যেমন- পারকিনসন্স ডিজিজ, এইডস

o       শারীরিক ও মানসিক চাপ

o       জেনেটিক নিয়ামক

o       ঋতু, যেমন- শীত ঋতুতে প্রকোপ বাড়ে।

 

সোরিয়াসিসের কারণে মাথার চুলকানি:

প্রায় ৩ শতাংশ লোকের সোরাইসিস হয় । মাথার ত্বক, কনুই এবং হাটুতে বেশী দেখা যায়। সেবোরিক ডারমাটাইটিস প্রায় পুরো মাথায় ছড়িয়ে থাকলেও সোরিয়াসিস ছোট আকারে, একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকে। ক্ষতস্থান পুরু খোসা আবৃত থাকে। সোরিয়াসিস শুধুমাত্র মাথার ত্বকে থাকলে তা খুশ্‌কি ভেবে ভুল হতে পারে। সোরিয়াসিসের জেনেটিক যোগসূত্র আছে অর্থাৎ এটি অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক রোগ।

 

খুসকি ও চুলকানি নিরাময়ে ঔষধ সমন্বিত শ্যাম্পু:

ঔষধ সমন্বিত শ্যাম্পু নিয়মিত মাথা পরিস্কার করলে খুসকি ও চুলকানি হতে অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া যায়। বাজারের অধিকাংশ খুশকি নাশক শ্যাম্পু গুলোতে নিম্নের এক বা একাধিক উপাদাগুলো বিদ্যমান-

o       টার বা আলকাতরা ( Tar)

o       সেলেনিয়াম সালফাইড

o       জিংক পাইরিথিওন/জিংক ওমাডিন

o       পিরোকেটন ওলামিন

o       এন্টিফানগাল উপাদান।

 

ঔষধ সমন্বিত শ্যাম্পু ব্যবহার:

খুশকি ও মাথার ত্বকের চুলকানিতে তীব্রতার উপর নির্ভর করে আপনি কত বার ঔষধ সমন্বিত শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন। শ্যাম্পু ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই প্রতিদিন ব্যবহারের আবার কিছু  ব্যবহার করতে হয় সপ্তাহে একবার।  কিছুদিন ব্যবহারের পরই আপনি বুঝতে পারবেন আপনার খুসকি নিয়ন্ত্রণে সপ্তাহে কয়দিন ব্যবহার করা উচিত।

 

যা মনে রাখতে হবে:

o       প্রায়  ৫০ শতাংশ লোকের খুশকি হয়।

o       খুশকি, সেবোরিক ডারমাটাইটিস, সোরেসিস ইত্যাদির কারণে মাথার ত্বকে চুলকানি হয়।

o       খুশকির চিকিৎসায় ও নিরাময়ে ঔষধ সমন্বিত শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

 

 

21-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

কোল্ড সোরস (Cold Sores)

 

কোল্ড সোরস্‌ হলো ত্বকের এক ধরনের ক্ষুদ্র ক্ষত যা হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের সংক্রমণে হয়। অধিকাংশ মানুষ শিশুকালে সংক্রমিত হয় কিন্তু কোন উপসর্গ দেখা যায় না। তবে অনেকের ত্বকে তরল পূর্ণ ফোস্কা দেখা যায়। আক্রান্ত ব্যক্তির লালা বা ক্ষতর সরাসরি সংস্পর্শে এ রোগ ছড়ায়। সাধারণত ঠোঁট, মুখের চারপাশ, নাক ও থুতনিতে ছোট ছোট ফোস্কা হয়।

হারপিস সিমপ্লেক্স:

বয়স্কদের ৯০ শতাংশের রক্তস্রোতে হারপিস সিমপ্লেক্স এন্টিবডি রয়েছে। অর্থাৎ তারা পূর্বে কোন না কোন সময় HSV দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল। যদিও প্রথম সংক্রমণ সাধারণত এন্টিবডি তৈরী করে না এবং কোন উপসর্গ দেখা দেয় না। সংক্রমিত এক তৃতীয়াশের কোল্ড সোর‌ হয় যা পুনঃ সংক্রমন নির্দেশ করে। অর্থাৎ তা সামপ্রতিক/প্রথম সংক্রমণ নয়।

 

প্রথমিত HSV  à¦¸à¦‚ক্রমণের উপসর্গ:

অনেকের (প্রধানত:শিশু) HSV  à¦¦à§à¦¬à¦¾à¦°à¦¾ সংক্রমণের উপসর্গ তৈরী হয়। যেমন-

-          জ্বর

-          দুর্বলতা

-          ফোস্কা এবং মুখের চারপাশে ঘা

-          ফুলে ওঠা

-          মুখের মধ্যে ও মাড়িতে ব্যথা

-          গলা ব্যথা

-          গলার গ্রন্থির স্ফীতি।

উপসর্গগুলো:

১৪ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। ঢোক গিলতে অসুবিধার কারণে শিশুরা খেতে পারে না এবং পানি শূন্যতা তৈরী হয়। নবজাতক, কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষের প্রাথমিক সংক্রমণের উপসর্গ তৈরী হয়।

উপসর্গ বর্ধক নিয়ামক:

কিছু কারণে HSV  à¦¸à¦‚ক্রমণের পর উপসর্গগুলোর মাত্রা বেড়ে যায়। তার  মধ্যে ঠান্ডা (কোল্ড) অন্যতম। যা কোল্ড সোরস্‌ নামের নির্দেশ করে। অন্যান্য কারণগুলো-

-          জ্বর জ্বর, বুকের সংক্রমণ

-          সূর্যের আলো

-          অনেক বাতাস

-          হরমোনের পরিবর্তন। যেমন- মাসিক চলাকালীন সময়।

-          শারীরিক বা মানসিক পরিশ্রম।

কোল্ড সোরস উপসর্গ:

-          কোল্ড সোরস দেখা দেওয়ার ১-২ দিন ত্বকে চুল্কানি বা অস্বস্তিঅনুভব।

-          ছোট ছোট ফোস্কা তৈরী।

-          ফোস্কার সাথে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া থাকতে পারে।

-          কয়েকদিন পর ফোস্কা ফেটে যায়।

-          ক্ষতের উপর মৃত ত্বক শুকাতে থাকে এবং প্রায় ১০ দিন পর খসে পড়ে যায়।

জটিলতা:

 à¦•à§‹à¦¨ চিকিৎসা ছাড়াই সাধারণত এই রোগ ভাল হয়। তবে কম বা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষের চিকিসার প্রয়োজন হতে পারে। HSV সংক্রমণের পরে যদি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হয় তাহলে জ্বর, ফোস‌কার মধ্যে পুঁজ, ফোস্কার চারপাশ লাল হয়ে ফুলে ওঠে। এক্ষেত্রে চিকিৎসা প্রয়োজন।  কোল্ড সোরস্‌ চোখ, আঙ্গুল বা শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। চোখ লাল হয় ও ব্যথা করে। চোখের কর্নিয়ার ক্ষতের সৃষ্টি হলে সাথে সাথে চিকিৎসা না নিলে চোখ অন্ধ হযে যেতে পারে।

একাধিক প্রকারের হারপিস সংক্রমণ:

HSV সংক্রমণে দুই প্রকার।

 HSV টাইপ-১, HSV টাইপ -2

মুখের চারপাশের কোল্ড সোরস্‌ সাধারণত HSV  à¦Ÿà¦¾à¦‡à¦ª-১ হয়। HSV টাইপ-২ দ্বারা সাধারণত প্রহজনতন্ত্রে সংক্রমণ হয়।

কিভাবে  à¦›à§œà¦¾à§Ÿ?
মানুষের মধ্যে সাধারণত মুখের লালা ও ফোস্কার সরাসরি স্পর্শে ছড়ায়। এই রোগ, প্রথম কয়েকদিন যখন ফোস্কাগুলো কেবল তৈরী হচ্ছে, এসময় সবচেয়ে বেশী ছড়ায়। উপসর্গ দেখা না দিলেও ভাইরাস সংক্রমিত মানুষ জীবানু ছড়াতে পারে। কারণ জীবানু এ সময় ঠোঁটের ত্বকের নীচে সুপ্ত অবস্থায় থাকে।

ভাইরাসের বিস্তার কিভাবে রোধ করা যায়?

আক্রান্ত ব্যক্তি কোল্ড সোর্‌স স্পর্শ করার পর হাত ভালভাবে ধুবেন। কোনভাবেই চোখে হাত দেওয়া যাবে না। কিছু জিনিস যৌথভাবে ব্যবহার করা যাবে না। যেমন-

-          টুথব্রাশ

-          গ্লাস বা বোতল

-          তোয়ালে বা অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিস

আক্রান্ত ব্যক্তি যা যা  à¦à§œà¦¿à§Ÿà§‡ চলবেন-

-          নবজাতক বা ছোট শিশুদের সংস্পর্শ।

-          অন্যকে চুমু দেওয়া।

-          পোড়া বা একজিমাযুক্ত শিশুর সংস্পর্শ

যাদের মধ্যে HSV এর বিস্তার প্রতিরোধ:

আক্রান্ত শিশুকে ফোস্কা শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয় বা যত্নকেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে।

চিকিৎসা:

 à¦•à§‹à¦²à§à¦¡ সোরস্‌ সাধারণত মারাত্মক কিছু নয় এবং ত্বকের স্থায়ী কোন ক্ষতি করে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে না। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ও অন্যান্য জটিলতা এড়ানোর জন্য নখ দিয়ে খোটা ও ফোস্কা ফাটানো উচিত নয়।

সাধারণ ব্যথা নাশক (প্যারাসিটামল) ও পোভিডন আয়োডিন-অয়েন্টমেন্ট (বিটাডিন) ব্যবহারে উপসর্গগুলোর অনেকটা উপশম ঘটে। এছাড়া এন্টিভাইরাল ঔষধ যেমন- এসাইক্লোভির ও ফ্যামসাইক্লোভির ক্রিম ও ট্যাবলেট ভাইরাসের বংশবৃদ্ধির ক্ষমতাকে কমিয়ে কোল্ড সোর এর স্থায়ীত্বকাল ছোট করে আনে। কোল্ড সোর তৈরীর প্রথম পর্যায়ে এসাইক্লোভির ক্রিম ভাল কাজ করে।

প্রদুর্ভাব প্রতিরোধ:

প্রাদুর্ভাব কমাতে পরামর্শ:

-          উপসর্গ বর্ধক নিয়ামকগুলো এড়িয়ে চলা।

-          বাইরে বেরোনোর সময় সূর্যালোক প্রতিরোধী ক্রিম মুখ ও ঠোঁটে লাগানো।

-          সাধরণ ¯^v‡¯’¨i প্রতি মনোযোগ দেয়া।

-          অসুস্থ্যতা এড়িয়ে চলা।

যা মনে রাখতে হবে :

-          HSV এর কারণে তৈরী মুখের চারপাশ ও নাকের ফোস্কাই হলো কোল্ড সোর।

-          কোল্ড সোর সহজেই অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যদিও অধিকাংশ বয়স্ক ব্যক্তি ই‌তমধ্যে আক্রান্ত।

-          ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ. চোখে কোল্ড সোর এর সংক্রমণ অথবা কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন  লোকের বেলায় বিস্তৃত কোল্ড সোর‌ ব্যতিত ইহা নিজে নিজেই ভাল হয়।

 

 

 

21-02-2013 রোগ ব্যাধি

শরীরের উকুন (Body Lice)

 

শরীরের উকুন (পেডিকুলাস ইউমেনাস ফরপোরিস) হলো এক ধরনের রক্তখেকো পোকা যেগুলো কাপড়-চোপড়ের ভিতর বিশেষ করে সেলাইয়ের মাঝে  ফাঁকা জায়গায় থাকে।  যে সকল মানুষ  অপরিচ্ছন্ন থাকে এবং ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় বাস করে, তারা এ ধরনের উকুনদ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়। এগুলো দ্বারা টাইফাস নামক রোগ ছড়াতে পারে।

 

            শরীরের উকুনের মাথায় উকুনকে মিলিয়ে ফেললে চলবে না। মাথার উকুন আরেক ধরনের পোকা। অনেক দেশে শরীরের উকুনের প্রাদুর্ভাব মাথার উকুনের চেয়ে বেশি, এগুলো কোন রোগ সৃষ্টি করেনা, তবে চামড়ায় সেকেন্ডারী ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন করতে পারে।

এটা কি?

বডি লাইস হলো একটি চ্যাপ্টাকৃতি পাখাবিহিন পোকা যার ছয়টি পা আছে। এরা বাদামী রঙের হয় এবং এ আকার ২-৫ মি.মি. এর মধ্যে হয়। এদের ডিম আকারে ছোট হয়। উকুনগুলো কাপড়ের সেলাই এর মাঝে ডিম পাড়ে এবং সেগুলো চামড়ায় ছড়ায়। ডিমগুলো এক ধরনের আঠা জাতীয় পদার্থ নিঃসরন করে আংটা তৈরী করে, যার দ্বারা এগুলো চুল বা চামড়া বা কাপড়ের সাথে আটকে থাকে।

            ডিম ফুটাতে ৫-১৪ দিন সময় লাগে। এটি নির্ভর করে উকুনের শরীরের তাপমাত্রার উপর। তবে যে সকল কাপড় রাতে খোলা হয় এবং ডিম ফুটার জন্য তাপমাত্রার ব্যাঘাত ঘটে, সেক্ষেত্রে ডিম ফুটতে একটু বেশি সময় নেয়। ডিম ফুটার ৭ দিন পর উকুন পূর্ণতা পায় এবং পূর্নাঙ্গ উকুনে পরিণত হয়। একটি মেয়ে উকুন  চার সপ্তাহ বাঁচে এবং প্রতিদিন ৮টি ডিম পাড়ে। স্থায়ীভাবে রক্ত পাওয়া যায়, এ রকম উৎস না থাকলে উকুন ২-৫ দিনের মধ্যে মরে যায়।

           

পূর্নাঙ্গ  উকুন মানুষের রক্ত খেয়ে বাঁচে। এগুলো  তাদের শক্ত থাবা  à¦à¦° মাধ্যমে কাপড়ের মধ্যে এবং চামড়ার মধ্যে ঢুকে  যায়, বিশেষ করে শরীরের যে অংশ নরম সে অংশে প্রবেশ করে।

লক্ষণসমূহ:

  • শুরুতে, লাল ফোটার মত, রূপ নেয়;
  • এই লাল ফোটার মত জিনিসটি উঁচু হয়ে লাম্প গঠন করে।

 

  • পুরো জায়গাটাকে তখন প্রদাহ শুরু হয়।
  • তখন সেখানে  চুলকানি সৃষ্টি হয়।
  • অনবরত চুলকানি থেকে সেকেন্ডারী  ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হয়।
  • শরীরের উকুন খালি চোখে দেখা যায়, অনেক সময় চামড়াতে, আবার অনেক সময় কাপড়ের সেলাই এর মাঝে দেখা যায়।

 

Transmission (রোগ ছড়ানো):

একজন আক্রান্ত লোকের জিনসপত্র, যেমন- কাপড়, বিছানা ব্যবহার করলে অন্যজন সহজেই আক্রান্ত হতে পারে। এমনকি একসাথে থাকলেও এ রোগ হতে পারে। প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে যাদের ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে যায় এবং যারা খোলা পরিবেশে  থাকে, ঘিঞ্জি ভাবে থাকে এবং কাপড় আধোয়া থাকে তাদের এ উকুন দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার প্রবনতা সবচেয়ে বেশি থাকে।

চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ:

  • সঠিক কীটনাশক প্রদান,যেটি সহজেই সকল ফার্মেসীতে পাওয়া যায়।
  • অন্যান্য চিকিৎসা প্রদান যেগুলো চুলকানি কমাবে এবং সেকেন্ডারী ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন রোধ করবে।
  • নিজস্ব জীবন ভঙ্গি উন্নত করতে হবে, অর্থাৎ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে, প্রতিদিন  গোসল করতে হবে।
  • রোগাক্রান্ত লোকের ব্যবহার করা জিনিসপত্র, কাপড় ব্যবহার বাদ দিতে হবে।
  • প্রতিদিন কাপড় পরিস্কার করতে হবে।
  • সেকেন্ড হান্ড কাপড়ের সেলাই এর ভাজে উকুন আছে কিনা, তা পরীক্ষা করে পড়তে হবে।
  • উকুনে আক্রান্ত লোকের ব্যবহৃত কম্বল এবং কাপড় গরম পানিতে ধুতে হবে এবং ভালভাবে ইস্ত্রি করতে হবে।
  • যেসব কাপড় ধোয়া সম্ভব হয় না, সেগুলোর ক্ষেত্রে একটু বেশি  নজরে দিতে হবে। এগুলোকে  তখন প্লাষ্টিকের ব্যাগে ভরে রাখতে হবে চার দিন।

যেগুলো মনে রাখতে হবে:

  • শরীরের উকুন হলো এক প্রকার রক্তখেকো ছোট পোকা যা কাপড়ে বিশেষ করে কাপড়ের সেলাই এর ফাঁকে ফাঁকে, ভাঁজে ভাঁজে থাকে।
  • যে সকল লোক, অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন থাকে, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় থাকে, তাদের এতে আক্রান্ত হওয়ার প্রবনতা বেশি থাকে।
  • এটি প্রতিরোধ করার জন্য প্রতিদিনের জীবন অতিবাহনের নিয়ম উন্নতি করতে হবে, অর্থাৎ প্রতিদিন গোসল করা এবং কাপড় ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে।

 

 

 

21-02-2013 রোগ ব্যাধি

ব্রণঃ এক বিব্রতকর সমস্যা

 

বয়ঃসন্ধির সময় হরমোনের মাত্রার ভারসাম্যের অভাবে ত্বকের তেলগ্রন্থি ও  সেবাম বেড়ে যায়। এতে লোপকুপগুলো বন্ধ হযে যায় ও ব্যাটেরিয়া সংক্রামণ হয়। এভাবে জীবাণুর বিষক্রিয়ায় ত্বকে ব্রণের সৃষ্টি হয়। ব্রণের জীবাণুর নাম  প্রোপাইনো ব্যাকটেরিয়াম একনে।

 

ত্বকের গঠন অত্যন্ত জটিল। এ জঠিলতম ত্বকে একাধিক কারণে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেয় এর মধ্যে অন্যতম হলো ব্রণের সমস্যা। ব্রণ মূলত টিনএজারদের সমস্যা। এ বয়সে যখন মুখের সৌন্দয্যের প্রতি সবাই আকর্ষণ বোধ করে ও প্রয়োজনীয়তা বোধ করে ঠিক সে বয়সেই এই বিশ্রি গোটাগুলো দেখা দেয় যা তাদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাড়ায়। অথচ একটু সচেতন থাকলেই এ সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব।

ব্রণ হওয়ার কারণঃ

বয়ঃসন্ধির সময় হরমোনের মাত্রার ভারসাম্যের অভাবে ত্বকের তেলগ্রন্থি ও সেবাম ক্ষরণ বেড়ে যায়। পুরুষের হরমোন অর্থাৎ এনডোজেন ত্বকের তৈলগ্রন্থিকে অতি সক্রিয় করে তোলে। এতে লোমকুপগুলো বন্ধ হয়ে  ব্যাকটেরিয়া সংক্রামণ হয়। এবং জীবানুর বিষক্রিয়ায় ত্বকে ব্রণের সৃষ্টি হয়। সাধারণত বয়ঃসন্ধিরকালে অথবা হরমোনের প্রভাবে ব্রণ হযে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে বংশগত প্রভাবেও ব্রণ কমবেশি হয়ে থাকে। সাধারণত ১৩ থেকে ১৯ বছরের বয়সে এটি বেশি হয়। এ বয়সের শতকরা নব্বই ভাগ লোকের কমবেশি ব্রণ হয় থাকে।

তবে ২০ বছর বয়সের পর থেকে এগুলো ¯^vfvweKfv‡eB আস্তে আস্তে কমতে তাকে। যাদের মুখ অতিরিক্ত তৈলাক্ত, তাদের ব্রণ তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। প্রতি স্কোয়ার সেন্টিমিটার মুখের ত্বকে ৪০০-৯০০ সেবাম বা তৈলগ্রন্থি থাকে অথচ অন্য জায়গায় ত্বকে ১০০ গ্রন্থি থাকে।

 

কখন ও কোথায় ব্রণ হয়?

বয়ঃসন্ধির সময় প্রথম ব্রণ দেখা যায়। ছেলেদের ক্ষেত্রে ১৬-১৯ বছর বয়ংসের মাঝে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৪-১৬ বছর বয়সে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। ৮০ শতাংশের ক্ষেত্রে ২০ বছর বয়সের মাঝামাঝি সময় থেকে ব্রণ হওয়ার হার কমে যেতে থাকে। তবে অনেকের ৩০-৪০ বছর বয়স পর্যন্ত ব্রণ হওয়ার প্রবণতা থেকেই যায়, তবে পিঠে, ঘাড়ে ও বুকেও হতে পারে।

কী কারণে ব্রণ বেড়ে যায়?

গনমকালে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে যায়। বেশি ঘামলে সেবাম ও তৈলগ্রন্থির নালি বন্ধ হয়ে ব্রণ হতে পারে। এ ছাড়া নানা রকম কসমেটিকের কারণে ব্রণ হতে পারে। তেলতেলে চুল ও মাথার খুশকি থেকে ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মানসিক চাপ ও পরজাপ্ত   à¦˜à§à¦® না হলেও ব্রণ হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। তা ছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং মহিলাদের মাসিক ঋতস্রাবের সাথেও ব্রণের সম্পর্ক রয়েছে।

ব্রণ হলে কি করবেন?

¨      দিনে তিনি/চারবার হালকা সাবান বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুবেন।

¨      ব্রণে হাত লাগাবেন না।

¨      তেল ছাড়া অথাৎ ওয়াটার বেইজড্‌ মেকআপ ব্যবহার করবেন।

¨      মাথা খুশকিমুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।

¨      পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন এবং নিজের আলাদা তোয়ালে রাখুন।

¨      রাতে ঠিক মতো ঘুমানোর চেষ্টা করবেন।

¨      মানসিক চাপ পরিহার করুন।

¨      প্রচুর পরিমাণে ফল, সব্জি খান ও প্রচুর পানি পান করুন।

ব্রণ হলে কি করবেন না:

¨      রোদ্রে যাবেন না, রৌদ্র এড়িয়ে চলুন।

¨      তেলযুক্ত ক্রিম বা  ­­à¦«à¦¾à¦‰à¦¨à§à¦¡à§‡à¦¶à¦¨ ব্যবহার করবেন না।

¨      ব্রণে হাত লাগাবেন না। ব্রণ খুঁটবেন না।

¨      চুলে এমনভাবে তেল দেবেন না যাতে মুখটাও তেলতেলে হয়ে যায়।

¨      অতিরিক্ত তেল, ঘি ও মশালা খাবেন না।

কেন ব্রণের চিকিৎসা করাবেন?

ব্রণ হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিৎ। কারণ চিকিৎসা না করালে অনেক সময় ব্রণ ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। ত্বকে গভীর প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। আর ব্রণ হলে চেহারা খারাপ দেখানোর কারণে হীনমন্যতা ও অন্যান্য সমস্যা হতে পারে। শুরুতেই তাই এর সঠিক চিকিৎসা দরকার।

ব্রণের চিকিৎসা:

ব্রণের চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ বা জার্মাটোলজিস্টের শরনাপন্ন হলে ভালো হয়। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্রণে অন্যের কথা শুনে নিজের বা নিজের পছন্দসই কোন ঔষধ লাগাবেন না। কতটা ব্রণ হয়েছে তার  ওপর নির্ভর করে খাবার ও লাগানোর জন্য এন্টিবায়োটিক ঔষুধ দেয়া হয়। তবে ব্রণের চিকিৎসা সময় সাপেক্ষ। তাই ধৈর্য্য ধরতে হবে আপনাকে। হঠাৎ চিকিৎসাপদ্ধতি বা ডাক্তার বদলাবেন না। প্রায় তিরিশ বছর ধরে বেনজাইল পারঅক্সাইড ব্রণের চিকিকৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতি রাতে ২.৫ শতাংশ বেনজাইল পারঅক্সাইড জেল ব্যবহার করতে হয়। এভাবে এক মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। যদি ত্বক শুষ্ক না হয়ে ওঠে তবে ৫ শতাংশ বেনজাইল পারঅক্সাইড ব্যবহার করা যায়। আন্টিবায়োটিক জেল- ক্লিনডামাইসিন এবং ইরিথ্রমাইসিন জেল যথেষ্ট উপকারী। দিনে বেনজাইল পারঅক্সাইড জেল ও রাতে আন্টিবায়োটিক জেল ব্যবহার করা যেতে পারে।

পুঁজযুক্ত ব্রণের ক্ষেত্রে আন্টিবায়োটিক ক্রিম খুব উপকারী।

ব্রণ ও খাওয়া দাওয়া:

মানুষের খাদ্যঅভ্যাস ব্রণকে প্রভাবিত করে কিনা, সে বিষয়ে এখনো গবেষণা চলছে। দেখা গেছে ব্রণ হওয়ার উপাদানগুলোর মাঝে খাওয়া-দাওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রথমত, শরীরে ট্রক্সিক উপদান যাতে বেরিয়ে যায় এজন্য প্রচুর পানি পান করতে হবে। নিয়মিত খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার রেখে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করতে হবে। হজম যাতে ঠিকমতো হয় সেজন্য অতি মশলাযুক্ত খাবারে এড়িয়ে চলুন; চর্বি এড়াতে হবে। পালংশাক লেটুসপাতা ব্রণ বাড়িয়ে দেয় বলে জানা গেছে। ক্লোরাইড ও ব্রোমাইডযুক্ত ঔষধ মাছ, মাখন, পনির এগুলো ব্রণ বাড়িয়ে তোলে। চা-কফিও দুই কাপের বেশি পান করা যাবে না। প্রচুর ফল ও সব্জি খেতে  হবে। ভিটামিন  à¦ ও সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরী। গাজর, কুমড়া, পেঁপে, পুইশাক ও যেকোনো রঙিন ফল ও সব্জিতে ভিটামিন  এ  à¦°à§Ÿà§‡à¦›à§‡ আর সি  à¦°à§Ÿà§‡à¦›à§‡ কাঁচা ফল ও যেকোনো টক ফলে।

যা মনে রাখা প্রয়োজন:

1.       হরমোনের মাত্রার ভারসাম্যের অভাবে ত্বকের তেলগ্রন্থি ও সেবাম বেড়ে যায়। এতে লোপকুপগুলো বন্ধ হযে যায় ও ব্যাটেরিয়া সংক্রামণ হয়। এভাবে জীবাণুর বিষক্রিয়ায় ত্বকে ব্রণের সৃষ্টি হয়।

2.      চিকিৎসা না করালে অনেক সময় ব্রণ ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। ত্বকে গভীর প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে।

3.      সঠিক চিকিৎসা, কিছু নিয়ম মেনে চলা আর খাদ্যাভ্যাসের পরিবরতনের মাধ্যমে ব্রন থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।

 

21-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

যক্ষা

     

 

যক্ষা হলে রক্ষা নাই এই কথাটির ভিত্তি নাই। যদিও কথাটির প্রথম অংশ বহু যুগ ধরে প্রচলিত। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতি ও গণমাধ্যমে প্রচারের ফলে লাইনের পুরো অংশই এখন মানুষের বিশ্বস্ততা অর্জন করেছে। তথাপি যক্ষা একটি ভয়াবহ রোগ। সেই আদি যুগ থেকে  এখন পর্যন্ত চিকিৎসা বিজ্ঞানের চরম উন্নতি কালেও যক্ষা লক্ষ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারন। তবে তা আমাদের মত অনুন্নত দেশ সমূহেই বেশী।

     টিউবার কিউলোসিস বা যক্ষা (সাধারণভাবে টিবি নামে পরিচিত) হল মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবার কিউলোসিস নামক জীবাণু দ্বারা ঘটিত এক সংক্রামক ব্যাধি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই জীবাণু ফুসফুসকে আক্রান্ত করে, যদিও দেহের সমস্ত অংশই আক্রান্ত হতে পারে।

 

 à¦¯à¦•à§à¦·à¦¾à§Ÿ আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশির, মাধ্যমে জীবাণু বাতাসে ছড়িয়ে পড়লে সেখান থেকে অন্য সুস্থ্য ব্যক্তি আক্রান্ত হয়ে থাকে।

 

যক্ষার জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত সবারই কি যক্ষা হয়?

     গবেষণায় দেখা গেছে, যক্ষার জীবাণু দ্বারা ইনফেকশন হলেও শতকরা ১০ ১২ জন রোগে আক্রান্ত হয়। এবং লক্ষণ প্রকাশিত হয়। ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, ঔষধ ইত্যাদির ফলে জীবাণু সুপ্ত অবস্থায় থাকে। রোগ তৈরী করতে পারে না।

 

যক্ষার জীবাণু যেভাবে ছড়ায়ঃ

যক্ষায় আক্রান্ত ব্যক্তির ফুসফুস বা শ্বাস নালীতে সক্রিয় মুক্ত জীবাণু থাকে, সেক্ষেত্রে রোগীর হাঁচি, কাশি, থুথুর সাথে জীবাণু বাইরে বেরিয়ে আসে, বাতাসে ছড়িয়ে পরে। কাছাকাছি অবস্থিত লোকজন সেই জীবানুযুক্ত বাতাস শ্বাসের সাথে গ্রহণ করলে জীবানু দ্বারা সংক্রমিত হয়। জীবাণু ফুসফুসে ঢুকে সংখ্যায় বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরবর্তিতে ফুসফুস থেকে রক্তের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এমনকি ফুসফুস ও শ্বাসনালী আক্রান্ত হবার ফলে সেও হাঁচি কাশির মাধ্যমে অন্যকে আক্রান্ত করতে পারে। তবে ফুসফুস, গলা ইত্যাদি ছাড়া শরীরের অন্যান্য স্থানে যক্ষা হলে তা সাধারণত অন্যকে সংক্রমিত করে না। এছাড়াও যে ব্যক্তির মধ্যে একটিভ ডিজিজ নেই সেও অন্যকে সংক্রমিত করতে পারে না। তবে গর্ভবতী মা এর যদি যক্ষা রোগ থেকে থাকে এবং চিকিৎসা না পেয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে প্রসবের সময় বা পূর্বে মা এর থেকে শিশুও যক্ষায় আক্রান্ত হতে পারে। তবে এ ঘটনা একেবারেই অপ্রতুল।

 

একটিভ যক্ষা রোগের কিছু লক্ষণঃ

§        দীর্ঘমেয়াদী কাশি,

§        দূর্বলতা,

§        অবসাদবোধ,

§        ওজন কমে যাওয়া,

§        রাতে ঘাম হওয়া,

§        কাশির সাথে রক্ত বের হওয়া ইত্যাদি।

 

যাদের ঝুঁকি বেশীঃ

একটিভ যক্ষার রোগীর খুব কাছাকাছি দীর্ঘদিন অবস্থান করলে যক্ষায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় বেশী। যেমনঃ

1.      যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম যেমনঃ শিশু বেশী বয়স্ক বৃদ্ধ ব্যক্তি।

2.     যারা অস্বাস্থ্যকর, ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় বাস করে।

3.     ডায়বেটিস, এইডস ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি।

4.     হেলথ প্রফেশনের সংগে সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তিগন।

5.     মারাৱক অপুষ্টির শিকার।

6.     যারা টিকা নেয় নি।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

ডাক্তার যদি সন্দেহ করেন আপনি যক্ষা রোগে আক্রান্ত, সেক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের জন্য নিম্নোক্ত পরীক্ষাগুলো করাতে পারেন।

1.      কাশি পরীক্ষাঃ ২দিনে মোট ৩টি কাশি নিয়ে জীবাণু পরীক্ষা করা।

2.     মনটো টেস্টঃ টিউবারকুলিন স্কিন টেস্ট।

3.     এক্স-রেt বুকের এক্স-রে করে ফুসফুসে যক্ষা থাকার সম্ভাবতা দেখা যায়।

এছাড়াও চিকিৎসা শুরুর পূর্বে বা অন্য রোগ আচে কিনা দেখার জন্য রক্তের সাধারন পরীক্ষা, সি. বি. সি, ই. এস. আর, লিভার ফাংশন টেস্ট করতে হতে পারে।

 

যক্ষার চিকিৎসাঃ

যক্ষা হলে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। সাধারণত ৬ মাস থেকে ৯ মাস ঔষধ খেতে হয়, কোন কোন ক্ষেত্রে ১ বছর ঔষধ খেতে হয়। রোগের মাত্রা, আক্রান্ত স্থান, রোগীর বয়স, ওজন, শারীরিক অবস্থা, আনুষঙ্গিক অন্যান্য রোগ ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে ডাক্তার প্রতি রোগীর জন্য আলাদা আলাদা ভাবে হিসেব করে ঔষধ ঠিক করেন। অনেক সময় ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার জন্য কিছু দিন ঔষধ বন্ধ রাখতে হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ঔষধে জীবাণু না মারা যেতে পারে, সে ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন ঔষধ ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়।

 

যক্ষারবিস্তারিত

-->

21-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

শ্বাসতন্ত্র

 

মানব দেহের শ্বাস-প্রশ্বাস এর প্রধান অংশ হল ফুসফুস বা লাংস। মানুষ ফুসফুসের মাধ্যমে বাতাসের সাথে অক্সিজেন গ্রহণ করি ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করে। এই অক্সিজেন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের আদান প্রদান আমাদের জীবন ধারণের জন্য একান্ত অপরিহার্য। শ্বাস প্রশ্বাস মূলত নির্ভর করে ফুসফুসের নিচে অবস্থান করা একটি মাংসল পর্দায় (ডায়াফ্রাম) উঠা নামার উপর  এবং কিছুটা বুকের খাচার সমপ্রসারণ ও সংকোচনের উপর।

 

 

আমাদের শ্বাসতন্ত্র নাক থেকে ফুসফুস পর্যন্ত বিস্তৃত এর বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন হতে পারে বা ক্যান্সার হতে পারে।

 

নাক ও ট্রাকিয়াঃ

বাতাস মূলত নাক  দিয়ে প্রবেশ করে। নাকের ভেতরের পাতলা আবরণ বাতাসের জলীয় বাস্পের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে, উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ করে। তাছাড়া নাকের ভেতরের বড় বড় লোম ও ট্রাকিয়া ভেতরের ছোট ছোট চিকন অংশের মত অংশগুলি বাতাসে ভাসমান ক্ষদ্র ক্ষুদ্র বালি, ময়লা ও জীবাণুকে আটকে ফেলে ও হাঁচি বা কাশির বাইরে বের করে দেয়।

ট্রাকিয়া হল শ্বাস নালী, নাকের মধ্য দিয়ে আসা বাতাস ট্রাকিয়ার ভেতর দিয়ে গিয়ে ফুস ফুসে প্রবেশ করে। এটি ১টি লম্বা নালী যা বেশ কিছু গোলাকৃতি নরম হাড় (কার্টিলেজ) ও মাংস দ্বারা তৈরী এবং হাড়গুলি নালীর চুপসে যাওয়া প্রতিরোধ করে।

ফুসফুসঃ

বুকের কাঁচার ভেতরে ফুসফুস অবস্থান করে। বাইরের হাড় এক বিভিন্ন আঘাত থেকে রক্ষা করে। মানব দেহে ডানও বাম পাশে ২টি ফুস ফুস। প্রতিটি আলাদা ১টি পর্দা দ্বারা আবৃত যার নাম প্লুরা। ফুসফুস এর গঠন অনেকটা স্পঞ্জ বা ফোমের মত, যা সংকুচিত ও প্রসারিত হতে পারে। ট্রাকিয়া প্রথমে দুই ভাগ হয়ে ২ দিকের ফুসফুসে প্রবেশ করে।

চিত্রঃ  à¦¬à§à¦°à¦‚কাস ( সুস্থ্য - হাপানী আক্রান্ত)

পরবর্তীতে তা হাজার হাজার চিকন নালীতে ভাগ হয় ও সর্বশেষে বায়ু-ভর্তি থলিতে (এলভিওলি) রুপান্তরিত হয়। এই থলির আবরণের সাথে সাথে অসংখ্য সুক্ষ চিকন রক্তনালী প্রবাহিত যা গ্যাসের আদান প্রদানে সাহায্য করে।

চিত্রঃ এলভিওলি ও রক্তনালী

শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য মাংশপেশীঃ

ফুসফুসের প্রসারনের জন্য বুকের ভেতরে শুন্যতা তৈরী হতে হয়। এই শুন্যতা  তৈরী হয় যখন ফুসফুসের নিচের ডায়াফ্রাম সংকুচিত হয়ে নিচে নেমে যায় ও বুকের খাচা প্রসারিত হয়ে বাইরের দিকে ফুলে উঠে। ফলে শূন্যতা  পূরণের জন্য বাতাস ফুসফুসের ভেতরে প্রবেশ করে। আবার যখন ডায়াফ্রাম সংকুচিত হয়ে উপরে ধাক্কা দেয় ও বুকের খাচা সংকুচিত হয়ে নেমে আসে তখন ফুসফুস চুপসে যায় ও কার্বন ডাই অক্সাইডযুক্ত বাতাস বাইরে বের করে দেয়।

গ্যাসের আদান প্রদানঃ

শরীরে অক্সিজেন ব্যবহৃত হবার পর যে কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরী হয়, তা রক্তের মাধ্যমে এসে ফুসফুসে প্রবেশ করে। ফুসফুসের এলাভিত্তলির পর্দার উপর অবস্থান করা রক্তনালীতে এই কার্বন ডাই অক্সাডযুক্ত রক্ত আসে, আর ভেতরে বাতাসে থাকে অক্সিজেনযুক্ত বাতাস।  এ অবস্থায় রক্তের কার্বন ডাই অক্সাইড এলভিওলির বাতাসে চলে আসে, আর অক্সিজেন রক্তে মিশে যায়।

কথা বলাঃ

শ্বাসতন্ত্র আমাদের কথা বলার সংগেও জড়িত। অথবা যখন নিঃশ্বাস ছাড়ি, তখন তা গলার ভেতরের ভোকাল কর্ডের মাঝখান দিয়ে প্রবেশ করলে ভোকাল কর্ডের নড়াচড়া ও মুখের  জিহবায় নড়াচড়ার মাধ্যমে শব্দ তৈরী হয়। কি ধরনের শব্দ তৈরী হবে তা নির্ভর করে।

ক. ভোকাল কর্ডের দৈর্ঘ্য ও টানের উপর।

থ. বুকের খাচার আকৃতি।

গ. কি পরিমাণ বাতাস বের হচ্ছে ও

ঘ. জিহবা ও ঠোট কিভাবে নড়ছে তার উপর।

সাধারণ সমস্যাঃ

শ্বাসতন্ত্রের সাধারণ সমস্যা ও রোগ হলঃ

ক. হঁপানী বা এজমাঃ শ্বাসনালী চিকন হবার কারণে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট হয়, কাশির মত শব্দ করে।

থ. ব্রঙ্কাইটিসঃ শ্বাস নালীর ভেতরের আবরণের প্রদাহ।

গ. এমফাইসেমাঃ এলভিওলির রোগ।

ঘ. নিউমোনিয়াঃ ফুসফুসের প্রদাহজনিত রোগ।

ঙ. ল্যারিঞ্জাইটিসঃ ল্যারিংস এর (যেখানে ভোকাল কর্ড থাকে) প্রদাহ

চ. ইনফ্লুয়েঞ্জাঃ ভাইরাসজনিত রোগ।

ছ. হে ফিভারঃ ময়লা, উদ্দিপক বস্তু, ফুলের রেনু ইত্যাদির এলার্জিক রিএকশন।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

1.      ফুসফুস হল মানব দেহের শ্বাস-প্রশ্বাস এর প্রধান অংগ যার মাধ্যমে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মিশে ও রক্তের কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাতাসে বের হয়ে যায়।

2.     মূলত ডায়াফ্রামের সংকোচন ও প্রসারণ এবং বুকের খাচার  উঠানামার ফলে শ্বস-প্রশ্বাস ঘটে।

 

 

15-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

নিউমোনিয়া

 

নিউমোনিয়া হলো ফুসফুসের প্রদাহজনিত রোগ যা সাধারণত ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমণের ফলে হয়। যে কোন সময়, যে কোন বয়সের  মানুষ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিশু বা বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হয়। নিউমোনিয়া হঠাৎ, খুব দ্রুত হতে পারে বা ধীরে ধীরে দেথা দিতে পারে।

          মানুষের ফুস ফুস মূলত হাজার হাজার ছোট ছোট বায়ুপূর্ণ টিউব (ব্রঙ্কাই) দিয়ে গঠিত, এর শেষ  অংশ বেলুনের মত বায়পূর্ণ থলিতে (এলভিওলি) গিয়ে শেষ হয়েছে। প্রতিটি এলভিওলি তার চারপাশে সুক্ষ্ণ জালের মত রক্তনালী দ্বারা বেষ্ঠিত। এই অংশে এসে ফুসফুসের এলভিওলির বাতাসের অক্সিজেন রক্তে প্রবেশ করে ও রক্তের কার্বন ডাই অক্সাইড এলভিওলিতে প্রবেশ করে।

নিউমোনিয়া হলে ফুসফুসের এক বা  উভয় পার্শ্বে অল্প বা বেশি স্থানের এলভিওলিতে পূজ বা তরল পদার্থ জমে ঐ স্থানে গ্যাসের আদান প্রদানে বাধা সৃষ্টি করে। আর অক্সিজেন আদান প্রদানের সমস্যার জন্য রোগীর শ্বাস কষ্ট হয়,  à¦˜à¦¨ ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস ফেলতে হয় এবং জীবাণুর ইনফেকশনের কারণে জ্বর আসে। আক্রান্ত

স্থানকে অনেক সময় কনসলিডেশন, কোলাপস ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে।

 

লক্ষনসমূহঃ

নিউমোনিয়ার লক্ষন মূলত নির্ভর করে রোগীর বয়স, রোগের মাত্রা, জীবাণু, কারণ এবং রোগীর  ইমিউনিটির অবস্থার উপর। সাধারণত যে সব লক্ষণ দেখা দিতে পারে, তা হল-

-         দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস (২ মাসের নিচে ৬০ এর অধিক ২-১২ মাস বয়সে ৫০ এর অধিক ও ১ বছরের উপরে ৪০ এর অধিক, পূর্ণ বয়সে ৩০ এর অধিকবার - মিনিটে)

-         শ্বাসকষ্ট, কাশি, জ্বর, গ্যা ব্যাথা, ক্ষুধা মন্দা, পেট ব্যাথা,মাথা ব্যাথা, বুকে ব্যাথা, ঠোট-জিহ্বা,মুখ ও নাকের আগা বা হাত পায়ের  আঙ্গুল নীল বর্ণ (সায়নোসিস) ধারণ করে-যা অক্সিজেনের অভাবে হয়।

 

কারণঃ

সাধরণ ঠান্ডা, কাশি, সর্দি পরে অনেক সময় নিউমোনিয়া দেখা দেয়। অনেক সময় কোন কারণ জানা যায় না। যে সব জীবাণু দ্বারা সাধারণত নিউমোনিয়া হয়ঃ

ব্যাকটেরিয়াঃ স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনি, হেমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, স্ট্যাফঅরিয়াস, ক্লেবসিয়েলা ইত্যাদি জীবাণু দ্বারা হয়। তা ছাড়া হাসপাতালে থাকাবস্থায় সিউডোমোনাস, ই-কোলাই নামক জীবাণু দ্বারা নিউমোনিয়া হয়।

ভাইরাসঃ  ইনফ্লুয়েঞ্জা, প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জা, আর, এস ডি সিসেলস,  ক্ল্যামাইডিয়া, মাইকোপ্লাজমা ইত্যাদি ভাইরাস দ্বারা হয়। সাধারণভাবে শতকরা ৫০ ভাগ নিউমোনিয়া ভাইরাস দ্বারা হতে দেখা যায়।

 

যাদের ইমিউনিটি কম -  à¦¤à¦¾à¦¦à§‡à¦° ক্ষেত্রে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ছাড়া নিউমোসিসটিস ক্যারিনি, এসপারজিলাস সাইটোমেগালো ভাইরাস, হার্পিস ভাইরাস, মাইকোব্যাটেরিয়াম টিবি ইত্যাদি দ্বারা এবং কিছু কিছু এনেরোবিক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা নিউমোনিয়া হয়।

 

ধরণঃ

রোগের কারণ, আক্রমণের স্থান, মেয়াদ ইত্যাদির উপর নির্ভর করে নিউমোনিয়াকে বিভিন্নভাবে শ্রেণীবিন্যাস করা হয়। যেমন-

-         লোবার নিউমোনিয়া

-         ব্রঙ্কো নিউমোনিয়া

-         পোস্ট মিসেলস নিউমোনিয়া

-         ইন্টারস্টিশিয়াল নিউমোনিয়া

-         পারসিসটেন্ট নিউমোনিয়া

-         রিকারেন্ট নিউমোনিয়া

-         নিউমোনাইটিস নিউমোনিয়া

 

রোগ নির্ণয়ঃ

রোগের ইতিহাস, রোগীর শারীরিক পরীক্ষা ও বুকের এক্স-রে করে রোগ নির্ণয় করা যায়। জীবাণু নির্ণয়ের জন্য কাশি বা সর্দি নিয়ে পরীক্ষা করা যেতে পারে। প্রায় একই ধরণের রোগ লক্ষণ যে যে রোগে হতে পারে, তা হল- ব্রঙ্কিওলাইটিস, হাপানি, কনযেসটিভ হার্ট ফেইলর, যক্ষা, ফুসফুসে পুজ জমলে, শ্বাসনালীতে খাদ্য বা কোন কিছু ঢুকলে।

চিকিৎসাঃ

অনেক ক্ষেত্রে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিজেই  নিউমোনিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ( বা ভাইরাস দিয়ে হলে এমনিতেই কিছুদিন পর ভাল হয়ে যেতে পারে) তবে এন্টিবায়োটিক দিলে সুস্থ হওয়া ত্বরান্বিত হয়। বয়স ও রোগর মাত্রা বুঝে চিকিৎসা দেয়া হয় । যেমন -

ক. এন্টিবায়োটিক-ব্যাকটেরিয়াকে মারার জন্য।

খ)  অক্সিজেন-শ্বাসকষ্ট বা সায়নোসিস থাকলে।

গ)  ঔষধ-ব্যাথা জ্বর কমাবার জন্য।

ঘ) হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা করা    ঙ) পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি, তরল খাবার, ও বিশ্রাম নেয়া ।

 

রোগের জটিলতাঃ

সঠিক ভাবে চিকিৎসা না হলে অনেক ক্ষেত্রে  দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা ও জটিলতা দেখা দেয়। তাছাড়া নিউমোনিয়া শিশু মৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ। যে সব জটিলতা হতে পারে-

-         লাংস এবসেস

-         ব্রঙ্কিয়াকটেসিস

-         প্লুরাল ইফিউসন

-         এমপায়েমা থোরাসিস

-         বিস্তারিত

-->

15-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

ফুসফুসের রোগ COPD

 

ফুসফুসের এক ধরনের বিশেষ রোগ বা রোগ সমুহের নাম COPD।

মানব দেহে স্বাভাবিক ভাবে দুইটি ফুসফুস থাকে। শ্বাসনালী ফুসফুসে বাতাস বয়ে নিয়ে যায়। শ্বাসনালী গলা থেকে শুরু হয়ে গাছের শাখা-প্রশাখার  মত ছোট হতে থাকে। প্রতিটি শাখা- প্রশাখার প্রান্তে অনেকগুলো ছোট ছোট বেলুনের মত বায়ুথলি থাকে।

সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে প্রতিটি শ্বাসনালী  পরিস্কার এবং উন্মুক্ত থাকে। প্রতিটি ছোট বায়ুথলি বায়ুপূর্ণ থাকে। তখন

বাতাস দ্রুত বেরিয়ে যেতে পারে।

 

যদি আপনার COPD থাকে, তাহলে আপনার ফুসফুসের শ্বাসনালীর মুখ ছোট হযে যায়। কম পরিমাণ বাতাস ভিতরে ঢুকতে পারে, কারণ-শ্বানালীর দেয়াল মোটা হয়ে যায় এবং ফুলে যায়।

 

শ্বাসনালীগুলো তার চারপাশের ছোট ছোট মাংশপেশী দ্বারা সংকুচিত  হযে যায়। শ্বাসনালীর ভিতর আঠালো শ্লেষ্মা তৈরী হয়,যা সাধারণত কাশির সাথে বেরিয়ে আসে। অন্যদিকে ক্ষুদ্র বায়ুথলি গুলো সম্পূর্ণভাবে বাতাস বের করে দিতে পারে না, যার কারণে ফুসফুস পরিপূর্ণ অনুভূত হয়।

 

COPD দ্বারা বুঝায় -

chronic Obstructive Pulmonary Dieease.

Chronic বলতে বুঝায় যা দীর্ঘদিন

যাবৎ নিরাময় হয় না

Obstructive শব্দের অর্থ আংশিকভাবে বন্ধ

Pulmonary বলতে বুঝায় ফুসফুসের ভিতর,

Disease অর্থ রোগ।

মুলত COPD বলতে শ্বাস নালীর ৩ টি রোগের যে কোনো ১ টি বা একাধিকের উপস্থিতি নির্দেশ করে। এরা হল ক্রনিক ব্রংকাইটিস, এম্ফাইসিমা ও বিশেষ ধরনের হাপানী।

 

 

কাদের COPD হতে পারে?

·        অন্যের সংস্পর্শে COPD হয় না। সাধারণত প্রাপ্ত বয়স্কদের COPD হয়ে থাকে, বাচ্চাদের নয়।

·        বেশীর ভাগ COPD রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, হয় তারা ধূমপায়ী অথবা অতীতে ধূমপায়ী ছিলেন। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যে কোন ধূমপানই COPD তৈরী করতে পারে।

·        আবার কিছু COPD রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, তারা এমন বাসায় বসবাস করতেন সেখানে রান্নার স্টোভ বা ঘর গরম রাখার জন্য হিটার ব্যবহারের ফলে প্রচুর ধোঁয়া উৎপন্ন হতো।

·        আবার্‌ কখনো কখনো দেখা যায়, COPD রোগীরা বহু বছর যাবৎ ধূলিময় বা ধোঁয়াযুক্ত স্থানে কাজ

    à¦•à¦°à¦¤à§‡à¦¨à¥¤

·        বেশীরভাগ COPD রোগীর বয়স ৪০ এর বেশী, কিন্তু ৪০ এর কম বয়সেও COPD হতে পারে।

 

রোগ নির্নয়ঃ

প্রাপ্ত বয়স্কদের যদি শ্বাসকষ্ট থাকে কিংবা দীর্ঘদিন যাবৎ কাশি নিরাময় না হয়, তাহলে COPD থাকতে পারে। যদি একমাসের বেশী সময় ধরে আপনার শ্বাসকষ্ট বা কাশি থাকে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। বেশীরভাগ লোক যতদিন পর্যন্ত শ্বাকষ্টের সমস্যা খুব তীব্র না হয়, ততদিন পর্যন্ত ডাক্তারের কাছে যায় না।

যদি আপনি ডাক্তারের পরামর্শ মত চলেন, তাহলে -

·        আপনি কম শ্বাসকষ্ট বোধ করবেন।

·        আপনার কাশি কম হবে।

·        আপনি শারীরিকভাবে সবল বোধ করবেন এবং বাইরে ভালভাবে ঘোরাফেরা করতে পারবেন।

·        আপনি মানসিকভাবে উৎফুল্ল থাকবেন।

 

ডাক্তার কিংবা নার্স আপনাকে পরীক্ষা করে দেখবেন। তাঁরা রোগের ইতিহাস,  à¦¶à§à¦¬à¦¾à¦¸-প্রশ্বাস এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। তাঁরা আপনার বাসস্থান ও  কর্মস্থল সম্পর্কে জানতে চাইবেন।

আপনাকে শ্বাস-প্রশ্বাসের কিছু পরীক্ষা করতে হতে পারে। সাধারণত COPD  স্পাইরোমেট্রি নামক একটা সাধারণ পরীক্ষা দ্বারা নির্ণয় করা হয়। এ পরীক্ষা খুবই সহজ এবং ব্যাথামুক্ত। আপনাকে স্পাইরোমিটার নামক একটি যন্ত্রের সাথে যুক্ত একট রাবারের নলের মধ্যে জোরে শ্বাস ছাড়তে বলা হবে।

এ ছারাও বুকের এক্স-রে করেও রোগ নির্নয় করা যায়।

 

প্রকার ভেদ ও লক্ষনঃ

 

যদি COPD অতটা খারাপ না হয়, তাহলে তাকে মৃদু COPD বলে ।

যদি COPD এর অবস্থা খারাপ থাকে, তাকে মাঝারি মাপের COPD  বলে।

COPD এর অবস্থা খুব খারাপ হলে, তাকে তীব্র COPD বলে।

 

মৃদু COPD

·        আপনার অনেক কাশি হতে পারে।

·        মাঝেমাঝে কাশির সাথে আঠালো শ্লেষ্মা বের হতে পারে।

·        অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে বা দ্রুত হাঁটলে অল্প শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

 

মাঝারি COPD

·        আপনার আরো বেশী কাশি হতে পারে এবং কাশির সাথে আঠালো শ্লেষ্মা বের হবে।

·        অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে বা দ্রুত হাঁটলে প্রায়ই মনে হতে পারে যে দম ফুরিয়ে আসছে।

·        কষ্টসাধ্য কাজ  করা আপনার জন্য কঠিন হবে।

·        সর্দি বা বুকের সংক্রামণ নিরাময় হতে কয়েক  সপ্তাহ লাগতে পারে।

 

তীব্র বা খুব খারাপ COPD

·        আরো বেশী কাশি হতে পারে এবং অনেক শ্লেষ্মা বের হতে পারে।

·        দিনে এবং রাতে সবসময়ই আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা হতে পারে।

·        সর্দি বা বুকের সংক্রামণ নিরাময় হতে কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে।

বিস্তারিত

-->

15-02-2013 রোগ ব্যাধি

সাধারণ ঠান্ডা, কাশি (কমন কোল্ড)

 

সাধারণ ঠান্ডা, কাশি (কমন কোল্ড)

আমাদের দেশে বিশেষ করে শীতকালে ঘরে ঘরে প্রায় সবারই ঠান্ডা, কাশি হয়ে থাকে এবং প্রায় প্রতি বছরই এই ঘটনা ঘটে।এ ধরনের ঠান্ডাকে কমন কোল্ড বলে। বেশিরভাগ ঠান্ডার জন্য ভাইরাস দায়ী।

প্রায় ২০০ এর অধিক নানা প্রকারের  ভাইরাসের কারণে ঠান্ডা লাগে বলে এর বিরুদ্ধে টিকা কার্যকর হয় না।  শীতকালে এ রোগ বেড়ে যায়, যদিও ঠান্ডা আবহাওয়া এ জন্য দায়ী না বরং এ সময় শিশু, বৃদ্ধ সবাই একই ঘরে খুব কাছাকাছি অবস্থান করে বিধায় এই ভাইরাস দ্রুত ছড়ায়। এ রোগের চিকিৎসায়  পরিচ্ছন্নতা, সচেতনতা, নাকের স্প্রে , প্যারাসিটামল, মধু ইত্যাদি যথেষ্ঠ কার্যকর।

 

লক্ষণসমূহ:

 à¦ à¦¾à¦¨à§à¦¡à¦¾ কাশিতে বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন-

-          নাকে পানি বা নাক বন্ধ থাকা;

-          হাঁচি, গলাব্যথা, মাথা ব্যথা, চোখ লাল হওয়া;

-          কাশি, গলার গ্রন্থি ফুলে যাওয়া,

-          হালকা জ্বর, ক্ষুধামন্দা

 

তাছাড়া সব সময় সব লক্ষণ দেখা দেয় না। ব্যক্তি বিশেষে ও রোগের মাত্রা অনুযায়ী ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিশেষ কোন চিকিৎসা ছাড়া রোগী ১-২ সপ্তাহে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠে।

ঠান্ডা বা কাশির চিকিৎসা নেই?

ঠান্ডা কাশি খুব সাধারণ হলেও সত্যিকার অর্থে এর কোন চিকিৎসা নেই। এমন কোন চিকিৎসা নেই যা ঠান্ডা দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। তবে রোগীর কষ্ট লাঘব করা এবং রোগ যাতে মারাত্মক পর্যায়ে না যায়, সেজন্য-

-          জ্বর থাকলে নির্দিষ্ট মাত্রায় প্যারাসিটামল ঔষধ;

-          হালকা গরম পানি খাওয়া ও গরম গরগরা করা;

-          নাক বন্ধ থাকলে নাকের ড্রপ বা নাকের সেপ্র;

-          লজেন্স বা মধু গলাকে সতেজ রাখার জন্য ব্যবহার করা যায়।

 

বিশ্রাম কি প্রয়োজন?

এই রোগী বিছানায় শুয়ে বিশ্রামের কোনই প্রয়োজন নেই। বরং বাচ্চা যত খুশি খেলাধূলা বা দৌড়াদৌড়ি করতে পারে, ততই ভাল। তবে বাচ্চা যাতে পর্যাপ্ত পানি বা তরল খায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

ঔষধ কতটুকা উপকারী?

 à¦¬à¦¿à¦­à¦¿à¦¨à§à¦¨ ধরনের ঔষধ বাজারে পাওয়া যায়।

 à¦¤à¦¬à§‡ বেশিরভাগই অপ্রয়োজনীয় এবং বর্জনীয়।

যেমন-

ক) এন্টিবায়োটিক : যদিও ডাক্তারগণ এন্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপশন করে থাকেন বিভিন্ন বিষয় চিন্তা করে, তবে ঠান্ডা কাশি যেহেতু ভাইরাস দিয়ে হয়, এই রোগের চিকিৎসায় তাই এন্টিবায়োটিকের বাস্তবিক কোন ভূমিকা নেই।

খ) কাশির সিরাপ: মূলত শ্বাসনালীর অস্বস্তি ও নিঃস্বরনের জন্য কাশি হয়। তাই কাশির ঔষধে কোন উপকার হয় না।   

গ) এসপিরিন: হালকা জ্বর  থাকলে প্যারাসিটামল ঔষধ দিতে পারেন। কিন্তু এসপিরিন জাতীয় ঔষধ দেয়া নিষেধ। এতে রেইস  à¦¸à¦¿à¦¨à¦¡à§à¦°à§‹à¦®  à¦à¦° মত মারাত্মক রোগ হতে পারে।

কখন হাসপাতালে/ডাক্তারের কাছে যাবেন?

সাধারণত কয়েকদিন বা ১-২ সপ্তাহে অধিকাংশ রোগী সুস্থ হয়ে উঠে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে  দ্রুত ডাক্তারের নিকট বা হাসপাতালে নিতে হবে যদি-

-          খেতে না পারে;

-          বার বার বমি করে;

-          প্রচন্ড মাথা ব্যথা হয়;

-          যদি খুব নিস্তেজ ও দূর্বল হয়ে পড়ে;

-          শ্বাসকষ্ট হয়;

-          প্রচন্ড জ্বর থাকে এবং প্যারাসিটামলে না কমে;

-          ৪৮ ঘন্টায় অসুস্থ্যতার কোন পরিবর্তন না হয়;

-          অথবা মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে।

প্রতিরোধ:

প্রতিরোধ করা প্রায় অসম্ভব। যদিও অনেকে মনে করেন ভিটামিন খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃস্টি হয়, তবে তা পরিক্ষিত নয়। কমন কোল্ড ভাইরাসের জন্য হয়, তাই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মানো সহজ নয়। তবে, ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা বড়দের ক্ষেত্রে কিছুটা কাজে দেয়।

যা মনে রাখতে হবে:

1.       সাধারণ ঠান্ডা কাশির কোন চিকিৎসা নেই, শুধু কষ্ট লাঘব করা সম্ভব।

2.      সাধারণত ১-২ সপ্তাহে রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠে।

3.      অযথা এন্টিবায়োটিক বা কাশির ঔষধের কোন ভূমিকা নেই, তাই ব্যবহার না করাই ভাল।

 

15-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

এজমা বা হাঁপানি ও তার নিয়ন্ত্রন

 

এজমা বা হাঁপানি হলো শ্বাসনালির প্রদাহজনিত  à¦¦à§€à¦°à§à¦˜à¦®à§‡à§Ÿà¦¾à¦¦à¦¿ রোগ। এই প্রদাহের ফলে শ্বাসনালি ফুলে যায় এবং অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। এতে হাঁপানির বিভিন্ন উপসর্গ যেমনকাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ লাগা এবং শোঁ শোঁ আওয়াজ হয়। সঠিক ও নিয়মিত চিকিৎস  ফলে এ উপসর্গগুলোর সবই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। হাঁপানির চিকিৎস বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহূত হয়, যেমনরোগ উপশমকারী ওষুধ, রোগ প্রতিরোধ বা বাধাদানকারী ওষুধ। এ ওষুধগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবেকীভাবে কাজ করে, এগুলোর সঠিক মাত্রা কী, এগুলোর সাধারণত কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং কোন কোন ওষুধ ব্যবহার করা যাবে।
হাঁপানি কেন হয়

হাঁপানি যেকোনো বয়সেই হতে পারে। তবে এটি সংক্রামক বা ছোঁয়াচে নয়। প্রদাহজনিত কারণে শ্বাসনালির সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়। ফলে ঘন ঘন কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, আওয়াজ, বুকে চাপ বা দম নিতে কষ্ট হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যদি সঠিকভাবে উপযুক্ত চিকিৎসা না নেওয়া হয়, তাহলে এ রোগে অনেক সময় মৃত্যুও হতে পারে। হাঁপানির সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। এ রোগের জন্য কোনো কিছুকে এককভাবে দায়ী করা যায় না। গবেষণায় দেখা গেছে, কারও কারও বংশগত কারণে বা পরিবেশগত কারণেও এ রোগ হতে পারে। কারও নিকটাত্মীয় যদি এতে আক্রান্ত থাকে বা কেউ যদি বিভিন্ন দ্রব্যের প্রতি অতিমাত্রায় এলার্জিক হয়, তাহলে তার হাঁপানি হতে পারে। এ ছাড়া শ্বাসনালি যদি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়, তাহলে এ রোগ হতে পারে।
এ ছাড়া ধুলোবালির মধ্যে থাকা মাইট নামের ক্ষুদ্র কীট, ফুলের পরাগরেণু থেকে; পশুপাখির পালক, ছত্রাক, মল্ট, ইস্ট, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সিগারেটের ধোঁয়ার মধ্যে যারা থাকে তাদের এ রোগ হতে পারে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপান শুধু শ্বাসকষ্টের কারণই নয়, বরং অনেক ক্ষেত্রেই এটা হাঁপানির তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। হাঁপানির ওষুধের কার্যকরতা কমিয়ে দেয়, কখনো কখনো ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী কার্যক্ষমতাও কমে যায়।
কখনো কখনো ব্যক্তির পেশাগত কারণেও এ রোগটি হতে পারে। কিছু উত্তেজক উপাদান অনেক সময় সংবেদনশীল রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু করতে পারে। কোনো কোনো ওষুধ, যেমন বিটা ব্লকার, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহূত হয়, এনএসএআইডি (ব্যথা নিরাময়কারী ওষুধ) এসপিরিন কোনো কোনো ক্ষেত্রে হাঁপানির কারণ হতে পারে। এ ছাড়া মানসিক চাপে থাকলে হাঁপানির তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে। কোনো কোনো খাবারের প্রতি সংবেদনশীল বা চিংড়ি মাছ, হাঁসের ডিম, গরুর মাংস, বেগুন, পুঁইশাক, মিষ্টিকুমড়া, ইলিশ মাছ প্রভৃতি খেলে চুলকায়, নাক দিয়ে পানি পড়ে কারও কারও—অর্থাৎ অ্যালার্জি হয়। তবে খাবারের মাধ্যমে যে অ্যালার্জি হয় তাতে খুব কম লোকের অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। কারও কারও বিভিন্ন সুগন্ধি, মশার কয়েল বা কারও কারও কীটনাশকের গন্ধ থেকেও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে।

এজমা নিরাময় করা যায় না, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এজমা নিয়ন্ত্রণ করতে জানলে  এজমা রোগী স্বাভাবিক কর্মক্ষম জীবন যাপন করতে পারে।

যদি আপনার এজমা নিয়ন্ত্রণে থাকে-

  • আপনি কর্মক্ষেত্রে যেতে পারবেন, খেলাধুলা করতে পারবেন।
  • রাতে ভাল ঘুমাতে পারবেন।
  • আপনার শাবসকষ্ট হঠাৎ তীব্র হওয়ার হার অনেক  কমে যাবে।

পৃথিবীতে অনেক মানুষের এজমা আছে তারা এজমা নিয়ন্ত্রণ করেই বেঁচে আছে।

রোগ নির্ণয়

হাঁপানি নির্ণয়ের প্রথম ধাপ হচ্ছে  রোগের বিস্তারিত ইতিহাস জানা। হাঁপানির প্রধান উপসর্গগুলো হলো:  শ্বাসকষ্ট, কাশি, বুকের মধ্যে শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া, বুকে চাপ অনুভব করা বা অল্পতেই দম ফুরিয়ে যাওয়া। তবে কখনো কখনো দুবার এটাকের মধ্যে রোগীর হাঁপানির কোনো উপসর্গ নাও থাকতে পারে। যেকোনো একটি বা এরও বেশি উপসর্গ থাকতে পারে। সাধারণত এ উপসর্গগুলো রাতে বা খুব সকালে বেশি হয় এবং শ্বাসনালিতে কোনো ধরনের এলার্যেন প্রবাহ প্রবেশ করলে বা অল্প মাত্রায় পরিবর্তিত হলে এ উপসর্গের তীব্রতা বেড়ে যায়। কারও কারও ক্ষেত্রে কাশি বা শ্বাসকষ্ট শুরুর আগে নাক চুলকায়, হাঁচি হয়, নাক দিয়ে পানি পড়ে, চোখ লাল হয়ে যায়। ওপরের উপসর্গগুলোর সঙ্গে বংশে কারও যদি হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস থাকে, তাহলে ধরে নেওয়া যায় তার হাঁপানি রয়েছে।

স্বাভাবিক শ্বাসনালীর ভিতরে দেখতে ডান ডদিকের ছবির মত দেখায়।

এজমা যখন নিয়ন্ত্রণে থাকে না, তমখন ফুসফুসের শ্বাসনালীগুলোর দেয়াল মোটা হয়ে যায় এবং ফুলে যায়। এজমা আক্রমণের সময় কম পরিমাণ বাতাস ফুসফুসের ভিতরে যায় এবং ফুসফুস থেকে বাইরে আসে। রোগী  কাশি দিতে শুরু করে এবং বুকের ভিতর  বাঁশির মত সাঁ সাঁ শব্দ হতে থাকে। বুকে আটসাঁট বা দম বন্ধভাব অনুভুত হতে  থাকে।

কিভাবে আপনার এজমা নিয়ন্ত্রণে রাখবেন-

অ্যাজমা রোগীদের শ্বাসকষ্ট থাকতে পারে। সাধরণত এজমা ধরণ তিব্র হয়,

আবার চলেও যায়।

১। এজমার জন্য ডাক্তারের পরামশ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করুন।

২। যে সকল জিনিস আপনার এজমা আক্রমণতে ত্বরানিত করে সেগুলো থেকে দূরে থাকুন।

৩। চেক আপ এর জন্য বছরে ২-৩ বার ডাক্তারের কাছে যান, এমনকি যদি আপনার শ্বাসকষ্ট নাও থাকে এবং আপনি সুস্থবোধ করেন তাহলেও ডাক্তারের কাছে যান।

৪।  আপনার এজমা জটিল আকার ধারণ করার উপসর্গ এবং সে সম্পর্কে  আপনার করণীয় জানুন।

অধিকাংশ এজমা রোগীর দুই ধরণের ঔষধের দরকার হয়-

১। উপশমকারী ঐষধ, যা প্রকাশ পেলে উপশম করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

২। বাধাদানকারী ঐষধ, যা ফুসফুসকে  রক্ষা করতে এবং বিস্তারিত

-->

13-02-2013 রোগ ব্যাধি

ভাইরাল এনকেফালাইটিস

ভাইরাল এনকেফালাইটিস হল ভাইরাস দ্বারা মস্তিষ্কের ইনফেকশন হবার ফলে মস্তিষ্কের প্রদাহজনিত রোগ। যে কোন বয়সের মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

 

এর মারাত্মক ক্ষতিকর দিক হল এর দ্বারা  মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি অর্থাৎ মস্তিষ্কের কোষ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস দিয়ে এই রোগ হতে পারে। আবার অনেক ক্ষেত্রে ভাইরাস ঘটিত সাধারণ রোগ থেকে যেমন মামস, সিজেলস (হাম) পরবর্তিতে মস্তিষ্ক আক্রান্ত হতে পারে। ভাইরাস ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এমনকি পরজীবি দ্বারাও এনকেফালাইটিস হতে পারে তবে ভাইরাস জনিত কারণ এবং বিশেষত এন্টেরোভাইরাস দ্বারা সবচেয়ে বেশী হয়। রক্তের সাথে ভাইরাস মিশে মস্তিষ্কে পৌছায় এবং পরবর্তিতে সেখানে বংশ বিস্তার করে ও রোগ তৈরী করে।

 

ভাইরাসের আক্রমণকে প্রতিহত করার জন্য শরীরের ভেতর থেকে কতগুলি প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম শুরু হয়। ফলে মস্তিষ্ক ফুলে উঠে। ফলে একদিকে ভাইরাসের আক্রমণ অন্যদিকে শরীরের প্রতিক্রিয়া এ দুই মিলে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ ও সমস্যা তৈরী করে। এই রোগটি অত্যন্ত মারাত্মক।

 

লক্ষণ সমূহঃ

-         প্রচন্ড জ্বর।

-         মাথাব্যাথা।

-         আলোতে তাকাতে সমস্যা।

-         গায়ে ব্যাথা।

-         ঘাড় শক্ত হওয়া।

-         পিঠ শক্ত হওয়া।

-         বমি।

-         স্মৃতি ভ্রম।

-         খিচুনী।

-         হাত পা অবশ হওয়া।

-         অজ্ঞান হওয়া।

-         কোমা ইত্যাদি।

 

 

যে সব ভাইরাস দিয়ে সাধারণত হয়ঃ

1.      এন্টেরো ভাইরাস - কক্সাকি ভাইরাস, পোলিও ভাইরাস, ইকো ভাইরাস।

2.     হারপিস সিমপে­à¦•à§à¦¸ ভাইরাস, ভেরিসেলা জোষ্টার ভাইরাস, এপস্টেইন ভাইরাস।

3.     সাইটো মেগালো ভাইরাস, এডেনো ভাইরাস, রুবেলা, মিসেলস।

4.     জাপানিস এনকেফালাইটিস ভাইরাস।

 

যে ভাবে রোগ ছড়ায়ঃ

ভাইরাস খুবই সংক্রামক জীবাণু। বিভিন্ন বাবে ছড়াতে পারে। যেমনঃ

ক. কাশি বা হাচির সাথে ভাইরাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এবং সুস্থ্য মানুষ নিঃশ্বাসের সাথে ঐ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়।

খ. আক্রান্ত পোকামাকড়, মশা বা প্রাণীর কামড়ের মাধ্যমে সরাসরি মানুষের রক্তে প্রবেশ করে।

গ. জীবাণু যুক্ত খাবার পানীয় খেলে।

ঘ. আক্রান্ত ব্যক্তি বা বস্তু ধরার মাধ্যমে।

ঙ. পূর্বে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে ঐ জীবাণু বহু বছর পর ঘুমন্ত অবস্থা থেকে সক্রিয় হয়ে ইনফেকশন করতে পারে (হারপিস সিম্পলে­à¦•à§à¦¸ ভাইরাস)।

 

ইনফেকশন ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাঃ

ভাইরাস শরীরে প্রবেশের পর যে কোন ভাবে রক্তে পৌছায় এবং সেখান থেকে বহু বহু গুণে বৃদ্ধি পেয়ে মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডে প্রবেশ করে। পরে মস্তিষ্কের কোষের ভেতরে গিয়ে অবস্থান নেয়। পরে ঐ কোষকে ভেঙ্গে বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়ে বেরিয়ে আসে।

কোন কোন ভাইরাস মস্তিষ্কের বিশেষ বিশেষ অংশকে বেশী আক্রান্ত করে। যেমনঃ হার্পিস ভাইরাস মূলত কানের কাছাকাছি টেমপোরাল লোবকে বেশী আক্রান্ত করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী ব্যবস্থা ভাইরাসকে মারার জন্য দ্রুত মস্তিষ্কে পৌছায় ও ভাইরাসকে আক্রমণ করে। ভাইরাসের আক্রমণ ও পরবর্তীতে শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে আক্রমণের ফলে মস্তিষ্ক ফুলে উঠে ও নান ধরনের লক্ষন ও জটিলতা তৈরী হয়।

জটিলতা সমূহ 

শিশু ও বৃদ্ধরা বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয় ও নানা ধরনের জটিলতার সম্মুখীন হয়। যেমনঃ

-         রক্ত চাপ কমে যাওয়া।

-         মস্তিষ্কে রক্ত ও অক্সিজেন এর পরিমান কমে যাওয়া।

-         মস্তিষ্কের কোষ নষ্ট হওয়া।

-         মৃত্যু।

রোগ নির্ণয়ঃ

-         শারীরিক পরীক্ষা।

-         রক্ত পরীক্ষা।

-         মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান।

-         এম আর আই।

-         ই.ই.জি।

-         মেরুদন্ডের হাড়ের মাঝখানে সুই ঢুকিয়ে মস্তিষ্কেরপানি(সি.এস.এফ)পরীক্ষা করা।

 

চিকিৎসাঃ

ভাইরাসের চিকিৎসা বেশ জটিল এবং অনেক ক্ষেত্রেই অকার্যকর ও অপর্যাপ্ত। তাই ভাইরাস নিষ্ক্রীয় করার সাথে সাথে অন্যান্য জটিলতা ও লক্ষণের চিকিৎসাই মূল লক্ষ। যেমনঃ

-         এন্টিভাইরাল ঔষধ ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে দেয়া।

-         মস্তিষ্কের পানি কমানোর জন্য বিশেষ শর্করা জাতীয় ইঞ্জেকশন দেয়া।

-         মস্তিষ্কের ফুলে উঠা কমানোর জন্য স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দেয়া। খিচুনী বন্ধের ঔষধ।

-         ব্যাথা নাশক, বমি নাশক ঔষধ।

-         জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামল।

-         স্যালাইন।

 

দীর্ঘ্য মেয়াদী ফলাফলঃ

রোগের ফলাফল নির্ভর করে কোন জীবাণু দিয়ে হয়েছে, কি পরিমান মারাত্মক ও কত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু হয়েছে তার উপর। অনেক ক্ষেত্রেই ১-২ সপ্তাহের মধ্যে রোগী বিপদমুক্ত হয়ে যায় ও আরও কিছুদিন পর পরিপূর্ণ সুস্থতা লাভ করে। অনেক ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বেশ অংশ নষ্ট হবার ফলে দীর্ঘ্যমেয়াদী সমস্যায় ভুগেন। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না হলে শতকরা ৬০-৭০ ভাগ রোগী মারাও যেতে পারে।

বিস্তারিত

-->

13-02-2013 রোগ ব্যাধি

মাথা ঘোরা/মাথার ঘূর্নিরোগ

 

        

 

অন্তকর্নে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, স্নায়ুর প্রদাহ, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ, দুশ্চিন্তার রোগ যেমন-আতঙ্ক ইত্যাদি কারণে মাথার ঘূর্নিরোগ দেখা দেয়। এ ছাড়া  নিম্ন রক্তচাপ, সংক্রমণ, রক্ত গ্লুকোজ কমে যাওয়া, হৃদরোগ ইত্যাদিতেও মাথা ঘোরে। এ সময় আপনি দাড়িয়ে থাকলেও মনে হবে চারপাশ ঘুরছে অথবা আপনি কোন কিছুর চারদিকে ঘুরছেন।

 

উপসর্গসমূহ:

o       আলোতে অস্বস্তি

o       দূর্বলতা

o       অস্থিরতা

o       মনে হবে আপনার চারপাশ ঘুরছে বা  আপনি কোন কিছুর চারদিকে ঘুরছেন।

o       ভ্রম

o       বমি বমি ভাব

 

অতিরিক্ত উপসর্গ:

কিছু শারীরিক সমস্যা/রোগে মাথা ঘুরতে পারে যেমন-

o       মাথা ব্যথা

o       বমি

o       কানে কম শোনা

o       মাংস পেশীর দূর্বলতা।

 

 

অন্ত:কর্নে ভারসাম্য রক্ষার অঙ্গ :

অন্তকর্নের মধ্যে তরলপূর্ণ নালী রয়েছে। মাথা নাড়লে এই তরল নালীর মধ্য দিয়ে ঘুরতে থাকে এবং তা মস্তিস্কে জানায় কত দ্রুত, কোন দিকে মাথা ঘুরছে। এই নালী হতে তথ্যগুলো ভেসটিবিউলার স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিস্কে পৌঁছায়। মস্তিস্ক মাথার অবস্থান জানাতে পারলে শরীরের বাকী অংশকে সে নিয়ন্ত্রণ বা ভারসাম্য রক্ষা করাতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অন্তকর্ন, মস্তিস্ক এবং  à¦¸à§à¦¨à¦¾à§Ÿà§  à¦¯à¦¾ অন্তকর্ন ও মস্তিস্কের মধ্যে সংযোগ ঘটায় ইত্যাদির সমস্যার কারণে মাথা ঘোরে।

 

কারণসমূহ:

শারীরিক অবস্থা ও রোগে মাথার ঘুর্নিরোগ হয়। যেমন-

o       অন্তকর্নের সমস্যা-

দীর্ঘস্থায়ী  মাথা ঘোরা রোগের অর্ধেকেরও বেশী ক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের অন্ত:কর্নের সমস্যা রয়েছে।

o       দুশ্চিন্তাজনিত সমস্যা-

যেমন- আতঙ্ক, ভয় ইত্যাদির কারণে শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ মাথা ঘোরা রোগ

দেখা যায়।

o       মস্তিস্কের সমস্যা-

মস্তিস্কের সমস্যার কারণে শতকরা ৫ ভাগ মথাঘোরা রোগ হয়। মস্তিষ্কের রক্ত ক্ষরণ, টিউমার, পারকিনসন্স রোগ ইত্যাদি।

o       শারীরিক সমস্যা:

নিম্নরক্তচাপ, সংক্রমণ, রক্তে গ্লুকোগের পরিমান কমে যাওয়া, হৃদরোগ ইত্যাদি কারণে শতকরা ৫ ভাগ ক্ষেত্রে মাথা ঘোরে।

o       অন্যান্য;-

মাথা ঘোরার অন্যান্য কারণগুলো হলো- মারিজুয়ানা সেবন, এলকোহল পান থেকে হঠাৎ বিরত থাকা, ভ্যপসা গরমযুক্ত পরিবেশে বসবাস ইত্যাদি।

o       অজানা কারণ-

মাথা ঘোরার এক চতুথাংশ ক্ষেত্রেই  কারণ জানা যায় না।

 

রোগ নির্ণয় পদ্ধতি:

মাথা ঘোরার কারণ নির্ণয়ে বেশ কিছু পরীক্ষা করা হয়। যেমন-

o       বিভিন্ন প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপসর্গগুলোর প্রকৃতি জানা।

o       শারীরিক পরীক্ষা : যেমন- রক্তচাপ দেখা।

o       শ্রবণশক্তির পরীক্ষা ও অন্ত:কর্নের কাঠামো পরীক্ষা।

o       খালি পেটে রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা।

o       এনজিওগ্রাম-  মস্তিস্কের রক্ত প্রবাহ দেখতে।

o       মস্তিস্কের CT  অথবা  MRI স্কান। যদি  ধারণ করা হয় হিসাবে মস্তিষ্কে রক্ষক্ষরণ বা টিউমার ধারণা করা হয়।

o       EEG - যদি মৃগি রোগ ধারণ করা হয়।

 

চিকিৎসা:

রোগের কারণের উপর চিকিৎসা নির্ভর করে। যেমন- অন্ত:কর্নে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে তার চিকিৎসা হিসাবে অ্যান্টিবায়োটিক, দুশ্চিন্তাজনিত সমস্যা হলে পরামর্শ এবং কগ্‌নেটিভ বিহেভিয়ার থেরাপী (CBT) ইত্যাদি। কিন্তু যেসব ক্ষেত্রে কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসা রোগের উপসর্গ অনুসারে। যেমন-

o       বিশ্রাম

o       বমি বা বমিবমি ভাব নিরসনে ঔষধ।

o       নিয়মিত হালকা ব্যায়াম- স্নায়ুর অন্ত্রকে সতেজ রাখতে।

 

যা মনে রাখতে হবে:

o       মাথার ঘূর্নি রোগ সাধারণত অন্ত:কর্ন, মস্তিস্ক, অন্ত:কর্ন ও মস্তিষ্কের  সংযোগকারী স্নায়ুর সমস্যার কারণে হয়ে থাকে।

o       অন্ত:কর্নে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ, স্নায়ুর প্রদাহ, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ, দুশ্চিন্তা  ইত্যাদি কারনেও মাথার ঘূর্নি রোগ দেখা যায়।

o       এক চতুর্থাংশ ক্ষেত্রে কারণ জানা যায় না।

 

 

 

13-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

মিনি স্ট্রোক (TIA)

 

          ট্রানজিয়েন্ট ইসকেমিক এটাক সংক্ষেপে TIA হল খুব সামান্য ধরনের স্ট্রোক- যাকে মিনি স্ট্রোক বলা যায়। এটি অনেকটা ঝড়ের আগের পূর্বাভাসের মত। অর্থাৎ এই মিনি স্ট্রোকটি রোগীকে পরবর্তী কিছুদিন, সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে পুরোপুরি স্ট্রোক বা হার্ট এটাকের হবার কথা পূর্বাভাস দেয়। TIA এর লক্ষণ খুব ক্ষনস্থায়ী, অল্প কিছু সময় পর রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে যায়। মূলত হঠাৎ মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল সামান্য সময়ের জন্য বন্ধ হবার কারনেই এই অবস্থা হয়। মস্তিষ্কের কোন ধমনী সরু হয়ে গেলে, আংশিক বন্দ হয়ে গেলে (রক্ত জমাট বাধার ফলে) এ অবস্থা হয়। যে ব্যক্তির একবার TIA হয়েছে, তার হার্ট এটাক বা স্ট্রোক হবার ঝুঁকি অনেক বেশী।

 

টি.আই.এ স্ট্রোকের পূর্ব সংকেত স্বরূপ :

মস্তিষ্কের কোন অংশে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে স্ট্রোক হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রক্তনালীর ভেতরে রক্ত জমাট বাধার কারনে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে রক্তনালী ছিড়ে যাবার ফলে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়। ঐ নির্দিষ্ট অংশ রক্তের অভাবে, অক্সিজেনের অভাবে মারা যায়। আর সঠিকভাবে দ্রুত চিকিৎসা না হলে আশে পাশের মস্তিষ্ক কোষও মারা যায়।

     মিনি স্ট্রোক এর সব লক্ষণ স্ট্রোকের মতই, তবে এর স্থায়ীত্ব খুব কম। ২৪ ঘন্টার কম স্থায়ী হয় এবং পরবর্তীতে রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠে।

 

লক্ষনসমূহঃ

মূলত মস্তিষ্কের কোন অংশে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্থ হচ্ছে তার উপর রোগের লক্ষন নির্ভর করে। সাধারনত যে সব লক্ষন দেখা দিতে পারে তা হলঃ

1.      দৃষ্টি সমস্যাঃ চোখে ঝাপসা দেখা, কম দেখা- এক বা উভয় চোখে।

2.     মুখে অবশ বোধ, দূর্বলতা বা কথা বলতে সমস্যা।

3.     কোন হাত, পা বা শরীরের এক পাশ অবশ, দুর্বল, প্যারালাসিস।

4.     মাথা ঝিমঝিম লাগা- শরীরের ভারসম্য নষ্ট হওয়া।

5.     কথা বলতে, বুঝতে সমস্যা হওয়া- গিলতে, খেতে, পান করতে সমস্যা হওয়া।

6.     বমি বাব, বমি।

7.     প্রচন্ড মাথা ব্যাথা।

 

৩ টি সাধারণ প্রশ্ন করে TIA সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায়।

1.      মুখমন্ডলের দুর্বলতাঃ রোগী কি হাসতে পারে? চোখ বা মুক বাকা হয় কিনা?

2.     হাত পা এর দুর্বলতাঃ রোগী কি দুই হাত নিজে নিজে উপরে তুলতে পারে?

3.     কথা বলা ও বোঝাঃ রোগী কি ঠিক ভাবে কথা বলতে ও বুঝতে পারছে?

যদি ৩টি ক্ষেত্রেই বা যে কোন একটি ও না পারে সে ক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। কেননা স্ট্রোক এবং, TIA উভয়ই খুব মারাৱক এবং দ্রুত চিকিৎসা দরকার।

 

সাময়িক রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ঃ

ঘাড়ে অবস্থিত ক্যারোটিড আর্টারির মাধ্যমে

মস্তিষ্কে রক্ত পৌছায়। রক্তনালীটি বহু বহু শাখা প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে রক্ত সঞ্চালন করে। এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রক্তনালীর যে কোনটি যে কোন কারনে (রক্ত জমাট বেধে, বা চর্বির ছোট অংশ পথে) বন্ধ হলে TIA দেখা দেয়। আর যদি বন্ধ নালীটি না খুলে সেক্ষেত্রে পুরোপুরি স্ট্রোক হয়। অনেক ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র রক্তনালী ছিড়ে গিয়েও TIA হতে পারে।

রিস্ক ফ্যাক্টরঃ

স্ট্রোক এবং TIA এর কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে। যা মানুষের নিয়ন্ত্রনের বাইরে। যেমনঃ

-         অধিক বয়স।

-         লিঙ্গ বিষম্য (পুরুষদের বেশী হয়)।

-         পারিবারিক রোগের ইতিহাস।

তবে অধিকাংশ রিস্ক ফ্যাক্টরই জীবন যাপন পদ্ধতি নির্ভর এবং পরিবর্তনীয়। যেমনঃ

-         উচ্চ রক্তচাপ।

-         ধুমপান।

-         অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস।

-         রক্তেকোলেস্টেরলের মাত্রার আধিক্য

-         নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম না করা।

-         স্থুলকায়, অতিরিক্ত ওজন।

-         অত্যধিক মদ্যপান।

-         অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাদ্যাভ্যাস।

-         অতিরিক্ত লবন খাওয়া।

 

হাই রিস্ক গ্রুপঃ

TIA হবার ৩ মাসের মধ্যে নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে পুরোপুরি স্ট্রোক হবার ঝুঁকি থাকে। যেমনঃ

1.      যদি TIA ১০ মিনিটের বেশী স্থায়ী হয়।

2.     যদি এর ফলে কথা বলার সমস্যা বা হাত পা গুলি অব হয়ে পড়ে।

3.     বয়স ৬০ এর অধিক।

4.     উচ্চ রক্তচাপ।

5.     অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস থাকলে।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

TIA নাকি স্ট্রোক- তা আগে ভালভাবে নিশ্চিত হতে হবে। এ জন্য রোগের ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা করতে হয়। বিশেষত স্নায়ুতন্ত্রের পরীক্ষা করতে হয়বিস্তারিত

-->

13-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

সাব ডুরাল হেমাটোমাঃ

 

মস্তিস্কের  à¦†à¦¬à¦°à¦£ ৩টি লেয়ারে তৈরী। সব বহিস্থ লেয়ার এর নাম ডুরা ম্যাটার। ডুরা ম্যাটারের নিচে রক্ত জমাট বাধলে তাকে সাবডুরাল হেমাটোমা বলে। সাধারণত কোন দুর্ঘটনা জনিত কারণে যেমন জোরে আঘাত, সড়ক দুর্ঘটনা, অনেক উচু থেকে পড়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে সাব ডুরাল হেমাটোমা হয়।

 

মসিৱস্কের আবরণঃ

মস্তিস্ক শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও নমনীয় অংশ। তাই একে সুরৰার জন্য মাথার শক্ত খুলির মধ্যে রাখা আছে। আবার এই খুলির সাথে সরাসরি সংস্পর্শে যেন মস্তিস্কের ক্ষতি না হয়, সে জন্য ৩টি আলাদা আবরণ বা পর্দা ধারা মস্তিস্ককে আবৃত করা আছে। যাদের একত্রিত নাম মেনিনজেস, যা একে কুশনের মত আঘাত থেকে রক্ষা করে। ৩টি লেয়ার হলঃ

১। পায়া ম্যাটার: মস্তিস্কের  à¦—ায়ে লেগে থাকে।

২। এরাকনয়েড ম্যাটার: পায়া ম্যাটারের উপরে

৩। ডুরা ম্যাটার: সবচেয়ে বাইরের এবং মাথার খুলির ভেতর দিকে তা আবরণ করে থাকে।

মেনিনজেস বা পর্দা মস্তিস্ককে আবরণ করে রাখে, তবে সাথে সাথে এর মধ্যে দিয়ে অসংখ্য রক্তনালী প্রবাহিত, যা মস্তিস্কে রক্ত প্রবাহ করে। এদের মধ্যে যে কোন রক্তনালী কোন কারনে আঘাতে ছিরে যেতে পারে।

 

 

 

প্রকারভেদঃ

মূলত ৩ ধরণের হয়-

ক) একিউটঃ

আঘাতের ২৪ ঘন্টার মধ্যে হয়।

খ) সাব একিউটঃ

আঘাতের পরবর্তী ২ থেকে ১০ দিনের মধ্যে  

গ) ক্রনিকঃ

আঘাত পরবর্তি ১০ দিনের পর যে হেমাটোমা হয়।

 

লক্ষন সমূহঃ

আঘাত ও রক্তক্ষরণের মাত্রা ও অবস্থান এর উপর ভিত্তি করে লক্ষণ প্রকাশিত হয়। সাধারণ লক্ষণ সমূহ হলঃ

-         তীব্র মাথা ব্যাথা

-         দুর্বলতা

-         কথা জাড়িয়ে জড়িয়ে আসা

-         চোখে ঝাপ্সা দেখা,

-         দৃষ্টি ত্রুটি

-         হাত-পা দুর্বল ও অবশ বোধ করা

-         ঘাড় শক্ত হওয়া

 

রোগ নির্নয়ঃ

রোগের ইতিহাস ও শারিরীক পরীক্ষার পাশাপাশি রোগ নির্নয়ের জন্য নিচের পরীক্ষা সমূহ করতে হয়।

ক) সিটি স্ক্যানঃ কমপিউটেড টমোগ্রাফী।

খ) এম.আর.আইঃ ম্যাগনেঠিক রেসোনেস্ক ইমেজিং

 

চিকিৎসাঃ

সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে রক্তক্ষরন হতেই থাকে এবং জমাট রক্ত মস্তিস্কের উপর চাপ দিতে থাকে। এক পাশের চাপে মস্তিস্ক অন্যপাশে খুলিতে গিয়ে চাপ দেয়। ফলে মস্তিস্ক সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না। আর এই চাপ দীর্ঘস্থায়ী হলে মস্তিস্কের স্থায়ী ক্ষতি হয়, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

 

সম্ভাব্য চিকিৎসা ব্যবস্থাঃ

ক) কনজারভেটিভঃ

রক্তক্ষরণ এর পরিমান অল্প হলে মাথার খুলি ছিদ্র করে রক্ত বের করে আনা হয়, পরবর্তীতে পুনারায় রক্তক্ষরণ হয় কিনা তা লক্ষ্য করা হয় ও ব্যবস্থা নেয়া হয়।

খ) সার্জারীঃ

রক্তক্ষরণ বেশি হয়ে যদি মস্তিস্কে চাপ দেয়, সে ক্ষেত্রে মাথার খুলির ১ পাস কেটে মস্তিস্ককে প্রসারিত হবার স্থান করে দেয়া হয়, ছেড়া রক্তনালী আটকে দেয়া হয় এবং রক্ত অপসারণ করা হয়। অপারেশনের পর খুলি আগের স্থানে রেখে চামড়া সেলাই করে দেয়া হয় ও ১টি নল রেখে আসা হয়, যাতে পরবর্তিতে রক্ত প্রবাহ হলে তা যেন বের হয়ে আসে।

 

যা যা মনে রাখতে হবেঃ

১। মস্তিস্ককে আঘাত থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে ৩ লেয়ারের আবরণ বা পর্দা দ্বারা মস্তিস্ক আবৃত থাকে,যাকে একত্রে মেনিনজেস বলে।

২। আঘাত বা দুর্ঘটনার ফলে বহি:স্ব পর্দার নিচে রক্তজমাট বাধলে তাকে সাব ডুরাল হেমাটোমা বলে।

৩। মাথায় আঘাতের পর কোন ধরণের শারিরিক সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এবং প্রয়োজনে সিটি স্ক্যান বা এম.আর আই করতে হবে।

 

 

13-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

সাব এরাকনয়েড হেমোরেজ

 

আমাদের শরীরের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল বেইন বা মস্তিস্ক। আর তাই আমাদের হৃদপিন্ড থেকে প্রতিমুহুর্তে যে পরিমান রক্ত সঞ্চালিত হয় তার শতকরা ২০ ভাগই যায় মস্তিস্কে। এই বিশাল পরিমান রক্ত মস্তিস্কের হাজার হাজার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রক্তনালীর মধ্য দিয়া প্রবাহিত হয়। রক্তনালী দুর্বল থাকলে বা কোন কারণে ছিড়ে গেলে মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হয়। মস্তিস্কের মধ্য আবরী পর্দার (সাব এরাকনয়েড) নিচ দিয়ে প্রবাহিত কোন রক্তনালি থেকে রক্তপাত হলে তাকে সাব এরাকনয়েড হেমোরেজ বলে। এটি খুবই জরুরী অবস্থা, কেননা দ্রত রোগ নির্নয় করতে না পারলে ও ব্যবস্থা না নিলে রোগী মারা যেতে পারে।

 

লক্ষণ সমূহঃ

সাব এরাকনয়েড হেমোরেজ হলে যে বিভিন্ন ধরণের রোগ লক্ষণ দেখা দিতে পারে তা হলঃ

·        হঠাৎ তীব্র মাথাব্যাথা

·        আলোতে চোখ খুলতে সমস্যা- ফেটোফোবিয়া

·        ঘাড় ব্যাথা

·        পিঠ ব্যাথা

·        বমি বমি ভাব

·        বমি হওয়া

·        খিচুনী হওয়া

·        অজ্ঞান হওয়া

 

সাব এরাকনয়েড হেমারেজ ও হেমোরেজিক স্ট্রোকঃ

 à¦®à¦¸à§à¦¤à¦¿à¦¸à§à¦•à§‡ কোন কারণে রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হলে তাকে স্ট্রোক বলে। স্ট্রোক ২ ধরনের হয়। ইসকেমিক, হেমোরেজিক। রক্তনালী কোন কারণে বন্ধ হলে ইসকেমিক স্ট্রোক হয়। আর মস্তিস্কের রক্তনালী ছিড়ে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হলে তাকে বলে হেমোরেজিক স্ট্রোক। এটি ২ ধরণের। মস্তিস্কের আবরণে, মস্তিস্কের চারপাশের রক্তনালী ছিড়ে রক্তক্ষরণ হলে তাকে বলে সাব এরাকনয়েড হেমারেজ, আর মস্তিস্কের অভ্যন্তৱের রক্তনালী ছিড়ে রক্তক্ষরন হলে তাকে ইনট্রা সেরেব্রাল হেমোরেজ বলে। তবে সব স্ট্রোকের মধ্যে হেমোরিজক স্ট্রোকের পরিমান শতকরা ১০ ভাগ। বাকি সবই ইসকেমিক স্ট্রোক।

 

সাব এরাকনয়েড হেমোরেজের কিছু কারনঃ

 

ক) সেরেব্রাল এনিউরিজমঃ

মস্তিস্কের চারপাশের রক্তনালীর কোথাও দুর্বলতা ও ফোলা থাকলে তাকে এনিউরিসম বলে।

এই গঠন গত দুর্বলতার কারণে তা আকৃতিতে পরিবর্তিনই হয় সাধারণত ফুলে বেলুনের মত আকার ধারণ করে। ফলে এর দেয়াল খুব পাতলা থাকে, যে কোন মুহুর্তে ছিড়ে রক্তৰরণ হবার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া উচ্ছ রক্তচাপ ও রক্তে কোলেষ্টোরলের মাত্রা বেশি থাকলে এনিউরিজম ছিড়ে যাবার সম্ভাবনা বেশি।

খ) আটারিও ভেনাস ম্যালফরমেশনঃ

এ ক্ষেত্রে মস্তিস্কের রক্তনালী সমূহ যন্ত্রতত্র ভাবে সংযুক্ত হয়ে অস্বাভাবিক রক্ত চলা চল করে। ফলে তা খুব দুর্বল হয় এবং ছিড়ে গিয়ে রক্ত ক্ষরণ হবার ঝুকি বেশি।

গ) আঘাত জনিত কারণঃ মাথায় কোন কারণে জোড়ে আঘাত লাগলে, রক্তনালী ছিড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে।

 

সম্ভব্য জটিলতাঃ

সাব এরাকনয়েড হেমোরেজের ফলে বা তার চিকিৎসা পরবর্তী সে সব জটিলতা হতে পারে, তা হলঃ

ক) পুনারায় রক্তক্ষরণঃ  

অনেক সময় রক্তক্ষরণ হয়ে রক্তজমাট বেধে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়। তবে ছিড়ে যাওয়া রক্তনালী বেধে না দিলে পুনারায় সে স্থান থেকে রক্তক্ষরণ হবার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষত ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যে পুনারায় রক্তক্ষরণ হতে দেখা যায়। তবে প্রথম ২ সপ্তাহে যে কোন সময় পুনারায় রক্তক্ষরণ হতে পারে, এবং তাতে রোগীর অবস্থান আর ও অবনতি হয়, এমনকি রোগী মারা যেতে পারে।

খ) কর্মিউনিকেটিং  à¦¹à¦¾à¦‡à¦¡à§à¦°à§‹à¦•à§‡à¦«à¦¾à¦²à¦¾à¦¸à¦ƒ

মস্তিস্কের  à¦…ভ্যন্তৱে ও ভেন্ট্রিকলের মধ্যে সেরেব্রো স্পাইনাল ফ্লুইড বা সিএসএফ তৈরী হয়। সাব এরাকনয়েড হেমোরেজের ফলে রক্তক্ষরণ হয়ে তা জমাট বাধলে সি.এস.এফ এর স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্থ হয়। এর ফলে মস্তিস্কের ভেন্ট্রিকল বড় হতে থাকে। এ অবস্থাকে বলে হাইড্রোকেফালাস। অনেক সময় মস্তিস্কের অপারেশনের জটিলতা হিসাবে ও এরকম হতে পারে।

গ) সেরেব্রাল ইডিমাঃ

মস্তিস্কে যে কোন আঘাত জনিত কারণে সেরেব্রাল ইডিমা হয়, অর্থ্যাৎ মস্তিস্ক ফুলে যায়। মস্কিস্কে রক্ত ও অক্সিজেনের প্রবাহ কমে গেলে এ সমস্যা হয়।

ঘ) খিচুনীঃ

মস্তিস্কের আক্রান্ত স্থান হতে অস্বাভাবিক সিগ্নাল বা রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হবার কারণে কিছু সময় রোগীর আচরণ, অনুভূতি চলাচল বা সচেতনতার পরিবর্তন দেখা দেয় যাকে খিচুনী বা সিজার বলা হয়।

ঙ) সেরেব্রাল ভেসোস্পাজমঃ

এই কারণেই সেরেব্রাল হেমোরেজের রোগী বেশি মারা যায় বা জটিলতা দেখা যায়। মস্তিস্কের আক্রান্ত স্থান থেকে কিছু রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়, যা মস্তস্কের অন্যান্য রক্তনালীকে সংকুচিত করে দেয়। ফলে মস্তিস্কে রক্তপ্রবাহ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কমে যায়। এ সমস্যাটি রক্তক্ষরণের পর থেকে ২৮ দিনের মধ্যে যে কোন সময় হতে পারে। যদিও ২য় সপ্তাহে এ সমস্যা বেশি হতে দেখা যায়।

 

রোগ নির্নয়ঃ

সাব এরাকনয়েড হেমোরেজ নির্নয়ের জন্য রোগের ইতিহাস, সাময়িক পরীক্ষার পাশাপাশি নিম্নোক্ত পরীক্ষা নীরিক্ষা করতে হয়। যেমনঃ

 

১। সিটি স্ক্যানঃ এর মাধ্যমে রক্তক্ষরণের মাত্রা, আক্রান্ত স্থান, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণের উৎস নির্ণয় করা যায়। তাছাড়া কমিউনিকেটিং হাইড্রোকেফালাসও নির্নয় করা যায়।

২। লাম্বার পাংচারঃ

এর মাধ্যমে সি.এস.এফ বের করা হয় ও  তাতে রক্ত আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখা হয়।

৩। ইনট্রা আরটারিয়াল ডিজিটাল সাবট্রাকশন এনজিও গ্রাফী (এডিএসএ) সংক্ষেপে যা সেরেব্রাল এনজিওগ্রাফী নামে পরিচিত। এর দ্বারা নির্দিষ্ট ভাবে আক্রান্ত রক্তনালীর অবস্থান নির্নয় করা সম্ভব।

 

চিকিৎসাঃ

সার্জারীঃ মস্তিস্কে রক্তক্ষরণের মূল কারণ জানা থাকলে যেমনঃ এনিউরিজম বা আর্টারিও ভেনাস ম্যালফরমেশন ইত্যাদি সার্জারী করে ঠিক করা সম্ভব।

কনসারভেটিভ চিকিৎসাঃ মূলত জমাট বাধা রক্ত অপসারণ করা হয়। এতে মস্তিস্কের চাপ কমে যায়, সিএস.এফ প্রবাহ সচল হয়। তবে পুনরায় রক্তক্ষরণ হবার ঝুকি থেকে যায়।

অপারেশন পদ্ধতিঃ

ক্লিপিং ; মাথার খুলি গোল করে কেটে ফেলা হয়। সার্জন এনিউরিজমটি নির্দিষ্ট করে তাতে ক্লিপ করে দেন। কিন্তু সর্দি খুব ভেতরে থাকে বা আকাবাকা থাকে, সেক্ষেত্রে ক্লিপ না করতে পারলে তাকে ভাল করে আবৃত করে রাখা হয়।

এন্ডোভাসকুলার কয়েলিং ;

 à¦¸à§‡à¦°à§‡à¦¬à§à¦°à¦¾à¦² এনজিওগ্রাম করে আক্রান্ত রক্তনালী চিহ্নিত করা হয়। বিস্তারিত

-->

13-02-2013 রোগ ব্যাধি

স্ট্রোক

স্ট্রোক একটি মারাত্মক রোগ। সারা পৃথিবীতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে বা পঙ্গুত্ব বরণ করছে। মস্তিস্কের কোন স্থানে রক্তচলাচল বন্ধ হলে স্ট্রোক হয়। যখন কোন ধমনী বন্ধ হয়ে যায় বা ছিড়ে যায়, মস্তিস্কের  ঐ স্থানের কোষসমূহে অক্সিজেনের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ঐ কোষগুলি মারা যায়। ঐ মৃত অংশকে ইনফার্কট বলে। দ্রুত ও যথার্থ চিকিৎসা না হলে পাশ্ববর্তী স্থানের কোষসমূহ মারা যেতে পারে। স্ট্রোকের  ফলে রোগী হঠাৎ চোখে ঝাপসা দেখা, এক বা একাধিক উভয় চোখে কম দেখা, হাত-পা বা মুখমন্ডলে দূর্বল ও অস্বস্তিবোধ, কথা বলতে, বুঝতে সমস্যা, গিলতে সমস্যা হওয়া বা অজ্ঞান হতে পারে।

 

স্ট্রোকের প্রভাব :

স্ট্রোকের ফলে কি কি শারীরিক পরিবর্তন হবে তা নির্ভর করে স্ট্রোকের ফলে মস্তিস্কের কোন নির্দিষ্ট অংশ এবং তা কি পরিমাণ আক্রান্ত হয়েছে তার উপর। সামান্য স্থানে রক্ত চলাচল বন্ধ হলে রোগীর কিছু লক্ষণ দেখা যায়, আবার বড় রক্তনালী ছিড়ে গেলে রোগীর হাত পা অবশ হওয়া সহ রোগী মারাও যেতে পারে। অন্যদিকে মাত্রা কম হলে রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারে, কিন্তু বেশি হলে চিরস্থায়ী পঙ্গুত্ব বরন করতে হতে পারে।

 

ট্রানজিয়েন্ট ইসকোমিক এটাক (টি আই এ)  :একে অনেক সমসয় মিনি স্ট্রোকও বলা হয়। এটি মূলত রোগীর জন্য একটি সতর্ক সংকেত যে পরবর্তি যে কোন সময় বড় ধরনের স্ট্রোক হতে পারে। এটি সাধারণ স্ট্রোকের মতই, তবে তা অল্প সময় স্থায়ী হয়, ২৪ ঘন্টার কম। টি আই এ হবার কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহের  মধ্যে বড় ধরনের স্ট্রোক হয়ে থাকে। তাই টি আই এ কে গুরুত্বের সাথে চিকিৎসা করতে হবে ও সতর্ক হতে হবে।

 

লক্ষনসমূহ :

স্ট্রোক ও টি আই এ উভয়ই মারাত্মক রোগ এবং চিকিৎসা যত দেরী হবে, তার ফলাফল তত খারাপ হবার সম্ভাবনা বেশি। তাই এর লক্ষণ সমূহ জেনে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে। স্ট্রোক বা টিআইএ নিচের যে কোন লক্ষণ নিয়ে আসতে পারে :

§        হঠাৎ এক বা উভয় চোখে ঝাপসা  দেখা, কম দেখা।

§        হাত, পা বা মুখে অবশ, দূর্বলতা বা নাড়াতে না পারা।

§        কথা বলতে বা বুঝতে অসুবিধা হওয়া।

§        মাথা ঝিম ঝিম করা, হাঁটতে ভারসাম্য না থাকা।

§        গিলতে সমস্যা হওয়া।

§        প্রচন্ড মাথা ব্যাথা।

সামান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেও স্ট্রোক হবার ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যায়। যেমন :

ক) রোগীকে হাসতে বলুন। মুখ বা চোখ বাঁকা হয় কিনা?

খ) রোগী কি দুইহাত উচুতে তুলতে পারেন?

গ) কথা বলতে বলুন, স্পষ্টভাবে কথা বলতে বা বুঝতে পারেন? না হলে দ্রুত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।

 

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাবার উপায় :

 

স্ট্রোক হবার বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে যেমন : বেশি বয়স, পুরুষ ব্যক্তির পারবারিক রোগের ইতিহাস ইত্যাদি যা কিনা কমাতে সাহায্য করে। যেমন-

§        উচ্চ রক্তচাপ  নিয়ন্ত্রণ

§        ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ

§        ধুমপান পরিহার

§        বেশি লবন ও চর্বিযুক্ত খাদ্য পরিহার করা।

§        রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রাখা।

§        অতিরিক্তি মদ্যপান পরিহার করা।

§        ওজন কমানো, নিয়ন্ত্রণে রাখা।

§        নিয়মিত ব্যায়াম করা।

 

অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দনের ফলে স্ট্রোক :

বাম অলিন্দ (লেফট এট্রিয়াম) যখন খুব দ্রুত ও অস্বাভাবিকভাবে  স্পন্দন শুরু করে তখন তাকে এট্রিয়াল ফিব্রিলেশ হৃদস্পন্দন বলে। স্বাভাবিক ভাবে হৃদস্পনন্দন ৬০-১০০ এর মধ্যে হলেও ফিব্রিলেশনে হৃস্পনন্দন ৩০০-৪০০ হয়ে যায়। সঠিক চিকিৎসা না হলে স্ট্রোক হতে পারে।

 

এর লক্ষণসমূহ :

§        অস্বাভাবিক হৃদস্পনন্দন, পালপিটিশন

§        মাথা ঝিম ঝিম করা, মাখা হালকা লাগা, অজ্ঞান হওয়া

§        অসম্ভব দূর্বলতা

§        শ্বাসকষ্ট

§        বুক ব্যাথা

এ সব লক্ষণ থাকলে খুব দ্রুত হাসপাতালে হৃদরোগ বিভাগে ভর্তি হতে হবে।

 

যা যা মনে রাখা জরুরী :

§        স্ট্রোক একটি মারাত্মক রোগ, যা জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসা করতে হয়।

§        টি. আই. এ হলো মিনিট স্ট্রোক যা সতর্ক সংকেত হিসেবে দেখা দেয়।

§        কিছু কিছু নিয়ম মেনে চললে, জীবন-যাপন পদ্ধতি পরিবর্তন আনলে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়।

 

 

 

13-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

স্ট্রোক প্রতিরোধে করনীয়

 

স্ট্রোক প্রায় ক্ষেত্রেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। তাই স্ট্রোক হওয়া প্রতিরোধ করা একান্ত অপরিহায্য। স্ট্রোকের বেশ কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে, তবে এদের মধ্যে অনেকগুলি বিষয়ই জীবন-যাপন পদ্ধতি, লাইফ স্টাইল সম্পর্কীত। তাই সবাই ইচ্ছে করলে এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ অভ্যাস পরিত্যাগ করে স্ট্রোকের ঝুকি কমাতে পারে। যেমন: উচ্চ রক্তচাপ, ধুমপান, ডায়বেটিস, রক্তে উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরলের উপস্থিতি, খাবারের সাথে অতিরিক্ত লবন, চর্বি খাদ্য গ্রহন এবং ব্যায়াম না করা। তবে কিছু কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে, যা পরিবর্তন করার সাধ্য মানুষের নেই, যেমন: বয়স, লিঙ্গ, পারিবারিক ইতিহাস ইত্যাদি।

 

স্ট্রোকের কারন:

কোন কারনে মস্তিস্কের কোন অংশে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হলে স্ট্রোক হয়। মূলত ৩ ভাবে স্ট্রোক হতে পারে।

ক) হেমোরেজিক স্ট্রোকঃ

রক্তনালী ছিড়ে গিয়ে রক্তক্ষরন  হয় এবং রক্ত নির্দিষ্ট স্থানে পৌছতে পারেনা।

খ) এথেরোস্ক্লেরোসিসের ফলে ইসকেমিক স্ট্রোকঃ

মস্তিস্কের রক্তনালীতে এথেরোস্ক্লেরোসিস হবার ফলে রক্তনালীর দেয়াল মোটা হয় ও নালী শরু হতে হতে বন্ধ হয়ে যায়, রক্তচলাচল বাধাগ্রস্থ হয় এবং স্ট্রোক হয়।

গ)এম্বোলিজমের কারনে ইস্কেমিয়াঃ এমবোলিজস বা জমাট রক্তপিন্ড মস্তিষ্কের কোন রক্তনালীর ভেতরে জমে রক্ত চলাচল বন্ধ করে দিতে পারে।

এই তিন পদ্ধতির যে কোন ভাবেই মস্তিস্কে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হলে আক্রান্ত স্থানটি অক্সিজেনের অভাবে সাথে সাথেই মারা যায়। মৃত অংশটিকে বলে ইনফার্ক। দ্রুত সঠিক চিকিৎসা না হলে ইনফার্কের পার্শ্ববর্তী স্থানও ধীরে ধীরে মরে যেতে থাকে। অষ্ট্রেলিয়ার মত উন্নত দেশে প্রতি বছর প্রায় ৬০,০০০ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং হৃদরোগের পরেই সবচেয়ে বেশি রোগী স্ট্রোকে মারা যায়।

 

রিস্ক ফ্যাক্টর ও তার নিয়ন্ত্রনঃ

ক) উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনঃ

উচ্চ রক্তচাপ হল স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান রিস্ক ফ্যাক্টর। রক্তচাপ বলতে রক্ত প্রবাহিত হবার সময় ধমনীর দেয়ালে যে পার্শ্ব চাপ দেয় তাকে বোঝায়। উচ্চ রক্তচাপ মানে হল রক্ত, ধমনীর দেয়ালে স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি পার্শ্ব চাপ প্রদান করছে। ফলে ক্রমাগত চাপের কারনে ধমনীর দেয়াল দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ছিড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ (হেমোরিজিক স্ট্রোক) হতে পারে। তা ছাড়া উচ্চ রক্তচাপের কারনে ধমনীর দেয়াল শক্ত, পুরু ও অনমনীয় হয় এবং নালীর ভেতরের পথ সরু হয়ে যায়। ফলে যে কোন সময় নালী বন্ধ হয়ে বা এমবোলিজম এই চিকন নালী পথে আটকে গিয়ে স্ট্রোক হতে পারে।

 

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনের জন্য করনীয়ঃ

-         নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা।

-         শরীরের উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা।

-         নিয়মিত ব্যায়াম করা।

-         চর্বি ও লবন যুক্ত খাদ্য পরিহার করা।

-         আশযুক্ত খাদ্য, শাকসবজি, ফল বেশি খাওয়া।

-         মদ্যপান কম করা।

-         ধুমপান সম্পূর্ণরূপে পরিহার করা।

-         ডাক্তরের পরামর্শ অনুযায়ী উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনের ঔষধ খাওয়া।

 

খ) ধুমপান বর্জন করাঃ

ধুমপানের কারনে স্ট্রোকের ঝুঁকি ২-৩ গুন বেশি হয়ে। সিগারেটের ধোয়ায় কিছু রাসায়নিক পদার্থ থাকে (যেমনঃ নিকোটিন, কার্বন-মনোক্সাইড) যা এথেরোস্ক্লেরেসিস প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। এছাড়া ধুমপানের ফলে রক্ত বেশি আঠালো হয় এবং প্লেটলেট বা অনুচক্রিকা ও অন্যান্য জমাটকারী ফ্যাক্টর সমুহ অধিক কার্যকর হয়, ফলে রক্ত জমাট বেধে থ্রম্বাস তৈরী করে, যা রক্তনালীকে বন্ধ করে দিতে পারে। তাছাড়া ধুমপানের ফলে রক্তনালী সংকুচিত হয়, ফলে রক্তচলাচল আরও বাধাগ্রস্থ হয়।

 

ধুমপান পরিহারের উপায়ঃ

-         দৃঢ় মনোবল থাকতে হবে। অবিচল থাকতে হবে।

-         আজ থেকেই ধুমপান পরিহার করতে হবে।কালকে, আগামী মাস থেকে করব-এমন করলে হবে না।

-         প্রয়োজনে ধুমপান এর সংখ্যা উল্লেখ করে ডায়রিতে লিখে রাখতে হবে। কবে কখন কোন মুহুর্তে ধুমপান বেশি করা হয তা বোঝা যাবে।

-         বন্ধু-বান্ধব,আত্বীয়-স্বজনদের সাহায্য দরকার

-         হঠাৎ ১ বার ধুমপান করে ফেললে তার জন্য মনোবল না হারিয়ে সিদ্ধান্তে অটল থাকতে হবে।

-         প্রয়োজনে বিশেষ উপায় বের করতে হবে, যেমন সিগারেটের বদলে নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপী নিতে হবে।

-         প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

 

গ) ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখাঃ

ডায়বেটিস হল শরীরের এমন এক দীর্ঘমেয়াদী রোগ, যার ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রন নষ্ট হয়ে যায়। শরীর গ্লুকোজ ব্যবহার করতে পরে না। ডায়বেটিস থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি ২ গুনেরও বেশি হয়। কেননা রক্তে সর্বক্ষন উচ্চ মাত্রায় গ্লুকোজ থাকলে তা এথেরোস্ক্লেরোসিস কে ত্বরান্বিত করে তাই ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখা অত্যন্ত জরুরী। নিয়ন্ত্রনের কিছু উপায় হলঃ

-         নিয়মিত রক্তে গ্লুকোজ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করা।

-         উচ্চতা অনুযায়ী শরীরের নির্দিষ্ট ওজন নিয়ন্ত্রন করা।

-         প্রতিদিন নিয়মমত নির্দিষ্ট পরিমান ব্যায়াম করা।

-         লবন ও চর্বিযুক্ত খাদ্য কম খাওয়া, সবজি ও আশযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া।

-         পরিমিত আহার করা।

-         ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ বা ইনসুলিন গ্রহন করা।

 

ঘ) রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনঃ

কোলেস্টেরল হল আমাদের শরীরেরই তৈরী চর্বিজাতীয় এক উপাদান। শরীরের স্বাভাবিক গঠন, বৃদ্ধি ও কার্যক্রমে এটি অত্যন্ত গুরম্নত্বপুর্ণ। কিন্তু তা পরিমানের চেয়ে বেশি হলে নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হলে তা এথোরোমা তৈরী করে, যা পরবর্তিতে  রক্তনালীর দেয়ালে জমা হয়ে এথেরোস্ক্লেরোসিস তৈরী কবে। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ সহ স্ট্রোকের ঝুঁকি হৃদরোগের ঝুঁকি বহু মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনের জন্য কিছু পরামর্শঃ

-         বিস্তারিত

-->

13-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

স্ট্রোক ও তার পরবর্তি প্রভাব

 

মস্তিস্কের মধ্যকার বা মস্তিস্কে রক্ত সরবরাহ কারী কোন রক্তনালী ছিড়ে গিয়ে বা রক্তনালী বন্ধ হলে স্ট্রোক হয়। মুলত এর ফলে মস্তিস্কের কোন অংশে রক্তসরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং অক্সিজেনের অভাবে এ নির্দিষ্ট অংশটি মারা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রক্তনালীর ভেতরে জমাট রক্তপিন্ড আটকে রক্তচলাচল বন্ধ করে দেয়। এর ফলে নির্দিষ্ট অংশের পার্শ্ববর্তি এলাকাতেও রক্তচলাচল স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায়।

 

মস্তিস্কের যে নির্দিষ্ট অংশটি রক্তের অভাবে, অক্সিজেনের ঘাটতির ফলে মারা যায়, তার কাজ কর্মও সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যায় এবং তা আর ঠিক হয় না। মস্তিস্কের কোন অংশটি এবং তা কি পরিমান ক্ষতিগ্রস্থ তার উপর নির্ভর করে তার পরবর্তী প্রভাব। যদি খুব ক্ষুদ্র রক্তনালী ছিড়ে সামান্য অংশ আক্রান্ত হয়, সে ক্ষেত্রে  à¦•à¦¿à¦›à§ সমস্যা থাকতে দেখা যায়। আর যে ক্ষেত্রে বড় একটি অংশে রক্তচলাচলের ফলে মস্তিস্ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়, সে ক্ষেত্রে স্থায়ী ত্রুটি থেকে যায়, এমনকি রোগী মারাও যেতে পারে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি মানসিক ভারসাম্যহীনতাও দেখা দিতে পারে।

 

দ্রুত চিকিৎসার ফলঃ

মস্তিস্ক কোষ এর পুন:গঠন ও পুন:সৃষ্টি সম্ভব হয় না। তাই মস্তিস্কের কোন অংশ মারা গেলে তা চিরতরে অকার্যকার হয়ে পড়ে। তবে পার্শ্ববর্তি মস্তিস্ক কোষ সমূহে রক্তচলাচল পুরপুরি বন্ধ না হয়ে কমে যায় বলে সে অংশসমূহ পুরপুরি মারা যায় না, তবে দুর্বল হয়। সে ক্ষেত্রে যদি সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা দেয়া যায়, তবে দুর্বল অংশ সমূহ তার কর্মক্ষমতা অনেকাংশে ফেরত পায়। তাই স্ট্রোক করার সাথে সাথে সঠিক চিকিৎসা রোগীকে যেমন বড় ধরনের ক্ষতি থেকে বাচাঁতে পারে, তেমনি অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যু থেকেও রক্ষা করতে পারে।

 

মস্তিস্কের বিভিন্ন অংশঃ

সাধারন ভাবে মস্তিস্ককে ৪টি বড় বড় অংশে ভাগ করা যায়। যেমনঃ ডান ও বাম হেমিস্ফেয়ার, সেরেবেলাম ও ব্রেইন স্টেম এর একেক অংশ স্ট্রোকের ভিন্ন ভিন্ন প্রভাব দেখা যায়। যেমনঃ

 

ক) ডান হেমিস্ফেয়ারঃ

মস্তিস্কের ডান হেমিস্ফেয়ার আমাদের শরীরের বাম দিকের অনুভুতি ও কার্যক্রম নিয়ন্ত্রন করে। তাই ডান হেমিস্ফেয়ারে স্ট্রোক হলে তার পরবর্তি ফলাফল রূপে নিম্নোক্ত পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।

-         সাময়িক স্মৃতি বিলোপ

-         শরীরের বাম দিকের অনুভুতি না থাকা

-         শরীরের বাম পার্শ্ব নাড়াতে না পারা বা দুর্বল হওয়া

-         আচরনগত পার্থক্য

-         ভারসাম্য, দুরত্বজ্ঞান ইত্যাদি কমে যাওয়া।

 

খ) বাম হেমিস্ফেয়ারঃ

মস্তিস্কের বাম হেমিস্ফেয়ারের কাজ হল শরীরের ডান পার্শ্বের অনুভুতি , নাড়াচাড়া নিয়ন্ত্রন করা, কথা বলা নিয়ন্ত্রন করা ইত্যাদি। তাই বাম হেমিস্ফেয়ারে স্ট্রোক হলে সাধারনত নিম্নোক্ত সমস্যা সমূহ দেখা যেতে পারে।

-         ডান পার্শ্ব প্যারালাইসিস

-         কথা বলতে সমস্যা হওয়া

-         সাময়িক স্মৃতিশক্তি বিলোপ হওয়া ইত্যাদি।

গ) সেরেবেলামঃ

সেরেবেলামের অন্যতম কজ হল শরীরের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রন করা ও শরীরের বিভিন্ন অংশের কাজের সমন্বয় সাধন করা। তই এ অংশে স্ট্রোক হলে যা যা সমস্যা দেখা দিতে পারে তা হলঃ

-         মাথা ঝিম ঝিম করা

-         বমি বমি ভাব

-         শরীরের ভারসাম্য না থাকা, পরে যাওয়া

-         হাটতে গেলে ডানে বামে সরে যাওয়া

-         জড়িয়ে জড়িয়ে কথা বলা

-         শরীরের সব অংশের কাজের, মাত্রার সমন্বয় না থাকা।

 

ঘ) ব্রেইন স্টেমঃ

মস্তিস্কের এই অংশটি আমাদের অজান্তেই আমাদের শরীরের গুরুত্বপুর্ণ অংশ সমূহের কাজ নিয়ন্ত্রন করে। যেমন শ্বাস প্রশ্বাস নেয়া, হৃদপিন্ডের গতি, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন ইত্যাদি। তাই এ অংশে স্ট্রোক হলে যা যা হতে পারে তা হলঃ

 - সমস্ত শরীর অবশ, অচল, প্যারালাইসিস হওয়া

-         গিলতে সমস্যা

-         দৃষ্টি সমস্যা

-         কোমা (নাড়ীর অচেতন অবস্থা)

-         মৃত্যু

 

স্ট্রোক পরবর্তী জীবন যাপনঃ

অনেক ক্ষেত্রে স্ট্রোকের মাত্রা কম হলে রোগী ধীরে ধীরে পুর্ণ সুস্থতা লাভ করে। অনেক ক্ষেত্রে কিছু কিছু সমস্যা থাকলেও রোগী প্রায় স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে। আবার অনেক ক্ষেত্রে রোগীর স্থায়ী বড় ধরনের দুর্বলতা থাকে ও তা নিয়েই বাচতে হয়। এক্ষেত্রে রোগীর পরিবার, আত্মীয ও বন্ধু-বান্ধব থেকে সাহায্য, সহযোগীতা ও আন্তরিকতা একান্ত প্রয়োজন। সাথে সাথে নিবিড় পরিচর্যা, ¯^v¯’¨ সেবা, ফিজিও থেরাপী পেলে রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। এ ক্ষেত্রে রোগী যেসব স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য পেতে পারেন তা হলঃ

 

স্পিচ থেরাপিস্টঃ

রোগীর কথা বলা, যোগাযোগ রক্ষা করা এবং গিলতে সমস্যা অনেকাংশ সমাধান করতে সাহায্য করতে সক্ষম।

অকুপেশনাল থেরাপিস্টঃ

রোগীর চলা ফেরা, কাজ কর্মের ক্ষেত্রে নতুন করে দক্ষতা বৃদ্ধি পেতে এবং পরিবার ও কর্মক্ষেত্রে নিজ কাজ সম্পাদন করতে অনেকাংশ সহযোগীতা করতে পারেন।

ফিজিকাল থেরাপিস্টঃ

শরীরের অবশ হওয়া, দুর্বল অংশ সচল করতে ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট নানা ভাবে সাহায্য করতে পারেন।

 

যা যা মনে রাখতে হবেঃ

১। স্ট্রোক পরবর্তি ফলাফল, প্রতিক্রিয়া একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম হয়, যা মুলত নির্ভর করে মস্তিস্কের কোন অংশ কি পরিমান আক্রান্ত হয়েছে তার উপর।

২। স্ট্রোক হলে দ্রুত মেডিকেল চিকিৎসার শরনাপন্ন হতে হবে।

৩। স্ট্রোক পরবর্তি রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পরিবার আত্বীয়-স্বজন এর সাহায্যের পাশাপাশি স্পিচ থেরাপিস্ট, ফিজিক্যাল ও অকুপেশনাল থেরাপিস্টের সাহায্য দারকার।

13-02-2013 রোগ ব্যাধি

পারকিনসন ডিজিজ

 

 

পারকিনসন ডিজিজ হল মস্তিকের ক্রমবর্ধমান ক্ষয়জনিত একটি রোগ, যার ফলে শরীরের নড়াচড়ার নিয়ন্ত্রন বাধাগ্রস্থ হয়। এই রোগের প্রকৃত কারণ যদিও জানা যায় নি, তবে কিছু কিছু ক্সেত্রে জেনেটিক সমস্যা কে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

 à¦¤à¦¬à§‡ এটি ছোয়াঁচে রোগ নয় এবং মৃত্যুর ঝুঁকিপূর্ণ রোগও নয়।

 

রোগের প্রকোপঃ

রোগটি খুব বেশী না হলেও একেবারে কম নয়। বাংলাদেশে এই রোগের উপর কোন জরিপ নেই, তবে অস্ট্রেলিয়ার এক জরিপে দেখা যায় যে, প্রতি ১,০০০ জনে ৪ জন ব্যক্তি এই রোগে আক্রান্ত হয়। তবে ৬০ বছরের উর্দ্ধে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা প্রতি ১০০ জনে ১ জন।

 

রোগের কারণঃ

এই রোগের লক্ষণ সমূহ দেখা দেয় মূলত মস্তিষ্কের মধ্য অঞ্চলে স্নায়ু কোষের ক্রমশ ক্ষয় প্রাপ্তির কারণে। মূলত ডোপামিন নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ মস্তিষ্কে কাজ

 

করে যা আমাদের শরীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গের চলাফেরা, নাড়াচাড়াকে সহজ, সাবলিল করে। এই রোগে ডোপামিনের ঘাটতি দেখা দেয়, এবং ডোপামিন তৈরী শতকরা ৭০ ভাগের চেয়েও কমে গেলে রোগ লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে।

 

এর কারণ হিসেবে বিভিন্ন গবেষকরা বলছেনঃ

-         জীনগত সমস্যা।

-         রাসায়নিক দ্রব্য, টক্সিন।

-         কীটনাশক।

-         মাথায় আঘাত। ইত্যাদি।

 

রোগ লক্ষণঃ

ব্যক্তি হিসেবে এবং রোগের প্রকার মাত্রা ভেদে একেক জনের ক্ষেত্রে একেক ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়। তবে প্রধান প্রধান লক্ষণ সমূহ হলঃ

-         হাত, পা কাঁপা।

-         মাংসপেশী শক্ত হয়ে থাকা।

-         নড়াচড়া ধীর গতি সম্পন্ন হওয়া।

-         হঠাৎ স্থীর হয়ে থাকা, চলতে না পাড়া।

 

-         থেমে থেমে হাঁটা

-         হাতের লেখা খুব ছোট ছোট হওয়া।

-         অবসাদ গ্রস্থ হওয়া।

 

চিকিৎসাঃ

মূলত ঔষধের সাহায্যে। প্রয়োজনে অপারেশন (নিউরো সার্জারী) করতে হতে পারে। এ ছাড়াও ফিজিও থেরাপিতে উপকার পাওয়া যায়।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

1.      পারকিনসনিজম একটি মস্তিষ্কের ক্ষয়জনিত রোগ, যা চিকিৎসা দ্বারা ভাল হয়।

2.     এই রোগের লক্ষণ রোগের মাত্রা, প্রকার ও ব্যক্তির উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।

3.     একেক জনের ক্ষেত্রে একেক ধরনের সমস্য, তাই চিকিৎসাও ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।

 

 

 

13-02-2013 রোগ ব্যাধি

গুলিন বার সিনড্রোম:

 

গুলিন বার সিনড্রোম এক ধরনের অটোইমিউন রোগ। মূলত এটি স্নায়ূর প্রদাহজনিত রোগ যা ছড়িয়ে পড়ে এবং প্যারালাইসিস দেখা দেয়। এই রোগের প্রকৃত কারণ যদিও জানা যায়নি, তবে কয়েক ধরনের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশনে এই রোগ দেখা দেয়। এই রোগে অধিকবাংশ রোগী আপনা আপনি ভালো হযে যায়,তবে ৬ মাস -২ বছর কিংবা ততোধিক সময় লাগতে পারে। ঔষধের  দ্বারা রোগ ভাল হয় না।, তবে গামাগ্লবিউলিন বা প্লাজমাফেরেসিস চিকিৎসার দ্বারা দ্রুত আরোগ্য  পা‌ওয়া  যেতে পারে।

 

কিভাবে হয়?

এই রোগ হলে শরীরের ইমিউন সিস্টেম  নার্ভের মায়েলিন সিথকে আক্রমণ করে, এমনকি কখনও কখনও নার্ভকেও নষ্ট করে। ফলে প্যারালাইসিস দেখা দেয়। মূলত কিছ ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ হলে শরীর ঐ  জীবাণুর বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরী করে। পরে ঐ এন্টিবডি নার্ভের মায়েলিন সিথকে নস্ট করে দেয়।

আর তার ফলেই শরীরে অবশ ভাব,মাংস পেশীর দূর্বলতা এবং চামড়ায় ভিন্ন ধরনের সেনসেশন অনুভূত হয়।

লক্ষনসসুহ সাধারণত পা থেকে শূরু হয় এবং কয়েকদিনেই উপরের দিকে উঠতে থাকে। অবসতা মৃদু ধরনের হতে পারে, এমনকি খুব মারাত্মক হয়ে শ্বাস বন্ধও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে রোগী বাঁচিয়ে রাখতে হয়। এই রোগের কারন আজানা এবং এর কোন চিকিৎসাও নেই। তবে । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই  আপনা-আপনি ভাল হয়ে যায়। কিন' কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্থায়ী সমস্যা থেকে যায়। তবে এই রোগে প্রতি লাখে ২-৮ জন আক্রান্ত হয় এবং যে কোন বয়সে হতে পারে। এই রোগের অন্যান্ন নাম হল-

·        একিউট ইডিপ্যাথিক পলিনিউরাইটিস

·        ল্যান্ডীস এসেনডিং প্যারালাইসিস

·        একিউট ইডিপ্যাথিক পলিয়েডিফুলু নিউরাইটিস

 

লক্ষণসমূহ:

·        মাংসপেশীর দূর্বলতা, অবশ, প্যারালাইসিস

·        শরীরে  উভয় পার্শ্বে ঝা‌কুনি,

·        অসামঞ্জস্য নড়াচড়া

·        অবষবোধ,

·        মাংসপেশীতে ব্যাথা,চাবানো ব্যাথা

 

·        চোখে ঝাপসা দেখা,

·        মাথা ঝিম ঝিম করা

·        শ্বাসকষ্ট

বৈশিষ্টঃ

·        লক্ষণসমূহ পা থেকে শুরু হয়,ধীরে ধীরে উপরে শরীরে অন্যান্য অংশে আক্রান্ত করে।

·        মাঝে মাঝে হাত থেকে শুর করে শরীরের নীচের দিকেও নামতে পারে।

·        রোগ অগ্রসর হতে কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে।

·        রোগ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছাবার পর কযেকদিন ঐ অবস্থায় স্থির থাকে, তারপর ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

·        পূর্ণ সুস্থ্য হতে ৬ মাস থেকে ২ বছরও লাগতে পারে।

 

মৃত্যু ঝুঁকিপর্ণ রোগ:

রোগটি খুব সামান্য পর্য্যায়ের ও হতে পারে, আবার খুব মারাত্মক হয়ে শ্বাস বন্ধ হয়ে রোগী মারাও যেতে পারে। এটি নির্ভর করে কোন নার্ভ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে তার উপর। যদি শরীরের অটোনমিক নার্ভ আক্রান্ত হয় সে ক্ষেত্রে রোগীর রক্তচাপ,হৃদপিন্ডের গতি প্রবাহ,দৃষ্টি,কিডনী,শরীরের তাপ মাত্রার নিয়ন্ত্রণ সব কিছুতেই সমস্যা হবে। এ ছাড়াও এ রোগের শ্বাষকষ্ট হয়ে, শ্বাস বন্ধ হয়ে রোগী মারা যেতে পারে।

 

রোগের কারণ অজানা:

রোগের প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। তবে বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায়, কিছুদিন পূর্বে তারা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশনে আক্রান্ত হয়েছিল। এদের মধ্যে ফুড পয়জনিং সৃষ্টিকারী ক্যামপাইলোব্যাকটার জেজুরী নামক জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হতে দেখা গেছে। এ ছাড়াও হারপিস,গ্ল্যান্ডুলার ফিভার এবং ভাইরাল হেপাটাইটিস এ আক্রান্ত হবার পর  গূলিন বার সিনড্রোম হতে দেখা যায়। এ ছাড়া কখনও কখনও অপারেশনের পর,পেকার কামড়ের পরে, এমনিক টিকা গ্রহণের পরও এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা গেছে। মূলত কারণ  যাই হোক যদি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যাবস্থা কোন কারণে নিজ শরীরের স্নায়ূ ও মায়েলিন বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে,তখনই গুলিণবার সিনড্রোম দেখা দেয়।

 

রোগ নির্ণয়:

গুলিন বার সিনড্রোমের রোগের লক্ষণগুলি ব্যাপক এবং  অনির্দিষ্ট হওয়ায় রোগ নির্ণয় বেশ জটিল।

-শরীরের পরীক্ষা

-মাংসপেশীর শক্তিমাত্রা পরীক্ষা

-মাংসপেশীর কর্মক্ষমতা পরীক্ষা

-রিফ্লেক্স যেমন নি-জার্ক

-নার্ভ কন্ডাকশন ভেলোসিটি

-স্পইনাল ট্যাপ (স্পাইনাল ফ্লুইড পরীক্ষায় অধিক মাত্রায় প্রোটিনের উপস্থিতি)।

ইত্যাদির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব।

 

চিকিৎসা:

এই রোগের কোন চিকিৎসা নেই। এমনকি কার ক্ষেত্রে রোগ কতটুকু মারাত্মক তাও সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না। তবু চিকিৎসা হিসেবে যা যা করা সম্ভব তা হল:

ক. প্লাজমাফেরেসিসঃ

রোগীর শরীরের রক্ত থেকে রোগ প্রতিরোধকারী ইমিউন কোষ সরিয়ে বাকি রক্ত পুণরায় শরীরে প্রবেশ করানো।

খ. গামাগ্লোবিউলিনঃ

এতে রোগ না সারলেও রোগের অগ্রগতি বন্ধ হতে দেখা গেছে। এ ক্ষেত্রে গামাগ্লোবিউলিন শরীরের শীরা পথে প্রবেশ করানো হয়,পর পর ৫ দিন।

 

রোগ পরবর্তী অবস্থা:

গবেষনায় দেখা গেছে যে,শতকরা ৯০ জন আক্রান্ত ব্যক্তি বেঁচে যায় এবকং শতকরা ৭৫-৮৬ ভাগ সম্পূর্ণভাবে কোন জটিলতা ছাড়াই বেঁচে থাকেন। শতকরা ১০-১৫ জন কিছু কিছু স্থায়ী শারীরিক ত্রুটি নিয়ে বেঁচে থাকেন। যত দ্রুত সঠিক চিকিৎসা ,ফিজিও থেরাপী শুরু হয় শারীরিক ত্রুটি তত কম হয়।

 

যা মনে রাখা দরকার:

১। গুলিন বার সিনড্রোম হল নার্ভ বা স্না‌য়ূর এক ধরনের প্রদাহ জনিত রোগ।

২। এই রোগের প্রকৃত কারণ জানা যায়নি, তবে কিছু ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ইকফেকশনের পর এই রোগ হতে দেখা যায়।

৩। শতকরা ৯০ জনই সুস্থ্য হয়ে উঠে, তবে পূর্ণ সুস্থ্য হতে ৬ মাস থেকে ২ বছর বা অধিক সময় লাগতে পারে।

 

 

12-02-2013 রোগ ব্যাধি

ফেইন্টিং বা অজ্ঞান হওয়া

 

 

ফেইন্টিং হলো একটি ক্ষণস্থায়ী অবস্থা যেখানে মানুষ সাময়িকভাবে অজ্ঞান হয়ে যায় এবং এর কারণ হলো রক্তচাপ হঠাৎ কম হঅয়া। কমন কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- অতিরিক্ত তাপ বা গরম , ব্যাথা এবং মানসিক তথা শারীরিক চাপ। যদি কেউ ফেইন্ট হয়ে যায়, বা এরকম মনে হয়, তাহলে সাথে সাথে শুয়ে পড়তে হবে এবং পা উপরের দিকে তুলে রাখতে হবে। তাছাড়া মুক্ত বাতাসও সাহায্য করে। যদি ফেইন্ট অবস্থায় থাকে, তাহলে দশ মিনিট ঐ অবস্থায় শুয়ে থাকতে হবে এবং পরে আস্তে আস্তে উঠতে হবে যদি কেউ ঐ অবস্থা  থেকে দ্রুত না সেরে ওঠে, তাহালে জরুরীভাবে চিকিৎসা দিতে হবে। হঠাৎ করে পড়ে গেলে, সেটির কারণ- সেরিব্রাল হেমোরেজ বা স্ট্রোকও হতে পারে।

রক্তের শিরা উপশিরাগুলো অনবরত তাদের পরিধিটিকে এডযাস্ট করে, যাতে সঠিক রক্তচাপ ধরে রাখতে পারে। উদাহরন স্বরূপ-যখন আমরা দাড়াই, তখন শরীরের ভরে বাধা দেয়ার ফলে শিরাগুলো সংকুচিত হয়। অস্থায়ীভাবে রক্তচাপ কমে গেলে এরকম অনেক ঘটনা ঘটে  যাতে শিরাগুলো প্রসারিত হতে পারে না। এর মধ্যে রয়েছে- অতিরিক্ত  তাপমাত্রা, ব্যাথা, আবেগ প্রবন ঘটনা। মস্তিস্কে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যায়। সাধারণত ফেইন্টিং পর্বটি কয়েক সেকেন্ডের ঘটনা, এতে অল্প কয়েক মিনিটের মধ্যেই মানুষ ঠিক হয়ে যায়। তবে যদি কেই দ্রুত সেরে না ওঠে, তাহলে তাকে দ্রুত চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন।

 

লক্ষনসমূহ:

-         মাথা ঘোরা

-         ফ্যাকাশে চেহারা

-         ঘাম নিঃসরন

-         দুঃশ্চিন্তা এবং অস্থিরতা

-         বমি বমি ভাব

-         হঠাৎ করে পড়ে যাওয়া

-         অল্প সময়ের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলা এবং অল্প কয়েক মিনিটের মধ্যে ঠিক হয়ে যাওয়া।

 

 

কারণসমূহ:

নানা কারণে হঠাৎ করে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:

-         দীর্ঘসমসয় দাঁড়িয়ে থাকলে।

-         অতিরিক্ত তাপে শরীরের চামড়ায় রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়, কারণ তখন রক্ত তাদের প্রধান প্রবাহ সিস্টেম থেকে দূরে চলে আসে।

-         আবেগ প্রবনতা ,অতি দুঃখ-কষ্ট বোধ

-         তীব্র ব্যাথা

-         অনেকক্ষন না খেয়ে থাকলে ও হতে পারে।

 

ফেইন্ট হয়ে গেলে করণীয়:

ফেইন্ট হয়ে যাচ্ছে অনুভুত হলে, সাথে সাথে শুয়ে পড়তে হবে এবং পা  উপরে তুলে দিতে হবে। এতে করে জ্ঞান হারানো  থেকে রক্ষা করা যাবে। যদি কেউ গরম অনুভব করে, তাহলে সেক্ষেত্রে ঠান্ডা মুক্ত বাতাস সাহায্য করে। যদি শুয়ে পড়া সম্ভব না হয়ও, তাহলে মাথা যতটুকু সম্ভব নীচু রাখতে হবে। যদি ফেইন্ট হয়েই যায়, তাহলে ঐ অবস্থায় দশ মিনিট শুয়ে থাকতে হবে এবং পরে আস্তে আস্তে উঠতে হবে।

 

প্রাথমিক চিকিৎসা:

 

-         যদি কেউ ফেইন্ট হয় তাকে শুইয়ে দিতে হবে, যদি চেয়ারে বসা থাকে, তাহলে নীচে শুইয়ে দিতে হবে।

-         যদি কেউ অজ্ঞান হয়ে যায়, তাহলে দেখতে হবে তার  পাল্‌স আছে কিনা? এবং সে শ্বাস নিচ্ছে কিনা।

-         তাকে শুইয়ে তার পা মাথার উপর পর্যন্ত তুলে দিতে হবে।

-         যদি অতিরিক্ত তাপের কারণে ফেইন্ট হয়, তাহলে তার জামা কাপড় ঢিলা করে দিতে হবে, তাকে বাতাসে রাখতে হবে এবং ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে।

-         সে কোথাও থেকে পড়ে গেছে কিনা, বা ব্যাথা পেয়েছে কিনা, মাথায় আঘাত পেয়েছে কিনা এবং থাকলে তার কারণ ভালভাবে জেনে নিতে হবে।

 

অর্থস্টেটিক হাইপোটেনশন:

রাক্তের শিরা- উপশিরা গুলো শরীরের ভরের কারণে সংকুচিত হয়। যখন  শোয়া বা বসা থেকে দাড়ানো হয়,  তখন এ সংকোচন বাড়ে। অর্থোস্টেটিক হাইপোটেনশন হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালে রক্তচাপ এডজাস্ট হয় না এবং ফেইন্টিং পর্ব উত্তেজিত হয়। এ হাইপোটেনশনের কারণ হলো:

-         স্নায়ুতন্ত্রের অসুখ, যেমন- নিউরোপ্যাথি

-         দীর্ঘসময় বিছানায় শুয়ে থাকলে

-         পানি শূন্যতা

-         অনিয়মিত হৃদস্পন্দন (কার্ডিয়াক এরিয়মিয়া)

-         প্রেসারের ঔষধের পরিবর্তন।

 

হাইপোটেনশন:

যদি রক্তচাপ সাধারণ মাত্রার চেয়ে নীচে থাকে, তখন তাকে হাইপোটেনশন বলে। এটি বিভিন্ন কারণে হয়, যেমন: হৃদস্পন্দন  অনিয়ম, কিছু প্রদাহ, পানি স্বল্পতা, হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপ। এড্রেনাল গ্রন্থির ডিসঅর্ডারের জন্যও নিন্মরক্তচাপ  থাকে , তখন তাকে এডিসনস  ডিজিজ বলে। যারা বার বার ফেইন্ট হয়ে যায় তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা উচিৎ, শরীরের ভেতরের কোন রোগ আছে কিনা তা দেখার জন্য।

 

যেগুলো মনে রাখতে হবে:

-         ফেইন্টং এর কমন কারণ হলো- অতিরিক্ত গরম বা উচ্চ তাপ, ব্যাথা, মানসিক চাপ, দুঃশ্চিন্তা, অনেকক্ষন না খেয়ে থাকা ইত্তাদি।

-         শুয়ে থাকলে, পা উচুতে তুলে ধরলে এ অবস্থার উন্নতি হয়।

-         বার বার ফেইন্ট হলে তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে হবে যে, শরীরে আভ্যন্তরীন কোন অসুখ আছে কিনা।

 

 

12-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

এপিলেপ্সি

 

      

এপিলেপ্সি একটা স্নায়ুজনিত সমস্যা যার ফলে একজন ব্যক্তি অবসাদ গ্রস্থ বা মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়। এপিলেপ্সি আক্রান্ত -ব্যক্তির জীবন যাপনে কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।এটা হতে পারে ড্রাইভিং, চাকরি,ভ্রমন,খেলাধূলা এবং বিশ্রামের ক্ষেত্রে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বেক্তি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে। তন্দ্রাহীনতা,এলকোহল,ড্রাগ এর প্রতি আসক্তি এবং প্রচন্ড মানসিক চাপ-মৃগী রোগের প্রভাবক হিসাবে কাজ করে। ইহা গর্ভনিরোধক বড়ি বা গর্ভাবস্থার উপরও প্রভাব ফেলে।

     

মৃগীরোগের কারণ এবং মৃগীরোগের প্রকারভেদ বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন। প্রত্যেকের প্রাত্যহিক জীবনের উপর মৃগী রোগের প্রভাব বিভিন্ন ।

          যদি এপিলেপ্সি নির্ণয় হয় তবে এর মানে কি এবং কেন এটি হয়েছে, কি হতে পারে এবং কি করা যাবে বা যাবে না তা জানা অতি গুরুত্বপূর্ণ ।আপনি খুটিনাটি বিষয়ে ডাক্তারের সাথে ফ্রিভাবে আলোচনা করুন এবং ট্রিটমেন্ট প্রোগ্রামকে সফল করুন।

 

ঔষুধ :

প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিদিন সময়মত ঔষুধ গ্রহণ সব সময় সম্ভব হয় না। এর জন্য হঠাৎ ঔষুধ গ্রহণ বর্জন করা ঠিক না। যদি ঔষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। যেমন- দূর্বলতা,ওজনের পরিবর্তন বা চামরায় লাল দাগ দেখা যায় ডাক্তারের সাথে আলাপ করা প্রয়োজন।এ ক্ষেত্রে অসংখ্য ঔষুধ আছে যা চেষ্টা করা যেতে পারে। যদি মৃগী রোগটা নিয়ন্ত্রণ থাকে তবে হঠাৎ করে চিকিৎসা বন্ধ করা উচিৎ নয়।

 

চাকরি :

আপনার মৃগী রোগ/এপিলেপ্সি থাকলে বা খিচুনি  à¦¹à¦²à§‡ চাকরি ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্থ হতে পারে।

 

ড্রাইভিং :

যদি আপনার এপিলেপ্সি থাকে তবে গাড়ি ড্রাইভ করার সময় অবশ্যই লাইসেন্স সাথে রাখুন, যতক্ষন পর্যন্ত- আপনার  ইপিলেপ্সি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে না আসে। একবার  সিজার/এপিলেপ্সি হবার পর ড্রাইভিং ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানতে হয়।

 

খেলাধুলা/বিশ্রাম :

এপিলেপ্সি আপনাকে আনন্দ করা/বিশ্রাম নেয়া থেকে বিরত রাখতে পারে না।যেমন-সাঁতার কাটা এর মাধ্যমে যে কোন ব্যক্তি আনন্দ উপভোগ করতে পারে।এমনকি যারা এপিলেপ্সিতেও আক্রান্ত।যারা এপিলেপ্সিতে আক্রান্ত তারা যদি সাঁতার কাটে তবে তাদের দেখভালের জন্য লোকবলের প্রয়োজন।যদি তারা কোন বিপদে পড়েন তবে তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থাও থাকতে হবে।

 

ভ্রমন :

যদি আপনি বিদেশ ভ্রমনে যেতে চান তবে আপনার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ঔষুধ সাথে নিন। আপনার চিকিৎসকের কাছ থেকে একটা লিখিত নেন আপনার রোগ সম্পর্কে, কারণ অন্য দেশে আপনাকে যে কোন মুহুর্তে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লাগতে পারে।

 

খিচুনীর প্রভাবকসময়হ :

কিছু লোকের জীবন যাপনের সাথে খিচুনি বিশেষ  সাদৃশ্য দেখা যায়।

·        এ ক্ষেত্রে

·        ঘুম কম হওয়া;

·        এলকোহল

·        উত্তেজক ঔষুধ

·        মানসিক চাপ ইত্তাদি প্রভাব বিস্তার করতে পারে।

 à¦à¦¸à¦¬ প্রভাব প্রত্যেকের জন্য একই রকম নাও হতে পারে।

 

খিচুনী হলে করনীয়ঃ

 

এপিলেপ্সির রোগীর যে কোন সময় খিচুনী হতে পারে। তাই সব সময় গলায় বা পকেটে নাম, ঠিকানা, রোগের নাম, ব্যবহার করা ঔষধের নাম, মোবাইল নাম্বার ও করনীয় কি-এসব লেখা কাগজ রাখতে হবে, যাতে অপরিচিত কেউ সহজেই সাহায্য করতে পারে।

 

এলকোহল :

মৃগী রোগীরা মাঝে মাঝে বিয়ার কিংবা রাতের খাবারে এক গ্লাস ওয়াইন পান করেন।এলকোহল এবং এন্টিএপিলেপ্টিক ড্রাগস একে অন্যের পরিপূরক।এই সব ঔষুধ আক্রান্ত ব্যক্তিকে দূর্বল করে দেয় যদি তারা এন্টি এপিলে প্টিক ঔষুধ ব্যবহার করে। এলকোহল এই সব ঔষুধের কার্য্যকারিতা কমিয়ে দেয়, খিচুনীর মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়।

 

উজ্জল আলো এবং কম্পিউটার :

অনেকের ভূল ধারণা আছে যে, উজ্জল আলো/কম্পিউটার এবং ভিডিও গেমস মৃগী রোগকে বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু বাস্তবিক সত্য এই যে, কেবলমাত্র ৫-৭ শতাংশ লোক আলোতে সমস্যা অনুভব করে। তবে পোলারয়েড চশমা পড়লে এই সমস্যা থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব।

 

মানসিক চাপ :

প্রত্যেকের জীবনেই চাপ আছে। প্রচন্ড চাপ কারো ক্ষেত্রে খিচুনী তৈরী করে।

\

জন্মনিয়ন্ত্রক ঔষুধ :

কিছু এন্টিএপিলেপ্টিক ঔষুধ জন্ম নিয়ন্ত্রনের কার্যকারিতাকে কমিয়ে দেয় এবং অপরিকল্পিত গর্ভ হতে পারে। আপনার নিউরোলজিস্ট, গাইনিকোলজিস্ট এবং সাধারণ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন আপনার জন্য কোন জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি উপযুক্ত হবে।

 

গভাবস্থা :

এন্টি এপিলেপ্টিক ড্রাগস একজন বাড়ন্ত শিশুর স্বাভাবিক গঠনে সমস্যা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে আপনি আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। নিউরালটিউব ডিফ্যাক্ট (স্পাইনা বাইফিডা) প্রতিরোধে ফলিক এসিড বা ফলেট ঔষধ ভাল কাজ করে।

কিছু খিচুনি রোগ জিনগত কারণে হয়। এটা একটা জটিল বিষয়।   à¦¯à¦¦à¦¿ আপনার মৃগীরোগ ধরা পড়ে তবে উদ্বিগ্ন, চিন্তা, অবসাদ -এগুলো সাধারণ ভাবেই দেখা যেতে পারে।এ বিষয়ে প্রচুর জানা থাকলে আপনি আরও সহযে  à¦ বিষয়ের সমাধান করতে পারবেন।

 

যা মনে রাখার মতঃ

১। এপিলেপ্সি একটা স্নায়ুজনিত সমস্যা যার ফলে একজন ব্যক্তি অবসাদ গ্রস্থ বা মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়।

২। মৃগীরোগের কারণ এবং মৃগীরোগের প্রকারভেদ বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন। প্রত্যেকের প্রাত্যহিক জীবনের উপর মৃগী রোগের প্রভাব বিভিন্ন ।

৩। যদিএপিলেপ্সি হয় তবে এর মানে কি এবং কেন এটি হয়েছে, কি হতে পারে এবং কি করা যাবে বা যাবে না তা জানা অতি গুরুত্বপূর্ণ ।

12-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

সেরেব্রাল হেমোরেজ

মস্তিস্কের  à¦­à¦¿à¦¤à¦°à§‡à¦° রক্তনালী ছিঁড়ে রক্তক্ষরণ হওয়াকে সেরেব্রাল হেমোরেজ বলে। সেরেব্রাল হেমোরেজ এর কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-

·                    দূর্বল রক্তনালী

·                    মাথায় আঘাত পাওয়া;

·                    জন্মগত রক্তনালীতে সমস্যা।

 

চিত্রঃ মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ

 

সেরেব্রাল হেমোরেজ একটি জরুরী অবস্থা এবং জীবন নাশের জন্য হুমকি স্বরূপ। সঠিক চিকিৎসার অভাবে এর জন্য মৃত্যুও ঘটতে পারে। আর  যারা বেঁচে থাকে, তাদের সাধারণ শরিরের কোন এক পাশের কার্যক্ষমতা কমে যায়। আর এর ভয়াবহতা নির্ভর করে রক্তপাতের স্থান এবং মস্তিস্কের ক্ষতির উপর। সেরেব্রাল হেমোরোজকে সাধারণ স্ট্রোক হিসেবে ধরা হয়।

 

ব্রেইন হেমোরেজ (মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ) এর প্রকার ভেদ:

মস্তিস্কে তিনটি পর্দা দিয়ে আবৃত থাকে, যাদের প্রতিটির কাজ আলাদা। সবচেয়ে ভেতরের পর্দাটি বিভিন্ন রক্তনালী ধারণ করে। মস্তিস্ক সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড থেকে পুষ্টি পায়।এটি প্রথম এবং ২য় পর্দার মাঝে থাকে। তৃতীয় পর্দাটি বা শেষ পর্দাটি (ডুরা) স্কাল (মস্তিস্ক আবৃত্তকারী হাড়) বরাবর থাকে এবং এটি অপেক্ষাকৃত শক্ত এবং পুরু।

            মস্তিস্কের কোষের যে কোন ধরনের রক্তপাতকে আভ্যন্তরীন সেরেব্রাল হেমোরেজ বলে। প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্দার মাঝের জায়গায় মধ্যে যে কোন রক্তপাতকে সাব এরাকনয়েড হেমোরেজ বলে।

 

লক্ষণসমূহ:

সেরেব্রাল হেমোরেজের লক্ষণসমসহ নির্ভর করে রক্তপাতের স্থান এবং পরিমাণের উপর। তারপরও

লক্ষনসমূহ হলো:

  • দুর্বলতা;
  • শরীর ঝিমঝিম করা, বিশেষ করে শরীরের যে কোন এক পাশের অংশ;
  • শরীরের যে কোন একটি অংশ অবশ হয়ে যাওয়া;
  • অসংলগ্ন কথা বলা;
  • প্রচন্ড মাথা ব্যথা;
  • বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া;
  • অজ্ঞান হয়ে যাওয়া;
  • হাটতে কষ্ট হওয়া।

স্ট্রোক:

মস্তিস্কে রক্ত সঞ্চালন বিচ্ছিন্ন হওয়াকে স্ট্রোক বলে। সেরেব্রাল হেমোরেজ হলে (হিমোরেজিক স্ট্রোক) অথবা একটি শিরা ব্লক হয়ে গেলে (ইমচোমিক স্ট্রোক) স্ট্রোক হতে পারে। তবে আসলে ১০ ভাগের একভাগ স্ট্রোকের কারণ সেরেব্রাল হেমোরেজ। ইমচোমিক স্ট্রোক এর চেয়ে  হেমোরেজিক স্ট্রোক অনেক বেশি ভয়াবহ।

             à¦¸à§‡à¦°à§‡à¦¬à§à¦°à¦¾à¦² হেমোরেজের কারণে রক্ত একাধারে একটি জায়গায় জমা হতে থাকে এবং সেটি একপর্যায়ে জমাট বাঁধে। এ জমাট বাঁধা রক্ত (Colt)  নিকটস্থ মস্তিস্কের কোষের  উপর চাপ দেয় এবং এর ফলে মস্তিস্কের অক্সিজেন এবং পুষ্টি গ্রহন বাধাপ্রাপ্ত হয়। এ অবস্থায় দ্রুত পরিবর্তন করা না গেলে অর্থাৎ দ্রুত চিকিৎসা না দিলে স্থায়ীভাবে মস্তিস্ক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। হেমোরেজিক স্ট্রোকের প্রধান কারণ হলো উচ্চ রক্তচাপ।  à¦à¦° ফলে রক্তনালীগুলোর উপর চাপ থাকে এবং দুর্বল করে ফেলে। এছাড়া আরও কিছু কারণ এর অর্ন্তৎভূক্ত:

ü      ধুমপান;

ü      মাত্রাতিরিক্ত ডায়াবেটিস

ü      ওজন বৃদ্ধি

ü      অতিমাত্রায় চর্বিযুক্ত খাবার,

ü      কোলেস্টেরেলযুক্ত খাবার,

ü      অতি লবনসমৃদ্ধ খাবার

ü      পারিবারিক কারণ;

ü      বেশি বয়স;

ü      অনিয়মিত হৃদস্পন্দন।

মাথার আঘাত:

মাথায় কোন কারণে আঘাত পেলে সেটি  সাবডুরাল হেমোটোমা ঘটায়। অর্থাৎ মস্তিস্কের সবচেয়ে বাইরের পর্দার নীচে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। মাথায় ঘুষি মেরে আঘাত করলে অস্থায়ীভাবে যে কেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারে। এ ধরনের অবস্থাকে কানকাশন (Concusion) বলে।  à¦®à¦¾à¦¥à¦¾à§Ÿ জোরে ঘুষি মারার কারণে রক্তনালীগুলো ছিন্ন হয়ে রক্তপাত ঘটাতে পারে এবং মস্তিস্ককে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে।

 

এসকল কারণে নিউরোলজিকাল ডিসঅর্ডার (নার্ভজনিত কারণে) হতে পারে। যেমন- পারকিনসন্‌স ডিজিজ।

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সেরেব্রাল হেমোরেজ:

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে  সেব্রোল হেমোরেজ সাধারণত খুবই কম। অস্ট্রেলিয়াতে প্রতি ১ লক্ষ বাচ্চার মধ্যে ২.৫ জন বাচ্চা এতে আক্রান্ত হয়। দুই বছরের নীচের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশি হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ রোগের কারণ জন্মগত সমস্যা (রক্ত নালাসমূহের দেয়াল বা আবরনের দুর্বলতা) আসলে এ রোগের এক তৃতীয়াংশ কারণই এখনও অজানা।

ডায়াগনসিস বা রোগ সনাক্তকরণ:

বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগ  সনাক্ত করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে-

  • শারীরিক পরীক্ষা
  • ম্যাগনেটিক রেজেনন্স ইমেজিং (MRI)
  • কম্পিউটারাইজড এক্সিয়াল টমোগ্রাফিক (CAT) স্ক্যান।

চিকিৎসা:

চিকিৎসা নির্ভর করে রক্তপাতের স্থান এবং ভয়াবহতার উপর। চিকিৎসার অন্তর্ভূক্ত হলো:

  • হাসপাতালে ভর্তি করা।
  • উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য ঔষধ এবং দরকার হলে শিরাপথে ঔষুধ প্রদান।
  • সঠিক কারণ উদ্ধার করে সঠিক চিকিৎসা প্রদান। যেমন- দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঔষুধ প্রদান। (এন্টি হাইপারটেনসিভ ড্রাগ)।
  • নির্দিষ্ট কিছু অপারেশন।
  • সেরেব্রাল হেমোরেজের যে কোন লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে হাসপাতালে জরুরী বিভাগে ভর্তি করাতে হবে।

দীর্ঘ মেয়াদি ফলাফল

সেরেব্রাল হেমোরেজ একটি জীবননাশকারী জরুরী অবস্থা। সঠিক চিকিৎসার অভাবে এ রোগের জন্য মৃত্যুও হতে পারে। আর বেঁচে থাকলেও স্থায়ী কিছু সমস্যা দেখা দেয়। বাচ্চারা বড়দের তুলনায় দ্রুত এ রোগ থেকে সেরে উঠতে পারে। কারণ তাদের মস্তিষ্ক তখনও পূর্ণতা পায়নি বরং বৃদ্দি পেতে থাকে।

সেরেব্রাল  হেমোরেজের যে কোন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা দিতে হবে। যত দ্রুত চিকিৎসা দেয়া হবে, তত দ্রুত ভালো ফল পাওয়া যাবে। কিছু সেরেব্রাল হেমোরেজিক স্ট্রোক এর রোগীর দ্রুত চিকিৎসা দেওয়ার কারণে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

যেগুলো মনে রাখতে হবে:

·        মস্তিস্কের ভেতরের রক্তনালা ছিড়ে রক্তপাত হওয়াকে সেরেব্রাল হেমোরেজ বলে।

·        এ রোগের কারণসমূহ হলো: উচ্চ রক্তচাপ, দুর্বল রক্তনালী এবং রক্তনালীর সমস্যা এবং আঘাত।

·        সেরেব্রাল হেমোরেজ একটি জীবননাশকারী জরুরী অবস্থা।

 

 

12-02-2013 রোগ ব্যাধি

স্মৃতিভ্রম

এ্যামনেসিয়া হল সাময়িক বা স্থায়ীভাবে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়া। আঘাত, মানসিক আঘাত, কিছু ঔষধ এবং  ইলেকট্রোকনভালসিভ থেরাপী সহ বিভিন্ন কারণে স্মৃতিভ্যম/স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে পারে। সাধারণভাবে  স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়াকে এমনেসিয়া বলা হলেও মূলত সাময়িকভাবে স্মৃতি হারানোকেই বোঝায়। অন্যদিকে এন্টোগ্রেড এমনেসিয়া বলতে বোঝায়- রোগী নতুন কোন কিছু শিখতে পারছেন না, আর রেট্রোগ্রেভ এমনেসিয়া বলতে বোঝায়-রোগী তার পূর্ব জীবনের  স্মৃতি ভূলে যাচ্ছেন। কোন আঘাতের ফলে রোগী সামান্য সময়ের ঘটানা যেমন মাথায় আঘাত পাওয়ার পর থেকে সুস্থ হওয়া পর্যন্ত স্মৃতি ভুলে যান, কিন্তু বাকি স্মৃতি ঠিক থাকে।  অন্যদিকে জীবনের প্রথম ১-২ বছরের কোন ঘটনাই কারও মনে থাকে না। এটি স্বাভাবিক, সবার ক্ষেত্রে।

লক্ষণসমূহ:

কারণ ও আঘাতের পরিমাণের উপর লক্ষণ এর পার্থক্য হয়। তবে সাধারণভাবে যে সব লক্ষণ পাওয়া যায়-

¨      স্মৃতি হারিয়ে ফেলা।

¨      সন্দেহ সংশয়।

¨      পরিচিত চেহারা বা স্থান চিনতে না পারা।

¨      সুস্থ হবার পর এমনেসিয়ায় অসুস্থ থাকাকালীন কোন স্মৃতি মনে না থাকা

কারণ:

অসংখ্য কারণে স্মৃতিভ্রম হতে পারে। যেমন-

¨      মাথায় আঘাত                      

¨      মারাত্মক অসুস্থতা

¨      প্রচন্ড জ্বর

¨      খিচুনী

¨      মানসিক আঘাত, হিস্ট্রেরিয়া

¨      অধিক মদ্যপানজনিত স্মৃতিভ্রম

¨      বারবিচুরেট বা হোরাইন জাতীয় ঔষধ

¨      স্ট্রোক

¨      ব্রেইন সার্জারী

¨      এলজেইমারস

¨      ইলেকট্রো কানভালসিভ থেরাপী

স্মৃতি একটি রহস্যময় জিনিস:

মানুষের মনে বা মস্তিস্কে স্মৃতি কিভাবে বা কোথায় জমা থাকে- বিজ্ঞানীরা আজও তা বের করতে পারেরনি। তবে এ ক্ষেত্রে যে মতামত পাওয়া যায়-

¨      মস্তিস্কের কট্রেক্স নামক সর্ববহিস্থ স্তরে স্মৃতি জমা থাকে।

¨      হিপোক্যাম্পাস নামক মস্তিস্কের একটি বিশেষ অংশ স্মৃতিশক্তির ব্যাপারে ভূমিকা রাখে।

¨      মস্তিস্কের বিশেষ কিছু স্থানে স্মৃতি জমে থাকে।

¨      মস্তিস্কের নিউরোনে  স্মৃতি জমা থাকে।

স্মৃতির ধরণ:

স্মৃতিও নানা ধরনের হয়ে থাকে।যেমন-

ক. শর্ট টার্ম মেমোরী: নতুন তথ্যাদি মস্তিকস্কে অল্প সময়ের জন্য জমা থাকে। যদি ঐ তথ্য নিয়ে পরবর্তিতে আর চিন্তা করা না হয়, তবে তা স্মৃতি থেকে হারিয়ে যায়।

খ. লং টার্ম মেমোরী: নতুন তথ্য যখন আলোচনা, চিন্তা করা হয়, তখন তা শর্টটার্ম থেকে লংটার্ম মেমোরীতে

    চলে আসে এবং দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়।

গ. ডিক্লারেটিভ: কোন তথ্য বা ঘটনা সম্পর্কীত তথ্য।

ঘ. নন-ডিক্লারেটিভ: কোন শিক্ষনীয় বিষয় রপ্ত হবার পর যে স্ম্রিতি। যেমন- সাঁতার, ড্রাইভিং ইত্যাদি ভেতর থেকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে চলে আসে।

 

স্মৃতি লোপ বা স্মৃতিভ্রমের তীব্রতা

            এমনেসিয়া কি পর্যায়ের তা নির্ভর করে কারণের উপর। সাধারণত আঘাত, খিচুনি, ইলেকট্রিক কনভালসিভ থেরাপী মস্তিস্কের বিদ্যুৎ তরঙ্গকে সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্থ করে, শর্টমেমোরী ঠিকমত কাজ করতে পারে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই এমনেসিয়া হয় সাময়িক।। তবে আঘাত বেশি হলে স্ম্রিতি স্থায়ী ভাবেই লোপ পেতে পারে। অন্যদিকে মস্তিস্কে সার্জারী হলে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতি চিরতরে  মুছে যায়। অন্যদিকে এলজেইমারস রোগ হলে রোগীর সুস্থকালীন সব স্মৃতি মনে থাকলেও অসুস্থ হবার দিনে থেকে পরবর্তি স্মৃতি মনে থাকে না।

 

রোগ নির্ণয়:

এমনেসিয়া রোগ নির্ণয় করতে হলে-

¨      রোগের ইতিহাস

¨      শারীরিক পরীক্ষা

¨      স্মৃতি শক্তির পরীক্ষা

¨      রোগীর চিন্তা শক্তির পরীক্ষা

¨      মাথার এক্স-রে, সিটি স্ক্যান

¨      বিভিন্ন রক্ত পরীক্ষা এবং

¨      ব্রেইনের এনজিওগ্রাম  করা যেতে পারে।

চিকিৎসা:

কারণের ভিন্নতায় চিকিৎসাও ভিন্নভাবে করতে হবে। যেমন- আঘাত জনিত রোগীতে ঔষধ, যত্ন, সাইক্রিয়াটিক টিকিৎসা লাগবে। মদ্যপান বা হোরোইন ইত্যাদি ঔষধের ক্ষেত্রে তা দ্রুত বন্ধ এবং ভিটামিনের অভাব পূরণ করা, অন্যদিকে এলজেইমারস রোগের ক্ষেত্রে নতুন  কোলিনার্ঞ্জিক ড্রাগস ইত্যাদি প্রয়োজন।

 

যা মনে রাখা জরুরী:

1.       স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়াকে এমনেসিয়া বলে।

2.      এতে রোগীর স্মৃতিলোপ, সন্দেহ সংশয়, পরিচিত ব্যক্তি বা স্থানকে মনে করতে না পারা ইত্যাদি লক্ষন দেখা দেয়।

3.      আঘাত, মারাত্মক অসুস্থতা, মানসিক আঘাত, ঔষধ ব্রেইনের সার্জারী ইত্যাদি নানা কারণে এমনেসিয়া হতে পারে।

 

 

 

12-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

স্মৃতি ভ্রম বা আলঝাইমার

 

( সংগৃহীত) ( সংগৃহীত) ( সংগৃহীত)

 

 

প্রিয়জনের যখন বয়স হয়, বুড়ো হন তখন তারা ভুলোমন তো হতেই পারে তাঁদের । সিনিয়র সিটিজেনদের এই সামান্য চ্যুতি তেমন ক্ষতির কারণ তো নয়ই। জুনিয়রদের তা মানিয়ে চলতে হয়। তবে যদি হয় আরো গুরম্নতর মনের বিকলতা যেমন-আলঝাইমার রোগ। ৬৫ উর্দ্ধ ৮ জনের মধ্যে ১ জনের এমন ডিমেনশিয়া হতে পারে। প্রথম দিকে হয়ত এই বৈকল্য তেমন নজরে পড়েনা বন্ধু স্বজনদের, তবে আছে কিছু আগামসংকেত।

সতর্কসংকেত ; স্মৃতি ও বাকশক্তি:

আলঝাইমার রোগের সূচনার দিকে, দীর্ঘমেয়াদী স্মরণশক্তি অটুট থাকলেও ক্ষন্ডকালীন স্মৃতিগুলো কেমন যেন ঝাপসা হয়ে যায়। যে আলাপ হলো মাত্র, সেই আলাপের কথা বেমালুম ভুলে যেতে পারেন প্রিয়জন। যেসব প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়েছে সেসব প্রশ্ন হয়ত বারবার করতে থাকেন তারা। বাকশক্তি একটু ব্যহত হয়, তাই এরা সাধারণ অনেক শব্দ মনে করতে হিমসিম খান।

আচরণ:

স্মরণশক্তির হানি তো ঘটেই, আলঝাইমার হলে বিহ্বলতা ও আচরণ পরিবর্তনও ঘটতে পারে। পরিচিত কোনও স্থানে হারিয়ে যেতে পারেন তারা পথ ভোলা পথিকের মত। মেজাজের চড়াই উৎরাই, বিচারশক্তি লোপ- এসব হতে পারে। এককালে যে লোক থাকতেন ফিটফাট, তিনি ছেড়া, নোংরা জামা ও উস্কুখুস্খু চুল নিয়ে বেরোন বাইরে।

সংকেতগুলো অবহেলা করা ঠিকনয়:

প্রিয়জনের আলঝাইমার রোগের মত বিধ্বংসী রোগ হলে একে মোকাবেলা করা কষ্ট বটে, তবু এজন্য দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে । আসলে আলঝাইমার কিনা তাও তো নিশ্চিত হতে হবে। হয়ত তেমন কিছু নয়, থাইরয়েড বিকল হয়েছে মাত্র, চিকিৎসা করে সারিয়ে তোলা  à¦¯à¦¾à¦¬à§‡à¥¤ আর আলঝাইমার হলেও আগাম চিকিৎসায় বেশ সুফল পাওয়া যায় আজকাল।

আলঝাইমারস নির্ণয়:

এরোগের জন্য সহজ কোনও চেষ্টা নেই। তাই প্রিয়জনের শরীর ও মনে কি কি পরিবর্তন হলো ডাক্তার তা জেনে নেবেন আত্মীয়ের কাছ থেকে। একটি মেন্টাল স্ট্যাটাস টেস্ট, ও অন্যান্য স্ক্রিনিং টেস্ট রোগীর মানসিক কর্মের মূল্যায়ণ করতে পারে, করতে  à¦¸à§à¦¬à¦²à§à¦ªà¦¸à§à¦¥à¦¾à§Ÿà§€ স্মৃতিশক্তির মূল্যায়ণও। এছাড়া রয়েছে নিউরোলজিক্যাল পরীক্ষা ও ব্রেন স্কান। স্ট্রোক বা টিউমার থেকে একে আলাদা করার জন্য।

আলঝাইমারস মগজ:

 

 

আলঝাইমারস রোগ হলে ঘটে স্নায়ু কোষের মৃত্যু এবং সারা মগজ জুড়ে টিস্যুর ক্ষতি ও হানি। রোগ যত অগ্রসর হয়, মগজের টিস্যু সংকুচিত হতে থাকে আর ভেনট্রিকল গুলো আকারে বড় হতে থাকে। ভেনট্রিকল হলো মগজের ভেতরে এমন সব প্রকোষ্ট যা ধারণ করে সেরেব্রস্পাইনাল তরল বা (সিএসএফ) এই ত্রুটির কারণে স্নায়ুকোষগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বিপর্যসত্মহয়, স্মৃতিশক্তি, বাকশক্তি, বোধ সবই লোপ পাওয়ার মত অবস্থা হয়।

অগ্রসরহয় আলঝাইমারস:

প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে আলঝাইমারস এর অগ্রগতি ও প্রকৃতি হয় আলাদা কিছু রোগীর ক্ষেত্রে উপসর্গগুলো শোচনীয় হতে থাকে দ্রুত, গুরুতর স্মৃতি হীনতা ও বিহ্বলতা ঘটে কয়েক বছরের মধ্যেই। অন্যদের ড়্গেত্রে পরিবর্তনগুলো হয় ক্রমে ক্রমে, হয়ত বিশ বছরে দেখা দেয়, পরিপূর্ণরূপ। আলঝাইমারস নির্ণয় হবার পর রোগীর বেচে থাকার সম্ভাবনার গড় হলো ৩-৯ বছর।

আলঝাইমারস কেমন প্রভাব ফেলে প্রাত্যহিক জীবনের উপর:


আলঝাইমারস প্রভাব ফেলে মন সংযোগের উপর, রোগীরা দৈনন্দিন কাজ যেমন রান্না করা, বিল পরিশোধ করা এগুলো সামলানোর ক্ষমতা হরিয়ে ফেলে। প্রথমে দেখা যায় চেকবুকে ব্যালেন্স কত তা বোঝা কষ্ট হয়। ক্রমেক্রমে রোগী চিনতে পারেনা পরিচিতজন, পরিচিত স্থান। সহজে হারিয়ে যেতে পারে কোথাও, এমনকি পরিচিত স্থানে তৈজসপত্রের যথাযথ ব্যবহার করতে পারেন না। দেখা যায় কাঁটা চামচ দিয়ে চুল আঁচড়াচ্ছেন। ভারসাম্য হানি, অনেক সময় যততত্র প্রস্রাব পায়খানা করে দেন, এক সময় ভাষার ব্যবহার শক্তিও লোপ পায়।


আলঝাইমারস ও ব্যায়াম:

ব্যায়াম বেশ সহায়ক এ রকম রোগীর জন্য। পেশি শক্তি বজায় রাখতে ব্যায়াম উপকারী। মন মেজাজ ভালো করে, উদ্বেগ কমায়। কি ধরনের ব্যায়াম তাদের জন্য ভালো তা ডাক্তারের কাছে জেনে নেয়া ভালো। পুন:পুন করা যায় এমন ব্যায়াম যেমন হাঁটা, ঘাস তোলা এগুলো বেশ কার্যকর হতে পারে, প্রশানিত্মর জন্য।

আলঝাইমারস ও ওষুধ:

এরোগ নিরাময় করা যায়না। মগজের মধ্যে স্নায়ুর ক্ষতিকে ধীরগতি করারও কোন উপায় জানা নেই। তবে মানসিক কাজ কর্ম বজায় রাখার জন্য আছে কিছু ওষুধ, রোগের অগ্রগতি একটু ধীর করলে করতেও পারে। রোগের সূচনাপর্যায়ে দিলে কিছু সুফল আশা করা যায়। রোগী স্বনির্ভর থাকা ও দীর্ঘদিন দৈনন্দিন কাজ করার ক্ষমতা বাড়ে।

যাঁরা এসব রোগীর দেখভাল করবেন:

 à¦†à¦²à¦à¦¾à¦‡à¦®à¦¾à¦°à¦¸ রোগীর পরিচর্যাকারী হিসেবে অনেক দায়িত্ব তো নিতে হতে পারে-রাধুনীর দায়িত্ব, শোকাবের দায়িত্ব এমনকি একাউন্টেন্ট এর দায়িত্বও। আহার পরিকল্পনা, ঘরকন্না, আয় ব্যয় এসব ব্যসত্ম হলেও রোগীকে কিছু কিছু কাজ নিজে নিজে করার জন্য উৎসাহিত করতে হবে।

রোগীর দেখভাল করা একটি চ্যালেজিং কাজ:

আলঝাইমারস রোগীদের সূচনার দিকে রোগী বোঝেন কি ঘটছে এবং এনিয়ে বিব্রত, লজ্জিত ও উদ্বিগ্নও হন। যদি এ কারণে বিষন্নতা হয় তা নজর করতে হবে এবং একে সামলানো যাবে ওষুধ দিয়ে। রোগীর রোগের অগ্রগতি বেশি হয়ে গেলে তিনি প্যারানয়েড হতে পারেন, একে বলে ভ্রম বা তুলতা। অথবা হতে পারেন আক্রমনাত্মক। আঘাতও করতে পারেন পরিচর্যাকারীকে। এই পরিবর্তনের জন্য রোগটি দায়ী, রোগী নয়। ডাক্তারের পরামর্শ চাই ত্বরিৎ।

সূর্যডোবা সিনড্রোম:

Sundown syndrome বা সূর্য ডোবা সিনড্রোম ঘটে অনেকের। বিস্তারিত

-->

11-02-2013 রোগ ব্যাধি

ইউ. টি. আই

(প্রস্রাবের নালীর ইনফেকশন)

    

 

প্রসাবের নালীর ইনফেকশন বা সংক্ষেপে ইউ.টি.আই - খুবই কমন একটি রোগ বিশেষত মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে। গড়ে যেখানে প্রতি ২০ জন পুরুষের ১ জন জনের ইউ.টি.আই হয়, সে ক্ষেত্রে মহিলাদের প্রতি ২ জনের ১ জন জীবনে কখনও না কখনও এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।

     কিডনী ও প্রস্রাব বহনকারী নালী, মুত্রথলী ও মুত্রনালী এমনভাবে গঠিত যেন কিডনীকে কোনভাবেই জীবাণু আক্রমণ করতে না পারে। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরো প্রস্রাবের নালীর মধ্যে মুত্রথলীও মুত্রনালীতেই ইনফেকশন বেশী হয় এবং যা তুলনা মূলক কম মারাত্মক।

 

ইনফেকশনের ধরণঃ

 

কিডনী আমাদের শরীরের এবং রক্তে পানির নির্দিষ্ট মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, এবং বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত পানি প্রস্রাব আকারে বাইরে বের করে দেয়। প্রতিটি কিডনীর সাথে ১টি নালী যার নাম ইউরেটার সংযুক্ত থাকে,এবং তার অপর প্রান্ত প্রস্রাবের থলীর সাথে যুক্ত।

 

 

প্রস্রাব কিডনীতে তৈরী হয়ে এই নালী পথে মুত্রথলীতে এসে জমা থাকে। থলীটি অনেকটা পূর্ণ হয়ে গেলে প্রস্রাবের বেগ হয় ও প্রস্রাব মুত্রনালী বা ইউরেথ্রা পথে বাইরে বেরিয়ে আসে।

এই পুরো রেচনতন্ত্রের যে কোন অংশ জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। বিশেষত ব্যাকটেরিয়া দ্বারা। আক্রান্ত স্থানের ভিন্নতা অনুসারে এটি কয়েক ধরনের হয়। যেমনঃ ১। ইউরেথ্রাইটিস - মুত্রনালীর ইনফেকশন, ২। সিস্টাইটিস - মুত্রথলীর ইনফেকশন,

৩। পাইলোনেফ্রাইটিস - কিডনী ও  à¦‡à¦‰à¦°à§‡ টারের ইনফেকশন।

 

ইউ.টি.আই এর লক্ষণ সমূহ :

-         বার বার প্রস্রাবের বেগ হওয়া।

-         প্রস্রাবের সময় জ্বালা যন্ত্রনা করা।

-         প্রস্রাব করার পরও মনে হয় প্রস্রাব জমা আছে।

-         তলপেটে ব্যাথা

-         প্রসাবে রক্ত যাওয়া।

 

কিডনী ইনফেকশন বেশী মারাত্মকঃ

কিডনীতে ইনফেকশন হলে তা খুবই মারাত্মক, জরুরী ভিত্তিতে চিকিসা করা জরুরী। এ ক্ষেত্রে উপরের লক্ষণগুলির সাথে আরও কিছু লক্ষন থাকে। যেমনঃ জ্বর, কাপুনী, তলপেটে/কোমরে ব্যাথা, পিঠে কোমড়ে ব্যাথা।

 

যে সব জীবাণু দিয়ে হয়ঃ

 

স্বাভাবিক ভাবে প্রস্রাব জীবাণুমুক্ত, অর্থাৎ এতে কোন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাক থাকেনা।তাই ইনফেকশন হতে হলে মুত্রনালী দিয়ে জীবাণু ঢুকতে হবে অথবা রক্তের মাধ্যমে আসতে হবে (যা খুবই সামান্য)। যে জীবাণুটি সবচেয়ে বেশী ক্ষেত্রে দায়ী সেটি হল ই-কোলাই নামক ব্যাকটেরিয়া যা সুস্থ মানুষের খাদ্যনালীতেই অবস্থান করে। এছাড়া প্রোটিয়াস, ক্লেবসিয়েলা, মাইকোপ্লাজমা, ক্ল্যামাইডিয়া নামক জীবাণু দ্বারাও পুরুষ ও মহিলাদের ইউ.টি.আই হয়ে থাকে। এই জীবাণুগুলি যেহেতু যৌনবাহিত তাই স্বামী-স্ত্রীর কারও ইনফেকশন হলে দুজনেরই চিকিৎসা নেয়া উচিৎ, নতুবা চিকিৎসার পরে আবারও হবার সম্ভাবনা থাকে।

 

যাদের হবার ঝুঁকি বেশীঃ

কারও কারও প্রস্রাবের ইনফেকশনের ঝুঁকি বেশী। যেমনঃ

·        মহিলাঃ মহিলাদের মুত্রনালীর দৈর্ঘ্য খুবই কম মাত্র ৪ সে.মি.। তাই জীবাণ খুব সহজেই মুত্রথলীতে পৌছতে পারে। বিশেষত যারা যৌনভাবে সক্রিয় তাদের ঝুঁকি আরও বেশী।

·        শিশুঃ এরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে পারে না, তাই ঝুঁকি বেশী। এছাড়াও যাদের যৌনাংগে জন্মগত ত্রুটি থাকে তাদেরও ঝুঁকি বেশী।

·        ইউরিনারী ক্যাথেটারযুক্ত অসুস্থ ব্যক্তিঃ  à¦¯à¦¾à¦°à¦¾ খুবই মারাত্মক অসুস্থ, উঠে গিয়ে প্রস্রাব করতে পারে না, তাদের প্রস্রাব করানোর জন্য মুত্রনালী দিয়ে রাবার বা সিলিকনের তৈরী চিকন নল (ইউরিনারী ক্যাথেটার) প্রবেশ করানো হয়। এটি থাকলে ইনফেকশন হবার ঝুঁকি বেশী।

·        ডায়বেটিসঃ যেহেতু তাদের রোগ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাই ইনফেকশনের ঝুঁকি বেশি।

·        পুরুষ যাদের প্রোস্টেটের সমস্যাঃ প্রোস্টেট বড় থাকলে মূত্রথলিতে প্রস্রাব জমে থাকে, ইনফেকশনের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

 

বাচ্চাদের প্রস্রাবের সমস্যায় করণীয়ঃ বাচ্চাদের ঘন ঘন প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে দ্রুত গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার, কেননা তাদের বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। যেমনঃ ভেসিকো ইউরেথ্রাল রিফ্লেক্স। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে তাদের মূত্রথলী থেকে প্রস্রাব উল্টোদিকে ইউরেটরে প্রবেশ করে (ঐ স্থানের ভাল্ব ঠিকমত কাজ না করার কারণে) ফলে কিডনীতে ইনফেকশন হবার ঝুঁকি বেশি।

ভেসিকো ইউরেথ্রাল রিফ্লেক্স হলে কিডনীতে স্কার হতে থাকে। এমনকি কিডনী নষ্ট হয়ে যেতে পারে। পরবর্তীতে বিভিন্ন জটিলতা যেমনঃ টক্সোমিয়া ও কিডনী ফেইলর হতে পারে। পরিবারে কারও থাকলে এ ঝুঁকি আরও বেশি।

 

প্রতিরোধে করণীয়ঃ

-         বেশি করে পানি  ও তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে যাতে প্রস্রাব দ্রুত বের হয়ে যায়।

-         মহিলাদের  যোনী পথের ইনফেকশন যেমনঃ থ্রাস বা ট্রাইকোমোনাস থাকলে দ্রুত তার চিকিৎসা করা।

-         পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা।

-         প্রস্রাবের বেগ হবার সাথে সাথে প্রস্রাব করা, জমিয়ে না রাখা।

-         প্রস্রাব পায়খানার পর ঐ স্থান ধৌত করার সময় সামনে থেকে পিছন দিকে ধোয়া। পেছন থেকে সামনের দিকে ধূলে ইনফেকশন হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

-         যৌন মিলনের পর প্রস্রাব করা, ধৌত করা।

-         ইনফেকশন হযে গেলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা শুরু করা। শুরুতে চিকিৎসা করলে অল্প কিছুদিন এন্টিবায়োটিক খেলে রোগ ভাল হয়। অন্যথায় কিডনী ইনফেকশন হয়ে ভাল হওয়া খুব কঠিন ও সময় সাপেক্ষ।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

1.      প্রস্রাবের ইনফেকশন মূলত জীবাণু দিয়ে হয়। বিশেষত ই-কোলাই নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা।

2.     মুত্রনালী,

11-02-2013 রোগ ব্যাধি

সোয়াইন ফ্লু

 

 

হিউম্যান সোয়াইন ফ্লু একটি মারাত্বক সংক্রামক রোগ। এটি মূলত শ্বাসনালীকে আক্রমণ করে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস এর পরিবর্তিত এক নতুন প্রজাতী দ্বারা এই রোগটি হয়। এর অন্য নাম হিউম্যান সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা। অনেকে একে এইচ-১, এন-১-০৯ নামেও (H1, N1-09) পরিচিত করে। উন্নত বিশ্ব সহ বিভিন্ন দেশেই এই রোগের সংক্রমণ হতে দেখা গেছে। সাধারণ ফ্লু এর মত এই রোগেও জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যাথ্যা, গা ব্যাথ্যা, দুর্বলতা দেখা দেয়।

     এর নাম সোয়াইন ফ্লু হবার কারন এই প্রজাতির ভাইরাস সাধারণত সোয়াইন বা শুকরের দেহে ফ্লু তৈরী করে।

চিত্রঃ এইচ-১, এন-১ ভাইরাস

 à¦•à¦¿à¦¨à§à¦¤à§ ২০০৯ সালে এর এক নতুন ধরনের প্রজাতির উদ্ভব হয়, যা মানুষ কেও আক্রান্ত করে এবং মারাত্বক ছোঁয়াচে। বিশ্বের কয়েক স্থানে কেউ কেউ মারা গেলেও অধিকাংশ স্থানে এই রোগের ফল সাধারণ ঠান্ডা, জ্বর, কাশি হতে দেখা গেছে এবং অধিকাংশ রোগীই কোন ওষুধ ছাড়াই কিছুদিন পরে সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন। বিশেষত যাদের কোন দীর্ঘমেয়াদী বা জটিল রোগ আছে, তাদের ক্ষেত্রেই এই রোগ মারাত্বক আকার ধারণ করে।

 

লক্ষণসমূহ :

আক্রান্ত হবার অল্প কদিনেই লক্ষন প্রকাশিত হয়। সাধারণত আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় ইনফ্লুয়েঞ্জার যে সব লক্ষণ থাকে, তাই দেখা যায়। যেমন

-         জ্বর।

-         কাশি।

-         গলা ব্যাথা।

-         গা, হাত, পা ব্যাথা।

-         সর্দি।

-         মাথা ব্যাথা কাপুনি।

-         শীত শীত লাগা।

-         দূর্বলতা

-         কখনও কখনও বমি বা পাতলা পায়খানা

 

করণীয় :

আক্রান্ত ব্যক্তি পুর্ব থেকেই মারাত্বক বা দীর্ঘমেয়াদী কোন অসুস্থ্যতায় না ভুগে থাকলে দুঃশ্চিন্তার কারণ নেই। তবে রোগীর ঘরে অবস্থান করাই বাঞ্ছনীয়। স্কুল, কলেজ, অফিস, মাঠে না যাওয়া উচিৎ। পর্যাপ্ত পানি পান

11-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

স্টেপটোকক্কাল ডিজিজ

 

গ্রপ-এ বিটা হেমোলাইটক স্ট্রেপটোকক্কাস জীবাণু দ্বারা ঘটিত ইনফেকশন সমূহকে একত্রে স্ট্রেপটোক্কাল ডিজিজ হলা হয়। এই জীবাণু দ্বারা গলা ব্যাথা, ফ্যারিঞ্জাইটিস, স্কারলেট ফিভার ছাড়াও নানরকম জটিলতা দেখা দেয়। যেমন এই জীবাণুর ইনফেকশনের জটিলতা রূপে রিউমেটিক ফিভার (যা হৃদপিন্ডকেও আক্রান্ত করতে পারে-রিউমেটিক হার্ট ডিজিজ) এবং গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস নামক কিডনীর রোগ তৈরী করে।

 

স্ট্রেপটোকক্কাল রোগের লক্ষণ সমূহ:

 

১। স্ট্রোপটোকক্কাল সোর থ্রোট:

·        গলার ভেতর দিক লাল হওয়া, ফুলে যাওয়া, ঘা হওয়া এবং ঘন পুজের মত আবরণ পড়া।

·        জ্বর, শীত শীত ভাব

·        গলার লিম্ফ গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, ব্যথা হওয়া।

·        বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বমি ও পেট ব্যথা হতে পারে।

 

২। স্কারলেট ফিভার:

·        গলায় প্রদাহ হয়,লাল হয়, ফুলে যায়, ব্যাথা করে।

·        শরীরে, পেটে, বুকির পাশে, চামড়ার ভাজে লালচে দাগ হয়।

·        উজ্জল লাল, অমসৃন, ফোলা জিহ্বা (স্ট্রেবেরি টাং)

·        মুখের চারপাশ ফ্যাকাসে হওয়া।

 

৩। ইমপেটিগো:

স্ট্রোপটোকক্কাস দ্বারা ইনফেকশনে স্কুল সোর (ফোড়া) হতে পারে, যেমনটি স্ট্যাফাইলোকক্কাস দিয়ে হয়। লক্ষণ সমূহ হল:

·        ফোস্কার মত ফেতরে পুজ সাধারণত নাক, মুখ ও পায়ে বেশি হয়।

·        মারাত্নক ক্ষেত্রে জ্বর হয়, লসিকা গ্রন্থি ফুলে যায়।

৪। নেক্রোটাইজিং ফাস্যাইটিসঃ

চামড়ার নিচের যোজক কলা মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ঘা হয়, পচে যায়।

 

রোগ নির্ণয়:

সোর থ্রট ও স্কারলেট ফিভার রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগের ইতিহাস শারিরীক পরীক্ষার পাশাপশি গলা থেকে পুজ(থ্রোট সোয়াব)  à¦¨à¦¿à§Ÿà§‡ পরীক্ষা করা  ও প্রয়োজনে রক্ত পরীৰা করতে হয়। আর ইমপেটিগোর জন্য চামড়ার ঘা থেকে রস নিয়ে ল্যাবে পরীক্ষা করে জীবাণু নিশ্চিত করতে হয়।

 

রোগের বিস্তারঃ

মূলত আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পশে আসলে রোগ ছড়ায়। রোগীর লালা, থুথু, নাকের সর্দির মধ্যে জীবানু থাকে যা হাচি, কাশির মাধ্যমে, বা রোগীও সাথে করমর্দনের ফলেও ছড়িয়ে পড়ে। তাছাড়া রোগী হাত পরিষ্কার না করে খাবার তৈরী বা পরিবেশন করলে যেখান থেকেও জীবানু বিস্তার লাভ করতে পারে।

 

চিকিৎসাঃ

এই রোগের চিকিৎসার জন্য ১০ দিনের এন্টিবায়োটিক ঔষধ গ্রহণ করতে হয়। সাধারণ যে যে এন্টিবায়োঠিক ব্যবহার্য্যঃ

-         পেনিসিলিন

-         পেনিসিলিন এলার্জি থাকলে ইরাইথ্রোমাইসিন

-         অথবা সেফালোস্পোরিন জাতীয় এন্টিবায়োটিক

-         ইনপেটিগোর জন্য এন্টিবায়োটিক মলম।

 

প্রতিরোধঃ

·        যদি  আপনার শিশুর স্ট্রেপটোকক্কাল ডিজিজ হয়, চিকিৎসার পাশাপাশি আপনার শিশুকে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বা ২ দিন এন্টিবায়োটিক না পাওয়া পর্যন্ত অন্যান্ন বাচ্চাদের সাথে মিশতে দিবেন না।

·        পূর্ণ ১০দিন ঔষধ খেতে হবে।

·        ইমপেটিগো হলে ঘাগুলি জীবানুমুক্ত ভেজা পরিস্কার ড্রেসিং করে দেবেন।

সঠিক চিকিৎসা না হলে আক্রান্ত ব্যাক্তি ২-৩ সপ্তাহ পর্যন্ত রোগ ছড়াতে পারে। এমনকি ১ মাস পর্যন্ত জীবানু ছড়াতেও দেখা যায়। কিন্তু যথার্থ এন্টিবায়োটিক প্রয়োগে ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যে জীবানু ছড়ানো হয়ে ১০ দিন এন্টিবায়োটিক কোর্স সমাপ্ত করা উচিত।

 

যা যা মনে রাখতে হবেঃ

ক) গ্রপ-এ স্টেপটোকক্কাস জীবানু মুলত জ্বর, গলা ব্যাথা, ইত্যাদি রোগ করে,

খ) কমপক্ষে ২ দিন এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ না করে আক্রান্ত শিশুকে স্কুল, নার্সারী, লেখাধুলা বা ডে কেয়ারে পাঠানো ঠিক না।

গ) আক্রান্ত ব্যাক্তির হাচি, কাশি, বা হাত মেলানোর মাধ্যমে জীবানু ছড়িয়ে পড়ে।

 

 

11-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস

 

স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস ব্যাকটেরিয়া স্বাভাবিক অবস্থায় সুস্থ শরীরে কোন রোগ সৃষ্টি করা ছাড়াই চামড়ায় অবস্থান করে। তবে বিশেষ বিশেষ অবস্থায় এটি শরীরে সামান্য ইনফেকশন থেকে শুরু করে মারাত্নক ইনফেকশন তৈরী করতে পারে, এমনকি রোগী মারাও যেতে পারে। শরীরের চামড়ায় কোন কাটা, ক্ষত থাকলে সে স্থান দিয়ে জীবাণু শরীরের ভেতে প্রবেশ করে থাকে। তাই হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের অনেকের অপারেশনের পর ঘা, কাটা, ইত্তাদি থাকাতে খুব সহজেই এই জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। এই জীবাণুর অনেক প্রজাতিকেই সাধারণ এন্টিবায়োটিকের দ্বারা নিয়ন্ত্রন করা যায় না। এই জীবাণুকে গোল্ডেন স্ট্যাফ নামে ও ডাকা হয়।

 

কিভাবে ছড়ায়ঃ

সুস্থ মানুষের দেহে চামড়ায়, নাকের ভেতরে স্বাভাবিক ভাবেই এই জীবাণু অবস্থান করে। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৩ জন সুস্থ্য ব্যক্তিই তার নাকে এই জীবাণু বহন করে বেড়ায়। ব্যাকটেরিয়া অবস্থা করে কিন্তু রোগ সৃষ্টি করে না এমন অবস্থাকে বলে কলোনাইজেশন। নাক ছাড়াও বগলে, চামড়ার ভাজ সমূহে, কুচকিতে এই জীবাণু কলোনাইজেশন করে। রোগীর বা জীবাণুর বাহকের সাথে সরাসরি সংস্পর্শে আসলে অথবা জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত কোন বস্তুর সংস্পর্শে থাকার ফলে তা অন্যজনের দেহে আসতে পারে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সঠিক ভাবে না মেনে চলেলে, চামড়ায় ঘা বা ক্ষত ঠিকভাবে ঢেকে না রাখলে সহজেই এই জীবাণু শরীরের ভেতরে প্রবেশ করে ও রোগ সৃষ্টি করে।

 

যে যে রোগ হয়ঃ

স্ট্যাফ অরিয়াস দ্বারা সাধারণত যে সব রোগ হয়ঃ

·        চামড়ায় ফোড়া, ঘা

·        ইমপিটিগো(স্কুল সোর): নবজাতক ও স্কুলের বাচ্চাদের হয়, চামড়ায় ইনফেকশন ছাড়াও যে সব মারাত্নক রোগ হতে পারে।

·        মেনিনজাইটিস (মস্তিস্কের আবরনী পর্দার ইনফেকশন)

·        অষ্টিও মায়েলাইটিস (হাড় ও অস্থিমজ্জার ইনফেকশন)

 

 

·        নিউমোনিয়া (ফুসফুসের ইনফেকশন)

·        এন্ডোকার্ডাইটিস(হৃদপিন্ডের অভ্যান্তরের ভাবলের ইনফেকশন)

 

ড্রাগ রেসিসট্যান্সঃ

শরীরে ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশন মানে শরীরে লক্ষ কোটি ব্যাকটেরিয়ায়ার স্থিতি। এন্টিবায়োটিকের ব্যবহারের ফলে অধিকাংশ জীবাণু মেরে ফেলেও কিছু কিছু জীবাণু এন্টিবায়োটিক বিপরীতে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম। এ সব জীবাণুকে ড্রাগ রেসিসট্যান্স স্ট্রেইন বলে। ত্রুটি মুলত ব্যাকটেরিয়ার নিজস্ব জীনশত মিডটেশনের ফল। এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধ করতে পারে বলে তারা শরীরের ভেতরে খুব দ্রতহারে বৃদ্ধি পেতে থাকে ও রোগ আরও মারাত্নক হয়।

এসব রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়ার স্ট্রেইন বা জাতকে মাল্টিড্রাগ রেসিসট্যান্স স্ট্যাফ অরিয়াস (এমআরএসএ) বা মাল্টি রাসিস্ট্যান্স অর্গানিজম (এমআরও) বলে। অযাচিত ভাবে, যথেচ্ছা এন্টিবায়োটিকের ব্যবহারের ফলে এসব প্রজাতি তৈরী হয়।

 

এন্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্স একটি মারত্নক স্বাস্থ্য সমস্যাঃ

এন্টিবায়োটিকের আবিষ্কাররের পূর্বে এসব জীবাণুর ইনফেকশনে প্রচুর লোক মারা যেত। পেসিসিলিন আবিষ্কারের ও ব্যবহারের ফলে মৃত্যু অনেকাংশে কমে যায়। কিন্তু রেসিস্ট্যান্স হবার কারণে এখন আর পিনিসিলিন দ্বারা এই ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। বিংশ শতাব্দির দ্বিতীয় অর্ধে পেসিসিলিন ও ভ্যানকো মাইসিন নামক এন্টিবায়োটিক আবিষ্কারের পর আবার ঐ রেসিস্ট্যান্স জীবাণু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু ১৯৭০ সাল থেকে পেনিসিলিন রেসিসট্যান্স প্রজাতির উদ্ভব হওয়ায় বিশ্বব্যপী চিকিৎসা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। অন্যদিকে বর্তমানে ভেনকোমাইসিন রেসিসট্যান্ট স্ট্যাফ অরিয়াসের নানা প্রজাতির প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে উন্নত বিশ্বসহ সারা পৃথিবীতে। ফলে জন্স্বাস্থ্য হুমকীর সম্মুখীন।

 

হাসপাতালে অবস্থানকারীদের ঝুঁকিঃ

হাসপাতালে অবস্থান কারী রোগীদের বিশেষত যাদের অপারেশন হয়েছে বা যাদের চামড়ায় ঘা আছে তাদের স্ট্যাফ অরিয়াস দ্বারা ইনফেকশন হবার ঝুঁকি বেশি। এ অবস্থায় ইনফেকশন প্রতিরোধের জন্য রোগী সহ ডাক্তার, নার্স, হাসপাতালের স্টাফ সবাইকে পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে বিশেষ সচেতন হতে হবে।

 

ইনফেকশন প্রতিরোধে যা যা করনীয়ঃ

1.      প্রতিটি রোগী ধরার পর বা রোগীর ব্যবহার্য রক্ত, মলমূত্র, ঘা ধরার পর হাত ভাল করে সাবান দিয়ে ধুতে হবে।

2.     প্রতিটি রোগী ধরার পূর্বে এলকোহল বা স্পিরিট দিয়ে অথবা ফ্লোর হেক্সিডিন দিয়ে হাত ধুতে হবে।

3.     প্রতিটি রোগীর কাজ করার (ইঞ্জেকশন দেয়া, ক্যাথেটার করা, যে কোন প্রসিডিউর) পূর্বে ভালভাবে হাত ধুয়ে নেয়া।

4.     গ্লাফস, গার্ডন, মাক্স  à¦¬à§à¦¯à¦¬à¦¹à¦¾à¦° করা।

5.     রোগীর ব্যবহায্য কাপড় ও যন্ত্রপাতি সাবধানে নাড়াচড়া করা।

6.     আক্রান্ত রোগীকে প্রয়োজনে অন্যান্য রোগী থেকে পৃথক রাখা।

7.     রুম, বিছানা, টেবিল, ব্যবহার্য জিনিস ভালভাবে পরিষ্কার রাখা।

 

কমিনিউটিতে ইনফেকশনের প্রবণতাঃ

হাসপাতালের বাহিরেও, ঘরে এলাকায় এন্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্স প্রজাতির ইনফেকশন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতালে না গিয়ে ও বা কোন ধরনের কাটা বা ইনফেকশন না নিয়েও এর দ্বারা মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। তবে এ জীবাণু দ্বারা মারাত্নক ইনফেকশন হতে পারে। এটি প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। হাত ভাল ভাবে সাবান, তরল পানি দিয়ে ধুতে হবে। ঘা থাকলে তা ভাল ভাবে ড্রেসিং করে ঢেকে রাখতে হবে।

 

এন্টিবায়োটিক রেসিসট্যান্স প্রতিরোধে করণীঃ যেহেতু ত্রটি একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা, তাই এর সমাধানে বিশ্বব্যপী সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রতিরোধের জন্য নিম্মোক্ত বিয়য়ে দৃষ্টি রাখতে হবে।

·        যথার্থ মাত্রায়, যথার্থ ক্ষেত্রে, যথার্থ এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার করতে হবে।

·        ওয়াইড স্পেকট্রামের বদলে যথার্থ নেরো স্পেকট্রার্ম এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা।

·        ভ্যানকোমাইসন সহ যেসব এন্টিবায়োটিক এখনও কার্যকর তাদের যথেচ্ছা ব্যবহার বন্ধ করা।

·        হাসপাতাল সহ যেসব প্রতিটি বাড়িতে স্বাস্থ্য সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা শিক্ষা দেয়া ও অভ্যাস গড়ে তোলা।

·        গবেষণা করে নতুন কার্যকর এন্টিবায়োটিক আবিষ্কার করা।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

 

১।     à¦¸à§à¦Ÿà§à¦¯à¦¾à¦«à¦¾à¦‡à¦²à§‹à¦•à¦•à§à¦•à¦¾à¦¸ অরিয়াস ব্যাকটেরিয়া স্বাভাবিক অবস্থায় সুস্থ শরীরে কোন রোগ সৃষ্টি করা ছাড়াই চামড়ায় অবস্থান করে।

২।        à¦¹à¦¾à¦¸à¦ªà¦¾à¦¤à¦¾à¦²à§‡ অবস্থান কারী রোগীদের বিশেষত যাদের অপারেশন হয়েছে বা যাদের চামড়ায় ঘা আছে তাদের স্ট্যাফ অরিয়াস দ্বারা ইনফেকশন হবার ঝুঁকি বেশি।

৩।   à¦¸à§à¦Ÿà§à¦¯à¦¾à¦« অরিয়াস দ্বারা সাধারণত চামড়ায় ফোড়া, ঘা,ইমপিটিগো, মেনিনজাইটিস, অষ্টিও মায়েলাইটিস, নিউমোনিয়া, এন্ডোকার্ডাইটিস ইত্তাদি রোঘতে পারে।

৪। অযাচিত ভাবে, যথেচ্ছা এন্টিবায়োটিকের ব্যবহারের ফলে মাল্টি ড্রাগ রেসিস্ট্যান্স প্রজাতি তৈরী হয়।

 

11-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

সেপটিসেমিয়া

 

শরীরের রক্তস্রোতে বিশেষ কিছু জীবাণু ঢুকে মাত্রাতিরিক্তিভাবে বৃদ্ধি পেয়ে সেপাটিসেমিয়া করে। এটি একটি মারাত্মক অবস্থা। যার দ্রুত চিকিৎসা না হলে রোগী মারা যায়। শুধু তাই নয়, পর্যাপ্ত চিকিৎসার পরও শতকরা ২৫-৩০ ভাগ রোগী মারা যায়, কেননা সেপটিসেমিয়া হলে রক্তে জীবাণুর পরিমাণ এত বৃদ্ধি  পায় ও সাথে সাথে জীবাণু থেকে নিঃসৃত বিষ (টক্সিন) দ্বারা শরীরের বিভিন্ন অংশ অকোজো হয়ে যায়।

আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে হাজার প্রকার জীবাণু থাকে। এদের অধিকাংশই তেমন কোর রোগ তৈরী করে না। যেমন: চামড়া, মুখগহ্বরে, খাদ্যনালী, মলদ্বারে। কিন্তু এসব জীবাণুই যদি রক্তে মিশে যায় ও বৃদ্ধি পেতে থাকে সে ক্ষেত্রে সেপটিসেমিয়া করতে পারে।

 

সুস্থ দেহ সেপটিসেমিয়া প্রতিরোধ করে :

সাধারণত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে বা শরীর মারাত্মক অসুস্থ হলে সেপটিসেমিয়া হয় এবং সে ক্ষেত্রে যে সব ব্যক্তি আগে থেকেই কোন অসুস্থতায় বা অপুষ্টিতে ভুগছে, তাদেরই সেপটিসেমিয়া হবার ঝুঁকি বেশি। সুস্থ শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী শক্তি সহজেই শরীরে প্রবেশকারী জীবাণুকে ধ্বংস করতে সক্ষম। যদিও কখনও কিছু জীবাণু রক্তে প্রবেশ করে, সে ক্ষেত্রে শরীরের পুলিশ বাহিনী ঐ সব জীবানূকে ধ্বংস করে দেয। তাই, দীর্ঘদিনের অসুস্থ ব্যক্তি, শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদেরই সেপটিসেমিয়া বেশি হতে দেখা যায়।

 

কারণ :

অধিকাংশ ক্ষেত্রে যে সকল ব্যাকটেরিয়া সেপটিসেমিয়া  করে তারা হল :

·        ই কোলাই,

·        নিউমোকক্কাস,

·        ক্লেবসিয়েলা, 

·        সিউডোমানাস,

·        স্ট্রেপটোক্ককাস,

·        স্টেফাইলোক্কাস। এ ছাড়াও

মেডিকেল চিকিৎসা,

হাসপাতালে ভর্তির কারণেও অনেক রোগীর সেপটিসেমিয়া হয়।

বিশেষ করে যাদের শরীরে কোন মেডিকেল যন্ত্রপাতি প্রবেশ করাতে হয়। যেমন :

§        দাঁতের সার্জারী, পূঁজ বের করা।

§        খাদ্যনালীর অপারেশন।

§        কৃত্রিম কোন অংশ, যন্ত্র দীর্ঘদিন লাগিয়ে রাখলে।

§        মূত্রনালীতে ক্যাথেটার দীর্ঘদিন রাখতে হলে।

§        শরীরে রক্তনালীতে ক্যানলা, ক্যাথেটার দেয়া থাকলে।

§        কোলস্টোমি টিউব, টি-টিউব, ই-টি টিউব ইত্যাদি থাকলে।

 

হাইরিস্ক গ্রুপ :

যাদের বা যে অবস্থায় সেপটিসেমিয়ার ঝুঁকি †ewk

§        দীর্ঘমেয়াদী ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি

§        ডায়বেটিস, হার্ট, কিডনী বা লিভার এর রোগী

§        মারাত্মক নিউমোনিয়া

§        মারাত্মক চামড়ায় ক্ষত, পোড়া, ঘা

§        মাদক সেবী

§        মারাত্মক অপুষ্টি

§        মারাত্মক জখম, উন্মুক্ত ক্ষত

§        বেড সোর, প্রেসার সোর

§        দীর্ঘদিন এন্টিবায়োটিক  দ্বারা চিকিৎসাকৃত ব্যক্তি

§        ইমিউনো সাপ্রিসিভ ঔষধ সেবী বা রোগাক্রান্ত ব্যক্তি।

 

লক্ষণসমূহ :

অনেক ক্ষেত্রে লক্ষণ নাও থাকতে পারে। তবে সাধারণত যে সব লক্ষণ দেখা যায় তা হল -

§        প্রচন্ড জ্বর, কাপুনি

§        মারাত্মক অসুস্থতা, দূর্বলতা

§        বমিভাব, পাতলা পায়খানা, মারাত্মক বমি

§        পেট ব্যাথ্যা, শ্বাস কষ্ট

§        দ্রুত হৃদস্পন্দন

§        মারাত্মক উদ্বিগ্নতা

 

রোগ নির্ণয় :

রোগের ইতিহাস, রোগ লক্ষণ শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি রক্তে জীবাণুর উপস্থিতি নির্ণয়ের জন্য রক্ত পরীক্ষা। রক্তের পাশাপাশি মল, মূত্র, সিএসএফ ও কাশি বা শ্লেষ্মা থেকে কালচার ও সেনসিভিটি পরীক্ষা করার প্রয়োজন হতে পারে।

 

জটিলতা :

সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না হলে যে সব মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে তা nj

§        এন্ডোকার্ডাইটিস (হৃদপিন্ডের অভ্যন্তরে আবরনের প্রদাহ)

§        পেরিকার্ডাইটিস (মস্তিস্কের বহি: আবরনের প্রদাহ)

§        মেনিনজাইটিস (মস্তিস্কের আবরণী পর্দার প্রদাহ)

§        অস্টিওমায়েলাইটিস (হাড়ের ইনফেকশন)

§        ইনফেকটিভ আর্থাইটিস (অস্থিসন্ধির প্রদাহ, ইনফেকশন)

§        সেপটিক শক (রক্তচাপ মাআত্মকভাবে হ্রাস পেয়ে শরীরের অন্যান্য অংশের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া)

§        রক্তপাত ডি, আই সি।

 

চিকিৎসা :

যত দ্রুত সম্ভব ইনজেকশনের মাধ্যমে এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট পাবার জন্য অপেক্ষা করা যাবà

11-02-2013 রোগ ব্যাধি

অবসাদ - সিজেনাল এফেকটিভ ডিসঅর্ডার :

 

প্রচন্ড শীতের মাসে যে অবসাদ দেখা যায়- সিজেনাল এফেকটিভ ডিসঅর্ডার বাএসএডি।  à¦šà¦¿à¦•à¦¿à§Žà¦¸à¦¾à¦° মধ্যে আছে - এন্টিডিপ্রেসেন্ট ঔষুধ, সাইকোথেরাপি ও ফটোথেরাপি উজ্জল আলোকে চিকিৎসা। একে ঋতুকালীন অবসাদ বা শীতকালীন অবসাদ ও বলা হয়। যে সব দেশে প্রচন্ড সূর্যের তাপ থাকে সেদেশে এসএডি  à¦•à¦® হয় -যেমন অস্ট্রেলিয়া। সাধারণত বসন্তে তারা ভাল অনুভব করে।

এসএডি র সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। যেহেতু অবসাদ সাধারণত শীতকালে বেশি হয় তাই কোন কোন ডাক্তার মনে করেন সূর্যের অনুপস্থিতি কোন কোন মানুষের ব্রেইনের রসায়নে পরিবর্তন ঘটায়।

 

তবে যে সব ফ্যাক্টর দায়ী তা হল :

১। সূর্যের আলোতে  জিনের প্রভাব :

কিছু প্রাণী যেমন- ভাল্লুক শীতকালে শীতনিদ্রায় থাকে। গবেষনায় দেখা যায়- সূর্যরশ্মির স্বল্পতা মানুষের  উপরও প্রভাব ফেলে। তাছাড়া, কেউ কেউ অন্যদের থেকে একটু বেশিই  আক্রান্ত হয়। এটা সাধারণত জীনের সমস্যার জন্য হয়।

২। সার্কাডিয়ন রিদম :

এটা ব্রেনে বিদ্যমান এবং দেহের ঘুমন্ত ও জাগ্রত অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে। এ নিয়ন্ত্রণ সূর্য রশ্মির উপর নির্ভর করে। কোন কোন লোকের ক্ষেত্রে দিনের স্বল্পতা সার্কাডিয়ান বিস্তারিত

-->

11-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

নিউমোকক্কাস ঘটিত রোগ

 

স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনি সংক্ষেপে নিউমোকক্কাস নামক জীবাণু দ্বারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন  মাত্রার রোগ হতে পারে, যাদেরকে একত্রে সংক্ষেপে নিউমোকক্কাস ডিজিজ বলে। এই জীবাণু দিয়ে খুব সাধারণ ইনফেকশন যেমন : কানের ইনফেকশন হয় আবার অতি মারাত্বক, এমনকি জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ রোগ মেনিনজাইটিস ও হতে পারে। তবে টিকা নিয়ে এসব জটিল রোগ থেকে অনেকটা নিরাপদে থাকা যায়।

 

 

নিউমোকক্কাল রোগের ভয়াবহতা: নিউমোকক্কাস ঘটিত রোগ বেশ মারাত্মক বিশেষ করে শিশুদের বেলায় এবং ৬৫ বছরের উর্দ্ধে এটি মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করে এবং পৃথিবীতে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ২১০ লক্ষাধিক রোগী মারা যায়।  

এ রোগ যে কোন সময়ই হতে পারে, তবে বিশেষত শীত ও  বসন্তকালে প্রাদুর্ভাব বেশি।

 

নিউমোকক্কাস রোগ সমুহ :

স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনি শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি করে। যেমন:

ক. সাইনোসাইটিস :

সাইনাসের (মুখের বাতাস ভর্তি হাড়ের অংশ) প্রদাহ, এতে মুখে ব্যাথা, নাক বন্ধ, মাথাব্যাথা, নাকে  ঘন সর্দি হওয়া।

খ. অটাইসাইটিস মিডিয়া :

মধ্যকর্নে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এতে কানে প্রচুর ব্যাথা হয, কানে কম শুনা  জ্বর, বমিভাব, বমি ইত্যাদি হয়।

গ. ব্যাকটেররেমিয়া :

ব্যাকটেরিয়া রক্তে ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগের লক্ষণ হল: জ্বর, মাথা ব্যাথা, মাংসপেশীতে ব্যাখা। এই রোগ খুব মারাত্মক।

ঘ. সেপটিক আর্থাইটিস :

অস্থি সন্ধির প্রদাহ। অস্থি সন্ধিতে ব্যাথা হয, নড়াচড়া করা কষ্ট হয়, ফুলে যায়।

ঙ. অস্টিও মায়েলাইটিস :

হাড়ের ইনফেকশন। এতে হাড়ে প্রচন্ড ব্যাথা, নাড়তে কষ্ট হওযা ও জ্বর দেখা দেয়।

চ. নিউমোনিয়া :

 

ফুসফুসের প্রদাহ, জ্বর, কাশি, বুকে ব্যাথা, শ্বাসকষ্ট, ঘন ঘন শ্বাস ইত্যাদি হয়।

ছ.  মেনিনজাইটিস :

মস্তিষ্কের পর্দার প্রদাহ। প্রচন্ড জ্বর, মাথা ব্যাথা, ঘাড় শক্ত হওয়া, বমিভাব, বমি হওয়া অজ্ঞান হতে পারে।

  এদের মধ্যে নিউমোনিয়া ও মেনিনজাইটিস ই সবচেয়ে মারাত্মক অসুস্থ্যতা এবং রোগী মারা যেতে পারে।

 

যাদের রিক্স বেশি :

-         দুই বছরের কম বয়সী শিশু

-         ৫ বছরের কম বয়সী যাদের অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা আছে।

-         ৬৫ বছরের অধিক বয়স্ক ব্যক্তি

-         যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম

-         যাদের দীর্ঘমেয়াদী রোগ যেমন: ডায়বেটিস, ক্যান্সার, কিডনীর রোগ আছে।

-         যাদের স্প্লীন বা প্লীহা ফেলে দেয়া হয়েছে বা ঠিকমত কাজ করে না।

-         ধুমপায়ী।

 

কিভাবে ছড়ায় :

আক্রান্ত ব্যক্তির নাকের ভেতরে, গলার ভেতরে জীবাণু অবস্থান করে এবং মুখের লালার মাধ্যমে  হাঁচির মাধ্যমে ছড়ায়। এ ছাড়া বাচ্চাদের খেলনার মাধ্যমে অন্য বাচ্চাতে ছড়ায়। এই জীবাণু ছড়ালেও সবার মধ্যে রোগের সৃষ্টি করে না, বরং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের মধ্যে রোগের সৃষ্টি করে।

 

রোগ নির্ণয় :

নিউমোকক্কাস দিয়ে যে সব রোগ হয়, তা অন্যান্য জিবাণু দিয়েও হতে পারে এবং একই রকম রোগ লক্ষণ প্রকাশ করে। তাই পরীক্ষার মাধ্যমে জীবাণু আলাদা করতে হবে। এজন্য সঠিকভাবে রোগের ইতিহাস নিতে হবে, এক্স-রে এর প্রয়োজন হতে পারে। তাছাড়া রক্ত পরীক্ষা, প্রস্রাব পরীক্ষা মেরুদন্ডের ভেতর থেকে পানি নিয়ে পরীক্ষা করে জীবাণু পাওয়া যেতে পারে।

 

চিকিৎসা :

-         পেনিসিলিন জাতীয় এন্টিবায়োটিক সঠিক মাত্রায়।

-         ব্যাথার জন্য ব্যাথা নাশক, জ্বরের জন্য ঔষধ।

-         প্রচুর পানি পান করতে হবে। বিশ্রাম দিতে হবে।

-         নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিসের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি রেখে ইঞ্জেকশন দ্বারা এন্টিবায়োটিক দিতে হবে।

 

টিকা দ্বারা রোগ প্রতিরোধ :

 

 

স্টেপটোকক্কাস নিউমোনি জীবাণুটির প্রায় ৯০ ধরনের প্রকার আছে। তাই সবগুলোর বিরুদ্ধে টিকা নেয়া সম্ভব না। তবে খুব কমন রোগের জন্য ২ ধরনের টিকার ব্যবস্থা আছে।

ক. ২ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের জন্য প্রিভেনার নামক ভ্যাক্সিন

খ. নিউমোভ্যাক্স-২৩ নামক ভ্যাক্সিন সব বয়সী রোগীর জন্য ব্যবহৃত হয়।

যা মনে রাখা জরুরী:

-         ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যু ও জটিল রোগের জন্য নিউমোকক্কাস ঘটিত রোগ সমুহ অনেকাংশে দায়ী।

-         স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনি নামক জীবাণু দ্বারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন্‌  ধরনের রোগ সৃষ্টি হয়। যেমন : সাইনোসাইটিস, মধ্যকর্ন প্রদাহ, নিউমোনিয়া, অস্টিওমায়েলাইটিস, সেপটিকস আর্থাইটিস, মেনিনজাইটিস ইত্যাদি।

-         টিকা দ্বারা রোগ অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে সঠিক চিকিৎসা না হলে রোগে মানুষ মারা যেতে পারে।

 

 

11-02-2013 রোগ ব্যাধি

মুখের ছত্রাক সংক্রমণ

 

ওরাল থ্রাশ হলো মুখের ছত্রাকের সংক্রমণ। ইস্ট ফাঙ্গাস, ক্যানডিডা এলবিকানস ইত্তাদি দ্বারা মুখের মিউকাস মেমব্রেনে সংক্রমণ সৃষ্টি হলে তাকে ওরাল থ্রাশ বল্র।

 

আক্রান্ত স্থান :

ওরাল থ্যাশ ক্রিমি হোয়াইট বা ক্রিম রঙযুক্ত সাদা সংক্রমণ সৃষ্টি করে যা সাধারণত জিহ্বা অথবা চিবুকের অভ্যন্তরে দেখা যায়। এ ধরনের সংক্রমণ ব্যথাযুক্ত হতে পারে আবার সংক্রমণস্থল ব্রাশ করার সময় মৃদু রক্ত বের হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে ওরাল থ্রাশ ক্ষণস্থায়ী ক্যানডিডা সংক্রমণ। ক্যানডিডা সংক্রমণ তালু, মাড়ি, টনসিল এমনকি গলা পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করতে পারে, যা ক্যানডিডিয়াস বা মনিলিয়াস নামে পরিচিত।

ওরাল থ্রাশ কাদের হয়?

নবজাতক,

কৃত্রিম দাঁত ব্যবহারকারী ডায়াবেটিক রোগী, এন্টিবায়োটিক চিকিৎসাধীন রোগী,

কেমোথরাপি চিকিৎসাধীন রোগী,

নেশাগ্রস্ত মানুষ

অপুষ্টিতে দরিদ্র জনগোষ্ঠী এবং

রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ত্রুটিজনিত জনগোষ্ঠী।

 

ওরাল থ্রাশের লক্ষণ :

ওরাল থ্রাশে মুখের অভ্যন্তরে সাদা, ক্রিম অথবা হলুদাভাদ দাগ দেখা যায়। এসব দাগযুক্ত স্থান সামান্য একটু উচুঁ থাকে। সাধারণত এ স্পটগুলোর নিচে কোনো ব্যথা থাকে না। টুথব্রাশের টুথব্রাশের সময় যদি আঘাত লাগে তাহলে এ স্পটগুলো থেকে সামান্য রক্তপাত হতে পারে। বয়স্কদের থ্রাশের কারণে মুখের জ্বালাপোড়া ভাব অনুভুত হতে পারে এবং গলায়ও একই সমস্যা হতে পারে। যদিও ওরাল থ্রাশে সবাই আক্রান্ত হতে পারেন তবুও এটি বেশি হয় শিশুদের ক্ষেত্রে। তাছাড়া কমেপ্রামাইজড ইমিউন সিস্টেমযুক্ত ক্ষেত্রে দেখা যেতে পারে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে ওরাল থ্যাশ নিরাময় করা অনেক সময়  কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

 

ওরাল থ্রাশের চিকিৎসা :

·        যেসব কারণে ওরাল থ্যাশের সৃষ্টি হয়েছে তা নির্ণয় করে সেটির অপসারণ করতে হবে।

·        এন্টিফ্যাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। নিস্ট্যাটিন ওরাল সাসপেনশন, এস্কাটেরিসন ও মাইকোনাজল এসব কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

·        তা ছাড়া খাবার ওষুধও  প্রয়োজন হতে পারে।

·        তবে ওরাল থ্রাশের চিকিৎসায় অবশ্যই সতর্কতা Aej¤^b করতে হবে। কারণ ওরাল থ্রাশের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ওষুধ অনেক সময় রোগীর দেহে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

·        যাদের কিডনি রোগ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসা প্রদান করতে হবে।

·        মুখের ফাঙ্গাল সংক্রমণে চিকিৎসা প্রদান করার আগে রোগীর কোনো যৌনরোগ আছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখতে হবে।

·        অহেতুক মুখস্থ ওষুধ প্রয়োগ বা সেবন না করাই উত্তম।

 

 

06-02-2013 রোগ ব্যাধি

ম্যালেরিয়া

এনোফেলিস-নামক স্ত্রীজাতীয় মশাবাহিত চার ধরনের পরজীবী: প্লাজমোডিয়াম ফেলসিপেরাম, প্লাজমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স, প্লাজমোডিয়াম ওভাল এবং প্লাজমোডিয়াম ম্যালেরি মানবদেহে যে-রোগ সৃষ্টি করে তাকেই ম্যালেরিয়া বলা হয়। একসময়ে এই উপমহাদেশে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ অত্যন্ত বেশি ছিলো। বেশ কয়েক দশক এর প্রাদুর্ভাব কিছুটা কম ছিলো। গত কয়েক বছর ধরে এ-অঞ্চলে ক্রমশ রোগটির পুনরাবির্ভাব ঘটছে।

 

রোগের বিস্তারঃ

অনেকেই মনে করেন, মশা কেবলমাত্র রাতেই (সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত) কামড়ায়। কিন্তু আফ্রিকা অঞ্চলে ম্যালেরিয়া -সংক্রান্ত গবেষণায় দেখা গেছে, মশা দিনের বেলায়ও মানুষকে কামড়ায়। বন কিংবা ঝোপঝাড়ে যারা কাজ করে তারা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং তাদেরকে

কামড়িয়ে মশা যখন তাদের প্রতিবেশী লোকদেরও কামড়ায় তখন তারাও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়।

আক্রান্ত মশার কামরে ম্যালেরিয়ার জীবাণু রক্তের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং মানুষকে এ-রোগে আক্রান্ত করে। পরবর্তী পর্যায়ে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত মশার মাধ্যমে অন্য সুস্থ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত দুই সপ্তাহের মধ্যে জীবাণু প্রাপ্তবয়স্ক হয় এবং মশার মাধ্যমে নতুন ভাবে আরো অনেক মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। একটি মশা একসাথে অনেক সুস্থ মানুষের শরীরে ম্যালেরিয়ার জীবাণু ঢুকিয়ে দিতে পারে।

উপসর্গঃ

ম্যালেরিয়া রোগের প্রধান উপসগ © জ্বর যা সারাক্ষণ বা প্রতিদিন হঠাৎ-হঠাৎ দেখা দিতে পারে। শুরুতে হঠাৎ-হঠাৎ জর হয়, কিন্তু এই জ্বর ২-৩ দিন পর নিয়মিত একটা রূপ নেয়। সাধারণত বেশ কয়েক ঘণ্টা জ্বর থাকে এবং শুরুতে শরীরে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর ওঠে। জর আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে; তারপর শরীর থেকে প্রচুর ঘাম বের হয়। জ্বরের সময় রোগীর মাথা-ব্যথা, কোমড়-ব্যথা, অস্থি সন্ধিতে ব্যথা বা সারা শরীরেই ব্যথা হতে পারে। ক্ষুধামন্দা, বমি-বমি ভাব, বমি-হওয়া এবং পাতলা পায়খানাও জ্বরের সাথে থাকতে পারে। আক্রান্ত হওয়ার পরদিনই রোগী সুস্থ বোধ করতে পারে, কিন্তু পরের দিনই আবারও একইভাবে জ্বর আসে এবং এভাবেই চলতে থাকে। চিকিৎসার ব্যবস্থা না-করলে রোগীর মৃত্যুও ঘটতে পারে। গর্ভবতী মহিলা ও শিশুদের ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা না-করলে রোগ সঙ্কটাপন্ন পর্যায়ে চলে যেতে পারে।

 

 

মারাত্মক ম্যালেরিয়ার বিপদ-চিহ্ন

·        উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর

·        ঘন-ঘন বমি,

·        অষুধ মুখ দিয়ে খেতে না-পারা,

·        খাবার ও পানি খেতে না-পারা

·        অকারণে নাক দিয়ে, দাঁতের মাড়ী ও অন্যান্য জায়গা দিয়ে রক্ত-পড়া

·        অস্বাভাবিক আচরণ, যেমন খিঁচুনি, অচেতন, ঘুম-ঘুম ভাব, দ্বিধাদ্বন্দ্বে-ভোগা, প্রলাপবকা পরিচিতজনদের চিনতে না-পারা।

·        খুব সামান্য পরিমাণ গাঢ় রঙের প্রস্রাব-হওয়া;

·        অনেক সময় প্রস্রাব একবারে বন্ধ হয়ে-যাওয়া

·        শরীরে মারাত্মক পানিশূন্যতা দেখা-দেওয়া

·        রক্তস্বল্পতা

·        জন্ডিসের মতো চোখ হলুদ হয়ে-যাওয়া

 

সনাক্ত করা:

ম্যালেরিয়ার জীবাণু তিনটি পদ্ধতি দ্বারা সনাক্ত করা হয়:

 (১) দ্রুত সনাক্তকরণ পরীক্ষা

(ফেলসিভ্যাক্স যার মাধ্যমে প্লাজমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স এবং ফেলসিপেরাম উভয়কে মাঠ-পর্যায়ে সনাক্ত করা যায়),

(২) সাস্ন ইড এবং

(৩) ফিল্টার পেপার।

চিত্রঃ ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রক্ত কনিকা

 

অষুধ:

মাঠ-পর্যায়ে কোনো ব্যক্তি বা শিশু ম্যালেরিয়ার পরীক্ষায় পজিটিভ চিহ্নিত হলে পরজীবীর প্রকার অনুসারে অষুধ দেওয়া হয়। কয়েক ধরনের অষুধ এবং এগুলোর মাত্রা নিচে উল্লেখ করা হলো।

জমোডিয়াম ফেলসিপেরামজনিত ম্যালেরিয়া হলে ট্যাবলেট কোয়ার্টাম নিম্নোক্ত মাত্রায় খাওয়ানো হয়:

ক) ৫ থেকে ১৪ কেজি ওজনবিশিষ্ট ব্যক্তির ক্ষেত্রে

১+১+১+১+১+১ ট্যাবলেট

খ) ১৫ থেকে ২৪ কেজি ওজনবিশিষ্ট ব্যক্তিরক্ষেত্রে

২+২+২+২+২+২ ট্যাবলেট

গ)২৫ থেকে ৩৪ কেজি ওজনবিশিষ্ট ব্যক্তির ক্ষেত্রে

৩+৩+৩+৩+৩+৩ ট্যাবলেট

ঘ) ৩৫ কেজির বেশি ওজনের ব্যক্তির ক্ষেত্রে

৪+৪+৪+৪+৪+৪ ট্যাবলেট

 

উল্লেখ্য যে, এই অষুধের প্রথম ডোজটি রোগ নির্ণিত হওয়ার পর যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি খাওয়াতে হবে। দ্বিতীয় ডোজটি প্রম ডোজের ঠিক ৮ ঘণ্টা পর খাওয়াতে হবে। এর পর থেকে অন্য ডোজগুলো ১২ ঘণ্টা পরপর খাওয়াতে হবে।

 

কায়ার্টামের অষুধ দেওয়া যাবে না;

·        যেসব রোগী কোয়ার্টামের প্রতি সংবেদনশীল

·        যেসব রোগীর বৃক্ক (কিডনি) অকার্যকর

·        যেসব রোগীর যকৃত (লিভার) অকার্যকর

·        গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রথম তিন মাস

(তার পরিবতে © ট্যাবলেট কুইনিন ৩০০ মি.গ্রাঃ দেওয়া যাবে। সাধারণত একজন পাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য দৈনিক তিনবার করে প্রতিবার ২টি ট্যাবলেট মোট ৭ দিন খাওয়াতে হবে।

 

প্লাজমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স-এর ক্ষেত্রে

ট্যাবলেট ক্লোরোকুইন জাতীয় চিকিৎসাবিধান অনুযায়ী আজকাল ১ম দিন প্রতিকেজি শারীরিক ওজনের জন্য ১০ মি.গ্রঃ, ২য় দিন প্রতিকেজি শারীরিক ওজনের জন্য ৭.৫ মি.গ্রা. এবং ৩য় দিন প্রতিকেজি শারীরিক ওজনের জন্য ৭.৫ মি.গ্রাঃ করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্ক একজন রোগীকে প্রথম দিন ৪ ট্যাবলেট, দ্বিতীয় দিন ৩ ট্যাবলেট এবং তৃতীয় দিন ৩ ট্যাবলেট ( প্রতিটি ২৫০ মিঃগ্রাঃ) একসঙ্গে দিতে হবে। চতুর্থ দিন থেকে ১টি করে ট্যাবলেট প্রিমাকুইন (১৫ মি.গ্রাঃ) ১৪ দিন পর্যন্ত খাওয়াতে হবে। উল্লেখ্য যে, ট্যাবলেট প্রিমাকুইন গভর্ব তী মহিলা এবং ৫ কেজির কম-ওজনের শিশুদের দেওয়া যাবে না। ৩য় দিনের পর গর্ভবতী মহিলাদেরকে ম্যালেরিয়ার

জন্য আর কোনো অষুধ দেওয়া হয় নাবিস্তারিত

-->

06-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

কুষ্ঠরোগ রোগতত্ত্ব ও চিকিৎসা


 à¦à¦•à¦¸à¦®à§Ÿ কুষ্ঠরোগকে বিধাতার অভিশাপ

বলে মনে করা হতো। যীশু খ্রিস্টের জন্মের ৬০০ বছর আগে ভারতে রচিত একটি গ্রন্থে কুষ্ঠরোগের বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়। ১৮৭৩ সালে নরওয়ের বিখ্যাত বিজ্ঞানী ডাঃ আরমার হ্যানসেন কুষ্ঠরোগের জীবাণু আবিষ্কার করেন। তখন থেকেই মানুষ কুষ্ঠরোগের কারণ সর্ম্পকে নিশ্চিত হয়। এখন পর্যন্ত কুষ্ঠরোগ বিশ্বব্যাপী একটি অন্যতম প্রধান Rb¯^v¯’¨ সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭ সালে ২,৫৪,৫২৫ জন নতুন রোগী সনাক্ত করা হয়েছে।

কুষ্ঠরোগের প্রকৃতি

কষ্ঠু একটি দীর্ঘে ময়াদী সংক্রামক রোগ যা মাইকোব্যাকটেরিয়াম লেপ্রি bvgK জীবাণু দ্বারা সংঘটিত হয়। অবশ্য কিছ  কিছু আক্রান্ত ব্যক্তি আছে যারা সংক্রমণ ঘটায় bv। এ-রোগে মূলত ত্বক এবং প্রান্তিক স্নায়ূ আক্রান্ত হয়। কখনো কখনো শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, যেমন হাড়, নাকের শ্লেষাঝিল্লি, কিডনি ও পুরুষদের ক্ষেত্রে অন্ডকোষ এ-রোগে আক্রান্ত হতে পারে এবং ক্ষতিগস্র প্রান্তিক স্নায়ূ কতর্কৃ সরবরাহকতৃ মাংশপেশী ক্ষতিগস্ত হয়ে দূর্বল ও অকার্যকর হয়ে পড়ে।

 

রোগের বিস্তারঃ

চিকিৎসা দেওয়া হয় নি সংক্রমণে সক্ষম এমন কুষ্ঠরোগীর হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে এ-রোগের জীবাণু বের হয়ে বাতাসে মিশে নিঃশ্বাসের  à¦®à¦¾à¦§à§à¦¯à¦®à§‡ সুস্থ ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করে। তবে, শরীরের প্রাক্রিতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকার কারণে শতকরা প্রায় ৯০ ভাগেরও বেশি ব্যক্তি এ-রোগে আক্রান্ত হয়না।  

যেকোনো বয়সের ব্যক্তি এ-রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে, বাংলাদেশে এ-পর্যন্ত ৩ বছর বয়সের নিচে কোনো কুষ্ঠরোগী পাওয়া যায় নি।

 

কষ্ঠু রোগের জীবাণু শরীরে অনপ্রবেশের পর রোগের লক্ষণ দেখা দিতে সাধারণত ৩ থেকে ৫ বছর লাগে, যাকে কুষ্ঠরোগের সুপ্তিকাল বলা হয়। কখনো কখনো এই সুপ্তিকাল ২০-৪০ বছর বা তারও বেশি হতে পারে। কষ্ঠু রোগের জীবাণু অত্যন্ত ধীরগতিতে বংশবিস্তার

06-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

কালাজ্বর

 

ভিসেরাল লেইশমিনিয়াসিস বা কালাজ্বর প্রটোজোয়া পর্বভুক্ত লেইশমিনিয়া ডোনাভানি নামক পরজীবীর মাধ্যমে সংগঠিত হয়। কালাজ্বরের লক্ষণসমূহ হচ্ছে: কোনো বিরতি ছাড়াই একাধারে জ্বর, যকৃত ও প্লীহার স্ফীতি, রক্তস্বল্পতাv, ওজন হ্রাস, দুর্বলতা, প্রভৃতি। চিকিৎসা গহ্রণ না করলে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর অনেক সম্ভাবনা থাকে। কালাজ্বও একটি বিশেষ প্রজাতির বেলেমাছি, ফ্লিবোটোমাস আরজেন্টিপেস  à¦¦à§à¦¬à¦¾à¦°à¦¾ বাহিত হয়। আক্রান্ত বেলেমাছি কোনো সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ালে তিনিও আক্রান্ত হয়ে পড়েন।

রোগের ইতিহাস ও বিস্তারঃ

পাক-ভারত উপমহাদেশে কালাজ্বরের ইতিহাস বেশ প্রাচীন, তবে দুইশত বছর ধরে একে একটি গুরত্বপূর্ণ রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বর্তমানে দেশের ৩৪টি জেলায় কালাজ্বর সনাক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশে কালাজ্বর-আক্রান্ত অর্ধেকের বেশি লোক বাস করে ময়মনসিংহ জেলায়। এছাড়া পাবনা, টাঙ্গাইল, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, নাটোর ও রাজশাহী জেলাতে উলেস্নখযোগ্য সংখ্যক কালাজ্বও রোগী সনাক্ত করা হয়েছে।

 

কিভাবে ছড়ায়ঃ

কালাজ্বরের জীবাণুবাহক বেলেমাছিগুলো মাটির ঘর কিংবা গোয়ালঘরের ফাঁক-ফোঁকরে বাস করে এবং সন্ধ্যেবেলায় বেরিয়ে এসে স্ত্রী-মাছিরা মানষু এবং গবাদি পশুদের কামড়ায়। সাধারণত স্ত্রী-মাছিরা গোয়ালঘরের স্যাঁতস্যাঁতে আর্দ্র ও অধিক জৈব উপাদানযুক্ত আলগা মাটিতে ডিম পাড়ে। ডিম থেকে বের হয়ে পূর্ণাঙ্গ হবার আগ পর্যন্ত এরা মাটিতে (২-৫ সে.মি. নিচে) বাস করে।

পিকেডিএলঃ

পোস্ট-কালাজ্বর ডার্মাল লেইশমিনিয়াসিস বা

পিকেডিএল হচ্ছে কালাজ্বর-এর আরেকটি ধরন কিংবা প্রায় সমজাতীয় একটি রোগ যা সাধারণত কালাজ্বর চিকিৎসার ৬ মাস পর থেকে দেখা দিতে পারে। এতে কালাজ্বরের জীবাণু ত্বকে এসে জমা হয়। ফলে, লক্ষণ হিসেবে ত্বকে বিভিন্ন আকারের সাদা বা ধূসর বর্ণের দাগ দেখা দেয়। এর সাথে ত্বকের নিচ থেকে উঠে-আসা গোটা, লালচে দাগ কিংবা জ্বর থাকতেও পারে, নাও পারে। ধারণা করা হয়, অপ্রতুল চিকিৎসা এবং ওষুধের সাথে জীবাণুর প্রতিক্রিয়ার ফলে এমনটি ঘটে। তবে অনেক সময় এমন হয় যে, আগে কালাজ্বর হয় নি এমন ব্যক্তিরও পিকেডিএল হয়েছে। পিকেডিএল-আক্রান্ত ব্যক্তিরা রোগ সংক্রমণ প্রসারে গুরত্বপূর্ণ

ভূমিকা রাখে।

রোগ নির্নিয়ঃ

কালাজ্বর সনাক্তকরণের সবচাইতে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হচ্ছে অস্থিমজ্জা কিংবা প্লীহা থেকে কোষ নিয়ে কালাজ্বরের জীবাণু সনাক্ত করা। কিন্তু এপদ্ধতিটি রোগীদের জন্য বেদনাদায়ক বলে রক্তের ড্যাট (DAT), ইলাইসা (ELISA), পিসিআর (PCR), প্রভৃতি পদ্ধতি ব্যবহার করে কালাজ্বর সনাক্ত করা যায়। বাংলাদেশে ড্যাট হচ্ছে বহুল ব্যবহৃত মাধ্যম। কিন্তু এর মূল সীমাবদ্ধতা হচ্ছে, ড্যাট-এর একমাত্র রেফারেন্স ল্যাবরেটরিটি মহাখালীস্থ রোগতত্ত ও রোগ নিয়নণ্ত্র ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইইডিসিআর)-এ অবস্থিত । ফলে, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাঠানো নমুনাগুলো পরীক্ষা করতে বেশ সময়ের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে আইসিডিডিআর,বি এবং আইইডিসিআর তাদেও গবেষণাকাযে © রেপিড কে-৩৯ ডিপস্টিক ব্যবহার করছে। সঠিকভাবে কালাজ্বর রোগী সনাক্তকরণের জন্য অনতিবিলম্বে দেশব্যাপী রেপিড কে-৩৯ ডিপস্টিক-কে সহজলভ্য করতে হবে।

 

চিকিৎসাঃ

আমাদের দেশে কালাজ্বরের সবচাইতে ব্যবহৃত ওষুধ হচ্ছে সোডিয়াম এন্টিমনি গ্লুকোনেট (এস- এজি) যা ইঞ্জেকশন আকারে প্রতিদিন শরীরের ওজনের প্রতি কেজির জন্য ২০ মি.গ্রা. হিসেবে শরীরের ওজন অনুযায়ী ২০ দিন মাংসপেশীতে দেওয়া হয়। বর্তমানে মিলিটোফসিন নামক একটি ট্যাবলেট পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পিকেডিএল-এর চিকিৎসার জন্য এসএজি একই নিয়মে ১২০ দিন প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, কালাজ্বর ও পিকেডিএল-এর চিকিৎসা কালাজ্বরপ্রবণ এলাকার থানা ¯^v¯’¨‡K‡›`ª বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। এছাড়াও, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কালাজ্বর চিকিৎসায় নিয়মিতভাবে পেন্টামেডিন

ও এম্ফোটরসিন-বি এবং গবেষণামূলক ভাবে পারোমোমাইসিন এবং সিটামাকুইন প্রভৃতি ওষুধও ব্যবহৃত হচ্ছে

 

নিয়ন্ত্রনঃনিনিয়ন্ত্রmbv³KiY3

১. কালাজ্বর-প্রবণ এলাকায় যেকোনো ব্যক্তি দুই সপ্তাহের অধিক জ্বর বোধ করলে অনতিবিলম্বে নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে

২. কালাজ্বর নিশ্চিত হলে চিকিৎসা সম্পূর্ণ করতে হবে

৩. কালাজ্বরের চিকিৎসা শেষ হবার পর ত্বকের কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিকটস্থ মেডিকেল

কলেজ হাসপাতালে অথবা জেলা হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে

৪. বেলেমাছিরা সাধারণত গোয়ালঘরের আর্দ্র, স্যাঁতস্যাঁতে মাটিতে বংশবৃদ্ধি করে, তাই

গোয়ালঘরের মেঝে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে

৫. দিনের বেলায় মাটির ঘরের দেয়ালের ফাঁক- ফোঁকরে বেলেমাছিরা লুকিয়ে থাকে। তাই

নিয়মিত ঘর লেপতে হবে এবং দেয়ালের ফাঁক-ফোঁকর বন্ধ করে দিতে হবে

৬. বেলেমাছির কামড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে ঘুমানোর সময় মশারী ব্যবহার করতে হবে এবং সন্ধ্যাবেলায় কয়েল এবং প্রয়োজনবোধে কীটনাশক স্প্রে ব্যবহার করতে হবে।

06-02-2013 রোগ ব্যাধি

ফ্লু/ইনফ্লুয়েঞ্জা ও টিকা

 

ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু খুবই পরিচিত একটি রোগ। প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল দেশে এই রোগে আক্রান্ত হয়।  এটি এক ধরণের ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হয় এবং হাচি কাশির মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ে। উন্নত দেশে এই রোগের টিকার ব্যবহার বেশী বিধায় এর বিস্তৃতি আমাদের দেশের তুলনায় অনেক কম।  অসুখটি সামান্য মনে হলেও কখনও কখনও এবং কার কারও ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া সহ অনেক  জটিলতা দেখা দেয়।

চিত্র: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস

যখন একটি রোগ একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মানুষে(যেমন: শিশু/বৃদ্ধ) অনেক বেশি আকারে  ছড়িয়ে পড়ে তখন তাকে এপিডেমিক বলে। ফ্লু একটি রোগ সাধারণত ২-৩ বছর পর পর এপিডেমিক আকারে দেখা যায়। আবার ১০-১৫ বছর পর পর তা মহামারি আকারে (পেনডেমিক) দেখা দিতে পারে। তাই দেশে শিশু, বৃদ্ধসহ সবাইকে ফ্লু এর টিাকা নিতে উৎসাহিত করা হয়। আমাদের দেশেও এর টিকা পাওয়ার যায়।

চিত্র: বার্ড ফ্লু ভাইরাস

 

চিত্র: প্রতিরোধ

 

টিকার মাধ্যমে মারাত্মক জটিলতা পরিহার করা যায়

 

          ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের একটি বিশেষ ক্ষমতা হল-এটি তার বহিঃস্থ খোলকে পরিবর্তন আনার মাধ্যমে  বৈশিষ্ট্য পবিবর্তন  করতে সক্ষম। এতে করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ কারী ব্যবস্থা তাকে চিনতে পারে না এবং সহজেই রোগ সৃষ্টি করে। তাই প্রায়ই বার্ড ফ্লু, ইত্যাদি আতঙ্কে থাকা লাগে।

চিত্র: প্রতিরোধের জন্য মাস্ক ব্যবহার করূন

 

তাই এই রোগ প্রতিরোধ করতে হলে প্রতি বছরই নতুন টিকা নিতে হবে।  তারপরও ভিন্ন ধরনের ভাইরাস দিয়ে ফ্লু হবার সম্ভাবনা থেকেই যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শীত ও বসন্ত কালে ২ মাস ব্যাপী এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। তাই এ সময়ের পূর্বেই যারা অধিক  আশংকাযুক্ত তাদের টিকা নেয়া উচিত । যেমন:

·        ৬৫ বছরের বেশি সকল বৃদ্ধ/বৃদ্ধা

·        গর্ভাবস্থায়

·        যে সকল রোগীর প্রায়ই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় এমন দীর্ঘমেয়াদী রোগের রোগী।

·        ৬ মাসের বেশি বয়সের সকল ব্যক্তি যাদের বিভিন্ন ধরণের হৃদরোগ বা দীর্ঘমেয়াদী ফুসফুসের রোগ বা ডায়বেটিস, কিডনী রোগ, স্নায়ুর রোগ বা কম ইমুনিটি (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম) সম্পন্ন।

·        স্বাস্থ্যকর্মী বা রোগীর সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ।

·        দীর্ঘমেয়াদী রোগীর সাথে যারা বসবাস করে থাকেন।

·        বানিজ্যিক  হাঁস/মুরগী বা গবাদী পশুর খামারী

 

গর্ভাবস্থায় টিকা : 

গর্ভাবস্থায় যে কোন সময় এই টিকা নেয়া যাবে।

টিকার পূর্বে বলবেন

 à¦¨à¦¿à¦šà§‡à¦° সমস্যাগুলি ডাক্তার/নার্সকে বলুন ।

-  অসুস্থ, জ্বর।

-  কোন টিকায় মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকলে।

-  কোন টিকায় মারাত্মক এলার্জি হযে থাকলে।

-  ডিমে মারাত্বক এলার্জি থাকলে- কেননা এই টিকার ভাইরাস ডিমের মধ্যে বর করা হয়।

- ৬ মাসের কম বয়সী হলে

- গুলেনবারী রোগে ভুগে থাকলে

 

সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া /টিকার বিরুপ প্রতিক্রিয়াঃ

সাধারণভাবে কার্যকর এবং নিরাপদ। বিরুপ প্রতিক্রিয়া একেবারেই বিরল, তবু যা হতে পারে তা হল-

-  অতি মাত্রায় জ্বর, লাল দাগ, ক্লান্তি বা অবসাদ।

-  সর্দি বা ঠান্ডাবিস্তারিত

-->

06-02-2013 রোগ ব্যাধি

হাইডাটিভ ডিজিজ (ফিতা ক্রমি)

 

 

ফিতা কৃমি বা টেপ ওয়ার্ম বলতে কয়েক ধরনের চ্যাপ্টা, লম্বা  à¦«à¦¿à¦¤à¦¾à¦° মত কৃমিকে বোঝায় যা সাধারণত পশুর অন্ত্রে বাস করে। সারা বিশ্বব্যাপি এই কৃমি পাওয়া যায়। মনুষ ঘটনাক্রমে এই কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয়। যেমন- আক্রান্ত প্রানীর যেমন- গরু, শুকর ইত্যাদির মাস অর্ধসেদ্ব বা কাঁচা অবস্থায় খেলে ঐ কৃমির লার্ভা মানুষের পেটে চলে যায় ও পরবর্তিতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়াও কুকুরের সংস্পর্শে থাকার ফলেও হাইডাটিভ জাতীয় কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে, কেননা আক্রান্ত কুকুরের পায়খানার সাথে এই কৃমির ডিম বাইরে ছড়ায়।

          ইফাইনোকক্কাস গ্রানুলোসাস নামক ফিতাকৃমি সাধারণত কুকুরের পেটে অবস্থান করে। আক্রান্ত কুকুরের মলের সংস্পর্শে থাকলে মানুষ এই কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয় তখন তাকে হাইডাটিভ ডিজিজ বলে। এই রোগটি অত্যন্ত মারাত্মক  এবং রোগী মারা যেতে পারে। এই কৃমির ডিম শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশে অবস্থান করে সিস্ট (ফোড়া) তৈরী করে ও স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত করে।

 

ফিতা কৃমির জীবন চক্র :

কৃমির জীবনচক্র সম্পন্ন করতে ২ ধরনের পোষকের প্রয়োজন।

 

১। অর্ন্তবর্তিকালীন  পোষক : 

গরু, মহিষ, শুকর, ভেড়া, উট, ক্যাংগারু। এ সব প্রানী ঘাস  খাবার সময় ঘাসের সাথে মিশে থাকা আক্রান্ত কুকুর শেয়ালের পায়খানাযুক্ত ফিতা কৃমির ডিম খেয়ে ফেলে। ডিমগুলি ঐ পশুর অন্ত্রে গিয়ে ভ্রণ তৈরী করে এবং তা অন্ত্রের দেয়াল ভেদ করে রক্তের পেশী ইত্যাদিতে পৌছে ফোস্কার মত হাইডাটিড সিস্ট তৈরি করে। একটি পরিপক্ক সিস্ট এর ভেতরে লক্ষ লক্ষ ফিতাকৃমির মাথা থাকতে পারে।

২। নির্দিষ্ট পোষক :

কুকুর, শিয়াল। আক্রান্ত গরু, গহিষ , ভেড়া ইত্যাদি মারা গেলে, তাদের মাংস, কলিজা ইত্যঅদি কুকুর ভক্ষন করে, সাথে সাথে হাইডাটিড সিস্ট কুকুরের পেটে চলে যায়। সেখানে সিস্ট ফেটে ফিতা কৃমির মাথাগুলি উন্মুক্ত হয় ও কুকুরের অন্ত্রের  গায়ে গায়ে লেগে যায়। মাত্র ৬ সপ্তাহে এরা পূর্ণাঙ্গ ইকাইনোকক্কাসে পরিনত হয়। যার দৈর্ঘ্য মাত্র ৬ মি:মি। একটি কুকুরের পেটে হাজার হাজার ফিতাকৃমি থাকতে পারে। কৃমিটি পরিপক্ক হলে প্রতি ২ সপ্তাহে সে তার শরীরের সবচেয়ে শেষের খন্ডটি নিঃসরন করে, যার ভেতর অসংখ্য অপরিপক্ক ডিম থাকে। এই খন্ডটি মলের সাথে বাইরে বেরিয়ে আসে ও ঘাসে, সব্জি বাগানে  লেগে থাকে এবং এভাবে কযেকমাস  বাঁচতে পারে। কোনভাবে আবার অর্ন্তবর্তি কালীন পোষোক ডিমটি খেয়ে ফেললে তা আবার হাইডাটিড সিস্ট তৈরী করে।

 

মানুষ কিভাবে আক্রান্ত হয়?

মানুষ দূর্ঘটনাবশত  সব্জি বা কোন খাবারের মাধ্যমে অপরিপক্ক ডিম খেয়ে ফেললে আক্রান্ত হয়। কুকুরের গায়ে, লোমেও ডিম লেগে থাকতে পারে। বাচ্চারা কুকুর নিয়ে খেলা করতে গিয়ে তাদের হাতে ডিম লেগে মুখে চলে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে মুনষও গরু, ভেড়ার মত অর্ন্তবর্তিকালীন পোষকের স্তরে চলে যায়। এই ডিম অন্ত্র থেকে রক্তের সাথে মিশে লিভার, ফুসফুস, কিডনী, মাংষপেশী এমনকি মস্তিস্কে ছড়িয়ে পড়ে ও ঐস্থানে গিয়ে হাইডাটিভ সিস্ট তৈরী করে।

 

লক্ষণসমূহ :

আক্রান্ত অংশের উপর নির্ভর করে লক্ষণ দেখা যায়। শতকরা ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে লিভার ও ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে ফুসফুস আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত হবার বহুদিন (কয়েক মাস বা বছর) পর রোগ লক্ষণ দেখা দেয়। লক্ষণগুলি হল-

§        পেটে হজমের সমস্যা

§        ডায়রিয়া

§        দ্রুত শরীরের ওজন কমতে থাকা

§        পেট ফুলে যাওয়া

§        রক্তশূণ্যতা

§        দূর্বলতা

§        কাশি

§        জন্ডিস

এ ছাড়াও মস্তিস্কে বা হার্টে সিস্ট হলে আরও মারাত্মক কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। সিস্ট নহঠাৎ ফেটে রক্তের সাথে মিশে গেলে জীবন হুমকী সরুপ এলার্জিক রিএকশন (এনোফাইলেক্সিস)দেখা দেয় ।

 

রোগ নির্ণয় :

রোগের ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা, এক্স-রে আল্ট্রাসনোগ্রাম, সিটি স্ক্যান, এম আর আই, এ ছাড়াও রক্তে এন্টিবডি, প্রস্রাব ও পায়খানায় জীবাণুর এন্টিজেন নির্ণয় করা সম্ভব।

 

চিকিৎসা:

অপারেশনই প্রধান চিকিৎসা, তবে অপারেশনের কারণে জীবাণু সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে পড়ার রিক্স থাকে। তাই সাথে উচ্চ মাত্রায় কৃমিনাশক ঔষধ দিতে হবে ( এলবেনডাজল) এতে মাথাগুলি মারা যাবে। তকে শতকরা ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে পুণরায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা তাকে। সে ক্ষেত্রে পূণরায় সার্জারী করতে হতে পারে।

 

প্রতিরোধে করণীয় :

ফিতাকৃমির আক্রমণ প্রতিরোধ করতে হলে জীবনচক্রের দুই ধাপেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

যা যা করণীয় :

§    à¦ªà§‹à¦·à¦¾ কুকুরের পেটের কৃমি মারার ব্যবস্থা নিতে হবে। কৃমি কুকুরের দেহে কোন লক্ষণ তৈরী করে না। তাই কুকুর সুস্থ দেখে ভাবার কোন কারণ নেই যে কুকুরের পেটে ক্রমি নেই।

§    à¦¨à¦¿à§Ÿà¦®à¦¿à¦¤ কুকুরকে ক্রমিনাশক ঔষধ খাওয়াতে হবে।

§    à¦•à§à¦•à§à¦°à§‡à¦° মল-মুত্র পরিস্কার করার সময় হাতে গ্লাফস পরিধান তরতে হবে এবং কুকুর ধরার পর অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ভাল করে ধুতে হবে। বাচ্চাদেরকেও এই শিক্ষা দিতে হবে, কেননা বাচ্চারাই বেশি আক্রান্ত হয়।

§    à¦•à§à¦•à§à¦°à¦•à§‡ বাইরে যেখানে সেখানে যা তা খাওয়া থেকে বিরত রাখুন। কুকুরের জন্য বানানো খাবার খাওয়ান।

§    à¦•à¦¾à¦à¦šà¦¾ মাংশ খাওয়াবেন না, তা যত ভাল স্থান থেকেই সংগ্রহ করা হোক না কেন।

§    à¦¯à¦¾à¦°à¦¾ গরুবিস্তারিত

-->

06-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

গ্লান্ডুলার ফিডার / ইনফেকশাস মনোনিউক্লিউসিস

 

   ইনফেকশাস মনোনিউক্লিওসিস রোগকে সাধারণভাবে প্রায়ই গ্লান্ডুলার ফিডার বলা হয়। এটি একটি ভাইরাস (এপস্টেন বার ভাইরাস) বাহিত রোগ। মূলত কিশোর কিশোরি অর্থাৎ টিন এজারদের মধ্যে এই রোগ বেশী দেখা দেয়। এতে রোগীর জ্বর, গলা ব্যথা হয় ও গলার আশেপাশের লসিকা গ্রন্থি ফুলে যায়। যদিও এই রোগটি এমনিতে কেবল বিশ্রামের দ্বারাই ভাল হয়ে যায়, তবে ইহা ক্রনিক ফ্যাটিগ সিনড্রোমের একটি অন্যতম কারণ।

 

লক্ষণ সমূহঃ

জ্বর এবং গলা ব্যাথা এই রোগের অন্যতম দুটি লক্ষণ। এছড়াও টনসিল এবং ফ্যারিংস (মুখ গহবরের ভেতরের অংশ) ফুলে যাওয়া ও ব্যাথা হওয়াও খুব স্বাভাবিক অন্যান্য লক্ষণ সমূহ হলঃ

·        লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া

·        স্প্ল্লীন বা প্ল্লীহা বড় হওয়া (শতকরা ৫০ ভাগ ক্ষেত্রে)

·        জন্ডিস (মাত্র ৪ শতাংশ ক্ষেত্রে) হতে পারে।

 

ভাইরাস আক্রমণের প্রায় ৪ - ৬ সপ্তাহ পরে রেগের লক্ষণ প্রকাশিত হয়। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে রোগের তেমন কোন লক্ষণ পওয়া যায় না। তবে প্রায় প্রত্যেকেই জীবনে কখনও কখনও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকবেন।

 

নিকট সংস্পর্শের মাধ্যমে জীবাণু ছড়ায়ঃ গ্লান্ডুলার ফিডার মূলত খুব কাছাকাছি সংস্পর্শের মাধ্যমে বিশেষত লালার মাধ্যমে ছড়ায়। তাই এই রোগের অন্য নাম কিসিং ডিজিজ। আবার ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে খেলনাতে লেগে থাকা অসুস্থ বাচ্চার লালা অন্য বাচ্চার মুখে খাবার মাধ্যমেও রোগ ছড়াতে পারে।

 

জীবাণু বহন করা এবং ছড়ানোঃ আক্রান্ত হবার পর লালার মাধ্যমে জীবাণু কয়েক মাস এমনকি বছর ধরে ছড়াতে পার। আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ্য হলেও সে জীবাণুর ক্যারিয়ার বা বাহক হিসাবে গলায় জীবাণু বহন করতে পারে এবং ছড়াতে পারে। তাই বাচ্চাদেরকে অন্য বাচ্চাদের সাথে মিশতে বাধা দিয়ে কোন লাভ নেই। কেননা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার দ্বারা অর্থাৎ যার মধ্যে রোগের লক্ষণ নেই অথচ জীবাণু আছে, তার মাধ্যমেই সুস্থ্য ব্যক্তি আক্রান্ত হয়।

 

চিকিৎসাঃ

যেহেতু রোগটি ভাইরাস দ্বারা ঘটে, তাই এর সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। তবে জ্বর ও গলা ব্যাথার জন্য সাধারণ চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে। প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে ও বিশ্রাম নিতে হবে। অসুস্থ্য্  à¦…বস্থায় সুস্থ্য ব্যক্তির সাথে নিকট সংস্পর্শ পরিহার করতে হবে।

 

প্রতিরোধের উপায়ঃ

এই রোগের জন্য কোন টিকা নেই। তবে রোগের বিস্তার রোধের জন্য যা করণীয়

১। পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতা, হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।

২। একই পাত্রে আহার, পানি পান না করা।

৩। নাক মুখ পরিষ্কার করার জন্য প্রত্যেকের আলাদা রুমাল ব্যবহার।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

১। গ্লান্ডুলার ফিডার বা কিসিং ডিজিজ এর অন্য নাম- ইনফেকশাস মনোনিউক্লিউসিস।

২। এস্টেইন বার ভাইরাস নামক ভাইরাস এই রোগের জন্য দায়ী।

৩। অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ্য হবার পরও রোগের জীবাণু বহন করতে পারে।

 

 

04-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু

 

 

ইনফ্লুয়েঞ্জা  à¦¬à¦¾ ফ্লু - ভাইরাসের কারনে হয়। ফ্লুর লক্ষণ সমূহ হলঃ অতিরিক্ত জ্বর, কাঁপুনি, ঘাম, গলা ব্যাথা, দুর্বলতা, মাথ ব্যাথা, মাংসপেশীতে এবং হাড় সন্ধিতে ব্যাথা, কাশি। চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে বিশ্রাম, প্যারাসিটামল, এবং প্রচুর পরিমানে তরল খাওয়া। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন ব্যক্তিদের টিকা দিয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে রক্ষা করা যায়। বয়স্ক ব্যক্তিরা বিশেষভাবে যারা আগে থেকেই কোন রোগে আক্রান্ত তাদের মধ্যে ফ্লু সংক্রান্ত জটিলতা দেখা যায়, যেমনঃ সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়া, মস্তিষ্কে অথবা হৃদপিন্ডে প্রদাহ।    

 à¦‡à¦¨à¦«à§à¦²à§à§Ÿà§‡à¦žà§à¦œà¦¾ হলো একধরনের ফ্লু, যেটি সংক্রমিত ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়ে কাশিএবং হাঁচির মাধ্যমে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ৩ ধরনের ফ্লু ভাইরাস রয়েছে যেমন এ,বি এবং সি।

       ফ্লু ভাইরাসের পৃষ্ঠতলের গঠন পরিবর্তনের আলাদা একটি বৈশিষ্ট্য আছে। এই পরিবর্তনের  à¦«à¦²à§‡ এটি সহজেই ব্যক্তির ইমিউনো সিস্টেমে নিজেকে যুক্ত করে এবং অনেক দুর পর্যন্ত জীবাণু ছড়িয়ে দেয়। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে ইনফ্লুয়েঞ্জা ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে হয় এবং শীত কালে এবং বসন্তকালে বেশি হয়।

        à¦¯à¦–ন প্রকৃতিতে পরিবর্তন আসে এবং সমাজের বেশীর ভাগ মানুষ ফ্লুতে আক্রান্ত হয় তখন মহামারী দেখা দেয় । সাধারনত  à¦‡à¦¨à¦«à§à¦²à§à§Ÿà§‡à¦žà§à¦œà¦¾-এ  -মহামারী ঘটায়। যখন প্রকৃতিতে বড় ধরনের কোন পরিবর্তন ঘটে এবং বিভিন্ন উপমহাদেশে যদি বেশীরভাগ মানুষ ফ্লু তে আক্রান্ত হয় তখন তাকে পেন্ডেমিক (বা পুরো বিশ্বে মহামারী) বলে।

        à¦‡à¦¨à¦«à§à¦²à§à§Ÿà§‡à¦žà§à¦œà¦¾ ইপিডোমিক সাধারণত গড়ে ৩ বছর পরপর হয়, আবার পেন্ডেমিক ইনফ্লুয়েঞ্জা এ পর্যন্ত ১০০ বছরে ৪ বার হয়েছে এবং বহু মৃত্যু ঘটিয়েছে।

 

ফ্লুর লক্ষণ সমূহঃ

  Æ à¦‰à¦šà§à¦š তাপমাত্রা,

  Æ à¦•à¦¾à¦à¦ªà§à¦¨à¦¿ এবং ঘাম,

  Æ à¦—à¦²à¦¾ ব্যাথা,

  Æ à¦¦à§à¦°à§à¦¬à¦²à¦¤à¦¾,

  Æ à¦®à¦¾à¦¥à¦¾ ব্যাথা,

  Æ à¦®à¦¾à¦‚à¦¸à¦ªà§‡à¦¶à§€ এবং অস্থিসন্ধিতে ব্যাথা,

 

 

ফ্লু বনাম সাধারণ ঠান্ডাঃ

    Æ à¦¸à¦¾à¦§à¦¾à¦°à¦¨ ঠান্ডা এক থেকে দুই দিন থাকে এবং ফ্লু সাধারনত এক সপ্তাহ থাকে।

    Æ à¦«à§à¦²à§à¦¤à§‡ অতিরিক্ত জ্বর থাকে, সাধারন ঠান্ডায় হাল্কা জ্বর থাকে।

    Æ à¦«à§à¦²à§à¦¤à§‡ মাংসপেশীতে খিচুনি সহ ব্যাথা থাকে, অন্যদিকে সাধারন ঠান্ডায় এটি থাকে না।

    Æ à¦¸à¦¾à¦§à¦¾à¦°à¦¨ ঠান্ডায় নাক দিয়ে পানি পড়ে কিন্তু ফ্লুতে নাকে এবং গলায় শুষ্ক কাশি অনুভুত হয়।

 

মারাত্মক জটিলতা খুব কম হয়ঃ

মারাত্মক জটিলতা তাদের মধ্যে দেখা যায়, যারা আগে থেকেই রোগ আক্রান্ত এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। ফ্লু যে সকল জটিলতা তৈরী করতে পারে সে গুলোর মধ্যে রয়েছেঃ-

১। সেকেন্ডারী ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়াঃ- যখন ব্যাকটেরিয়া ফুসফুসে যায় তখন এটি হয়। লক্ষণ সমুহ হলোঃ দ্রুত  শ্বাস-প্রশ্বাস, সবুজ-হলুদাভ শ্লেষ্মা, বুকে ব্যাথা, জ্বর। এতে মৃত্যুর হার উচ্চ তবে প্রাইমারী ইনফ্লুয়েঞ্জা নিউমোনিয়ার চেয়ে এটি কম ক্ষতিকর।

২।  à¦ªà§à¦°à¦¾à¦‡à¦®à¦¾à¦°à§€ ইনফ্লুয়েঞ্জা নিউমোনিয়াঃ

এই রোগে প্রচন্ড শ্বাস কষ্ট হয়, চামড়া, ঠোত নীল বর্ন ধারন করে ( সায়ানোসিস)। এতে বেশির ভাগ রোগী মারা যায়।

৩। মস্তিষ্কে এবং হৃদপিন্ডে প্রদাহঃ

ফ্লু থেকে ভাল হয়ে যাবার সময় হতে পারে।

৪। রেইস সিনড্রোমঃ

এ সিনড্রোমে মস্তিষ্কে প্রদাহ ঘটে এবং যকৃতের কার্য ক্ষমতা মারাত্বক ভাবে কমে যায় এবং রোগীর মৃত্যু ঘটায়। এর মৃত্যুর হার শতকরা ১০ থেকে ৪০ ভাগ। ১৬ বছরের নিচে কোন শিশুকে এসপিরিন জাতীয় চিকিৎসা দেয়া যাবে না। কেননা এটি রেইস সিনড্রোম এর ঝুঁকি বাড়ায়।

 

যারা জটিলতা ঝুঁকিতে আছেঃ

যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং আগে থেকেই রোগাক্রান্ত তারাই বেশী ঝুঁকিতে থাকেন। যেমনঃ

   Æ à§¬à§« বছরের উপরের ব্যক্তিগন।

   Æ à¦¯à§‡ কোন জলবাহুল হাসপাতালের ভিতরের ভর্তি রোগী এবং বাইরে থেকে আসা মানুষ সমভাবে ঝুঁকি পূর্ন।

   Æ à¦¯à§‡ সকল শিশু ৬ মাস বয়স থেকেই হৃদরোগ, ফুসফুস জনিত রোগ, বিঘ্নিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে জন্ম নেয়, তারা ঝুঁকি পুর্ণ, আবার যারা দীর্ঘ সময় ধরে ডায়বেটিস কিডনি রোগে এবং রক্ত জনিত রোগে ভোগে তারাও সমান ভাবে ঝুঁকি পুর্ণ।

   Æ à¦—à§ƒà¦¹à¦¹à§€à¦¨ লোক।

   Æ à¦¯à¦¾à¦°à¦¾ হাপানীর রোগী এবং ঘন ঘন হাসপাতালে যায়, তারা ঝুঁকিপুর্ণ।

   Æ à¦—à¦°à§à¦­à¦¬à¦¤à§€ মহিলা।

   Æ à¦¯à¦¾à¦°à¦¾ দীর্ঘ সময় এসপিরিন গ্রহন করে।

   Æ à¦…à¦¨à§à¦¯à¦¾à¦¨à§à¦¯ দীর্ঘদিনের রোগ সমুহ।

   Æ à¦¯à¦¾à¦°à¦¾ ফ্লুতে আক্রান্ত রোগীর সেবায় আক্রান্ত তারাও ঝুঁকিপূর্ণ।

   Æ à¦¯à¦¾à¦°à¦¾ হাসপাতালে রোগীর সেবায় সরাসরি নিয়োজিত তারাও ঝুঁকিপূর্ণ।

   Æ à¦¨à¦¾à¦°à§à¦¸à¦¿à¦‚ হোমে দীর্ঘদিন নিযà

04-02-2013 রোগ ব্যাধি

 

জ্বর

 

    

বয়স, লিঙ্গ বা জাতি ভেদে সবচেয়ে বেশী পরিচিত, সবচেয়ে কমন রোগের নাম হল-জ্বর। এমন ব্যক্তি খুজে পাওয়া কঠিন যে কোনদিন জ্বরে ভুগেন নি। শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী বেড়ে গেলে তাকে আমরা জ্বর বলি। যা সাধারনত ইনফেকশনের কারনে হয়। শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হল ৩৭μ সে বা ৯৮.৬μ ফা. শরীরের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেলে অর্থাৎ ৩৯μ সে. হলে আমরা তাকে জ্বর বলতে পারি। এটি মূলত শরীরের রোগ প্রতিরোধের একটি ব্যবস্থা কেননা শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে অনেক জীবাণু মারা যায়, ইনফেকশন নিয়ন্ত্রন হয়। সাধারনত এই জ্বর ৩-৪ দিনেই ভাল হয়ে যায়।

     সাধারনত ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ইনফেকশন হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী ব্যবস্থা অর্থাৎ ইমিউন সিস্টেম একধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরন করে। আর এই রাসায়নিক পদার্থ শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রনকারী অংশের উপর কাজ করে স্বাভাবিক তাপমাত্রাকে বাড়িয়ে দেয় ফলে শরীর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। হালকা জ্বর অর্থাৎ ৩৯μ সে তাপমাত্রা শরীরের ইনফেকশনকে নিয়ন্ত্রন করে। তবে মাত্রাতিরিক্ত জ্বর (৪২.৪μ সে: বা তার বেশী) বিস্তারিত

-->

04-02-2013 রোগ ব্যাধি

ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষণ , ডায়াগনোসিস ও চিকিৎসা


ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত জ্বর। ভাইরাসজনিত রোগের সাধারণত কোনো প্রতিষেধক নেই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায়। অন্যান্য ভাইরাল রোগের মতো এরও কোনো প্রতিষেধক নেই,টিকাও নেই। লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দিয়ে এর মোকাবিলা করা হয়। অন্য ভাইরাল ফিভারের মতো এটিও আপনা-আপনি সেরে যায় সাত দিনের মধ্যে। তবে মূল ভয়টা হচ্ছে এর পরবর্তী জটিলতা নিয়ে। ডেঙ্গু জ্বর যদি সময়মতো যথাযথভাবে মোকাবিলা করা না যায়, তবে রোগীর স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে এবং দেখা দেয় ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বা রক্তক্ষরণকারী ডেঙ্গু জ্বর।

সাধারনত বর্ষাকাল হল ডেঙ্গু জ্বরের মৌসুম। ডেঙ্গু থেকে বাঁচার প্রধান উপায় হচ্ছে একে প্রতিরোধ করা। সবার সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই জনস্বাস্থ্যসমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তাই মশা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিতে হবে সবাইকে। আক্রান্ত রোগীর জীবন বাঁচাবে সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা।

কী ঘটে?

সাধারণত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কোনো রোগীকে এডিস মশা কামড়ালে ডেঙ্গু ভাইরাস এডিস মশার দেহে প্রবেশ করে। সেই ভাইরাসবাহী এডিস মশা কোনো সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ালে ডেঙ্গু ভাইরাস তার দেহে ঢুকে পড়ে এবং আক্রান্ত হয় ওই ব্যক্তি। কাজেই ডেঙ্গু ছড়ানোর ক্ষেত্রে প্রারম্ভিক আক্রান্ত ব্যক্তির শনাক্তকরণ ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য খুবই জরুরি। যেহেতু এডিস মশা এ রোগের বাহক, তাই আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশের এলাকাজুড়ে বাড়ি বাড়ি মশা মারার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করতে হবে।

উপসর্গঃ
ডেঙ্গুতে তিনটি বিশেষ উপসর্গ আমরা পাই : জ্বর, রেশ বা লালচে দাগ ও রক্তক্ষরণ।

 



জ্বর 
সাধারণত প্রথম দিন থেকেই ভীষণ জ্বর (১০২ ডিঃ ফাঃ) দিয়েই ডেঙ্গু শুরু হয়। ভীষণ শরীর ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা (অনেক ক্ষেত্রেই থাকে); তবে হাঁচি কাশি থাকে না। ষষ্ঠ দিনে জ্বর নেমে যায়। দিন গোনা ঠিক থাকলে সাতদিনের বেশি জ্বর থাকলে সেটাকে ডেঙ্গু না ভাবাই ভালো। স্যাডল ব্যাক ফিভার (প্রথম ২ দিন জ্বর থাকল; ১-২ দিন গ্যাপ দিয়ে আবার জ্বর এলো) এটিই ডেঙ্গুজ্বরের বৈশিষ্ট্য।

র্রেশ বা লালচে দাগঃ

জ্বরের ষষ্ঠ দিনে ডেঙ্গুর টিপিক্যাল রেশ বেরোয়। এর নাম কনভাল্যাসেন্ট কনফ্লুয়েন্ট পেটিকিয়াল রেশ । বিস্তারিত

-->

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

গুড়া কৃমি / সুতা কৃমির আক্রমণঃ

 

 

গুড়া কৃমি বা সুতা ক্রমির (পিন ওয়ার্ম) আক্রমণ বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে খুবই কমন। এন্টেরোবিয়াস ভার্মিকুলারিস নামক ছোট সুতার মত সাদা কৃমি দ্বারা এই রোগ হয়। এই কৃমি পায়ুপথের কাছে ডিম পাড়ে এবং তাতে প্রচন্ড চুলকানি হয়, বিশেষত রাতে। বাচ্চাদের হাত মুখে দেবার স্বভাবের জন্য এই রোগ বেশি হয়। তবে এর জটিলতা কম ও সহজে চিকিৎসা করা যায়।

 

সুতা কৃমির জীবন চক্রঃ

 

 

কৃমিরা পরজীবি অর্থাৎ অন্য জীবের ভেতরে বসবাস করে, তার থেকে খাদ্য গ্রহণ করে বেচে থাকে। এই কৃমির ধারক জীব হল মানুষ। কোন না কোন ভাবে কৃমির ডিম মুখে গিয়ে ইনফেকশন হয়। এটি খাবারের সাথে অথবা বিছানা, কাপড় ইত্যাদি ধরার পর হাতের মাধ্যমে প্রবেশ করে। পরে ক্ষুদ্রান্ত্রে দিয়ে ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়। বড় হলে এই কৃমির রং হয় হলুদাভ সাদা, চিকন সুতার মত, লম্বায় মাত্র ১ সে:মি:। মাত্র ৪ সপ্তাহ পরই মহিলা কৃমি বড় হয়ে পায়ু পথে বাইরে বেরিয়ে আসে এবং পায়ুপথ সংলগ্ন চামড়ায় ডিম পেড়ে মারা যায়। এই ডিমের কারণে প্রচন্ড চুলকানি হয় এবং স্বভাবতই বাচ্চারা চুলকায় ও তাদের নখের ভেতর ডিম ঢুকে থাকে। পরে স্বভাবগত কারনে বাচ্চা যখন  হাত মুখে দেয়, ডিম পেটে প্রবেশ করে এবং একইভাবে নতুন জীবন চক্র শুরু হয়। আর ডিম সুবিধামত পরিবেশে অনেকদিন বাঁচতে পারে।

চিত্রঃ কৃমির ডিম

 

রোগের লক্ষণসমূহঃ

-         মলদ্বারে, আশেপাশে প্রচন্ড চুলকানি বিশেষত রাতে।

-         ক্ষুধামন্দা, অসুস্থ লাগা।

-          à¦¬à¦¿à¦°à¦•à§à¦¤à¦¿, খিটখিটে মেজাজ।

-         কখনও কখনও পূর্ণ বয়স্ক কৃমি পায়খানার সাথে দেখা যায় বা পায় পথের  কাছে ডিম দেখা যায়।

 

চিকিৎসাঃ

মলদ্বারে সকালবেলা  আঠালো টেপ দিয়ে চেপে ধরে পরে পরীক্ষা করলে ডিম পাওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে রোগের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়। নিশ্চিত হলে কৃমিনাশক ঔষধ ২ ডোজ খেতে হবে। প্রথম ডোজ খাবার ১৪ দিন পর ২ য় ডোজ খেতে হবে। পরিবারের সবারই ঔষধ খেতে হবে কেননা কৃমির ডিম বিছানা, কাপড় ইত্যাদিতে অবস্থান করে আবার ইনফেসটেশন হতে পারে।

 

প্রতিরোধে করণীয়ঃ

1.      পরিবারের সকলেরই নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত, নখ ভালভাবে ধোবার অভ্যাস করা। বিশেষ করে খাদ্য গ্রহণ, খাদ্য তৈরী ও টয়লেট ব্যবহারের পর।

2.     মলদ্বার চুলকানোর ¯^fve বন্ধ করা।

3.     নখ ছোট রাখা

4.     নখ কামড়ানোর স্‌ভাব বাদ দেয়া।

5.     প্রতিদিন গোসল করা।

6.     টয়লেট পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখা।

7.     ইনফেকশন হয়ে থাকলে বিছানার চাদর, জামা, প্যান্ট, গরম পানিতে ভালভাবে ধোয়া।

8.     পরিবারের সকলের কৃমিনাশক ঔষধ সেবন ।

 

 

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

জিয়ারডিয়াসিস-গ্যাস্ট্রোএন্টোরাইটিস

 

 

জিয়ারডিয়া ল্যাম্বলিয়া নামক পরজীবি দ্বারা গঠিত গ্যাস্ট্রোএন্টোরাইটিস কে জিয়ারডিয়াসিস বলে। এই রোগে ডায়রিয়া হয়,ওজন কমে যায়, রোগী দূর্বল হয়ে পড়ে,আবার অনেক সময় কোন লক্ষনই প্রকাশ পায় না।দূষীত পানির মাধ্যমে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। সাপ্লাই পানিতে বা পুকুরের পানিতে দূষিত জীবাণুমুক্ত পায়খানা দ্বারা সংক্রমিত হয়ে এই রোগ ছড়ায় যে কোন বয়সেই হতে পারে,তবে শিশুদের এবং মধ্যবয়সে (২০-৪০বছর)এই রোগ বেশি দেখা যায়।

 

লক্ষণসমূহ:

পরজীবি পেটে ঢোকার পর রোগ প্রকাশ হতে ৭-১০ দিন সময় লাগে।এমনকি ৩ সপ্তাহ বা তার অধিক সময়ও লাগতে পারে।লক্ষণসমূহ হল :

-  ডায়রিয়া :ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদী(১৪ দিনের বেশি)ডায়রিয়া

- পেটে মোচড়ানো ব্যাথা

- দূর্বলতা

- ওজন কমা

-  তেল জাতীয় খাদ্য হজম না হওয়ায় মলের সাথে চর্বি বের হওয়া।

 

চিত্রঃ  জিয়ারডিয়াসিস এ অন্ত্রের অবস্থা

 

তবে অনেকের ক্ষেত্রেই জীবাণু পেটে অবস্থান করে,পায়খানার সাথে  ছড়িয়ে পড়ে,কিন্তু কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না।

 

যেভাবে ছড়ায় :

পরিচ্ছন্নতার অভাবেই এই রোগ ছড়ায়। জীবাণুধারী ব্যক্তি পায়খানা করার পর সাবান দিয়ে ভালভাবে হাত না ধূলে হাতের মাধ্যমে ব্যবহার্য দ্রব্যাদিতে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে।পরে সুস্থ্য কোন লোক ঐ দ্রব্য ধরলে তার শরীরে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে।এমনকি বাচ্চার প্যান্ট,ডায়পার,কাঁথা বদলানো ও ধোয়ার সময়ও জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং খাবার বা পানির মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। এছাড়াও জীবাণুযুক্ত  পায়খানা পুকুর, সুইমিংপুল বা ওয়াসার পানিতে মিশে যেয়ে জীবাণু ছড়াতে পারে।

 

 

প্রতিরোধের উপায় :

- অসুস্থ্য ব্যক্তিদের সুস্থ্য হবার ৭ দিনের মধ্যে পুকুর বা সুইমিংপুল ব্যবহার না করা।আর অবশ্যই আগে সাবান দিয়ে গোসল করে পরে নামা।

- সঠিক চিকিৎসা করানো

- যারা স্বাস্থ্যকর্মী বা খাবার তৈরীর  à¦•à¦¾à¦œà§‡ নিয়োজিত,সুস্থ্য হবার আগ পর্যন্ত কাজ না যাওয়া।

- বাচ্চাকে স্কুলে না পাঠানো।

- পানি ফুটিয়ে বিশুদ্ধ করে পান করা।

- অসুস্থ্য ব্যক্তির কাপড়,তোয়ালে আলাদা রাখা।

 

মনে রাখতে হবে :

১) মূলত আস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের জন্যই জিয়ারডিয়াসিস হয় এবং ছড়ায়।

২) অনেকেই জীবাণু বহন করে, পায়খানার মাধ্যমে ছড়ায় কিন্তু নিজের কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না।

৩) ডাক্তারের নিকট থেকে সঠিক চিকিৎসা করানো জরুরী।

 

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

সালমোনেলোসিস -গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস

 

 

সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস হলে তাকে সালমোনেলোসিস বলে।যে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে,তবে বাচ্চাদের ও কিশোর বয়সে হবার ঝুকি বেশী।এই রোগ কার ক্ষেত্রে কতটুকু মারাত্নক হবে তা নির্ভর করে কী পরিমান জীবাণু শরীরে ঢুকেছে,শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা,বয়স ও সাস্থ্যের উপর।

 

লক্ষণসমূহঃ

জীবাণু পেটে যাবার ৬-৭২ ঘন্টার মধ্যে সাধরণত রোগ লক্ষণ প্রকাশ পায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে -

১. পাতলা পায়খানা হয়, পায়খানার সাথে রক্ত বা মিউকাস থাকে।

২. জ্বর হয়।

৩. মাথা ব্যাথা।                    

৪. পেটে মোচরানো ব্যাথা।

৫. বমি বমি ভাব, বমি হওয়া।

৬. পানি শুন্যতার লক্ষন।

৭. কোন কোন ক্ষেত্রে, মারাত্নক অবস্থায় রক্তে ইনফেকশন (সেপসিস) ছড়িয়ে পড়তে পারে ।

 

যেভাবে ছড়ায়ঃ

মূলত এ জীবাণু মুখ দিয়ে প্রবেশ করে। যেমন:

১। কাচা বা আধা সিদ্ধ মুরগির মাংস বা ডিম খেলে।

 

 

 

২। রান্না করা বা সিদ্ধ খাবার কোন ভাবে কাঁচা জীবাণু যুক্ত খাবারের বা ব্যবহার্য্য তৈজসপত্র দ্বারা জীবাণু যুক্ত হবার পর গ্রহন করলে (একে ক্রস কন্টামিনেশন বলে)।

৩। রোগী পায়খানার পর ভালভাবে হাত না ধুলে হাতের জীবাণু দ্বারা খাবার, প্লেট,চামচ,বাটি,ইত্যাদি জীবাণু যুক্ত হয়,পরে সুস্থ্য কেউ তার সংস্পর্শে  এসে খাবারের মাধ্যমে এ জীবাণু মুখ দিয়ে প্রবেশ করে।

৪। পোষা প্রাণী কুকুর বেড়ালের পায়খানায়,শরীরে জীবাণু থাকতে পারে,যা হাত না ধুয়ে খাবার খেলে পেটে চলে গেলে এই রোগ হতে পারে।

 

পায়খানায় জীবাণুর অবস্থানঃ

যদিও কয়েকদিনে রোগী সুস্থ্য হয়ে উঠে,তবে রোগীর পায়খানায় জীবাণু কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত অবস্থান করতে পারে।গবেষনায় দেখা গেছে শতকরা ১ জন পূর্ণবয়ষ্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রে এবং শতকরা ৫ জন শিশুর পায়খানায় ১ বছর পরেও জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে।

চিত্রঃ সালমনেলা ইনফেকশনের ফলে অন্ত্রের অবস্থা

 

প্রতিরোধের উপায়ঃ

সালমোনেলোসিস থেকে বেঁচে থাকার জন্য -

-খাবার খুব ভালভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে,বিশেষত পোল্ট্রিমাংস,ডিম ইত্যাদি

-ভাঙ্গা ডিম খাওয়া যাবে না

-রান্নাঘর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

-কাঁচা খাবার আর রান্না করা খাবার দূরত্বে রাখতে হবে।

-কাঁচা খাবারের জন্য ব্যবহৃত প্লেট, বাটি,চামচ রান্না করা খাবারের সংস্পর্শে নেবার পূর্বে ভালভাবে ধূতে হবে।

-খাবার রান্নার পূর্বে ও খাওয়ার পূর্বে ১৫ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

-বাথরুম টয়লেট ভালভাবে পরিস্কার রাখতে হবে।

-রোগী ও শিশুদের রোগ থাকা অবস্থায় সুস্থ্যদের থেকে যথাসম্ভব দূরত্ব  রাখতে হবে।

 

 

যা মনে রাখা প্রয়োজন:

১। সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা গ্যাস্ট্রো-এন্টেরাইটিস হলে তাকে সালমোনেলোসিস বলে।

২। এই রোগে পাতলা পায়খানা হয়, পায়খানার সাথে রক্ত বা মিউকাস থাকে, জ্বর হয়, মাথা ব্যাথা, পেটে মোচরানো ব্যাথা, বমি বমি ভাব,বমি হওয়া, পানি শুন্যতার ইত্তাদি লক্ষন দেখা দেয়।

৩। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চললে এই রোগ থেকে বেচে থাকা যায়।

 

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস- ক্রিপ্টোস্পোরিডিওসিস

 

         

ক্রিপ্টোস্পোরিডিয়াম নামক পরজীবী দ্বারা খাদ্যনালীর ইনফেকশন হলে তাকে ক্রিপ্টোস্পোরিডিওসিস গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস বলে।সাধারণত এই পরজীবি সরাসরি খাবার বা পানির সাথে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এমনকি অসুস্থ্য বা পরজীবি বহনকারী ব্যক্তি বা প্রাণীর সংস্পর্শে এলেও এই রোগ শরীরে প্রবেশ করতে পারে।শরীরে প্রবেশের ১-১০ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষন প্রকাশ পায়।যে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগের মাত্রা খুব সামান্য হয়,তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের ক্ষেত্রে এই রোগ মারাত্নক আকার ধারন করতে পারে।

লক্ষণ সমূহঃ

সাধারণত যে সব লক্ষণ দেখা যায়:

- পাতলা পায়খানা।

- পেটে ব্যাথা।

- বমি, পেটে গুড় গুড় শব্দ হওয়া।

- জ্বর হওয়া।

        সঠিক চিকিৎসা না হলে এসব লক্ষণ কয়েক সপ্তাহ জুরে থাকতে পারে।

মানুষ ও পশু থেকে রোগ ছড়াতে পারেঃ

ক্রিপ্টোস্পোরিডিয়াস এই জীবাণু মানুষ সহ পোষা বা বন্য প্রাণীর ভেতরে অবস্থান করে এবং মলের সাথে মিশে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে।

= আক্রান্ত ব্যক্তি টয়লেট করার পর ভালভাবে সাবান দিয়ে হাত না ধুলে, রোগ সৃষ্টিকারী পরজীবি খাবার বা পানিতে ছড়াতে পারে।পরে কোন সুস্থ্য ব্যক্তি ঐ খাদ্র গ্রহন করলে সেও আক্রান্ত হয়।

 

 

= আক্রান্ত পোষা প্রাণী ধরলে,বা আক্রান্ত শিশুর কাথা,ডায়পার চেঞ্জ করতে গিয়ে হাতে জীবাণু লেগে যেতে পারে।ঠিকমত হাত না ধুলে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশী।

= দূষিত পানি পান করে,সঠিক ভাবে সিদ্ধ করে দুধ না খেলে বা আক্রান্ত ব্যক্তি সুইমিংপুলে গোসল করলে কোন সুস্থ্য ব্যক্তি ঐ সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে পানি খেয়ে ফেললেও আক্রান্ত হতে পারে।তাই দেখা যায় ডে-কেয়ার সেন্টারের বাচ্চাদের,ভ্রমনকারীদের এবং পোষাপ্রাণীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরা তুলনামূলক ভাবে বেশী আক্রান্ত হয়।

 

প্রতিরোধের উপায়ঃ

= শিশু আক্রান্ত হলে তাকে স্কুলে বা ডে-কেয়ার সেন্টারে সুস্থ্য না হওয়া পর্যন্ত পাঠানো যাবে না।

= যে কোন কিছু খাবার পূর্বে,টয়লেট করার পর,বাচ্চার কাপড় ধোয়া বা পরিবর্তন করার পর,পোষা প্রাণী নিয়ে খেলাধূলা করার পর অবশ্যই সাবান দিয়ে ভাল করে হাত ধুতে হবে।

= হাত মোছার জন্য প্রত্যেকের আলাদা তোয়ালে ব্যবহার করা উচিত।

= যারা চাইল্ড কেয়ার,খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশন করার কাজ করেন এবং যারা স্বাস্থ্যকর্মী তারা সুস্থ্য না হওয়া পর্যন্ত কাজে যোগদান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

= বাথরুম,রান্নাঘর ইত্যাদি প্রতিদিন ভালভাবে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।

= পানি অবশ্যই ফুটিয়ে বা ফিল্টার করে পান করুন।

 

চিকিৎসাঃ

পায়খানা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায়। চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত স্যালাইন ও পানি খেতে হবে,প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ খেতে হবে।

 

যা মনে রাখা প্রয়োজনঃ

১। ক্রিপ্টোস্পোরিডিয়াস এই জীবাণু মানুষ সহ পোষা বা বন্য প্রাণীর ভেতরে অবস্থান করে এবং মলের সাথে মিশে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে।

২। পাতলা পায়খানা, পেটে ব্যাথা, বমি, পেটে গুড় গুড় শব্দ হওয়া, জ্বর - এসব লক্ষণ কয়েক সপ্তাহ জুরে থাকতে পারে।

৩। যে কোন কিছু খাবার পূর্বে, টয়লেট করার পর, বাচ্চার কাপড় ধোয়া বা পরিবর্তন করার পর, পোষা প্রাণী নিয়ে খেলাধূলা করার পর অবশ্যই সাবান দিয়ে ভাল করে হাত ধুতে হবে।

 

 

 

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

অগ্নাশয় / প্যানক্রিয়াস

 

অগ্নাশয় বা প্যানক্রিয়া মানবদেহের অতি গুরুত্বপূর্ণ ১টি অঙ্গ। এটি আমাদের পেটের ভেতরে পাকস্থলির পেছনে অবস্থিত। এর আকার অনেকটা ব্যাঙ্গাচির মত। এর এক প্রান্ত চ্যাপ্টা অপর প্রান্ত সরু এবং এটি চ্যাপ্টা। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ ইঞ্চি। এটি আমাদের খাদ্য হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। অন্যদিকে ইনসুলিনের মত অতি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন তৈরী করে।

 

বহি:ক্ষরা গ্রন্থি হিসেবে অগ্নাশয়ঃ

অগ্নাশয় খাদ্য হজম পরিপাকে সাহায্য করে, বিশেষত আমিষ ও চর্বি জাতীয় খাদ্য। অগ্নাশয় থেকে একধরনের রস নি:সৃত হয় যা ডিউডেনামে পৌছে সক্রীয় হয় এবং প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাদ্যকে ভাঙ্গতে সাহায্য করে। এছাড়াও এমাইলেজ এনজাইমের মাধ্যমে শর্করা জাতীয় খাদ্য হজমে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি সোডিয়াম  বাই কার্বোনেট নামক ক্ষার পদার্থ নি:সরন করে যা খাদ্যে পাকস্থলির এসিডকে নি:স্কৃয় করে ও হজমে সাহায্য করে।

 

অন্তক্ষরা গ্রন্থি হিসেবে অগ্নাশয়ঃ

 

অগ্নাশয় আমাদের শরীরের অতি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন ইনসুলিন তৈরী করে যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে। অগ্নাশয়ে কিছু কোষ গুচ্ছাকারে থাকে যাদেরকে বলা হয় আইলেটস অব ল্যাংকারহ্যান্স। যারা মূলত এই হরমোন তৈরী করে। এছাড়াও এখান থেকে গ্লুকাগন নামক অপর ১টি হরমোন তৈরী হয় যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে ভূমিকা রাখে।

 

প্যানক্রিয়াসের রোগঃ

প্যানক্রিয়াস বা অগ্নাশয়ে যে সব রোগ হতে পারে তা হলঃ

-         একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস।

-         ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস।

-         প্যানক্রিয়াটিক কান্সার।

-         ডায়বেটিস।

 

প্যানক্রিয়াসের রোগর লক্ষণঃ

অগ্নাশয়ে রোগ হলে রোগের ধরনের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশিত হয়। যেমনঃ

-         উপর পেটে প্রচন্ড ব্যাথা।

-         ক্ষুধামন্দা।

-         জন্ডিস (চোক, চামড়া হলুদ হওয়া)।

-         পিঠে ব্যাথা।

-         ঢেকুর উঠা।

-         বমি বমি ভাব।

-         হজমে সমস্যা।

-         প্রচন্ড দুর্গন্ধযুক্ত বায়ু নি:সরণ।

-         চর্বি জাতীয় পিচ্ছিল পায়খানা ইত্যাদি।

 

ক)  একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিসঃ

একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস হল অগ্নাশয়ের প্রদাহ জনিত রোগ। এটি অতি মারাত্মক রোগ এবং খুব দ্রুত চিকিৎসা জরুরী। কোন কারণে প্রদাহের ফলে এর ভেতরের এনজাইমগুলি বের হতে না পারলে তা অগ্নাশয়ের জ্বালা যন্ত্রনার সৃষ্টি করে। এর ট্রিপসিন নামক এনজাইম যা খাদ্যের আমিষকে হজম করতে সাহায্য করে, তা তখন অগ্নাশয়ের নিজস্ব প্রোটিনকেই হজম করতে শুরু করে। এবং অনেক খ্যেত্রে পেটের ভেতরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

এর প্রধান ২টি কারণ হলোঃ

     ক) অতিরিক্ত মদ্যপান।

     খ) পিত্তথলির পাথর এসে পিত্তথলী বন্ধ করে দেয়া।

এছাড়াও আরও কিছু কারণে প্রদাহ হতে পার। যেমনঃ

-         কিছু ঔষধের প্রভাব।

-         মাম্‌স।

-         অগ্নাশয়ে ব্যাথা বা আঘাত পেলে।

-         অগ্নাশয়ের ক্যান্সার ইত্যাদি।

 

খ)  ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদী অগ্নাশয়ের প্রদাহঃ

বার বার যদি অগ্নাশয়ের প্রদাহ হয় তখন তাকে ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস বলে। মূলত অতিরিক্ত মদ্যপায়ীদের এই সমস্যা বেশী হয়। এমনকি মদ পান ছেড়ে দিলেও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে অগ্নাশয়ের বার বার প্রদাহের ফলে কিছু অংশ নষ্ট হয়ে যায়। এবং এর কার্যক্ষমতাও হ্রাস পায়। তখন রোগীর হজমে সমস্যা হয়, প্রচন্ড দুর্গন্ধযুক্ত পিচ্ছিল পায়খানা হয়, চর্বি জাতীয় খাদ্য হজম হয় না ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।

 

গ)  অগ্নাশয়ের ক্যান্সারঃ

অগ্নাশয়ের ক্যান্সার মূলত এর নালীর কোষ থেকে শুরু হয় পরে সমস্ত অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এর পার্শ্ববর্তি রক্তনালী, লসিকা গ্রন্থি ও আক্রান্ত হয়ে থাকে, সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে ক্যান্সার কোষ পেটের সকল অংশে ছড়িয়ে পরে এমনকি রক্ত বা লসিকার মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এর প্রকৃত কারণ অজানা, তবে রিস্ক ফ্যাক্টর সমূহ হলঃ

-         ধুমপান।

-         ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস।

-         বার্ধক্য।

ঘ)  ডায়বেটিসঃ

খুব পরিচিত একটি রোগ। অনেক সময় অগ্নাশয়ের আইলেস অব ল্যাংগারহ্যান্স কোষ ঠিকমত ইনসুলিন তৈরী করতে পারে না, ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। এ অবস্থাকে ডায়বেটিস বা বহুমুত্র রোগ বলে। এর কারণ জানা যায় নি তবে কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিসের ফলে সমস্ত শরীরে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দেয়, যেমনঃ

-         কিডনী নষ্ট হওয়া।

-         চোখ নষ্ট হওয়া।

-         স্নায়ু।

-         নষ্ট হওয়া।

-         স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া।

-         হার্ট এটাকের ঝুকি বেড়ে যাওয়া।

 

অগ্নাশয়ের রোগ নির্ণয়ঃ

একেক রোগের জন্য নির্ণয় পদ্ধতি ও পরীক্ষা একেক রকম। যেমনঃ

-         সাধারণ পরীক্ষাঃ শারীরিক পরীক্ষা, রক্ত পরীক্ষা, X- রে।

-         আল্ট্রাসনোগ্রাফী।

-        

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

প্যানক্রিয়াটাইটিস

অগ্নাশয়ের প্রদাহজনিত রোগ হল প্যানক্রিয়াটাইটিস। এটি ২ ধরনের হতে পারে।

ক. একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস ।

খ. ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস ।

অগ্নাশয় বা প্যানক্রিয়া মানবদেহের অতি গুরুত্বপূর্ণ ১টি অঙ্গ। এটি আমাদের পেটের ভেতরে পাকস্থলির পেছনে অবস্থিত। এর আকার অনেকটা ব্যাঙ্গাচির মত আর এক প্রান্ত চ্যাপ্টা অপর প্রান্ত সরু এবং এটি চ্যাপ্টা। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ ইঞ্চি। এটি আমাদের খাদ্য হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। অন্যদিকে ইনসুলিনের মত অতি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন তৈরী করে।অগ্নাশয় খাদ্য হজম পরিপাকে সাহায্য করে, বিশেষত আমিষ ও চর্বি জাতীয় খাদ্য। অগ্নাশয় থেকে একধরনের রস নি:সৃত হয় যা ডিউডেনামে পৌছে সক্রীয় হয় এবং প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাদ্যকে ভাঙ্গতে সাহায্য করে। এছাড়াও এমাইলেজ এনজাইমের মাধ্যমে শর্করা জাতীয় খাদ্য হজমে সাহায্য করে। অগ্নাশয় আমাদের শরীরের অতি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন ইনসুলিন তৈরী করে যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে।  

 

একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিসঃ

একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস হল অগ্নাশয়ের প্রদাহ জনিত রোগ। এটি অতি মারাত্মক রোগ এবং খুব দ্রুত চিকিৎসা জরুরী। কোন কারণে প্রদাহের ফলে এর ভেতরের এনজাইমগুলি বের হতে না পারলে তা অগ্নাশয়ের জ্বালা যন্ত্রনার সৃষ্টি করে। এর ট্রিপসিন নামক এনজাইম যা খাদ্যের আমিষকে হজম করতে সাহায্য করে, তা তখন অগ্নাশয়ের নিজস্ব প্রোটিনকেই হজম করতে শুরু করে। এবং অনেক খ্যেত্রে পেটের ভেতরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এই রোগে হঠাৎ তীব্র ব্যাথা, মূলত উপরের পেটে হবে এবং রোগী ব্যাথায় ছটফট করে। এই রোগ থেকে শ্বাসকষ্ট, কিডনী বা হার্ট ফেল হতে পারে।

 

রোগের কারণঃ

একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিসে ভোগা রোগীর শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশী ব্যক্তি অতিরিক্ত মদ্যপানে আসক্ত। দ্বিতিয়ত পিত্তথলীর পাথর অগ্নাশয়ের নালী বন্ধ করতে পারে। এছাড়া-

-         আঘাত বা ঐ স্থানে অপারেশন।

-         জন্মগত অগ্নাশয়ের সমস্যা।

-         জন্মগত হজমের ত্রুটি।

-         ভাইরাস (বিশেষত মামস ভাইরাস)।

-         কিছু ঔষধ (যেমন ডায়ইউরেটিকস জাতীয়) প্রদাহ করতে পারে।

 

সাধারণ লক্ষণ সমূহ হলঃ

-         পেটে প্রচন্ড ব্যাথা, ব্যাথা অনেক সময় পিঠেও অনুভুত হয়।

-         পেট ফাপা, জ্বর, প্রচন্ড ঘাম, বমি ভাব, বমি।

-         রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।

-         ব্যাথায় উপুড় হয়ে (সেজদার মত) পড়ে থাকে।

 

এর লক্ষণ সমূহ অনেক সময় অন্যান্য কিছু রোগের লক্ষণের মত মনে হয়। যেমনঃ হার্ট এটাক, পিত্তথলীর পাথর, পেটের নালী বা পাকস্থলী ফুটা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। প্রায় সব ক্ষেত্রেই রোগীকে দ্রুত ইমর্জেন্সী বিভাগের মাধ্যমে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।

 

ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিসঃ

বার বার যদি অগ্নাশয়ের প্রদাহ হয় তখন তাকে ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস বলে। মূলত অতিরিক্ত মদ্যপায়ীদের এই সমস্যা বেশী হয়। এমনকি মদ পান ছেড়ে দিলেও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে অগ্নাশয়ের বার বার প্রদাহের ফলে কিছু অংশ নষ্ট হয়ে যায়। এবং এর কার্যক্ষমতাও হ্রাস পায়। তখন রোগীর হজমে সমস্যা হয়, প্রচন্ড দুর্গন্ধযুক্ত পিচ্ছিল পায়খানা হয়, চর্বি জাতীয় খাদ্য হজম হয় না ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।

অগ্নাশয়ের ক্ষত বা নষ্ট হয়ে যাওয়া অংশ আর ভাল হয় না। অন্যান্য যে সব সমস্যা ও লক্ষণ দেখা দেয় তা হলঃ ধীরে ধীরে ওজন কমা, ডায়বেটিস এমনকি অগ্নাশয়ের ক্যান্সার।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

জরুরী বিধায় খুব দ্রুত রোগ নির্ণয় করতে হয়। মূলত রোগের ইতিহাস শারীরিক পরীক্ষা ও নিচের কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হয়। যেমনঃ

-         রক্তের সাধারণ পরীক্ষা, সিরাম এমাইলেজ।

-         আল্ট্রাসনোগ্রাফী।

-         এন্ডোসকপি।

-         সিটিস্ক্যান (পেটের)।

-         পেটের এম. আর. আই.

-         ই. আর. সি. পি.

 

চিকিৎসাঃ

রোগের ধরণ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হয়।

ক) একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিসঃ

-         অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করতে হয়।

-         মারাত্মক পর্যায়ে আই. সি. ইউ তে নেয়া লাগতে পারে।

-         মুখে কোন খাবার পানি না দেয়া।

-         শিরা পথে স্যালাইন দেয়া।

-         শক্তিশালী ব্যাথানাশক ঔষধ শিরা পথে দিতে হবে (প্রয়োজনে প্যাথিডিন ব্যবহার করতে হবে)। এতে রোগীর ব্যাথা কমলে রোগী সহজে শ্বাস নিতে পারবে, ফলে শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়া হবার ঝুঁকি কমে যাবে।

-         এন্ডোস্কপিঃ রোগ নির্ণয়ের সাথে সাথে প্রয়োজনে নালী থেকে পাথরও অপসারন করা যেতে পারে।

-         অপারেশনঃ  কখনও কখনও পিত্তথলি ও পাথর অপসারনের জন্য অপারেশন করতে হয়। কখনও নষ্ট অংশ সরানোর জন্য অপারেশন করতে হয়।

-         জীনের মাত্রা পরিবর্তনঃ ধুমপান, মদ্যপান পরিহার করা।

 

খ) ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিসঃ

-         চর্বি জাতীয় খাদ্য কম খাওয়া।

-         প্যানক্রিয়াটিক এনজাইম সমৃদ্ধ ঔষধ গ্রহণ।

-         ধুমপান, মদ্যপান পরিহার করা।

-         ডায়বেটিস হলে ইনসুলিন নেয়া।

-         ব্যাথা থাকলে ব্যাথা নাশক ঔষধ।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

1.      প্যানক্রিয়াটাইটিস হল অগ্নাশয়ের প্রদাহজনিত রোগ।

2.     অতিরিক্ত মদ্যপান, পিত্তথলীর পাথর দিয়ে অগ্নাশয়ের নালী বন্ধ হলে বা আঘাতের কারনে প্যানক্রিয়াটাইটিস হয়ে থাকে।

বিস্তারিত

-->

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

রেক্টাল প্রোলাপস

 

 

রেক্টাম বা মলাশয় হল পায়খানা বা মল কিছু সময়ের জন্য জমা রাখার স্থান। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ সে.মি বা ৮ ইঞ্চি। এটি আমাদের খাদ্যনালীর একেবারে শেষের দিকের অংশ। এর আবরণী কলা এক ধরনের পিচ্ছিল পদার্থ নিঃসরন করে যা মলকে পিচ্ছিল করে মলদ্বার দিয়ে বের করে দেয়। যদি মলাশয় পায়ু পথ দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে তখন তাকে রেক্টাল প্রোলাপস বলে। মহিলাদের এই সমস্যা পুরুষদের তুলনায় প্রায় ৬ গুণ বেশি। কখনও কখনও মলাশয় মহিলাদের যোনী পথেও বের হতে পারে। আবার ছোট বাচ্চাদেরও এই রোগ হতে পারে। বিশেষ করে ৩ বছরের নিচে এর ঝুকি বেশি। তবে সাধারণত শিশুদের বেলায় বড় হলে এনিতেই ঠিক হয়ে যায়। প্রাথমিক অবস্থায় পায়খানা করার সময় মলাশয়ের কিছু অংশ বেরিয়ে আসে যা আপনা আপনি ভেতরে ঢুকে যায়। এর পরবর্তী পর্যায়ে হাত দিয়ে চেপে ভেতরে ঢোকানো হয়। কিন্তু মারাত্মক হলে অপারেশন করার প্রয়োজন হয়।

 

লক্ষণসমূহঃ 

রোগের মাত্রা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশিত হয়। যেমন-

-         তলপেটে ভেতরের দিকে ব্যাথা ও অস্বস্তিবোধ হওয়া।

-         মলদ্বার দিয়ে রক্ত ও মিউকাস বের হওয়া।

-         পায়খানা করার পরও মনে হয় ঠিকমত শেষ হয়নি।

-         মলদ্বার দিয়ে মাংস কিছু বের হয়ে আসা।

-         পায়খানা করা পরও প্রচুর করল আঠালো জাতীয় মল বের হওয়া।

-         পায়খানার বেগ হলে আটকে রাখতে কষ্ট হওয়া।

প্রোলাপসের প্রকারভেদঃ মাত্রার উপর ভিত্তি করে কয়েক ধরনের হতে পারে। যেমন-

১। ইন্টারনাল প্রোলাপসঃ

নির্দিষ্ট স্থান থেকে রেক্টাল নেমে যাওয়া তবে মলদ্বার দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে না। এই প্রাথমিক পার্যায়কে ইন্টারনাল প্রলাপস বলে।একে ইনকপ্লিট প্রোলাপস্‌ও বলা হয়।

২। মিউকোসাল প্রোলাপসঃ

মলদ্বারের আভ্যন্তরীন আবরণী কলা শুধু বাইরে বেরিয়ে আসে।

৩।এক্সটারনাল প্রোলাপসঃ

মারাত্মক পর্যায়। পুরু মলাশয় মলদ্বার দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। একে কমপ্লিট প্রোলাপস বা ফুল থিকনেস প্রোলাপস ও বলা হয়।

 

কারণঃ  নির্দিষ্ট কোন কারণ নেই বরং বেশ কিছু কারণে হতে পারে। যেমনঃ

-         দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্য - পায়খানা করার সময় জোরে চাপ দেয়া।

-         পেলভিক ফ্লের মাসল দূর্বল হওয়া - মলদ্বারের স্ফিংটার দূর্বল হওয়া।

-         বয়স বেশি হবার কারণে (সম্ভবত মাসল পাওয়ার কমে যাবার কারণে)

-         এমন কোন রোগ যার ফলে পেটের ভেতরে সব সময় চাপ বেশি থাকে যেমনঃ-প্রোস্টেট বড় হলে, দীর্ঘমেয়াদী কাশি,COPD (ব্রংকাইটিস, ব্রনকিয়েকটেসিস) ইত্যাদি।

-         মলাশয়কে নির্দিষ্ট স্থানে ধরে রাখার লিগামেন্ট দূর্বল হলে।

-         জন্মগত খাদ্যনালীর সমস্যা। যেমন- কনজেনিটাল মেগাকোলন, নিউরোনাল ইন্টেসটাইনাল ডিসপ্লাসিয়া।

-         কোমরের পেছনে ব্যাথা পেলে।

-         কোমরের মেরুদন্ডের ডিস্ক এর সমস্যা থাকলে।

 

সম্ভাব্য জটিলতাঃ

রেক্টাল প্রোলাপস হলে যে সব জটিলতা দেখা দিতে পারে তা হলঃ

-         রেক্টামে ক্ষত হতে পারে, ঘা হয়ে রক্তপাত হতে পারে।

-         ইনকারসানেশন (মলাশয়কে হাত দিয়ে ভেতরে ঢোকানো যায় না।

-         স্ট্রাংগুলেশন অফ রেক্টাম (রক্ত চলাচল বন্ধ হওয়া) এবং

-         স্ট্রাংগুলেশন হয়ে বেশি সময় থাকলে ঐ অংশটি পচে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

মূলত ডাক্তার শারীরিক পরীক্ষা করেই  রোগ নির্ণয় করতে পারেন। জোরে চাপ দিলে যদি বের হয়ে আসে তা ডাক্তার নিজে পরীক্ষা করে দেখলে রোগ নির্ণয় করতে পারবেন। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে অর্থাৎ ইন্টারনাল প্রোলাপস হলে বিশেষ ধরনের এক্স-রে আল্ট্রাসনোগ্রাফী এবং ঐ স্থানের মাংশপেশীর দৃঢ়তা (এনোরেক্টাল মেনোমেট্রি) পরীক্ষা করতে পারেন। যদি রক্ত বের হয়, সে ক্ষেত্রে অন্যান্য রোগ আছে কিনা, পলিপ বা ক্যান্সার আছে কিনা তা নিশ্চিত হবার জন্য আরও কিছু পরীক্ষা করতে পারেন। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই রোগির সাথে প্রায় ১১% ক্ষেত্রে  সিসটিক ফাইব্রোসিস নামক রোগ থাকার সম্ভাবনা থাকে, সেজন্যও কিছু পরীক্ষা করার প্রয়োজন হতে পারে।

 

চিকিৎসাঃ

রোগীর বয়স ও রোগের মাত্রা অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়। যেমন-

১। খাদ্য ও লাইফস্টাইলের পরিবর্তনঃ  কোষ্টকাঠিন্য দুর করার জন্য অধিক আঁশযুক্ত খাদ্য গ্রহণ। যেমন- ফল, সব্জি ইত্যাদি বেশি করে খাওয়া, পানি প্রচুর খাওয়া ও ব্যায়াম করা। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এতেই বেশিরভাগ রোগী ভাল হয়ে যায়।

২। মিউকাস প্রোলাপসঃ সার্জিক্যাল রাবার ব্যান্ড দিয়ে মিউকাস অংশকে সঠিক স্থানে প্রতিস্থাপন করে আটকে দেয়া হয়।

৩। অপারেশনঃ পেট কেটে বা মলদ্বার দিয়ে ঢুকে সঠিক স্থানে আটকে দেয়া হয়। অনেক সময় স্যাকরাম নামক হাড়ের সাথে আটকে দেয়া হয়। পেট কেটে অপারেশনে ভাল ফল পাওয়া যায়, তবে বেশি বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে মলদ্বার দিয়ে করলে পরবর্তি জটিলতা কম হয় এবং দ্রুত সুস্থ হবার সম্ভাবনা বেশি।

 

যা মনে রাখা প্রয়োজনঃ  

1.      দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্য, পেলভিক ফ্লোরের মাসল দূর্বল হওয়া, বয়স বেশি হবার কারণে, প্রোস্টেট বড় হলে, COPD, জন্মগত খাদ্যসালীর সমস্যা সহ বেশ কিছু কারণে রেক্টাল প্রোলাপস হতে পারে।

2.     খাদ্যাভাসের পরিবর্তনঃ ফল, সব্জি ইত্যাদি বেশি করে খাওয়া, পানি প্রচুর খাওয়া ও ব্যায়াম করার মাধ্যমে বেশির ভাগ রোগ ভাল হয়।

3.     রেক্টাল প্রোলাপস হলে রেক্টামে ক্ষত,ঘা হয়ে রক্তপাত, ইনকারসানেশন, স্ট্রাংগুলেশন অফ রেক্টাম ইত্তাদি জটিলতা দেখা দিতে পারে।

 

 

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

শর্টবাওল সিনড্রোম

 

খাদ্যনালীর (ক্ষুদ্রান্ত) সমস্যার কারণে যখন ব্যক্তি সঠিকভাবে খাবার হজম করতে পারে না-তাকে শর্টবাওল সিনড্রোম বলে। কোন কোন রোগের কারণে অপারেশন করে খাদ্যনালীর অনেকটা অংশ কেটে ফেললে এমন হজমের সমস্যা হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে জন্মগত সমস্যা ও নেক্রোটাইজিং এন্টেরোকোলাইটিস বা বড়দের ক্ষেত্রে ক্রনস ডিজিজ ও আঘাতজনিত কারণেই শর্ট বাওল সিনড্রোম হতে বেশি দেখা যয়।

খাদ্য হজমে সমস্যা:

খাদ্য চিবানো ও গলায় গিলার পর পাকস্থলিতে ছোট ছোট খন্ডে ভাগ হয় ও হজমকারী রসের সাথে মিশে ও ধীরে ধীরে হজমের জন্য ক্ষুদ্রান্তে প্রবেশ করে। ক্ষুদ্রান্ত্রের হজমের জন্য লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্রাকৃতির মত অভিক্ষেপ থাকে যাকে ভিলাস বলে। এর নিচ দিয়ে রক্তনালীর ভ্যাল বিস্তৃত, যাতে হজমকৃত খাদ্য রক্তে মিশে যেতে পারে। দৈর্ঘের স্বল্পতা , গঠনগত ক্রটি বা রোগজনিত প্রভাবে ক্ষুদ্রান্ত্রের হজমের ব্যাঘ্যাত ঘটলে ঐ অবস্থাকে শর্ট বাওল সিনড্রোম বলে।

লক্ষনসমূহ:

§        পেটে ব্যাথা

§        পাতলা পায়খানা

§        চরম দূর্বলতা

§        জ্ঞান হ্রাস

§        দূর্গন্ধযুক্ত পায়খানা

 

ফলাফল:

হজমের সমস্যার কারণে রোগীর অনেকগুলি প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদানের ঘাটতি দেখা দেয়। যেমন: ক্যালশিয়াম ফলেট, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, জিংক, ভিটামিন বি-১২ এর ফলে রোগীর অপুষ্টি হয় ও নিচের লক্ষণ দেখা দেয়।

§        রক্তশূন্যতা

§        অবসাদ

§        পানি শূন্যতা

§        শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া

§        চামড়ায় দাগ পড়া

§        ইনফেকশন

§        হাড়ের ক্ষয় ভঙ্গুরতা

 

কারণ:

১। ক্ষুদ্রান্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা না থাকা।

২। গঠনগত, জন্মগত ক্ষুদ্রান্ত্রের ত্রুটি।

৩। ক্রনিস ডিজিজ (এটি ক্ষুদ্রান্ত্রের পুরো দেয়াল জুড়ে প্রদাহ জনিত রোগ যা যে কোন অংশে দেখ দিতে পারে। মুখ থেকে পায়ুপথ পর্যন্ত যে কোন স্থানে হতে পারে, কারণ অজানা।

এর ফলে বাধাগ্রস্ত nq

৪। নেকরোটাইজিং এন্টেরোকোলাইটিস: সাধারণত নবজাতক কম ওজনের বাচ্চাদের এই রোগ হয়। ক্ষুদ্রান্ত্রের কোন অংশে রক্ত প্রবাহ কমে যাবার ফলে ঐ অংশ মরে যায়। পরবর্তিতে অপারেশন করে ঐ অংশ ফেলে দেত হয়। পুরোপুরি মেডিকেল চিকিৎসার পরও শতকরা ৩০ ভাগ শিশু মারা যায়।

 

ক্ষুদ্রান্ত্রের বিশেষ ক্ষমতা:
ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রায় অর্ধেক অকেজো বা  অপসারণ করা হলেও বাকি অর্ধেক দিয়েই শরীর তার কাজ করে নিতে পারে
। তাই প্রায় অর্ধেক নষ্ট হলেও রোগীর তেমন কোন সমস্যা দেখা নাও দিতে পারে, অপুষ্টি দেখা দেয় না। সুস্থ অংশের ভিলাইগুলি প্রসারিত হয়, ফুলে উঠে হজম বৃদ্ধি করে এবং খাদ্যের চলাচল গতি ধীর হয় ফলে বেশি সময় ধরে হজম হবার সময় পাওয়া যায়। ক্ষদ্রান্ত্রের এই বিশেষ ক্ষমতার কারণ  আবিষ্কার করা যায় নি, তবে গবেষনায় দেখা গেছে যে, গ্লুটামিন নামক এমাইনো এসিড ক্ষদ্রান্ত্রের পূণ: বৃদ্ধি তরান্বিতকরে।

 

রোগ নির্ণয়:

ক্ষদ্রান্ত্রের ১টি বড় অংশ নষ্ট হলে অপারেশন করে ফেলে দিলে রোগীর পাতলা পায়খানা হয, ওজন হ্রাস পায়। রাগ নির্ণয়ের জন্য তাই রোগের ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি নিচের পরীক্ষাগুলো করা হয়।

§        রক্তের স্বাভাবিক ও এনজাইম পরীক্ষা

§        পায়খানা পরীক্ষা

§        এক্স-রে

§        ক্ষুদ্রান্ত্রের বায়োপসি

 

চিকিৎসা:

অলপ দিনের চিকিৎসায় এই রোগ ভাল হয় না, দীর্ঘদিন চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। আজীবন চিকিৎসা করতে হয়। উদ্দেশ্য হল শরীরের পুষ্টি বজায় রাখা ও বৃদ্ধি স্বাভাবিক রাখা।

এজন্য যে যে ব্যবস্থা নিতে হবে তা nj

§        বিশেষ খাদ্য ও পথ্য

§        উচ্চ ক্যালোরীযুক্ত ও পুষ্টিমাণ সমৃদ্ধ খাদ্য যাতে চর্বি কম ও আশ থাকবে।

§        ভিটামিন ও মিনারেল অতিরিক্তভাবে গ্রহণ করতে হবে।

§        ক্ষুদ্রান্ত্রের সংকোচন প্রসারণ বিলম্বিত করার জন্য ঔষধ।

§        বাইল সল্ট অপারেশনের জন্য ঔষধ।

§        ক্ষুদ্রান্ত্রের এসিড নিঃসরণ কমাবার ঔষধ।

§        কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে পুষ্টিযুক্ত পানীয় শিরা পথে প্রবেশ করানো হয়।

§        ক্ষুদ্রান্ত্র প্রতিস্থাপন করতে হতে পারে।

 

ক্ষুদ্রান্ত প্রতিস্থাপন:

অন্য ব্যক্তির শরীরের ক্ষদ্রান্ত্রের অংশ বিশেষ কেটে রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। তবে এ ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রান্ত্রের লসিকা গ্রন্থি যাতে সমস্যা না করে সে জন্য শক্তিশালী ইমিউনো সাপ্রিসিভ ঔষধ দেয়া হয়।

 

যা যা মনে রাখতে n‡e

১। রোগ বা অপারেশনের মাধ্যমে ক্ষদ্রান্ত্রের কার্যকারিতা হ্রাস পেয়ে হজমের ব্যাঘাত ঘটলে তাকে শর্ট বাওল সিনড্রোম বলে।

২। ক্রনস ডিজিজ বড়দের ক্ষেত্রে, আর নবজাতকের ক্ষেত্রে এন্টেরো কোলাইটিস। এই দুই কারণে বাওল সিনড্রোম হতে বেশি দেখা যায়।

৩। চিকিৎসায় রোগীর সুস্থ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান সরবরাহ ও তার হজম নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়।

 

 

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

ট্রাভেলার্স ডায়রিয়া

(ভ্রমণজনিত ডায়রিয়া)

 

আধুনিক বিশ্বে প্রতিনিয়ত মানুষ এক স্থান হতে অন্য স্থানে, এক দেশ থেকে অন্য  দেশে ভ্রমন করে থাকে। ভ্রমনকালীন সময়ে ভ্রমণের পর বাড়ি ফিরে অনেকেই ডায়রিয়া আক্রান্ত হন। ঘন ঘন  পাতলা পায়খানা হয়। যদিও ভ্রমনকারীর জন্য এটি খুবই অসুবিধাজনক তবে এ রোগটি নিজে থেকেই কয়েকদিনের মধ্যে ভাল হয়ে যায়।

          মূলত ভ্রমনকালীন সময়ে খাদ্য বা পানীয়র সাথে জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার ফলে এ রকম হয়ে থাকে। খাদ্য বা পানীয় জীবাণু ঐ স্থানের লোকদের ক্ষেত্রে দেখা যায় কোন সমস্যা করে না - কেননা তারা ঐ জীবাণুতে অভ্যস্ত। অন্যদিকে ঐ এলাকায় কোন আগন্তুকের ক্ষেত্রে ঐ জীবাণু ডায়রিয়া করে। বিশেষ করে যখন কোন উন্নত দেশ থেকে কোন ভ্রমনকারী বা অধিবাসী অনুন্নত বা উন্নয়নশীল  দেশে আসেন যেখানে পরিস্কার, পরিচ্ছন্নতা ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা খুব উন্নত না, তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা আরও বেশি হতে দেখা যায়। আবার বড়দের তুলনায় কিশোর বা শিশুদের এ সমস্যা আরও বেশি হয়। তাদের কৌতুহল, এডভেঞ্চার ও যত্রতত্র যা ইচ্ছা খাওয়ার অভ্যাসের কারণে।

 

কারন সমূহ :

নানাবিধ জীবাণুর কারণে হতে পারে। যেমন-

ক. ব্যাকটেরিয়া : ই-কোলাই (মূলত এন্টেরোপক্সিযেনিক ই কোলাই) এ ছাড়াও ক্যাসপাইলোব্যাকটার জেজুনী, সালমোনেলা, সিগেলা ইত্যাদি।

খ. পরজীবি : জিয়ারডিয়া ইন্টেসটাইনালিস, এন্টাসিবা হিস্টোলাইটিকা এবং ক্রিপ্টোস্পোরিডিয়াম। তবে এক্ষেত্রে পায়খানার সাথে রক্ত  থাকতে পারে এবং বেশ কিছু দিন স্থায়ী হতে পারে।

গ. ভাইরাস : ধারণা করা হয় যে, ট্রাভেলার্স ডায়রিয়ার ৩ ভাগের একভাগই হয় ভাইরাসজনিত কারণে। এদের মধ্যে নরওয়াক ভাইরাস ও রোটা ভাইরাস অন্যতম।

ঘ. অজানা কারণ : শতকরা ২০-৪০ ভাগ ক্ষেত্রেই নিদিষ্ট কারণ বা জীবাণু পাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে ধারণা করা হয়, হঠাৎ নতুন পরিবেশে, নতুন নতুন জীবাণুর সাথে রিএকশনের ফলে ডায়রিয়া হতে পারে।

লক্ষনঃ এই রোগে

·        পেটে মোচড়ানো ব্যাথা,

·        পাতলা পানিত মত পায়খানা,

·        পায়খানার প্রচন্ড বেগ,

·        হালকা জ্বর,

·        গা ব্যাথা থাকতে পারে।

§        অনেক সময় কলেরার মত লক্ষন দেখা যায়।

§        হঠাত করে হয়, খুব তীব্র হয়।

 

যে সব খাবারে ডায়রিয়া হবার ঝুঁকি বেশি :

মূলত জীবাণুযুক্ত খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ ট্রাভেলার্স ডায়রিয়ার প্রধান কারণ। তাই ভ্রমনকারীদের যে সব খাবার থেকে সাবধান থাকতে হবে তা হলো-

§        কাঁচা ও আবরনযুক্ত ফল ও সব্জি

§        কাঁচা  সব্জি যেমন-ধনে পাতা, পুদিনা পাতা, লেটুস পাতা

§        কাঁচা. আধাকাঁচা পোড়ানো মাংস

§        ভালভাবে সিদ্ধ না করা মাছ, সামুদ্রিক মাছ

§        বিভিন্ন ধরনের সসেজ, মেয়োনিজ

§        অপাস্তরিত দুধ বা  দই জাতীয় খাদ্য

§        রাস্তার পাশের খাবারের দোকানের খোলা খাবার

§        ফাস্ট ফুড বা বার বার গরম করা হয়েছে, অনেকক্ষণ ধরে ঠান্ডা হয়েছে

§        বিভিন্ন বুফের খাবারেও ডায়রিয়া হতে পারে

 

পানির ব্যাপারে সাবধানতা :

§        জীবাণুমুক্ত পানি ছাড়া যে কোন স্থান থেকে পানি না খাওয়া।

§        সাপ্লাই পানি বিশুদ্ধ, জীবাণুমুক্ত না হলে  সেই পানি দিয়ে দাত মাজা, ফল সব্জি ধুয়ে খাওয়া ইত্যাদি করা যাবে না।

§        পারতো পক্ষে বিশুদ্ধ মিনারেল ওয়াটার খাওয়া।

§        সাপ্লাই পানি কমপক্ষে ১৫ মিনিট ফুটিয়ে পরে পান করা

§        বরফযুক্ত কোন প্রকার পানীয় পান না করা।

 

রোগ নির্ণয় :

মূলত রোগের ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা করে রোগ বোঝা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে পায়খানা পরীক্ষা করে জীবাণু নিশ্চিত হওয়া দরকার। কেননা একেক জীবাণুর বিরুদ্ধে একেক ধরনের ঔষধ ব্যবহার করতে হয়।

 

চিকিৎসা :

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ডায়রিয়া কিছু দিনের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয়। আর মূল চিকিৎসা হল পানি শূণ্যতা প্রতিরোধ করা। তাই-

§    à¦ªà¦°à§à¦¯à¦¾à¦ªà§à¦¤ পরিমাণ পানি ও খাবার স্যালাইন খেতে হবে।

§    à¦ªà¦¾à¦¨à¦¿ ও স্যালাইন অবশ্যই বিশুদ্ধ, জীবাণুমুক্ত পানি দিয়ে বানাতে হবে।

§    à¦œà§€à¦¬à¦¾à¦£à§ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক।

§    à¦¬à¦®à¦¿ হলে এন্টি ইমেটিক জাতীয় ঔষধ।

§    à¦¡à¦¾à§Ÿà¦°à¦¿à§Ÿà¦¾à¦° সময় দুধ ও দুধ জাতীয় খাবারে অনেকের সমস্যা বেড়ে যায়, তাই তা আপাততঃ বন্ধ রাখা।

§    à¦®à¦¦ ও মসলা জাতীয় খাদ্য পরিহার করা।

§    à¦¸à¦¾à¦¥à§‡ জ্বর থাকলে এন্টি মোটিলিটি বা এন্টি ডায়রিয়াল ঔষধ না খাওয়া কেননা তাতে জীবাণু ভেতরে থেকে যাবে, সারতে দেরী হবে।

 

শিশুরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ :

এই ডায়রিয়াতে শিশুরা সহজেই পানি শূন্যতায় ভোগে। তাই প্রতিরোধই সর্বোত্তম উপায়। প্রতিরোধের জন্য বাসার সবার স্বাস্থ্য সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে হবে। যেমন-

§        প্রতিবার টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত ধোয়া

§        খাবার তৈরী, পরিবেশন ও খাওয়ার পূর্বে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া

§        হাত, থালা, বাসন দোবার পর পুরোপুরি না শুকানো পর্যন্ত খাবার না ধরা ও পরিবেশন না করা।

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

 

ক্যামপাইলোব্যাকটার সংক্রমন

 

 

ক্যামপাইলোব্যাকটার সংক্রমন পাকস্থলীর  à¦ªà§à¦°à¦¦à¦¾à¦¹à§‡à¦° (গ্যাস্ট্রএন্টারাইটিস) একটি রূপ বা ধরন। এই সংক্রমন যে ব্যক্টেরিয়া দ্বারা হয়, তাকে ক্যামপাইলোব্যাকটার বলে। লক্ষণসমূহের মধ্যে রয়েছে:-

পাতলা পায়খানা,বমি বমি ভাব,বমি হওয়া,পাকস্থলীতে ব্যাথা ইত্যাদি। এই রোগ সংক্রমণ সবচেয়ে বেশী হয় পাঁচ বছরের নিচের বাচ্চাদের। বাচ্চারা খালি পায়ে হাটলে পশু পাখির মল পায়ে লেগে ক্যামপাইলো ব্যাকটার আক্রমণ ঘটতে পারে। কাচা বা ঠিক মত রান্না না করা মাংস (বিশেষ করে মুরগির মাংস),অপাস্তরিত দুধ,অশোধিত পানি পান করলে এবং মল ত্যাগের পর হাত না ধুলে এ সংক্রামণ ছড়াতে পারে।

          ক্যামপাইলোব্যাকটেরিওসিস পাকস্থলীর প্রদাহের একটি প্রকারভেদ। এর লক্ষণসমূহ সাধারণত আক্রমণের দুই থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে প্রকাশ পায়। সব বয়সেই এ সংক্রমন ঘটতে পারে তবে বেশী পাঁচ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের বেশী হয়। বড়দের হলে আরও মারাত্মক লক্ষন সমূহ দেখাদিতে পারে। সেক্ষেত্রে মলের লক্ষণ পরীক্ষা করে রোগ চিহ্নিত করা যায়।

 

সাধারন লক্ষণ সমূহ :

১। পাতলা লক্ষণ সমূহ ( সাথে রক্ত অথবা মিউকাস যেতে পারে)

২। জ্বর          

৩। পেটে মোচরানো ব্যথা           

৪। বমি বমি ভাব এবং বমি করা

 

কিভাবে একজন আক্রান্ত হয় :

ক্যামপাইলোব্যাকটার বিভিন্ন প্রাণীর মলে পাওয়া যায়, যেমন ফার্মের পশু অথবা গৃহ পালিত পশু। মানুষ নিম্নলিখিত ভাবে খাদ্যগ্রহণ করলে ক্যামপাইলো ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়:-

১। অরন্ধনকৃত মাংস খেলে

২। অপাস্তুরিত দুধ পান করলে

৩। ক্যামপাইলো ব্যাকটার জীবানু দ্বারা আক্রান্ত পানি পান করলে

৪। আক্রান্ত পশুকে ধরার পর হাত না ধুলে

 

এ সংক্রমন একজন থেকে আরেকজনে ছড়াতে পারে:-

১। যে সকল মানুষের মল ক্যামপাইলোব্যাকটার দ্বারা আক্রান্ত ,তারা যদি মলত্যাগের পর হাত না ধুয়ে খাবার খায়  বা খাবার স্পর্শ করে এবং অন্যজন সে খাবার খায়,তাহলে জীবানু ছড়াতে পারে।

২। বাচ্চাদের ন্যাপি পাল্টানোর সময় হাত কলুষিত হতে পারে এবং তার থেকে ছড়াতে পারে। মানুষ এবং পশুপাখি উভয়েই ক্যামপাইলোব্যাকটার জীবাণু বহন করতে পারে,যদিও তাদের কোন লক্ষণ থাকে না।

          যদি আক্রান্ত হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। যদি আক্রান্ত হয়েছে বলে মনে হয়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মল এর নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। যদি টেস্টে ক্যামপাইলোব্যাকটার ধরা পড়ে ডাক্তার সঠিক চিকিৎসা দিবেন।

 

ক্যামপাইলোব্যাকটার ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধঃ-

১। যতদিন লক্ষণসমূহ থাকবে ততদিন পর্যন্ত বাচ্চাদেরকে স্কুল কিংবা কিন্ডারগার্ডেনে যেতে না দিয়ে বাসায় রাখা।

২। যদি খাদ্যবহনকারী, গৃহকর্মী অথবা গভর্নেস আক্রান্ত হয়,তাদের ক্ষেত্রে যতদিন লক্ষণ সমূহ বন্ধ না হবে ততদিন কাজে যাওয়া থেকে বিরত থাকা।

৩। যতদিন পর্যন্ত লক্ষণ সমূহ থাকবে ততদিন সে হাতে খাবার তৈরী থেকে বিরত থাকা।

৪। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত তোয়ালে ব্যবহার করা যাবে না।

৫। টয়লেট থেকে বের হয়ে হাত ভালভাবে গরম পানি এবং সাবান দিয়ে ধুতে হবে।

৬। বাথরুম এবং বাইরের অংশ প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে।

         

নিরাপদ খাদ্য সংরক্ষন এবং প্রস'তিঃ

১। কাঁচা সব্জি রান্না করার ক্ষেত্রে ভালভাবে ধুয়ে নিয়ে রাঁধতে হবে এবং বিশেষ করে মাংস ভালভাবে ধুতে হবে।

২। তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে অথবা ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর রেখে খাবার সংরক্ষণ করলে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি প্রতিরোধ করা যায়।

৩। কাঁচা সব্জি বা মাংস কাটার পর ছুরি, এবং সজ্বি কাটার বোর্ড ভালভাবে ধুতে হবে।

৪। খাবার পুনরায় গরম করার ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীন তাপমাত্রা ৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখতে হবে।

৫। রান্নাঘরের সব তৈজসপত্র পরিষ্কার রাখতে হবে।

 

যে গুলো মনে রাখতে হবেঃ

১। ক্যামপাইলো ব্যাকটেরিয়েসিস হলো পাকস্থলীর এক প্রকার প্রদাহ যেটি ক্যামপাইলোব্যাকটার নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হয়।

২। অনেক প্রাণী তাদের মলে ক্যামপাইলোব্যাকটার বহন করে এবং প্রাণী দেহে তথা মানব দেহে প্রদাহ ঘটায়।

৩। নিরাপদ খাদ্যগ্রহণ এবং হাত ধোয়ার মাধ্যমে ক্যামপাইলোব্যাকটোরিয়োসিস প্রতিরোধ করা যায়।

 

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

 

ফুড পয়জনিং (লিসটেরিয়া)

 

 

লিসটেরিয়া মনোসাইটোজেন নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত খাবার গ্রহণের ফলে যে ফুড পয়জনিং হয় তাকে লিসটেরিয়া বলে। এমনিতে খুব সাধারণ রোগ হলেও গর্ভবতী মহিলা, বৃদ্ধ ও কম ইমিউনিটি সম্পন্ন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করে। মূলত কাঁচা, অর্ধসিদ্ধ খাবারের মাধ্যমে এই  পয়জনিং হয়ে থাকে।

 

যে সকল খাবার লিসটেরিয়ার জন্য হাইরিস্ক:

কিছু কিছু খাবারে লিসটেরিয়া হবার ঝুঁকি খুব বেশি। যেমন-

-         স্মোকড ফিস, রেডি টু  ইট সামুদ্রিক খাবার

-         কাঁচা শাক সব্জি

-         অর্ধসিদ্ধ মাংস, স্যান্ডউইচ এর চিকেন

-         অপাস্তুরিত তরল দুধ।

-         আইসক্রিম

-         নরম পনির ও পনিরের বানানো খাবার।

রোগ লক্ষণ:

রোগের লক্ষণ হালকে থেকে মারাত্মক হতে পারে।

যেমন: জ্বর, মাথাব্যাথা, অবসাদ গ্রস্থতা, শরীর ব্যাথা

 

 

মারাত্মক হলে-

মেনিনজাইটিস (ব্রেইন ইনফেকশন)

সেপটি সেমিয়া (রক্তে ইনফেকশন) দেখা দিতে পারে।

গর্ভবতীর ক্ষেত্রে:

গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে খুব সামান্য ইনফেকশনেও মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন-

-  গর্ভের সন্তান নষ্ট হওয়া

-   অপরিনত বাচ্চা প্রসব

-  মারাত্মক অসুস্থ্য বাচ্চা প্রসব ইত্যাদি।

 

আর যারা হাইরিস্ক:

গর্ভবতী ছাড়াও লিসটেরিয়া জন্য হাই রিস্ক, তারা হল:

-         অধিক বয়স্ক ব্যক্তি।

-         যাদের রোগের কারণে যেমন- ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, লিভার বা কিডনীর অসুস্থ্যতার কারণে ইমিউনিটি কমে গেছে।

-         যারা নিয়মিত প্রেডনিসোলন বা স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ সেবন করে।

-         যাদের শরীরে ত্বক সংযোজন করা হয়েছে।

 

চিকিৎসা ও প্রতিরোধ:

লিসটেরিয়া হলে এন্টিবায়োটিক দ্বারা চিকিৎসা করতে হবে। প্রতিরোধ করাই সর্বোত্তম। প্রতিরোধ করার জন্য যে সব খাবারে লিসটেরিয়া থাকার ঝুঁকি বেশি, তা পরিহার করতে হবে।

খাবার বানানো, সংরক্ষণ করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

 

খাবার তৈরী:

-  খাবার তৈরীর আগে অবশ্যই ভালভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। কাঁচা খাবার ও রান্না খাবার একই হাতে ধরা যাবে না।

-  ফল সব্জি, মালাদ কাঁচা খেতে চাইলে অবশ্যই ভাল করে আগে ধুয়ে নিতে হবে।

-   রান্না খাবার, কাঁচা খাবার একই পাত্রে রাখা যাবে না। একই চামচ দিয়ে কাঁচা খাবার ও রান্না করা খাবার নাড়া যাবে না।

 

খাদ্য সংরক্ষণ:

খাবার আলাদা আলাদা পাত্রে ঢেকে রাখতে হবে।

-   রান্না করা রান্নার ১ ঘন্টার মধ্যে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। ফ্রিজের  তামপাত্রা ৫ ডিঃসেঃ এর কম হতে হবে।

-   ঠান্ডা খাবার  ৫ ডিঃসেঃ এর কমে এবং গরম খাবার ৬০ ডিঃসেঃ এর বেশিতে সংরক্ষণ করতে হবে।

-   রান্না করা খাবার বা এখনই খাবার উপযুক্ত খাবার উপরের তাকে আর কাঁচা খাবার নিচের তাকে রাখবেন।

-   খাবার গরম করে খাবার সময় হালকা গরম না করে ভালভাবে গরম করতে হবে।

-   খাদ্যদ্রব্য ডি ফ্রস্ট করতে হলে ঘন্টার পর ঘন্টা বাইরে ফেলে না রেখে মাইক্রোওয়েভ দিয়ে ডি ফ্রস্ট করে রান্না করুন।

-   ফ্রিজে রাখা খাবার অবশ্যই মেয়াদ থাকতেই খাবেন।

-   ফ্রিজ  পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

 

যা মনে রাখত হবে:

-লিসেটেরিয়া ইনফেকশন গর্ভবতী মহিলা, বৃদ্ধ নারী-পুরুষ ও কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করে।

-লিস্টেরিয়ার জন্য যারা হাই রিস্ক তাদের লিস্টেরিয়ামুক্ত খাবার বর্জন করা ও সতর্কতা সাথে খাদ্য গ্রহণ করা জরুরী।

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

 

ঢোক গিলতে সমস্যা (ডিসেফেজিয়া)

 

খাবার বা কোনো কিছু গিলতে অসুবিধা বোধ করাকে ডিসফেজিয়া বলে।

কারণ :

১।  খাদ্যনালীর গঠনগত কারণ

২। স্নায়ু বা পেশিজনিত কারণ

ক. খাদ্যনালীর গঠনগত কারন -

এ সব কারণকে চার বাগে ভাগ করা যায়।

১। মুখগহ্বরজনিত (জিহ্বার সমস্যাসহ)

২। ল্যারিংস (শ্বাসনালী) ও ফ্যারিংস (গলবিল) বিভিন্ন সমস্যা

৩। অন্ননালীজনিত কারণ

৪। গলদেশের বিভিন্ন কারণ

 

১। মুখগহ্বরজনিত কারন

·        চোয়াল আটকে গেলে।

·        মুখের প্রদাহ টনসিলের ইনফেকশন, ঠোঁটের কোনায় আলসার

·        জিহ্বায় ঘা, জিহ্বায় ক্যান্সার

·        আক্কেল দাঁত ও  দাঁতের সমস্যা

·        মুখগহ্বরের ভেতরে প্রদাহ

·        মুখগহ্বর, মুখের তালুর টিউমার

 

২। শ্বাসনালী ও গলবিলের কারন

·        টনসিলের প্রদাহ

·        টনসিলের চার পাশে পুঁজ হওয়া

·        গলবিলের পেছনে ও চারপাশে পুঁজ হওয়া

·        ফ্যারিংসের ক্যান্সার (টনসিল ও জিহ্বার গোড়াসহ)

·        শ্বাসনালীতে পানি জমা

·        ল্যারিংসে কান্সার

·        ফ্যারিংসে অনাকাঙ্খিত বস্তু আটকে যাওয়া। †hgb মাছের কাঁটা

·        অন্যান্য  রোগ †hgb টিবি, ফাঙ্গাস, ইনফেকশন, সিফিলিস, এইডস

·        মুখের তালু ওফ্যারিংসের দূর্বলতা *অবশ) হলে নিউরোজেনিক

·        ভিনসেন্ট এনজিনা

 

৩। অন্ননালীজনিত কারন

ক. নালীর ভেতরের কারণ :

অনাকাঙ্খিত বস্তু †hgb পয়সা- শিশুদের ক্ষেত্রে, মাংসের হাড় বা নকল দাঁত -বয়স্কদের ক্ষেত্রে।

 

খ. নালীর দেয়ালজনিত কারন

·        জন্মগত সরু (Atresia) ও অন্যান্য ত্রুটি

·        এসিডে পেড়াজনিত অন্ননালী প্রদাহ

·        পেপটিক অন্ননালী প্রদাহ

·        নালী চিকন হওয়া

·        কাডিংওস্পাজম

·        স্পাজম ও ডাইভারটিকুলাম

·        এডিনমা বা মায়োমা

·        অন্ননালীর ক্যান্সার

·        ট্র্যাকিও-ওসোপেজিয়াল ফিস্টুলা

(খাদ্যনালী ও শ্বাসনালী যুক্ত হওয়া)

 

গ. নালীর  বহিঃপ্রকাশ কারন

·        রেট্রোস্টারনাল গয়টার থরিয়েড জনিত ও থাইমাস বড় হলে- শিশুদের ক্ষেত্রে

·        হৃৎপিন্ড অধিক বড় হওয়া

·        ফুসফুসের ভেতর ক্যান্সার

 

৪। গলদেশজনিত কারন

 

·        থাইরয়েড গ্রন্থি বড় হওয়া এবং থাইরয়েড গ্রন্থির ক্যান্সার

·        টেমপোরা ম্যান্ডিবুলার বা চোয়ালের জয়েন্টের আর্থ্রাইটিস

·        প্যারোটিভ গ্রন্থির প্রদাহ

 

২ স্নায়ুপেশিজনিত কারন

·        ভেগাল নার্ভ প্যারালাইসিস

·        মোটর নিউরন ডিজিজ

·        পেরিফেরাল নিউরাইটিস

·        জুগুলার-ফোনরাসেন সিন্ড্রম

লক্ষণ :

খাবার ভেতরে ঢুকবে না, খাবার ওপরে উঠে আসবে, গলায় কিছু আটকে আছে- এমন মনে হবে।

সমস্যার স্থান : 

রোগী সমস্যার স্থান নির্দিষ্ট করে বলতে পারবে। †hgb এটা ক্ষতের স্থানের ওপর নির্ভর করে।

 

লক্ষণ তীব্রতা :

স্বল্প পরিমাণ পানি ও  পানীয় রোগী গিলতে পারে। তরল, কঠিন বা উভয় জিনিসে অসুবিধাহয় এবং  ওজন কমে যায়।

লক্ষণের শুরু ও স্থায়িত্বকাল :

হঠাৎ তীব্র হতে পপারে, ধীরে ধীরে বাড়তে পারে, প্রথমে কঠিন খাবারে পরে তরল খাদ্যে সমস্যা দেখা দেয়।

অন্যান্য লক্ষণবিস্তারিত

-->

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

শিশুদের কোষ্ঠাকাঠিন্য

অনেক বাচ্চাই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভূগে। মল যদি বেশি শক্ত হয়ে যায় এবং পায়খানা  করতে বেগ পেতে হয়, তখন তাকে বলে কোষ্ঠকাঠিন্য। এ অবস্থায় বাচ্চা ব্যথা পায় ও A¯^w¯— হয, এমনকি বড় ধরনের সমস্যাও হতে পারে।

সুন্দর খাদ্যাভ্যাস, স্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান করা, নিয়মিত ব্যায়াম এবং সঠিক নিয়মে টয়লেট করা ও নিয়ম মেনে টয়লেট করার অভ্যাস করলে এসব সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।

যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ: 

দিনে কতবার অথবা কতদিন পর পর পায়খানা হচ্ছে তা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং যে পায়খানা হচ্ছে তা শক্ত/কঠিন কিনা এবং পায়খানা করার সময় বাচ্চার কষ্ট  হচ্ছে কিনা, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে প্রতিদিন ১-২ বার করে, অনেকে সপ্তাহে ২-৩ বার করে। কিন্তু যদি মল  খুব শক্ত না হয়, বা বাচ্চার ব্যথা না হয়, সে ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই।

 

কারণ:

সুনির্দিষ্ট কারণ জানা নেই। তবে সম্ভাব্য কারণসমূহ হল-

-          যদি বেশি দুধ খায়, অন্যান্য খাবার কম খায়, আঁশযুক্ত খাবার না খায় সে ক্ষেত্রে হতে পারে।

-          যদি এনাল ফিসার (মলদ্বারে কাটা/ছিড়ে গিয়ে থাকে) থাকে তবে ব্যথার কারণে বাচ্চা ভয়ে বাথরুমে করতে চায় না, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।

-          অনেক বাচ্চা খেলাধূলা দুষ্টামিতে এতই মগ্ন থাকে যে, বাথরুমে যাবার বেগ চেপে রাখে, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।

-          অনেক বাচ্চা বাসায় নিজের টয়লেট ছাড়া অন্য স্থানে, স্কুলে টয়লেট করতে চায়না, তাই পায়খানার বেগ আটকে রাখে। পরবর্তিতে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়।

-       à¦ªà¦°à§à¦¯à¦¾à¦ªà§à¦¤ ব্যায়াম, পরিশ্রম, খেলাধূলা না করা।

 

লক্ষণসমূহ:

 

-          বাচ্চা টয়লেটে যেতে চায় না, চারদিকে দৌড়াদৌড়ি করে, কান্না করে, পা ক্রস করে চেপে রাখে।

-          বাচ্চা বলে যে, পায়খানা করলে ব্যথা হয়।

-          পেটে ব্যথা বলে।

-          কাপড় নষ্ট করে, যদিও কোষ্ঠকাঠিন্য।

 

বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে করণীয়:

-    আপনার বাচ্চাকে আরও বেশি ব্যায়াম, খেলাধূলা করতে বলুন।

-     à¦®à§‹à¦Ÿà¦¿à¦­à§‡à¦¶à¦¨ করে, বুঝিয়ে, উৎসাহ দিয়ে নিয়ম করে প্রতিদিন টয়লেট করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

-    স্কুলের টয়লেটে সমস্যা থাকলে তা সমাধানের চেষ্ট করুন।

-    ল্যাক্সেটিভ জাতীয় ঔষধ বেশি ব্যবহার করা ঠিক না। কেননা, এটি আসল সমস্যার কোন সমাধান করে না। তবে যে সব ল্যাক্সেটিভে মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ও ফাইবার যুক্ত করে সে সব ব্যবহার করুন।

-    সমস্যা যত তাড়াতাড়ি সমাধান করা যায় ততই সফল। বেশিদিনের দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্য ভাল হওয়া কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। তাই শুরুতেই সচেতন হোন।

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন:

-    অধিক আঁশযুক্ত খাবার, যেমন- ব্রেড, রুটি, শস্যদানা, ফাইবারযুক্ত বিস্কুট ইত্যাদির পরিমাণ বাড়াতে হবে।

-    অধিক পরিমাণে ফল, শাক-সব্জি খাদ্য তালিকায় রাখুন।

-    পর্যাপ্ত পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

 

বিস্তারিত

-->

09-01-2013 রোগ ব্যাধি

 

সিলিয়াক ডিজিজ

গ্লুটেন হলো একটি প্রোটিন, যা গম, রাই, বার্লি এবং বুট যাতিয় দ্রব্য সমূহে পাওয়া যায়। যখন অন্ত্রে (ক্ষুদ্রান্ত্র  এবং বৃহদান্ত্র) স্থায়ীভাবে  এই গ্লুটেনের হযমের তারতম্য ঘটে তখন তাকে সিলিয়াক ডিজিজ বলে। অন্ত্রের আভ্যন্তরীন কোষসমূহকে এই গ্লুটেন ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলে এবং পুষ্টিকনা  শোষণে ব্যাঘাত ঘটায়। তাই গ্লুটেন ব্যতীত খাদ্য তালিকাই এ রোগের একমাত্র চিকিৎসা।

            সিলিয়াক ডিজিজ একটি উল্লেখযোগ্য জরুরী অবস্থা। এটি যদি সময়মত সনাক্ত করা না হয় এবং সঠিকভাবে চিকিৎসা না দেয়া হয়, তাহলে এটি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। এটি ক্ষুদ্রান্ত্রের পরিপাক অংশের উপর বেশি প্রভাব ফেলে, বিশেষত যে অংশটি পুষ্টিকনা শোষণের জন্য দায়ী। সিলিয়ক ডিজিজ যদি বিনা চিকিৎসায় রাখা হয়, তাহলে-

  • অপুষ্টি
  • অস্টিয়পোরেসিস (হাড় এর ক্ষয়জনিত রোগ)
  • ইনফার্টিলিটি (বাচ্চাধারণ ক্ষমতা হারিয়ে যাওয়া)
  • লিম্ফোমা (এক ধরনের ক্যান্সার) হতে পারে।

ক্ষুদ্রান্ত্রের ক্ষতি:

ক্ষদ্রান্ত্রের কোষগুলো কোটি কোটি আঙ্গুলের মত বর্ধিত অংশ দ্বারা আবৃত থাকে। এগুলোকে ভিলাই বলে। এই ভিলাইগুলোর কাজ হলো খাদ্যকনাসমূহ ভেঙ্গে পুষ্টি কণাসমূহ শোষণ করা। কিন্তু সিলিয়াক ডিজিজে ভুক্তভোগী রোগীদের ক্ষেত্রে এই ভিলাইগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়, অর্থাৎ বর্ধিত অংশগুলো চ্যাপ্টা হয়ে যায় এবং ভিলাই  এটসোফি ঘটায়।

 à¦«à¦²à§‡ পুষ্টিকণা শোষণ চরমভাবে ব্যহত হয় এবং অপুষ্টি দেখা দেয়।

লক্ষণসমূহ:

সিলিয়াক ডিজিজের লক্ষণসমূহ মাঝে মাঝে অচিহ্নিত থাকে, আবার মাঝে মাঝে লক্ষণসমূহ বেশি কম হয়। সবচেয়ে পরিচিত কিছু লক্ষণসমুহ নীচে দেয়া হলো:(বড়দের ক্ষেত্রে)

  • রক্তস্বল্পতাv বা এনিমিয়া;
  • পেট ফাপা এবং গ্যাস হওয়া;
  • ডায়রিয়া অথবা কোষ্টকাঠিন্য;
  • দূর্বলতা এবং ক্লান্তিবোধ;
  • বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া;
  • ওজন হ্রাস পাওয়া।

সবচেয়ে পরিচিত লক্ষণসমূহ (বাচ্চাদের ক্ষেত্রে):

  • পেটে ব্যথা, পেট ফাঁপা;
  • ফ্যাকাসে এবং দূর্গন্ধযুক্ত পায়খানা;
  • অনেকদিন ধরে স্বল্পতা
  • ডায়রিয়া অথবা কোষ্ঠকাঠিন্য
  • বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
  • ওজন বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া
  • ক্লান্তিবোধ
  • শারিরিক ও মানসিক বৃদ্ধি হ্রাস পাওয়া
  • বিরক্তি

রিস্ক ফ্যাক্টর:

বংশতভাবে কোন লোক যদি সিলিয়াক ডিজিজের জীন বহন করে জন্ম নেয়, তাদের ক্ষেত্রে সিলিয়াক ডিজিজ হওয়ার প্রবণতা বেশি। তারা বংশগতভাবে একটি জীন বহন করে তা হলো (HLA type)এর মধ্যে জীন DQ-2 ও DQ-8  à¦•à§‡ সিলিয়াক জীন বলে। এ রোগ পূর্ব এশীয়দের বেশি হয়।

সনাক্তকরণ:

প্রারম্ভিক দিকে রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হয় যে, সিলিয়াক সেরালাজী এবং ইমইউনোগ্লোবিন-এ (IgA) আছে কিনা, যদি থাকে  তবে অবশ্যই রোগীকে  একজন গ্যাস্ট্রোলিভার বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাতে হাব। এক্ষেত্রে এ রোগ নিশ্চিত করতে হলে অবশ্যই গ্যাস্ট্রোস্কপি করতে হবে। একজন রোগীকে আংশিক অজ্ঞান করে এন্ডাস্কোপ যন্ত্র মুখ দিয়ে ঢুকিয়ে ক্ষদ্রান্ত্রে  পর্যন্ত স্থাপন করে ভিডিও এর মাধ্যমে দেখা হয় যে এতে কি সমস্যা আছে এবং সামান্য কিছু অংশ তুলে এনে সেটা বায়োপসি করা হয়। এ পুরো প্রক্রিয়াটিকেই গ্যাস্ট্রোস্কপি বলে।

গ্লুটেন ব্যতীত খাদ্য তালিকা:

সিলিয়াক ডিজিজের একমাত্র চিকিৎসা হলো গ্লুটেন ফ্রি খাদ্য খাওয়া। এটি অন্ত্রের আভ্যন্তরীণ কোষগুলোর ক্ষতিপূরণ করে। এই খাদ্যভ্যাস আজীবন পালন করতে হবে। সেসব খাদ্য গ্লুটেন বহন করে, তা হল -

পাউরুটি, কেক, পেস্তা, এমনকি সকল খাদ্য যেখানে গ্লুটেনের উৎস আছে, সেগুলোও বাদ দিতে হবে।

যেগুলো মনে রাখতে হবে:

  • গ্লুটেন সমৃদ্ধ খাদ্যে অসহিষ্ণুতাকে সিলিয়াক ডিজিজ বলে।
  • সামান্য পরিমাণ গ্লুটেন ও ক্ষুদ্রান্ত্রের ক্ষতি করতে পারে। সুষ্ঠুভাবে পুষ্টিকণা শোষণ করতে বাধা দেয়।
  • পুরোপুরি বা সম্পূর্ণরূপে নির্মূলযোগ্য নয়, তবে গ্লুটেন ছাড়া খাদ্য গ্রহন করলে সিলিয়াক ডিজিজ রোধ করা যায়।
  • কোন লক্ষণ ছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রান্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।

 

 

06-01-2013 রোগ ব্যাধি

ইনফ্লামেটরী বাওল ডিজিজ - ক্রনস ডিজিজ এন্ড আলসারেটিভ কোলাইটিস

ক্রনস ডিজিজ এন্ড আলসারেটিভ কোলাইটিস এদেরকে একসাথে ইনফ্লামেটরী বাওল ডিজিজ -Inflammatory bowel disease (IBD) অর্থাৎ অন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ বলে ।  Cohn’s disease এ পরিপাকতন্ত্রের অর্থাৎ মুখ থেকে পায়ূ পর্যন্ত যে কোন অংশে প্রদাহ হয়ে সে অংশকে মোটা বা পুরু করে ফেলে। আর Ulcerative Colitis বৃহদান্তের (কোলন এবং পায়ুনালী) ভেতরের কোষগুলোর প্রদাহ ঘটায়।

            এ ধরনের রোগগুলো সাধারণত ১৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে, তবে যে কোন সময়ই হতে পারে। তবে ক্রনস ডিজিজ সবচেয়ে বেশি হয় নয় বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের হয়।

শরীরের উপর এ রোগের প্রভাব:

প্রতিটি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভিন্ন। রোগের লক্ষণ এবং ভয়াবহতা এক একজন মানুষের ক্ষেত্রে একক রকম।এ রোগকে ক্রমবর্ধনশীল বলা যাবে না, বরং এ রোগে অল্প থেকে হঠাৎ করে বেশি এবং বেশি থেকে হঠাৎ আবার কমে যেতে পারে।

এটি নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না যে, এর লক্ষণ কখন বেড়ে যাবে বা কত সময় এর থেকে নিরাপদ থাকা যাবে। অনেকের ক্ষেত্রে চিকিৎসার মাধ্যমে দ্রুত মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আবার অনেকের ক্ষেত্রে মাসের পর মাস সময় লেগে যায়।

লক্ষণসমুহ:

অন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের মধ্যে তারতম্য ঘটায়। নিম্নে কিছু লক্ষণসমুহ দেয়া হলো:

-          পেটে ব্যথা;

-          শরীরের ওজন হ্রাস পাওয়া;

-          পাতলা পায়খানা (সাথে রক্ত-শ্লেষ্মাযাওয়া)

-          ক্লান্তিবোধ;

-          কোষ্ঠকাঠিন্য;

-          অপুষ্টিবমি বমি ভাব;

-          শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি দেরিতে হওয়া।

ক্রনস ডিজিজ এর কারণসমূহ প্রকৃতপক্ষে অজানা। তবে কিছু সংখ্যক বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার স্বল্পতার জন্য রোগ হয়। আবার কিছু বিজ্ঞানীরা বলেন যে, কিছু কিছু ব্যাকরেটরিয়া বা ভাইরাস এ জন্য দায়ী। মানসিক চাপ বা খাদ্যতালিকা এ রাগের ক্ষেত্রে তেমন কোন ভূমিকা পালন করে না। উপরন্তু এ রোগ ছোঁয়াচে নয়।

বিভিন্ন রকম চিকিৎসা পদ্ধতি:

এ রোগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন রকম পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন হয়। যেমন-

-          রক্ত পরীক্ষা , মল পরীক্ষা

-          এক্স-রে

-          কোলনস্কপি (কোলনের মধ্য দিয়ে ক্যামেরা ঢুকিয়ে পরীক্ষা)

-          গ্যাস্ট্রোস্কপি

চিকিৎসা নির্ভর করে রোগের উপর। চিকিৎসার অর্ন্তভূক্ত হল:

-          কার্টিকো স্টেরোয়েড প্রদন;

-          রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ঔষুধ প্রদান;

-          নির্দিষ্ট কিছু জটিলতা দুর করার জন্য সঠিক সার্জারী বা অপারেশন করা।

IDB রোগীদের পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন:

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ভিটামিন B12 ইনযেকশন কার্যকর। অনেকের ক্ষেত্রে চর্বিযুক্ত খাবার, মসলা সমৃদ্ধ খাবার ডায়রিয়াকে ত্বরান্নিত করে। এজন্য এগুলো খাদ্যকে খাদ্য তালিকায় সীমিত রাখতে হবে।

ইনফ্লামেটরী বাওল ডিজিজ রোগীদের সুস্থ জীবন যাপন করতে পারে:

চিকিৎসা নিয়ে  একজন IDB রোগী একটি সুস্থ সুন্দর জীবন পালন করতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত এ রোগের লক্ষণগুলো অতিরিক্ত বেড়ে না যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত  সে  সম্পূর্ণ সুস্থ এবং ভালো অনুভব করে। তারা অন্যান্যদের মত বিয়ে করে সংসার জীবন পালন করতে পারে। চাকুরী করতে পারে। পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল হতে পারে এবং  à¦†à¦¨à¦¨à§à¦¦à¦¦à¦¾à§Ÿà¦• কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে। এক কথায় বলা যায়, তারা অন্য সাধারণ মানুষের মতই সাধারণ এবং সুস্থ জীবন অতিবাহিত করতে পারে।

 

06-01-2013 রোগ ব্যাধি

 

পরিপাক তন্ত্র

     

আমরা যে খাবার খাই তাকে ভেঙ্গে হজম করে তার থেকে পুষ্টি বের করে রক্তের মাধ্যমে সমস্ত শরীরে পৌছানোর পর্য্যায়ে নিয়ে যাবার কাজটি করে পরিপাকতন্ত্র। বেঁচে থাকার জন্য আমাদের খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। আর এই পরিপাকতন্ত্র হজমের মাধ্যমে খাবারকে শরীরের শক্তি ও পুষ্টি  জোগান দেবার পর্যায়ে অর্থাৎ এমাইনো এসিড, গ্লুকোজ এবং ফ্যাটি এসিডে রূপান্তর করে। অতঃপর এই সব সহজ ব্যবহার্য্য খাদ্যাংশ রক্তের মাধ্যমে শরীরের সমস্ত কোষে কোষে পৌছে যায়।

      পরিপাকতন্ত্রটি মুখ থেকে শুরু হয়ে পায়ুপথে গিয়ে শেষ হয়েছে। এটি একটি লম্বা মাংশের নালী, প্রায় ১০ মিটার লম্বা এবং এর সাথে বিভিন্ন পরিপাক গ্রন্থি জড়িত।

 

মুখ ও খাদ্যনালী:

মুখ থেকেই খাবারের হজম শুরু হয়। দাঁত দ্বারা চাবানোর ফলে খাবার নরম হয় ও ক্ষুদ্র অংশে পরিণত হয়। আর মুখের লালা খাবারকে পিচ্ছিল করে খাদ্যনালী দিয়ে বহন করে পাকস্থলীতে পৌছাতে সাহায্য করে। এছাড়াও লালার মধ্যে বিশেষ এনজাইম থাকে, যা শর্করা জাতীয় খাদ্যকে ভেঙ্গে গ্লুকোজে রুপান্তরের কাজ মুখ বিস্তারিত

-->

06-01-2013 রোগ ব্যাধি

ট্রাকোমা

 

ট্রাকোমা হল ব্যাকটেরিয়া জনিত চোখের ইনফেকশন- যার সঠিক চিকিৎসা না হলে রোগী অন্ধ হয়ে যেতে পারে। এটি এক ধরনের ছোয়াচে রোগ। সঠিক পরিচ্ছন্নতার অভাব, ঘনবসতি বসবাস, দারিদ্রতা ইত্যাদি কারণে এই রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করে। বিশ্বে প্রায় ৫০ টিরও অধিক অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে  বিশেষত এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশে পল্লী অঞ্চলে  যেখানে স্বাস্থ্য সচেতনতা ও পরিচ্ছন্নতা কম সেখানে এই রোগের বিস্তার অনেক বেশি। অনেক স্থানে এই রোগটি স্যান্ড ব্লাইট নামেও পরিচিত।

 

যেভাবে রোগটি ছড়ায় :

ক্ল্র্যামাইডিয়া ট্রাকোমটিস নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া এই ছোঁয়াচে রোগের কারণ। এই জীবাণু নিম্নোক্তভাবে ছড়ায় :

§        সরাসরি সংষ্পর্শে- যেমন আক্রান্ত চোখ ধরলে, চোখের পানে ময়লা ধরলে।

§        নাকের, গলার শ্লেষ্মার সংষ্পর্শে আসলে।

§        আক্রান্ত রোগীর চশমা, গামছা, রুমাল কাপড় ব্যবহার করণে।

§        আক্রান্ত চোখে মাছি বসে তার দ্বারা জীবাণু ছড়াতে পারে।

 

লক্ষণসমূহ :

আক্রান্ত হবার ৫-১০ দিনের মধ্যেই সাধারণত রোগ লক্ষণ প্রকাশিত হয়। লক্ষণসমূহ হল:

§        চোখ লাল হওয়া, জ্বালা করা, ময়লা জমা (কানজাংটিভাইটিস)।

§        চোখের পাতা ফুলে উঠা

§        চোখের উপরের পাতা ভেতরের দিকে ফুলে উঠা।

 

 

§        চোখের উপরের পাতার আকৃতি বদলে যাওয়া, শক্ত হয়ে যাওয়া

§        চোখের পাপড়ি শক্ত হয়ে ভেতরের  দিকে ঢুকে কর্নিয়ায় ঘা তৈরী করে

§        কর্নিয়ায় অস্বাভাবিক রক্তনালী তৈরী ও বৃদ্ধি পায়।

§        স্বচ্ছ্ব কর্নিয়া ঘোলাটে হয়ে যায়।

আবার অনেক ক্ষেত্রে ইনফেকশন হলেও কোন প্রকার লক্ষণ নাও থাকতে পারে।

 

সাধারণ জটিলতাসমুহ :

সঠিক চিকিৎসা না হলে বার বার ইনফেকশনের ফলে ও কর্নিয়ায় ক্ষত সৃষ্টি হবার ফলে অস্বচ্ছ্ব হয়ে যায় ও চোখের পাতা শক্ত, অনমনীয় হয়ে উঠে। পরবর্তিতে চোখের ভেতরের দিকে ঢুকে যায় এবং চোখের পাপড়িও কর্নিয়ায় ঘষা লেগে ক্ষত তৈরী হয়। এতে পরবর্তিতে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয় ও রোগী অন্ধ হয়ে যায়।

 

রিস্ক ফ্যাক্টর :

যে সব কারণে এই রোগ হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়, তা হলো-

§        পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব, বিশেষত মুখমন্ডল পরিষ্কার না করা।

§        বাসস্থান পরিচ্ছন্ন না থাকা।

§        ঘনবসতিপূর্ণ ভাবে বসবাস করা, গাদাগাদি করে অবস্থান করা।

§        পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ না থাকা, ফলে পরিচ্ছন্নতার অভাব।

§        শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব।

রোগ নির্ণয় :

সঠিকভাবে রোগের ইতিহাস নিয়ে শারীরিক পরীক্ষা (চক্ষু পরীক্ষা) করা ও চোখের ময়লা ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করে জীবাণু নির্ণয় করে রোগ নিশ্চিত হওয়া যায়।

 

চিকিৎসা : 

রোগের মাত্রা ও পর্যায় অনুযায়ী চিকিৎসা ।

এন্টিবায়োটিক :

সাধারণ ইনফেকশন হলে ১ ডোজ মুখে খাবার এন্টিবায়োটিক এজিথোমাইসিন খেলেই রোগ ভাল হয়। তবে পরিবারের বা ঘরের সবারই এই ঔষধ খেতে হবে, রোগ থাকুক বা না থাকুক। অনেক ক্ষেত্রে ৬ মাস বা ১ বছর পর আরেক ডোজ ঔষধ খেতে হতে পারে।

সার্জারী :

চোখের পাতা বেশি সমস্যাগ্রস্থ হলে অপারেশন করতে হয়।

 

প্রতিরোধ করা উপায় :

মুখমন্ডল পরিচ্ছন্ন রাখা, স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া ও বাসস্থান পরিচ্ছন্ন রাখলে অনেকাংশে রোগ থেকে দূরে থাকা যায়।

 

যা যা মনে রাখা জরুরী :

১. ক্ল্যামাইডিয়া ট্রাকোমাটিস নামক ব্যাকটেরিয়াজনিত চোখের ইনফেকশন হলো- ট্রাকোমা- যা একটি ছোয়াচে রোগ।

২. মুখমন্ডল, বাড়িঘর পরিচ্ছন্ন রাখা ও স্বাস্থ্য সচেতন হলে সহজেই এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

৩. সঠিকভাবে চিকিৎসা না করলে রোগী অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।

৪. মুখে খাবার এন্টিবায়োটিক দিয়ে এবং প্রয়োজনে সার্জারী করে রোগের চিকিৎসা করা যায়।

 

 

06-01-2013 রোগ ব্যাধি

দেখতে সমস্যা হওয়া /চোখের ত্রুটি

 

চোখের বিভিন্ন ত্রুটির মধ্যে - দেখার সমস্যাই বড় সমস্যা এবং খুবই কমন। চোখের দৃষ্টি সমস্যার প্রধান ত্রটিগুলি হল :

·        মায়োপিয়া (হ্রস্ব দৃষ্টি)

·        হাইপারমেট্রোপিয়া (দীর্ঘ দৃষ্টি)

·        এস্টিগমেটিজম এবং

·        প্রেসবায়োপিয়া বা চালসে।

চশমা, কনট্টাক্ট লেন্স এবং লেজার চিকিৎসার মাধ্যমে চোখের এই সমস্যাগুলি দূর করা সম্ভব। অধিকাংশ মানুষেরই চোখের ত্রুটি থাকে।চোখের অক্ষাংশ এবং চোখের ক্ষমতার মধ্যে মিল না থাকলে চোখের ত্রুটি দেখা যায়।এই অমিলগুলো সাধারণত ছোটবেলায় দেখা যায়,মনে করা হয় এটা জীনগত এবং পরিবেশগত কারণের জন্যও হয়।

 

মায়োপিয়া (হ্রস্ব দৃষ্টি):

যাদের মায়োপিয়া থাকে তারা দূরের বস্তু দেখতে পায় না। সাধারণ চোখে- লেন্স এবং কর্ণিয়া রেটিনাতে একটি ছবি তৈরী করে,কিন্তু মায়োপিক চোখে,ছবি তৈরী হয় রেটিনার সামনে এবং প্রতিচ্ছবি হয় ধূসর বা অস্পষ্ট।মায়োপিয়া শতকরা ১৫ শতাংশ লোকের ক্ষেত্রে দেখা যায়। মায়োপিয়া সাধারণ টিন্‌এজদের ক্ষেত্রে বেশি হয়, তবে জন্মের পর যে কোন বয়সে হতে পারে। পরের কয়েক বছরে মায়োপিয়া অস্বাভাবিক ভাবে বাড়ে কিন্তু  à¦šà¦²à§à¦²à¦¿à¦¶à§‡à¦° পর এটা কমতে থাকে।

মায়োপিয়ার চি‎‎হ্ণগুলি :

·        দূরের জিনিস দেখতে কষ্ট হয়।

·        স্কুলের ব্লাকবোর্ডের লেখা পড়তে কষ্ট হয়।

·        টেলিভিশনের কাছে বসে দেখতে হয়।

·        বাইরে খেলাধূলায় আগ্রহ কম দেখা যায়।

 

চিকিৎসা :

মায়োপিয়া পুরোপুরি ভালো হয় না। তারপরও চশমা কিংবা কন্ট্রাক্ট লেন্স ব্যবহার করলে ভাল দেখা যায়। কিছু পদ্ধতি আছে যা মায়োপিয়া ঠিক করতে পারে। কর্নিয়ার ক্ষমতা কমিয়ে এটা করা হয়।এ রকম পদ্ধতি হল লেজারের মাধ্যমে চিকিৎসা।

আপনার যদি মায়োপিয়া থাকে তবে আপনি নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করান এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

 

দীর্ঘদৃষ্টি :

যাদের দীর্ঘদৃষ্টি আছে তারা সাধারণত কাছের জিনিস স্পষ্ট দেখতে পায় না। দীর্ঘক্ষণ কাছের জিনিস দেখতে চেষ্টা করলে চোখ ক্লান্তি  à¦…নুভব করে। এবং মাথা ব্যাথা হয়।শিশুদের দীর্ঘদৃষ্টি ও মাথা ব্যথা থাকলে চেক করার জরুরি।

 

 

চিকিৎসা :

চশমা এবং লেন্স ব্যবহার করলে পড়াশুনা এবং কাছের বস্তু দেখা সহজ হয়।লেজার চিকিৎসার মাধ্যমে দীর্ঘ দৃষ্টিরও চিকিৎসা সম্ভব।

 

এস্টিগমেটিজম :

এস্টিগমেটিজম এমন একটি চোখের সমস্যা যা সকল দূরত্ব থেকে স্পস্ট কিন্তু আড়াআড়ি তা স্পষ্ট নয়। এস্টিগমেটিজমের ফলে মাথা ব্যথা, দূর্বল লাগা এবং মনোযোগ কমে যায়।

  

 à¦¬à§‡à¦¶à¦¿à¦°à¦­à¦¾à¦— ক্ষেত্রে এস্টিগমেটিজম হয় চোখের সম্মুখ অংশ অথবা লেন্স ভেতরের দিকে ঢুকে গেলে। এটি জীনগত কারণে হতে পারের। ইহা চোখের ত্রুটি নয়। বেশিরভাগ লোক কমবেশি এস্টিগমেটিজমে ভোগেন।

 

চিকিৎসা :

চশমা এবং লেন্স ব্যবহার করলে এস্টিগমেটিজম ঠিক করা যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে চশমা দিয়ে ঠিক করার পরও কোন বস্তুর চেহারা, গঠন,অবস্থান নিয়ে সমস্যা থেকে যায়। লেজার দিয়েও এর চিকিৎসা করানো সম্ভব।

 

প্রেসবায়োপিয়া :

প্রেসবায়োপিয়া এমন একটি অবস্থা যা স্বাভাবিক অবস্থান থেকে কোন বস্তুকে দেখতে সমস্যা করে। চোখের সামনে পত্রিকা ধরে পড়লে পরিস্কার বুঝা যায়।

বয়স বাড়ার সাথে সাথে চোখের উপযোজন ক্ষমতা হ্রাস পায়।

প্রেসবায়োপিয়া  প্রথম ধরা পড়ে ৪০-৪৫ বছর বয়সে এবং এটা  বৃদ্ধি পায় ৪৫-৬৫ বছর বয়সে।

 

চিকিৎসা :

প্রেসবায়োপিয়া চিকিৎসার জন্য চশমা দেয়া হয় ।বিশেষ করে কাছের বস্তু দেখার জন্য।মাল্টি ফোকাল. বাইফোকাল লেন্স বা চশমা ব্যবহার করে কাছের এবং দূরের বস্তু পরিস্কার দেখা যায়।

বর্তমানে প্রেসবায়োপিয়া চিকিৎসার জন্য লেজার ব্যবহার করা হয়।

 

যা মনে রাখতে হবে :

·        চোখের বিভিন্ন ত্রুটির মধ্যে - দেখার সমস্যাই সবচেয়ে কমন সমস্যা।

·        চোখের ত্রুটির মধ্যে আছে মায়োপিয়া, হাইপারমেট্রোপিয়া, এস্টিগমেটিজম এবং প্রেসবায়োপিয়া।

·        সঠিক কারণ জানা যায়নি এখনও তবে, জীনগত এবং পরিবেশগত সমস্যা অনেকটা প্রভাব  ফেলে।

·        চোখের  ত্রুটির চিকিৎসায় চশমা, লেন্স বা লেজার চিকিৎসা করা হয়।

 

 

06-01-2013 রোগ ব্যাধি

 

আইরাইটিস এবং উভিআইটিস

চোখের মনি বলতে আমরা যে কাল অংশ কে বুঝি, সেই রঙিন অংশটির নাম আইরিস। আইরাইটিস হল আইরিসের প্রদাহজনিত রোগ। এর প্রকৃত নাম হল এন্টেরিয়র উভিয়াইটিস। শতকরা ৪০ ভাগ ক্ষেত্রে যদিও কোন কারণ জানা যায় না, তবে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনের কারণে এই রোগ হতে পারে।

 

 

আইরাইটিসের লক্ষণসমূহ :

 à¦šà§‹à¦– লাল হওয়া, চোখে ব্যাথা, আলোতে তাকাতে কষ্ট হওয়া ইত্যাদি হঠাৎ করেই প্রকাশ পায় এবং সাধারণত এক চোখে হয়। সাধারণত যুবক বয়সে ও মধ্যবয়সীদের এই রোগ হয়। সঠিক চিকিৎসা না করলে  দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসার মাধ্যমে জটিলতা কমানো সম্ভব, তবে প্রায়ই দেখা যায়, একবার হলে বার বার হয়।

উভিয়াইটিস :

চোখের মধ্যম স্তর- যা সম্মুখভাগে আইরিস, পেছনে কোরয়েড এবং রেটিনা পর্যন্ত বিস্তৃত, তার প্রদাহকে উভিয়াইটিস বলে।

এটি ৩ ধরনের যেমন:

ক) এন্টেরিয়র উভিয়াইটিস :

আইরিস এর প্রদাহকে সাধারণত আইরাইটিস বলে। শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই এন্টেরিয়র উভিয়াইটিস হয়।

খ) ইন্টারবিস্তারিত

-->

06-01-2013 রোগ ব্যাধি

 

স্টাই

 

স্টাই হল চোখের পাপড়ীর গোড়ার ইনফেকশন। অনেক সময় আমাদের চোখের পাতার ধার বরাবর ফোড়া হয় বা লাল হয়ে ফুলে উঠে, একে বলে স্টাই। মুলত স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস নামক জীবানু দ্বারা এই ইনফেকশন হয়। যদিও খুবই বিরক্তিকর একটি ব্যাপার, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগটি আপনা আপনি কিছু দিনের মধ্যে সেরে যায়। অধকাংশ ক্ষেত্রেই হালকা গরম সেক দিলে, ও এন্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহার করলে ভাল হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হয়, অপারেশন করে পুজ রেব করতে হয়।

স্ট্যাফাইলোকক্কাস জীবানু সুস্থ মানুষের শরীরে কোন রোগ সৃষ্টি না করেই অবস্থান করে। বিশেষত নাকের ভেতরে, চামড়ার ভাজে। কোন কারনে চামড়ায় ঘা বা ক্ষত হলে, ঐ স্থান দিয়ে জীবানু শরীরের ভেতরে প্রবেশ করে ইনফেকশন করে। নাকে হাত দিয়ে পরে চোখ চুলকালে জীবানু চোখের পাতার ভেতরে প্রবেশ করতে পারে। স্টাই হলে চোখের পাতা লাল হয়, ফুলে উঠে, কখনও ভেতরে সাদা পুজ দেখা যায়। তবে সাধারনত চোখের কোন ক্ষতি হয় না। অনেককে প্রায়ই আক্রান্ত হতে দেখা যায়, আবার অনেকে ১বার হয়, আবার কেউ কেউ একেবারেই আক্রান্ত হন না।

 

লক্ষন সমূহঃ

১। চোখের পাতা লাল, শক্ত ফোড়ার মত হয়, ব্যাথা হয়।

২। চাকাটি দিন দিন বড় হতে থাকে, কখনও তা নরম হয় এবং সাদা পুজের মত মুখ দেখা যায়।

৩। সাদা মুখটি চোখের পাতার ধার বরাবরও হতে পারে, আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে চোখের ভেতরের দিকেও হতে পারে। তবে সাধারণত উপর/বাইরের দিক থেকে পাতায় কোন সাদা মুখ দেখা যায় না।

৪। চোখ খচখচ করে, মনে হয় চোখে কিছু ময়লা পড়েছে, চোখদিয়ে পানি পড়ে।

৫। অনেক ক্ষেত্রে এমনিতেই শক্ত চাকাটি নরম হয়ে মিশে যায়, আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনা আপনি ফেটে গিয়ে পুজ বের হয়ে যায় ও ভাল হয়ে যায়।

 

চিকিৎসাঃ

স্টাই হলে চোখে ব্যাথা হয়, চোখ দিয়ে পানি পড়ে, চোখ চুলকায় যা খুবই অস্বস্তিকর। চোখে গরম সেক দেলে অনেক ক্ষেত্রে ব্যাথা উপশম হয়। গরম শেক দিতে হলে তুলা গোল করে তা গরম পানিতে ভিজিয়ে তা ফোড়ার উপর আলতো ভাবে চেপে ধরতে হবে। গরম কি পরিমান হতে হবে? তা হল ব্যক্তি যতটুকু সহজে সহ্য করতে পারে, ততটুকু যাতে কোন ভাবেই চামড়া পুড়ে না যায়। গরম তুলা বা কাপড় ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে। পরবর্তীতে আবার গরম পানিতে ভিজিয়ে একই ভাবে সেক দিতে হবে দিনে কয়েক বার। এছাড়া প্যারাসিটামল ঔষধ খেলেও ব্যাথা কম অনুভুত হয়। এ দুইভাবে উপকার না হলে ঐ স্থানে এন্টিবায়োটিক মলম লাগানো যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে মুখে এন্টিবায়োটিক ঔষধ খেতে হয়। আর খুব সামান্য কিছু ক্ষেত্রে যখন তা অনেক বড় আকার ধারন করে, ফোড়ার মুখ কেটে পুজ বের করে দিতে হয়।

 

হাত দিয়ে চাপ দেয়া নিষেধঃ

কখনও স্টাই হলে তা হাত দিয়ে চাপ দিয়ে পুজ বের করার চেষ্ট করা ঠিক না। কেননা তা যদি পুরোপুরি ফেটে বের হবার অবস্থায় না থাকে, সে ক্ষেত্রে ইনফেকশন, চোখের পাতায় পার্শ্ববর্তী স্থানে সরে যাবে, ফলে অনেক বড় স্থান জুড়ে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়বে।

ইনফেকশন ছড়ানো প্রতিরোধে করনীয়ঃ

- যখন তখন স্টাই ধরা, চাপ দেয়া, ঘষাঘষি করা যাবে না।

- ব্যবহৃত তুলা, রুমাল বা কাপড় ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া

- বার বার হাত ভাল করে সাবান দিয়ে ধোয়া।

 

ক্যালাজিয়নঃ

স্টাই এর মতই দেখতে ভিন্ন একটি রোগ হল ক্যালাজিয়ন। আমাদের চামড়া অসংখ্য তৈল গ্রন্থি ও ঘাম গ্রন্থি দ্বারা নিস্রিত ঘাম ও সেবাম দ্বারা আর্দ্র ও মসৃন থাকে। এই সেবাম যে গ্রন্থিতে তৈরী হয় তার নাম সেবাসিয়াস গ্লান্ড। চোখের পাতার সেবাসিয়াস গ্রন্থির নালী কোন কারনে বন্ধ হয়ে গেলে গ্রন্থিটি ফুলে গিয়ে স্টাই এর মতই সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই তা আপনা আপনি ঠিক হয়ে যায় আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা কেটে পরিষ্কার করতে হয়। তবে এতে ব্যাথা, চোখ লাল, পুজ ইত্যাদি সাধারনত হয় না।

 

যা যা মনে রাখতে হবেঃ

১। চোখের পাতার পাপড়ীর গোড়ায় যে ইনফেকশন তাকে স্টাই বলে, যা সাধারনত স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ইনফেকশনের ফলে হয়।

২। স্টাই হলে তা ঘষা, চাপ দেয়া উচিত না, কেননা তাতে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।

৩। চিকিৎসার জন্য গরম, ভেজা সেক দেয়া, প্যারাসিটামল, এন্টিবায়োটিক মলম ব্যবহার, এন্টিবায়োটিক ঔষধ ও প্রয়োজনে কেটে পুজ বের করতে হয়ে।

 

 

06-01-2013 রোগ ব্যাধি

 

রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা

 

 

রেটিনার ক্ষতি এবং দেখতে সমস্যা করে এমন কতকগুলো রোগের সমষ্টিগত নাম রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা। রেটিনা চোখের পিছনের দিকে অবস্থিত। রেটিনাতে বিশেষ ধরনের আলোক সংবেদী কোষ থাকে যার নাম রডস্‌ এবং কোন। এই স্বচ্ছ আলোক সংবেদী কোষ গুলো কোন বস্তুর আকার, চেহারা, রং, নড়াচড়া অপটিক নার্ভ এর মাধ্যমে ব্রেইনে তথ্য পাঠায়। রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা শুরুতে যে সব সমস্যা দেখা যায় তা হল- রাতে কম দেখা, ডিম লাইট  বা মৃদু আলোতে দেখতে সমস্যা, দূরের বস্তু দেখতে না পাওয়া, দূরের ঘনবস্তু বা সিড়ির সঠিক  আকার আকৃতি নির্ণয় করতে ব্যর্থ হওয়া ।

 

উপসর্গ ও চি‎‎‎‎‎‎হ্ণসমূহ :

যেহেতু এই রোগ ক্রমাগত বাড়ে তাই সময় যতই যায় এটা ততই খারাপ হাতে থাকে।

শুরুতে যে সব উপসর্গ দেখা যায় :

·        রাতে কম দেখা;

·        মৃদু আলোতে দেখতে সমস্যা;

·        দূরের বস্তু দেখতে না পারা;

·        ঘন বস্তুর আকার সঠিকভাবে নিরুপন না করা।

 

রেটিনায় কায়েক লক্ষ কোষ থাকে যাদেরকে বলে রডস্এবং কোন্। তাদের চেহারার  কারণে তাদের এই নাম দেওয়া হয়েছে । রেটিনায় ভেতরের তলায় কোন্স এর তুলনায় রড্স কোষ বেশি থাকে। রেটিনার কিনারা অঞ্চলে রড্স বেশি পরিমানে থাকে যা কোন বস্তুর উপর,নিচ এবং পার্শ্বে দেখতে সাহায্য করে। রড্স মূলত মৃদু আলোতে দেখতে সাহায্য করে।

কোন্‌স মূলত রেটিনার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং কোন বস্তুর রং ও সূক্ষাতিসুক্ষ অবস্থান জানায়।

রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসার প্রথম উপসর্গ-রাতকানা।এর ফলে তার দূরবর্তী ভিশন নষ্ট হয়।সাধারণত আলোক সংবেদী রড কোষ গুলো প্রথমে নষ্ট হয়। যত কোষ মারা যায়-তত বেশী তার দূরবর্তী ভিশন নষ্ট হয়।কেবলমাত্র বিন্দু কোষ ভাল থাকে। একে বলে টানেল ভিশন।

এর ফলে যে সমস্যা হয় তা হল-

·        বর্ণের পার্থক্য;

·        পড়া;

·        কোন বস্তু চিনতে সমস্যা হয়।

লেন্স আইরেশের পিছনে অবস্থিত। এই স্বচ্ছ অংশ সুক্ষ্ণ বিষয় দেখতে সাহায্য করে।ক্যাটারেক্ট হল এই রোগের একটি কমপ্লিকেশন।শল্য চিকিৎসা করালেও অনেক সময় ক্যাটারেক্ট সম্পূর্ণ ভাল হয় না।

প্রকারভেদ :

প্রায় সব ক্ষেত্রে,রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা ১০০ প্রকারের বিভিন্ন জিনের যে কোন একটি দিয়ে হয়ে থাকে।বলা হয়, এই সব জীবন রেটিনায় প্রোটিন উপাদানকে ভুলভাবে তৈরী করে, ফলে রড্‌স বা কোন্‌স কোষগুলো মারা যায়।তিনটি বিষয় এর সাথে জড়িত :

১। অটোসোমাল রিসেসিভ : পিতা-মাতা সুস্থ কিন্তু তারা অসুস্থ্য জীন বহন করে, ফলে তাদের ৫০ শতাংশ শিশুদের জীবন বহন করে (ক্যারিয়ার) এবং ২৫ শতাংশ রেটিনাইটিস পিগমের্‌টাসাতে ভূগে।

পিতা-মাতা আত্মীয় হলে এটা হয়।

২।এক্স-লিংক্‌ড রিসেসিভ : খুবই কম ঘটে।

 

রোগ নির্ণয় :

রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা- নির্ণয়ের জন্য রোগের কিছু পরীক্ষা হয়। যেমন : অপথাল্‌মোস্কোপ যন্ত্রের সাহায্যে রেটিনাকে কালো পর্দা দ্বারা আবৃত দেখা যায়, যা রোগের  নামের সাথে মিলে যায়।

 

প্রায়শই ইলেক্টোরেটিনোগ্রমের সাহায্যে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় ।

অন্যান্য যে সমস্যা- পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যায় তা হল :

·        ভিজুয়াল ফিল্ড পরীক্ষা;

·        কালার ভিশন পরীক্ষা;

·        ফ্লোরেনেসেন্স এনজিওগ্রাম।

 

চিকিৎসা :

দুভার্গবশত,রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসার কোন চিকিৎসা এখনও জানা যায়নি।

ভিটামিনের ভূমিকা :কোন কোন গবেষনায়,ভিটামিন এবং বিশেষ কিছু ফ্যাটি এসিড এর ব্যবহার করার কথা বললেও তেমন কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি।

 

জিন থেরাপি :

রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসার চিকিৎসার জন্য ক্রমাগত গবেষনা হচ্ছে। মনে করা হয় যে,যে জিনের ভূলের জন্য এই রোগ হয় তাই জীন সঠিকভাবে রিপ্লেস করালে এ রোগ থেকে মুক্তি সম্ভব। কিন্তু বর্তমানে এ ধারণা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

যা মনে রাখা দরকারঃ

১। রেটিনার ক্ষতি এবং দেখতে সমস্যা করে এমন কতকগুলো রোগের সমষ্টিগত নাম রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা।

২। শুরুতে যে সব উপসর্গ দেখা যায় তা হল - রাতে কম দেখা, মৃদু আলোতে দেখতে সমস্যা, দূরের বস্তু দেখতে না পারা, ঘন বস্তুর আকার সঠিকভাবে নিরুপন না করা।

৩। রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসার কোন চিকিৎসা এখনও জানা যায়নি। তবে রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসার চিকিৎসার জন্য ক্রমাগত গবেষনা হচ্ছে।

 

06-01-2013 রোগ ব্যাধি

 

রেটিনাল ডিটাচমেন্ট

আমাদের চোখের  অক্ষিগোলকের সবচেয়ে ভেতরের আবরণী স্তরটির নাম হলো রেটিনা। চোখের এই অংশটিই হল আলোক সংবেদনশীল এবং এখানে আলো পড়লেই স্নায়ুর মাধ্যমে তা মস্তিস্কে পৌছায় ও আমরা বস্তুটি দেখতে পাই। আলোক সংবেদনশীল কোষগুলির নাম রড ও কোন- যা মূলত এদের আকৃতির উপর নির্ভর করে নামকরণ করা। রড কোষ অন্ধকারে হালকা আলোতে দেখতে সাহায্য করে। আর কোন কোষগুলি উজ্জ্বল আলো, বিভিন্ন বর্ণ দেখতে সাহায্য করে।

 

আলো প্রথমে কর্নিয়ায় পড়ে, তার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে লেন্সের দ্বারা ফোকাস হয়ে রেটিনার পৌছায়। সেই আলোক তথ্য রেটিনার পেছনের অংশ থেকে অপটিক নার্ভ হয়ে মস্তিস্কে পৌছে।

          রেটিনাল ডিটাচমেন্ট হল রেটিনার স্তরটি কোন কারণে পরিবর্তি স্তর (কোরয়েড) থেকে ছুটে আলাদা হয়ে যাওয়া। সঠিক সময়ে সঠিকভাবে চিকিৎসা না করালে ধীরে ধীরে পুরো রেটিনা পরবর্তি স্তর থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং আলোক তথ্য মস্তিস্কে পাঠাতে ব্যার্থ হয়। ফলে পুরোপুরি  অন্ধ হয়ে যায়।  বৃদ্ধ বয়সে এই সমস্যা বেশি হয়। গড়ে প্রতি ১০০০ জনে ১ জন এই সমস্যায় ভোগেন অল্প বা বেশি মাত্রায়।

 

লক্ষনসমূহঃ

রেটিনাল ডিটাচমেন্ট লক্ষনসমূহ হল-

-         চোখে ঝাপসা দেখা, চোখে ময়লা  ভাসতে দেখা

-         দৃষ্টির সীমানা বরাবর উজ্জল আলোর ঝলকানীর মত দেখা

-         দৃষ্টি সীমায় কোথাও কোথাও কালো, ঝাপসা, অন্ধকার, ছায়া ছায়া দেখা

-         পুরোপুরি দৃষ্টি শক্তি নষ্ট হওয়া।

 

কিভাবে হয়ঃ 

রেটিনাল ডিটাচমেন্টে দৃষ্টি সমস্যা নির্ভর করে ডিটাচমেন্ট কোন অংশে হয়েছে এবং এর মাত্রা কতটুকু তার উপর। যেমন- রেটিনার ঠিক মাঝখানে (ম্যাকুলা) ডিটাচমেন্ট হলে দৃষ্টির মাঝখানে কালো দেখাবে। মূলত রেটিনার স্থান ছিড়ে গেলে তার মাঝখানে তরল জমা হয় এবং তা রেটিনার পেছনে জমতে থাকে ও ধীরে ধীরে ছড়াতে থাকে। ফলে আস্তে আস্তে পুরো রেটিনা পরবর্তি স্তর থেকে আলাদা হতে থাকে। এর মূল কারণ হল চোখের মাঝখানে থাকা  à¦œà§‡à¦²à¦¿à¦° ন্যায়  ভিট্রিয়াস ইউমারের সংকোচন, ভিট্রিয়াস টিউমার চোখকে দৃঢ় রাখে, কিন্তু যখন তা সংকুচিত হয়, তা রেটনাকে ভেতরের দিকে টান দেয়। রেটিনা ছিড়ে যাবার ফলে সেখানে যে রক্তক্ষরণ হয়, সেজন্য চোখে ফ্লোটার্স(কালো কালো দাগ) দেখা দেয়। যদি হঠাৎ বেশি স্থান ছিড়ে যায় বা আলাদা হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে পুরো দৃষ্টি

 à¦¶à¦•à§à¦¤à¦¿ নষ্ট হয়ে যায়।

 

এছাড়াও কোন আঘাত বা প্রদাহের কারণেও রেটিনাল ডিটাচমেন্ট হতে পারে।

 

রিস্ক ফ্যাক্টরঃ

যে যে অবস্থায় রিটনাল ডিটাচমেন্ট ঝুঁকি বেশি তা হল-

-         পারিবারিকভাবে এই রোগের ইতিহাস থাকলে।

-         হ্রস্য দৃষ্টি (দূরের জিনিস দেখতে না পাওয়া)।

-         পূর্বে চোখের অপারেশন (যেমন ছানি অপারেশন)

-         চোখে আঘাত।

-         বয়স অধিক হলে।

-         অন্য চোখে আগে রেটিনাল ডিটাচমেন্ট হলে ভাল চোখেও হবার ঝুঁকি বেশি।

সম্ভাব্য জটিলতাঃ 

সঠিক চিকিৎসা না করালে দৃষ্টি শক্তি নষ্ট হয়। এ ছাড়াও যে সব জটিলতা দেখা দিতে পারে।

-         চোখের ভেতরে রক্তপাত (এতে স্বচ্ছ্ব ভিট্রিয়াস ঘোলা হয়ে যায়)

-         চোখের ভেতরের প্রেসার বেড়ে যাওয়া।

-         চোখের ছানি পড়া ইত্যাদি।

রোগ নির্ণয়ঃ

ডাক্তার চোখের বিভিন্ন পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করেন।

-         ভিশন টেস্ট

-         রেটিনাল এক্সামিনেশন

-         আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান।

 

চিকিৎসাঃ

ছিড়ে যাওয়া রেটিনা জোড়া লাগানো ও ডিটাচমেন্ট বন্ধ করার জন্য নিচের চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রযোজ্য।

১। ফটোকোয়াসুলেশনঃ লেজার সার্জারী। লেজার রশ্মি দিয়ে ছেড়া রেটিনাল অংশ পুড়িয়ে জোড়া লাগানো হয়। এতে ঐ অংশটিতে স্কার টিস্যু তৈরী হয়। ঐ স্কার (শক্ত অংশ) রেটিনাকে নিচের লেয়ারের সাথে যুক্ত রাখে, ডিটাচমেন্ট রোধ করে।

২। ক্রায়োপেক্সিঃ ১টি ছোট অত্যন্ত ঠান্ডা যন্ত্র (ক্রায়োপ্রোব)  ছেড়া অংশে লাগিয়ে স্কার টিস্যু তৈরী করা হয় যা ছেড়া অংশকে জোড়া লাগায় ও পার্শ্ববর্তি স্তরের সাথে যুক্ত করে দেয়।

৩। নিওমেটিক রেটিনোপেক্সিঃ এ ক্ষেত্রে ভিট্রিয়াসে গ্যাস দেয়া হয় যা চাপ দিয়ে রেটিনাকে পার্শ্ব স্তরের সাথে যুক্ত রাখে। এটি সাধারণত অল্পমাত্রার ডিটাচমেন্ট রোধ করে।

৪। ভিট্রেকটোমিঃ  ভিট্রিয়াসকে বের করে সেখানে গ্যাস বাবল প্রবেশ করানো হয়। গ্যাসের চাপে রেটিনা তার নির্দিষ্ট স্থানে ফেরত যায়। পরবর্তিতে ধীরে ধীরে ঐ গ্যাস শোষিত হযে যায়। যখন ভিট্রিয়াসের মধ্যে রক্তক্ষরণ হয়ে ঘোলা হয়ে যায় বা ভিট্রিয়াসে ময়লা বা জীবাণু সংক্রমিত হয় (মারাত্মক আঘাত বা জটিল অবস্থায়) তখন ভিট্রিয়াস অপসারণ করে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

 

দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবঃ  এই রোগের চিকিৎসার ফলাফল বেশ ভাল। শতকরা ৯০ জন রোগী সুস্থ হয়।  মাঝে মাঝে ২য় দফা অপারেশনের প্রয়োজন হয়। দৃষ্টি পুরোপুরি ফিরে পেতে কয়েকমাস সময় লাগে তবে কিছু দৃষ্টি সমস্যা থেকে যেতে পারে। অনেক  ক্ষেত্রে চশমা ব্যবহারের প্রয়োজন হয়, ছানি অপারেশন করতে হয়।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

১. অক্ষিগোলকের সবচেয়ে ভেতরের আবরণী স্তরটি হলো রেটিনা যেখানে আলো পড়লেই স্নায়ুর মাধ্যমে তা মস্তিস্কে পৌছায় ও আমরা বস্তুটি দেখতে পাই।

২. রেটিনার স্তরটি কোন কারণে পরিবর্তি স্তর -কোরয়েড থেকে ছুটে আলাদা হয়ে গেলে তাকে রেটিনাল ডিটাচমেন্ট বলে।

৩. চোখে আঘাত, বয়স অধিক হলে, পূর্বে চোখের অপারেশন হলে অথবা অন্য চোখে আগে রেটিনাল ডিটাচমেন্ট হলে ভাল চোখেও রেটিনাল ডিটাচমেন্ট হবার ঝুঁকি থাকে।

৪. সঠিক চিকিৎসার ফলে শতকরা ৯০ জন রোগী সুস্থ হয়, তবে মাঝে মাঝে ২য় দফা অপারেশনের প্রয়োজন হয়।

 

06-01-2013 রোগ ব্যাধি

 

কর্নিয়া প্রতিস্থাপন বা দান করা :

একজনের দান করা কর্নিয়া একজন দৃষ্টিহীন কে দৃষ্টি দিতে পারে। যে কেউ মৃত্যুর পর তার কর্নিয়া দান করতে পারে, তবে তার ইচ্ছার কথা তার পরিবারকে অবশ্যই জানাতে হবে। যেসব রোগ কার্নিয়াকে ক্ষতিগ্রস্থ করে সেগুলো হলো কেরাটোকোনাস, Bullus keratopathy  à¦à¦¬à¦‚ hyperetic eye disease।  à¦ ছাড়া  কর্নিয়া যখন দুর্ঘটনায় ছিদ্র হয়ে যায়, তখনও কার্নিয়া প্রতিস্থাপনের দরকার হয়।

কর্নিয়া হলো একটি ডোম আকৃতির জানালা যেটি চোখের সামনের দিক আবৃত রাখে এবং আলোকে রেটিনার মধ্যে প্রবেশ করতে দেয় এবং এর কারণে আমরা দেখতে পাই। সুস্থ  দৃষ্টির জন্য একটি সুস্থ  à¦•à¦°à§à¦¨à¦¿à§Ÿà¦¾ প্রয়োজন। যখন একজন দাতার কর্নিয়াল টিস্যু একজন গহীতার কর্নিয়াতে প্রতিস্থাপন করা হয়, তখন তাকে কর্নিয়ার প্রতিস্থাপন বলে।মরনোত্তর চক্ষু দান বলতে কর্নিয়ার প্রতিস্থাপনকেই বোঝায়,   à¦¸à¦®à§à¦ªà§‚র্ণ চোখ প্রতিস্থাপন করা সম্ভব নয়।

কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের জন্য কিছু শর্ত -

একজনের কর্নিয়া তখনই প্রতিস্থাপন করতে হবে, যখন তার কার্নিয়া ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং সে সঠিকভাবে দেখতে পাবে না। সেগুলো রোগ কার্নিয়াকে ক্ষতিগ্রস্থ করে সেগুলো হলো-

১। কেরাটোকোনাস: এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে কর্নিয়ার কেন্দ্রবিন্দু চিকন হয়ে আসে এবং সামনের দিকে উচু হয়ে যায়। যার কারণে আলো সঠিকভাবে মিলিত হতে পারে না এবং চোখে সঠিকভাবে দেখা যায় না।

২। বোলাস কেরাটোপ্যাথি:

এ অবস্থায় কর্নিয়া ফুলে ফোসকার মত হয়ে যায়। এর কারণে কর্নিয়া ঘোলা হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে তার ¯^”QZv হারিয়ে ফেলে।

৩। ফচস ডিসট্রোফি: এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে কর্নিয়ার কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

৪। হারপেটিক ডিজিজঃ

হারপিস ভাইরাসের জন্য কর্নিয়াতে স্কার তৈরী হয়।

৫। ছিদ্র হওয়াঃ কর্নিয়া যদি এক্সিডেন্টের কারণে অথবা কোন রোগ যেমন- রিউমাটয়েড আরথ্রাইটিসের  à¦•à¦¾à¦°à¦£à§‡ ছিদ্র হয়ে যায়, তখন কার্নিয়া প্রতিস্থাপন করা জরুরী।

কর্নিয়ায় প্রতিস্থাপনের সফলতা:

কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের পরের সফ্লতার হারঃ

১ বছর পর- ৯১.২%

৪ বছর পর- ৮০.০০%

কিছু অবস্থার ক্ষেত্রে (ক্যারাটোকোনাস) এর সফলতার মাত্রা শতকরা ৯৮.১ ভাগ।

কর্নিয়া দান:

যখনই কর্নিয়া দানের জন্য অনুমতি নেয়া হবে, তখন অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, অসুস্থ মানুষের মৃত্যুর ১২ ঘন্টার মধ্যেই  কর্নিয়া অপারেশনের মাধ্যমে বের করে আনতে হবে।

কিভাবে একজন দাতা হওয়া যায়:

যতি কেউ একজন তার মৃত্যুর পর কর্নিয়া দান করতে চায়, সেটা অবশ্যই তার পরিবারকে জানাতে হবে। কারণ এটি কোন হাসপাতালেরই রুটিন মাফিক কোন নিয়মের মধ্যে পড়ে না, যে চক্ষুদানের জন্য সকল পরিবারকে আবেদন জানাবে। এ রকম না হলে মৃত্যুর পর যে কেউ হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারে।

তবে এর জন্য ফরমাল রেজিষ্ট্রেশন পূরণের কোন প্রয়োজন নেই। একজন দাতা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দান রেজিষ্ট্রার-এ তার নাম রেজিষ্ট্রেশন করতে পারে।

কিছু জিনিস মনে রাখা প্রয়োজন:

-    কর্নিয়া তখনই প্রতিস্থাপন করতে হবে যখন এটি ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

-    শুধুমাত্র কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা সম্ভব, স্মপূর্ণ চক্ষু প্রতিস্থাপন করা সম্ভব।

-    কেবল মাত্র মানুষের চোখের কর্নিয়াই অন্য একজন মানুষের চোখে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব।

-    যদি একজন দাতা হতে চায়, তবে তার এ ইচ্ছার কথা অবশ্যই তার পরিবারকে জানাতে হবে।

 

 

 

06-01-2013 রোগ ব্যাধি

 

অপটিক নিউরাইটিস :

অপটিক নিউরাইটিস-এর অন্য নাম রেট্রোবালবার নিউরাইটিস।এটি মূলত অপটিক নার্ভের প্রদাহজনিত রোগ। এর ফলে চোখে ঝাপসা দেখা, ধুসর রং দেখা এবং চোখের ভেতরে পেছন দিকে ব্যাথা অনুভূত হয়। বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের আক্রমণে এবং বিশেষ কিছু রোগে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অপটিক নার্ভ দ্বারা চোখ মস্তিস্কের  à¦¸à¦‚গে যুক্ত। চোখের পেছনে রেটিনায় যখন কোন বস্তুর প্রতিবিম্ব তৈরী হয়, তা অপটিক নার্ভের মাধ্যমে মস্তিস্কের ভিজুয়াল সেন্টারে প্রতিফলিত হয় এবং আমরা বস্তুটির আকার আকৃতি, বর্ণ ইত্যাতি বুঝতে পারি। এই অপটিক নার্ভের প্রদাহ হলে চোখে ঝাপসা দেখা, অস্পষ্ট দেখা, চোখে ব্যাথা হয়। এই রোগ যে কোন বয়সেই হতে পারে, তবে সাধারণত ৩০-৩৫ বছর বয়সে বেশি দেখা যায়।

 

লক্ষনসমূহ :

o       চোখে ঝাপসা দেখা, হালকা দেখা।

o       ধূসর  রঙের ঝাপসা ছবি দেখা।

o       চোখের পেছন দিকে ব্যাথা, বিশেষত চোখ ঘুরানোতে ব্যাথা বেশি।

সাধারণত ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে এক চোখ আক্রান্ত হয়, ৩০ ভাগ  à¦•à§à¦·à§‡à¦¤à§à¦°à§‡ দুচোখ আক্রান্ত হতে পারেবিস্তারিত

-->

05-01-2013 রোগ ব্যাধি

গ্লুকোমা:

 

গ্লুকোমা হল চোখের বিশেষ রোগ বা রোগ সমষ্টি যা ধীরে ধীরে অপটিক নার্ভকে ক্ষতিগ্রস্ত বা নষ্ট করে। মূলত চোখের ভেতরে একুইয়াস হিউমার নামক তরলের যথাযথ প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে চোখের ভেতরের প্রেসার বা চাপ বেড়ে যায়,এবং গ্লুকোমা দেখা দেয়। এই বর্ধিত প্রেসারের কারণে অপটিক নার্ভ নষ্ট হতে থাকে এবং দৃষ্টি সীমা সংকুচিত হয় ও ধীরে ধীরে দৃষ্টিহীন হয়ে পড়ে। যে কোন বয়সেই গ্লুকোমা হতে পারে,তবে বয়স বাড়লেই বেশি হয়।

 

চোখের অভ্যন্তরীন চাপ বৃদ্ধি:

চোখের ভেতরের অংশটি লেন্স দ্বারা ২ ভাগে বিভক্ত।

ক) সম্মুখ প্রকোষ্ঠ 

খ) পশ্চাদ প্রকোষ্ঠ। 

সম্মুখ প্রকোষ্ঠে দৃশ্যমান অংশ যেমন- আইরিশ, একুইয়াস হিউমার ইত্যাদি থাকে। এই একুইয়াস হিউমার ভেতরেই তৈরী হয় এবং নালী পথে বেরিয়ে আসে।  একটি নির্দিষ্ট চাপ বজায় রেখে এই একুইয়িস হিউমার চোখের ভেতরের অংশসমূহকে খাদ্য ও অক্সিজেন সরবরাহ করে। কোন কারণে নিষ্কাষণ নালী বন্ধ হলে বা সরু হয়ে গেলে প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় ও চোখের অভ্যন্ত্রীন চাপ বেড়ে যায়। একেই গ্লুকোমা বলে।

 

 

গ্লুকোমায় অপটিক নার্ভ নষ্ট হতে পারে:

 

গ্লুকোমা হলে অভ্যন্তরীন চাপ বেড়ে যায় এবং এই বাড়তি চাপের ফলে অপটিক নার্ভ, যা কিনা রেটিনা থেকে প্রাপ্ত দৃস্টি বার্তা মস্তিস্কে পৌছায়,তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এর ফলে ২ ধরনের দৃষ্টি সমস্যা দেখা দেয়। যেমন:

·        দৃষ্টি সীমার চতুর্দিকে ঝাপসা হয়ে আসে। ফলে দৃষ্টি সংকুচিত হয়েপড়ে

·        দৃষ্টি সীমার মাঝখানে কালো  দৃষ্টিহীন অংশের সৃষ্টি হতে পারে।

 

লক্ষণ এর প্রকাশ:

গ্লুকোমা ২ ধরনের হয় এবং এর লক্ষনের প্রকাশও ধরনের উপর নির্ভর করে। যেমন:

ক. ক্রনিক বা ওপেন এঙ্গেল গ্লুকোমা: ধীরে ধীরে রোগ সৃষ্টি হয়। অভ্যন-রীণ চাপ বৃদ্ধি পায় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী বুঝতে পানে রা, যতক্ষণ না তার দৃষ্টি সরু হয়ে আসে।

 

 

  

 

খ. ক্লোজড এঙ্গেল গ্লুকোমা: ব্যাথা হয় এবং খুব দ্রুত দৃষ্টি সমস্যা দেখা দেয়।

 

রিস্ক ফ্যাক্টর :

যে কারও যে কোন বয়সে গ্লুকোমা হতে পারে। রিস্ক ফ্যাক্টরসমুহ হল:

১.       বয়স ৪০ এর  অধিক

২.       বংশীয় গ্লুকোমার ইতিহাস

৩.       হ্রাস্যদৃষ্টি

৪.       ডায়বেটিস

 

স্থায়ী দৃষ্টি শক্তি নষ্ট হওয়া:

গ্লুকোমায় খুব দ্রুত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা জরুরী। এই রোগের জন্য স্কিনিং চেস্ট আছে যা দ্বারা গ্লুকোমা হচ্ছে কিনা বোঝা যায়। তাছাড়াও চক্ষু বিশেষজ্ঞগণ সহজেই রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করতে পারেন। তাই রোগের শুরুতেই রোগ নির্ণয় ও সঠিক চিকিৎসা জরুরী। চিকিৎসার পূর্বেই যদি কোন দৃষ্টি-ত্রুটি হয়ে যায়,তা সাধারণত ভাল হয় না। ঔষধ,চোখের ড্রপ দ্বারা আর কোন কোন ক্ষেত্রে অপারেশন গ্লুকোমার চিকিৎসা করা হয়।

 

গ্লুকোমা-রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা:

অনেকত ক্ষেত্রেই আক্রান্ত ব্যক্তিরা বুঝতে পারেন না, যতক্ষণ না তাদের দৃষ্টি সংকুচিত হয়ে আসে  এবং স্থায়ী ত্রুটি তৈরী হয়ে যায়। খোদ অস্ট্রেলিয়ায় মত উন্নত রনাষ্ট্রের  শিক্ষিত ব্যক্তিদের মধ্যেও সম্ভাব্য ২ লক্ষাধিক রোগীর গ্লুকোমা।  আর অর্ধেকের বেশি ব্যক্তি সে সম্পর্কে সচেতন নন। সঠিক চিকিৎসা না হলে অন্ধত্ব বরণ করতে হয়।

 

গ্লুকোমার ক্ষেত্রে পারিবারিক রোগের ইতিহাস জানা জরুরী:

২ ধরনের গ্লুকোমার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয় ওপেন এঙ্গেল গ্লুকোমা এবং রোগীদের পরিবারের বাবা,মা,ভাই, বোন,মামা, খালা এদের কারও কারও একই ধরনের গ্লুকোমা থাকতে দেখা যায় এবং পরিবারের কারও গ্লুকোমা থাকলে ৬-১০ গুণ রিস্ক ফ্যাক্টর বেশি থাকে। তাই ৪০ বছরের বেশি বয়স হলেই চক্ষু পরীক্ষা করা জরুরী। এ ক্ষেত্রে

·        চোখের ভেতরের প্রেসার বা চাপ পরীক্ষা করা ও

·        ভিজুয়াল  ফিল্ড এসসমেন্ট করা জরুরী।

 

হাইরিস্ক গ্রুপ:

যদিও যে কোন বয়সে গ্লুকোমা হতে পারে তবু তাদের রিস্ক বেশি যাদের

·        বয়স ৫০ এর উর্ধে।

·        পারিবারিক গ্লুকোমার ইতিহাস আছে

 

গ্লুকোমায়  দৃষ্টি সংকীর্ণ হওয়া:

গ্লুকোমার ফলে খুব ধীরে ধীরে দৃষ্টি শক্তি হ্রাস পতে থাকে। সাধারণত গ্লুকোমায় আক্রান্ত ব্যক্তির দৃষ্টি শক্তি মাঝখানে অটুট থাকে, কিন্তু চারপাশ থেকে ক্রমশ কমতে শুরু করে। সমস্যা হলো কমার সাথে বা চোখের চাপ বৃদ্ধির সাখে কোন প্রকার ব্যাথা বা অসুবিধা থাকে না,যার ফলে রোগী বুঝতে পারে না। অন্যদিকে সুস্থ্য চোখ চেষ্টা করে দৃষ্টি প্রসারিত করে দেখতে। অবস্থার যখন চরম অবনিত হয় তখন দৃষ্টি টানেলের মত সরু হয়,শুধু সম্মুখের মাঝখানের বস্তু দেখা  যায়,চারপাশ অন্ধকার,তখন আর দৃষ্টি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না।

 

চিকিৎসা:

চিকিৎসায় হারানো দৃষ্টি ফেরত আসে না। তবে রোগের অগ্রগতি রোধ করা যায়। যেমন:

১। চোখের ড্রপ ব্যবহার করা

২। খাওয়ার ঔষধ

৩। লেজার সার্জারী

৪। সার্জারী

 

যা মনে রাখতে হবে:

১. চোখের ভেতরে চাপ বৃদ্ধি পেলে গ্লুকোমা হয়।

২. গ্লুকোমা ২ ধরনের ১টি খুব ধীরে ধীরে হয়,অপরটি হটাৎ,খুব দ্রুত হয়।

৩. দ্রুত সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ প্রয়োজন। কেননা চিকিৎসার পূর্বে দৃষ্টি নষ্ট হলে তা আর ঠিক  হয় না।

 

 

05-01-2013 রোগ ব্যাধি

চোখ

দেখার অঙ্গ হলো চোখ। বিম্ব বা প্রতিচ্ছবি চোখের পিছনে রেটিনাতে পড়ে। অপটিক স্নায়ুর মাধমে এই তথ্য মস্তিস্কে যায়। চোখের অন্যান্য অংশ হল - কর্নিয়া,আইরিশ, পিউপিল, লেন্স এবং কর্নিয়া। চোখের প্রধান সমস্যা হল-ক্যাটারেক্ট,কনজাংটিভাইটিস, গ্লুকোমা, দেখতে সমস্যা,এমনকি অন্ধত্ব।

 

চোখের বিভিন্ন অংশঃ

চোখের সামনের দিক থেকে অংশগুলো নিম্নরূপ:

১। কনজাংকটিভা- অতি সূক্ষ্ণ পর্দা চোখকে আবৃত করে রাখে।

২। স্ক্লেরা- চোখতে সাদা দেখায়।

৩। কর্নিয়া- আলোর প্রবেশ পথ।

৪। একুইয়াস হিউমার- কর্নিয়ার পিছনের অংশে বিদ্যমান  তরল পদার্থ।

৫। আইরিশ- চোখের মাংশল অংশ এবং বর্নিল অংশ

৬। পিউপিল- আইরিশ মাঝখানে অবস্থিত গর্ত

৭। লেন্স-

৮। ভিট্রিয়াস হিউমার- থকথকে, জ়েলীর মত তরল পদার্থ যা আইবলকে ঘিরে রাখে।

৯। রেটিনা- চোখের পিছনের বাঁকানো অংশ যাতে আলোক সংবেদী কোষ - রডস্‌ এবং কোনস থাকে

 

অপটিক নার্ভ:

রেটিনা থেকে ব্রেইনে তথ্য আদান প্রদান।

মানুষের বাইনোকুলার ভিশন থাকে। ডান এবং বাম চোখ প্রত্যেক বস্তুকে সামান্য ভিন্ন দেখে। ব্রেইন একে একত্রিত করে একটি ত্রিমাত্রিক উপস্থাপন করে। আইরিশের পিছনে লেন্স থাকে যা আলো এডজাস্ট করে। লেন্সে সুক্ষ্ণ মাসল থাকে যা  দূরের  বা কাছের বস্তুকে দেখতে সাহায্য করে।

বর্নিল আইরিশ চোখে আলোক প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে। আইরিশ অন্ধকারে পিউপিলকে বড় করে যাতে বেশি আলো প্রবেশ করে । উজ্জ্‌ল আলোতে আইরিশ পিউপিলকে ছোট করে ফেলে।

 

অন্ধ বিন্দু:

রেটিনার পিছনের অংশ যেখানে অপটিক নার্ভ থাকে সেখানে রডস্‌ এবং কোনস থাকে না একে বলে চোখের অন্ধ বিন্দু।

 

অশ্রু:

অশ্রু চোখকে আর্দ্র রাখে এবং  শুকনো হতে বাধা দেয়। প্রতিবার চোখ পিট পিট করলে কিছু পরিমাণ অশ্রু চোখকে ভিজিয়ে দেয়। আই লেন্সে জমে থাকা ময়লা এর মাধ্যমে বের হয়ে যায়।

চোখের বিশেষ কিছু রোগ হয়। যেমন:

১। ক্যাটারেক্ট- লেন্স ঘোলাটে হয়ে যায়।

২। কনজাংটিভাইটিস- চোখের আবৃত অংশের প্রদাহ

৩। গ্লুকোমা- আআবিলের তরল জমে যাওয়া

৪। দৃষ্টি ত্রুটি- কাছের/দূরের বস্তু দেখতে সমস্যা হওয়া।

 

যা মনে রাখতে হবে:

১। দেখার অঙ্গ হলো চোখ।

২। কনজাংকটিভা,স্ক্লেরা, কর্নিয়া, একুইয়াস হিউমার, আইরিশ, পিউপিল, লেন্স, ভিট্রিয়াস হিউমার, রেটিনা ইত্তাদি অংশগুলো নিয়ে চোখ গঠিত।

৩। ক্যাটারেক্ট,কনজাক্টিভাইটিস,গ্লুকোমা, অন্ধত্ব, দৃষ্টি ত্রুটি ইত্তাদি হলো চোখের প্রধান সমস্যা।

 

 

 

02-01-2013 রোগ ব্যাধি

ফ্যাকো সার্জারী

 à¦šà§‹à¦–ের ছানি অপারেশনের আধুনিকতম প্রযুক্তি

ছানিরোগ কী?

আমাদের চোখের ভেতর ক্যামেরার মতো স্বচ্ছ একটি লেন্স আছে, যার ভেতর দিয়ে আলোরকশ্মি বাঁক খেয়ে চোখের সংবেদনশীল অংশ রেটিনায় পড়ে বলেই যে কোনো বস্তু আমরা দেখতে পাই। যে কোনো কারণে এই স্বচ্ছ লেন্স অস্বচ্ছ হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়াকে ছানি রোগ বা ক্যাটারাক্ট বলা হয়।

 

ছানিরোগের চিকিৎসাঃ

কোনো ওষুধ ব্যবহার করে অথবা চশমা দিয়ে ছানিরোগের চিকিৎসা সম্ভব হয় না। অপারেশনের মাধ্যমে ছানি অপসারণই হলো একমাত্র চিকিৎসা।

 

বিভিন্ন অপারেশনঃ

আজকাল অস্বচ্ছ লেন্স অপসারণ করে কৃত্রিম লেন্স বসিয়ে দেয়া হয়।

·        ফ্যাকো সার্জারি (সেলাইবিহীন)

·        এসআইসিএস (সেলাইবিহীন)

·        ইসিসিই (প্রচলিত সেলাইযুক্ত)

 

ফ্যাকো সার্জারিঃ

প্যাকো সার্জারি হলো ছানি অপারেশনের আধুনিকতম প্রযুক্তি। এই পদ্ধতিতে চোখ না কেটে একটি ছোট ছিদ্রের মধ্য দিয়ে ফ্যাকো মেশিনের সহায়তায় অস্বচ্ছ লেন্সকে ভেঙে বের করে আনা হয়। তারপর তার পরিবর্তে কৃত্রিম লেন্স বসিয়ে দেয়া হয়।

 

 

 

ফ্যাকো সার্জারির সুবিধাঃ

·        ব্যথামুক্ত

·        রক্তপাতহীন

·        না কেটে ছোট ছিদ্রের মধ্য দিয়ে করা হয় বলে পরবর্তীকালে চোখের পাওয়ার পরিবর্তন কম হয়।

·        দ্রুত সেরে ওঠা যায় বলে হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন হয় না।

·        কখানো কখনো অপারেশনের  আগে অবশের ইনজেকশন  এবং অপারেশন পরবর্তী ব্যান্ডেজের প্রয়োজন পড়ে না।

 

অন্যান্য অপারেশনের সুবিধাঃ

অস্বচ্ছ লেন্স বের করার জন্য চোখ কাটতে হয়, ফলে

·        রক্তক্ষরণ হতে পারে

·        ব্যথা হতে পারে

বিস্তারিত

-->

22-12-2012 রোগ ব্যাধি

শুষ্ক চোখ (Dry Eye)

 

চোখের সম্মুখভাগের উপর যথেষ্ট পরিমাণ অশ্রু না থাকলে চোখের শুষ্কতা দেখা দেয়। সাথে সাথে -চুলকানি, অস্বস্তি ভাব, বালু বালু অনুভূতি ইত্যাদি দেখা দেয়। এ রোগ একেবারে ভাল হয় না, তবে চিকিৎসার, মাধ্যমে উপসর্গগুলোকে কমিয়ে আনা যায়। বার্ধক্য, রজস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া, কিছু রোগ যেমন- বাত,  ঔষধ প্রয়োগ ইত্যাদিত কারণে চোখের শুষ্কতা দেখা দেয়। অশ্রু চোখকে পিচ্ছিল করে এবং শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। চোখের পাতার প্রতি পলকে চোখের উপর পাতলা এক স্তর অশ্রু লেপন হয় । অশ্রুর জলীয় স্তরের উপর লিপিডের একটি অতি পাতলা স্তর থাকে যা অশ্রুকে দ্রুত শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। চোখকে ভিজা রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ অশ্রু তৈরী  না হলে অথবা কোন কারণে অশ্রু চোখে বেশিক্ষণ স্থায়ী না হলে এ সমস্যা দেখা দেয়। অনেকদিন পর্যন্ত এ সমস্যা চলতে থাকলে চোখের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। শুষ্ক চোখ যে কোন মানুষের, যে কোন বয়সে হতে পারে। কিন্তু বার্ধক্যে বেশী দেখা যায়। কারণ এ বয়সে অল্প পরিমাণ অশ্রু  উৎপন্ন হয়।

                      

উপসর্গগুলো:

v    চোখ জ্বলা

v    চুলকানি

v    চোখ লাল হওয়া

v    চোখে পিচুঁটি জমা

v    চোখে বালু অনুভব

v    মাঝে মাঝে ঝাপসা দেখা

v    চোখে ক্লান্তি অনুভব।

 

কারণসমূহ:

নিম্নবর্ণিত কিছু নিয়ামক চোখের শুষ্কতার জন্য দায়ী অথবা প্রভাবক হিসাবে কাজ করে:

v    বার্ধক্য, যখন অশ্রু তৈরীর পরিমাণ কমে যায়।

v    রজস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া

v    কিছু রোগ, যেমন-বাত

v    কিছু ঔষধ, যেমন- OCP এন্টিডিপ্রোশান্ট, এন্টিহিসটামিন ডাই-ইউরেটিকস, বিটা-ব্লকারক্স।

v    জলবায়ু, যেমন- শুষ্ক বাতাস, বায়ু প্রবাহ।

v    ধূলা বা রাসয়নিক দ্রব্য।

v    চোখের আঘাত, যেমন-পুড়ে যাওয়া

v    কোন কারণে চোখের পাতা ঘোলা থাকা

v    লেজার সার্জারী, ছানি অপারেশন

v    দীর্ঘসময় কম্পিউটারের সামনে থাকা ইত্যাদি।

চিকিৎসা না নিলে যে সব জটিলতা দেখা দিতে পারে:

চোখের সুসাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ অশ্রু তৈরী জরুরী। চোখের শুষ্কতায় চিকিৎসা না নিলে নিম্নলিখিত জটিলতা দেখা দিতে পারে-

o       চোখে অস্বস্তি;

o       সাময়িক চোখে কম দেখা/ ঝাপসা দেখা;

o       চোখের কর্নিয়ার ক্ষতিসাধন।

 

রোগ নির্ণয় পদ্ধতি:

কয়েকটি পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়। যেমন-

o       বিশেষ এক প্রকার অনুবিক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে চোখের সম্মুখভাগ পরীক্ষা।

o       সোডিয়াম ফ্লুরেসেন্ট ডাই টেস্ট (হলুদ রং): ১ ফোঁটা রং চোখে দেওয়া হয় যা অশ্রুর সাথে মিশে হলুদ রং এর পাতলা আবরণ তৈরী করে। এর সাহায্যে অশ্রুর স্তর দেখা যায়। চোখের নীচের পাতা ও চক্ষু তৈরীর পরিমাণ পরিমাপ করা যায়।

 

চিকিৎসা:

এর কোন স্থায়ী সমাধান নাই। কিন্তু এ অবস্থাকে ভালভাবে সমাল দেওয়া যায় চিকিৎসার মাধ্যমে। নিন্মলিখিত তিনটি উদ্দেশ্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়। যেমন- অশ্রু উৎপাদন বৃদ্ধি অশ্রুর পরিমাণ নির্দিষ্ট মাত্রায় বজায় রাখা এবং অতিরিক্ত ক্ষয় রোধ। বিভিন্ন পদ্ধতিতে এই উদ্দেশ্যগুলো অর্জন সম্ভব। যেমন-

o       ইচ্ছাকৃতভাবে ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলা।

o       চোখের সম্মুখ অংশকে পিচ্ছিল করার জন্য চোখের ড্রপ, জেল বা অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার।

o       কৃত্রিমভাবে বাসগৃহ বা কর্মস্থলে বাতাসের আদ্রতা বাড়ানো। যেমন- পানি ফুটিয়ে জলীয় বাস্প তৈরী করে।

o       কিছু ঔষধ এ সমস্যা তৈরী করে। সেগুলো এড়িয়ে চলা।

o       অশ্রুর অতিরিক্ত ক্ষয়রোধে অশ্রু নালীর মধ্যে বিশেষ ধরনের প্লাগ দেওয়া যেতে পারে।

o       সমস্যা প্রকট হলে অপারেশন করা যেতে পারে।

 

ব্লেফারাইটিস (চোখের পাতার প্রদাহ):

অনেকের চোখে শুষ্কতা দেখা দিলে সাথে সাথে চোখের পাতার প্রদাহ হয় এবং চোখের পাতার প্রান্তে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে। ফলে চোখের পাপড়িগুলো ঝরে যেতে থাকে এবং চুলকায়। চিকিৎসা না নিলে চোখের পাতা লাল হয়ে ফুলে  ওঠে যা ¯^vfvweK অশ্রু তৈরীতে বাঁধা সৃষ্টি করে এবং  চোখের শুষ্কতা তৈরী হয়।

চিকিৎসা:

o       কটনবাড ও কুসুম গরম পানি দিয়ে চোখের পাতার প্রান্ত পরিষ্কার।

o       চোখের শুষ্কতার জন্য চোখের ড্রপ (কৃত্রিম অশ্রু) ব্যবহার।

o       এন্টিবায়োটিক মলম / বড়ি।

 

যা মনে  রাখতে হবে:

o       চোখের শুষ্কতার বৈশিষ্ট্য চোখে অস্বস্তি—, চুলকানি, চোখে ঝাপসা দেখা, বালু বালু ভাব, চোখের ক্লান্তি (চোখ বুজে থাকতে ভাল লাগে) ইত্তাদি।

o       চোখের ড্রপবিস্তারিত

-->

22-12-2012 রোগ ব্যাধি

চোখের অশ্রুনালী বন্ধ হওয়া

 

অশ্রু অক্ষিগোলক (আইবল ) কে আদ্র রাখে । অশ্রুগ্রন্থি বা ল্যাক্রিমাল গ্রন্থি থেকে অশ্রু সব সময় নির্গত হয়। চোখ পিট পিট করলে অশ্রু চোখের কোনার দিকের দুটি সুক্ষ্ণ নালী দিয়ে প্রবাহিত হয় যাকে বলে ল্যাক্রিমাল ডাক্ট বা (অশ্রু গ্রন্থি নালী) এখান থেকে অশ্রু যায়-ল্যাসোল্যাক্রিমাল সাক-এ

-ন্যাসোল্যাক্রিমাল ডাক্ট-নাক-তারপর গলায় যায় গলাঃধকরনের জন্য।

চোখের অশ্রুনালী বন্ধ হলে চোখ থেকে পানি বা পুঁজ পড়তে পারে। অশ্রু মুখ দিয়ে গড়িয়ে পড়তে পারে। চোখের পাপড়িতে মিউকাস শক্ত হয়ে লেগে থাকতে পারে বা চোখের সংক্রমণ হতে পারে।যে কোন কারণে চোখের অশ্রুনালী বন্ধ হলে তাকে বলে অশ্রুনালী বন্ধ হওয়া  বা ডেকরাইয়োস্টেনোসিস।কারণগুলোর মধ্যে আছে-নাকে দীর্ঘদিনের সংক্রমণ,ঠান্ডা লাগা,নাকের পলিপ এবং মুখের আঘাত।

কেউ কেউ অশ্রুনালী বন্ধ হয়েই জন্মায়। বন্ধ নালী নিজে নিজেই খুলে যেতে পারে। কিংবা এর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি, যেমন : ড্রেইনেজ, ম্যাসেজ এন্টিবায়োটিক বা সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।

 

ডেকরাইয়োসিস্টাইটিস :

নেসোল্যাক্রিমাল সেক -এ  অশ্রু জমে থাকলে তা ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। ন্যাসোল্যাক্রিমাল স্যাক -এর   à¦¸à¦‚ক্রমণকে বলে ডেকরাইয়োসিস্টাইটিস।

উপসর্গসমূহ :

o       চোখ দিয়ে পানি পড়া;

o       গাল বেয়ে অশ্রু পড়া;

o       পুঁজ পড়া;

o       চোখের পাপড়িতে পুঁজ লেগে থাকা;

o       চোখের সংক্রামণ হওয়া।

o       জ্বর;

o       নাকের চারিদিকে লাল হয়,বিস্তারিত

-->

22-12-2012 রোগ ব্যাধি

কন্ট্যাক্ট লেন্স

বর্তমানে শুধু দেখার সমস্যার জন্যই নয়, সৌন্দর্যের কারণেও চশমার বদলে কন্ট্যাক্ট লেন্সের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।

কন্ট্যাক্ট লেন্স এক ধরনের কৃত্রিম লেন্স যা  à¦šà§‹à¦–ের মনির উপর বসে থাকে এবং  আলোকে সঠিকভাবে ফোকাস করে রেটিনায় ফেলে দেখতে সাহায্য করে। হ্রাস্যদৃষ্টি, দীর্ঘদৃষ্টি চালসে অথবা এসটেগমাটিজম (টেরা দৃষ্টি) সব ধরনের দৃষ্টিগত সমস্যাতেই চশমার স্থলে কন্ট্যাক্ট লেন্স সমানভাবে কার্যকর। তবে কন্ট্যাক্ট লেন্সের সঠিকভাবে যত্ন নিতে হয়।

ধরন:

মূলত ২ ভাগে ভাগ করা যায়।

ক) নরম লেন্স - নরম নমনীয়, পাতলা  প্লাষ্টিক জাতীয় পদার্থে তৈরী যা পানি শোষণ করতে পারে এবং চোখের আকৃতির সাথে মিল রেখে বসে থাকে।

খ) শক্ত কন্ট্যাক্ট লেন্স- দৃঢ় ধরনের, প্লাষ্টিকের তৈরী, যার মধ্য দিয়ে বাতাস, গ্যাস চলাচল করতে পারে এবং যা শুধু কর্নিয়ার কিছু অংশকে ঢেকে রাখে।

নরমগুলি সাধারণত অল্প কিছুদিন ঠিক থাকে- বছর খানেক । অবশ্য বর্তমানে দীর্ঘমেয়াদী নরম লেন্স পাওয়া যায়, যা এক নাগাড়ে ৩০ দিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।

কেন কন্ট্যাক্ট লেন্স পরবেন?

কন্ট্যাক্ট লেন্সের অনেক সুবিধা। যেমন-

1)      কিছু কিছু দৃষ্টি ত্রুটিতে সাধারণ চশমার চেয়ে কন্ট্যাক্ট লেন্সে ভালভাবে দেখা যায়।

2)      চশমায় ২ পাশে ফ্রেমের কারণে দৃষ্টি বাধা পায়,কন্ট্যাক্ট লেন্সে  দৃষ্টি সিমানা তাই চশমার চেয়ে বেশি।

3)      অনেকে সৌন্দর্য্যের কারণেও চশমার চেয়ে কন্ট্যাক্ট লেন্স বেশি পছন্দ করেন।

4)      বিভিন্ন খেলাধূলা বা প্রচন্ড পরিশ্রমের কাজে বা সাতারের সময় চশমার চেয়ে লেন্সে অনেক ¯^v”Q‡›` কাজ করা যায়।

 

যে সব অবস্থায় আপনি কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে পারবেন না : যদি-

-          আপনার চোখ স্বাভাবিকের  à¦šà§‡à§Ÿà§‡ বেশি শুষ্ক থাকে;

-          যদি কন্ট্যাক্ট লেন্সে এলার্জি হয়;

-          যদি ময়লা, ধূলাবালিযুক্ত পরিবেশে থাকেন বা কাজ করেন;

-          যদি ক্ষতিকারক রাসয়নিক পদার্থ নিয়ে কাজ করতে হয়।

-          অনেক ক্ষেত্রে আর্থাইটিস ও ডায়বেটিস থাকলে কন্ট্যাক্ট লেন্সে সমস্যা হয়।

 

কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করার পূর্বে:

অবশ্যই বিশেষজ্ঞের কাছে চোখ দেখিয়ে এবং কোন কাজে কি ধরনের লেন্স নিতে চান তা জানাবেন। ডাক্তার চোখ পরীক্ষা করে যে মাণের ও যে পাওয়ারের লেন্স এর উপদেশ দিবেন, সেটিই পড়তে হবে।

     নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করে ও লেন্সের পাওয়ার চেক আপ করতে হবে। অনেকে শুধু সৌন্দয্যের কারণে চোখে লেন্স পরেন। সে ক্ষেত্রেও  চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্র্শ নিতে হবে, কেননা আপনি সরাসরি কর্নিয়ার উপর ১টি কৃত্রিম বস্তু দীর্ঘক্ষণ লাগিয়ে রাখছেন যা চোখের ক্ষতি করতে পারে।

লেন্স কিভাবে পরবেন?

ক. হাত সাবান দিয়ে ভালভাবে ধুঁয়ে ভিজা হাত শুকিয়ে নিন।

খ. লেন্স ২টি বক্স থেকে তুলে হাতের তালুতে নিন।

গ. লেন্সটি কোনদিকে ভাজ পড়ে আছে আছে কিনা? কুচকে আছে কিনা? লক্ষ্য করুন।

ঘ. লেন্সটি আঙ্গুলে নিন, কাপের মত অংশটিকে উপরে রেখে

ঙ. চোখের পাতা দুটি অন্য হাতে টেনে রাখুন।

চ. চোখের মনি ঘুরিয়ে উপরের দিকে দেখুন

ছ. লেন্স চোখের সাদা অংশে রাখুন (শক্ত লেন্স হলে সরাসরি কালো অংশের উপর রাখতে হয়)।

জ. চোখের পাতা ছেড়ে দিন ও বার বার চোখ বুজুন ও খুলুন এবং সাথে চোখের মনি নামিয়ে লেন্সটিকে

    মনির উপর  বসতে দিন।

কন্ট্যাক্ট লেন্সের যত্ন:

কন্ট্যাক্ট লেন্স প্রত্যেকবার ব্যবহার করার পর  ঐ লেন্সের জন্য নির্ধারিত ঔষধ দেয়া তরল পদার্থে ধুতে হবে। ঠিকমত  পরিস্কার না করলে বা লেন্সের নির্ধারিত কেমিক্যাল ব্যবহার না করে বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করলে লেন্সসহ চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই-

-    লেন্সের প্রস্তুতকারক কোম্পানী প্রদত্ত ইন্সট্রাকশন অনুযায়ী ব্যবহার ও পরিস্কার করতে হবে।

-    সেই কেমিক্যাল ব্যবহার করতে বলা আছে,  ঐ ধরনের কেমিক্যালই ব্যবহার করতে হবে। সাধারণ  কলের পানি, সাবান পানি, ডিটারজেন্ট, স্যাভলন বা অন্যকোন তরল ব্যবহার করা যাবে না।

-    প্রত্যেকবার ব্যবহারের পূর্বে হাত ভালভাবে ধূয়ে, শুকিয়ে নিন।

-    সর্বোচ্চ যতক্ষণ সময় ও  সর্বোচ্চ যতদিন ব্যবহার করার নির্দেশনা দেয়া

-    থাকে, সেই অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত।

 

সঠিক ব্যবহার না করলে যে যে সমস্যা হতে পারে:

বিস্তারিত

-->

02-01-2013 রোগ ব্যাধি

 

ভাইরাস জনিত চোখ ওঠা

 



কনজাংটিভা হল চোখের সাদা অংশের ওপর থাকা মিউকাসের পর্দা যা সাদা অংশতে এবং চোখের পাতার ভেতরের দিকে বিস্তৃত থাকে। কনজাংটিভাইটিস হল এই কনজাংটিভার প্রদাহ জনিত রোগ। সাধারণত একই সঙ্গে দুই চোখই আক্রান্ত হয় তবে কোনও কোনও সময় এক চোখ অন্য চোখের চেয়ে একটু আগে অসুস্থ হয় এবং ১-২ দিনের মধ্যেই অন্য চোখে রোগ ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় দুই চোখের আক্রান্ত হওয়ার মাত্রাও দুই রকম হতে পারে। কোনও চোখ সামান্যতেই সেরে যায়। আবার কোনও চোখ মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।

কেন
কনজাংটিভাইটিস বা কর্নিয়ার প্রদাহ রোগের জীবাণু এডেনো ভাইরাস। তবে ঋতু পরিবর্তন ছাড়া যে কোনও সময় এটা হতে পারে। 
যেসব স্থানে জনসংখ্যা আনুপাতিক হারে বেশি সেসব স্থানে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি। এক পরিবারে একজনের থেকে অন্যজনে, এক পরিবার থেকে অন্য পরিবারে- এভাবেই পুরো সমাজে ছড়িয়ে যাচ্ছে এ চোখের রোগ।এ রোগ ধনী-দরিদ্র সবার সমভাবে হয়।

ছোটরা স্কুল থেকে বয়ে নিয়ে আসতে পারে এ রোগের জীবাণু। তাই এ রোগ ভালো না হওয়া পর্যন্ত আক্রান্ত শিশুকে স্কুলে না পাঠানো শ্রেয়। মাঠ, হাটবাজার এমনকি ঈদ শপিংয়ের বড় বড় মলগুলোও হয়ে উঠেছে এ রোগ ছড়ানোর তীর্থস্থান।

লক্ষণ
ভাইরাস খুব সহযেই তাদের আকার, গঠন,আচার-আচরণ পরিবর্তন করতে সক্ষম। আবার একেক সময় একেক ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। তাই লক্ষন ও ভিন্ন ভিন্ন হয়। যেমনঃ

·        চোখে প্রচণ্ড ব্যথা হয়,

·        চোখের পাতা ফুলে যায়,

·        পিঁচুটি তুলনামূলকভাবে কম আসে।

·        আবার কোনও কোনও ভাইরাসে আঠাযুক্ত পানি আসে বেশি তেমন ব্যথা থাকে না।

·        রোদে গেলে চোখে জালা করে (ফটোফোবিয়া)

·        চোখ লাল হয়ে যাওয়া

কোনও কোনও আক্রান্ত ব্যক্তির চোখ খুবই লাল হয় সেই সঙ্গে চোখের বাইরে ঝিলি র নিচে রক্তক্ষরণ হয়।

রোগ নির্নয়:

ডাক্তার স্লিট ল্যাম্পে চোখ পরীক্ষা করেই রোগ নির্নয় করতে পারেন। তাছারা চোখ থেকে ময়লা নিযে মাইক্রোসকোপে পরীক্ষা করে ডাক্তার নিশ্চিত হতে পারেন।

প্রতিরোধ কি করা যায়?
অনেক ক্ষেত্রে করা যায়, আবার অনেক ক্ষেত্রে করা যায় না।

যতদিন চোখ হতে ময়লা ঝরে, ততদিন একজন থেকে এ রোগ অন্য জনে ছরাতে পারে।

ভালোভাবে পরিষ্কার করে হাত-মুখ ধোয়া প্রয়োজন

সেই সঙ্গে রুমাল বা গামছা বা তোয়ালে একাধিক জন ব্যবহার করা একেবারেই অনুচিত।
এ রোগ সহজেই একজনের থেকে অন্যজনে ছড়াতে পারে। সুতরাং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা খুবই জরুরি। 
এক হাতেই দুই চোখ চুলকালে ডান বা বামদিকের আক্রান্ত চোখ থেকে সহজেই এক চোখ থেকে জীবাণু অন্য চোখে চলে যায়। তাই মাঝে মাঝে কুসুম গরম লবণ পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে ময়লা বা পিঁচুটি পরিষ্কার করা উচিত।


বাজারে এখন অনেক রকমের ডিসপোজেবল টিস্যু পাওয়া যায়। সুতরাং এ টিস্যু ব্যবহার এ রোগ ছড়ানো অনেক অংশে কমে আসতে পারে। তবে চোখ মোছার পর ওই টিস্যু পেপার যথাযথভাবে ডাস্টবিনে ফেলতে হবে যাতে তা অন্য কারও হাতে না পড়ে।

সেই সঙ্গে একজনের ব্যবহার করা চোখের ড্রপ অন্যজনের ব্যবহার করা একেবারেই অনুচিত। এর মাধ্যমেও একজনের থেকে অন্যজনে রোগ ছড়াতে পারে।

স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কদিন স্কুলে না যাওয়াই ভালো।

চিকিৎসা
কনজাংটিভাইটিসের কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই।

তবে চোখের আরামের জন্য পিচ্ছিল মলম ব্যবহার করা যেতে পারে।

এন্টিবায়োটিক যুক্ত মলম ব্যবহারে সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
বেশিরভাগ সময় এ রোগ সহজেই ভালো হয়ে যায়। তবে কোনও কোনও সময় তা বর্ধিত সময় ধরে চলতে থাকে। চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো এন্টিবায়োটিক, কৃত্রিম চোখের পানি, সঙ্গে সঙ্গে স্টেরয়েড ড্রপ দেয়া যেতে পারে- চক্ষু বিশেষজ্ঞের নিবিড় তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে।

জটিলতা
অনেক সময় এ কনজাংটিভাইটিস থেকে কর্নিয়া আক্রান্ত হতে পারে, যাকে বলা হয় কেরাটাইটিস। যদিও এ রোগ তেমন মারাত্মক কিছু না। তবে এটা খুবই অস্বস্তিকর| কোনও চিকিৎসা যদি নাও দেয়া হয় তবুও এ রোগ একা একাই এক কি দুই সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। কিন্তু ড্রপ বা মলম ব্যবহারে চোখ কিছুটা আরামে থাকে।তবে মনে রাখতে হবে, যদি চোখের অসুবিধাগুলো রয়েই যায় তবে তার জন্য চক্ষু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া একান্ত প্রয়োজন।

 

যা মনে রাখা প্রয়োজন:

 

1. কনজাংটিভাইটিস হল চোখের সাদা অংশের ওপর থাকা মিউকাসের পর্দার ইনফেকশন।

2.লক্ষন সমূহ ২ দিন থেকে ২ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

3.এ রোগ সহজেই একজনের থেকে অন্যজনে ছড়াতে পারে । তাই এ অবস্থায় স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কদিন স্কুলে না যাওয়াই ভালো।

4.যতদিন চোখ হতে ময়লা ঝরে, ততদিন একজন থেকে এ রোগ অন্যজনে ছরাতে পারে।



 

22-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

কালার ব্লাইন্ডনেস

বর্ণান্ধতা শব্দটি অর্থগত বা বর্ণ দেখতে না পারা  বোঝালেও প্রকৃত  অর্থে বর্ণান্ধতা বা কালার ব্লাইন্ডনেসে আক্রান্ত রোগীর ২-১ টি বিশেষ রং (বিশেষ করে সবুজ, হলুদ, লাল, কমলা) আলাদা করে বোঝার ক্ষমতা কমে যায় বা দেখতে পারে না। বর্ণান্ধতা মূলত জন্মগত বংশীয় ত্রুটির যা মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের ক্ষেত্রে বেশি হয়। তবে খুব বিরল কিছু ক্ষেত্রে কেউ কেউ সব রং এর ক্ষেত্রেই অন্ধ হতে পারে।

 

লক্ষনসমূহ:

আপনার শিশু কালার ব্লাইন্ড কিনা, তা বুঝবেন যদি-

ক) ৪ বছরের বেশি বয়সেও যদি নির্দিষ্ট রং চিনতে না পারে।

খ) বিভিন্ন রং থেকে সব রং আলাদা করতে না পারে।

 

চোখের বিশেষ রং চেনার কোষ:

চোখের সব কোষ ও স্নায়ু জন্মের সাথে সাথেই তৈরী থাকে। চোখের পেছনের অংশে রেটিনায় মূলত ২ ধরনের কোষ থাকে।

ক) রড সেল: এই কোষগুলি আলোতে সংবেদনশীল, কিন্তু এই কোষগুলি দ্বারা বিভিন্ন রং দেখতে পারে না। এই রড কোষের দ্বারা আমরা রাতে, অন্ধকারে বা আলো  আধারিতে সাদা কালো ও  ধুসর রং এর হিসেবে দেখতে পাই।

খ) কোন সেল: এই কোষগুলি উজ্জ্বল আলোতে প্রতিটি বস্তু ভালভাবে দেখতে পাই। এই কোষগুলি বিভিন্ন রং চিনতে পারে।

মুলত ৩ ধরনের কোষ আছে: যারা আলাদা ভাবে লাল, সবুজ ও নীল  আলো চিনতে পারে। আর এই তিন ধরনের কোষের বিভিন্ন সংবেদনশীল তথ্যের বিশ্লেষনেই হাজার ধরনের রং মস্তিস্ক চিনতে পারে। এই তিন ধরনের কোষের কোন ১টি বা একাধিকের ঘাটতি বা সঠিকভাবে কাজ না করার ফলে রোগী কোন ১টি বা একাধিক রং চিনতে পারে না।

বর্নান্ধতা জন্মগত:

লাল-সবুজ বর্ণান্ধতা একটি জীনগত সমস্যার কারণে হয়, অর্থাৎ জন্মগত সমস্যা। শতকরা ৮ জন ছেলে ও শতকরা ৪ জন মেয়ে লাল-সবুজ বর্নান্ধ হয়। যে জীনটি লাল সবুজ রং চিনতে পারে, তা C ক্রোমোজোমে থাকে। আর যেহেতু ছেলেদের ১টি C ও ১টি ক্রোমোজোম থাকে. তাই এই জীনে সমস্যা থাকলে ছেলেরা আক্রান্ত হয় বেশি। অন্যদিকে মেয়েদের ২টি C ক্রোমোজোম থাকে বলে ১টি জীন অসুস্থ থাকলেও আরেকটি জনি ভাল থাকে বলে মেয়েরা আক্রান্ত কম হয়। তবে যদি মেয়ের মা- বর্ণান্ধতার কেরিয়ার হয় এবং বাবাও বর্ণান্ধ হয়, সেক্ষেত্রে মেয়ের বর্ণান্ধ হবার সম্ভাবনা থাকে। অন্যদিকে মা বর্ণান্ধতার কেরিয়ার হলে তার ৫০% ছেলে বণার্ন্ধ হবার সম্ভাবনা থাকে।

আর ১০০ জন বর্ণান্ধ ব্যক্তির মাত্র ৫ ভাগ হয় নীল বর্ণান্ধ। আর নীল বণান্ধ ছেলে ও মেয়ের ক্ষেত্রে  হবার সম্ভাবনা সমান সমান। কেননা, এই রং এর জীনটি অন্য সাধারণ ক্রোমোজম থাকে।

তবে সব বর্নান্ধতাই জন্মগত নয়,  à¦¶à¦¿à¦¶à§à¦° বৃদ্ধির সময় কোন ধরনের সমস্যার  à¦•à¦¾à¦°à¦£à§‡à¦° এরকম হতে পারে।

বণনন্ধদের দৈনন্দিন সমস্যা:

-         গাড়ী চালানোর ক্ষেত্রে লাল ও সবুজ চিহ্ন আলাদা করতে না পারলে বিপদ ঘটতে পারে।

 

-               বিমান, সমুদ্রে বা এরূপ অন্য স্থানে সিগন্যাল এর সাথে জড়িত ব্যক্তিদের লাল ও সবুজ আলাদা করতে না পারলে সমস্যা হয়।

-               ডাক্তারী ক্ষেত্রে অপারেশনের সময় লাল ও সবুজ রং (পিত্ত রসের রং সবুজ) আলাদা করতে পারা জরুরী।

-               এছাড়া পড়াশুনা ও সুক্ষ কারুকাজে বর্ণান্ধতা সমস্যা করতে পারে।

 

দৃষ্টি শক্তির পরীক্ষা:

বাচ্চাদের পড়াশুনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন লেখা, ছবি ইত্যাদি বিভিন্ন রং এর হয়ে থাকে। তাই কালার ব্লাইন্ডদের জন্য এটি সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তাই বাচ্চাদের বিশেষত ছেলেদের কালার ভিশন টেস্ট করানো দরকার। চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে বিশেষ ধরনের ১টি চার্ট ( ইশিহার চার্ট) এর মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়।

চিকিৎসা:

এই রোগের মূলত কোন চিকিৎসা নাই। তবে বিশেষ ধরনের ফিল্টার বা বিশেষ কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করে বিশেষ রংকে অন্য রংএ পরিবর্তিত করে দেখতে পাওয়া যেতে পারে বা অন্য রং থেকে আলাদা করা সম্ভব। তবে এ দ্বারা কালার ভিশন টেস্ট এ হয়তো পাশ করা সম্ভব, কিন্তু বাস্তবিক কাজ কর্মে খুব বেশি সুবিধা হয় না। তাই কালার  ব্লাবিস্তারিত

-->

22-12-2012 রোগ ব্যাধি

 †Pv‡Li ছানি

চোখের লেন্স সাধারণত স্বচ্ছ থাকে, কিন্তু যখন এ স্বচ্ছ লেন্স কোন কারনে ঘোলাটে হযে যায়, তখন তাকে ছানি বা ক্যাটারেক্ট বলে। ক্যাটারেক্ট সাধারণত অপারশেনের মাধ্যমে ভালো করা হয়। এখানে A¯^Q লেন্সকে অপারেশনের মাধ্যমে বের করে আনা হয়। চোখের লেন্স হলো ক্যামেরার লেন্সের মত। ক্যামেরা  লেন্স যখন  togged up  à¦…থবা বাথরুমের আয়না যখন বাষ্পে ধোয়াটে হয়ে যায়, তখন যে রকম দেখা যায়, ক্যাটারেক্ট হলে চোখের লেন্স ঠিক সেরকম দেখা যায়।

লক্ষণসমূহ:

ক্যাটারেক্টের লক্ষনসমূহ হলো-

  • দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া;
  • রাতে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া;
  • দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া;
  • রং সম্পর্কে ধারণা কমে যাওয়া।

চক্ষু বিশেষজ্ঞরা চোখ পরীক্ষা করে চোখের ক্যাটারেক্ট রোগ চিহ্নিত করতে পারেন।

ক্যাটারেক্ট বয়স্ক লোকদের ক্ষেত্রে অতি কমন:

ক্যাটারেক্ট হওয়ার প্রবণতা বাড়ে চল্লিশ উর্দ্ধ মানুষের এবং এটি শতকরা ২.৫ ভাগ। আর শতকরা ৯৯ ভাগ ক্যাটারেক্ট হয় নব্বই উর্দ্ধ মানুষের বযস নব্বই উর্দ্ধ অর্ধেকের কাছাকাছি লোক ক্যাটারেক্ট অপারেশন করে। ক্যাটারেক্ট অপারেশন অনেক সাধারন একটি অপারেশন এবং  এর জন্য মানুষের জীবন দীর্ঘস্থায়ী হয়।

ক্যাটারেক্টের কারণসমূহ:

ক্যাটারেক্ট সবচেয়ে বেশি বয়সের সাথে সম্পর্কিত। তাছাড়া আরও কারনগুলো হলো:

  • ধুমপান
  • ডায়াবেটিস
  • আর্থাইটিস
  • অতিবেগুনি রশ্মি
  • কিছু রক্তচাপ কমানোর ঔষুধ।

ক্যাটারেক্ট অপারেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়:

ক্যাটারেক্টে ঘোলাটে লেন্সটি অপারেশনের মাধ্যমে বের করে আনা হয়। পরে সেখানে আরেকটি ¯^”Q ইন্টা-অকুলার লেন্স (অর্থাৎ চোখের ভেতরের লেন্স) প্রতিস্থাপন করা হয়। এ অপারেশন ১ দিনে করা যায় এবং রাতে হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন হয় না।

প্রকৃতপক্ষে ২৫ ভাগ লোকের অপারেশনের পরও লেন্স ধারনকারী ক্যাপসুলটি ঘোলাটে থেকে যায়। তবে লেজার অপারেশন অনেক উন্নত  à¦à¦¬à¦‚ সুস্থ স্বচ্ছ দৃষ্টি প্রদান করে।

ক্যাটারেক্ট অপানেশনের সাফল্য:

শতকরা ৮৫ ভাগ লোক ক্যাটারেক্ট অপারেশনের পর ভালোভাবে দেখতে পায যে তারা গাড়ী চালাতেও

সক্ষম।এ ক্ষেত্রে জটিলতা খুবই কম দেখা যায়। তবে যে কোন অপারেশনের ক্ষেত্রে শতভাগ সাফল্য পাওয়া যাবে, এমন গ্যারান্টি দেয়া সম্ভব নয়।

ক্যাটারেক্ট কি প্রতিরোধযোগ্য:

বর্তমানে ক্যাটারেক্ট কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়, তার সঠিকভাবে  আমরা জানিনা। তবে, কিছু বিষয় এ ক্ষেত্রে সাহায্য করে, যেমন-

  • রোদে মাথায় টুপি ব্যবহার করা অথবা চশমা ব্যবহার করা।
  • ধুমপান  ত্যাগ করা।
  • গবেষণায় বলা হচ্ছে যে, এন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার ক্যাটারেক্ট প্রতিরোধ করে।

যেগুলো মনে রাখতে হবে:

  • বয়স্ক রোগীদের দৃষ্টিশক্তি কমে পাওয়ার প্রধান কারণ হলো ক্যাটারেক্ট।
  • ক্যাটারেক্ট অপারেশন নিরাপদ এবং ফলপ্রসু।
  • ধুমপান ত্যাগ করা এবং অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিরোধ ক্যাটারেক্ট প্রতিরোধে সাহায্য করে।

 

 

 

21-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

নাক ডাকাঃ

 

 

ধারনা করা হয় যে শতকরা ২০ ভাগ লোক রাতে ঘুমের সময় নাক ডাকে। যদিও যে নাক ডাক, তার জন্য ব্যাপারটি বিরক্তির বা স্বাস্থ্য হানীকর নয়, তবে পাশের যে ব্যক্তিটি নাক ডাকার জন্য ঘুমাতে পারছেনা তার জন্য ব্যাপারটি ভীষন সমস্যার। মহিলাদের চেয়ে পুরুষরাই বেশি নাক ডাকে, গড়ে প্রতি ৪ জনে ১ জন । আবার নাক ডাকা ১টি বিশেষ রোগের লক্ষনও বটে, যাকে অবস্ট্রাকডেট স্লিপ এপনিয়া বলে। ঘুমের সময় মুখের তালুর নরম মাংশ এবং উভুলা রিলাক্স থাকে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে কাপতে থাকে। নাকদিয়ে বা মুখ হা করে শ্বাস নিলে উভয় ক্ষেত্রেই নিঃশ্বাস নেয়া বা ফেলার সময় কম্পন জনিত কারনে এধরনের শব্দ হয়। লাইফস্টাইল পরিবর্তন, দাতের ডিভাইস ব্যবহার করে অনেক ক্ষেত্রে নাক ডাকা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

 

নাক ডাকার কিছু বাস্তব সমস্যাঃ

নাক ডাকা ব্যক্তি নিজের তেমন কোন সমস্যা হয় না, তবে কোন কোন ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির ঘুম ভেঙে যায় এবং নিদ্রা ব্যাহত হয়। আবার কখনও পাশে থাকা ব্যক্তি শব্দ না করার জন্য বার বার ডাক দেয়, সজাগ করে, তার ফলেও ঘুম ব্যহত হয়। প্রকৃত সমস্যা হয় পাশে থাকা ব্যক্তির এবং প্রায়ই দেখা যায়, স্বামী বা স্ত্রী বাধ্য হয়ে অন্য রম্নমে গিয়ে ঘুমায়, যা বৈবাহক জীবনের জন্য হুমকি।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবস্ট্রাকটেড স্লিপ এপনিয়ার জন্যও এরকম নাক ডাকে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তির গলার ভেতরের নালী চুপসে গিয়ে শ্বাস বন্ধ থাকে, কিছুক্ষন পর হঠাৎ জোড়ে শ্বাস নিয়ে আবার শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে থাকে। এরকম করে প্রতিরাতে অসংখ্যবার ঐ ব্যক্তির ঘুম ভাঙতে পারে।

 

কখন বা কাদের বেশি নাক ডাকে?

স্বাভাবিক অবস্থাতেই যাদের নাক ডাকে তাদের নাক ডাকা আরও বেরে যায় যদি তাদের ঠান্ডা, সর্দি, সাইনুসাইটিক হয় বা নাক বন্ধ থাকে। এ ছাড়া সোজা চিৎ হয়ে শুয়ে ঘুমালেও নাক বেশি ডাকে। সাধারনত যারা নাক হাতে তাদের বৈশিষ্ট্য

-         পুরুষ

-         মধ্যবয়সী ৩০-৬৫বছর

-         ওজন বেশি

-         উচ্চ রক্তচাপ থাকলে হতে পারে

-         এলকোহল সেবন করলে বেশি বাড়ে।

 

নাক ডাকার সাধারন সমাধানঃ

১। মদ্যপান পরিহার করা

২। ওজন কমানো

৩। ঘুমের ঔষধ খেয়ে না ঘুমানো

৪। কাত হয়ে শোয়া

৫। নাক বন্ধ থাকলে বা সর্দি থাকলে তার চিকিৎসা করা

৬। রুমের ভেতরে বাতাস যাতে খুব শুষ্ক বা খুব ভ্যাপসা না থাকে

 

সার্জারী বা অপারেশনঃ

খুব মারাত্মক ক্ষেত্রে এবং সাধারন ব্যবস্থায় কাজ না হলে অপারেশন করতে হতে পারে। সে যে পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়ঃ

১। উভুলু প্যলাটো ফ্যারিংগোপ্লাস্টিঃ

টনসিল কেটে ফেলা হয় এবং সফট প্যালেট ঠিক করে দেয়া হয়। হাসপাতালে ভর্তি থেকে পুরুপুরি অজ্ঞান করে এই অপারেশন করতে হয়।

 

২। লেসার উভুলু প্যলাটো ফ্যারিংগোপ্লাস্টিঃ

লেসার দিয়ে সফট প্যালেটে ক্ষত সৃষ্টি করা হয়। ক্ষত শুকিয়ে শক্ত হয় এবং দৃঢ় হয়, ফলে শ্বাস প্রশ্বাসে খুব বেশি কাপে না, শব্দ কম হয় । যদিও এতে হাসপাতালে থাকতে হয় না, তবে  এতে সফলতার হারও কম।

৩। সমনোপ্লাস্টঃ

সফট প্যালেট কিছুটা পুড়িয়ে দেয়া হয়।

প্রতিটি পদ্ধতিতে বেশ ব্যাথা হয়। প্রায় ২ সপ্তাহ ব্যাথা থাকে। আর এতে সমস্যা অনেক ক্ষেত্রেই থেকে যায় বা পুরপুরি সমাধান হয় না বা হলেও দীর্ঘ স্থায়ী হয় না।

 

যা যা মনে রাখার মতঃ

-         মুখদিয়ে বা নাক দিয়ে শ্বাস প্রশ্বাসের সময় সফট প্যালেট খুব বেশি কম্পন হলে নাক ডাকার শব্দ হয়।

-         ওজন কমানো, নাক পরিষ্কার ও উন্মুক্ত রাখা, সাইনুসাইনিসের চিকিৎসা করলে অনেক ক্ষেত্রে নাক ডাকা কমে যায়।

-         মদ্যপান কম করা ও কাত হয়ে শুলে নাক ডাকা কমে।

-         মুখে মাউথগার্ড ঠিকভাবে ফিট হলে তা ভালো কজে দেয়।

-         সফট প্যালেটের বিভিন্ন সার্জরী, লেজার চিকিৎসা করা যায়, তবে পুরোপুরি ঠিক নাও হতে পারে।

 

 

21-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

সাইনোসাইটিস

 

সাইনোসাইটিস হল সাইনাসের প্রদাহজনিত রোগ। আমাদের মুখমন্ডলের হাড়ের মাঝখানে  বায়ুভর্তি ফাকা স্থানগুলিকে সাইনাস বলে। গালের ২ উচু অংশে ম্যাক্সিলারী সাইনাস, কপালে ফন্ট্রাল সাইনাস, চোখের পাশে ইথময়ডাল সাইনাস অবস্থিত। সবগুলি সাইনাস নাক ও গলার সাথে যুক্ত একটি চিকন নালী পথ দ্বারা যার নাম অস্টিয়া। সাইনাসের অনেকগুলি কাজের মধ্যে ১টি কাজ হল আমাদের নিঃশ্বাসের বাতাসকে ফুসফুসে পৌছার পূর্বেই সঠিক  মাত্রায় গরম ও আদ্র করা। এ ছাড়া এই সাইনাসের অভ্যন্তরে  আবরনী পর্দা আছে যা মিউকাস নিঃসরণ করে জীবাণুকে আটকে ফেলে, ভেতরে প্রবেশ করতে বাধা দেয়।

 

সাইনুসাইটিস কেন হয়

যেসব কারণে সাইনুসাইটিস হতে পারে তার মধ্যে নিচে উলেস্নখিত শারীরিক সমস্যাগুলোই প্রধান।

১. শরীরের যেসব তন্ত্র (সিস্টেম) রয়েছে সেগুলোতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে, যেমন:

·        শরীরে এলার্জি থাকলে

·        শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পেলে

·        হরমোনজনিত সমস্যা থাকলে

·        নাক ও সাইনাসের ভিতর ঝিলিস্ন(মিউকাস মেমব্রেন)-এর কার্যকারিতায় ত্রু টি দেখা দিলে

·        বংশগতভাবে মা-বাবা, দাদা-দাদী ও নানা-নানীর মধ্যে সাইনুসাইটিস কিংবা তার জন্য দায়ী মূল কারণগুলোর অস্তিত্ব থাকলে

২. পরিবেশগত কারণে, যেমন:

·        খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবারের ঘাটতি থাকলে

·        পরিবেশে সহানুভূতিশীল আচরণ থেকে বঞ্চিত হলে

·        বসবাসের ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ঘাটতি থাকলে

৩. নাকের ভিতর কোনো সমস্যা থাকলে, যেমন:

·        প্রসবের সময় শিশুর নাকের ভিতর জীবাণু ঢুকে গেলে

·        মায়ের শরীর থেকে সদ্যপ্রসূত সনত্মানের মধ্যে সংμমণ ছড়িয়ে পড়লে অথবা মায়ের মাধ্যমে সনত্মানের মধ্যে পর্যাপ্ত রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা সঞ্চারিত না-হলে

·        বয়স্ক শিশুদের ক্ষেত্রে কিছু ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংμমণ ঘটলে

৪. কোনো ক্লিনিক্যাল কারণ থাকলে, যেমন:

·        বারবার ঠান্ডায় আক্রান্ত হলে, বিশেষ করে যেসব শিশু স্কুলে যায়, তাদের একজনের দেহ থেকে আরেকজনের মধ্যে এ-রোগ ছড়িয়ে পড়লে

·        ইনফ্লুয়েঞ্জা, হুপিং কফ বা হাম হলে

·        দূষিত পানিতে সাঁতার কাটা বা গোসল করার সময় নাকের ভিতর জীবাণু প্রবেশ করলে

·        দাঁতে সংক্রমণ জনিত কোনো সমস্যা থাকলে

লক্ষণসমূহ :

রোগের মাত্রার বিবেচনায় সাইনুসাইটিস সাধারণত একিউট ও   ক্রনিক - এই দুই ধরনের হয়ে থাকে: তবে উভয় ধরনের সাইনুসাইটিস-এর উপসর্গ ও লক্ষণগুলো প্রায় একই ধরনের হয়, যদিও একিউট সাইনুসাইটিস-এর তীব্রতা কিছুটা

 

একিউট সাইনুসাইটিস-এর উপসর্গ ও লক্ষণ

একিউট সানুসাইটিস-এর ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত লক্ষণ ও উপসর্গগুলো প্রকটভাবে দেখা দেয়:

§        নাক বন্ধ থাকা

§        মুখের ভেতর থেকে চাপ বা ভার অনুভব করা

§        সামনে, নিচে ঝুঁকলে ব্যাথা হওয়া

§        মাথাব্যাথা

§        উপরের চোয়ালে দাঁতে ব্যাথা অনুভব হওয়া

§        নাক দিয়ে হলুদ বা সবুজ রং এর সর্দি পড়া

§        মুখমন্ডল ফুলে যাওয়া

§        মুখে ¯^v` বা নাকে গন্ধবোধ কমে  যাওয়া

§        অসুস্থ বোধ করা

§        কাশি।

 

ক্রনিক সাইনুসাইটিস-এর উপসর্গ ও লক্ষণ

ক্রনিক সাইনুসাইটিস-এর উপসর্গগুলো অনেকটা একিউট সাইনুসাইটিস-এর মতই, তবে এসব লক্ষণ ও উপসর্গের তীব্রতা কিছুটা কম থাকে। এছাড়াও, ক্রনিক সাইনুসাইটিস-এর ক্ষেত্রে নিচের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো বিশেষভাবে লক্ষণীয়:

·        নাকে অথবা নাকের পিছনে (গলায়) পূঁজ বা আঠালো পদার্থের উপস্থিতি

·        নাক মাঝেমধ্যে বন্ধ-থাকা

·        মাথাব্যথা অথবা মাথা ভারভার-লাগা

·        স্বাভাবিক গন্ধ অনুভব করার ক্ষমতা হ্রাস

·        জ্বর, কাশি, ঠান্ডালাগা বা অপেক্ষাকৃত কম তীব্রতার মাথাব্যথা ও গলাব্যথা

·        খাবার-দাবারে রূচি কমে-যাওয়া এবং ক্ষেত্রবিশেষে মানসিক অবসাদ গ্রস্ততা

·        কানের সাথে নাকের সংযোগকারী নল বন্ধ হয়ে কানে নানারকম উপসর্গ দেখা-দেওয়া, যেমন কান ভারভার-লাগা, কানে কম-শোনা বা মধ্যকর্ণে জীবাণুজনিত ক্ষত বা প্রদাহ সৃষ্টি-হওয়া

 

রিস্ক ফ্যাক্টর :

কোন কোন ব্যক্তির বেশি হয়, কারও কম। সে ফ্যাক্টর সমুহ বেশি দায়ী :

§        বার বার ঠান্ডা লাগলে (বিশেষত ছোটদের)

§        ধুমপান করলে

§        হে ফিভার বা এলার্জি

§        ঘন ঘন ও দীর্ঘদিন নাকের ড্রপ বা স্প্রে ব্যাবহার করলে

§        নাকের গঠনগত ক্রুটি থাকলে

§        নাকের ভেতরে পালিপ হলে,আবরনফুলেগেলে

§        দাঁতের কোন ঘা -সঠিক চিকিৎসা না হলে।

 

দীর্ঘমেয়াদি সাইনোসাইটিস ও তার প্রতিকার :

অনেক ব্যক্তির বার বার, ঘন ঘন সাইনোসাইটিস হয়। এই দীর্ঘমেয়াদী বা ক্রনিক সাইনোসাইটিস কয়েক সপ্তাহ বা পুরো মাস থাকতে পারে। মাঝে মাঝে ক্রনিক সাইনোসাইটিস থেকে মারাত্মক জটিলতা- হাড়ের ইনফেকশন হতে পারে। এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে এই ইনফেকশন মস্তিস্কে বা মস্তিস্কের পর্দায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ সব ক্ষেত্রে রোগী মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

ক্রনিক সাইনোসাইটিস থেকে-

§        নাক, গলা ও কানের ইনফেকশন

§        মধ্যকর্নের প্রদাহ, বিস্তারিত

-->

21-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

শ্রবণশক্তি হারানো এবং হিয়ারিং এইড বা কানে শোনার যন্ত্র ব্যবহার

 

 

আমাদের সামাজিক পারিপার্শ্বিক ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে শ্রবণশক্তি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বয়স বাড়ালে আমাদের শরীরবৃত্তীয় অনেক কিছু পরিবর্তন হয়, তার মধ্যে শ্রবণশক্তি অন্যতম। শ্রবণশক্তি হারানো যেকোনো বয়সেই হতে পারে। শ্রবণশক্তি হারানো মানে শুধু উচ্চ শব্দ শুনতে না পারা নয়। এর অর্থ হলো কোনো কিছু বোঝা এবং কথার শব্দকে পার্থক্য করতে না পারা। যদি শ্রবণশক্তি হারানো চিকিৎসা না করা হয় অথবা দেরি হয় তাহলে শিশুদের কোনো কিছু জানার ক্ষমতা, ভাষা দক্ষতা এবং বিকাশ করার ক্ষমতা কমে যায়। শ্রবণশক্তি হারানো মানুষকে বিচ্ছিন্ন, দুর্বল, একাকিত্ব করে দিতে পারে। কানে শোনার ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে ভাব প্রকাশ করার ক্ষমতা কমে যেতে থাকে এবং সাথে বুদ্ধি ও মানসিক ত্রুটি দেখা যায়, যা শিশুদের স্কুলে অথবা যেকোনো বয়সের মানুষের কর্মস্থল ও সামাজিক কার্যকলাপে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয। শ্রবণশক্তি হারানো মানুষের জীবনে অনেক প্রভাব বিস্তার করে।  à¦¹à¦¿à§Ÿà¦¾à¦°à¦¿à¦‚ এইড ব্যবহার করে স্বাভাবিক  à¦œà§€à¦¬à¦¨ যাপন করা এবং দৈনন্দিন কাজকর্ম করা সম্ভব। হিয়ারিং এইড ব্যবহারে লজ্জার কিছু নেই আমরা চোখে যেমন চশমা ব্যবহার করি, সে রকম কানে কম শোনার চিকিৎসা হলো হিয়ারিং এইড ব্যবহার করা।

 

শ্রবণশক্তি হারানোর কারণঃ

 à¦—ুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো n‡jv

·        বয়োঃপ্রাপ্তি

·        ব্যাকটেরিয়া অথবা ভাইরাস সংক্রমণ

·        দীর্ঘদিন উচ্চ শব্দে থাকা

·        কানে ময়লা জমা হয়ে কানন বন্ধ হয়ে যাওয়া

·        কানে ফাঙ্গাল ইনফেকশন

21-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

শ্রবণশক্তি নষ্ট হওয়া প্রতিরোধ

 

শ্রবণশক্তি নষ্ট হওয়া অথবা বধির হওয়ার কারণের মধ্যে রয়েছে- শব্দ দূষণ, আঘাত, ওষুধ এবং অসুখ সমূহ। ছিদ্র যুক্ত কানের পর্দা বা মাথায় আঘাতের কারণেও শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়।

 

 

যদি একবার শ্রবণশক্তি নষ্ট হয় তাহলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা পুনরূদ্ধার করা সম্ভব হয় না। এ ক্ষতিগ্রস্থের কারণ সমুহের মধ্যে রয়েছেঃ-

১। শব্দ দূষণঃ

 à¦à¦•à¦Ÿà¦¿ ছোট, সাপ আকৃতির একটি অংশ শব্দ গ্রহণ করে, তাকে ককলিয়া বলে এবং এটি অন্তঃকর্ণে থাকে। সহস্রাধিক ছোট ছোট চুল ককলিয়াতে থাকে এবং এগুলো শব্দের কম্পাংক অনুভব করে শব্দকে মস্তিস্কে প্রেরণ করে -ককলিয়ার নার্ভের মধ্য দিয়ে । এই সংবেদনশীল চুলগুলো অতিরিক্ত শব্দে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এই ক্ষতিগ্রস্থ কোষ সমূহ পরে শব্দ ধারণ করতে পারে না। তখন কানে শোঁ শোঁ শব্দ হয় এবং কান ভরা ভরা মনে হয়, এটি একটি বিপদজনক চিহ্ন।

ওষুধ সমূহঃ-

অনেক দিন ধরে বিশেষ কিছু ওষুধ খেলেও শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।

রোগ সমূহঃ-

কিছু রোগ সমূহ যেমনঃ মিসেলস বা হাম, মাম্পস, রুবেলা, মেনানজাইটিস ইত্যাদিতেবিস্তারিত

-->

21-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

কান

কান আমাদের শ্রবন ও ভারসাম্য রক্ষার অঙ্গ। ইহার তিনটি প্রধান অংশ: বহি:কর্ন, মধ্যকর্ণ ও অন্ত:কর্ণ। কানের প্রধান সমস্যাগুলো হলো- কানের সংক্রমণ, মাথা ঘোরা, কানের ভিতর শব্দ অনুভব, কানে ময়লা জমা এবং অস্থায়ী বা স্থায়ী বধির হওয়া।

কানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ-

এক-ইহা আমাদের শ্রবনেন্দ্রিয়।

দুই-ভারসাম্য রক্ষাকারী অঙ্গ।

কানের অংশ: তিনটি পৃথক অংশ নিয়ে কান গঠিত:

১। বহি:কর্ণ- এই অংশকে আমরা দেখতে পাই। ইহার গঠন শব্দ তরঙ্গ গ্রহণে সাহায্য করে।

২। মধ্য কর্ণ: কানের পর্দা দ্বারা মধ্যকর্ণ, বহি:কর্ণ থেকে পৃথক হয়েছে। মধ্যকর্ণে তিনটি অতিক্ষুদ্র হাড় রয়েছে যা শব্দ তরঙ্গকে বর্ধিত করে।

৩। অন্ত কর্ণ: এখানে শব্দ; ত্বরঙ্গ বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তরিত হয় এবং তা মস্তিস্কে প্রেরণ করে। ভারসাম্য রক্ষার ইন্দ্রিয় ও এখানে অবস্থিত।

 

শব্দ হলো কম্পন:

বায়ু কম্পন শব্দ ত্বরঙ্গ তৈরী করে। এই শব্দ ত্বরঙ্গ বহি: কর্ণকে আঘাত করে যা কানের কম্পন সৃষ্টি করে। মধ্যকর্ণের তিনটি ক্ষুদ্র অস্থি কম্পনকে বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে এবং তা  অন্ত:কর্ণে প্রেরণ করে। অন্ত:কর্ণের ক্ষুদ্র ও প্যাচানো অঙ্গ ককলিয়া কম্পনকে আরো বাড়ায়। ককলিয়ার চুল এই কম্পন দ্বারা উদ্দিপ্ত হয় এবং এই সংকেত ককলিয়ার স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিস্কে পাঠায়।

ভারসাম্য রক্ষায় অঙ্গ:

অন্তকর্ণে পর্যায়ক্রমে অনেকগুলো তরলে পূর্ণ নালী রয়েছে। এই নালীগুলো বিভিন্ন কোনে অবস্থিত। যখন নড়ে, তখন এই নালীগুলোর মধ্যের তরল গড়াতে থাকে। ইহা মস্তিস্কে জানায় কত দূরে, কত দ্রুত কোন দিকে মাথা নড়ছে। ডিসটিবিউলার স্নায়ুর মাধ্যমে নালীগুলো হতে মস্তিস্কে তথ্যগুলো পৌছায়। মস্তিস্কে যদি যদি মাথার অবস্থান জানতে পারে তাহলে শরীরের অংশের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে।

শরীরের অন্যান্য অংশ হতে ফিডব্যাক:

অন্ত:কর্ণই হলো ভারসাম্য রক্ষার প্রধান অঙ্গ। কিন্তু শরীর এছাড়াও চোখে ও মাংসপেশীতে হতে প্রাপ্ত তথ্যের উপর নির্ভর করে।

 

কানের প্রধান সমস্যা:

কানের অন্যতম প্রধান সমস্যাগুলো হলো:

-         বধির হয়ে যাওয়া: আঘাত, রোগ বা বার্ধ্যক্যের কারণে হতে পারে।

-         কানের সংক্রমণ: কানের প্রদাহ- সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়।

-         মোশন সিকনেস- চোখ ও অন্ত:কর্ণের সাংঘর্ষিক তথ্যের কারণে হতে পারে। যেমন- চলন্ত যান বাহনে চলাকালিন সময় হতে পারে।

-         কানের মধ্যে শব্দ অনুভব:

-         মাথা ঘোরা- অন্ত:কর্ণের মধ্যে ময়লা জমে অস্থায়ী ভাবে বধির হতে পারে।

 

যা মনে রাখতে হবে:

-         কান শ্রবণ ও ভারসাম্য রক্ষার অঙ্গ।

-         শব্দ ত্বরঙ্গ কানের মাধ্যমে গৃহীত হয় এবং তা বৈদ্যুতিক সংকেতে পরিবর্তিত হয়ে মস্তিস্কে পৌছায়।

 

 

21-12-2012 রোগ ব্যাধি

কানের খৈল (Ear wax)

 

    ইয়ার ওয়াক্স মানে কানের খৈল। কানের খৈল মাঝে মাঝে শ্রবণ শক্তি কমিয়ে দেয়, এবং কান সবসময় ভরা ভরা মনে হয়। এ অবস্থা অতটা ক্ষতিকর নয় এবং সহজেই চিকিৎসা করা যায়। কান তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত। বহি:কর্ণ, অন্ত:কর্ণ এবং মধ্য কর্ণ। কানের ক্যানেল নিজেই একটি ওয়াক্সি রস দিয়ে পরিস্কৃত হয়, তাকে সিরুমেন বলে। মাঝে মাঝে মধ্যস্থতা ছাড়াই কানের খৈল বের হয়ে যায়।

 

লক্ষণসমূহঃ-

o                   কানে কম শোনা

o                   কানে ব্যাথা

o                   কান ভরা ভরা মনে হয়

o                   কানে শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া

o                   মাথা ঘোরা

ওয়াক্স কান পরিষ্কার রাখেঃ

কানের চামড়ার কোষ সমূহ গ্রন্থি ধারণ করে এবং এ গ্রন্থি সিরুমেন তৈরী করে। এই হলদে রঙের পদার্থটি এ কোষ সমূহকে রক্ষা করে এবং বিভিন্ন ধরনের ময়লা, জীবাণু সমূহ প্রতিরোধ করে। ওয়াক্স স্থায়ী ভাবে কানের বহিঃঅংশে ভ্রমন করে এবং সহজেই পড়ে যায়। চোয়ালের কোন কাজ যেমন: চিবানো এবং কথা বলার সময় ওয়াক্স ক্যানেলের বাইরে চলে আসে। আমরা যে খৈল বা ওয়াক্স দেখতে পাই সেগুলো হলো- সিরুমেন, মরা চামড়া এবং ময়লার সমন্বয়|

 

বিপদ সমূহঃ-

o      কানে বেশী পরিমানে ওয়াক্স জমা      à¦¹à¦“য়া

o       à¦šà§à¦² সমন্বিত কানের ক্যানেল

o       à¦…তি জোরে কটনবাড বা আঙ্গুলের নখ দিয়ে নখ পরিষ্কার করা

o      দূষিত পরিবেশে কাজ করা

o      চামড়ায় প্রদাহ

o      সরু কানের ক্যানেল

 

সম্ভাব্য জটিলতাঃ

বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে কোন জটিলতা নেই।

 

রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসাঃ-

চিকিৎসক ওটোস্কাপের মাধ্যমে কান পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করেন। চিকিৎসার মধে রয়েছেঃ

১। কানের ড্রপ, যেটি কানের ওয়াক্সকে নরম করবে এবং নিজে নিজেই বের হয়ে যেতে সাহায্য করবে।

২। সিরিঞ্জের মাধ্যমে কানের ক্যানেলে পানি দিয়ে কানের ওয়াক্সকে ভাসিয়ে বাইরে বের করতে হবে।

৩। নিষ্কাশন ডিভাইস দিয়ে ওয়াক্স বের করতে হবে।

৪। ফরসেপ বা বিশেষ হুক দিয়ে ওয়াক্স দূর করা।

৫। শক্ত ওয়াক্স বের করে আনার জন্য কানের বিশেষজ্ঞের শরনাপন্ন হতে হবে।

 

প্রতিরোধঃ

কিছু নিয়ম বা পদ্ধতি মেনে চললে কানের ওয়াক্স কমানো যায়ঃ

১। ওয়াক্স নরম করার জন্য কানের ড্রপ অথবা তেল দুবার সপ্তাহে ব্যবহার করতে হবে।

২। কটন বাড বা নখ দিয়ে কান পরিষ্কার করা যাবে না।

 

৩। শুধু বহিঃকর্ণ পরিষ্কার করা যেতে পারে।

৪। চামড়ায় কোন প্রদাহ দেখা দিলে সেটির চিকিৎসা করাতে হবে।

 

যেগুলো মনে রাখতে হবেঃ

1.      কানের ক্যানেল এক ধরনের ওয়াক্সি নিঃস্বরন দ্বারা  নিজেই পরিস্কৃত হয়, তাকে সিরুমেন বলে।

2.     মাঝে মাঝে ওয়াক্স বিভিন্ন লক্ষন সৃষ্টি করে, যেমনঃ- কানে কম শোনা, কান ভরা ভরা লাগা।

3.     এ ধরনের অবস্থা ক্ষতিকর নয় এবং সহজেই চিকিৎসা করা যায়।

4.     চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে- কানের ড্রপ, সিরিঞ্জের মাধ্যমে ওয়াক্স বাইরে আনা।

 

 

21-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

মধ্যকর্ণে প্রদাহ

    

 

মধ্যকর্ণে প্রদাহ বাচ্চাদের এবং শিশুদের মধ্যে বেশী দেখা যায়। লক্ষনসমূহের মধ্যে রয়েছে- কানে কম শোনা, কানে ব্যাথা এবং জ্বর। এ প্রদাহ ঠান্ডা পেলে বেশী হয়। মধ্যকর্ণে প্রদাহের পর কানে ঘন পুঁজ পূর্ণ হয়, তখন  গ্লু ইয়ার ধারন করে। বাচ্চারা এবং শিশুরা অটাইটিস মিডিয়াতেও অনেক বেশী আক্রান্ত হয়। পুঁজ বা তরল জাতীয় পদার্থ ক্যানেলে পূর্ণ হয়ে ব্যাথা এবং বাধিরতা তৈরী করে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে কানের প্রদাহসমূহ নিজে নিজেই ভাল হয়ে যায়, তবে মারাত্নক ক্ষেত্রে ডাক্তার এর পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিকের দরকার হয়।

 

লক্ষনসমূহঃ

শিশুদের গড়ে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে চার জনেরই মধ্যকর্ণে প্রদাহ ঘটে। এর লক্ষণসমূহের মধ্যে রয়েছেঃ-

o    কানে ব্যাথা

o    মাথা ব্যাথা

o    জ্বর

o    পুঁজ নির্গত হওয়া

o     কানে কম শোনা

o     ঘুমাতে সমস্যা হওয়া

o    ক্ষুধা মন্দা হওয়া

শ্রবণশক্তি কমে যাওয়াঃ

শব্দ তরল পদার্থের মধ্যে ভালভাবে শোনা যায় না। তাই যে বাচ্চার কানে প্রদাহ থাকে, তার কানে শুনতে সমস্যা হয়। তাদের কাছে স্বাভাবিক শব্দ, মৃদু স্বর বা বিস্তারিত

-->

21-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

কানের প্রদাহ :

 

কানের প্রদাহের লক্ষনসমূহ মধ্যে রয়েছে- কানে ব্যাথা, কানে কম শোনা, কান থেকে পুজ নির্গত গওয়া, জ্বর, মাথা ব্যাথা, চুলকানি, ফোসকা পড়া ইত্যাদি। মধ্য কর্নে প্রদাহকে অটাইটিস মিডিয়া বলে। অটাইসিস মিডিয়াতে মাঝে মাঝে কানের পর্দা ছিড়ে যায় এবং এতে গ্লু-ইয়ার সৃষ্টিহয়। শিশুরা এবং ছোট বাচ্চা কানের প্রদাহজনিত রোগে বেশি ভুগে, বিশেষত মধ্যকর্নে ইনফেকশন। কানের প্রদাহজনিত রোগের চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে এন্টিবায়োটিক অথবা সার্জারী।

 

    

 

কান তিনটি অংশ দিয়ে তৈরী। বহিঃকর্ন যেটি বাইরে থেকে দেখা যায় এবং ক্যানেলটি ইয়ার ড্রামের সাথে যুক্ত থাকে। বহিঃকর্ন মধ্যকর্ন থেকে আলাদা থাকে, ইয়ার ড্রামের মাধ্যমে। মধ্যকর্ন ৩ টি  ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হাড় বহন করে শব্দ গ্রহণের জন্য।অনত্মঃকর্নে শব্দ অনুবাদিত হয়ে বৈদ্যুতিক কপ্‌মাংকে পরিণত হয় এবং পরে সেটি মস্তিষ্কে পাঠায়। এই তিনটি অংশই ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস অথবা ছত্রাক দ্বারা আক্রমণিত হতে পারে। এটি ক্যানলে অথবা ইউস্টেশিয়ান টিউবে প্রদাহ ঘটায়, যেগুলো গলার সাথে সম্পর্কিত থাকে। বাচ্চাদের অটাইটিস মিডিয়া বেশি হয়। দেখা গেছে প্রতি ৫ জনে ৪ জনেরই ইয়ার ইনফেকশন আছে।

21-12-2012 রোগ ব্যাধি

কানে কম শোনা-কারণসমূহ

 

বধিরতা বা কানে কম শোনার জন্য অসংখ্য কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হল আঘাত, রোগ এবং জন্মগত বা জীনগত সমস্যা। কান হল আমদের শ্রবন অঙ্গ। ২০ বছরের পর থেকে ধীরে ধীরে শ্রবনশক্তি হ্রাস পেতে থাকে। বয়সজনিত কানে কম শোনাটা স্বাভাবিক এবং এতে একেবারেই বধির হয় না, কিছু শুনতে পায়। বধিরতা অল্প বা বেশি হতে পারে এবং কারণও বিভিন্ন আবার বধিরতা সাময়িক বা স্থায়ীও হয়। কানে বেশি ময়লা জমলে বা ইনফেকশন হলে বা বিভিন্ন ঔষধের জন্যও হতে পারে। আবার এই বধিরতা জন্মগতও হয়, আবার জন্মের পরেও হয়। জন্মের পরের বধিরতার অন্যতম কারণ হল-শব্দ দূষণ।

 

 

কানের গঠন:

কানের মূল ৩টি অংশ।

ক. বহিঃকর্ন :

বাইরের যে অংশটি আমরা দেখি। এর বিচিত্র আঁকা বাকা গঠনশব্দকে ধরে কানের  

    ভেতরে প্রবেশ করাতে সাহায্য করে। একটি নালি পথে তা মধ্যকর্নের সাথে যুক্ত।

খ. মর্ধকর্ন:

কানের পর্দার মাধ্যমে মধ্যকর্ন বহিঃকর্ন

থেকে পৃথক করা আছে। মর্ধকর্নে সরু ৩টি হাড় আছে, যার নাম -ম্যালিয়াস, ইনকাকাস ও স্টেপিস<

21-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

 à¦Ÿà¦¨à¦¸à¦¿à¦²à¦¾à¦‡à¦Ÿà¦¿à¦¸

 

আমাদের গলার ভেতরের অংশ ফ্যারিংস-এ যে টনসিল থাকে তার প্রদাহকেই মূলত টনসিলাইটিস বলা হয়। এই প্রদাহ গলার অন্যান্য টনসিলকেও আক্রান্ত করতে পারে, যেমন এডেনোয়েড এবং লিংগুয়্যাল টনসিল (টনসিল টিস্যুর যে-অংশ জিহ্বার পেছনে থাকে)।

রোগের কারনঃ

ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং ইমিউনোলজিক্যাল ফ্যাক্টর টনসিলাইটিস-এর জন্য দায়ী। ভাইরাসগুলো হলো হারপিস সিমপ্লেক্স, এপ্‌স্টিন-বার ভাইরাস, সাইটোমেগালো ভাইরাস, এডেনো ভাইরাস ও মিসেলস।

শতকরা ১৫-৩০ ভাগ রোগী ব্যাকটেরিয়া জনিত কারণে টনসিলাইটিস-এ আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে স্ট্রেপটোকক্কাস দ্বারা বেশিরভাগ লোক আক্রান্ত হয়।

টনসিলাইটিস সাধারণত ২ বছরের অধিক বয়সের শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। এর মধ্যে ৫-১৫ বছরের শিশুদের টনসিলাইটিস-এর জন্য স্ট্রেপটোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া দায়ী এবং ৫ বছরের

 à¦•à¦®-বয়সী শিশুদের ভাইরাল টনসিলাইটিস বেশি হতে দেখা যায়।

 

 à¦Ÿà¦¨à¦¸à¦¿à¦²à¦¾à¦‡à¦Ÿà¦¿à¦¸-এর প্রকারভেদ এবং লক্ষণ

 

1.      মারাত্মক টনসিলাইটিস রোগীর জ্বর, গলাব্যথা ও নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ থাকে এবং খাবার গ্রহণে কষ্ট হয়।

2.     গলার লিম্ফ গ্রন্থিগুলো ফুলে যায় এবং ব্যথা করে।

3.     অনেক সময় টনসিল ফুলে গিয়ে শ্বাসনালীতে বাধা সৃষ্টি করলে রোগীর মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হয়, রাতে ঘুমের মধ্যে কিছুক্ষণের জন্য নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এই সমস্যাগুলো তিন থেকে ৫ দিনের মধ্যে সাধারণত চলে যায়, কিন্তু অনেক সময় চিকিৎসা ছাড়া দুই সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

ফিরে ফিরে-আসা টনসিলাইটিস:

যখন কোনো রোগী বছরে কয়েকবার মারাত্মক টনসিলাইটিস-এ আক্রান্ত হয় তখন আমরা তাকে রেকারেন্ট (ফিরে ফিরে-আসা) টনসিলাইটিস বলে থাকি।

ক্রনিক টনসিলাইটিস:

এসব রোগীর অনেকদিন ধরেই গলাব্যথা, মুখে দুর্গন্ধ এবং স্থায়ীভাবে লিম্ফ গ্রন্থিগুলোতে ব্যথা থেকে যায়।

পেরিটনসিলার এবসেস:

এসব রোগীর তীব্র গলাব্যথা, জ্বর, নিশ্বাসে দূর্গন্ধ, মুখ খুলতে কষ্ট অনুভব, গলার স্বর  à¦¬à¦¸à§‡-যাওয়া, ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।

 

টনসিলাইটিস রোগীর শারীরিক পরীক্ষা করে যেসব পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে সেগুলো হলো:

১। জ্বর, টনসিল ফুলে লাল হয়ে-যাওয়া, পুঁজ জমে-থাকা।  

২। অনেক সময় মুখের ভেতরে তালুতে কিছু রক্তক্ষরণের চিহ্ন পিন-এর আকারে দেখা যায়, গলার লিম্ফ গ্রন্থিগুলো ফুলে যায়।

৩। রোগীকে মুখ খুলে শ্বাস নিতে হয়; গলার স্বর চিকন হয়ে আসে।

৪। পেরিটনসিলার এবসেস-এর ক্ষেত্রে টনসিলের উপরের অংশ এবং চারপাশ ফুলে থাকে। এক্ষেত্রে চোয়াল নাড়াতে কষ্ট হয়।

 

 à¦Ÿà¦¨à¦¸à¦¿à¦²à¦¾à¦‡à¦Ÿà¦¿à¦¸-এর চিকিৎসা

মারাত্মক টনসিলাইটিস-এর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট জীবাণু­à¦¨à¦¾à¦¶à¦• অষুধ (এন্টিবায়োটিক) দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। এক্ষেত্রে রোগীকে জ্বর ও ব্যথার অষুধও দিতে হবে। প্রচুর পানি খেতে বলতে হবে। দিনে ২/৩ বার গরম পানিতে লবণ দিয়ে কুলকুচি করতে হবে। মুখের ভিতরের অংশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে ক্রনিক এবং রেকারেন্ট টনসিলাইটিস-এর ক্ষেত্রে সাধারণত অপারেশনের পরামর্শ দেওয়া হয়। টনসিলাইটিস-এর জন্য শ্বাসনালীতে বাধা সৃষ্টি হলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।

18-12-2012 রোগ ব্যাধি

এডেনয়েড

 

টনসিল শব্দটি অনেকের কাছেই পরিচিত, তাই গলার কোনো সমস্যা হলেই টনসিলের প্রসঙ্গ আসে। তাই অনেকেই এডিনয়েডের সমস্যাকে টনসিলের সাথে মিলিয়ে ফেলেন। কিন্তু এডিনয়েড একটি পৃথক বস্তু। তবে টনসিলের সাথে এর কিছুটা গঠনগত মিল আছে। এ দুটোই লিস্ফোয়েড টিস্যু বা লসিকাজাতীয় কোষ, যা অবস্থান করে নাসা গলবিল ও গলবিল অঞ্চলের ঝিল্লির ঠিক নিচে। উর্দ্ধশ্বাসনালী এবং খাদ্যনালীর সংযোগস্থলে টনসিল ও এডিনয়েড ছাড়া একই রকম আরো কতগুলো লসিকাগ্রন্থি থাকে যেমন- টিউবাল(এটি অবস্থান করে নাসাগলবিল অঞ্চলে যেখানে কানের সাথে নাসাগলবিলের সংযোগ স্থাপনকারী পথটি উন্মুক্ত) জিহ্বার দুপাশে অবস্থিত লিঙ্গুয়াল টনসিল ইত্যাদি।

 à¦ অঞ্চলের এসব লসিকা কোষ গোলাকার রিংয়ের মতো অবস্থান করে, একে বলা হয় ওয়ের্ল্ডাস রিং। ওয়েল্ডার্স রিংয়ের অর্ন্তভুক্ত এই এডিনয়েড জন্ম থেকেই থাকে। তিন থেকে সাত বছরের মধ্যে এটি আকারে সবচেয়ে বেশি হয় এবং আট বছর বয়সের মধ্যে এটি ছোট হতে থাকে। কারো বেলায় এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলেই বিপত্তি। তখন বিষয়টি এডিনয়েড গ্রন্থি বড় হওয়াজনিত সমস্যা হিসেবে টিহ্নিত করা হয়ে থাকে।

 

কারণ সমূহ:

এডিনয়েড গ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে ।

মনে করা হয়ে থাকে । বারাবার উর্দ্ধশ্বাসনালীর ইনফেকশন এডিনয়েডের  উপর প্রভাব ফেলে। যার ফলে এডিনয়েড আকারে বড় হয়ে যায়।

এ ছাড়া এলার্জিজনিত কারণেও এডিনয়েড বড় হয়ে যায় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

উপসর্গ:

এডিনয়েড বড় হয়ে গেলে বেশ কিছু  উপসর্গ পরিলক্ষিত হয় । নাক দিয়ে শ্লেষ্মা ঝরা, কাশি ও  হালকা  জ্বর এডিনয়েড  গ্রন্থি বেড়ে যাওয়ার কারণে নাকের বাতাস চলাচলের পথে সংক্ষিপ্ত হয়ে যায়। ফলে শিশু মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়।

নাকের পথ যথাযথভাবে খোলা না থাকায় নাকের মধ্যে শ্লেষ্মা জমে থাকে এবং নাক দিয়ে শ্লেষ্মা  ঝরতে থাকে।

এক পর্যায়ে নাকের দুইপাশের সাইনাসে ইনফেকশন হয়। শিশু bvKv¯^‡i কথা বলে। এমনকি রাতে ঘুমানোর সময় নাক ডাকতে পারে কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাসে শব্দ হতে পারে।

এডিনয়েড বড় হলে ইউস্টিশিয়ান টিউবের পথটি বন্ধ হযে পড়তে পারে। ফলে মধ্যকর্ণে শ্লেষ্মা আবদ্ধ অবস্থায় জমে যেতে পারে, কানে ব্যথা হতে পারে এবং অবস্থাভেদে শিশু কানে কম শুনতে পারে। মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়ার কারণে শিশুর খাবার গ্রহণে বিলম্ব কিংবা অসুবিধা হয়। এ ছাড়া শিশুর মুখের কোনা দিয়ে লালা পড়তে পারে।

 

এডিনয়েড নির্ণয় কোনো কঠিন বিষয় নয়:

এজন্য নাক কান ও গলা বিশেষজ্ঞ একটি শিশুকে পর্যবেক্ষন করে, অসুস্থতার ইতিহাস নিয়ে এবং একটি এক্স-রে করার মাধ্যমেই এডিনয়েড গ্রন্থির বিষয়টি বুঝতে পারেন।

 

চিকিৎসা:

এডিনয়েড সমস্যার চিকিৎসা মূলত অপারশেন। যদি এডিনয়েড গ্রন্থি বৃদ্ধির বিষয়টি শিশুর মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়া, নাক বন্ধ থাকা ইত্যাদির কারণ বলে গণ্য হয় তখন অপারশেনই হচ্ছে এর একমাত্র চিকিৎসা। শিশুর অপারশেনের প্রসঙ্গ এলে অধিকাংশ বাবা-মা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। কিন্তু কথা হচ্ছে, এই সমস্যাটি শিশু বয়সেই হয় আর চিকিৎসা হচ্ছে অপারেশন । সুতরাং সময়মতো অপারেশন করালে রোগের কারণে সৃষ্টি ভবিষৎ জটিলতা এড়ানো সম্ভব। সব অপারেশনের মতোই এডিনয়েড অপারেশনের মতোই এডিনয়েড অপারেশনে সাধারণ কিছু ঝুঁকি রয়েছে। তবে অজ্ঞান করে অপারেশন করতে হয বলে শিশুকে অজ্ঞান করার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়।

 

এডিনয়েড অপারেশনের নির্দেশনা গুলোর মধ্যে রয়েছে-  

১. যদি নাক প্রায়ই বন্ধ থাকে এবং এক্স-রে তার প্রমাণও পাওয়া যায়।                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                  &nbs

18-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

এলার্জিক রাইনাইটিস

 

এলার্জিক রাইনাইটিস নাসিকা যিল্লির এক ধরনের প্রদাহের কারণে হয়ে থাকে। এ-রোগের সাথে আইজি-জি (IgG) এন্টিবডির সংশিষ্টতা রয়েছে। এছাড়া, এ-রোগের সাথে চোখের এলার্জিক কনজাংটিভাইটিস এবং শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ এজমাও থাকতে পারে। উন্নত, উন্নয়নশীল, অথবা অনুন্নত কোনো দেশই এ-রোগের বিস্তার থেকে মুক্ত নয়। এ-রোগে যিনি আক্রান্ত হন তিনি যেমন কাজেকর্মে সঠিক মনোযোগ দিতে পারেন না, তেমনি উপসর্গেও কারণে আশপাশের লোকজন বিরক্ত বোধ করেন।

 à¦¶à¦¿à¦¶à§à¦°à¦¾ এ-রোগে আক্রান্ত হলে ক্লাসে মনোযোগী হতে পারে না এবং লেখাপড়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। বয়স, লিঙ্গ ও অঞ্চলভেদে এ-রোগে আক্রান্ত লোকের শতকরা হার ১০ থেকে ২০। এ-রোগের বিস্ত্রিতি পুরুষের মধ্যেই বেশি। ৫ থেকে ২৪ বছর-বয়সীদের মধ্যে এ-রোগের প্রকোপ বেশি। ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশেও এধরনের রোগীর সংখ্যা মোটেই কম নয়।

 

প্রকার ভেদঃ

এলার্জিক রাইনাইটিস রোগকে মূলত তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যেতে পারে:

১. পেরিনিয়াল যেসব রোগী সারাবছর এ-রোগে ভোগেন; 

২. সিজনাল যারা ঋতু পরিবর্তন,যেমন গ্রীষ্মকাল ও শীতকালের মাঝামাঝি সময়ে আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে এ-রোগে ভোগেন; এবং

৩. পেশা ভিত্তিক এধরনের অসুস্থতা সাধারণত পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হতে পারে, যেমন কৃষিকাজের সময় কিংবা রংশিল্পে কাজ করার সময় কেউ এ-অসুস্থতায় আক্রান্ত হতে পারেন।

কখনো কখনো প্রম দুটি অবস্থার সংমিশ্রণ হতে দেখা যায় অর্থাৎ পেরিনিয়াল রাইনাইটিস রোগীদেরও ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে রোগের উপসর্গের তীব্রতা মাত্রাতিরিক্ত হতে পারে।

 

যে যে বিষয়ের সম্পৃক্ততাঃ

যে যে বিষয়ের সাথে এলার্জিক রাইনাইটিসের সম্পৃক্ততা রয়েছে তা হল:

 

১. ক্ষুদ্র কীট, পোকামাকড়, গৃহপালিত পশু এবং এদের মল (বিশেষভাবে উল্লেখ্য ইঁদুরের মল)

২. ফুলের রেণু

৩. ছত্রাকজাতীয় পদার্থ

৪. শিল্পাঞ্চল ও শহরের কালো ধোঁয়া, নাইট্রাস অক্সাইড, সালফার ডাইঅক্সাইড, ওজোন, প্রভৃতি গ্যাস থেকে এ-রোগের সৃষ্টি হতে পারে

৫. ব্যথা নিবারণের জন্য ব্যবহৃত এসপিরিন ও অন্যান্য এনএসএআইডি থেকে এলাজির্ক রাইনাইটিস হতে পারে। এছাড়া, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্যবহৃত কিছু কিছু ওষুধ সেবনে এ-রোগ হতে পারে

৬. বাবা অথবা মা কিংবা উভয়ের এলার্জিক রাইনাইটিস থাকলে তা সন্তানের মধ্যে যথাক্রমে শতকরা ২৯ ভাগ ও ৪৭ ভাগ ক্ষেত্রে সংক্রামিত হতে দেখা যায়। যেকোনো বয়সের মানুষ, এমনকি ৬ মাসের বাচ্চাও, এ-রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে বেশিরভাগই আক্রান্ত হন ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সের মধ্যে।

 

রাগের লক্ষণগুলোঃ

নাকের সিজনাল এলাজির্র ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে হাঁচি  হয়।

 

·        নাক বন্ধ হয়ে-যাওয়া,

·        নাক দিয়ে পানি-ঝরা

·        নাকের ভিতর চুলকানো,

·        চোখ চুলকানো,

·        গলা চুলকানো

·        কখনো কখনো শ্বাসকষ্টও হতে পারে।

তবে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে রোগের লক্ষণগুলোর তীব্রতাও পরিবর্তিত হয়।

নাকের পেরিনিয়াল এলাজির্র ক্ষেত্রে লক্ষণের তীব্রতা এত বেশি নয়।

·        প্রায়ই ঠান্ডা-লাগা,

·        নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া,

·        নাকে গন্ধ ঠিকমত না-পাওয়া,

·        গলায় সামান্য সাদাটে কাশি জমে থাকা,

·        প্রায়ই কাশি- থাকা

·        কান ভার-ভার লাগা

·        কানে কম- শোনা

·        চোখের পাতা  à¦«à§à¦²à§‡ যেতে পারে।

·        গলার স্বরেও পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।

16-12-2012 রোগ ব্যাধি

দাত খুলে পড়ে গেলে কি করবেন:

 

দূর্ঘটনায় অনেক সময় দাত পড়ে যেতে পারে। যদি স্থায়ী দাত আঘাতের কারণে মাড়ি থেকে আলাদা হয়ে যায়, তবে একটু সচেতন হলে  দ্রুত দাতটিকে মাড়িতে বসিয়ে দিতে পারলে দাতটিকে বাঁচানো সম্ভব। আর যদি নিজে নিজে বসাতে না পারেন তবে দ্রুত ডেন্টিস্ট এর কাছে দাতসহ চলে যান। তবে দাতটিকে অবশ্যই দুধের মধ্যে রেখে সংরক্ষণ করতে হবে। যত দ্রুত পড়ে যাওয়া দাতটিকে মাড়েত প্রতিস্থাপন করা যাবে, দাত বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেশি। বলা হয় যত মিনিট দাতটি মাড়ির বাইরে থাকবে, দাতটি বেচে থাকার সম্ভাবনা তত কমতে থাকবে।

 

স্থায়ী দাঁত খুলে পড়ে গেলে করণীয়:

Ø     দাঁতটির গোড়ায় ধরবেন না, উপরের অংশে ধরবেন।

Ø     দাঁতটিকে দুধের মধ্যে বা নরমাল স্যালাইনে কিছুক্ষণ রেথে নাড়ুন।

Ø     দাঁতটিকে সঠিক স্থানে সঠিকভাবে ঢুকিয়ে দিন।

Ø     ১টা রুমাল বা পাতলা কাপড়  উপরে

দিয়ে দাতটিতে হালকা জোরে কামড় দিয়ে ধরে রাখুন।

Ø     যত দ্রুত সম্ভব ডেন্টিস্ট এর সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

Ø     আর যদি সঠিকভাবে বসাতে না পারেন তবে দাতটিকে দুধের মধ্যে বা নরমাল স্যালাইনে  অথবা প্লাস্টিকের মোড়কে রাখুন।

 

 

কি করবেন না:

দাতটিকে ভালভাবে পরিষ্কার করার চেষ্টা করবেন না।

 

বাচ্চাদের অস্থায়ী দাত পড়ে গেলে:

বচ্চাদের দুধ দাত (প্রথমে যে দাঁতগুলি উঠে) পড়ে গেলে একই নিয়মে সেগুলিকে মাড়িতে লাগানো যাবে না। কারণ:

Ø     এতে এই দাতটি মাড়ির স্থায়ীভাবে লেগে যেতে পারে এবং যখন দুধ দাত পড়ার কথা, তখন আর নাও পড়তে পারে।

Ø     এর নিচের স্থায়ী দাতটিকে নষ্ট করে দিতে পারে।

 

যা মনে রাখতে হবে:

Ø     স্থায়ী দাত পড়ে গেলে যত দ্রুত সম্ভব আগের স্থানে বসিয়ে দিন।

Ø     যত মিনিট দেরিতে প্রতিস্থাপন করা হবে দাত নষ্ট হবার স্মভাবনা তত বাড়তে থাকবে।

Ø     বাচ্চাদের দুধ দাত কখনও পড়ে গেলে তা আর পুর্বের স্থানে লাগানো যাবে না

Ø     যত দ্রুত সম্ভব ডেন্টিস্টের শরনাপন্ন হতে হবে।

 

 

 

16-12-2012 রোগ ব্যাধি

বাচ্চাদের দাঁতের ক্ষয়রোধ করণ

    

বাচ্চাদের দাঁতের ক্ষয়রোধ করতে সঠিক যত্ন ও পরিচর্যা করা দরকার। শিশু  ও বাচ্চাদেরও দাঁতের ক্ষয় হয়। যে সব বাচ্চারা বুকের দধ খায় তাদের এ সম্ভাবনা কম কেননা, বুকের দুধে ক্ষয়রোধ প্রতিরোধ করে। অন্যদিকে যারা ফর্মূলা মিল্ক খায়, তাদের অবশ্যই দাঁতের যত্ন দরকার। বাচ্চাদেরকে জুস, ড্রিংকস্‌ খাওয়া বিরত রাখার এবং নিয়মিত দাঁতব্রাশ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করুন।

     দাঁতের মাঝখানে ক্ষয় বা গর্ত হওয়াকে ডেন্টাল ক্যারিস বলে। ৬-১২ মাসের শিশুদের ক্ষয়রোগ দেখা দেছে। সাধারণত বাচ্চাদের উপরের মাড়ির সামনের চারটি দাঁতে ক্ষয় বেশি হয়। তবে বশি  ছোট বয়সে দাঁতের ক্ষয়ের অন্যতম কারণ ফিডার বা বোতলের ব্যবহার।

¨     ছোট বাচ্চাদের দাঁতের ক্ষয়রোগ:   à¦–ুব ছোট বাচ্চাদের দাঁতের ক্ষয়-প্রাথমিক পর্য্যায়ে সনাক্ত করা বেশ কঠিন। আবার ক্ষয় কি পর্যায়ে-তার উপরও নির্ভর করে কি কি লক্ষণ। কয়েকটি লক্ষণ দেখা যায় যেমন-

¨     দাঁতের মাড়ির সংযোগ স্থলে সাদা দাগ হয়। এটি সর্ব প্রথম লক্ষন যা সাধারণত বেশির ভাগ পিতা-মাতাই সনাক্ত করতে পারেন না। মূলত দাঁতের বিস্তারিত

-->

16-12-2012 রোগ ব্যাধি

মাড়ির যত রোগ

 

 

অধিকাংশ ব্যক্তিই জীবন কখনও না কখনও মাড়ির সমস্যায় ভুগে থাকবেন। মূলত দাঁতে প্লেক জমা হয়ে পরবর্র্তিতে মাড়িতে সমস্যা হয়। এর অন্যতম লক্ষণ হল দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত পড়া। আর এই মাড়ির সমস্যার বিভিন্ন ধাপ ও প্রকার আছে, যেমন জিনজিভাইটিস, পেরিওডোনটাইটিস। নিয়মিত সঠিক নিয়মে ব্রাশ করলে এই ধরনের সমস্যা থেকে অনেকাংশে বেঁচে থাকা যায়।

মাড়ি সমস্যার মূল ২টি ধাপ / পর্যায়ঃ

ক) জিনজিভাইটিস :

এটি মাড়ির রোগের প্রথম ধাপ। দাঁতের গোড়ায় প্লেক জমা হলে সেখান থেকে রক্তপাত হয়, মাড়ি ফুলে যায়, লাল বর্ন ধারণ করে ও ব্যাথা হয়।

খ) পেরিওভন্টাইটিস :

জিনসজিভাইটিস এর পরবর্তী পর্যায়, যদি সঠিক ভাবে চিকিৎসা করা না হয়। এ ক্ষেত্রে দাঁত ও মাড়ির সংযোগ স্থল টি আলগা ও দুর্বল হয়ে পড়ে। এই ফাকা অংশটিকে বলে পেরিওডন্টাল পকেট। ব্যাকটেরিয়া এবং ব্যাকটেরিয়া নি:সৃত পদার্থ এই পকেটে এসে জমা হয় এবং এতে ব্যাথা, ফোলা ও লাল বর্ণ আরও বেড়ে যায়, মুখের দুর্গন্ধ বিস্তারিত

-->

16-12-2012 রোগ ব্যাধি

দাঁতের যত্নে ফ্লুরাইড

 

    

ফ্লুরাইড এ ধরনের অতি প্রয়োজনীয় খনিজ লবন। বিভিন্ন ধরনের খাবারে, পানিতে, উদ্ভিদে এবং টুথপেস্টে ফ্লুরাইড পাওয়া যায়। এই ফ্লুরাইড আমাদের দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করে। তাই নির্দিষ্ট মাত্রায় ফ্লুরাইডযুক্ত পানি পান করলে এবং ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করে দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করা সম্ভব।

 

কোথায় পাবেন?

ফ্লুরাইড কোন ঔষধ নয় বরং এক জাতীয় খনিজ লবন। মাটি পানি, পাথর,  উদ্ভিদেও ফ্লুরাইড থাকে। বিশ্বের বহুদেশে খাবার পানির সাথে পরিমিত মাত্রায় ফ্লুরাইড যোগ করা থাকে। ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট, জেল ও মাউথ ওয়াশ বাজারে পাওয়া যায়। এ ছাড়া ডেন্টিস্টরা দাঁতের ক্ষয়রোধে দাঁতে ফ্লুরাইড জেল এর প্রলেপ ব্যবহার করেন।

 

কি কাজ করে:

এসিডের কারণে দাঁদের এনামেল  ক্ষয় তৈরী হয়। নিয়মিত পানির সাথে

বা বিভিন্ন  উপায়ে ফ্লুরাইড খেলে তা-

¨     দাঁতের ক্ষয়  প্রতিরোধ করে।

¨     ক্ষয়পূরণে সাহায্য করে।

¨     দাঁতের ব্যথা, অশ্বস্তি কমাতে সাহায্য করে।

¨     শিশুদের দ্রুত দঁত পড়ে যাওয়া রোধ করে

 

দাঁতের যত্নে আরও যা দরকার :

পানি বা টুথপেস্ট ফ্লুরাইডযুক্তবিস্তারিত

-->

16-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

মুখ শুকিয়ে যাওয়া:

 

মুখ শুকিয়ে যাওয়া বা ড্রাই মাউথ সিনড্রম বলতে বুঝায় এই রোগে মুখের যে লালা থাকে তা শুকিয়ে যায়। এটা একটা রোগের উপসর্গ, কিন্তু কোন রোগ নয়। বিভিন্ন রকমের ঔষুধ, উদরাময়, জগরেন সিনড্রম, বিভিন্ন রোগের সংক্রমন, স্নায়ুর সমস্যা এবং ক্যান্সার রোগে যে সমস্ত ঔষুধ ব্যবহার করা হয় মুলত এরা শুকনো  মুখের জন্য দায়ী।

 

উপসর্গ:

o       ঘাঢ় আঠালো লালা

o       অমসৃণ শুকনো জিহ্বা

o       চাবাতে বা গিলতে সমস্যা (সাধারণত শুকনো খাবার যেমন- বিস্কুট)

o       মুখে দূর্গন্ধ

o       মুখে ঘা

o       ঠোট শুকনো এবং ঠোঁট ফাটা

o       দন্ত ক্ষয় বেড়ে যায়।

 

      

অন্যান্য উপসর্গ:

মুখের উপসর্গ ছাড়াও অন্যান্ন যে সমস্ত উপসর্গ  ড্রাই মাউথ সিনড্রম এ দেখা যায় তা হল:

o       চোখ শুকিয়ে যায় এবং জ্বালা করে।

o       নাক বা গলা শুকিয়ে যায়।

o       সারাক্ষনই কাশি থাকে।

o       ঘ্রাণ শক্তি কমে যায়।

o       কোষ্ঠকাঠিন্য।

o       সংযোগ ব্যথা বা ফুলে যাওয়া (ডায়েটে)

o       সাধারণত কোন কিছুতে ভাল লাগে না।

o       অস্বাভাবিক ভাবে ওজন বেড়ে যায়।

o       মহিলাদের ক্ষেত্রে-যোনীপথে বিভিন্ন সংক্রমন দেখা যায়।

লালা গ্রন্থি:

আমাদের মুখ, জিহবা ও গলার চারপাশে লালাগন্থির অবস্থান। লালাগ্রন্থির থেকে নিঃসৃত হয এবং লালাকে ছোট্ট নালীর মাধ্যমে মুখে নিয়ে আসে লালা নালী। লালা গ্রন্থিসমূহ হল:

o       প্যারোটিড গ্রন্থি - কানের সম্মুখে এবং চোয়ালের পশ্চাতে অবস্থিত।

o       সাবম্যান্ডিলার গ্রন্থি -চোয়ালের উভয়পাশে জিহ্বার নিচে  অবস্থান।

o       সাবলিজুয়াল গ্রন্থি-মুখের প্রান্তদেশে অবস্থান।

o       ক্ষুদ্রলালা গ্রন্থিসমূহ-মুখের বিভিন্ন জায়গায় এমনকি গাল ও গলার ভিতরে অবস্থান করে।

লালার স্বাভাবিক নিঃসরনের ফলে মুখ সব সময় ভিজা থাকে। খাদ্য চর্বন ও খাদ্য গলাধঃকরনের ফলে লালার প্রবাহ বারে- এমনকি সস্বাদু কোন খাবারের দিকে তাকালেও লালার নিঃসরন বাড়ে।

 

সুরক্ষার ক্ষেত্রে লালার ভূমিকা:

মুখের শুষ্কতা দাঁত ক্ষয়ের ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দেয়। এর কারণ  à¦²à¦¾à¦²à¦¾ -

v    দন্ত ক্ষয়ের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমিয়ে দেয়।

v    ছত্রাকের বিপরীতে উপাদান থাকে।

v    ভাইরাস ধ্বংস করতে সাহায্য করে।

v    দন্ত ক্ষয়ের জন্য মুখের এসিডকে দূর করে।

v    ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম ধারণ করে। এরা দাঁতের এনামেল(শক্ত আবরণ যা দাঁতকে সুরক্ষা করে) গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

v    খাদ্যের গঠন ও খাদ্যের স্বাদ নিতেও সাহায্য করে।

 

দাঁত ক্ষয়ের ধরন:

চিনিযুক্ত খাবার ও  মুখের অপরিচ্ছন্নতা, দাঁত ক্ষয় করে। দাঁতের টুকরোকে ভেঙ্গে ফেলে। তাছাড়া মুখের শুষ্কতা বিভিন্ন দাঁত ক্ষয়ের কারণ। দাঁত ক্ষয় শুরু হয় মাড়ি থেক্‌ তাঁ দাঁতের নিচের/ডেন্টিনকেও আক্রমণ করে। এনামেল ছাড়া ডেন্টিন  দাঁত ক্ষয়ের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়ার উপর সামান্য বাঁধা দেয়। দাঁতের বহিরাংশের যে ক্ষয় তা রুট ক্যারিস।

কারণ:

অনেকগুলো বিষয়- কোনটা স্বল্প মেয়াদী, কোনটা দীর্ঘমেয়াদী লালা তৈরীতে বাধা দেয়। এগুলো হল-

 

o       ঔষধ-

প্রায় ছয়শত ঔষুধ মুখের শুষ্কতার জন্য দায়ী। এদের মধ্যে রয়েছে সর্দি জ্বরের ঔষুধ, উচ্চ রক্তচাপের ঔষুধ, ঘুমের ঔষুধ, ব্যথানাশক, অবসাদ রোধকারক ঔষুধ অন্যতম।

o       ডিহাইড্রেশন-

তরল খাবার খুবই অল্প পরিমাণ খেলে ঘন লালা ও মুখের শুষ্কতা তৈরী করে। এছাড়াও রক্তক্ষরণ, দীর্ঘমেয়াদী ডায়রিয়া কিংবা কিডনি ফেইলর-ডিহাইড্রেশনের জন্য দায়ী।

o       সংক্রমণ-

ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস লালাগ্রন্থিকে সংক্রমিত করে। যেমন- মাম্‌স এবং তা লালা তৈরীতে বাধা দেয়।

o       জগরেন সিনড্রম-

এটা সাধারণত চোখ ও লালাগ্রন্থিকে আক্রমণ করে। তাছাড়া অনেক সময় ঘর্ম  গ্রন্থিতেও এর প্রভাব লক্ষনীয়।

o       লালা পথে বাধা-

যেমন ছোট্ট পাথর লালা নালীতে জমা হয়ে লালাকে প্রবাহিত গতি বাধা দেয়।

o

16-12-2012 রোগ ব্যাধি

ডেন্টাল ইমপ্লান্ট

 

ডেন্টাল ইমপ্লান্ট হলো কৃত্রিম দাঁত, যা আপনার হারানো দাঁত ফিরিয়ে দিতে পারে। ডেনচার ও ব্রিজের চেয়ে অনেক ভালো কাজ করে ডেন্টাল ইমপ্লান্ট। আমরা সাধারণত একটি দাঁত হারালে -আলগা দাঁত ব্যবহার করি (পারশিয়াল ডেনজার) অথবা ব্রিজ করি (পাশের দুটি দাঁতের সাহায্য নিয়ে স্থায়ীভাবে লাগিয়ে দিই)।

কিন্তু ডেন্টাল ইমপ্লান্ট হলো সবচেয়ে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি, যার মাধ্যমে আপনি স্বাভাবিক দাঁতের মতোই খাওয়া দাওয়া করতে পারেবন। কোনো খোলা-লাগানোর ঝামেলা নেই। পাশের দাঁদের কোনো সাপোর্টের প্রয়োজন নেই। কারণ ডেন্টাল ইমপ্লান্টের জন্য আপনার হারানো দাঁতের জায়গায় একটি স্কু বসানো হয় এবং এই স্কুর ওপর ভিত্তি করেই আপনার সম্পূর্ণ দাঁতটি তৈরি করা হয়।

ডেন্টাল দাঁত হারিয়ে ফেলেছন তাদের সব দাঁত আগের মতো করা সম্ভব। অর্থাৎ আপনাকে আর কমপ্লিট ডেনচার করতে হবে না।

 

সংক্ষেপে ডেন্টাল ইমপ্লান্ট প্রসিডিউর :

ইমপ্লান্ট দুই প্রকার-

১। মিনি ইমপ্লান্ট(অস্থায়ী ইমপ্লান্ট)

২। স্থায়ী ইমপ্লান্ট বা ইকন

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডেন্টাল ইমপ্লান্টের জন্য তিনটি স্টেপ অনুসরণ করা হয়

·        হাড়ের ভেতর ইমপ্লান্ট বসানো।

·        ইমপ্লান্টের সাথে এবার্টমেন্ট সংযুক্ত করা।

·        কৃত্রিম দাঁত এবার্টমেন্টের সাথে সংযুক্ত করা।

সম্পূর্ণ চিকিৎসার জন্য তিন থেকে ছয় মাস অথবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশিও লাগতে পারে। প্রতিটি ইমপ্লান্ট বসানোর জন্য এক থেকে দুই ঘন্টা অথবা আরোও বেশি সময়ও লাগতে পারে।

 

সম্পূর্ণ পদ্ধতিট সংক্ষেপে বর্ণনা করা n‡jv

ইমপ্লান্ট বসানোর জায়গা নির্ধারণ :

ইমপ্লান্ট বসানোর জন্য আগে এক্স-রে এবং সিটি স্ক্যান করে দেখতে হবে কোন জায়গার হাড় কত পুরু। যে জায়গার হাড় যত পুরু সেই জায়গা ইমপ্লান্ট বসানোর জন্য তত উপযোগী। আপনার ডেন্টাল সার্জন এটা নির্ধারণ করবেন।

ডেন্টাল ইমপ্লান্ট হাড়ের মধ্যে বসানো বিস্তারিত

-->

16-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

৬ বছর  à¦ªà¦°à§‍যন্ত বাচ্চাদের দাঁতের যত্ন:

 

বাচ্চাদের মুখের ও দাঁতের সুস্থ্যতার জন্য ২ বছর বয়সের মধ্যে অন্তত ১ বার পরীক্ষা করা দরকার এবং সেই সাথে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলা উচিত। তাতে করে বাচ্চাদের মুখ ও দাতের অনেক ধরনের সমস্যা থেকে মুক্ত রাখা যাবে।

০-১ বছর বয়সের বাচ্চাঃ

মুখ, দাত ও মাড়ি সুস্থ রাখতে হলে-

Ø     শক্ত খাবারের সাথে অতিরিক্ত চিনি বা মধু মিশাবেন না।

Ø     দাত উঠার সময় সে ব্যথা হয় -তা কামড়ানোর জন্য লেবুর রস ব্যবহার করলে দাতের ক্ষতি হয় । তাই তা করবেন না।

Ø     চুষনী বা বোতল অযথা বাচ্চার মুখে দিয়ে রাখবেন না।

Ø      à¦¨à¦¤à§à¦¨ দাত সাধারণত ৬-৯ মাসের মধ্যে  উঠতে শুরু করে। প্রতিটি দাত দিনে ২ বার পরিস্কার করুন।

Ø     দাত পরিষ্কার করতে গজ কাপড় বা পাতলা সুতি কাপড়, আঙ্গুল জড়িয়ে দাতের সামনে ও পিছন দিকে ঘষে পরিষ্কার করুন।

Ø     ১২ মাসের পর থেকে নরম ছোট টুথশব্রাশ দিয়ে দাত পরিষ্কার করুন। এক্ষেত্রে ব্রাশটিকে শুধু পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিন।

১ - 11/2 বছর ;

ফিডার বা বোতল খাওয়া বন্ধ করুন।

Ø     যখনই পিপাসা পায় তখনই শুধু পরিষ্কার পানি পানের অভ্যাস গড়ে তুলুন।

Ø     বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জুস, সফট ড্রিংক্‌স, মিষ্টি রস, চকলেট খাওয়া যত সম্ভব কমানোর চেষ্টা করুন।

Ø     বরং ফল, দই, পনির, বিস্কুট ইত্যাদি নাস্তা হিসেবে ব্যবহার করুন।

Ø     ছোট নরম টুথব্রাশ দিয়ে দিনে ২ বার  ব্রাশ করার অভ্যাস করুন।

Ø     কম পরিমাণের ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট বাচ্চাদের ১৮ মাস  বয়স থেকে ব্যবহার করুন।

Ø     বাচ্চা যাতে চটুথস্টে খেয়ে না ফেলে, থুথু দিয়ে বের করে না দেয় সেই অভ্যাস গড়ে তুলুন।

 

১৮ মাস হতে ৬ বছর:

Ø     দিনে ২ বার ব্রাশ করা অভ্যাস গড়ে তুলুন।

Ø     আঙ্গুল চোষা, নখ কামড়ানো ইত্যাদি বাজে অভ্যাস থাকলে বদলানোর চেষ্টা করুন।

স্কুলগামী বাচ্চাদের :

Ø     প্রতিদিন সকালে নাস্তার পরে ও শোবার আগে দাত ব্রাশ করার অভ্যাস করুন।

Ø     মিষ্টি জাতীয় খাদ্য কম খেয়ে পুষ্টিকর নাস্তা, ফলমুল খাবার অভ্যাস করুন।

Ø     মিষ্টি পানীয়, জুস ইত্যাদির চেয়ে পানি পানের অভ্যাস গড়ে তুলুন।

Ø     দাতের ডাক্তারের কাছে চেকআপ করা জরুরী।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

1.      দাঁতের সুস্থ্যতার জন্য ২ বছর বয়সের মধ্যে অন্তত ১ বার পরীক্ষা করা দরকার।

2.     ১২ মাসের পর থেকে নরম ছোট টুথশব্রাশ দিয়ে দাত পরিষ্কার করুন।

3.     ১৮ মাস  বয়স থেকে কম পরিমাণের ফ্লুরাইডযুক্ত বাচ্চাদের টুথপেস্ট ব্যবহার করুন।

4.     স্কুলগামী বাচ্চাদের প্রতিদিন সকালে নাস্তার পরে ও শোবার আগে দাত ব্রাশের অভ্যাস করান।

 

16-12-2012 রোগ ব্যাধি

দাঁতের যত্ন- বুড়ো আঙ্গুল চোষা :

 

শিশুদের ক্ষেত্রে আঙ্গুল চোষা খুবই বেশি দেখা যায়। শিশুরা ছোটবেলায় আঙ্গুল চোষে -এটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার আঙ্গুল চোষার ফলে শিশুর দাঁত ক্ষয় হতে পারে। এক্ষেত্রে পিতা-মাতারা বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি/উপায় নিতে পারেন- শিশুর আঙ্গুল চোষা বন্ধ করতে। অধিকাংশ শিশুর ক্ষেত্রে এটা ২-৪ বছর বয়সের বন্ধ হয়ে যায়। তবে আঙ্গুল চোষা ৭ বছর পর্যন্ত চলে কারণ, তখনও শিশুদের দাঁতগুলো (বেবি টিথ) শিশুসুলভ থাকে। যদি আঙ্গুল চোষা ৭ বছরের বেশি চলতে থাকে তবে স্থায়ী দাঁতের ক্ষেত্রে  à¦¸à¦®à¦¸à§à¦¯à¦¾ হতে পারে।

 

বুড়ো আঙ্গুল চোষার ফলে সৃষ্ট সমস্যা :

-  বাঁকা দাঁত : যেমন- সামনের  দাঁত তার অবস্থান থেকে সরে যায়, যার ফলে মুখের অবয়ব পরিবর্তন হয়  এবং কামড় লাগে।

 

-  অস্পষ্ট কথা বলা : স্কুলগামী শিশুরা যারা আঙ্গুল চোষে তাদের ক্ষেত্রে  à¦¦à¦¾à¦à¦¤à§‡à¦° অবস্থান পরিবর্তন হয় এবং

   তারা সঠিকভাবে শব্দ উচ্চারণ করতে পারে না।

 

কিভাবে এটা বন্ধ করা যায় :

অনেক উপায় অবল্বন করা যায় শিশুদের আঙ্গুল চোষা বন্ধ করতে -শিশুর  বয়স ও সামর্থ্যের উপর ভিত্তি করে যে সব পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা হল:

- পুরস্কার প্রদান।

- রাগ না করা।

- ক্যালেন্ডারে শিশুর উন্নতি লিপিবদ্ধ করণ।

 à¦¸à¦ªà§à¦¤à¦¾à¦¹à§‡ একদিন কিংবা প্রতিদিন ক্যালেন্ডারে (*) বা () চিহ্ন দেওয়া যদি সে আঙ্গুল না চোষে।

 

স্মারক বস্তু :

শিশুরা যাতে আঙ্গুল চোষতে না পারে সেজন্য দসতানার ব্যবহার কিংবা বিশ্বাদ রং নখে ব্যাবহার করা যেতে পারে।

 

শিশুকে কিভাবে পুরস্কৃত করবে :

 

শিশুদের পর্যাপ্ত পুরস্কারের আবদার থাকে। একটি ৫-৬ বছরের শিশুর প্রথম রাত থেকেই পুরস্কার পাবার ইচ্ছে তৈরী হয়। আপনি একে বাড়িয়ে একদিন পর পর অথবা সপ্তাহে একদিন অথবা মাসে একদিন করতে পারেন।

শিশুরা খুব তাড়াতাড়ি তাদের পুরান অভ্যাসে ফিরে আসে। এদের স্বভাব সম্পূর্ণ দূর করতে কতকগুলো উপায়  à¦¬à¦¾ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, প্রথম কয়েকদিন আঙ্গুল না চোষা খুবই কষ্টকর। তাই প্রথম কয়েক দিন খুব বেশি খেয়াল রাখতে হবে।

 

 

 

16-12-2012 রোগ ব্যাধি

০-৫ বছরের শিশুদের দাঁতের যত্ন:

 

শিশুদের দাঁত, মাড়ি, মুখ পরিস্কার রাখার জন্য পিতামাতাকে যত্নবান হওয়া উচিত। বাচ্চাদের মুখে ঘা এবং মুখ ফুলে যাওয়া- খুবই সাধারণ সমস্যা। মুখের ঘা/আলসার সহজে শুকায় না। এর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।

 

 

শিশুর দাঁত নিয়মিত পরীক্ষা করা দরকার। এতে শিশুর দাঁতের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য হয়।

 

মুখে ঘা:

ছত্রাকের আক্রমণের ফলে হয় যা মুখের ভেতর, জিহবার উপরিভাগে আক্রান্ত করে। বাচ্চা এবং উঠতি বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এটা সাধারণ ঘটনা। এটাকে দেখতে দুধের মত সাদা দাগের মত দেখায়, যা সহজে যায় না। সাথে সাথে শিশুর  জ্বর ও অন্যান্য সংক্রামণ দেখা যায়।

 

চিকিৎসা:

মুখের ঘা এর চিকিৎসায় ছত্রাক বিরোধী

ক্রিম (অয়েন্টমেন্ট) ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।

মুখে ক্ষত/পচন:

শতকরা ২০ ভাগ লোকের মুখে ঘা হয়। এতে সাংঘাতিক ব্যথা হয় এবং মুখের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে যায়।

 à¦à¦°à¦¾ মুখের যে কোন জায়গায় হয় এবং  সারতে এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় নেয়।

দুই সপ্তাহের বেশি সময় লাগলে চিকিৎসককে বা দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

 

চিকিৎসা: ব্যথা কমানোর জন্য-

·        শিশুদের  অরেঞ্জ জুস খাওয়া কমাতে হবে।

·        সামান্য লবনাক্ত খাবার দেওয়া যেতে পারে।

·        খাওয়ার আগে আক্রান্ত জায়গায় অয়েন্টমেন্ট লাগান যেতে পারে।

মুখে ঘা এর সাথে যদি শিশুর জ্বর থাকে তবে শিশুটির হারপিস সিমপ্লেক্স (ভাইরাস) প্রদাহ হয়েছে মনে করা হয়।

 

হার্পিসের প্রদাহ: (জ্বরঠুঁটা) জ্বরঠুঁটা আক্রান্ত কোন ব্যক্তি শিশুকে চুমু খেলে হার্পিস হতে পারে। এর প্রদাহ হলে শিশুর নাক এবং মুখের চারিদিকে সংক্রামণ দেখা যায়।

 

উপসর্গসমূহ:

1.      মুখ ও দাঁতের মাড়ি থেকে ছোট ছোট ফোস্কা বের হয়।

2.     ফোস্কা ফেটে গেলে হলুদ ঘা এর চারিদিকে লাল আভা দেখা যায়।

3.     দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় এবং লাল হয় এবং স্পর্শ করলে রক্ত বের হয়।

4.     জ্বর ও অস্বস্তি অনুভূত হয়।

হার্পিস প্রায় সবারই হয়। প্রথমবার আক্রমণের ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

 

চিকিৎসা:

হার্পিস সারাতে এবং ব্যথা কমাতে অনেক সময় খাদ্য বা পথ্য সাহায্য করে।

শিশুর পথ্য নিম্নরুপ-

·        প্রচুর তরল জাতীয় খাবার বিশেষ করে পানি।

·        দই এবং কাস্টার্ড জাতীয় খাবার খাওয়ানো যেতে পারে।

·        লবনাক্ত বা ঝাল জাতীয় খাবার কম খাওয়া।

·        সূর্যের রশ্মি, গরম বা জ্বর, আঘাতের কারণে হার্পিস পুণরায় হতে পারে। এ কারণে এন্টি ভাইরাল ক্রিম ব্যবহার করা যায়।

 

অন্যান্য:

 à¦¶à¦¿à¦¶à§à¦° মুখে অন্য যে সব প্রদাহ হতে পারে তা হল:

·        জিঞ্জিভাইটিসঃ

সংক্রমণের ফলে দাঁতের গোড়ায় হয়, এটা  মাড়িতেও হতে পারে। চাপ দিলে পুজ বের হয়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দন্ত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

·        মিজেল্‌স-

লবনের দানার মত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাদা দানার মত হয় প্রথম প্রথম। যার গায়ে ফুসকুড়ি ওঠার ২-৩ দিন পর এ রকম দানার মত হয়।

·        হাত পা এবং মুখের রোগ-

মুখের সামনে, পায়ে এবং হাতে ফোঁড়ার সাথে সাথে জ্বর থাকতে পারে। সাধারণত এমনিতেই ভাল হয়ে যায়।

 

সেলুলাইটিস (Cellulities):

মুখে ফুঁসকুড়ি সাথে সাথে জ্বর থাকে। দাঁতের ফোঁড়া যে সমস্ত কারণে হয় একই কারণে সেলুলাইটিস হতে পারে। জরুরী ভিত্তিতে যে কোন চিকিৎসক বা দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

 

মিউকোসিলস:

এটা সাধারণত নিচের ঠোঁটে হয়। দাঁত দিয়ে ঠোঁটে কামড়ানোর কারণে হতে পারে। এটা এমনিতেই কেটে যায় এবং সেরে যায়। যদি না সারে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।

 

যা মনে রাখতে হবে:

·        মুখে ক্ষত বা ঘা শিশু এবং বাচ্চাদের বেশি হয়।

·        লবনাক্ত বা ঝাল বা অম্লজাতীয় খাবার অনেক সময় মুখের ক্ষতের জন্য দায়ী।

·        দুই সপ্তাহের মধ্যে ক্ষত না সারলে চিকিৎসক বা দন্তবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।

 

 

 

16-12-2012 রোগ ব্যাধি

মাথা ঘোরা -অর্থোষ্টাটিক নিম্নরক্তচাপ

 

অর্থোষ্টাটিক নিম্নরক্তচাপ- ইহা এক প্রকার নিম্ন রক্তচাপ যা মাথা ঘোরার জন্য দায়ী। দাঁড়ানোর সময় শরীরের নিম্নাংশের রক্তনালীগুলো সংকুচিত না হলে মাথা ঘোরা অনুভূত হয়।

 

আমরা যখন বসা বা শোয়া অবস্থা থেকে দাঁড়াই, তখন আমাদের রক্তনালীগুলো মধ্যাকর্ষ বলের প্রভাবে সংকুচিত হয়- যা রক্তচাপ কমে যাওয়া প্রতিরোধ করে। এভাবে মস্তিস্কে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত প্রবাহ অব্যাহত থাকে।

 

উপসর্গ :

শরীরে রক্তচাপ কমে গেলে মসিৱষ্কে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত প্রবাহ কমে যায়। যার ফলে নিম্নলিখিত উপসর্গগুলো দেখা দেয়-

-     à¦šà§‹à¦–ে ঝাপসা দেখা।

-     à¦®à¦¾à¦¥à¦¾ ঘোরা।

-     à¦¬à¦®à¦¿ ভাব।

-     à¦®à¦¾à¦‚সপেশীর কাপুনি।

-     à¦®à¦¾à¦¨à¦¸à¦¿à¦• ভ্রম।

-     à¦…জ্ঞান হয়ে পড়া।

 

ব্যাখা :

বসা বা শোয়া অবস্থা থেকে উঠে দঁড়ালে মধ্যাকর্ষবল রক্ত প্রবাহের উপর নাটকীয় প্রভাব ফেলে। গড়ে প্রায় ৮০০মি.লি. রক্ত শরীরের উর্দ্ধাংশ থেকে নিম্নাংশের (পায়ের) রক্ত নালীতে নেমে আসে। ফলে উর্দ্ধাংশের রক্ত নালীতে রক্তচাপ কমে যায়। এওর্টা ও ক্যারেটিভ ধমনীর ব্যারোরিসেপ্টর এই কমে যাওয়া রক্তচাপকে সনাক্ত করে। একজন সুস্থ মানুষের হৃৎপিন্ড, রক্ত সংবহনতন্ত্র ও স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে পেট ও নিম্নাঙ্গের রক্তনালীর সংকোচন ঘটিয়ে রক্তচাপ বাড়ায়। এই পদক্ষেপ মস্কিষ্কে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ অব্যাহত রাখে। অর্থোষ্টাটিক নিম্নরক্তচাপ যুক্ত মানুষের রক্তচাপ বাড়াতে এই ভর্তুকি পদ্ধতি কাজ করে না অথবা দেরী করে। তাদের রক্তচাপ কম থাকে এবং উপসর্গগুলো দেখা দেয়। কিন্তু পুনরায় বসে পড়লে বা শুয়ে পড়লে সাধারণত রক্তচাপ পূর্ববস্থায় ফিরে আসে।

প্রধান কারণ :

অর্থোষ্টাটিক নিম্নরক্তচাপ সাধারণত অন্য কোন অন্তর্নিহিত কারণে হয়। ইহা নিজে কোন রোগ নয়। অনেক কারণের মধ্যে নিম্নোক্ত কারণে অর্থোষ্টাটিক নিম্ন রক্তচাপ বেশী হয়।

-         জ্বর

-         দীর্ঘসময় বিছানায় বিশ্রাম

-         অধিক পরিমাণ  à¦à¦²à¦•à§‹à¦¹à¦² পান

-         কিছু ঔষধ সেবন। যেমন : মুত্রবর্ধক, উচ্চ রক্তচাপ প্রশোমক ঔষধ

-         বমি, ডায়রিয়া ইত্যাদি কারণে শরীরে মারাত্বক পানি শুন্যতা হলে।

-         কিছু রোগ। যেমন : রক্ত-স্বল্পতা, ডায়াবেটিস, ভেরিকোস ভেইন ইত্যাদি।

-   স্নায়ু তন্ত্রের রোগ। যেমন : পারকিনসন্‌স, কনজেসটিভ হার্ট ফেইলর, এয়োর্টিক ষ্টেনোসিস।

-   স্নায় রজ্জুর সমস্যা। যেমন : সাইরিংগোমাইলিয়া।

-   বেশি পরিমাণ রক্তক্ষরণ।

 

অন্যান্য কারণ :

অর্থোষ্টাটিক নিম্নরক্তচাপ ছাড়া মাথার আরো অনেক কারণ আছে। তার মধ্যে অন্যতম কর্নরোগ।

-  বৃদ্ধ বয়স ও মাথা ঘোরা :

বয়স বাড়ার সাথে সাথে মাথা ঘোরা রোগের প্রবনতা বাড়তে থাকে। যে সব নিয়ামক বৃদ্ধ বয়সে মাথা ঘোরা রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

- পরিপাক :

খাদ্য গ্রহণের পর তা পরিপাকের সময় পরিপাকতন্ত্রে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। খাদ্য গ্রহণের সাধারণত ১৫-৪৫ মিনিট পর অর্থোষ্টেটিক নিম্নরক্তচাপ দেখা যায়।

-  দাঁড়ানো :

দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকলে আসেৱ আসেৱ রক্তচাপ কমতে থাকে।

-  দৌর্বল্য ও দীর্ঘ অসুস্থতা :

এগুলো বৃদ্ধ বয়সে রোগীর হয়।

 

রোগ নির্ণয় :

 

অর্থোষ্টাটিক নিম্নরক্তচাপ নির্ণয় পরীক্ষা সমূহ :

-   à¦°à§‹à¦—ের ইতিহাস : যেমন -স্বাস্থ্যগত অবস্থা এবং নিয়মিত ঔষধগ্রহণ।

-    à¦¶à¦¾à¦°à§€à¦°à¦¿à¦• পরীক্ষা।

- রক্তচাপ পরিমাপ : শোয়া এবং দাঁড়ানো অবস্থায়।

- রক্তের পরীক্ষা- রক্তের গ্লুকোজ, এডরেনাল হরমোন।

- ই.সি.জি : হৃদপিন্ডের অবস্থা নিরূপণের জন্য।

- পৃথক পৃথক নিয়ামকের জন্য আলাদা পরীৰা।

 

চিকিৎসা :

চিকিৎসা নির্ভর করে কারণের উপর। যেমন-

- পানি স্বল্পতার চিকিৎসায় তরল।

- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ। যেমন- নিয়মিত ইনসুলিন ইঞ্জেকশন।

- ঔষধের কারণে হলে তা পরিবর্তন বা মাত্রার পরিবর্তন।

- হৃদরোগের চিকিৎসায় ঔষধ বা শল্যচিকিৎসা বা উভয়ই।

- রক্তের পরিমাণ বা চাপ বাড়াতে ঔষধ। যেমন- করটিকোষ্টেরয়েড।

- অর্থোষ্টাটিক নিম্নরক্তচাপ চিকিৎসায় ঔষধ যেমন- পাইরিডোসটিগমিন।

 

পরামর্শ :

চিকিৎসকের নির্দেশমত চলতে হবে। তারপর সাধারণ কিছু পরামর্শ মেনে চললে অর্থোষ্টাটিক নিম্নরক্তচাপ মোকাবেলা সহজ হয়। যেমন-

- বিছানা থেকে ওঠার আগে বালিশ দিয়ে মাথা উঁচু করে রাখতে হবে।

- বসা/শোয়া অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে উঠে দঁড়াতে হবে, যাতে রক্ত নালী গুলো খাপ খাইয়ে নিতে যথেষ্ট সময় 

  পায়।

- দিনে ৩ বারে বেশি পরিমাণে খাদ্য গ্রহণের পরিবর্তে অল্প পরিমাণে বারে বারে খাদ্য গ্রহণ।

- পানি স্বল্পতা প্রতিরোধে প্রচুর পরিমাণ পানীয় পান।

- এলকোহল পান নিয়ন্ত্রণ। এলকোহল পানি স্বল্পতা ও রক্তনালীর প্রসারণ ঘটাতে পারে।

- অল্প পরিমাণে নিয়মিতভাবে চা অথবা কফি পান যা রক্তচাপ বাড়ায়। প্রতিবার খাদ্য গ্রহণের পর এক কাপ - - চা বা কফি পান : অর্থোষ্টাটিক নিম্নরক্তচাপের তীব্রতা কমায়।

- চা বা কফি পছন্দ না করলে ক্যাফেইনযুক্ত অন্যান্য পানীয় যেমন : গরম চকোলেট অথবা কোলা ইত্তাদি পান করা।

- অতিরিক্ত ব্যায়াম, গরম পানিতে গোসল, উষ্ণ পরিবেশ এড়িয়ে চলা। কারণ ইহা রক্তনালীর প্রসারণ ঘটায়।

- নড়াচড়া ছাড়à

14-12-2012 রোগ ব্যাধি

ধুমপান ও হৃদরোগ

  

 

ধুমপান স্বাস্থ্যের  à¦œà¦¨à§à¦¯ ক্ষতিকর এই স্লোগানটি সিগারেটের প্যাকেটে বড় করে লেখা থাকলেও এর গুরুত্ব ও ক্ষতির দিকটি বোধ হয় সবার কাছে স্পষ্ট নয়। সে কারণে দিন দিন সিগারেটের দাম বাড়লেও  গ্রাহক ও বিক্রি উভয়ই বাড়ছে।

   হৃদরোগ, স্ট্রোক ও রক্তনালীর রোগের অন্যতম কারন হল ধুমপান। ধুমপানের ফলে প্রতিদিন সারা বিশ্বে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। ধুমপানের কারনে যাদের মৃত্যু হয়, ক্যান্সার ছাড়াই কেবল হৃদরোগে ও রক্তনালীর সমস্যায় মারা যায় শতকরা ৪০ ভাগ।

 

ধুমপানের ফলে হৃদপিন্ড ও রক্তনালীর সমস্যাঃ

হার্ট আমাদের সমস্ত শরীরে রক্ত সরবরাহ করে। আর তার নিজের চলার জন্য যে রক্ত প্রয়োজন তা আসে দুটি করোনারী আর্টারী ও তাদের শাখা প্রশাখার মাধ্যমে। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে নানাবিধ কারণে ঐ রক্তনালীর ভেতরের দিকে চর্বি (প্লেক বা এথেরোমা) জমা হয় ও নালী পথ সরু হয়ে যায় (এথেরোস্ক্লেরোসিস) ফলে রক্তনালীর ভেতরে রক্তের প্রবাহ কমে যায় এবং হৃদপেশীতে (মায়োকার্ডিয়াম) অক্সিজেন ও খাদ্যশক্তির ঘাটতি দেখা দেয়। ধুমপান এই বিস্তারিত

-->

14-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

হৃদযন্ত্রে অক্সিজেন স্বল্পতা বা ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ

হৃদযন্ত্র (The Heart)  à¦†à¦®à¦¾à¦¦à§‡à¦° দেহের অত্যবশ্যকীয় অঙ্গ। গুরুত্ব বিবেচনায় মস্তিস্কের পরই হৃদযন্ত্রের অবস্থান। হৃদযন্ত্র মানবদেহের জন্য অনেক জরুরি কাজ করে থাকে যা মূলত সমস্ত শরীরে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে হয়। যেমন-

১। দেহের প্রতিটি কোষে খাদ্যকনা (গ্লুকোজ, প্রোটিন ও ফ্যাট) পৌঁছে দেয়।

২। ফুসফুস থেকে বিশুদ্ধ অক্সিজেন কোষে কোষে পৌছে দিতে সাহায্য করে।

৩। বিশুদ্ধকরণের জন্য কোষ থেকে দূষিত কার্বন ডাই-অক্সাইড ফুসফুসে পৌছে দেয়।

৪। দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ সহায়তা করে।

৫। শরীরের বিপাক নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৬। প্রতিটি কোষে ওষুধ পৌঁছে দেয় ও শরীরের বর্জ্য কিডনিতে এনে বের করে দিতে সাহায্য করে।

 

হৃদযন্ত্রের খাদ্য ও অক্সিজেনঃ

দেহের প্রত্যেক অংশে খাদ্য প্রদানকারী মহান বন্ধু হৃদযন্ত্র থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যায়। হার্ট নিজেই নিজেকে দুটি রক্তনালীর মাধ্যমে অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য খাদ্য উপাদান সরবরাহ করে থাকে। এ দুটি রক্তনালী হল- ডান ও বাম করনারী আর্টারী (Left & Right coronary artery)। এদের একটি আংশিক বা পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেলেই সমস্যা হয়। এরই নাম Ischemic Heart Disease  à¦¬à¦¾ হৃদযন্ত্রে অক্সিজেন ¯^íZv রোগ বা অল্প কথায় IHD নামে পরিচিত।

 

কেন হৃদযন্ত্রে অক্সিজেন স্বল্পতা হয়?

হৃদযন্ত্রে অক্সিজেনের চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে পার্থক্য হলেই হৃদযন্ত্রে অক্সিজেন স্বল্পতা বা IHD রোগ হয়।

 

কিভাবে অক্সিজেন স্বল্পতা হয়?

Coronary Artery -‡Z রক্ত চলাচল বন্ধ বা বাধাগ্রস্থ হলে। রক্তনালীর সঙ্কোচন  à¦•à¦®à¦ªà¦•à§à¦·à§‡ ৭০ শতাংশ হলেই হৃদযন্ত্রের মাংসপেশিতে রক্ত  অক্সিজেন সরবরাহ কমে গিয়ে সমস্যা দেখা দেয়।

 

অক্সিজেন স্বল্পতার প্রাথমিক অবস্থা হচ্ছে ইসকেমিয়া/এনজাইনা (Ischemia/Angina) আর তীব্র বা প্রকট অবস্থা হচ্ছে ইনফারকশন (Infarction)  à¦¬à¦¾  Heart Attack এখানে একটি কথা মনে রাখতেহবে - Stroke  à¦¹à¦¾à¦°à§à¦Ÿà§‡à¦° কোনো রোগ নয় । স্ট্রোক মাথার অসুখ যখন মাথার রক্তনালী বন্ধ হয় বা ছিঁড়ে যায়। আর হার্ট এটাক হৃদযন্ত্রের রোগ।

 

হৃদযন্ত্রে অক্সিজেন স্বল্পতা যাদের বেশি হয়

১। উচ্চ রক্তচাপ।

২। ডায়াবেটিস মেলাইটাস।

৩। রক্তে অতিরিক্তি চর্বি/কোলেস্টেরল।

৪। চর্বিবহুল শরীর।

৫। পুরুষ।

৬। বার্ধক্য।

৭। কায়িক শ্রমহীনতা।

৮। খাদ্যে শাকসব্জি কম থাকা।

৯। এনিমিয়া বা রক্তশুন্যতা।

১০। খাদ্যে অনিয়ম।

১১। পারিবারিক ইতিহাস।

১২। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন।

 

উচ্চ রক্তচাপ

ডায়াবেটিস

 
 
 


ধুমপান

 

অত্যধিক চর্বি

 

পরিশ্রমহীনতা

 

পারিবারিক

 

              

 à¦¹à§ƒà¦¦à¦¯à¦¨à§à¦¤à§à¦°à§‡à¦°             à¦°à¦•à§à¦¤à¦¨à¦¾à¦²à§€à¦°  সঙ্কোচন

            

   

হৃদযন্ত্রে অক্সিজেনের

           স্বল্পতা

   

        হার্ট এটাক

 

হৃদযন্ত্রের রক্তস্বল্পতার রোগী বুকে ব্যথা,  শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ, বুক ভারী jvMv এ সব লক্ষণ ছাড়াও বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে আসতে পারেন। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাতে হবে। সন্নিকটে হৃদরোগের চিকিৎসা সুবিধামত হাসপাতাল থাকলে সেখানে নিয়ে যাওয়াই উত্তম। টিকিৎসকের পরামর্শ মতো থারবাহিত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

 

হাসপাতালে পৌঁছার আগে বাসায় বা কর্মস্থলে বা রাস্তায় যা করতে n‡e

১। পর্যাপ্ত আলো-বাতাস নিশ্চিত করতে হবে।

২। জিহ্বার নিচে নাইট্রেট সেপ্র দুই চাপ নিতে হবে বা একটি নাইট্রেট ট্যাবলেট দিতে হবে।

৩। দ্রত হাসপাতালে পৌঁছার ব্যবস্থা করতে হবে।

 

রোগ নির্নয়

জরুরি বিভাগে রোগীর ইতিহাস জানার পাশাপাশি অল্প সময়ের মধ্যেই পরীক্সা-নিরীক্ষা করতে হয় এবং ফলাফলের অপেক্ষা না করেই দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করা হয়।

যেসব প্রাথমিক পরীক্ষার মধ্যে পালস, রক্তচাপ নির্ণয়, ইসিজি, রক্তের শর্করা ও ক্রিয়েটিন নির্ণয়, ইকো কার্ডিওগ্রাফি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) করা হয়।

হৃদযন্ত্রে অক্সিজেন স্বল্পতার চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ অধিক সহজ ও নিরাপদ। হৃদযন্ত্রে অক্সিজেনস্বল্পতার প্রতিরোধ খুব কঠিন নয়। এ জন্য করনীয় -

১। আদর্শ জীবন যাপন।

বিস্তারিত

-->

14-12-2012 রোগ ব্যাধি

উচ্চ রক্তচাপ এবং সংশ্লিষ্ট জটিলতা প্রতিরোধে করণীয়

 

রক্তনালী (ধমনী)-র ওপর শরীরে বহমান রক্ত যে চাপ প্রোয়োগ করে তাকে রক্তচাপ (ব্লাড প্রেসার) বলা হয়। রক্তচাপ যদি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বলা হয়। রক্তচাপ সাধারণত দুই প্রকারের:

১. সিস্টোলিক রক্তচাপ (হৃৎপিন্ড সংকুচিত হয়) এবং

২. ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ (হৃৎপিন্ড প্রসারিত হয়)।

সিস্টোলিক রক্তচাপের স্বাভাবিক মাত্রা হচ্ছে:   মাপকযন্ত্রে পারদ স্তম্ভের ১০০-১৪০ মিমি উচ্চতা এবং

ডায়াস্টোলিক রক্তচাপের স্বাভাবিক মাত্রা হচ্ছে:    মাপকযন্ত্রে পারদস্তম্ভের ৬০-৮৯ মিলিমিটার উচ্চতা।

কারোর সিস্টোলিক রক্তচাপ যদি ১৪০ মিলিমিটারের বেশি হয় অথবা ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ যদি ৯০ মিলিমিটার বা তার বেশি হয়, তাহলে তার উচ্চ রক্তচাপ আছে বলা যায়। তবে তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য যথাযথ অবস্থায় পরপর তিনবার রেজিস্টাড © চিকিৎসক দ্বারা রক্তচাপ মাপাতে হবে। 

উচ্চ রক্তচাপ সাধারণত উপসর্গহীন অবস্থায় থাকে বলে বেশিরভাগ মানুষ, যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তাঁ দের অবস্থা অজানাই থেকে যায় যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো উপসগ © দেখা না দেয়। আবার সচেতনতার অভাবে অথবা অসুস্থ না-হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকের শরণাপন্ন না-হওয়ার কারণে আমরা অনেকেই আমাদের রক্তচাপের অবস্থা সম্পকে © অবগত  হই না।

দিনের পর দিন উচ্চ রক্তচাপের রোগী বেড়েই চলছে। বাংলাদেশে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২০ বছর বা তদুর্ধ্ব মানুষের মধ্যে শতকরা ১৪ ভাগ লোকের সিস্টোলিক উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। একই  à¦—বেষণায় উল্লেখ আছে যে, শহরের লোকের চেয়ে গ্রামের লোকদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা বেশি। গ্রামাঞ্চলে পরিচালিত অন্য একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে, ঐ জনগোষ্ঠীর শতকরা ১০ ভাগ পুরুষ এবং শতকরা ১৬ ভাগ মহিলার উচ্চ রক্তচাপ  à§Ÿà§‡à¦›à§‡à¥¤

যেসব কারণ উচ্চ রক্তচাপের জন্য দায়ী

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যদিও উচ্চ রক্তচাপের কারণ সঠিকভাবে জানা যায় না, তবু নিচে উল্লেখিত কারণে একজন ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে:

·        অত্যধিক বা বাড়তি লবণ-খাওয়া

·        ধূমপান

·        পারিবারিক উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস

·        রক্তনালীর রোগ

·        কিডনীজনিত রোগ

·        দুঃশ্চিন্তা

·        ডায়াবেটিস মেলাইটাস

·        হরমোনজনিত জটিলতা

·        রক্তের কোলেস্টেরল বা চর্বি বেড়ে-যাওয়া

 

উচ্চ রক্তচাপের কারণে সৃষ্ট জটিলতা

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না-রাখলে যেসব জটিলতা দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো:

·        হার্ট এটাক

·        স্ট্রোক বা মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ

·        পক্ষাঘাত বা প্যারালাইসিস

·        হার্ট অকার্যকর হয়ে-পড়া বা হার্ট ফেইলর

·        দীর্ঘে ময়াদী কিডনীর রোগ

·        কিডনী অকাsযর্ক হওয়া

·        রক্তনালীর রোগ

·        উচ্চ রক্তচাপজনিত চোখের জটিলতা (হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি) এমনকি অন্ধত্ব

উচ্চ রক্তচাপ এবং সংশিস্নষ্ট জটিলতা প্রতিরোধের উপায়

নিম্ন লিখিত উপায় অবলম্বন করলে উচ্চ রক্তচাপ এবং তার ফলে সৃষ্ট জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব:

১। অতিরিক্ত বা বাড়তি লবণ খাওয়া পরিহার করা ২। ধূমপান পরিহার করা

৩। নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ বা ব্যায়াম চালিয়েযাওয়া, যেমন: সপ্তাহে কমপক্ষে ৩-৪ দিন ৩০ মিনিট ধরে হাঁ টা (প্রথম ১০ মিনিট ধীরে ধীরে, পরবর্তী ১০ মিনিট জোরে হাঁটা, যাতে ঘাম হয় এবং শেষ ১০ মিনিট আবার ধীরে ধীরে হাঁটা) ৪। দুঃশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপন করা

৫। চর্বিজাতীয় খাবার কম খাওয়া

৬। উচ্চ রক্তচাপ এবং সংশ্লিষ্ট জটিলতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা

৭। নিয়মিত ¯^v¯’¨ পরীক্ষা করা (কমপক্ষে প্রতি ৬

মাসে একবার)

৮। উচ্চ রক্তচাপ সনাক্ত হওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামশ © অনুযায়ী জীবনযাপন পদ্ধতিতে পরিবতর্ন এনে অথবা নিয়মিত অষধু  খয়ে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা

 

মনে রাখতে হবে, একবার উচ্চ রক্তচাপ সনাক্ত হলে তা উপরোল্লিখিত পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। কোনো কারণে মনে করা যাবে না যে, উচ্চ রক্তচাপ সম্পূর্ণ ভালো হয়ে গেছে।

প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর এক বড় অংশ উচ্চ রক্তচাপে ভগুছে, যাদের বেশিরভাগই তাদের রক্তচাপের অবস্থা সম্পকে © জানে না। সামপ্রিতক রিপোটে © দেখা গেছে, ২০০৫ সালে পৃথিবীতে ৩৫ মিলিয়ন লোক অসংক্রামক রোগে মারা গেছে, যা সর্বমোট প্রাপ্তবয়স্ক লোকের ম্রিত্যুর শতকরা ৬০ ভাগ, যার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন অন্যতম।

 

উচ্চ রক্তচাপ কমাতে খাদ্য ও ওজন নিয়ন্ত্রণ

নিয়মিত পথ্য সেবন এবং ওজন নিয়ন্ত্রন

হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপুর্ন। পথ্য পরিবতর্ন ও ওজন নিয়ন্ত্রনের পদ্ধতিকে বলা হয় non-pharmacologic measures বা অষুধ ব্যবহার না-করে প্রাক্রিতিক উপায়ে সমস্যার নিরসন। ধুমপান ত্যাগ, মানসিক চাপ কমানো,  à¦®à¦¦à§à¦¯à¦ªà¦¾à¦¨ নিয়ন্ত্রন ও নিয়মিত ব্যায়াম, ইত্যাদি বিষয়গুলো এ-পদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত । বিষয়গুলো একসাথে মেনে চললে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

 

সঠিক ও পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাসঃ

প্রস্তুতকৃত খাদ্য কম খেলে, বেশি পরিমাণে ফল ও সব্জি খেলে এবং বেশি পরিমাণে তৈলাক্ত খাবার না-খেলে শরীরে উপকারী পুষ্টিউপাদানগুলো  à¦¬à§ƒà¦¦à§à¦§à¦¿ পায় এবং একই সাথে অতিরিক্ত লবণ গ্রহনের মাত্রা কমায়। সম্পক্তৃ চবি © উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে। মোট ক্যালরির শতকরা ১০ ভাগ আসা উচিত সম্পৃক্ত চবি © থেকে এবং ৩০ ভাগ সাধারণ চর্বি থেকে।

 à¦¤à¦¾à¦‡ কোনো ব্যক্তির রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করার জন্য তার খাদ্য-তালিকা ও খাদ্যাভাস পরিবতর্ন এবং

রন্ধন-প্রনালীতে পরিবতর্ন এনে পথ্য পরিবতর্ন করা হয়। নিচে কয়েকটি পথ্য এবং এগুলোর উপাদান বিষয়ে সংক্ষিপ্ত তথ্য দেওয়া হলো:

সোডিয়ামজাতীয় লবণ

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রে ণ খাবারে সোডিয়ামজাতীয় লবণের মাত্রা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চমাত্রার সোডিয়ামবিশিষ্ট পথ্য থেকে নিম্ন মাত্রার সোডিয়ামবিশিষ্ট পথ্য রক্তচাপ কমিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারে। প্রতিদিন সোডিয়াম গ্রহন ৪,০০০ মিলিগ্রাম থেকে ২,০০০ মিলিগ্রাম কমালে রক্তচাপ ২-৩ মিলিমিটার কমে যায়।

মদ

যারা মদ্যপান করে না তাদের চেয়ে যারা প্রতিদিন মদ্যপান করে তাদের রক্তচাপ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপে মদ্যপানের এই প্রভাব কতখানি মদ খাওয়া হয় তার সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং যখন কেউ দিনে ৫ বার মদ্যপান করে তখন উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পায়।

বিস্তারিত

-->

14-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিউর

হৃদপিন্ড বা হার্ট যখন শরীরের চাহিদা অনুযায়ী রক্ত পাস্প করতে পারে না, তখন তাকে হার্ট ফেইলিউর বলা হয়। হার্ট দূর্বল হলে, উচ্চ রক্তচাপ, করনারী হার্ট ডিজিজ বা হৃদপিন্ডের অন্য কোন সমস্যার জন্য এরকম হতে পারে। এ অবস্থায় হার্টের অভ্যন্তরে প্রকোষ্ঠে রক্ত জমে থাকে পরবর্তিতে সমস্ত শরীরে পানি জমে। বিশেষ করে ফুসফুস পেটে এবং পায়ে এত পানি জমে যে রোগির শ্বাসকষ্ট, কাশি সহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়।

কাদের বেশি হয়:

হাটফেইলিউর এর অন্যতম প্রধান কারণ- করোনারী হাট ডিজিজ। আর করোনারী হার্ট ডিজিজের জন্য নিচের ফ্যাক্টরগুলি বেশি দায়ী:

-          অতিকায় স্থুলদেহ;

-          অতিরিক্ত তেল, চর্বি ও কোলেস্টরল সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ

-          উচ্চ রক্তচাপ;

-          ডায়াবেটিস, ধুমপান, অলস জীবর যাপনএবং এই রোগ বয়স্কদের তূলানমূলক বেশি দেখা যায়।

লক্ষনসমূহ:

-          হালকা কাজেই প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট;

-          চরম পর্যায়ে বসা বা সোয়া অবস্থায় শ্বাসকষ্ট;

-          দূর্বলতা;

-          পায়ের পাতা, গোড়ারীর খাওয়া;

-          পেট ফুলে যাওয়া;

-          কাশি, শ্বাসের সাথে শব্দ।

কিভাবে হয়?

মানবদেহের হৃদপিন্ডে ৪টি প্রকোষ্ঠ, তবে ৪ প্রকোষ্ট নিয়ে একত্রে মোট দুটি পাম্পের কাজ করতে থাকে।

সমস্ত শরীর থেকে কার্বনডাইঅক্সাইডেযুক্ত রক্ত প্রথমে ডান পাশের (Right ventricle) যায় ও সেখান থেকে পাম্প করে ফুসফুসে রক্ত প্রেরন করে।

ফুসফুসে কার্বন ডাই অক্সাইডযুক্ত রক্ত বিশুদ্ধ হয়ে, অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত রক্তনালী দিয়ে বাম পাশের উপরের প্রকোষ্টে যায়, পরে বাম নিলয় (Left Ventricle) এ পৌছায় এবং সেখান থেকে রক্ত পাম্প করে সমস্ত শরীরে পৌছে।

হার্ট ফেইলউরে বাম নিলয় সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না, ফলে বাম অলিন্দে রক্তচাপ বেড়ে যায়, ফলশ্রতিতে ফুসফুসে রক্ত জমে যায় এবং পরবর্তিতে ডান নিলয় ও সঠিকভাবে রক্ত ফুসফুসে পৌছুতে পারে না এবং শরীরে বিশেষত পায়ে, পেটে পানি জমতে থাকে।

 

কারণসমূহ:

১. করোনারী হার্ট ডিজিজের কারণে পূর্বে হাট এট্যাক হয়ে থাকলে

২. উচ্চ রক্তচাপ থাকলে হার্টকে অনেক বেশি কাজ করতে হয়, ফলে ধীর ধীরে হার্ট দুর্বল হতে থাকে  ও নিলয় ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।

৩. হার্টের ভাল্বের সমস্যা থাকলে তা রক্ত চলাচলে অর্থাৎ হার্টের পাম্প করার ক্ষেত্রে

    বাধা প্রদান করে।

৪. জন্মগত হৃদরোগ।

৫. কার্ডিও মায়োপ্যথি: হার্ট তুলনামূলক বড় হয়ে যায় ও হার্টের সংকোচন প্রসারন ক্ষমতা কমে যায়।

৬. মায়োকার্ডাইটিস: ভাইরাস বা অন্য ইনফেকশনের কারণে হার্টমাসেল নষ্ট হলে।

৭. এরিদমিয়া : দ্রুত হৃদবম্পন, A¯^vfvweK ও অসংগতিপূর্ণ। দীর্ঘদিন এ অবস্থা থাকলে হার্ট ফেইলিউর হতে পারে।

৮. থাইরয়েড এর রোগ : খুব বেশি মাত্রায় থাইরয়েড হরমোন নিঃসৃত হলে হৃদকম্পন বেড়ে যায়, হার্টের উপর চাপ পড়ে। পরবর্তীতে হার্ট ফেইলউর হতে পারে।

অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে যে কারণে-

-          মারাত্মক রক্তশূন্যতা  

-          খাদ্যে অতিরিক্ত লবন খাওয়া   

-          মদ্যপান করা      

-          গর্ভাবস্থা                    

-          ফুসফুসের ইনফেকশন  -

-          কিডনীর সমস্যা        

-          অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম

রোগ নির্ণয়: 

এক্স-রে,

ইকোকার্ডিওগ্রাম,

ইসিজি,

রক্তের পরীক্ষা,

বিস্তারিত

-->

14-12-2012 রোগ ব্যাধি

 

ECG ইসিজি

 

 

ইলেট্রো কার্ডিয়োগ্রাম (ECG) হলো একটি মেডিকেল পরীক্ষা। যার দ্বারা হৃদপিন্ডে  à¦…স্বাভাবিকতা ধরা যায়। অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে, বৈদ্যুতিক কর্মদক্ষতা হৃদপিন্ডের সংকোচনের সাথে কতটা তাড়িত হয় তা পরিমাপের মাধ্যমে। ইসিজির মাধ্যমে হৃদপিন্ডের বিভিন্ন রোগ চিহ্নিত করা যায়। যেমনঃ এরিদমিয়া, হৃদপিন্ড বড় হয়ে যাওয়া, হৃদপিন্ডে প্রদাহ (পেরিকার্ডাইটিস অথবা মায়োকার্ডাইটিস) এবং হৃদপিন্ডে রক্ত সরবরাহকারী শিরাসমূহের রোগ সমূহ।

যে মেশিন বা যে যন্ত্র রোগীর ইসিজি ধারণ করে তাকে ইলেক্ট্রোকার্ডিয়োগ্রাফ বলে। ইলেক্ট্রোকার্ডিয়োগ্রাফ হৃদপিন্ডের মাংসপেশীর বৈদ্যুতিক দক্ষতা রেকর্ড করে এবং ডাটা একটি পর্দায় বা কাগজে দাগের মত হয়ে দেখা যায়। পরে এটি মেডিকেল প্রেকটিশনার দিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়। ইসিজিতে  à¦¹à§ƒà¦¦à¦ªà¦¿à¦¨à§à¦¡à§‡à¦°  à¦•à¦¾à¦°à§à¦¯à¦•à§à¦°à¦®à§‡à¦° বৈশিষ্ট্যমূলক  à¦¬à¦°à§à¦¨à¦¨à¦¾  à¦†à¦¸à§‡à¥¤ হৃদপিন্ডের ছন্দে কোন অনিয়ম দেখা দিলে অথবা হৃদপিন্ডের মাংসপেশী ক্ষতিগ্রস্থ হলে ইসিজিতে পরিবর্তন দেখা যায়। চিকিৎসক ইসিজি দেখে বলতে পারেন যে, তার হৃদপিন্ডে কোন রোগ আছে কিনা। হৃদপিন্ডের রোগের অনেক কারণ থাকে, যেমনঃ পারিবারিক ইতিহাস, ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, ডায়বেটিস, উচ্চরক্তচাপ, অতি মাত্রায় কলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবার।

ইসিজি দ্বারা হৃদপিন্ডের রোগবিস্তারিত

-->

14-12-2012 রোগ ব্যাধি

বুকে ব্যথা ও হার্ট এর্টাক

নানাবিধ কারণেই হঠাৎ  করে বুকে ব্যথা হতে পারে। হার্ট এর্টাক হলেও বুকে ব্যথা হয়। তাই বলে সব বুকে ব্যথার জন্য হার্ট এর্টাকই দায়ী নয়। বদহজম, বুকের পাজরের মাংসপেশীর ব্যথা, ফুসফুসের সমস্যার জন্যও ব্যথা হতে পারে। তবে বুকে ব্যথার মধ্যে মারাত্মক কারণ হলো হার্ট  এর্টাক (হার্টের রক্ত প্রবাহ কমে গেলে বা হঠাৎ কোন করনারী  আর্টারী বন্ধ হয়ে গেলে) এবং এ ক্ষেত্রে এক মুহুর্ত দেরী করার সুযোগ নেই। দ্রুত হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যেতে হবে।

হার্ট এর্টাকের লক্ষণ সমূহ:

§        বুকের মাঝখানে বা বাম পাশে প্রচন্ড খামচে ধরার মত ব্যথা, বুকে দম বন্ধ বন্ধ ভাব, বুকে চাপ বা প্রচন্ড প্রেসার মনে হতে পারে।

§        ব্যথা বুকের সাথে সাথে বাম কাঁধ, বাহু, ঘাড়, গলায় অনুভব হতে পারে।

§        প্রচন্ড ঘাম

§        অস্থিরতা, অস্বস্তি

§        শ্বাসকষ্ট

§        মৃত্যুভয়।

§        ব্যাথা ১০-১৫ মিনিট স্থায়ী হতে পারে বা তারও বেশি।

তবে লক্ষণসমূহ ব্যক্তি বিশেষে বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে বেশি বা কম, এমনকি কেউ কেউ খুব কম অনুভব করতে পারে।

এনজিনা ও হার্ট এর্টাক:

যখন হার্টের কাজে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হয়- তখন বুকে চাপ বা ব্যথা হয়- তাকে এনজিনা বলে। সাধারণত ব্যায়াম বা পরিশ্রম, উত্তেজিত হলে, খুব ঠান্ডা  আবহাওয়ায় বা বেশি খাবার খেলে এনজিনা হয়, তবে বিশ্রামে থাকলে ব্যথা  থাকে না। এনজিনাতে হার্টের স্থায়ী কোন ক্ষতি হয় না, তবে যদি চিকিৎসা করা না হয়, সেক্ষেত্রে হার্ট এটাক হতে পারে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে হার্ট এটাক থেকে বাঁচা যায় এবং হার্টের বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

রিস্ক ফ্যাক্টর:

হার্টের অসুখের জন্য নিচের কারণগুলোকে রিস্ক ফ্যাক্টর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

·        ধুমপান 

·        ব্যায়াম বা পরিশ্রম না করা 

·        উচ্চ রক্তচাপ   

·        স্থুলকায় শরীর (ওজন বেশি হওয়া)

·        রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকা 

·        ডায়বেটিস

·        পারিবারিক হার্ট এটাকের ইতিহাস

·        সাধারণত পুরুষদের ঝুঁকি বেশি  

·        বেশি বয়স ।

তবে মনে রাখতে হবে যে, এসব রিস্ক ফ্যাক্টর না থাকলেও যে কারও হার্ট এটাক হতে পারে।

বুকে ব্যথার অন্যান্য কারণসমূহ:

 à¦¹à¦¾à¦°à§à¦Ÿ এটাক ছাড়াও নানাবিধ কারণে হঠাৎ বুকে ব্যথা হতে পারে। যেমন-

জিইআরডি:

বদহজম বা এসিডিটির কারণে বা পাকস্থলির এসিড যদি উপরে খাদ্যনালীতে চলে আসে। এ ক্ষেত্রেও হঠাৎ বুকে প্রচন্ড ব্যথা হতে পারে। ধুমপান, মদ্যপান, কফি, চর্বিজাতীয় খাদ্যগ্রহণ, এবং কোন কোন ঔষধ বা ড্রাগসের কারণে এই অবস্থা বৃদ্ধি পেতে পারে।তবে ব্যথাটা দুধ বা এন্টাসিড জাতীয় সিরাপ খেলে অনেক ক্ষেত্রেই দ্রুত ভাল হয়ে যায়।

পালমোনারি এমবোলিজম
এমবোলাস হল রক্তে জমাকৃত বর্জ্য। সাধারণত তা রক্তের জমাট, যা কিনা রক্তনালীতে তার চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে রক্তে প্রবাহিত অক্সিজেন থেকে বঞ্চিত হয়ে দেহ কোষ। পালমোনারি এমবোলিজমে স্বভাবতই পায়ের দিক থেকে আগত কোন জমাট রক্ত এসে ফুসফুসের রক্তপ্রবাহকে বন্দ করে দেয়।
পালমোনারি এমবোলি
জমে সাধারণত -
০ খুব বেশি বুকে ব্যথা হয়
, যা কিনা কাশিতে বা শ্বাসে তীব্রতর হয়। সাথেশ্বাসকষ্টও থাকে।।
০ হঠাৎ কোন কারণ ছাড়াই শ্বাসকষ্ট (কোন ব্যথা নাও থাকতে পারে)
০ কাশীতে রক্ত
,কফ  থাকতে পারে
০ হৃদক্রিয়ার গতিময় ছন্দ অনেকবেড়ে যাবে
।
০ দুশ্চি
ন্তা হবে এবং অনেক ঘাম হতে থাকবে।
হার্ট এটাকের মতনই এটি একটি মেডিক্যাল ইমারজেন্সি
। ইমারজেন্সি মেডিক্যাল সাহায্যের জন্য তৎপর হোন।
নিউমোনিয়া এবং
প্লুরেসি
নিউমোনিয়ার লক্ষণগুলো হলো কাশি,বুকে ব্যথা সাথে জ্বর কাঁপুনি এবং কাশিতে রক্ত বা গন্ধযুক্ত কফ। নিউমোনিয়া হলে সাথে ফুসফুসের চারপাশের পর্দাও আক্রান্ত হয় এবং শ্বাস নিলে অস্বস্তি হতে থাকে। এই অবস্থাকে আমরা প্লুওরেসি বলি।
০ পিস্নউরেসিতে সবচেয়ে বড়
লক্ষণ হলো শ্বাস বন্ধ রাখলে ব্যথা থাকে না বা ব্যথার জায়গায় চাপ দিলে ব্যথা থাকে না। কিন্তু হার্ট এটাকে তা হয় না। আপনি ডাক্তার দেখান যদি আপনার জ্বর, কাশি, বুকে ব্যথা থাকে। তবে শুধু পিস্নউরেসি মেডিক্যাল ইমারজেন্সি নয়।
বুকের খাঁচার ব্যথা
সবচেয়ে কম
ক্ষতিকারক বুকের ব্যথার মধ্যে বুকের খাঁচার মাংসপেশীর ব্যথা অন্যতম। চাপ দিলে ব্যথার চারপাশেও ব্যাথা ব্যথা অনুভূত হয়। যদি এমনটি হয় যে আপনি আঙ্গুল দিয়ে ব্যথা নির্দিষ্ট করতে পারছেন, তবে সেটা কখনোই হার্ট এটাকের মতন সিরিয়াস কিছু নয়।
বুকের ব্যথার আরও কারণ
০ অধিক কাশের জন্য বুকের মাংসপেশীতে ব্যথা।
০ বুকের মাংসপেশীতে রক্তৰরণ এবং ব্যথা।
০ অধিক মানসিক চাপ এবং
দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস।
০ পেপটিক আলসার বা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা বা
পিত্তথলীর ব্যথা বুকে অনুভূত হতে পারে।

দ্রুত ব্যবস্থা নিন:

বুকে প্রচন্ড ব্যথা থাকলে (বিশেষত হার্ট এটাক বা এনজিনার ব্যথা হলে) প্রতিটি  মিনিটকে গুরুত্ব দিন। যত দ্রুত রোগীকে হাসপাতালে নেয়া সম্ভব, তত দ্রুত আরোগ্যলাভ সম্ভব, তত ঝুঁকির মাত্রা কম।

যে কাজ বা অবস্থার ব্যথা বেড়ে যায়, সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ করুন, বিশ্রাম নিন এবং দ্রুত এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করুন। আর এম্বুলেন্স আসার পূর্বে বা হাসপাতালে পৌছার পূর্বে-

১। এসপিরিন ট্যাবলেট খেয়ে নিন (যদিনা ডাক্তার বিশেষভাবে ঐ ঔষধ খেতে নিষেধ না করেন)।

২। নিজে নিজে গাড়ি ড্রাইভ করতে যাবেন না।

৩। বসে বা শুয়ে বিশ্রাম নিন, হাটা চলা বন্ধ।

রোগ নির্ণয়:

চিকিৎসার জন্য সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় প্রয়োজন। আর এজন্য নানা ধরনের পরীক্ষা প্রয়োজন। যেমন-

- ইসিজি, 

বিস্তারিত

-->

14-12-2012 রোগ ব্যাধি

রক্তনালীর ব্লকজনিত হৃদরোগ নির্ণয়

(করোনারি এনজিওগ্রাম)

 

হৃৎপিন্ডের ধমনীর বিশেষ ধরনেরএক্স-রে কে করোনারি এনজিওগ্রাম বলে, যা কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি নয়, একটি বিশেষ পরীক্ষা। এর মাধ্যমে হৃৎপিন্ডের রক্তনালীতে রেডিওপেক ডাই প্রয়োগ করে করোনারি রক্তনালীর রোগ নির্ণয় করা হয়। এর মাধ্যমে রক্তনালীতে ব্লক থাকলে নির্ণয় করা যায়। হৃৎপিন্ডের রক্তনালীর ব্লক থাকলে কতটি আছে, কী অবস্থায় আছে, ওষুধ খেলে হবে না পিটিসিএ বা রক্তনালীতে রিং লাগাতে হবে, না সিএবিজি বা বাইপাস অপারেশনের প্রয়োজন হবে, তা নির্ণয় করা যায়।

মানুষের অন্যান্য অঙ্গের মতো হৃৎপিন্ডেরও অক্সিজেন প্রয়োজন। আমাদের হৃৎপিন্ডে নিজস্ব রক্ত চলাচলের জন্য দুটি ধমনী থাকে, যার মাধ্যমে হৃৎপিন্ডে অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ হয়ে থাকে। একটি হলো ডান করোনারি ধমনী বা আরসিএ, অপরটি হলো বাম করোনারি ধমনি। বাম করোনারি ধমনীর দুটি বড় শাখা ধমনী রয়েছে, একটি হলো লেফট এন্টেরিয়ার ডিসেনডিং ধমনী বা এলএডি এবং অপরটি লেফট সারকামপেক্স ধমনী বা এলসিএক্স।

 

হৃৎপিন্ডের রোগঃ

হৃৎপিন্ডের রক্তনালীতে চর্বি জমে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে যে রোগের উৎপত্তি হয় তাকে ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ বলে। হার্ট এটাক বা মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন এই রোগের বহিঃপ্রকাশ। বর্তমানে  মানুষের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো এই রোগটি। যুক্তরাজ্যে এক সমীক্ষায় দেখা যায় ১/৩ ভাগ পুরুষ এবং ১/৪ ভাগ মহিলা ইসকেমিক হার্ট ডিজিজে মারা যায়।

 

ইসকেমিক হার্ট ডিজিজে হার্ট এটাক বা মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন ছাড়াও ক্রনিক স্ট্যাবল এনজিনা ও আনস্ট্যাবল এনজিনা হতে পারে। ধুমপান, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তেবিস্তারিত

-->

06-12-2012 রোগ ব্যাধি

20-06-2012 রোগ ব্যাধি

Physical Activities (Men)
আমাদের দেশসহ সারা বিশ্বে পুরুষরা বিশেষত ৩০-৫০ বছর বয়সী পুরুষেরা তাদের বাসা, অফিস ও অন্যান্য কাজ নিয়ে এতই ব্যস্ত থাকেন যে, ব্যায়াম করাটা যেন বিলাসিতা। আর শারিরিক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের  অভাবে তাদের মেদসহ নানাবিধ শারিরিক সমস্যা ও রোগ হয় এমনকি হৃদরোগ ও ক্যান্সার হবার ঝুকি বেড়ে যায়। কিন্তু ব্যায়ামকে দৈনন্দিন কাজের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করানো যদিও খুব দরকারী কিন্তু অসম্ভব নয়। তবে এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে –hv‡`i বয়স ৪০ এর অধিক, যাদের হৃদরোগ  আছে বা অন্য শারিরিক দূর্বলতা আছে বা বহুদিন ব্যায়াম করেননি তাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্র্শ নিয়ে ব্যায়াম শুরু করা উচিত।

বাধাসমূহ :

সাধারণ সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম –

১. সময়ের ¯^íZv : যেহেতু সবাই বাসা, অফিস পরিবার নিয়ে অত্যন্ত ব্যস্ত, প্রতিদিন ব্যায়ামের সময় বের করা কঠিন।

২. আগ্রহের অভাব :

মানুষ মাত্রই আরামপ্রিয় । তাই খুব প্রয়োজনে বাধ্য না হলে ব্যায়ামের প্রতি কারও আগ্রহ দেখা যায় না।

৩. গুরুত্বের অভাব :

ব্যায়ামের উপকারীতা জানলেও অনেকে ¯^v¯’ সুরক্ষা খুব একটা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে না। বরং কিছু রোগের ভয়ের কারণে মানুষ ব্যায়াম করে ।

৪. শারিরিক সমস্যা :

অনেক ওজন বা মোটা, পিঠে ব্যাথা, পায়ে বা হাটুতে ব্যাথা  বা হার্টের সমস্যা  ইত্যিাদি কিছু কারণে পুরুষেরা ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকে।

৫. সুযোগের অভাব : কাছাকাছি ভাল জিমনেসিয়াম বা খেলার মাঠ না থাকা, অথবা ব্যায়ামের যন্ত্রপাতির অধিক দামের কারণে অনেকের সুযোগ হয় না।

৬. আবহাওয়া : ঈস্খঢ়হু গরম বা ঠান্ডা বা বৃষ্টিতে বাইতে ব্যায়াম করা সম্ভব হয না।

 

বাধা পেরোনোর উপায় :

১. সময় ¯^íZv :

 à¦—বেষনায় বলা যায় –cÖwZw`b নূন্যতম ৩০ মিনিট ব্যায়ামই যথেষ্ট। ব্যস্ত  সময়ের মাঝে ৩০ মিনিট সময় বের করা কঠিন হলেও ভেঙ্গে ভেঙ্‌েনগ ১০ বা ১৫ মিনিট করে মে,াট ৩০ মিনিট সময় বের করা অসম্ভব না। আর দৈনন্দিন কাজের ফাকেই এভাবে ব্যায়াম করা যায়, যেমন: লাঞ্চ ব্রেকে ১০ মিনিট হাটা, বাচ্চাকে স্কুলে দিতে আসতে ১০ মিনিট  বাড়ি, ফেরার পথে ১০ মিনিট ।

২. আগ্রহের অভাব :

মজাদার  ব্যায়াম পছন্দ করুন এবং ব্যায়ামকে  কাজ বা দায়িত্ব মনে না করে আনন্দ উপভোগের বিষয় হিসেবে নিন।

৩. গুরুত্বের অভাব(উৎসাহের অভাব):

একজন  সঙ্গী বা একটি দলের সাথে ব্যায়াম করুন এতে উৎসাহ বাড়বে অথবা বাড়িতে মেশিন কিনে টিভি দেখতে দেখতে, গান শুনতে শুনতে ব্যায়ম করুন । অথবা কোন কাজ করার সময় যেমন: দোকনে যাওয়া, বাচ্চাকে নিয়ে বেড়ানো করতে করতে ব্যায়াম ।

৪. শারিরিক অসুস্থতা :

আপনার শরীর স্বাস্থ্য সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যায়াম নির্বাচন করুন যেমন: হাটা, সাতার ইত্যাদি।

৫. সুযোগের অভাব :

এ ক্ষেত্রে বাসায় সিডি দেখে ব্যায়াম করা যায় । হাটার অভ্যাস করা যায়

20-06-2012 রোগ ব্যাধি

বিভিন্ন খাবার  কারও কারও ক্ষেত্রে মাথাব্যাথা বা মাইগ্রেনের কারণ হয়। রক্তে  গ্লুকোজের তারতম্য, ক্যাফেইন জাতীয় (চা, কফি) খাবার হঠাৎ বন্ধ করা, খাবারের সাথে মেশানো আলগা রং বা কেমিক্যাল ইত্যাদি সবই মাথাব্যাথা হতে  সাহায্য করে। হাইপোগ্লাইসোমিয়া বা রক্তে  গ্লুকোজের কাটতির কারণে  তীব্র  মাথা ব্যাথা হতে পারে। খাবারের মোনসোডিয়াম গ্লুটামেট এমাইন নাইট্রেট ইত্যাদি মাথা ব্যাথা করাতে কাজ করে।

                                                মাথার রক্তনালীর অতিমাত্রার সংকোচন ও  সমপ্রসারণ এই মাথা ব্যাথার জন্য দায়ী। তেই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাতিরিক্ত উঠানামা, মাথা ব্যাথার সাথে সরাসরি যুক্ত। তবে চা ও  কফির মধ্যেকার ক্যাফেইন অল্প মাত্রায় খেলে তা মাথা ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে।

রক্তে ইনসুলিনের সাথে মাইগ্রেনের/মাথাব্যাথার সম্পর্ক :

খাদ্য গ্রহণের ফলে রক্তে সুগার বৃদ্ধি পায় যা কিনা প্যানক্রিয়াস থেকে ইনসুলিন বের হতে উৎসাহিত করে। ইনসুলিন রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমায় যদি গ্লুকোজ বেশি কমে যায় তখন মাথার রক্তনালী সংকুচিত হয় ফলে মাথা ব্যাথা  হয় । এমনকি মাইগ্রেনের সময় চোখে  ঝাপসা দেখার কাত্মণ  রক্তনালীর সংকোচন ।

কোন বেলায় খাবার বাদ দেবেন না :

যদি এক বেলা খাবার বাদ দেন, রক্তে বা  ব্রেনে গ্লকোজ কমে যাবে, তখন গ্লুকোজ তৈরীর  জন্য হরমোন তৈরী করবে যা কিনা রক্তনালীকে সংকুচিত করে দেয় ও মাথা ব্যাথা  হয।

 

চা/কফি না খেলে :

যারা নিয়মিত চা/কফি খান তাদের জন্য প্রযোজ্য শরীর এডেনোসিন নামক রাসায়নিক দ্রব্য থাকে যা মাথার ভেতরের রক্তনালীকে খোলা রাখে, মাপ নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু ক্যাফেইন তার বিপরীত কাজ করে রক্তনালী সংকোচন করে। তখন শরীর আরও বেশি  এডেনোসিন তৈরী হয়। এমতাবস্থায়,  যদি কেউ চা বা কফি খাওয়া বন্ধ করে বা ঘুমের সময় যখন ক্যাফেইন থাকে না সেই সময় অতিরিক্ত এডেনোসিনের কারণে রক্তনালী বেশি মোটা হয়ে প্রচুর রক্তচলাচল করে মাথা ব্যাথার সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে কিছু চা/কফি খেলে মাথা ব্যাথা কমে যায়।

অন্যান্য খাবারের জন্য মাথাব্যাথা :

 à¦•à¦¿à¦›à§ সংখ্যক লোকের বিভিন্ন খাবার বা খাবারের রং/কেমিক্যেলের জন্য মাথাব্যাথা হয়। যেমন :

নাইট্রেট       মাংসজাতদ্রব্য সংরক্ষণে, পনিরে

এমাইন        আলু, টমেটো, বাথাকপি, কলিজা, টুনা মাছ, চকোলেট ইত্যাদিতে।

 

চিকিৎসা :

ব্লাড সুগার হেডেক :

নিয়মিত খাদ্য  গ্রহণ করুন এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করুন।  হাই গ্লুাইসেমিক ইনডেক্সের পাশাপাশি লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের খাবারও গ্রহণ করুন ।

ক্যাফেইন উইথড্রয়াল হেডেক :

 à¦¹à¦ à¦¾à§Ž করে চা/কফি ছাড়া যাবে না, বরং শরীরেকে অভ্যস্ত হতে সময় দিন। অল্প অল্প করে পরিত্যাগ করুন। প্রয়োজনে এক মাস সময় নিন।

ফুড কেমিক্যাল :  যে সব খাবারে সত্যিই আপনার সমস্যা হচ্ছে শুধু

16-06-2012 রোগ ব্যাধি

 à¦¬à§à¦¯à¦¾à¦¯à¦¼à¦¾à¦®à§‡à¦° ক্ষেত্রে সতর্কতা গ্রহণ একান্ত জরুরী। যা আপনাকে আঘাতের হাত থেকে রক্ষা করে আপনাকে সুস্থ রাখবে। ব্যায়ামের সময় আঘাতের হাত থেকে রক্ষা পেতে অবশ্যই জেনে নেবেন- কোন ধরনের যন্ত্র কিভাবে ব্যবহার করতে হয়, ওয়ার্ম আপ করা, গরম থেকে নিজেকে রক্ষা, পানি পান কার ও শরীরের চাপ সহ্য করা ইত্যাদি সহ আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।  ব্যায়ামের সময় এর থেকে আঘাত পেলে উপকারীতার বদলে আরও  সমস্যা বাড়বে । তাই ব্যায়ামের উপকারীতা পেতে হলে ব্যায়ামঘটিত আঘাত থেকে বেচে থাকতে হবে।

আঘাত পাবার ঝুকি কমানোর উপায় :

-         শারিরিক অবস্থা বিচার করে আপনার জন্য যুতসই ব্যায়াম নির্ধারণ করুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। স্পোটর্স মেডিসিন ডাক্তার, ফিজিওথেরাপিষ্ট এর পরামর্শ নিন ।

-         সঠিক জামা, জুতা এবং অন্যান্য যন্ত্র ব্যবহার করুন ।

-         প্রচুর পরিমাণে পানি খাবেন।

-         ব্যায়ামের শুরুতে ওয়ার্ম আপ করে নিন।

 à¦¯à¦¤à§à¦¨ নিন এবং খেয়াল করুন : 

              অসতর্কতা অথবা  শরীরের সমস্যাকে গুরুত্ব না দেবার কারণে অনেকের সমস্যা হয়। তাই  à¦…বশ্যই  ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নতুন প্রোগ্রাম যুক্ত করবেন ।

-         প্রতি  সপ্তাহে ২ দিন নূন্যতম ২ দিন রেস্ট নিন । শরীরকে বিশ্রাম দিন।

-         আপনার শরীরের অবস্থা হিসেব করে ব্যায়াম করুন। শারিরিক ফিটনেস বাড়তে কিছু সময় লাগে। খুব  দ্রুত ব্যায়াম করলে বা বেশ কঠিন ব্যায়াম করে দ্রুত ফল পেতে চাইলেই আঘাতের ঝুকি বাড়ে। তাই তাড়াহুড়ো করবেন না বরং নিয়মিত করুন ।

-         কখনও কোথাও আঘাত পেলে অবশ্যই বিশ্রাম নিন। এতে দ্রুত সেরে উঠবেন, নইলে ব্যায়াম  চালিয়ে  গেলে কোষ মাংসপেশীর ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে থাকবে।

যে অবস্থার সাথে সাথে ব্যায়াম বন্ধ করতে হবে:

-         অসুবিধা বা ব্যাথ্যা অনুভব করলে।

-         বুকে ব্যাথ্যা হলে, বা ঘাড়ে ব্যাথ্যা হলে অথবা থুতনীতে ব্যাথা যা হাত দিয়ে  নিচে নামছে বা পিঠে দুই হাতের মাঝখানে ব্যাথ্যা হলে

-         প্রচন্ড শ্বাস কষ্ট হলে।

-         বুক ধরফড় করা খুব দ্রুত হৃদস্পন্দন হলে।

ব্যায়ামের শুরুতে ওয়ার্ম আপ করা :

-         ৫ - ১০ মিনিট সময় নিয়ে শরীরের তাপমাত্রা বাড়ানো

-         ব্যায়ামের সময় যে সব মাংসপেশী ব্যস্ত থাকবে সেগুলিকে গরম করা ।

-         একটু দ্রুত হাটা বা জগিং করার মাধ্যমে ওয়ার্ম আপ করা যায় ।

-         মাংসপেশীগুলিকে টান টান করা। অবশ্যই তা ওয়াম আপের পর করতে হবে।

ব্যায়ামের শেষে শরীর শীতল করা :

-         মাংসপেশীকে নরম হতে সাহায্য করে, কোষের ক্ষয় প্রতিরোধ করে।

-         ব্যায়ামের শেষের ৫ মিনিট গতি কমিয়ে দিন। হাল্কা ভাবে জগিং করতে থাকুন।

বিস্তারিত

-->

16-06-2012 রোগ ব্যাধি

 à¦¶à§à¦§à§ বড়দের নয় শারিরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম বাচ্চাদের জন্যও অতি গুরুত্বপূর্ণ, উপকারী।  ব্যায়াম তাদেরে মোটা হওয়া থেকে রক্ষা করবে, অবসাদ ও বিষন্নতা  থেকে দুরে রাখবে, শরীর সুগঠিত করে তার ঘুম শক্তি. মনোবল বুদ্ধি করবে। বাচ্চরা এমনিতেই খেলাধূলা বা দৌড়াদৌড়ি পছন্দ করে। তাই এটিকে নিরুৎাসাহিত না করে বরং এটি ¯^v‡¯’¨i জন্য উপকারী এবং সারা জীবন যাতে তারা এটি ধরে রাখে সেদিকে আগ্রহ বা মানসিকতা গড়ে তুলুন।

 

 

উপকারীতা :

-         শরীরের হৃদযন্ত্রের কার্য্যক্রম বৃদ্ধি করে, সুস্থ্য রাখে।

-         ওজন ঠিক রাখে।

-         শরীর, হাড় মাংস সুগঠিত করে।

-         ঘুম ভালো হয়।

-         আত্মশক্তি, আত্মপ্রত্যয়, দৃঢ়তা বৃদ্ধি পায়।

-         মনোযোগী হতে সাহায্য করে।

-         শরীরের ভারসাম্য রক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করে।

-         বন্ধু-বান্ধব তৈরী ও সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টি হয়।

-          

-        

 

কতক্ষণ ব্যায়াম প্রয়োজন :

৫-১২ বছর বয়সী বাচ্চাদের প্রতিদিন নূন্যতম ১ ঘন্টা ব্যায়াম জরুরী । তবে আরও বেশি এমনকি কয়েক ঘন্টা হলেও ক্ষতি নেই। সারাদিনে বিভিন্ন সময়ে অল্প মাঝারি বা  বেশি পর্যায়ের পরিশ্রম করতে পারে।

 

মা বাবার করণীয় :

বাচ্চারা খুবই অনুকরণ প্রিয়  তাই  নিজেকে আরো অনুসরণীয় করে তুলুন। নিজে ব্যায়াম করুন, পরিশ্রমী  হন।

-         প্রতিদিন আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করুন।

-          বাচ্চাকে তার পছন্দের কাজ/খেলাটি করতে দিন।

-          বাচ্চাকে ব্যায়ামের পাশপাশি সামাজিকতা ও দক্ষতা অর্জন করতে উৎসাহিত করুন।

-          ঘরের কাজকর্মে তাকে নিয়োগ করুন। যেমন: ঘর পরিস্কার করা, গাড়ি ধোয়া মোছা, বাজারে যাওয়া।

-          হেটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যেত আসতে দিন।

-         বাচ্চাকে নিয়ে অবসর সময়ে বা ছুটির দিনে হাটাহাটি করুন, খেলুন।

-         টিভি দেখা, কম্পিউটার গেমস্‌ ইত্যাদি দিনে  সর্বোচ্চ ২ ঘন্টা ।

-          

 

অল্প বয়সেই শুরু করুন :

ভালো অভ্যাস ছোটবেলা থেকেই তৈরী করা ভলো। তাই যেহেতু বাচ্চা এমনিতেই চঞ্চল, তাদের এই গুণটিকে অভ্যাসে পরিণত করুন।

-         সব সময় বাচ্চাকে শারিরিক পরিশ্রমে সাহায্য করুন।

-বিস্তারিত

-->