About us    Contact us Find us on:    Facebook Twitter YouTube

মা ও শিশু স্বাস্থ্য

12-10-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

রুবেলা

 

রুবেলা-ভাইরাসজনিত রোগ। এই রোগে অস্থিসন্ধিতে ব্যাথা হয়, চামড়ায় রেশ(লালচে দাগ) হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রুবেলা ইনফেকশনের মাত্রা সামান্য হয় এবং এমনিতেই রোগ ভাল হয়ে যায়। তবে গর্ভবতি মহিলা যদি এই রোগে আক্রান্ত হয়, সে ক্ষেত্রে গর্ভস্থ শিশু রুবেলা সিনড্রোম  হবার সম্ভাবনা থাকে। যা পরিণতি মারাত্মক। এতে গর্ভস্থ শিশু মারাত্মক এবং স্থায়ী জন্মগত  ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে এবং অনেক ক্ষেত্রেই শিশু মারা  যায়।

 

          রুবেলা অনেক সময় জার্মান  মিজেলস (হাম) বলা হয়, যদিও এটি হাম নয় বরং ভিন্ন একটি রোগ। উন্নত বিশ্বে রুবেলা ভ্যাক্সিনের প্রভাবে এই রোগের প্রকোপ খুব কম, তবে আমাদের দেশসহ অনু‌ন্নত দেশে এই রোগের ঝুঁকি আছে।

 

লক্ষনসমূহঃ

শতকরা ৫০ ভাগ ক্ষেত্রে রুবেলা ইনফেকশন একই কম মাত্রায় হয় যে কোন লক্ষণই প্রকাশিত হয় না। সাধারণ লক্ষণসমূহ ইনফেকশনের ২-৩ সপ্তাহ পরে প্রকাশিত হয়। যে সব লক্ষণ দেখা যায়ঃ

-         হালকা জ্বর

-         মাথা ব্যাথা

-         সর্দি, নাক দিয়ে পানি পড়া

-         চোখ লাল হওয়া

-         চামড়ায় লালচে দাগ

-         লিম্প রোড (লসিকা গ্রন্থি) ফুলে যাওয়া

-         হাড় ও জোড়ায় ব্যাথা ইত্যাদি।

 

জটিলতাসমূহঃ সাধারণত ৩ দিনেই রোগী ভাল হয়ে যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এই রোগে কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন-

-         আর্থালজিয়াঃ

এ ক্ষেত্রে হাড় ও জোড়ায় ব্যাথা দীর্ঘমেয়াদী হয়  ও সারতে প্রায় মাস খানেক সময় লাগে।

-         মধ্যকর্নের প্রদাহ ও মস্তিস্কের প্রদাহঃ

 à¦–ুব বিরল, তবে রোগী মারা যেতে পারে।

 

যে ভাবে ছড়ায়ঃ

সাধারণত অসুস্থ বা জীবাণু বহনকারী ব্যক্তির হাঁচি কাশি, কোনভাবে শ্বাস বা খাদ্যের মাধ্যমে সুস্থ শরীরে প্রবেশ করলে সুস্থ ব্যক্তি আক্রান্ত হতে পারে।

হাই রিস্কঃ যাদের ইনফেকশন হবার ঝুঁকি বেশি-

-         যারা রুবেলা ভ্যাক্সিন নেন নি।

-         যারা হাসপাতালে কাজ করেন

-         যারা চাইল্ড-কেয়ার, ডে কেয়ার সেন্টারে কাজ করে থাকে।

-         ঐ সব শিশু, যার মার গর্ভকালীন, এই রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ছিল।

-         যখন কেউ এমন স্থানে বেড়াতে আসে সেখানে এই রোগের প্রকোপ বেশি।

 

কনজেনিটাল রুবেলা সিনড্রোমঃ  গর্ভকালীন সময়ে কেউ যদি রুবেলা ইনফেকশনে আক্রান্ত হন, তা তার গর্ভস্থ শিশুর শরীরে ইনফেকশন ঘটানোর সমূহ সম্ভাবনা থাকে। এতে গর্ভস্থ বাচ্চা মারা যেতে পারে, গর্ভ নষ্ট হতে পারে। আর যে সব শিশু বেঁচে যায় তার শতকরা ৯০ ভাগই কনজেনিটাল রুবেলা সিনড্রোম -অর্থাৎ  জন্মগত বেশি কিছু ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। যেমনঃ

-         অন্ধত্ব

-         বধির

-         জন্মগত হার্টের সমস্যা।

-         বৃদ্ধি কম হওয়া

-         বুদ্ধি প্রতিবন্ধি হওয়া

-         লিভার, ফুসফুস ইত্যাদি অংশের মারাত্মক প্রদাহ নিয়ে জন্মগ্রহণ করা।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

এই রোগ নির্ণয় বেশ কঠিন ও ঝামেলা যুক্ত, কেননা এই রোগের সুনির্দিষ্ট লক্ষণ নেই, বরং যে লক্ষণসমূহ পাওয়া যায় তা অন্য অনেক ধরনের ভাইরাস রোগেও পাওয়া যায়। রোগ নির্ণয়ের জন্য যা যা প্রয়োজনঃ

-         পরিপূর্ণ রোগের ইতিহাস, টিকা নিয়েছিল কিনা, কোথাও বেড়াতে গিয়েছিল কিনা বা অসুস্থ রোগীর সংস্পর্শে ছিল কিনা ইত্যাদি জানতে হবে।

-         শারীরিক পরীক্ষা।

-         রক্ত পরীক্ষা।

 

চিকিৎসাঃ

সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই এবং রোগটি ভাইরাস ঘটিত, তাই এ ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিকের কোন ভূমিকা নেই। রোগ লক্ষণের চিকিৎসার জন্য-

-         প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা।

-         বিশ্রাম নেয়া।

-         জ্বর, ব্যাথা কমাবার জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ।

-         অসুস্থ হলে ৪-৫ দিন আলাদা থাকা, যাতে রোগ না ছড়ায়।

-         গর্ভবতি মহিলার ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হবেন।

 

রোগ প্রতিরোধঃ

টিকার মাধ্যমে সহজেই রোগ প্রতিরোধ করা যায়। তাছাড়া যার ১ বার এই রোগ হয়েছে, তার রোগ প্রতিরোধ আপনা আপনি তৈরী হয়ে যায়। তবে সামান্য কিছু ক্ষেত্রে টিকা নেবার পরও বার বার ইনফেকশন হবার পরও পুণরায় হতে পরে।

 

টিকাঃ  à¦à¦®à¦à¦®à¦†à¦° ভ্যাক্সিন একত্রে মামস, হাম ও রুবেলা টিকা পাওয়া যায়। ১ বছরের বেশি বয়স হলেই এই টিকা নেয়া যাবে। তবে-

-         গর্ভবতি মহিলারা এই টিকা নিতে পারবেন এবং টিকা নেবার ১ মাসের মধ্যে গর্ভধারণ করাও ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া

-         যারা দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ঔষধ গ্রহণ করছেন

-         যারা ইমিউনো সাপ্রিসিক ঔষধ খাচ্ছেন এবং

-         লিউকেমিয়া, লিম্ফোমায় আক্রান্তদের এই টিকা নেয়া নিষেধ।

 

টিকা দেওয়ার পূর্বেঃ

টিকা দেওয়ার পূর্বে কিছু বিষয় ডাক্তার বা টিকাদানকারীকে জানতে হবে, যদি-

-         বাচ্চার জ্বর থাকলে (৩৮.৫  ডিঃ সেঃ এর বেশি)।

-         কোন ভ্যাক্সিনে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকলে।

-         গত ১ মাসে কোন লাইভ ভ্যাক্সিন নিয়ে থাকলে।

-         অল্প কিছুদিন পূর্বে রক্ত বা রক্তজাত শরীরে নিয়ে থাকলে।

-         রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায় এমনরোগে আক্রান্ত বা তার চিকিৎসাপ্রাপ্ত হলে।

-         গর্ভবতি হলে।

 

টিকার সম্ভাব্য জটিলতাঃ রুবেলার টিকা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিরাপদ ও ঝুঁকিহীন। তবে সব টিকারই কিছু জটিলতা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ

-         ৫ থেকে ১০ দিন পর প্রচন্ড জ্বর (৩৯ ডিঃসেঃ এর বেশি)

-         চামড়ায় লালচে দাগ

12-10-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

গর্ভপাত

গর্ভপাত বলতে সাধারণ গর্ভবস্থায় আটাশ সপ্তাহের আগেই সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়াকে বুঝায়। গর্ভপাত দুইভাবে হতে পারে: (ক) ¯^vfvweKfv‡e অর্থাৎ ¯^Ztù~Z© উপায়ে গর্ভের সন্তান না হয়ে যেতে পারে অথবা (খ) A¯^vfvweK পন্থায় জোরপূর্বক গর্ভের সন্তান নষ্ট করা বা গর্ভপাত ঘটানো যেতে পারে।

 

¯^Ztù~Z© গর্ভপাত

¯^Ztù~Z© গর্ভপাত পাঁচ ধরনের হয়ে থাকে, যথা (১) সাঙ্কেতিক গর্ভপাত যে সব ক্ষেত্রে গর্ভপাতের সংকেত বা আশঙ্কা দেখা দেয়, অথচ পরবর্তী পর্যায়ে গর্ভপাত হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে; (২) অবশ্যম্ভাবী গর্ভপাত যে-গর্ভপাত কোনো  অবস্থাতেই প্রতিরোধ করতে পারা যায় না; (৩) অসম্পূর্ণ গর্ভপাত যেক্ষেত্রে গর্ভধারণের ফসলের কিছু অংশ জরায়ুর ভিতরে থেকে যায়; (৪) সম্পূর্ণ গর্ভপাত যেক্ষেত্রে গর্ভের সন্তান পুরোপুরিভাবে যোনিপথে বের হয়ে যায় এবং (৫) সংক্রমণশীল গর্ভপাত যেক্ষেত্রে কোনো জীবাণু দ্বারা গর্ভতন্ত্র সংক্রমিত হয়ে থাকে। সাধারণত অসম্পূর্ণ গর্ভপাত এবং জোরপূর্বক ঘটানো গর্ভপাতের ক্ষেত্রে এই সংক্রমণের মাত্রা বেশি থাকে। এই সংক্রমণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং আমাদের দেশে মাতৃমৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ।

 

কৃত্রিম বা A¯^vfvweK পন্থায় জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটানো:

গর্ভধারণ কোন কোনো মায়ের ক্ষেত্রে এবং সন্তানের ¯^v¯’¨ এবং জীবনের জন্য অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ হয়ে ওঠে তখন ইচ্ছাকৃতভাবে গর্ভপাত ঘটানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে অবৈধ গর্ভধারণের পর এ ধরনের গর্ভপাত ঘটানো হয়।  জোরপূর্বক ঘটানো গর্ভপাতে মাতৃমৃত্যুর হার অনেক গুণ বেশি।

গর্ভপাতের কারণ ও ঝুঁকিসমূহ:

কখনো কখনো গর্ভের সন্তানের  ত্রুটির কারণে (৬০%), আবার কখনো গর্ভবতী মহিলার অসুস্থতার কারণে (১৫%) ¯^Ztù~Z© গভপাত ঘটে থাকে। তবে গর্ভাবস্থায় প্রাথমিক পর্যায়ে গর্ভের সন্তানের জটিলতার বা অসুস্থতার কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গর্ভপাত ঘটে থাকে। তবে গর্ভবস্থায় প্রাথমিক পর্যায়ে গর্ভের সন্তানের জটিলতার বা অসুস্থতার  কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গর্ভপাত ঘটে এবং গর্ভবস্থায় শেষের দিকে সাধারণত মায়ের অর্থাৎ জরায়ুর সমস্যার কারণে গর্ভপাত বেশি  হয়ে থাকে।

 

গর্ভাবস্থায় ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে যে সব গর্ভপাত হয়ং তার শতকরা ৫০-৮-০ ভাগ হযে থাকে বাচ্চার অঙ্গহানির কারণে। এই অঙ্গহানির  বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন: মায়ের রুবেলা (জার্মান মিজেলস) সংক্রমণ ঘটলে, মা সাইটোটক্সিক ড্রাগ (মেথোট্রেক্সেট, সাইকেলাফসফামাইড, ভিনক্রিস্টিন ইত্যাদি) সেবন করলে কিংবা মায়ের জন্মগত ত্রুটির কারণে। গর্ভপাতের শতকরা ২৫ ভাগ ঘটে থাকে ক্রোমোজোমের ত্রুটির কারণে।

 

A¨vw¤^wj‡Kj কর্ড বা নাড়ীতে গিট পড়লে কিংবা নাড়ী পেঁচিয়ে গেলে বাচ্চার শরীরে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয় এবং সে  গর্ভেই মারা যায় এবং গর্ভপাত ঘটে। এছাড়াও জমজ বাচ্চা, হাইড্যামনিওস, জরায়ুর টিউমার

(ফাইব্রয়েড) ইত্যাদির ক্ষেত্রে জরায়ু আকারে খুব বেড়ে যায় এবং জরায়ুর মাংসপেশীতে টান লাগে, তাই গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

 

যেসব মায়ের শরীরে ভিটামিন বি, ফলিক এসিড এবং প্রোটিনের অভাব থাকে তাদের ক্ষেত্রে গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেশি। এজন্য ধারণা করা হয়: অধিক সন্তানের জননী এবং গরীব শ্রেণীর মহিলাদের ক্ষেত্রে গর্ভপাত বেশি হয়ে থাকে। মায়ের কিডনীতে সংক্রমণ ঘটলে, উচ্চ রক্তচাপ থাকলে এবং প্লাসেন্টা (গর্ভফুল) আগেভাগেই জরায়ুর গা থেকে আলাদা হয়ে গেলে (প্লাসেন্টা জরায়ুর সঙ্গে সঠিক স্থানে সংযুক্ত না হয়ে অন্য কোনো স্থানে থাকলে) গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্লাসেন্টা সংক্রমণ ঘটলে বা টিউমার হলে তা আগেভাগেই জরায়ুর গা থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খথাকে। মায়ের শরীরে অক্সিজেনের ¯^ícZvi কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া A¯^vfvweK হলে, শ্বাসতন্ত্রে মারাত্মক রক্তশূন্যতা থাকলে বাচ্চার শরীরের Aw·‡Rb-¯^íZv  ঘটে এবং গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশসময়হে (যেমন আফ্রিকায়) কৃম বা হুক-ওয়ার্মের জন্য মায়েদের রক্তশূন্যতা বেশি দখা দেয় এবং এদের ক্ষেত্রে গর্ভপাতও বেশি হয়। কিছু কিছু বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ, যেমন- সীসা,   এড্রিন, আর্সেনিকের সংস্পর্শে আসলে এবং সাইটোক্সিক ড্রাগ সেবন করলেও গর্ভপাত ঘটতে পারে। সেজন্য গর্ভবস্থায়, বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় প্রাথমিক পর্যায়ে (প্রথম তিন মাস) সাইটোটিস্কিক ড্রাগ সেবন করা সর্ম্পূ নিষেধ। গর্ভবতী মায়েদের মারাত্মক সংক্রমণ দেখা দিলে গর্ভপাত হতে পারে, তবে সব ধরনের সংক্রমণে নয়, কারণ সব ধরনের রোগজীবাণু প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল অতিক্রম করতে পারে না। মায়ের গুটিবসন্ত, রুবেলা (জার্মান মিজেলস) বা সিফিলিস হলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। মায়ের খুব বেশি জ্বর হলে বাচ্চা অনেক সময় এত বেশি তাপ সহ্য করতে পারে না এবং গর্ভপাত ঘটে। কখনো কখনো মায়ের হরমোনজনিত রোগ, যেমন- হাইপোথাইরয়ডিজম (শরীরে থাইরয়েড হরমোনের আধিক্য), হাইপোথাইরয়ডিজম (শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ¯^íZv), ডায়াবেটিস থাইরয়েড হরমোনের ¯^íZv), ডায়াবেটিস মেলাইটিস ইত্যাদির কারণে গর্ভপাত হয়ে থাকে।

গর্ভবস্থায় মায়ের পেটে খুব জোরে আঘাত করলে বা মা দূর্ঘটনাক্রমে মাটিতে পড়ে গেলে গর্ভপাত ঘটতে পারে। তবে এটা কখনো পুরোপুরি প্রমাণিত নয়।

উপরোক্ত কারণগুলো ছাড়াও গর্ভপাতের শতকরা ২৫ ভাগ কারণ এখনো জানা যায় নি।

 

গর্ভপাতের উপসর্গ

গর্ভপাতের উপসর্গ প্রকারভেদে বিভিন্ন হয়ে থাকে। নিম্নোক্ত উপসর্গ অধিকাংশ ক্ষেক্রে দেখা যায়:

·        মাসিক বন্ধ থাকা: গর্ভপাতের পর দীর্ঘদিন মাসিক বন্ধ থাকতে  পারে।

·        যোনিপথে রক্ত প্রবাহিত হওয়া: রক্তপ্রবাহের মাত্রা বিভিন্ন ধরনের গর্ভপাতে বিভিন্ন রকম হতে পারে। বর্ণিত পাঁচ ধরনের ¯^Ztù~Z গর্ভপাতের প্রথমটির ক্ষেত্রে সাধারণত কম রক্ত প্রবাহিত হয়। অবশ্যম্ভাবী গর্ভপাতের ক্ষেত্রে মাঝামিাঝি এবং অসম্পূর্ণ গর্ভপাতের ক্ষেত্রে বেশি রক্ত প্রবাহিত হয়। সম্পূর্ণ গর্ভপাতের ক্ষেত্রে যোনিপথে রক্ত ও মাছের পিন্ডির চাকার মত পদার্থ বের হয়।

·        তলপেটে ব্যাথা: ব্যাথার তীব্রতা বিভিন্ন ধরনের গর্ভপাতের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কখনো কখনো রোগী কোমর-ব্যাথা অনুভব করে।

·        জ্বর: সংক্রমণশীল গর্ভপাতে সাধারণত রোগীর জ্বর থাকে।

 

উপরোক্ত উপসর্গের সাথে নিম্নাক্ত লক্ষণ দেখা দিতে পারে:

o       যদি অতিরিক্ত ক্ষরণ হয় তবে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়

o       সংক্রমণশীল গর্ভপাতের ক্ষেত্রে নাড়ির গতি প্রতি মিনিটে ১০০-১২০ বা তার উপরেও উঠতে পারে।ন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে এই গতি খুব দুর্বল হয়ে যায় এবং অনেক সময় অনুভব করা যায় না।

o       জরায়ুর আকার কখনো কখানোর বড় থাকে (যেমন- অসম্পূর্ণ গর্ভপাতে), আবার কখনো ¯^vfvweK থাকে (যেমন- সম্পূর্ণ গর্ভপাতে)

o        à¦¯à§‹à¦¨à¦¿à¦ªà¦¥à§‡ রক্ত বা দুর্গন্ধযুক্ত রস নিঃসৃত হয়।

o   জরায়ুর মুখ (সারভিক্স) কখনো খোলা থাকে (যেমন- অসম্পূর্ণ গর্ভপাতে), আবার কনো বন্ধ থাকে (যেমন- সম্পূর্ণ গর্ভপাতে)।

 

রোগ নির্ণয়

উপসর্গ ও লক্ষণ থেকে কোন প্রকারের গর্ভপাত ঘটেছে সে-সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পাওয়া যায়। তবে রোগীর সঠিক চিকিৎসা ও রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য নিচে উল্লেখিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়:

রুটিন বা নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা: রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা এবং  রক্তের গ্রুপ নির্ণয় হয় হয়, কারণ অনেক সময় রক্তশূন্যতার কারণে রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়ার দরকার হয়। গর্ভধারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রস্রাব পরীক্ষা করা হয়।

বিশেষ পরীক্ষা আল্ট্রাসোনোগ্রাম -এর মাধ্যমে গর্ভপাতের প্রকারভেদ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।

 

চিকিৎসা

ডাইলেটেশন এ্যান্ড কিউরেটজ (ডিএন্ডসি) নামের একটি  পদ্ধতি গর্ভ পরিষ্কার করার মাধ্যমে গর্ভপাতজনিত জটিলতার চিকিৎসা করা যায়।

তবে সব ধরনের গর্ভপাতের ক্ষেত্রে ডিএন্ডসি করা হয় না, যেমন- সাঙ্কেতিক বা সংকেতদানকারী সম্ভাব্য গর্ভপাতের ক্ষেত্রে কখনোই ডিএন্ডসি করা যাবে না। রোগীর উপসর্গ ও লক্ষণ অনুযায়ী ঔষধ দেওয়া হয় তার মধ্যে রয়েছে:

§        প্যারাসিটামল (যদি জ্বর থাকে)

§        অ্যান্টিবায়োটিকস (যতি সংক্রমণ থাকে)

§        সিডাকসিন

§        অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে রোগী যদি অজ্ঞান বা অতি কাতর অবস্থায় থাকে তবে শিরায় ইনজেকশন ও রক্ত দেওয়া হয়।

উপদেশ ও করণীয়

§        গর্ভপাতের উপসর্গ ও লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্র যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে আসা

§        সম্পূর্ণ বিশ্রাম থাকা

§        সহবাস না করা

§        প্রচুর পরিমাণে শাকসব্জি, পানি, ফলমূল ও অন্যান্য পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা

§        যাদের একবার গর্ভপাতের ইতিহাস থাকে পরবর্তী কালে তাদের গর্ভপাতের সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই তাদেরকে গর্ভধারণের সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে এবং গর্ভকালীন নিয়ম-কানুন পুরোপুরি মেনে চলতে হবে।

 

গর্ভপাতের বিপদসমূহ

পৃথিবীর সকল দেশেই মাতৃমৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ গর্ভপাত। গর্ভপাতে মৃত্যু হয়ে থাকে সাধারণত অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং সংক্রমণের জন্য। কখনো কখনো জরায়ু ফেটে যেতে পারে বা জরায়ুর মুখ (সারভিক্স) ছিঁড়ে যেতে পারে।

গর্ভপাতের ফলে মায়ের মৃত্যু না হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মায়ের শরীর এত খারাপ হয়ে যায় যে, মা মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে গিয়ে পৌঁছে।

13-08-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

গর্ভাবস্থায় টিকা

 

গর্ভাবস্থায মা ও পেটের শিশুর সুরক্ষা অতি গুরুত্বপূর্ণ । গর্ভাবস্থায় অনেক ধরনের ইনফেকশন হতে পারে, যা মা ও শিশু উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। তাই এ অবস্থায় বিভিন্ন রোগের টিকা নিলে রোগ প্রতিরোধ ও রোগের বিস্তার রোধ করা সম্ভব। গর্ভাবস্থায় চিকেনপক্স, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, মামস্‌, রুবেলা, নিউমোনিয়া হেপাটাইটিস, হুপিংকাশ ইত্যাদির টিকা নেয়া যায়। প্রকৃতপক্ষে প্রতিটি মায়ের গর্ভাবস্থার পূর্বেই সব টিকা নিয়ে রাখা উচিৎ।

 

গর্ভাবস্থায় যে সব রোগ হবার ঝুঁকি বেশী : যে সব রোগ হলে মা ও শিশু দুজনেরই জীবন ঝুকিপূর্ণ হয় সেগুলো হল :

ক. রুবেলা/জার্মান মিসেলস      

এ রোগ গর্ভের শিশুর ব্রেইন, হার্ট, চোখ ও কানে জন্মগত ক্রটি   à¦¦à§‡à¦–া দেয় এবং এই রোগে গর্ভপাত বা মৃতবাচ্চা হতে পারে ।

খ. চিকেন পক্স     

বাচ্চার ব্রেইন, চোখ, চামড়া বা হাত/পায়েজন্মগত ক্রটি হতে পারে।

গ. মিসেলস/হাম     

গর্ভপাত, অল্পদিনের ছোট বাচ্চা অথবা মরা বাচ্চা হবার ঝুকি ।

ঘ. মামপস্‌     

গর্ভাপাতের ঝুকি বেশী ।

ঙ. হেপাটাইটিস -বি     

একিউট হেপাটাইটিস-বি ইনফেকশন হয়ে বাচ্চা ও মা  উভয়ে হেপাটাইটিস-বি এর ক্যারিয়ার বা ক্রনিক হেপাটাইটিস-বি হবার ঝুকি  আছে।

গর্ভধারনের পূর্ব প্রস্তুতি টিকা :

আপনি যদি মানসিকভাবে গর্ভধারনে ইচ্ছুক হন-

·        নিয়মিত ডাক্তারকে দিয়ে ¯^v¯’¨ পরীক্ষা করাবেন।

·        চিকেনপক্স, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, মামস্‌, রুবেলা, ডিপথেরিয়া, টিটেনাস/ ধনুষ্টংকার, হুপিংকাশ ইত্যাদির পূর্ণ টিকা দিতে হবে ।

·        যদি কোন টিকার সম্পূর্ণ ডোজ না নেয়া থকে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী  à¦¡à§‹à¦œ ঠিক করে নিন।

·        পরিবারের অন্যান্যদেরও টিকা সম্পূর্ণ করুন এতে রোগের প্রকোপ আরও কমে যাবে।

·        যে সব মহিলারা  ডায়বেটিস, হৃদরোগ, কিডনী বা ফুসফুসের রোগে ভূগছেন বা যারা ধুমপায়ী তারা অবশ্যই নিউমোকক্কাসের ভ্যক্সিন নিবেন।

·        লাইভ ভ্যাকিসন যেমন :  হাম -এর, মাম্‌স, রুবলো (MMR)  à¦…থবা চিকের পক্স  এর ভ্যক্সিন গ্রহণের  পর গর্ভধারনের কমপক্ষে  ১ মাস  অপেক্ষা  করুন।

 

গর্ভাবস্থায় টিকা :

সাধারণত গর্ভাবস্থায় কোন নিয়মিত টিকা বা বুস্টার টিকা দেয়া হয় না। কারন

-         যে কোন টিকাতে অল্প বা মাঝারি জ্বর হয়। আর জ্বর হলে বাচ্চার জন্মগত ক্রটি হতে পারে। তাই গর্ভবস্থায় সাধারণত টিকা দেয়া হয়না। তবে যদি মা ও শিশুর কোন নির্দিষ্ট কোন বোগ হবার অতিরিক্ত ঝুকি থাকে সে ক্ষেত্রে উপকতারীতা ও অপকারীতা হিসেব করে টিকা দেয়া হয়।

-         ইনফ্লুয়েঞ্জা গর্ভাবস্থায় বাচ্চা ও মাযের অনেক ক্ষতি করে। আর ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাক্সিনের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই । তাই গর্ভাবস্থার পূর্বে, গর্ভাবস্থায় বা পরে যে কোন সময়ই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাক্সিন নেয়া যায় ।

তবে গর্ভাবস্থায় কিছু নিয়ম কানুন  মেনে চললে †hgbনিয়মিত হাত ধোয়া, অতিরিক্ত এদিক সেদিক ঘোরাফেরা না করা, অসুস্থ রোগীর সংস্পর্শে না থাকা ইত্যাদি পালন করলে অনেক রোগের হাত থেকে  সু-রক্ষা পাওয়া যায়।

 

গর্ভধারনের পরে :

জন্মে পর পর ১ - ১১/২ মাস  শিশু  মায়ের এন্টিবডি থেকেই অনেক অনেক রোগ জীবানুর হাত থেকে রক্ষা পায় (হুপিংকাশ ছাড়া)। তাই যখন এই এন্টিবডি শেষ হয়ে যায় তখন শিশু অনেক ইনফেকশনের ঝুকির পড়ে যায়। যদিও বুকের দুধি অনেক উপকারীতা তবুও বুকের দুধ দিয়ে সব রোগের প্রতিরোধ (†hgb হুপিংকাশ, ডিপথেরিয়া) সম্ভব হয় না। তাই শিশু জন্মের পর

-         হাসপাতালে থাকাকালীন  হেপাটাইটিস-বি এর টিকা দিন, বিসিজি টিকা দিন ।

-         বাচ্চার বয়স ১১/২ মাস হলে ৭টি রোগের টিকা (বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম অনুযায়ী) দেয়া শুরু করুন।

-         গর্ভাবস্থায়র পূর্বে যদি পরপূর্ণভাবে সব রোগের টিকা দেয়া না থাকে, সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বাকি সব টিকা নিয়ে সম্পূর্ণ করুন। এতে আপনি নিজে সুরক্ষিত থাকার পাশাপাশি নবজাতক বা  পরবর্তী গর্ভকালীন শিশুর সুরক্ষা হবে।

-         বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মায়ের কোন ভ্যাক্সিনেই কোন সমস্যা নেই বরং শিশুর জন্য উপকারী ।

-         বাচ্চা অত্যন্ত অসুস্থ না থাকলে সময়মত টিকা দিবেন। অত্যন্ত অসুস্থতার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শে টিকা বন্ধ রাখতে পারেন।

 

যা মনে রাখতে হবে :

·        গর্ভাবস্থায় অনেক ধরনের ইনফেকশন হতে পারে যা মা ও শিশু উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।

·        গর্ভ ধারনের পুর্বেই চিকেনপক্স, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, মামস্‌, রুবেলা, ডিপথেরিয়া, টিটেনাস/ ধনুষ্টংকার, হুপিংকাশ ইত্যাদির পূর্ণ টিকা দিতে হবে।

·        গর্ভাবস্থায় কিছু নিয়ম কানুন  মেনে চললে †hgbনিয়মিত হাত ধোয়া, অতিরিক্ত এদিক সেদিক ঘোরাফেরা না করা, অসুস্থ রোগীর সংস্পর্শে না থাকা ইত্যাদি পালন করলে অনেক রোগের হাত থেকে  সু-রক্ষা পাওয়া যায়।

 

 

 

29-06-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

রেচনতন্ত্রের জন্মগত ক্রটি

    

কিডনি, ইউরেটর, মুত্রথলি ও মুত্রনালী নিয়ে রেচনতন্ত্র  গঠিত। অনেক সময় এই রেচনতন্ত্রে বিভিন্ন ধরনের জন্মগত ত্রুটি দেখা যায়। যেমন- হাইপোসপেডিয়াস, রেনাল পেলভিসের নালীপথ বন্ধ হওয়া বা  কিডনীর অনুপস্থিতি, কিডনীর গঠনগত বিকৃতি (হরস সু কিডনী) ইত্যাদি। মানবে দেহে কোমরের হাড়ের দুই পাশে দুটি কিডনী থাকে যা রক্ত থেকে অপ্রয়োযনীয় পদার্থ ছাকনীর মাধ্যমে পৃথক করে। পরে এই বর্জ পদার্থ দুটি নালী পথে (দুই কিডনী থেকে দুটি) মূত্রথলিতে এসে জমা হয়। নালী দুটিকে বলে ইউরেটর। মুত্রথলিতে প্রস্রাব কিছুক্ষনের জন্য জমা থাকে এবং মুত্রনালী পথে তা বাইরে বেরিয়ে আসে। রেচনতন্ত্রে বিভিন্ন ধরনের জন্মগত ক্রটির মধ্যে খুবই কমন কিছু হল:

১। হাইপোসপেডিয়াস: এটি মূলত মুত্রনালী বিশেষভাবে পুংলিঙ্গের ১টি জন্মগত সমস্যা যার

৪ টি বিশেষ বৈশিষ্ট্য:

     ক) এ ক্ষেত্রে মুত্রনালী লিঙ্গের মাথায় উন্মুক্ত না হয়ে নিচে কোন স্থানে উনমুক্ত হয়, এমনকি                                           à¦…ন্ডকোষের কোন স্থানেও উন্মুক্ত হতে পারে।

     খ) মুত্রনালীর উন্মুক্ত মুখটি A¯^vfvweK ধরনের চিকন বা সরু।

     গ) লিঙ্গের সম্মুখের চামড়াটি নিচে খালি থেকে পুরোটাই  উপরিভাগে জমে থাকে।

     ঘ) লিঙ্গের পুরো অংশ যে কোন একদিকে বাকা হয়ে যেতে পারে।

প্রায় প্রতি ৩০০ জনে ১ জনের এই সমস্যা পাওয়া যায়।

কারণ:

হাইপোসপেডিয়ামের প্রকৃত কারণ অজানা । তবে জেনেটিক কারণ থাকার সম্ভাবনা বেশি।  

চিকিৎসা:

অপারেশন করে চিকিৎসা করা হয়। বাচ্চার বয়স ৬ মাস থেকে ১৮ মাসের মধ্যেই অপারেশন করা উচিৎ। এই অপারেশনে-

-          মুত্রনালীর মুখকে লিঙ্গের মাথায় প্রতিস্থাপন করা হয়।

-          লিঙ্গের সম্মুখভাগের চামড়াকে কেটে গোল আকৃতি দেয়া হয়।

-          লিঙ্গকে সোজা করা হয় (যদি সম্ভবপর হয়)।

মুত্রনালীর মুখকে লিঙ্গ মাথায় প্রতিস্থাপন করতে অনেক সময় লিঙ্গ সম্মুখভাগের চামড়া প্রতিস্থাপন করা হয়। তাই এই ধরনের জন্মগত ত্রুটির বাচ্চার কখনই অপারশেনের পূর্বে মুসলমানি করা উচিত নয়।

২। অবসট্রাকটিভ ডিজিজ অব রেনাল পেলভিস:

রেনাল পেলভিস হল ইউরেটার এর একটি অংশ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জন্মগত ত্রুটিতে এটি বন্ধ থাকে। ফলে প্রস্রাব  কিডনী থেকে বের হয়ে মুত্রথলি পর্যন্ত পৌছুতে পারে না। কখনও ১টি বা ২টি বন্ধ থাকতে পারে। এতে প্রস্রাব উল্টোদিকে ফিরে যায়। ফলে দীর্ঘমেয়াদী ইনফেকশন হয়, এমনকি ধীরে ধীরে কিডনী অকোজো হয়ে যায়। অনেক দেশে প্রায় ৩৫০ জন বাচ্চার ১ জনের এ ধরনের সমস্যা পাওয়া যায়। এ রোগের লক্ষণ হল- ঘন ঘন  প্রস্রাবের নালীর ইনফেকশন এবং শিশুর বৃদ্ধি সঠিকভাবে না হওয়া।

কারণ:

নির্দিষ্ট কারণ জানা নেই তবে এ ক্ষেত্রেও জিনগত কারণ দায়ী হতে পারে। বন্ধ হবার মধ্যে সাধারণত দেখা যায়-

-          ইউরেটর A¯^vfvweK ভাবে প্যাচ খেয়ে আছে। বা

-          রক্তনালী ইউরেটরের উপর দিয়ে যাবার সময় চাপে বন্ধ হয়ে আছে,

-          ইউরেটরের আসে পাশের মাংসপেশীর গঠনগত সমস্যার  কারণে ইউরেটরের পথ বন্ধ  হতে পারে।

রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা:

 à¦¬à¦¾à¦šà§à¦šà¦¾à¦° এ ধরনের জন্মগত ক্রটি অনেক সময় গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রামেই ধরা পড়ে। এ ক্ষেত্রে বাচ্চা জন্মের পর পরই বাচ্চার আলট্রা‌সনোগ্রাম করে নিশ্চিত করতে হবে। কিডনীকে ভাল রাখতে হলে যত দ্রুত সম্ভব অপারেশন করতে হবে এবং বাহ্যিক যে কারণে নালী বন্ধ, সেগুলি অপারেশন করে ঠিক করতে হবে।

৩। রেনাল এ জেনেসিস

অনেক সময় জন্মগতভাবেই ১টি বা দুটি কিডনী তৈরী নাও হতে পারে। একে রেনাল এ জেনেসিস বলে। আর গঠনগত সমস্যা থাকলে তাকে রেনাল ডিসজেনেসিস বলে। গড়ে প্রায় ২০০০ জনের ১ জনের এ ধরনের সমস্যা হয়। যদি ১টি কিডনী সঠিকভাবে হয়, অপরটি  না হয় বা সমস্যাযুক্ত হয়, তাহলে শিশু ¯^vfvweKfv‡e বেচে থাকতে পারে। কিন্তু ২টি অনুপস্থিত থাকলে- শিশু মৃত হয়ে জন্ম নেয়, নতুবা জন্মের কয়েক ঘন্টার মধ্যে মারা যায়। দুটি কিডনী অনুপস্থিতির ক্ষেত্রে অন্যান্য যে সব সমস্যা থাকতে পারে তা হল-

-          মূত্রথলি না হওয়া।

-          ফুসফুস সুগঠিত না হওয়া।

-          জননাঙ্গের ক্রটি।

-          মলদ্বার, মলাশয় তৈরী না হওয়া।

-          খাদ্যনালীর মধ্যে ফাঁক।

-          পায়ের গঠনগত সমস্যা ইত্যাদি।

কারণ:

কিডনী তৈরী হয় ৩টি পর্বে। প্রথমে প্রোনেফরোস পরে মেসোনেফ্রাস ১ম ও ৩ মাসের মধ্যে মেসোনেফ্রোস থেকে  মেটানেফ্রোস তৈরী হয়। মূলত মেটানেফ্রোস তৈরীর সময়ই সমস্যার কারণে রেনাল এজেনেসিস হয়। এ কারণ হিসেবে জিনগত সমস্যা, পারিপার্শ্বিক সমস্যা, মায়ের সমস্যা যেমন অনিয়ন্ত্রিত ডযায়াবেটিস ইত্যাদি হতে পারে।

চিকিৎসা:

কোন চিকিৎসা নেই। ২টি কিডনী অনুপস্থিত থাকলে বাচ্চা বাচানো সম্ভব না। অন্যদিকে ঠিকমত গঠিত হলে বাচ্চা ১টি  কিডনী দিয়েই ভালভাবে বাঁচতে পারে।

যা মনে রাখতে হবে:

1.       রেচনতন্ত্রে বিভিন্ন ধরনের জন্মগত ত্রুটি দেখা যায়। যেমন- হাইপোসপেডিয়াম, রেনাল পেলভিসের নালীপথ বন্ধ হওয়া বা  কিডনীর অনুপস্থিতি, কিডনীর গঠনগত বিকৃতি (হরস সু কিডনী) ইত্যাদি।

2.      হাইপোসপেডিয়াসে মুত্রনালী লিঙ্গের মাথায় উন্মুক্ত না হয়ে নিচে কোন স্থানে উনমুক্ত হয়।

3.      অবসট্রাকটিভ ডিজিজ অফ রেনাল পেলভিস হলে ইউরেটার এর একটি অংশ জন্মগত ত্রুটিতে বন্ধ থাকে, ফলে প্রস্রাব  কিডনী থেকে বের হয়ে মুত্রথলি পর্যন্ত পৌছুতে পারে না।

4.      জন্মগতভাবেই ১টি বা দুটি কিডনী তৈরী না হলে তাকে রেনাল এজেনেসিস বলে। আর গঠনগত সমস্যা থাকলে তাকে রেনাল ডিসজেনেসিস বলে।

 

29-06-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

ছোট বাচ্চাদের পিঠের ব্যথা

উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েদের পিঠে ব্যথা প্রায়ই হয়। সঠিক অঙ্গভঙ্গির অভাব। সঠিক নিয়মে ব্যায়াম না করা, অতিরিক্ত ওজন বহন ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে পিঠে ব্যথা হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যদিও তেমন কোন চিকিৎসার প্রয়োজন নেই, তথাপি যদি অনেকদিন ধরে একই স্থানে ব্যথা হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কেননা দীর্ঘদিন ব্যথা থাকলে বড় হয়ে পিঠে স্থায়ী ত্রুটি তৈরী হতে পারে।

 

পিঠের ব্যথা যে কারণে µgvš^‡q বাড়ে:

বিভিন্ন কারণে বা আঘাতে মানুষ পিঠে ব্যথা পেতে পারে। ব্যথাকে গুরুত্ব না দিলে বা সামান্য ব্যথাতেও দেখা যায় সেই অংশের মাংসপেশীতে টান পড়ে। ফলে অপর পার্শ্বের  মাংসপেশীর উপর অত্যধিক চাপ পড়ে এবং ধীরে ধীরে দূর্বল হয়ে পড়ে। ফলে ব্যক্তির দাড়ানো, বসা বা চলাচলে পরিবর্তন আসে। পরিবর্তিতে অঙ্গভঙ্গির কারণে পিঠের ব্যথা আরও বৃদ্ধি  পায়। ব্যথার কারণে ব্যায়াম ও স্বাভাবিক কাজকর্ম কমে যায় বিধায় আরও নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়।

কারণসমূহ:

বাচ্চাদের পিঠে ব্যথার অন্যতম কারণগুলি হল-

-    ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের বেশি হয়।

-    ১২ বছর বা তদুর্ধদের ক্ষেত্রে বেশি হয়।

-    অতিরিক্ত মোটা যারা তাদের বেশি হয়।

-    যারা সঠিক নিয়মে দাড়ায় না, বাসে না, হাটে না।

-    যারা হাতে বা কাঁধে অতিরিক্ত ওজনের  বই এর ব্যাগ বহন করে।

-    যে সব বাচ্চারা অলস জীবন-যাপন করে, অনেকক্ষণ টিভি বা কম্পিউটারের  সামনে বসে থাকে।

-    যারা প্রচন্ড পরিশ্রমের খেলাধূলা যেমন- ফটুবল, ক্রিকেট, জিমনাস্টিকস্‌, ওয়েটলিফটিং ইত্যাদির সাথে জড়িত।

-    আঘাত বা দূর্ঘটনায় মাংসপেশিতে টান পরলে।

-    যে সব কাজে বা খেলায় প্রচন্ড পরিশ্রম হয়।

এ ছাড়াও বিভিন্ন রোগেও বাচ্চার পিঠে ব্যথা হতে পারে। যেমন-

Ø            হাড়া বা জোড়ায় আঘাত- এর ফলে হাড় ভেঙ্গে গেলে, মচকে গেলে বা কশেরুকা মর্ধবর্তী ডিস্ক সরে গেলে।

Ø            ফাইব্রোমায়ালজিয়া- যদিও বড়দের বেশি হয়, তবু বয়সন্ধিকালে হতে পারে। এ রোগে পিঠে ও ঘাড়ের মাংসপেশী টান খেয়ে থাকে। অবশ ও দূর্বল হয়ে পড়ে এবং ব্যথা হয়।

Ø                  সায়াটিকা।

Ø            সিওয়্যারম্যান ডিজিজ- মেরুদন্ডের হাড়ের বৃদ্ধিজনিত রোগ এতে মেরুদন্ড বাঁকা বা কুজো হয়ে যেতে পারে ও ব্যথা হয়।

Ø            ইডিওপ্যাথিক স্কোলিওসিস- অজানা কারণে মেরুদন্ড একপার্শ্বে বাকা হয়,ব্যথাও হতে পারে।

Ø            স্পন্ডাইলোসিস- মেরুদন্ডের জন্মগত সমস্যা।  à¦–ুব বাকা হলে ব্যথা হয়।

Ø            স্পন্ডাইলোলিসথেসিস-

Ø                                          টিউমার ও ইনফেকশন- যদিও  খুব বিরল।

প্রতিরোধের উপায়:

পিঠের ব্যথা কমানো ও প্রতিরোধের জন্য-

-          বাচ্চারা যাতে পড়ে গিয়ে ব্যথা না পায় সেজন্য সতর্কতা

-          বাচ্চার বই বেশি হলে পিঠে ঝোলানো ব্যাগ ব্যবহার করা এবং সমানভাবে ২ কাঁধে ওজন নেবার ব্যবস্থা করা।

-          নিয়মিত হাটা, চলা ও ব্যায়াম। কেননা দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে পিঠের মাংসপেশীতে অবসাদ চলে আসে।

-          টিভি ও কস্পিউটারে কম সময় দেয়া।

-          সঠিক নিয়মে চেয়ারে বসা শেখানো। বাচ্চা যাতে কুজো হয়ে না বসে বরং কোমর সোজা করে বসে।

-          বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী পড়ার চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা করা।

-          ব্যায়ামের  আগে ওয়ার্ম আপ ও পরে কুলডাউন মেনে ব্যায়াম করা।

-          পেট ও পিঠের মাংসপেশির  দৃঢ়তা বৃদ্ধির ব্যায়াম করা।

-          সঠিক নিয়মে ওজন তোলা শেখানো।

যা অবশ্যই মনে রাখা জরুরী:

  1. ছেলে মেয়েদের সঠিক অঙ্গভঙ্গির অভাব, সঠিক নিয়মে ব্যায়াম না করা, অতিরিক্ত ওজন বহন ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে পিঠে ব্যথা হতে পারে।
  2. দীর্ঘদিন ব্যথা থাকলে বড় হয়ে পিঠে ত্রুটি তৈরী হতে পারে। তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  3. বাচ্চাদেরকে সঠিক নিয়ম শেখানো, সচেতন করা ও সুন্দর অভ্যাস গড়ে তোলা মা বাবার দায়িত্ব

 

29-06-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

অটিজম

 

অটিজম হল ব্রেইনের কিছু ডেভেলপমেন্টাল ক্রটি। অটিজম কিছু সমষ্টিগত সমস্যার সম্মিলিত প্রকাশ যাকে অটিজম স্পেকট্রাম অব ডিজিজ বলে। এই রোগে শিশু ঠিকমত পারিপার্শ্বিকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে না, সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করতে অপারগ হয়, অর্ন্তমুখী, পুণঃ পুণঃ অর্থহীন কাজ করে। যারা অটিজমে আক্রান্ত তাদের বলা হয় অটিস্টিক।

অটিজমের হার:

-          প্রতি ১০ হাজার শিশুতে প্রায় ১২ জন এ জাতীয় সমস্যায় ভোগে।

-          মেয়েদের চেয়ে ফেলে শিশুদের তিন গুণ বেশি এ সমস্যা দেখা দেয়।

কোন বয়সে অটিজম ধরা পড়ে?

-          সাধারণত তিন বছর বয়সের পর।

-          তবে মা-বাবারা  সচেতন থাকলে ও বাচ্চার আচরণের দিকে ভালোভাবে লক্ষ্য রাখলে ১২ থেকে ১৮ মাসের মাসের মধ্যেই সমস্যাটি  আঁচ করতে পারেন।

 

অটিজমের সাধারণ লক্ষণ:

অটিজম রয়েছে এমন শিশুর চিকিৎসার প্রথম ধাপ হচ্ছে দ্রুত তার অটিজম শনাক্তকরণ। এ জন্য তিন বছর বয়সের শিশুর মধ্যে যে লক্ষণগুলো দেখলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন তা হচ্ছে:

১। শিশুর ভাষা শিখতে সমস্যা, যেমনএক বছর বয়সের মধ্যে মুখে কোনো আওয়াজ করতে না পারা বা দুই বছর বয়সের মধ্যে এক-দুই শব্দ দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করতে না পারা।

২। শিশু যদি চোখে চোখ না রাখে
৩। নাম ধরে ডাকলে যদি সাড়া না দেয়
৪। অমিশুকে হয় এবং আদর করা পছন্দ করে না
৫। হঠাৎ করে খেপে ওঠে
৬। সামাজিক সম্পর্ক তৈরি ব্যাহত হচ্ছে
৭। কোনো ধরনের আনন্দদায়ক বস্তু বা বিষয় সে অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেয় না
৮। যদি একই শব্দ বা বাক্য বার বার উচ্চারণ করে বা তাকে বলা কোনো কথার পুনরাবৃত্তি করে
৯। একই আচরণ বার বার করতে থাকে
১০। আওয়াজ পছন্দ করে না
১১। খুব বেশি রুটিন মেনে চলতে পছন্দ করে ১২। আশপাশের কোনো পরিবর্তন সহ্য করতে পারে না

এসব লক্ষণ সাধারণত তিন বছর বয়সের মধ্যে দেখা যায়। তবে ক্ষেত্রবিশেষে আরেকটু পরেও দেখা দিতে পারে।
অধিক মাত্রার অটিজমের লক্ষণ:

-          কথা না বলা বা ঠিকমতো না বলা।

-          কানে না শোনা।

অটিজম কেন হয়?

যদিও গঠন ও বৃদ্ধিতে শারীরিকভাবে তাদের কোনো ত্রুটি থাকে না, কিন্তু আচরণে কিছু ভিন্নতা থাকে। যেমন- সে ক্রমাগত হাততালি দেয়, একই দিকে হাঁটতে থাকে বা কোনো বস্তুকে ঘিরে ঘুরতে থাকে।

সাধারণত মস্তিস্কে স্বাভাবিক বৃদ্ধির বা পরিপক্কতার হেরফেরের কারণেই এটি হয়। কিন্তু কেন এই হেরফের, তা অজানাই রয়ে গেছে। তবে গবেষকরা মনে করেন নিচের কারণগুলো অর্টিজমের জন্য প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।

-          জিনগত সমস্যা।

-           à¦°à§‹à¦—জীবাণুর সংক্রামণ।

-          শরীরের বিপাক প্রক্রিয়ায় গোলমাল।

-          পরিবেশগত সমস্যা।

অটিস্টিক শিশু ও সামাজিক মেলামেশা:

শিশুরা তাদের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির সাঙ্গে সঙ্গে সামাজিক জীব হয়ে  ওঠে এবং তার লক্ষণ প্রকাশ পায় জীবনের শুরুর দিকেই। সে হাসে, শব্দ করলে তাকায়, হাত দিয়ে জিনিসপত্র ধরতে চেষ্টা করে। কিন্তু অর্টিস্টিক শিশু সাধারণ বাচ্চাদের মতো নয়, এরা সামাজিককতাকে পাশ কাটিয়ে চলে । সে যে কাজটি ইচ্ছাকৃতভাবে করে তা নয়, আসলে তার ব্রেইন এ ক্ষেত্রে সঠিকভাবে কাজ করে না।

-          কেউ তাকে আদর করতে চাইলে সে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে বা বিরক্ত হয়।

-          মা-বাবা স্বাভাবিক বকা দিলে বা আদর করলেও তা সে বুঝতে পারে না।

-          হঠাৎ রেগে গেলে রাগকে সামলে উঠতে পারে না। রেগে গিয়ে জিনিসপত্র ভাঙে, অন্যকে আঘাত করে, মারধর করে, চুল টেনে ধরে, কামড় দেয়।

অটিস্টিক শিশুরা যেভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে:

অটিস্টিক শিশুদের যোগাযোগে ভিন্নতা থাকে। যেহেতু প্রচলিত সামাজিকতার বিষয়টি অনুধাবন করতে পারে  না, তাই তারা নিজস্ব পদ্ধতিতে অনুভুতিগুলো প্রকাশ করে। অনেক অর্টিস্টিক শিশু সারা জীবনেও কথা বলে না। কিছু শিশু প্রথম দিকে মুখ দিয়ে শব্দ করে( উহ. আহ, বাহ,) কিন্তু হঠাৎ তা বন্ধ করে দেয়। কোনো কোনো বাচ্চা আবার  দেরীতে কথা বলে। কেউবা আগোছালো ও অথৃহীন কথা বলে॥ কোনো কোনো শিশু একই কথা বা শব্দ বারবার বলতে থাকে। আসলে সে তার অনুভূতি বোঝাতে চায়, কিন্তু পারে না। তাই দেখা যায় শিশুরা মাথা নেড়ে বোঝায় অথবা খিদে পেলে প্লেটের কাছে, খাবার টেবিলের কাছে বা চুলার কাছে অন্যকে টেনে নিযে যায়। পেটে হাত দিয়ে বসে থাকে। বাইরে যাওয়ার জন্য দরজার কাছে টেনে নিয়ে যায়, কোনো কিছুই চাওয়ার থাকলে চিৎকার করে, রেগে যায়, মন খারাপ করে।

একটি নিজস্ব রুটিন মাফিক জীবন তারা বেছে নেয়। যেমন- একটি নির্দিষ্ট সময় ঘুম থেকে উঠে, খায়, ছবি আকে ইত্যাদি। কিন্ত এই রুটিনের ব্যত্যয় ঘটলে তারা পারে না। রেগে গিয়ে জিনিসপত্র নষ্ট করে।

অটিজমের সঙ্গে আরো কিছু সমস্যা:

-          কেউ কেউ গায়ে স্পর্শের ব্যাপà¦

27-06-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

জরায়ুমুখ ক্যান্সার নিরূপb

 

সারা বিশ্বে মহিলাদের মৃত্যুর অনেক কারণের মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যান্সার দ্বিতীয় কারণ। জরায়ুমুখের ক্যান্সার বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে মহিলাদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ। বাংলাদেশের ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলাদের শতকরা ৩০ ভাগ জরায়ুমুখের ক্যান্সারের শিকার। প্রতি বছর বাংলাদেশের প্রায় ১২ হাজার মহিলা নতুনভাবে জরায়ুমুখে ক্যান্সার হচ্ছে যা অত্যান্ত ভয়ংকর ব্যাপার।

জরায়ু বা জরায়ুমুখ বলতে কী বুঝ?

গর্ভবস্থায় যেখানে সন্তান ধারণ করা হয় তাকে জরায়ু বলা হয় অধবা যেখান থেকে মহিলাদের ঋতুস্রাব হয় তাকে জরায়ু বলে। জরায়ুর মুখ হচ্ছে জরায়ুর নিচের অংশ এবং এটা জরায়ু থেকে সন্তান প্রসব হওয়ার একমাত্র পথ। জরায়ুর বিভিন্ন অংশের মধ্যে এই অংশটিতে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।

কাদের জরায়ুর ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বেশি?

·        অল্প বয়সে বিয়ে (বাল্যবিবাহ) : অল্প বয়সে বিয়ে জরায়ুর মুখে ক্যান্সার হওয়ার অন্যতম কারণ। বাংলাদেশ সরকারের আইন অনুযায়ী ১৮ বছর বয়সের নিচে মেয়েদের বিয়ে হওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু এই নিয়মটি বেশিরভাগ অভিভাবকরা মানছেন না। এসব মেয়ে আগেই যৌনমিলনে অভ্যস্ত হন এবং এর ফলে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন (HPV)  à¦à¦¬à¦‚ ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

·        যারা অল্প বয়সে যৌনসঙ্গম অভ্যস্ত হয়ে পড়ে।

·        যারা অনেক সন্তানের মা হয়েছেন।

·        যারা যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হন (STD)

·        যাদের একের অধিক যৌনসঙ্গী আছে।

·        যে সব মহিলা নিরাপদ যৌন ও প্রজনন ¯^v¯’¨ সম্পর্কে সচেতন নয়।

·        অর্থনৈতিকভাবে যারা অত্যন্ত দূর্বল

·        নিজের অথবা ¯^vgxi একাধিক বিয়ে হওয়ার কারণের জরায়ুমুখের ক্যান্সারের আশঙ্কা বেশি।

জরায়ুর (Cervis) ক্যান্সারের লক্ষণগুলো কী কী?

·        অতিরিক্ত সাদা স্রাব,

·        দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব,

·        সহবাসের পর রক্তপাত,

·        অতিরিক্ত বা অনিয়মিত রক্তপাত,

·        কোমরে/ তলপেটে. উরুতে ব্যথা,

·        মাসিক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পুণরায় রক্তপাত

·        ক্ষতস্থান- যা থেকে স্পর্শ লাগা মাত্রই রক্তক্ষরণ হতে থাকে।

প্রথম এই ক্যান্সার জরায়ুরমুখেই সীমাবদ্ধ থাকে এবং আস্তে আস্তে চতুর্দিকে তা ছড়িয়ে পড়ে যোনীপথ, প্রস্রাবের থলি, মলদ্বার পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে রোগীর বিভিন্ন কঠিনতম লক্ষণ দেখা দেয়।

 

জরায়ুমুখ ক্যান্সার চিকিৎসা কী?

শরীরের অন্যান্য ক্যান্সারের চেয়ে জরায়ুরমুখ ক্যান্সার অনেক বেশি নিরাময়যোগ্য। কখন জরায়ুমুখের ক্যান্সার ধরা পড়ে তখন এর অবস্থান এবং বিস্তৃতির ওপর নির্ভর করে চিকিৎসাও কঠিন থেকে কঠিনতম হয়ে যায়।

চিকিৎসায় ধাপগুলো †hgb

·        সার্জারি- (একে রেডিক্যাল সার্জারি বলে)

·         à¦°à§‡à¦¡à¦¿à¦“থেরাপি

·         à¦•à§‡à¦®à§‹à¦¥à§‡à¦°à¦¾à¦ªà¦¿

 

এই চিকিৎসাগুলো সব জায়গায় করা সম্ভব নয় এবং অতীব ব্যয়বহুল। চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যাপারে রোগীর অনেক জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং কখনই রোগ নিরাময় সম্পূর্ণরূপে নিশ্চয়তা দেয় না।

 

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের পূর্ব অবস্থা বলতে কী বোঝায়?

শরীরের অন্যান্য ক্যান্সারের চেয়ে জরায়ুমুখ ক্যান্সার অনেক বেশি নিরাময়যোগ্য যদি না সেটা অধিকতর প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে। সবচেয়ে বড় কথা হলো জরায়ুর ক্যান্সার এক দিন বা এক মাসে হঠাৎ করে ক্যান্সারে রূপ নেয় না, কারণ ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার আগে জরায়ুমুখে অনেক দিন ধরে একটি ক্যান্সারপূর্ব অবস্থা থাকে। জরায়ুমুখে আবরণীর  কোষগুলোতে বিস্তৃতি অনুযায়ী ক্যান্সারপূর্ব অবস্থার তিনটি নাম আছে।

CINI, CIN2, CIN3

এই পরিবর্তনগুলো HPV নামক এক ধরনের ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ফলে জরায়ুমুখের কোষগুলোতে পরিবর্তন দেখা যায়। এই ধাপগুলো থেকে সব সময়ই যে ক্যান্সার হবে এমন কোন কথা নেই, এগুলো অনেক সময় ভালো হয়ে যায়। ক্যান্সারপূর্ব অবস্থা থেকে ক্যান্সারে রূপান্তর হতে গড়পড়তা ১৫ বছরের অধিক সময় লেগে যায়। এই যে বিশাল একটা সময়ের ব্যবধান, এটা শরীরের অন্য কোনো ক্যান্সারের ক্ষেত্রে দেখা যায় না। তাহলে আমরা এই ক্যান্সারের পূর্ব অবস্থায যদি রোগটি শনাক্ত করতে এবং সামান্য খরচে চিকিৎসা নিতে পারে তাহলে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে জরায়ু ফেলে দেয়ার প্রয়োজন হয় না এবং চিকিৎসার পরও সন্তান ধারণ করা সম্ভব।

 

কী কী পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সারপূর্ব অবস্থা শনাক্ত করা সম্ভব?

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের পূর্ব অবস্থা শনাক্ত করার জন্য নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলো করা nq

§        VIA (ভায়া পরীক্ষা)

§        PAP Smear (†cc পরীক্ষা)

§        Colposcopy (K‡ív¯‹wc)

§        HPV Marker (cix¶v

PAP Smear -GB পদ্ধতিতে জরায়ুমুখের অথবা এর আশপাশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে শনাক্ত করা যায়।

VIA -Gi পুরো নাম Visual Inspection of Cervix With Acetic Acid এই পদ্ধতিতে জরায়ুমুখের যে অংশে ক্যান্সারপূর্ব অবস্থায় থাকে তা এসিটিক এসিড দেয়ার ফলে সাদা রঙ ধারণ করে, যা খালি চোখে দেখা যায়।

Colposcopy GB পদ্ধতিতে জরায়ুমুখের কোষগুলের পরিবর্তন একটা শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপির মাধ্যমে দেখা হয় অর্থাৎ VIA পরীক্ষায যদি ক্যান্সারপূর্ব অবস্থা পাওয়া যায় তা চূড়ান্ত করার জন্য Colposcopy করা হয়। আবার Colposcopy –Gi সরাসরি দর্শনে জরায়ুমুখ থেকে নমুনা সংগ্রহ (Biopsy) করে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে রোগ শনাক্ত করা হয়।

 

কোন কোন বয়সে এই পরীক্ষাগুলো করা উচিত?

যদিও জরায়ুমুখ ক্যান্সার যেকোনো বয়সে হতে পারে, তারপরও দুটো বয়সের প্রারম্ভিকে এই রোগ হওয়ার প্রকোপ বেশি।

১. ৩৫ বছর বয়সে

২. ৫০-৫৫ বছর বয়সে

সে জন্য ৩০ বছর থেকে ৪৫ বছর বয়সের সব মহিলার প্রতি তিন বছর পর পর VIA (ভায়া) করা উচিত, যাতে ক্যান্সারপূর্ব অবস্থা শনাক্ত করা যায় এবং চিকিৎসা দেয়া যায়।

 

ক্যান্সারপূর্ব অবস্থার চিকিৎসা কী?

আমরা আগেই বলেছি যে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের পূর্বাবস্থার তিনটি ধাপ আছে।

†hgb CINI, CIN2, CIN3

সাধারণত প্রথম ভায়া CIN 1 –Gi ক্ষেত্রে চিকিৎসার দরকার হয়না। শতকরা ৮০ জনের ক্ষেত্রে জরায়ুমুখ ¯^vfvweK অবস্থানে ফিরে যায়, কিন্তু কার পরও পরবর্তীকালে পর্যবেক্ষণের জন্য আসতে হবে।

CIN2, CIN3  à¦•à§à¦·à§‡à¦¤à§à¦°à§‡ চিকিৎসা এবং পরবর্তী পর্যবেক্ষণ (Follow up) দরকার হয়।

এ ক্ষেত্রে  চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতি নিম্নরুপ - কোল্ড কোয়াগুলেশন ক্রায়োথেরাপী

ঈলেক্ট্রো কটারী

ঈলেক্ট্রো সার্জিক্যাল এক্সিশন

লেসার এব্লেশন অফ সার্ভিক্স

 

জরায়ুমুখ ক্যান্সারমুক্ত রাখতে n‡j

·        প্রতি তিন বছর অন্তর জরায়ুরমুখ অবশ্যই পরীক্ষা(ভায়া) করাতে হবে।

·        ৩০ বছরের বেশি বয়স হলেই জরায়ুমুখ অবশ্যই পরীক্ষা করাতে হবে

27-06-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

ইউটেরাইন প্রোলাপস

 

 

ইউরেটাস বা জরায়ু হল স্ত্রী প্রচনন অংগ।  এটি দেখতে অনেকটা উল্টানো কেমিকেলস ফ্লাক্সের মত। তলপেটে পেলভিসের ভেতর অবস্থান করে। জরায়ু, মুত্রথলী এবং খাদ্যনালী (রেকটাম) একই সাথে অবস্থান করে এবং শক্ত মাংসপেশী নির্মিত পর্দা দ্বারা নিচদিকে আটকানো থাকে। এই  মাংসপেশীগুলোকে একত্রে পেলভিক ফ্লোর বলে। এটি সামনে পিউবিসের সাথে এবং পশ্চাতে কক্কিস নামক মেরুদন্ডের শেষের হাড়ের সাথে যুক্ত। এ ছাড়াও বিভিন্ন লিগামেন্ট ও পর্দা জরায়ুকে সঠিক অবস্থানে ধরে রাখে। কোন কারণে পেলভিক ফ্লোর বা ফিলামেন্ট ও পর্দা দূর্বল হলে বা নষ্ট হলে জরায়ু যোনীপথে নিচের দিকে নেমে আসে। তখন তাকে ইউটেরাইন প্রোলাপস বলে। এর আরও কিছু নাম আছে, যেমনঃ পেলভিক ফ্লোর হার্নিয়া, জুভেন্ডাল হার্নিয়া ইত্যাদি।

 

রোগের লক্ষণ সমূহঃ

1.      যোনী পথ ভারী ভারী মনে হয়

2.     যোনী পথে শক্ত কিছু বা চাকার মত বোধ হওয়া।

3.     যোনী পথে মাংসল কিছু  নেমে আসা।

4.     কোমরের নীচের দিকে, পেছনে সারাক্ষণ ব্যাথা হওয়া।

5.     প্রস্রাব করতে সমস্যা

6.     ঘন ঘন প্রস্রাবের ইনফেকশন

7.     যৌন মিলনে ব্যাথা

8.     যোনী পথে মাত্রাতিরিক্ত নিঃসরন।

 

প্রোলাপ্সের মাত্রাঃ

যোনীপথে কি পরিমাণ অংশ নেমে আসে তার উপর ভিত্তি করে মাত্রা নির্ণয় করা হয়। কখনও কখনও যোনী পথে জরায়ু ছাড়াও মুত্রথলী ও মলাশয়ের অংশ নেমে আসতে পারে। মোট ৩ ধরনের হতে পারে।

১ম ডিগ্রী (মৃদু পর্যায়) :

যোনীপথের নিচের দিকে জড়ায়ু মুখ নেমে আসা।

 

 

২য় ডিগ্রী (মধ্যম পর্যায়):

জরায়ু মুখ যোনীপথ দিয়ে বাইরে চলে আসা।

৩য় ডিগ্রী (মারাত্মক পর্যায়) :

যোনী পথে জুড়ে জরায়ু নেমে আসা।

 

কারণসমূহঃ

পেলভিক ফ্লোর এবং জরায়ু সংলগ্ন লিগামেন্ট, পর্দা নানা বিধ কারণে দূর্বল হতে পারে বা নষ্ট হতে পারে। যেমনঃ

-         গর্ভধারণঃ বিশেষত দুই বা ততোধিক বাচ্চা একই সাথে গর্ভধারণ করলে

-         যোনী পথে বাচ্চা প্রসবঃ বিশেষত বড় বাচ্চা অনেক ক্ষণ ধরে চাপ দিয়ে বাচ্চা প্রসব ইত্যাদি হলে।

-         স্থূলকায় দেহ

-         দীর্ঘমেয়াদি মারাত্মক কোষ্ঠকাঠিন্য

-         মেনোপোজের পর ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা খুব কমে গেলে

-         দীর্ঘমেয়াদি কাশি যেমনঃ ব্রঙ্কাইটিস, হাপানি

-         ফাইব্রয়েড ইউটেরাস, পেলভিক  টিউমার।

 

পেলভিক ফ্লোর দৃঢ় করার ব্যায়ামঃ

সঠিকভাবে পেলভিক ফ্লোরের ব্যায়াম করতে পারলে ১ম ডিগ্রী ও অধিকাংশ ক্ষেত্রে ২য় ডিগ্রী প্রোলাপ্স থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

ব্যায়ামের প্রকৃত নিয়ম গাইনি বিশেষজ্ঞ ও ফিজিওথেরাপীস্টের কাছ থেকে লিখে নিতে পারলে ভাল। যেমনঃ

-         যোনীপথের মাংশপেশী গুলিকে চাপ দিয়ে শক্ত করা ও ধীরে ধীরে ছেড়ে দেয়া।

-         প্রস্রাবের ধারা আটকে দেয়ার মাংশপেশীগুলিকে চাপ দিয়ে শক্ত করা ও ধীরে ধীরে ছেড়ে দেয়া। যেমনঃ প্রস্রাব করার সময় ভেতর থেকে চাপ দিয়ে মাঝপথে প্রস্রাব আটকে ফেলা, আবার ছেড়ে দেয়া (তবে এটি সবসময় করা ঠিক নয়)।

-         মলদ্বারের মাংশপেশীগুলিকেই একইভাবে চেপে বন্ধ করা ও ধীরে ধীরে ছেড়ে দেয়া।

-         ৩ অংশের মাংশপেশী একত্রে চাপ দিয়ে শক্ত ও ধীরে ধীরে ছেড়ে দেয়া।

-         ধীরে ধীরে শক্ত করা, ১০ সেকেন্ড ধরে রাখা, ধীরে ধীরে ছেড়ে দেয়া, ১০ সেকেন্ড বিশ্রাম -এভাবে ১০ বার।

-         হাঁচি, কাশি দেবার সময় নিচের মাংশ পেশী শক্ত করে নেয়া।

 

যোনীপথে অপারেশনঃ

মধ্যম পর্যায়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এবং মারাত্মক পর্যায়ে সবক্ষেত্রেই অপারেশন করতে হয়। ল্যাপারোস্কিপিক যন্ত্র ঢুকিয়ে জরায়ুকে ঠেলে সঠিক অবস্থানে নিয়ে যাওয়া। পরে লিগামেন্ট ও পর্দার সাথে সাথায়ী সুতা দিয়ে বেধে দেয়া হয়। পরবর্তীতে সেলাই এর স্থানে স্কার টিস্যু (যোজক কলা) তৈরী হয় ও তাকে শক্ত করে। কোন কোন ক্ষেত্রে এই অপারেশনে  সাফল্যের হার প্রায় ৯০%।

 

প্রতিরোধে করণীয়ঃ

1। গর্ভকালীন সময়ঃ পেলভিক ফ্লোর এর মাংসপেশী দৃঢ় করার ব্যায়াম নিয়মিত করতে হবে।

২। নরমাল  ডেলিভারীঃ

সঠিক সময়ে এপিসিওটমি দিয়ে বাচ্চা প্রস্রব করানো ও প্রস্রব পরবর্তি পেলভিক ফ্লোর দৃঢ় করার ব্যায়াম করা।

৩। মোনোপাজের পরঃ 

ব্যায়াম ও প্রয়োজনে ইস্ট্রোজেন হনমোন গ্রহণ।

৪। স্থূলকায় দেহঃ ওজন কমানো ও নিয়মিত ব্যায়াম।

৫। মারাত্মক কোষ্ঠকাঠিন্যঃ

নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান, শাক-সব্জি, ফল খাওয়া, আঁশযুক্ত খাদ্যগ্রহণ এবং মলত্যাগে পেটের মাংস পেশী শক্ত করে চাপ না দেয়া।

৬। অন্যান্যঃ ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস, হাপানি, ইত্যাদির চিকিৎসা করা।

 

যা মনে রাখার মতঃ

1.      জরায় সংলগ্ন লিগামেন্ট, পর্দা অথবা পেলভিক ফ্লোর নরম দূর্বল হলে বা নষ্ট হলে  জরায়ু যোনীপথে নেমে আসে।

2.     গর্ভধারন, নরমাল ডেলিভারি, দীর্ঘমেয়াদী কাশি কোষ্ঠকাঠিন্য, অতি বৃদ্ধা মহিলা মেনোপজ ইত্যাদি কারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

3.      à¦ªà§‡à¦²à¦­à¦¿à¦• ফ্লোরের মাংসপেশী দৃঢ় করার ব্যায়াম ও প্রয়োজনে অপারেশন করে চিকিৎসা করা যায়।

 

27-06-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

           à¦«à¦¾à¦‡à¦¬à§à¦°à§Ÿà§‡à¦¡

 

 

ফাইব্রয়েড  হল জরায়ুর অভ্যন্তরের এক ধরনের টিউমার। ফাইব্রয়েড গুলো বিনাইন টিউমার, কিন্তু ক্যান্সার নয়। মাঝে মাঝে ফাইব্রয়েডগুলোতে কোন লক্ষণ বা সমস্যা থাকে না। তারপরও লক্ষণসমূহ যদি থাকে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-অতিরিক্ত রক্তস্রাব, ব্যাথাযুক্ত মাসিক, রক্ত স্বল্পতা, বন্ধ্যাত্ব, গর্ভপাত ইত্যাদি। টিকিৎসার মধ্যে রয়েছে- ঔষধ ও অপারেশন।

দেখা যায় যে, প্রতি ১০ জন মহিলার মধ্যে ৬ জনেরই ফাইব্রয়েড থাকে, যাদের  বয়স ৪০ এর উর্দ্ধে। ফাউব্রয়েড কেন হয়? এটি এখনও অজানা, তবে সেক্স হরমোন- ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্ট্রেরনকে এর জন্য সন্দেহ করা হয়। ফাইব্রয়েড সাধারণত যাদের মাসিক বন্ধ হয়ে যায়, সে সব মহিলাদের হয়। যখন কোন মহিলার মাসিক বন্ধ হওয়ার সময় পার  করে, তখন আগে থেকে থাকা ফাইব্রয়েডগুলির বেড়ে ওঠা  বন্ধ হয়ে যায় বা অনেক সময় সংকুচিত হয়ে যায়। ফাইব্রয়েড মাঝে মাঝে কোন সমস্যা তৈরী করে না, আবার কিছু ক্ষেত্রে সমস্যার তৈরি করে,যেমন- বন্ধ্যাত্ব, গর্ভপাত এবং অপরিণত বাচ্চা প্রসব। চিকিৎসা নির্ভর করে ফাইব্রয়েড আকার, সংখ্যার এবং অবস্থানের উপর। ফাইব্রয়েড খুব কম ক্যান্সারে পরিণত হয়।

 

লক্ষণসমূহ:

-         অতিরিক্ত রক্তস্রাব

-         দীর্ঘায়িত মাসিক বা রক্তস্রাব

-         মাসিকের সময় ব্যাথা

-         ব্যাথাযুক্ত যৌন মিলন

-         পিঠে বা কোমরে চাপ মনে হয়

-         বারবার প্রস্রাব হওয়া

-         পেটে কোন চাকা হওয়া

 

প্রকারভেদ:

ফাইব্রয়েড প্রকারভেদ হয় তাদের অবস্থানের ভিত্তিতে-

-         ইন্ট্রামুরাল: এই প্রকার ফাইব্রয়েড সবচেয়ে কমন। এটি জরায়ুর দেয়ালে বেড়ে ওঠে।

-         সাবমিউকোসাল: এটি জরায়ুর কোষের পৃষ্ঠতলে বা এডোমেট্রিয়ামে গড়ে ওঠে। এই প্রকার ফাইব্রয়েড অতিরিক্ত রক্তস্রাব হয় এবং ব্যাথা হয়।

-         সাবসেরোসাল: এটি জরায়ুর বাইরের দেয়ালে গড়ে ওঠে

সাধারণ জটিলতা:

১।  রক্ত-স্বল্পতা:

অতিরিক্ত রক্তস্রাবের কারণে রক্ত-স্বল্পতা দেখা দেয়। ফলে ঠিকমত অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে না এবং শ্বাসকষ্ট দেখা যায় এবং শরীর ফ্যাকাসে হয়ে যায়।

২।  প্রস্রাবে সমস্যা:

বড় আকারের ফাইব্রয়েড মূত্র থলিতে চাপ দেয়, যার কারণে বার বার প্রস্রাবের চাপ অনুভূত হয় এবং পেট ভারী ভারী মনে হয়।

৩।  বন্ধ্যাত্ব:

ফাইব্রয়েডের উপস্থিতি নিষিক্ত wW¤^vby বপনে অর্থাৎ গর্ভস্থ হতে বাধা দিতে পারে। যেমন- নিষিক্ত ডিম্বানু গর্ত করে  ফাইব্রয়েডে ঢুকতে চেষ্টা করে। তখন সার্থক নিষিক্ত ডিম্বানু বপন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।

৪।  গর্ভপাত এবং অপরিণত বাচ্চা প্রসব: ফাইব্রয়েড ভ্রুনে রক্ত প্রবাহ কমিয়ে দেয় অথবা বাচ্চা বেড়ে ওঠার জায়গা দখল করে নেয়।

 

রোগ চিহ্নিত করণ:

ফাইব্রয়েড আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে চিহ্নিত করা যায়। হিস্টেরোস্কোপ এর মাধ্যমেজরায়ুর ভেতরে পরীক্ষা করা যায় । এখানে সার্বিস্কের মুখে একটি চিকন টিউব ঢোকানো হয়, যে টিউবের মুখে একটি ছোট ক্যামেরা বসানো থাকে, তাতে করে, মনিটরে জরায়ু দেখা যায়।

 

চিকিৎসা:

চিকিৎসা নির্ভর করে ফাইব্রয়েডের অবস্থান, সংখ্যা এবং আকারের উপর। এর মধ্যে রয়েছে:

১।  মনিটরিং করা বা তদারকি করা: ফাইব্রয়েডে সাধারণত কোন লক্ষণ থাকে না, আবার যদি বড়ও না হয়, সেক্ষেত্রে অপেক্ষা করতে হবে এবং পরবর্তীতে দেখাতে হবে।

২।  ঔষধ:

কিছু হরমোন জাতীয় ঔষধ-যেগুলো ফাইব্রয়েডকে অপারেশনের আগে সংকুচিত করতে সাহায্য করে।

৩।  আরাটারিয়াল ইমবোলাইজেশন: লোকাল চেতনা নাশকের অধীনে একটি সুক্ষ্ণ টিউব হাত অথবা পায়ের যে কোন শিরায় ঢুকিয়ে প্রধান শিরা পর্যন্ত যেতে  হবে,  যেটি ফাইব্রয়েডে রক্ত সরবরাহ করে। পুরো প্রক্রিয়াটি তদারকি করা হয় এক্স-রের মাধ্যমে। সূক্ষ্ণ  কণা জাতীয় বস্তু শিরার মুখে লাগিয়ে দিতে হবে, যেন শিরায় মুখ বন্ধ হয়ে যায় এবং এতে ফাইব্রয়েডে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে ফাইব্রয়েডে আস্তে আস্তে মরে যায় এবং লক্ষনসমূহ কমে যেতে থাকে।

৪।  হিস্টেরোস্কোপ:

হিস্টেরোস্কোপের মাধ্যমে সার্ভিক্সের মুখের মধ্য দিয়ে ফাইব্রয়েড বের করে আনতে হবে।

৫।  ল্যাপারোস্কোপি:

এ ক্ষেত্রে একটি চিকন টিউব পেটের ভিতরে ঢুকিয়ে ফাইব্রয়েড বের করে আনতে হবে।

৬।  উন্মুক্ত অপারেশন:

বড় আকারের ফাইব্রয়েড হলে সেক্ষেত্রে পেট কেটে ফাইব্রয়েড বের করতে হয়।

৭।  হিস্টেরেক্টমি:

এ ক্ষেত্রে জরায়ুর পুরো অংশ বা কিছু অংশ বের করে আনা হয়। পুরো জরায়ু ফেলে দিলে পরবর্তীতে আর বাচ্চা হয় না।

 

যেগুলো মনে রাখতে হবে:

-         ফাইব্রয়েড অথবা মায়োমা হলো এক ধরনের বিনাইন টিউমার যেগুলো জরায়ুর মধ্যে তৈরী হয়।

-         ৪০ বছরের উর্দ্ধ মহিলাদের শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ ফাইব্রয়েডে ভোগন।

-         কমন লক্ষণসমূহ হলো: অতিরিক্ত রক্তস্রাব, ব্যাথাযুক্ত মাসিক, গর্ভপাত ও বন্ধ্যাত্ব।

-         চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে: হরমোন জাতীয় ঔষধ যেগুলো ফাইব্রয়েডকে সংকুচিত করে, এম্বোলাইজেশন, অথবা অপারেশনের মাধ্যমে ফাইব্রয়েড কেটে ফেলা ।

 

21-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

গর্ভস্থ শিশুর রোগ নির্ণয় - কোরিয়নিক ভিলাস স্যাম্পলিং

 

কোরিয়নিক ভিলাস স্যাম্পলিং হলো গর্ভস্থ শিশুর একটি বিশেষ পরীক্ষা যা দ্বারা তার জীনগত অথবা জীবরাসয়নিক সমস্যা নির্ণয় করা যায়। গর্ভাবস্থায় মা থেকে শিশুর শরীরে খাবার,  অক্সিজেন ইত্যাদি পৌছায় জরায়ুর ফুল অর্থাৎ প্লাসেন্টার মাধ্যমে। আর এই প্লাসেন্টা শিশুর শরীরের কোষের মতই বৈশিষ্ঠ্য ধারণ করে। তাই এই পরীক্ষায় প্লাসেন্টা থেকে কিছু কোষ নিযে পরীক্ষা করা হয়। পেট দিয়ে সুই ঢুকিয়ে এই এর স্যাম্পল নেয়া হয়। এই পরীক্ষা দ্বারা সাধারণ আল্ট্রাসনোগ্রাফীর মত শিশুর বাহ্যিক সুস্থ্যতা নির্ণয় করা যায় না বরং শিশুর শরীরে কোন জীনগত সমস্যা (জেনেটিক রোগ যেমন: ডাউন্স সিনড্রোম, সিসটিক ফাইব্রোসিস) আছে কিনা তা বোঝা যায়। সাধারণত ১০-১৯ সপ্তাহে এই পরীক্ষা করা হয়। তবে এতে শতকরা ১ ভাগ ক্ষেত্রে বাচ্চা নষ্ট হবার ভয় থাকে। তাই সবদিক বিবেচনা করে এই পরীক্ষা করতে হবে।

 

যাদের ক্ষেত্রে পরীক্ষা  প্রয়োজন :

সেই সমস্ত মহিলাদের বেলায় প্রযোজ্য :

ক)  à¦ªà¦°à¦¿à¦¬à¦¾à¦°à§‡ বংশগত রোগের ইতিহাস আছে যাদের, তা তার বংশেই হোক অথবা তার স্বামীর বংশে।

খ)   à¦¯à§‡ সব মহিলা বেশি বয়সে (৩৭ বছরের বেশি) সন্তান নিতে আগ্রহী।

গ)   à¦¯à¦¾à¦¦à§‡à¦° কোন বাচ্চা জেনেটিক রোগে বা সমস্যায় আক্রান্ত

ঘ)   à¦¯à¦¾à¦¦à§‡à¦° আল্ট্রাসনোগ্রাফীতে কোন অস্বাভাবিক বাচ্চার উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে।

ঙ)   à¦…থবা যারা অস্বাভাবিক বাচ্চা হওয়া নিয়ে খবই উদ্বিগ্ন

 

যে বিষয়গুলি জানতে হবে:

-         এই পরীক্ষা দ্বারা স্পাইনা বাইফিডা নির্ণয় করা যাবে না।

-         এই পরীক্ষার আগেই মায়ের রক্তের গ্রুপ জানা থাকতে হবে।

-         এই পরীক্ষার উপকারীতা, প্রয়োজনীয়তা ও ঝুঁকি (যেমন: গর্ভস্থ ভ্রুন নষ্ট হতে পারে) জেনে নিতে হবে।

 

পদ্ধতি:

1.      প্রস্রাবের থলি ভরা রাখতে হবে।

2.     প্রথমে আল্ট্রাসনোগ্রাফী করে গর্ভস্থ অবস্থা নিশ্চিত হতে হবে।

3.     রোগী অপারেশন টেবিলে শুয়ে থাকবে। পেটের চামড়া জীবাণুনাশক দিযে ভালভাবে পরিস্কার করে নিতে হবে।

4.     নির্দিষ্ট স্থান বেছে নিয়ে স্থানটিতে ব্যাথানাশক ঔষধ দিয়ে অবশ করতে হবে।

5.     আল্ট্রাসনোগ্রাফীর  সাহায্যে সরু সুই পেট দিয়ে প্রবেশ করানো হবে। যতক্ষণ না প্লাসেন্টার নিকট পৌছায়। এ অবস্থায় সুইটি  এমনিওটিক থলির নিকটে অবস্থান করে এবং বাচ্চা যে কোন অবস্থায় থাকতে পারে।

6.     এবার প্রথম সুই এর ভেতর দিয়ে আরও সরু লম্বা একটি সুই প্রবেশ করানো হয় এবং সুই এর অপর মাথায় সিরিঞ্জ দিয়ে টান দিয়ে কিছু কোষ বের করে আনা হয়। এদেবিস্তারিত

-->

21-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

মোলার প্রেগন্যান্সি

 

সাধারনত গর্ভধারণের ৩-৪ মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ গর্ভফুল তৈরি হয় যার মাধ্যমে শিশু বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অক্রিজেন ও পুষ্টি মায়ের শরীর থেকে গ্রহণ করে। অপ্রয়োজনীয় পদার্থ গর্ভফুলের মাধ্যমে মায়ের শরীরে গিয়ে পরিশোধিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে কোনো কারণে এই গর্ভফুল স্বাভাবিকভাবে তৈরি না-হয়ে এর গঠন ত্রুটিপূর্ণ হয়। কিছু কিছু অংশ স্ফীত হয়ে পানিভর্তি ছোট ছোট থলের আকার ধারণ করে যেগুলোর সমষ্টিকে মোল বলা হয়। এগুলো হাইডাটিড সিস্ট (যা একধরনের পরজীবীঘটিত রোগ)-এর মত দেখায়। এজন্যই মোলার প্রেগন্যান্সির আরেক নাম হাইডাটিডিফরম মোল। মোলার প্রেগন্যান্সিতে আপাতদৃষ্টিতে পূর্ণাঙ্গ গর্ভবতী নারীর লক্ষণ থাকা সত্বেও এই গর্ভের ফলে সন্তানের জন্ম হয় না।

 

এই রোগের প্রকোপ

এ-সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ফিলিপাইনে, যেখানে প্রতি ৮০ জনে ১ জন আক্রান্ত হয়। পাক-ভারত উপমহাদেশ অঞ্চলে প্রতি ৪০০ জনের মধ্যে ১ জন আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। আক্রান্ত মহিলাদের অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের সদস্য।

কারণ

মোলার প্রেগন্যান্সি অনেক কারণে হতে পারে। এর মধ্যে নিম্নোক্ত কারণগুলোই প্রধান:

১. যারা অতি অল্পবয়সে এবং অধিক বয়সে (৩৫ বছরের পর) গর্ভধারণ করে তাদের মধ্যে এ-সমস্যা বেশি লক্ষ করা যায়।

২. অপরিমিত পুষ্টি বা অপুষ্টি, প্রোটিন এবং চর্বিজাতীয় উপাদান এবং ক্যারোটিনের ঘাটতি থাকলেও এ-রোগের আশংকা বেড়ে যায়।

৩. সমীক্ষায় দেখা গেছে: যেসব মহিলার রক্তের গ্রুপ ‘A’ কিংবা ‘AB’ এবং ¯^vgxi রক্তের গ্রুপ ‘O’ তাদের ক্ষেত্রে এ-সমস্যা বেশি ঘটে।

৪. বংশগত কারণেও এটি হতে পারে এবং এর জন্য সম্পূর্ণত পুরুষ সঙ্গীই দায়ী, নারী নয়।

৫. একবার কারো মোলার প্রেগন্যান্সি দেখা দিলে পরবর্তী কালে তা হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ১-৪ ভাগ বেড়ে যায়।

 

উপসর্গ

·                    অল্পবয়সী অথবা বেশিবয়সী মহিলাদের ক্ষেত্রে ৮-১২ সপ্তাহ ধরে মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ থাকে। অনেক সময় ২০ সপ্তাহ পর্যন্ত ঋতুস্রাব বন্ধ থাকতে পারে।

·                    সাধারণভাবে সবার ক্ষেত্রেই গর্ভকালীন উপসর্গ থাকবে। পরবর্তী পর্যায়ে আক্রান্ত মহিলাদের নিচে উলেস্নখিত সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে:

·                    যোনিপথ/মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্ত পড়া,

শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে এটাই প্রথম উপসর্গ

·                    তলপেটে ব্যথা (সামান্য থেকে অনেক বেশি হতে পারে)

·                    প্রচুর বমি হয়

·                    কোনো কারণ ছাড়াই রোগী খুব অসুস্থ বোধ করবে।

·                    শ্বাসকষ্ট হবে, হাত-পা কাঁপবে এবং বুক ধড়ফড় করছে এমনটি বলবে।

·                    মোলার টিস্যুগুলো ফুসফুসে ছড়ালে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।

·                    এধরনের রোগীদের থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা বেড়ে যায়। ফলে, শারীরিক অস্থিরতাও বেড়ে যায়।

·                    যোনিপথ দিয়ে আঙুরের থোকার মত কিছু জিনিষ রক্তের সাথে বেরিয়ে আসতে পারে এবং এমনটি দেখা গেলে নিশ্চিত করে বলা যায়: এটি মোলার প্রেগন্যান্সি। অনেক সময় থোকার সাথে মৃত বাচ্চার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অংশবিশেষ থাকে (যাকে আংশিক মোল বলা হয়); কিন্তু শতকরা ৯৯ ভাগ ক্ষেত্রে তা দেখা যায় না; পুরো মাংসপি-টাই আঙুরের থোকার মত জরায়ুর মধ্যে বড় হতে থাকে।

পরীক্ষা নিরীক্ষাঃ

১। রোগীকে পরীক্ষা করলে দেখা যাবে তার রক্তশূন্যতা রয়েছে এবং

২। এসব রোগীর শতকরা ৫০ ভাগের ক্ষেত্রেই রক্তচাপ বেশি হতে দেখা যায় এবং পায়ে পানি জমে।

৩। পেট পরীক্ষা করলে জরায়ূর আকার মাসিক বন্ধ হওয়ার সময়ের চেয়ে বড় মনে হবে এবং স্পর্শ করলে ময়দার মত থলথলে অনুভূত হবে। ৪। হাত দিলে বাচ্চার কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কিংবা বাচ্চার হৃৎপিন্ডের শব্দ অনুভূত হবে না। যারা আগে একবার মা হয়েছেন তারা বলেন: আমার বাচ্চা তো নড়াচড়া করার কথা, কিন্তু তেমন কিছুই টের পাচ্ছি না।

৫। গর্ভকালীন সময়ে সাধারণত রক্ত এবং প্রস্রাবের যেসব পরীক্ষা করা হয় তার সবই করতে হয়। বিশেষভাবে প্রস্রাব এবং একটি হরমোন টেস্ট  করতে বলা হয় যার নাম human chorionic gonadotrophin (HCG)| স্বাভাবিক সব গর্ভধারণের সময়েও শরীরে এই হরমোন বৃদ্ধি পায়, কিন্তু মোলার প্রেগন্যান্সিতে এটি প্রস্রাবে/রক্তে মাত্রাতিরিক্ত হারে পাওয়া যায়। এতে নিশ্চিতভাবে এই রোগটি নির্ণয় করা যায়।

৬। জরায়ূর ভেতরের আল্ট্রাসোনোগ্রাফি তুষারপাতের মত ঝাপসা দেখা যাবে এবং দুদিকের wW¤^vkq শতকরা ৫০ ভাগ ক্ষেত্রে ফোলা বা বড় পাওয়া বুকের এক্স-রে করতে বলা হয়।

৭। যেহেতু মোলার টিস্যু ফুসফুসেও ছড়িয়ে যায়, এক্র-রে করলে এর মাধ্যমে রোগটির ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়।

 

তাৎক্ষণিক সমস্যা

·        যোনিপথে প্রচুর রক্তপাত হয় এবং এর ফলে রোগী জ্ঞান হারাতে পারে

·        সেপসিসজনিত প্রদাহ হতে পারে

·        জরায়ু ফুটো হয়ে যেতে পারে

·        শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে

·        রক্তজমাটজনিত নানা অসুবিধা দেখা দিতে পারে

দেরিতে দেখা-দেওয়া সমস্যা

১। স্থায়ী হাইডাটিডিফরম মোল হিসেবে কিছু মোলার টিস্যু থেকে যায়। দুই/তিন মাস পরপর রক্তপাত হয়, ওয়াশ করলেও সমস্যা সম্পূর্ণভাবে সেরে যায় না।

২।কোরিওকারসিনোমা নামক এক ধরনের মারাত্মক ক্যান্সার দেখা দিতে পারে। এক কথায় একে গর্ভফুলের ক্যান্সার বলা হয়।

 

চিকিৎসা

মোলার প্রেগন্যান্সিতে চিকিৎসার মূলনীতি হচ্ছে:

১। যে পরিমাণ রক্তক্ষরণ হয়েছে তা পূরণ করা এবং প্রদাহ (infection) প্রতিরোধ করা

২। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জরায়ুর ভেতর থেকে মোল অর্থাৎ আঙুরসদৃশ থোকাগুলো বের করে আনা। সাকশান ইভাকুয়েশন (suction evacuation) বা সাকশান কিউরেটেজ (suction curettage) করে এগুলো বের করা হয়। সাধারণত লোকজন একেই ওয়াশ-করা বলে

৩। নিয়মিত ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে থাকা, যাতে পরবর্তী কালে এই সমস্যা স্থায়ীরূপ ধারণ করে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে না-পারে।

৪। কোনো কারণে রক্তক্ষরণ বন্ধ না-হলে বা ওয়াশ-করা সম্ভব না-হলে জরায়ু ফুটো করে মোল বের করতে হয়। একে হিস্টেরোটোমি বলা হয়।

৫। যাদের বয়স ৩৫ বছরের বেশি কিংবা অল্পবয়সে সন্তানের জন্মদানসহ পরিবার গঠন সম্পূর্ণ হয়ে গেছে তাদের ক্ষেত্রে জরায়ু কেটে ফেলাই শ্রেয়। এই অস্ত্রোপচারকে হিস্টেরেকটোমি বলা হয়।

আরেকটি খুব গুরম্নত্বপূর্ণ তথ্য হলো:

মহিলার রক্তের গ্রুপ যদি নেগেটিভ হয় তাহলে জরায়ু ওয়াশ করার পর একটি এন্টি-ডি ইনজেকশন দিতে হবে।

 

মনে রাখা দরকারঃ

১। নিয়মমত চিকিৎসা করালে আবারও সেই মহিলা সুস্থ বাচ্চার জন্ম দিতে পারবে এবং গর্ভফুলের ক্যান্সারেরও পরিপূর্ণ চিকিৎসা রয়েছে যার ফলে রোগী সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়।

২। স্বাভাবিক বাচ্চা হওয়ার পরও যদি গর্ভফুলে এধরনের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই সেটা ক্যান্সার হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।

৩। জরায়ু ওয়াশ করার পর প্রতিসপ্তাহে প্রস্রাবের HCG টেস্ট-করা এ-রোগের চিকিৎসার প্রধান দিক। টেস্ট একবার নেগেটিভ হলে এক মাস পরপর ৬ মাস পর্যন্ত এই পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়া হয়।

৪। যাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত হাসপাতালে আসা অসম্ভব -তাদেরকে প্রতিষেধক হিসেবে মেথোট্রাক্সেট টেবলেট বা ইনজেকশন দিয়ে দেওয়া হয়।

৫। চিকিৎসার শেষে এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকতে হবে। এর পরে আবারও বাচ্চা নেওয়া যাবে। এই এক বছর জন্ম নিয়ন্ত্রণের হরমোন পদ্ধতি (বড়ি /ইনজেকশন/ইমপস্নান্ট) ব্যবহার করা যাবে না।

৬। মোলার প্রেগন্যান্সি কোনো পাপের ফসল নয়। অল্পবয়সে বিয়ে-হওয়া, পুষ্টিহীনতা এবং অনেক সময় বংশগত কারণেও এটি হতে পারে।

৭। সময়মত এবং নিয়মমত চিকিৎসা নিলে ক্যান্সারের মারাত্মক ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং সুস্থভাবে বেঁচে থেকে সমাজে বসবাস করা যায়।

 

21-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

 

একটোপিক প্রেগনেন্সি

 

        

জরায়ুর বাইরে বাচ্চা ধারণ করাকে একটোপিক প্রেগনেন্সি বলে। সবচেয়ে বেশী হয় ফেলোপিয়ান টিউবে। লক্ষন সমূহের মধ্যে রয়েছে- খিচুনি দিয়ে পেটে ব্যাথা এবং রক্তস্রাব। এই ব্যাথা ফেলোপিয়ান টিউব ছিড়ে যাওয়া বা ফেটে যাওয়াকে ইঙ্গিত করে এবং এটি একটি জরুরী অবস্থা এবং আবশ্যিক ভাবে অপারেশন জরুরি। ওভুলেশনের সময় ডিম্বানু (ওভাম) ওভারি থেকে নিঃসৃত হয়। যখন ফেলোপিয়ান টিউবে ডিম্বানু  à¦à¦¬à¦‚ শুক্রাণুর মিলন ঘটে, তখন গর্ভধারণ সম্ভব হয়। সাধারণত নিষিক্ত ডিম্বানু ফেলোপিয়ান টিউব থেকে জরায়ুতে ভ্রমন করে বা পৌছায়।

একটোপিক প্রেগনেন্সি গর্ভধারণ করলে বাচ্চা সাধারণত মারা যায়, কারণ বাচ্চা বাড়ার মত জায়গা থাকে না এবং প্লাসেন্টা রক্ত ঠিকমত সাপ্লাই দিতে পারে না। পাঁচ ভাগের মধ্যে এক ভাগ এর ক্ষেত্রে এ টিউব ছিড়ে যেয়ে অন্তর্ভাগে রক্তপাত ঘটায় এবং রোগী শকে চলে যায়। এটি একটি জরুরি অবস্থা এবং তাৎক্ষনিক চিকিৎসা বা অপারেশন জরুরী।

লক্ষন সমূহঃ-

একটোপিক প্রেগনেন্সির লক্ষন অনেকটা গর্ভপাতের এর লক্ষন এর মত। তাছাড়া পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ, এনডোমেট্রিয়োসিস এর লক্ষন

21-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

 

বাচ্চাদের বমি করা সমস্যা

 

বমি বমি ভাব ও বমি করার অভিজ্ঞতা আমাদের প্রত্যেকের জীবনে  এক বা একাধিক আছে। বড়দের মত শিশুদেরও বমি হতে পারে। বমি অনেক রোগেই হতে পারে। তবে, শুধু ১ বা ২ বার বমি করা খুব বেশি চিন্তার কারণ না, যদি না ব্যক্তি অন্য কোন দিক থেকেও অসুস্থ থাকে। পাকস্থলী থেকে খাদ্য, পানীয় যদি উল্টোদিকে চলে আসে অর্থাৎ মুখ দিয়ে বের হয়, তাকে বমি বলে। পরিমাণ অল্প হোক অথবা বেশি, বমি হল পাকস্থলীতে জমে থাকা খাদ্য ও পানিয়।

 

প্রকারঃ

বমি নানা ধরনের হতে পারে। যেমন-

ক. পসেটিং :

বাচ্চা খাবার পরে যদি সামান্য কিছু বমি করে।

খ. রিফ্লাক্সঃ

এটিও বাচ্চাদের বেশি হয়, কোন কারণে  অন্যনালী ও পাকস্থলীর মধ্যবর্তি স্ফিংটার খুলে গেলে পাকস্থলীর খাবার ধীরে ধীরে  ইসোফেগাস (তন্ত্রনালী) দিয়ে বের হয়ে আসে। এতেও বাচ্চার কোন ক্ষতি হয় না। বাচ্চারা যখন হাঁটতে শুরু করে তখন থেকে ধীরে ধীরে এই সমস্যা কমতে থাকে।

গ.  প্রোজেক্টাইল ভমিটিং :

যখন পেটের ভেতরের বস্তু খুব জোরে ধ্রুত বের হয়ে আসে, সেটি হল প্রোজেক্টাইল ভমিটিং। পরিমাণ অনেক বেশি মনে হলেও মূলত শেষ খাবারে  বস্তুগুলিই হয়ে আসে। এই ধরণের বমি যদি বেশি হয়, দিনে ৩-৪ বার, সে ক্ষেত্রে হাসপাতালে যেতে হবে।

 

বমির সাধারণ কারণসমূহঃ 

-         সাধারণ ইনফেকশন, ঠান্ডা, পেটে ইনফেকশন

 

-         গ্যাস্ট্রো ইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স

-         মোশন সিকনেস(যানবাহনে চলার ফলে)

-         প্রস্রাবের ইনফেকশন,

-         মেনিনজাইটিস,

-         মাথাব্যাথা,

-         এপেনডিসাইটিস

-         খাদ্যনালী বন্ধ হওয়া ইত্যাদি সমস্যাতেও বমি হয়।

 

সাধারণ করণীয়ঃ

বমি করার কিছুক্ষণ পর বিশেরভাগ বাচ্চাই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। বমির পর বাচ্চাদের ক্ষুধা ও পানির তৃষ্ণা পেতে পারে। এ অবস্থায় পর্যাপ্ত পানি পান করতে দিতে হয়। বমি বন্ধের জন্য ডমপেরিডন, মেটক্লোরপ্রমাইড, অন্ডেনসেট্রন জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা যায়, তবে কারন অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন ঔষধ ব্যবহার করা হয়।তাই বমি বন্ধের জন্য পরামর্শ ছাড়াই ঔষধ ব্যবহার করা ঠিক না। কিন্তু যদি বার বার বমি করে সে ক্ষেত্রে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

 

রিফ্লাক্স বমি প্রতিরোধের উপায়ঃ

-         বাচ্চাকে খাওয়ানের সময় বসিয়ে, মাথা সোজা রেখে খাওয়াতে হবে।

-         খাওয়াবার পর বেশ কিক্ষুক্ষণ বাচ্চাকে বসিয়ে রাখতে হবে।

-         বাচ্চার মাথার দিক পায়ের দিকের চেয়ে উচু রেখে শোয়ানো

-         বাম দিকে কাত করে শোয়ানো

-         খাবার পর বাচ্চাকে কোলে নিয়ে নাড়াচড়া না করা।

-         বাচ্চার খাবার একটু ঘন করে তৈরী করা, অল্প অল্প করে খাওয়ানো, একসাথে বেশি খাবার না খাওয়ানো।

-         বমির পর পানি বা দুধ জাতীয় খাবার খাওয়ানো।

-         উপুড় হয়ে বা মাথা নিচু করে না শোয়ানো।

-         যদি বাচ্চার বুক জ্বালা করে সে ক্ষেত্রে পরামর্শ অনুযায়ী এন্টাসিড সিরাপ দেয়া যেতে পারে।

 

কখন ডাক্তারের শরনাপন্ন হওয়া জরুরীঃ

-         বমি করার ফলে যদি ওজন ঠিকমত না বাড়ে।

-         বমি করে যদি প্রচন্ড কাশি ও শ্বাস কষ্ট দেখা দেয়।

-         বমির সাথে যদি রক্ত, কালচে বর্ণের রক্ত বা সবুজ পদার্থ (বাইল) বের হয়।

-         প্রতিবার খাওয়ানোর পরই যদি জোরে বমি করে।

-         বাচ্চা যদি দূর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়ে।

-         হাটবার্ন না বুক জ্বালা করার সমস্যা হয়।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

-         হালকা বমি করা- বাচ্চা ও শিশুদের খুব কমন, এবং এমনিতেই ঠিক হয়ে যায়।

-         বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিয়ম মেনে চললে বমি বন্ধ করা যায়।

-         খাবার ও শোয়ানো সঠিক নিয়মে করলে প্রতিরোধ করা যায়।

-         অস্বাভাবিক অবস্থায়  ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

 

21-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

ক্রিপ্টরকিডিজম

 

শুক্রাশয় বা টেস্টিস হল পুরুষ প্রজনন অংগ, যা শুক্রানু এবং টেস্টোস্টেরন নামক সেক্স হরমোন তৈরী করে। পুরুষ দেহে দুটি টেস্টিস থাকে যা স্বাভাবিক ভাবে পায়ের মাঝখানে লিঙ্গে নিচে অবস্থিত পাতলা চামড়া দিয়ে তৈরী অন্ডকোষে অবস্থান করে। কিন্তু কখনও কখনও ১টি বা উভয় শুক্রাশয় অন্ডকোষে নাও থাকতে পারে, এবং তা কুচকিতে বা পেটের ভেতরে থেকে যেতে পারে। এই অবস্থাকে বলে ক্রিপ্টরকিডিজম। এর অন্যান্য নাম হল-

এমটি (খালি) স্ক্রোটাম,

মনোরকিজম (১টি বিচি) বা

আনডিসেন্ডেড টেস্টিস।

 

 

প্রায় শতকরা ৫ ভাগ ছেলে শিশুর এ অবস্থা হতে পারে। বিশেষত যে সব শিশু খুব অল্প ওজন নিয়ে এবং অপরিপক্ক অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে, তাদের ক্ষেত্রে এ অবস্থা বেশি দেখা যায়।

 

লক্ষণসমূহঃ 

ক্রিপ্টরকিডিজম হলে যে সব লক্ষণ দেখা যায় :

-         অন্ডকোষের ১টি পার্শ্ব বা উভয় পার্শ্ব খালি থাকে।

-         এতে কোন ব্যাথা হয় না।

-         প্রস্রাবেও কোন সমস্যা হয় না।

তবে এ অবস্থাকে রিট্রেকটাইল বা রিট্রেক্টবল টেস্টিস মনে করলে ভুল হবে।

 

 à¦•à§‡à¦¨à¦¨à¦¾ রিট্রেকট্রেবল মূলত অন্ডকোষেই অবস্থান করে তবেই তারা প্রায়শই উপরের দিকে উঠে শরীরের ভেতরে ঢুকে যাবার মত হয়। বিশেষ কিছু অবস্থায়, যেমন- খুব শীত বা ঠান্ডা হলে এমন হতে পারে।

 

টেস্টিস বা শুক্রাশয়ের গঠন ও বৃদ্ধিঃ

ছেলে শিশু মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থাতেই ভ্রুন অবস্থাতেই তাদের দেহে শুক্রাশয় বা টেস্টিস তৈরী হয় এবং তা পেটের ভেতরে অবস্থান করে। গর্ভকালীন বয়স ৬-৮ মাস  (২৫-৩৫ সপ্তাহ) অবস্থায় শিশুর টেস্টিস ধীরে ধীরে ইনগুইনাল ক্যানাল দিয়ে নিচের দিকে নামতে থাকে এবং জন্মের পূর্বেই তা অন্ডকোষে এসে স্থান নেয়।

ক্রিপ্টরকিডিজম হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১টি শুক্রাশয় নিচে নামতে ব্যর্থ হয় (৯০ ভাগ ক্ষেত্রে) তবে ১০ ভাগ ক্ষেত্রে দুইট শুক্রাশয়ই পেটে বা ইঙ্গুইনাল ক্যানেলে আটকে যেতে পারে।

যে সব ক্ষেত্রে অপরিপক্ক অবস্থায় আগে আগেই জন্ম নেয়, তাদের ক্ষেত্রে টেস্টিস নামতে পারে না। গবেষনায় দেখা গেছে, যে সব ক্ষেত্রে ছেলে শিশুর ওজন ২.২ কেজির কম তাদের ক্ষেত্রে শতকরা ১৭ টি বাচ্চার ক্রিপ্টরকিডিজম বা আনডিসেন্ডেড টেস্টিস থাকে। এমনিভাবে ওজন যত কম হবে, এই সম্ভাবনা ততই বাড়তে থাকে এবং ৯০০ গ্রামের কম ওজন নিয়ে জন্মানো ছেলে শিশুর প্রায় ১০০ ভাগেরই আনডিসেন্ডেড টেস্টিস থাকে।

সম্ভাব্য সমস্যাঃ

ক্রিপ্টরকিডিজম থাকলে রোগীর যে সব সমস্যা দেখা দেয় বা দিতে পারে, তা হলো-

1.      ব্যক্তিগত হীনমন্যতাঃ শুক্রাশয়ের সমস্যা ছেলের মধ্যে হীনমন্যতা তৈরী করে। তার নিজস্ব বল ও দৃঢ়তা লোপ পায়। অন্যেরা যদি দেখে কোন মন্তব্য করে বা হাসা-হাসি করে তাই দুঃশ্চিন্তায় থাকে।

2.     হার্নিয়াঃ  আনডিসেন্ডেড টেস্টিস থাকলে আক্রান্ত স্থান দিয়ে ইনগুইনাল হার্নিয়া হবার ঝুঁকি বেশি।

3.     আঘাতঃ আন-ডিসেন্ডড টেস্টিস আঘাত জনিত ক্ষতির ঝুঁকি বেশি।

4.     সন্তান জন্মদানে অক্ষমতাঃ  টেস্টিস শরীরের ভেতরে না থেকে  বাইরে অন্ডকোষে থাকার মূল কারণ হলো শুক্রানু উৎপাদনের জন্য আদর্শ তাপমাত্রা। তাই যদি টেস্টিস পেটের ভেতরে থাকে সে ক্ষেত্রে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে শুক্রানু উৎপাদন ব্যাহত হয়। তবে যদি অপারেশন করে ভেতর থেকে নিয়ে এসে অন্ডকোষে স্থাপন করা যায় সে সব ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় প্রজনন ক্ষমতা ফিরে পায়।

5.     ক্যান্সারঃ সাধারণ পুরুষের তুলনায় আনডিসেন্ডেড টেস্টিস ক্যান্সার হবার ঝুঁকি প্রায় ১০ গুণ বেশি, এবং অপারেশন করে নামিয়ে আনলেও তার ঝুঁকি কিছুটা থেকে যায়। ক্যান্সার সাধারণত ২৫-৪০ বছর বয়সে দেখা দিতে পারে।

 

একোয়ার্ড ক্রিপ্টরকিডিজমঃ

অনেক ক্ষেত্রে সঠিকভাবে সঠিক স্থানে (অন্ডকোষ) অবস্থান করা টেস্টিস ধীরে ধীরে শরীরের ভেতরে চলে যেতে পারে। এ অবস্থাকে একোয়ার্ড ক্রিপ্টরকিডিজম বলে ১-১০ বছর বয়সের মধ্যে এটি হতে পারে, এর কারণ হল শরীরের বৃদ্ধির সাথে সাথে স্পারমাটিক কর্ডের (যা একপ্রাপ্ত টেস্টিসের সংগে যুক্ত) বৃদ্ধি না হওয়া। ফলে ক্ষদ্রাকৃতির স্পারমাটিক কর্ড টেস্টিসকে ভেতরের দিকে টেনে ধরে, আর শরীর বৃদ্ধি পাবার কারণে  ক্রিপ্টরকিডিজম হয়।

 

রোগ নির্ণয়ঃ

সাধারণত শারীরিক পরীক্ষা করেই রোগ নির্ণয় করা যায়। তবে অনেক ক্ষেত্রে পেটের অভ্যন্তরে থাকা টেস্টিস দেখার জন্য আল্টাসনোগ্রাম করতে হয়।

 

চিকিৎসাঃ 

অনেক ক্ষেত্রে হরমোন চিকিৎসার দ্বারা টেস্টিস নামানো হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপারেশনের মাধ্যমে টেস্টিস নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে আসা হয়। আদর্শভাবে বাচ্চার বয়স ৬ মাস থেকে ২ বছরের মধ্যেই আপারেশন করা উচিত। কেননা ২ বছরের পরে অপারেশন করলে সেই টেস্টিসের শুক্রানু উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রে যেমন একোয়ার্ড ক্রিপ্টরকিডিজম এ এই অপারেশন আরও পরেও করার প্রয়োজন হতে পারে। তবে অপারেশনের পরেও শতকরা ১০ জনের প্রজনন ক্ষমতা সাধারণরে চেয়ে কম হয় বা থাকে না।

 

অপারেশন পদ্ধতিঃ

টেস্টিসকে অন্ডকোষ এনে স্থাপন করার অপারেশনের নাম অর্কিডোপেক্সি। পদ্ধতিটি হলঃ

-         রোগীকে সস্পূর্ণ অচেতন করা হয়।

-         পা ও তলপেটের সংযোগস্থলে (গ্রোয়েন) বরাবর কাটা হয় যাতে ইনগুইনাল ক্যানাল থেকে বের করা

-         যে স্পারমাটিক কর্ড দ্বারা টেস্টিস শরীরের ভেতর থেকে যুক্ত থাকে তাকে সোজা করা (সাধারণত প্যাচানো থাকে) ও যতদুর সম্ভব টেনে লম্বা করা হয়, প্রয়োজনে বাধাদানকারী কিছু অংশ কেটে ফেলা হয়। এরপর অন্ডকোষের কাটা চামড়া কাটা হয়।

-         টেস্টিসকে অন্ডকোষের ভেতরে দিয়ে সেলাই করে দেয়া হয়।

-         পরে সবগুলি কাটা অংশ সেলাই করে দেয়া হয়।

-         অনেক ক্ষেত্রে সার্জন টেস্টিস খুজে পেতে ব্যর্থ হন। শতকরা ৫ ভাগ ক্ষেত্রে ব্যাহত হবার কারণে তা নিঃশেষ হয়ে যায় একে ভ্যানিশিং বা এবসেন্ট টেস্টিস বলে।

 

যা যা মনে রাখতে হবেঃ

1.      শতকরা ৫ জন শিশু আনডিসেন্ডডেড টেস্টিস নিয়ে জন্ম নেয়।

2.     অপরিপক্ক এবং কম ওজনের বাচ্চাদের এমন হবার সম্ভাবনা বেশি।

3.     এদের ক্ষেত্রে হার্নিয়া, প্রজনন অক্ষমতা সহ ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা বেশি।

 

 

21-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

নবজাতকের নাভীর প্রদাহ

 

নাভীর প্রদাহের আসল পরিসংখ্যান জানা নেই। উন্নত দেশগুলোতে তুলনামূলকভাবে এটি কম ঘটে। সম্ভবত, যেসব বাচ্চাকে হাসপাতাল থেকে তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয় এবং বাড়িতে যাদেও ঠিকমত পরিচর্যা করা হয় না তাদের নাভীর প্রদাহ বেশি হয়। গড়ে ৩.২ দিন বয়সের বাচ্চাদের এই নাভীর প্রদাহ সবচেয়ে বেশি হয়। উন্নয়নশীল দেশে নাভীর প্রদাহ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

 

কারনঃ

উন্নত দেশে যেসব জীবাণু দ্বারা নাভীর প্রদাহ হয়ে থাকে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে Staphylococcus aureus, Escherichia coli group ও Streptococcus| উন্ননশীল দেশে বাড়িতে অথবা হাসপাতালে কোন কোন জীবাণু দ্বারা এই প্রদাহ হয় সে-সম্পর্কে খুব কমই জানা গেছে। এক জরিপে দেখা গেছে যে, যারা হাসপাতালে জন্মে তাদের ৭২%-এর নাভীর প্রদাহ হয়ে থাকে গ্রাম-নিগেটিভ জীবাণু দ্বারা -যেমন Klebsiella, E. coli)| আর যারা বাড়িতে জন্মগহ্র ণ করে তাদেও গ্রাম-পজেটিভ জীবাণু যেমন Staphylococcus aureus দ্বারা বেশি হয়। বাচ্চা জন্মের প্রম ৩ দিন নাভী সাধারণত Clostridium tetani নামক

জীবাণু দ্বারা সংক্রামিত হয়ে থাকে। ফলে, বাচ্চাদেও টিটেনাস বা ধনুষ্টঙ্কার হতে পারে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বা অস্বাস্থ্যকর ভাবে নাভী কাটলে অথবা অপরিষ্কার জিনিস নাভীতে ব্যবহার করলে নাভীর প্রদাহের ঝুঁকি বাড়ে।

 

প্রকারঃ

নাভীর প্রদাহ দুই ধরনের হতে পারে:

স্থানীয় বা লোকাল

ভিতর-বিস্তারী।

শেষেরটি রক্তনালী বন্ধ হতে বাধা দেয়, ফলে জীবাণু রক্তপ্রবাহে চলে যায়। কোনো

কোনো সময় এই প্রদাহের ফলে জীবাণু পেটের ভিতরের ঝিল্লিকে সংক্রামিত করতে পারে। তখন ঝিল্লির প্রদাহ শুরু হয়।   à¦à¦•à§‡ পেরিটোনাইটিস বলে। সেজন্য নাভীর প্রদাহ খুবই মারাত্মক। এসব ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা করা দরকার।

 

লক্ষণঃ

নাভীর চারদিচারদিক লাল হয়ে-যাওয়া, ফুলে-যাওয়া, এবং ব্যথা-হওয়া নাভীর প্রদাহের প্রধান লক্ষন।

এক্ষেত্রে নাভী দিয়ে প্রায় সব সময় রক্ত পড়ে। নাভীমূল থেকে পুঁজও পড়তে পারে। সজোরে এলকোহল দিয়ে পরিষ্কার করলে বা ঠান্ডা চিমটা ব্যবহার করলেও নাভী লাল হতে পারে। জ্বর, দূর্বলতা, এবং খাবারে অনিহা ও অভ্যন্তরীণ জটিলতা দেখা দিতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, ১/৩ ভাগ ক্ষেত্রে প্রদাহের স্পষ্ট কোনো বাহ্যিক লক্ষণ দেখা যায় না।

 

চিকিৎসাঃ

নাভীর প্রদাহ সিস্টেমিক এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করানো উচিত।

নাভীর গোড়ার লাল-হওয়া অংশের আয়তনের ওপর নির্ভর করে এন্টিবায়োটিক চিকিৎসা শুরু করতে হয়। যদি এটি ২ সে.মি.-এর বেশি হয় তাহলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন। আর যদি ২ সে.মি.-এর কম হয় তাহলে লক্ষ্য রাখতে হবে এর আয়তন বাড়ছে কি না। যদি বাচ্চার জ্বর, দুর্বলতা এবং খাবারে অনীহা দেখা যায় তবে এটিকে ব্যাকটেরিয়ার ভীষণ প্রদাহ মনে করে অবশ্যই চিকিৎসা করতে হবে এবং এন্টিবায়োটিক শিরাপথে দিতে হবে। ক্ষেত্রবিশেষে মাংসপেশীতেও

দেওয়া যেতে পারে। এন্টিবায়োটিক নির্ধারণ করতে হবে কী ধরনের ব্যাকটেরিয়াজনিত প্রদাহ তার ওপর নির্ভর করে।

যদি তা না জানা হয় তাহলে এম্পিসিলিন ও জেন্টামাইসিন দিয়ে যুগপৎ চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে। বাচ্চাদের ধনুষ্টংকার-এর ক্ষেত্রে বেশি পরিমাণে  পেনিসিলিন শিরাপথে দিতে হবে এবং বিষক্রিয়া দমনের জন্য এন্টিটক্সিন-এর সাহায্যে ব্যবস্থা নিতে হবে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৩৬% শিশুর ধনুষ্টংকারের সাথে নাভীর প্রদাহ ও রক্তের সংক্রমণও (sepsis) রয়েছে। সুতরাং শিশুদের ধনুষ্টংকারের ক্ষেত্রে অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার কথাও চিন্তা করতে হবে এবং শিশুর হাসপাতালে ভর্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধনুষ্টংকারের চিকিৎসা ছাড়াও যথাযোগ্য এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

 

প্রতিরোধঃ

1.      শিশুর জন্মের পরে ধারালো ব্লেড বা কাঁচি দিয়ে নাভী কাটতে হবে।

2.     সেটিকে অবশ্যই আগে জীবাণমুক্ত করে নিতে হবে।

3.     কোনো অবস্থাতেই অপরিষ্কার জিনিস নাভীতে লাগানো যাবে না, যেমন মাটি, গোবর, ময়লা কাপড়, ইত্যাদি।

৪। প্রথম কয়েকদিন (সাধারনত ৫-৭ দিন) নাভী ভালোভাবে ক্লোরহেক্সিডিন দিয়ে পরিষ্কার করলে নাভীতে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।

 

21-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

 

রোটা ভাইরাস

বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে কম বয়সী শিশুদের অন্ত্রের ইনফেকশন  à¦…র্থাৎ ডায়রিয়ার অন্যতম কারণ হল রোটা ভাইরাস  à¦ªà§à¦°à¦¾à§Ÿ প্রতিটি শিশুই (৩ বছরের্‌ কম বয়সী) জীবনে কখনও না কখনও এই রোটা ভাইরাস ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে থাকবে।

 

 

অন্যান্য ডায়রিয়ার তুলনায় এই ডায়রিয়াটা একটু বেশি মারাত্মক আকার ধারণ করে। তাছাড়া কোন কোন বাচ্চা একাধিক বারও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।

 

লক্ষণসমূহঃ  রোগের মাত্রা অনুযায়ী  বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়। রোগটি অল্প মাত্রারও হতে পারে, আবার জীবন নাশকারী মারাত্মক রূপও  ধারণ করতে পারে। সাধারণত যে সব লক্ষণ প্রকাশিত হয়ঃ

-         বমি

-         হঠাৎ করে পাতল পায়খানা

-         জ্বর

-         পানিশুন্যতা

-         খিচুনী

-         অচেতন

 

রোগটি কিভাবে ছড়ায়ঃ

মূলত আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে অর্থাৎ জীবাণুযুক্ত হাত, কাপড়-চোপড়, বমি পায়খানা ইত্যাদির সংস্পর্শে এসে মানুষ আক্রান্ত হয়ে থাকে। জীবাণু ঢোকার অর্থাৎ ইনফেকশন হবার ১-৩ দিনের মধ্যেই রোগ লক্ষণ প্রকাশিত হয়। একবার কেই আক্রান্ত হলে সুস্থ হবার ২ মাস পর্যন্ত তার পায়খানাতে জীবাণু থাকতে পারে।

 

বার বার ইনফেকশন হবার সম্ভাবনাঃ

একই শিশু বার বার রোটা ভাইরাস ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে, যদি বার বার ইনফেকশন হয়। সুস্থ হলে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে তার মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরী হয়, কিন্ত  শতকরা ৪০ ভাগ বাচ্চাই আবার আক্রান্ত হবার ঝুঁকির মধ্যে থাকে।

 

হাইরিস্ক গ্রুপঃ (যাদের হবার ঝুঁকি বেশি)

নিম্নলিখিত গ্রুপের ব্যক্তিদের এই রোগ হবার ও মারাত্মক আকার ধারণ করার সম্ভবনা অন্যান্য সুস্থ শিশুদের তুলনায় বেশি। যেমন-

-         যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।

-         যাদের খাদ্যনালী বা অন্ত্রে সমস্যা আছে।

-         যাদের কোন অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা আছে।

 

চিকিৎসাঃ

মূলত ডায়রিয়ার চিকিৎসা দেয়া হয়। রোগের মাত্রা অনুযায়ী চিকিৎসা যেমন- মৃদু পর্যায় হলে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেয়া সম্ভব এবং সাধারণত ৪-৫ দিনের মধ্যে রোগী সুস্থ হয়ে উঠে। চিকিৎসা হল-

- প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খাওয়া- যেমনঃ পনি, বুকের দুধ, ডাবের পানি, ডাল, প্রচুর বিশ্রাম, মুখে খাবার স্যালাইন, প্রতিবার পায়খানা বা বমির পর দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে যদি-

 - রোগী বিশে দুর্বল হযে পড়ে,

 - চোখ দেবে যায়

 - ঠিকমত খেতে বা গিলতে পারছে না বা

 - খুব বেশি মাত্রায় পায়খানা হচ্ছে বা 

 - যা খাচ্ছে সবই বমি করছে।

সে ক্ষেত্রে হাসপাতালে নিয়ে শিরাপথে স্যালাইন দিতে হবে।

 

রোগ প্রতিরোধঃ

ঘরের কেউ যদি রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয় সে ক্ষেত্রে অন্যদের রোগ প্রতিরোধের জন্য সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন-

-         প্রতিবার অসুস্থ বাচ্চাকে পরিস্কার করার পর সাবান দিয়ে হাত ধোয়া

-         অসুস্থ অবস্থায় বাচ্চাকে ডায়পার পড়িয়ে রাখা এবং ময়লা ডায়পার সাবধানতার সাথে পরিবর্তন করা।

-         বাচ্চার ব্যবহার্য কাপড়, খেলনা ইত্যাদি ভালভাবে জীবাণুমুক্ত করা

-         অসুস্থ বাচ্চাকে ঘরেই রাখা, স্কুল ও চাইল্ড কেয়ারে কয়েকদিন না পাঠানো

-         প্রতিবার খাবার তৈরী, পরিবেশন ও খাবার আগে ভালভাবে হাত ধোয়া

-         শিশুকে রোটা ভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা দেয়া।

 

টিকাঃ রোটা ভাইরাসকে বিশেষভাবে দূর্বল করে টিকা তৈরী করা হয়, যা শরীরে ঢুকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরী করে।

 

 

বেশিরভাগ বাচ্চাই রোটা ভাইরাস ডায়রিয়া থেকে মুক্ত থাকে তবে যেহেতু কোন টিকাই ১০০ ভাগ কার্যকর হয় না, তাই কারও কারও ডায়রিয়া হয, তবে সে ক্ষেত্রে রোগের মাত্রা কম হয়।

ঠিকা দেবার পূর্বেঃ

বাচ্চাকে টিকা দেয়ার পূর্বে টিকাদানকারী স্বাস্থ্যকর্মী বা দায়িত্বরত চিকিৎসককে নিম্নলিখিত সব বিষয় সম্বন্ধে বলতে হবে, যদি

-         শিশুর বয়স বর্ণিত সময় সীমার বেশি হয় (২ মাস থেকে ৬ মাসের মধ্যেই দুটি টিকা শেষ করতে হবে)

-         জ্বর থাকে (৩৮,৫ ডিঃসেঃ এর  বেশি)

-         পূর্বে কোন টিকা দিয়ে কোন ধরনের রিএকশন হয়ে থাকে

-         কোন কিছুতে মারাত্মক এলার্জি থাকে।

-         ইনটোসাসেপশন (পেটের নাড়ির প্যাচ) থেকে থাকে

-         রোগী যদি কোন স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ নিয়মিত গ্রহণ করে থাকে।

-         রক্ত রা রক্তজাতীয় কোন দ্রব্য গ্রহণ করে তাকে।

-         ক্যান্সার, এইচ.আই.ভি  ইত্যাদি রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বিনষ্টকারী রোগ থেকে থাকে।

 

টিকার সম্ভাব্য জটিলতাঃ তেমন কোন জটিলতা হয় না, তবে খুব কম হলেও যে সব জটিলতা দেখা দিতে পারে তা হল:

-         জ্বর, বমি, পাতলা পায়খানা

-         এলার্জিক রিএকশন

-         ইনটুসাসেপসন (টিকা দেবার ৭ দিনের মধ্যে হতে পারে)

এর যে কোন সমস্যা হলেই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

 

 

21-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

রিকেটস্‌

 

রিকেটস্‌ হলো শিশু বা ছোট বাচ্চাদের হাড়ের এক ধরনের রোগ। ভিটামিন ডি এর অভাবে বাচ্চাদের হাড় সঠিকভাবে সুগঠিত হতে না পারার কারণেই মূলত এই রোগ হয়। এই রোগে হাড় খুব নরম হয়, দূর্বল হয়, সহজেই ভেঙে যায়, হাড় ও মাংসে ব্যাথা হয় এবং হাড় আকা বাঁকা হয়।

 

ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করতে পারলে সহজেই এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়। যে সব বাচ্চারা জন্ম থেকেই বেশি কাল অথবা সূর্যের আলোতে খুব কম আসে তারা খুব সহজেই এই রোগে আক্রান্ত হয়। তাছাড়া মায়ের যদি ভিটামিন ডি এর ঘাটতি থাকে সে ক্ষেত্রে এবং লিভার, কিডনী বা অন্ত্রের সমস্যা থাকলেও এই রোগ হবার ঝুঁকি থাকে। আর বড়দের ক্ষেত্রেও প্রায় একই ধরনের সমস্যা হতে পারে, সে ক্ষেত্রে ঐ রোগকে বলে অস্টিওম্যালেসিয়া।

রোগের লক্ষনসমূহঃ

রিকেটস্‌ হলে যে সব রোগ-লক্ষণ প্রকাশিত হয়, তা হলঃ

-         হাড়, মাংসে ব্যাথা, মাংশপেশিতে চাপ ও মোচড়ানো যন্ত্রণা

-         শরীরের বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া

-         অল্প আঘাতেই হাড় ভেঙে যাওয়া

-         দাঁত উঠতে দেরী হওয়া, দাঁতের আকার বিকৃত হওয়া ও নরম হওয়া

-         মাথার সামনে হাড় বড় হওয়া ও নরম  তালু দেরীতে শক্ত হওয়া ইত্যাদি।

-         হাত, পায়ের হাড় আকাবাঁকা হওয়া, মেরুদন্ড বাকা হওয়া ইত্যাদি

 

 

কারণসূহঃ যে সব কারণে ও বিষয়ের জন্য রিকেটস্‌ হতে পারে, তা হল

-         সূর্যের আলোর সংস্পর্শে খুব কম আসা

-         গায়ের চামড়া অত্যধিক কালো হলে সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন কম তৈরী করতে পারে, ফলে ঝুঁকি বেশি।

-         খাদ্যে ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকলে।

-         মায়ের যদি ভিটামিন ডি এর ঘাটতি থাকে, আর ঐ বাচ্চা যদি দীর্ঘদিন শুধু ঐ মায়ের বুকের দুধই  খায়, অন্য খাবার না খায়।

-         লিভার, কিডনী বা অন্ত্রের রোগের কারণে যদি ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়াম কম হজম হয়।

-         এমন কোন রোগ যার ফলে চর্বি জাতীয় খাদ্য হজম হয় না।

 

ভিটামিন ডি শরীরে কি কাজ করে?

আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি প্রয়োজন, কেননা তা ক্যালশিয়াম ও ফসফরাস হজম করতে সাহায্য করে। আর এই খনিজ দুটিই আমাদের হাড় তৈরী করা ও দৃঢ় করতে অতি প্রয়োজনীয়। ফলে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে শরীর ক্যালশিয়াম ও ফসফরাস হজম করতে পারে না‌, যার ফলশ্রুতিতে রিকেটস্‌ দেখা দেয়।

          আমাদের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি এর শতকরা ৮০ ভাগই আসে সূর্যের আলোতে থাকার ফলে। যখন সূর্যের আলো আমাদের চামড়ায় পড়ে, সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি (অতি বেগুনি রশ্মি) আমাদের চামড়ায় ১টি উপাদান ৭-ডি হাইড্রোকোলেস্টোরল ভিটামিন ডি তে রুপান্তর করে এ ছাড়া বাকি ২০ ভাগ ভিটামিন ডি আসে বিভিন্ন খাবার থেকে, তাই শুধু খাবারের মাধ্যমে চাহিদা পুরণ সম্ভব না।

          শরীরে ভিটামিন ডি তৈরী বা খাদ্যের মাধ্যমে আহরনের পরে তা একটি হরমোনে রুপান্তর হয়-লিভার ও কিডনীর সাহায্যে)। এর পর এই হরমোন আমাদের হাড়, দাঁত ইত্যাদি তৈরী ও মজবুত করতে সাহায্য করে (মিনারালাইজেশনের মাধ্যমে)।

যাদের রোগ হবার ঝুঁকি বেশিঃ

 à¦¯à§‡ সব বাচ্চাদের রিকেটস্‌ হবার ঝুঁকি বেশি তারা হল-

-         যারা ভিটামিন ডি ঘাটতিযুক্ত মা এর গর্ভে জন্মলাভ করেছে।

-         যারা সূর্যের আলোর সংস্পর্শে একেবারেই কম যায়।

-         এতই অসুস্থ্য যে, ঘরের বাইরে বের হতে পারে না।

-         জন্মগতভাবে খুবৃই কালো চামড়া।

-         বিশেষ ধরনের অন্ত্রের রোগ ও লিভারের রোগ যার ফলে ভিটামিন ডি হজম হতে পারে না।

-         যারা শুধুমাত্র সব্জি ভোজী, দুধ বা ল্যাকটোস যুক্ত খাবার খায না।

 

রোগ নির্ণয়ঃ  রোগের ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা ছাড়াও কিছু পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করা যায়। যেমন-

-         রক্ত পরীক্ষা

-         লম্বা হাড়ের এক্স-রে

-         বোন স্ক্যান

চিকিৎসাঃ

-         সূর্যের আলোতে যাওয়া

-         ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি যুক্ত খাদ্য গ্রহণ।

-         ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ ঔষধ সেবন।

-         লিভার, কিডনী ও অন্ত্রের রোগের চিকিৎসা।

-         হাড় বুক বেশি বাকা হয়ে গিয়ে থাকলে প্রয়োজনে অপারেশন।

দীর্ঘমেয়াদী ফলাফলঃ

ভিটামিন ডি গ্রহণের ফলে খুব দ্রুত রোগ সারতে থাকে। কিছু দিনের মধ্যেই এক্স-রে তে প্রাপ্ত সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। শিশু বাচ্চা সঠিক চিকিৎসা পেলে বড় হবার সাথে সাথে  হাড়ের বিকৃত আকৃতিও ঠিক হয়ে যায়। তবে কৈশর পর্যন্ত চিকিৎসা না করালে আকৃতিও ছোট হবে।

 

রোগ প্রতিরোধঃ

ক. শিশুকে সঠিক মাত্রায় সূর্যর আলোতে নিতে হবে। সকালে ও বিকেলে মাত্র কয়েক মিনিট সূর্যের আলোর সংস্পর্শে এলই ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। তবে কড়া রোদে, যখন অতি বেগুনি রশ্মির মাত্রা বেড়ে যায়, সে   

সময় বেশিক্ষণ রোদে থাকলে ত্বকের ক্যান্সার হবার ঝুঁকি থাকে। তাই অবস্থা বুঝে পরিমিত ভাবে সূর্যের আলোতে জরুরী।

খ. খাদ্যঃ  à¦ªà§à¦°à¦¤à¦¿à¦¦à¦¿à¦¨ ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্র গ্রহণ করতে হবে। সাধারণত তৈলাক্ত মাছ, কলিজা, ডিম, দুধ ইত্যাদিতে প্রাকৃতিকভাবেই এবং কিছু প্রস্তুতকৃত খাদ্যে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়াম পাওয়া যায়।

গ. সাপ্লিমেন্ট : ডাক্তারের পরামর্শে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ ঔষধ সেবন করতে হতে পারে।

ঘ. সূর্যের আলো ভিটামিন ডি, আল্ট্রাভয়োলেট নশ্মি ও ত্বকের ক্যান্সার ইত্যাদি বিষয়ে ধারণা থাকতে হবে, যাতে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি না হয়, আবার ত্বকের ক্যান্সার না হয়বিস্তারিত

-->

21-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

 

বাচ্চাদের গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস

 

অন্ত্রের ইনফেকশন হলে বমি ও পাতলা পায়খানা হয়। এ অবস্থাকে বলে গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই রোগ খুবই কমন, বিশেষ করে বেশী ছোট বয়সের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই রোগ খুবই মারাত্নক রুপ ধারন করতে পারে। গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসে যে বমি হয়, অনেক সময় তা ১দিনেই ভাল হয়ে যায়।কিন্তু পাতলা পায়খানা ভাল হতে ৮-১০ দিন সময় লাগে।বেশী পরিমান পাতলা পায়খানা হলে পানিশুন্যতা দেখা দিতে পারে, যা শিশুর জন্য অতি মারাত্নক।

 

ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হয়ঃ

গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া দায়ী। এমনকি একেক বার একেক ধরনের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া হতে পারে। এবং এটি খুব দ্রুত ছড়াতে পারে।

 

তরল খাবার ও পানি পান করা জরুরীঃ

গ্যাস্ট্র্র্র্র্রোএন্টেরাইটিসের সময় বারবার পানি ও তরল খাবার খেতে হবে। ৬ মাসের কম

 

বয়সী শিশুরা খুব দ্রুত অসুস্থ্য হয়ে পরে তাই তারা যাতে পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করে।যদি মনে হয় পানি বা স্যালাইন খেয়ে আরও বেশী বমি বা পায়খানা হচ্ছে,তবুও পানি বা স্যালাইন খেয়ে যেতে হবে।তবে বেশী বমি করলে ১৫ মিনিট পরপর অল্প অল্প করে পানি বা স্যালাইন খেতে দিতে হবে।

 

বুকের দুধ ও কৌটার দুধঃ

বাচ্চা যদি বুকের দুধ খায়, সে ক্ষেত্রে বেশী বেশী করে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। আর যদি কৌটার দুধ বা গরুর দুধ খায়, সে ক্ষেত্রে প্রথম ১২ঘন্টায় বাইরের দুধ দেয়া যাবে না।

 

পানি বা স্যালাইন খাওয়াতে হবে, তারপর থেকে অল্প অল্প করে বার বার খাবার (দুধ) দিতে হবে।

 

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেনঃ

নিচের লক্ষণগুলো থাকলে দ্রুত ডাক্তার বা হাসপাতালে যাবেন।

- মুখ,জিহবা শুকনো।

- অনেক্ষন ধরে প্রস্রাব করছে না।

- চোখ ডেবে গেছে।

- অজ্ঞান,খিচুনি বা খুবই দুর্বল।

- যা খায় সবই বমি করে ফেলে দেয়।

- হাত,পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।

 

বারবার তরল খাবার খাওয়ানঃ

পানি শুন্যতা রোধ করার জন্য শিশুকে বারবার তরল খাবার দিতে হবে।যেমন:

- সঠিক নিয়মে বানানো খাবার স্যালাইন:

- চিনির পানি (১কাপ পানিতে ১চা চামচ চিনি)।

- ফলের রস (৪ চা চামচ পরিমানকাচা ফলের রস)।

- লেবুর শরবত।

 

সকল স্বাভাবিক খাবার খাবেঃ

বমি,পাতলা পায়খানা হলে অনেক সময় বাচ্চারা খেতে চায়না।এতে দুশ্চিন্তার খুব বেশী কারন নেই।তবে বাচ্চা যাতে প্রচুর পানি বা তরল খায় সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে। বাচ্চা যখনই খেতে চাবে তাকে স্বাভাবিক সব ধরনের খাবার (বয়স অনুযায়ী) খাবারই খেতে দেয়া যাবে।তবে ভাজা, পোড়া,চকলেট,জুস ইত্যাদি খেতে দেয়া ঠিক হবে না।

ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করাঃ

বাড়ির বা আশে পাশের অন্যান্যরা যাতে অসুস্থ্য হয়ে না পড়ে সে জন্য-

 

- বাড়ির প্রত্যেকে যেন খাবার পূর্বে, টয়লেট ব্যবহারের পরে সাবান দিয়ে ভালভাবে হাত পরিষ্কার করে।

- অসুস্থ্য বাচ্চা সহ অন্যান্য বাচ্চাদের হাত প্রতিবার খাবার পূর্বে ও টয়লেট ব্যবহারের পরে হালকা গরম পানিতে সাবান দিয়ে ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

- বাচ্চার প্যান্ট,ডায়পার,কাথা ইত্তাদি চেঞ্জ করার পর ভালভাবে হাত ধুতে হবে।

- অসুস্থ্য বাচ্চাকে অন্যান্য বাচ্চা থেকে যথা সম্ভব দূরে রাখতে হবে।

 

যা মনে রাখা প্রয়োজনঃ

১. গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস থেকে মারাত্নক পানি শুন্যতা দেখা দিতে পারে। যা শিশুদের ক্ষেত্রে বিপদজনক।

২. বাচ্চা সহ সবার এই রোগ হলে বেশী পরিমানে পানি, তরল ও স্যালাইন খেতে হবে।

৩. রোগটি সহজে ছড়ায় তাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও সাস্থ্য সচেতন থাকতে হবে।

৪. বিপদ চিহ্ন দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের সরনাপন্ন হতে হবে।

 

 

21-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

বাচ্চাদের জ্বর

      

শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের  à¦šà§‡à§Ÿà§‡ বেড়ে গেলে তাকে জ্বর বলে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তাপমাত্রা ৩৮μ ফা: এর বেশী হলে জ্বর ধরা হয়। জ্বর হল ইনফেকশন হবার একটি লক্ষণ। জ্বর হলে হালকা ঢিলা পোষাক পড়ানো, পর্যাপ্ত পানি পান করানো, বিশ্রাম এবং প্যারাসিটামল ঔষধ খাওয়াতে হবে। তবে ৬ মাস থেকে ৬ বছরের বাচ্চাদের অনেকের জ্বর হলে সাথে সাথে খিচুনি হয়, যা দেখতে  à¦–ুবই মারাত্মক। এছাড়া ৩ মাসের কম বয়সে জ্বরও বেশ ক্ষতিকর। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা দরকার। তবে সব জ্বরই সবসময় খুব মারাত্মক, ব্যাপারটা তা নয়।

 

জ্বরের লক্ষণঃ

বাচ্চা গরম বোধ করবে, মুখ চোখ লালচে হয়ে উঠবে, হৃদ কম্পন বেড়ে যাবে, শ্বাস প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যাবে, ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়বে, হালকা কাপুনি হতে পারে।

 

বাচ্চার জ্বর হলে আপনার করনীয়ঃ

   Æ à¦¬à¦¾à¦šà§à¦šà¦¾à¦•à§‡ হালকা, ঢিলাঢালা জামা পড়ান

   Æ à¦ªà§à¦°à¦šà§à¦° পানি বা তরল খাবার খেতে দিন।

   Æ à¦¹à¦¾à¦²à¦•à¦¾ কুসুম গরম পানি দিয়ে গা, হাত, পা মুছে গা ঠান্ডা রাখুন।

   Æ à¦¸à¦ à¦¿à¦• পরিমানে, সঠিক মাত্রায় প্যারাসিটামল ঔষধ দিন, ৬ ঘন্টা পরপর।

   Æ à¦ à¦¾à¦¨à§à¦¡à¦¾ পানি দিয়ে গোসল করাবেন না।

 

বাচ্চার খিচুনি হলেঃ

অনেক বাচ্চার ক্ষেত্রে ৬মাস থেকে ৬ বছরের জ্বর হলে সাথে খিচুনী দেখা দেয়। অনেকে একে ফিট লাগা বলে। এতে বাচ্চার চোখ উল্টে যায়, মুখ দিয়ে লালা, ফেনা ঝড়ে, গা, হাত পা শক্ত হয়ে যায়, স্থীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে, হাত পা ঝাকি দিতে থাকে। এমন অবস্থায় অনেক সময় বাচ্চার শ্বাসকষ্ট হয় এবং অজ্ঞান হয়ে পড়ে।

 

করণীয়ঃ

দেখতে খুব মারাত্মক মনে হলেও খিচুনী খুব কম ক্ষেত্রেই মারাত্মক হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কয়েক মিনিট পরই খিচুনী থেমে যায়। আবার কখনও কখনও ১৫ মিনিট স্থায়ী হয়। খিচুনী হলে -

   Æ à¦¬à¦¾à¦šà§à¦šà¦¾à¦•à§‡ একপাশে কাত করে শোয়াবেন, চিৎ বা উপুর করে শোয়াবেন না।

   Æ à¦¬à¦¾à¦šà§à¦šà¦¾ যেন বমি গিলে না ফেলে তা লক্ষ রাখতে হবে।

   Æ à¦¯à¦¦à¦¿ বার বার হয় বা বেশীক্ষন স্থায়ী হয়, হাসপাতালে নিয়ে যান।

   Æ à¦–à¦¿à¦šà§à¦¨à§€ বন্ধ হলে দ্রুত ডাক্তারের শরনাপন্ন হোন।

 

জ্বর হলে কখন ডাক্তারের নিকট যাবেনঃ

জ্বর হলে ২-৩ দিন বাসায় নিজেই চিকিৎসা করতে পারেন। তবে দ্রুত ডাক্তারের নিকট যেতে হবে, যদি -

    Æ à¦¬à¦¾à¦šà§à¦šà¦¾ বেশী অসুস্থ হয়ে পড়ে, নেতিয়ে যায়।

    Æ à¦˜à¦¾à§œ শক্ত হয়ে যায়, চোখে আলো অসহ্য বোধ হয়।

    Æ à¦¶à§à¦¬à¦¾à¦¸ কষ্ট হয়।

    Æ à¦•à§‹à¦¨ কিছু খায় না বা পান করতে পারে না।

    Æ à¦¯à¦¾ খায় তার সব বমি করে ফেলে দেয়।

    Æ à¦ªà§à¦°à¦¾à§Ÿ অবচেতন বেশী ঘুম ঘুম ভাব।

    Æ à§ªà§® ঘন্টা পরও কোনও উন্নতি হচ্ছে না।

    Æ à§© মাসের কম বয়স হলে।

 

হিট স্ট্রোক জ্বর নয়ঃ

প্রচন্ড গরম বা তাপের কারনে হিট স্ট্রোক হয়। এতে শরীর প্রচন্ড গরম হয়, তবে এটি জ্বর নয়, কেননা এটি ইনফেকশনের জন্য হয় না। তবে এটি খুবই বিপদজনক। তাই দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।

 

মনে রাখার মতঃ

          Æ à¦œà§à¦¬à¦° বাচ্চাদের মধ্যে খুবই কমন, প্রায়শই হয়।

          Æ à¦œà§à¦¬à¦° এবং খিচুনী প্রায়ই তেমন মারাত্মক হয় না।

          Æ à¦œà§à¦¬à¦°à§‡à¦° আসল কারন বের করে তার চিকিৎসা করা দরকার।

 

 

21-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

 

ফেব্রাইল কনভালশন /   জ্বর ও খিচুনী

 

কোন কোন বাচ্চাদের জ্বর হলে খিচুনী দেখা দেয়। একে বলা হয় ফেব্রাইল কনভালশন। এটি মৃগী রোগ না, তাই মস্তিষ্কের তেমন কোন ক্ষতি হয় না। সাধারনত ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী বাচ্চাদের এই সমস্যা দেখা দেয়, এবং যখন জ্বর খুব বেশী হয় তখনই খিচুনী দেখা দেয়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এই খিচুনী  থেকে ৩ মিনিট স্থায়ী হয়, তবে ১৫ মিনিট পর্যন্ত হতে পারে। শতকরা ৫ ভাগ, অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিশুর মধ্যে 1 জনের ক্ষেত্রে এই রোগ দেখা যায়। তবে যাদের একবার ফেব্রাইল কনভালশন হয়, তাদের শতকরা ৩০ ভাগের আবার হবার সম্ভাবনা থাকে এবং এটি কখন হবে তা আগে থেকে জানার বা বোঝার উপায় নেই।

     

লক্ষণ সমূহঃ

    Æ à¦œà§à¦žà¦¾à¦¨ হারিয়ে ফেলা

    Æ à¦¹à¦¾à¦¤, পা, ঝাকি দেয়া, কাপুনি হওয়া

    Æ à¦¶à§à¦¬à¦¾à¦¸ কষ্ট হওয়া

    Æ à¦®à§à¦–à§‡ ফেনা উঠা, চামড়া ফ্যাকাশে বা নীল হওয়া

    Æ à¦šà§‹à¦– উল্টে দেয়া, শুধু চোখের সাদা অংশ দেখা যায়

    Æ à¦¸à§à¦¥à¦¿à¦° দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা

     Æ à¦–à¦¿à¦šà§à¦¨à§€à¦° পরেও ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় অর্ধচেতন থাকা, কাউকে না চেনা।

 

পিতা মাতার জ্ঞাতার্থেঃ

যদিও খিচুনি দেখতে খুবই মারাত্মক এবং ভীতিকর, তবে বাবা, মার জন্য যা জানা জরুরী তা হলঃ

    Æ à¦–à¦¿à¦šà§à¦¨à§€à¦¤à§‡ বাচ্চা কোন ব্যাথা পায় না বা কষ্ট হয় না।

    Æ à¦¯à§‡à¦¹à§‡à¦¤à§ এটি স্থায়ী রোগ নয় তাই নিয়মিত ঔষধও প্রয়োজন হয় না।

    Æ à¦…à¦²à§à¦ª সময় স্থায়ী হয় এবং এতে মস্তিষ্কের তেমন কোন ক্ষতি হয় না।

    Æ à¦¬à¦¾à¦šà§à¦šà¦¾ পরবর্তিতে সুস্থভাবেই বেড়ে হয়।

    Æ à¦¬à¦¾à¦°à¦¬à¦¾à¦° খিচুনী হলে বা বেশীক্ষণ স্থায়ী হলে মলদ্বারে ভায়াজিপাম সাপোজিটরি বা ইনজেকশন দেয়া যেতে পারে, ডাক্তারের পরামর্শে।

 

হঠাৎ জ্বর হলেঃ

সাধারনত ফ্রেবাইল কলভানশন হয় যদি হঠাৎ তীব্র জ্বর হয়, তবে। জ্বর হয় হয় মূলত ভাইরাল বা ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশনের কারণে। আর শিশুদের মস্তিষ্ক বড়দের তুলনায় বেশী জ্বরে আক্রান্ত হয়। তাছাড়া এই রোগ অজানা কারনে পারিবারিক ভাবে অবস্থান করে।

 

আপনার করনীয়ঃ

জ্বর হল শরীরের নিজস্ব একটি প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা ইনফেকশনের বিরুদ্ধে, যা অধিকাংশ সময়ই তেমন ক্ষতিকর নয়। তাই জ্বর হলে -

    Æ à¦¬à¦¾à¦šà§à¦šà¦¾à¦¦à§‡à¦°à¦•à§‡ হালকা, ঢিলা জামা কাপড় পড়ান, রুম ঠান্ডা রাখুন, বাচ্চাকে ভারী কাপড়, কাথা, কম্বল দিয়ে ঢাকবেন না।

    Æ à¦ªà¦°à§à¦¯à¦¾à¦ªà§à¦¤ পরিমানে পানি পান করতে বলুন। বারবার অল্প অল্প করে পান করতে দিন।

    Æ à¦ªà§à¦¯à¦¾à¦°à¦¾à¦¸à¦¿à¦Ÿà¦¾à¦®à¦² সিরাপ বা ড্রপ ডোজ অনুযায়ী ব্যবহার করুন।

 

যদি খিচুনী হয় সেক্ষেত্রেঃ

    Æ à¦¸à§à¦¥à¦¿à¦° থাকার চেষ্টা করুন, অযথা ঘাবড়াবেন না।

    Æ à¦¬à¦¾à¦šà§à¦šà¦¾à¦•à§‡ ফ্লোরে শুইয়ে দিন, মাথা কাত করে দিন।

    Æ à¦¬à¦¾à¦šà§à¦šà¦¾à¦° মুখে কোন কিছু দিবেন না।

    Æ à¦¬à¦¾à¦šà§à¦šà¦¾à¦•à§‡ সজাগ করার জন্য ঝাকাঝাকি বা মারবেন না।

    Æ à¦•à¦¤à¦•à§à¦·à¦¨ খিচুনী হল তা লক্ষ রাখুন।

    Æ à§« মিনিটের বেশীক্ষন খিচুনী হলে বা বারবার খিচুনী হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।

 

যা মনে রাখা প্রয়োজনঃ

    Æ à¦…à¦¨à§‡à¦• বাচ্চাদের হঠাৎ প্রচন্ড জ্বর হলে খিচুনী হয় যাকে ফেব্রাইল কনভালশন বলা হয়।

    Æ à¦°à§‹à¦—à¦Ÿà¦¿ এপিলেন্সি নয়, সে কারণে এতে মস্তিষ্কের কোন স্থায়ী ক্ষতি হয় না, দেখতে যতই ভয়ঙ্কর লাগুক।

    Æ à§« মিনিটের বেশীক্ষন স্থায়ী হলে বা বার বার হলে অথবা ৬ মাসের কম বয়সে হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।

 

 

21-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

 

বাচ্চাদের কাশি ও শ্বাসকষ্ট

 

শিশু ও বাচ্চাদের অনেক ধরনের অসুখের মধ্যে কাশি ও শ্বাসকষ্ট সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। কাশি মানেই যে রোগ, তা কিন্তু নয়। বরং কাশি হল আমাদের স্বাভাবিক এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি রিফ্লেক্স ব্যবস্থা, যা আমাদের শ্বাসনালীকে পরিস্কার রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া বিভিন্ন কারণেই বাচ্চাদের  কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হতে পারে। যেমন-

  • কমন কোল্ড,
  • বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমণ,
  • শ্বাস আটকে যাওয়া (ধোঁয়া/ধূলা)
  • ক্রুপ,
  • ব্রংকিওলাইটিস,
  • হে-ফিভার(ময়লা,পোকামাকড়,পশুপাখির পশম ইত্যাদি কারণে হাচি,কাশি,নাক দিয়ে পানি ঝরা)
  • হাপানী,
  • হুপিংকাশি,
  • নিউমোনিয়া ইত্যাদি।

এদের সবগুলিই যে মারাত্মক রোগ তা নয়, বরং বেশিরভাগ বাসায় যত্ন ও সামান্য ঔষধে ভালো হয়। তবে কোন কোন সময় কাশি ও শ্বাসকষ্ট মারাত্মক হতে পারে, এমনকি দম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।

কাশি ও শ্বাসকষ্ট মানেই হাপানি নয়:

বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে এবং বুকে ইনফেকশন হলে কাশি ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তার মানে এই নয় যে, বাচ্চার হাপানী হয়েছে।

এমনকি ১২ মাস বয়সের পূর্বে হাপানী বলা উচিত নয়, কেননা ততদিনে শ্বাসনালীর দেয়ালের মাংসপেশী সুগঠিত হয় না।

কখন হাসপাতালে যাবেন?

সাধারণ ঠান্ডা ও হালকা শ্বাসকষ্ট বাসায় যত্ন ও ঔষধেই ভাল হয়ে যায়। তবে নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে-

-          শ্বাকষ্ট: যদি বাচ্চার শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, ঘন ঘন শ্বাস নেয় এবং অনিয়মিতভাবে শ্বাস নেয়।

-          শব্দ করে শ্বাস নেয়া: যদি বাচ্চার শ্বাসের সাথে কাশি বা ঘড় ঘড় শব্দ হয়।

-          চামড়ার রং পরিবর্তন হলে: কাশি বা শ্বাসকষ্টের কারণে বাচ্চা নীল বর্ন বা খূব ফ্যাকাশে হয়ে গেলে।

-          অতিরিক্ত দূর্বল: যদি বাচ্চা একেবারে নেতিয়ে  পড়ে, খুব দূর্বল হয়ে যায়।

-          চকিং : হঠাৎ কোন কিছু শ্বাস নালীতে ঢুকে গেলে বাচ্চা হঠাৎ করে প্রচন্ড কাশতে শুরু করবে। অথচ আগেই ভাল ছিল। অনেক সময় খেতে গিয়ে, গিলতে গিয়ে, দুষ্টামি করে কিছু গিলে ফেলতে গিয়ে এমন হতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবে।

-          নাক বন্ধ হলে: সর্দির কারণে যদি নাক ভেতরে বন্ধ হয়ে যায়।

-          প্রচন্ড জ্বর: 1000F  à¦à¦° অধিক জ্বর হলে।

-          খাদ্য বা পানি একদম খেতে না পারলে।

চিকিৎসা:

সাধারণ চিকিৎসা: বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কয়েক দিনে বা ১-২ সপ্তাহে কাশি ভাল হয়ে যায়। ৩ সপ্তাহের বেশিদিন একটানা কাশি থাকলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। তা ছাড়া বাসায় সাধারণভাবে কাশি ও শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা সম্ভব । যেমন-

-    বাচ্চাকে আশ্বস্ত করুন, শান্ত করার চেষ্টা করুন।

-    বার বার অল্প করে তরল জাতীয় খাবার খাওয়ান। গলা সতেজ রাখুন।

-    ধুমপান, ধোয়া থেকে দূরে রাখুন।

-    সাধারণত ভাইরাস দিয়ে হয় বলে এন্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না।

-    দুধ মধু, তুলসী পাতার রস, চা, লেবুর শরবত ইত্যাদি খাওয়াতে পারেন।

-    জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল খাওয়ানো যাবে।

 

মনে রাখা প্রয়োজন:

1.       কাশি ও শ্বাসকষ্ট বাচ্চার জন্য সাথে সাথে বাবা মার জন্য খুবই কষ্টদায়ক ও অস্বস্তিকর. তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ রাগ এমনিতেই সেরে যায়।

2.      যদি কোন ধরনের বিদপচিহ্ন থাকে, বাচ্চা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে বা দীর্ঘদিন যাবৎ কাশি ভাল না হয়, সেক্ষেত্রে ডাক্তারের নিকট যেতে হবে।

3.      ধুমপান, গাড়ীর ধোঁয়া, ধূলাবালি ইত্যাদি বাচ্চাদের  শ্বাসকষ্ট, কাশি ও শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশনের জন্য জন্য অনেকাংশে দায়ী।

 

 

19-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

 

শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিপূরক খাবার:

 

জীবনের প্রথম বছরে শিশুরা দ্রুত বেড়ে ওঠে, তাই এসময়ে শিশুর সঠিক পুষ্টির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ। কেননা জীবনের প্রথম বছরগুলোতে প্রাপ্ত পুষ্টি শিশুর শৈশবকালীন বিকাশ এবং পরবর্তী কালে পূর্ণ বয়ষ্ক অবস্থায় সুস্বাস্থ্যের একটি বড় নির্ধা রক। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং পুষ্টিবিদগণ জীবনের প্রথম বছরগুলোতে শিশুর পুষ্টিগত প্রোয়োজন

অনুযায়ী দিক নির্দেশনা স্থির করেছেন।

জন্মের পর প্রম ৬ মাস মায়ের দুধ শিশুর জন্য আদশ © খাবার। বুকের দুধে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা যায় না এবং এর সামগ্রিক রাসায়নিক গঠনপ্রকৃতি শিশুদের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত গুঁড়ো দুধসহ যেকোনো বিকল্প খাবারের চাইতে অনেকাংশে উৎকৃষ্টতর। তবে, শিশুর বয়স ৬ মাস হলেই তাকে অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার খেতে দিতে হবে।

 

বাড়ন্ত শিশুর পরিপূরক খাবার

ছয় মাস বয়সের পর থেকে শিশুকে মায়ের দুধের পাশাপাশি যেসব বাড়তি খাবার খাওয়াতে হয়

তাকেই পরিপূরক খাবার বলা হয়। পরিপূরক শব্দটির অর্থ হচ্ছে একটাকে বিকল্প হিসেবে বহার

করে অন্যটির অভাব পূরণ করা। শিশুর জন্মের পর তার প্রথম ও প্রধান খাদ্য মায়ের দুধ। বিশ্ব ¯^v¯’¨

সংস্থা ও ইউনিসেফ-অনুমোদিত সুপারিশমালা অনুযায়ী ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধই শিশুর চাহিদা পূরণ করতে পারে। এরপর পরিপূরক খাবার না-দিলে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়; এর সঙ্গে বাধাগ্রসত্ম হয় তার মানসিক বৃদ্ধি ও মেধাবিকাশের প্রকৃয়াও। জন্মের পর প্রথম ছয় মাসে শিশুর ওজন হয় জন্মকালীন ওজনের চেয়ে দ্বিগুণ, এক বছরে তিনগুণ, এবং দুই বছেও চারগুণ। শিশুর এই বৃদ্ধির প্রকৃয়া সুষ্ঠুভাবে কার্যকর রাখার জন্য বাড়তি পুষ্টিযুক্ত খাবার প্রয়োজন। এছাড়াও, যেসব কারণে পরিপূরক খাবার শিশুর জন্য অপরিহার্য সেগুলো হচ্ছে:

১। ছয় মাস বয়স পূর্ণ হওয়ার পর থেকে শিশুর যে-পরিমাণ দুধের প্রয়োজন সেই পরিমাণ দুধ মায়ের কাছ থেকে পাওয়া যায় না।

২।  à¦¶à¦¿à¦¶à§à¦° জন্মের ৬ মাস পর দেহের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপাদান দুধে থাকে না।

৩। দুধে ভিটামিন সি ও লৌহের পরিমাণ এত কম থাকে যে, এতে শিশুর চাহিদা পূরণ হয় না।

৪। খাবার হজম করার মতো প্রয়োজনীয় এনজাইম তখন তৈরি হয়; ফলে, শিশুরা শক্ত খাবার

সহজেই হজম করতে পারে।

৫। শিশু চিবিয়ে খাওয়ার প্রকৃয়া শিখতে শুরু

করে।

তাই শিশুর ৬ মাস বয়স পূর্ণ হওয়ার পর নিয়মমাফিক পরিপূরক খাবার দেওয়াই শ্রেয়। খুব দেরিতে পরিপূরক খাবার দেওয়া শুরু করলে অনেক সময় শিশুর নতুন খাবার গ্রহণে অনিচ্ছা প্রকাশ পায়। পরিপূরক খাবার প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু প্রকৃয়া বা প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। কেননা হঠাৎ

করে শিশুকে দুধ পানের অভ্যাস পরিবর্তন করো পরিপূরক খাবারে অভ্যস্ত করা যায় না।

পরিপূরক খাবার দেওয়ার ক্ষেত্রে নিচে উলেস্নখিত বিষয়গুলো মেনে চলা উচিত:

১। পরিপূরক খাবার খাওয়ানোর  পাশাপাশি মায়ের দুধ অবশ্যই খাওয়াতে হবে।

২। শিশুকে প্রতিবার কেবল একটি করে নতুন খাবার দেওয়া উচিত।

৩। নতুন খাবারটি পরপর কয়েকদিন দিতে হবে, কারণ এতে শিশু নতুন খাবারটির স্বাদ গ্রহণে অভ্যস্ত হয় এবং শিশু তা হজম করতে পারছে কি না তা বোঝা যাবে।

৪। শিশুকে প্রথমে অল্প পরিমাণে খাবার দিয়ে  তাতে অভ্যস্ত করতে হবে। পরে আস্তে-আস্তে বয়স অনুযায়ী খাবারের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। ৫। খাবারটি বাটি থেকে চামচে করে খাওয়ানোর অভ্যাস করতে হবে

৬। শিশুকে কখনোই নতুন খাবার খাওয়ার ব্যাপারে জোর-জবরদস্তি করা যাবে না

৭। শিশুকে নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়াতে হবে

৮। শিশুকে টাটকা ও তাজা খাবার খাওয়াতে হবে ৯। নতুন কোনো পরিপূরক খাবারে   যখন শিশুটি অভ্যস্ত হয়ে উঠবে, তখন পছন্দনীয় খাবারের পাশাপাশি অল্প-অল্প করে অন্য নতুন খাবার যোগ করতে হবে।

বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের পরিপুরক খাবার তৈরিঃ

বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের পরিপুরক খাবার তৈরি করা যেতে পারে। শিশুদের উপযোগী সুষম খাবার তৈরির জন্য বিভিন্ন খাদ্য-উপাদানের মিশ্রনে খাবার তৈরি করা আবশ্যক। কয়েকটি মিশ্রনের উপাদান বিশিষ্ট খাবারের নমুনা নিচে উল্লেখ করা হলো :

১. দ্বিমিশ্র খাবার:

চাল+ডাল বা ছোট মাছ বা গাঢ় সবুজ শাকশব্জি

২.ত্রিমিশ্র খাবার:

চাল+ডাল বা ছোট মাছ+শাক-সব্জি

৩. চৌমিশ্র খাবার:

চাল+ডিম বা ছোট মাছ+ডাল+শাক-সব্জি

 

আবার, শিশুর বয়স অনুযায়ী খাদ্যের ঘনত্ব্ব ও পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত। ছোট শিশুকে বেশি ঘন খাবার খাওয়ালে বা পরিমাণে বেশি খাওয়ানো হলে তা সে বমি করে ফেলে দিতে পারে। তাই অবশ্যই শিশুকে তার বয়সের উপযোগী,

পরিমাণমত খাবার প্রদান করতে হয়। নিচে বিভিন্ন বয়সের শিশুর উপযোগী খাদ্যের কিছু নমুনা দেওয়া হলো:

ক) ৬-৮ মাস বয়সের শিশুর জন্য: নরম খিচুড়ি, সিদ্ধ ডিমের সাদা অংশ, সিদ্ধ সব্জির ছাঁকা রস

খ) ৯-১২ মাস বয়সের শিশুদের জন্য: আলু ভর্তা, দুধে-ভেজানো রম্নটি, ক্ষীর, পাকা ফলের টুকরা

গ) ১-২ বছর বয়সের শিশুদের জন্য: পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য রানড়বা-করা ভাত, ডাল,

এবং শাক-সব্জি, এক টুকরো মাছ-মাংস-কলিজা একসাথে চটকিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।

 

মনে রাখতে হবে সবসময় কেবল খিচুড়ি, হালুয়া বা দুধযুক্ত সুজির একটিমাত্র খাওয়ালেই চলবে না। শিশুদের খাবারে যেন শর্করা, আমিষ, ভিটামিন, খনিজলবণ, সেড়বহজাতীয় খাবার ও পানি উপযুক্ত পরিমাণে থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বয়স বৃদ্ধির সাথে-সাথে শিশুর খাদ্যে বৈচিত্র্য আনা যেতে পারে। এসময় দই, ক্ষীর, কাস্টার্ড, পুডিং, ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে, যা শিশুর জন্য খুবই উপকারী এবং পরিপূরকও বটে

 

ডায়রিয়া এবং অপুষ্টি

বিশ্বজুড়ে শিশুমৃত্যুর প্রথম কারণ নবজাতকের

স্বাস্থ্যগত নানা জটিলতা, যার পরপরই আসে দ্বিতীয় কারণ ডায়রিয়ার কথা। এক্ষেত্রে ৬ থেকে ১২ মাস বয়সের শিশুরা বেশি ঝুঁকিপ্রবণ কারণ এ-বয়সে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা পুরোপুরি পরিপক্কতা লাভ করে না, মায়ের দেহ থেকে পাওয়া জীবাণু প্রতিরোধক উপাদানসমূহ ধীরে ধীরে দুর্বল হয় পড়ে এবং বুকের দুধের পাশাপাশি প্রদত্ত পরিপূরক খাবারের মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

 

শিশুদের দেহে রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার সঞ্চালনে পরিপূরক খাবারের ভূমিকা

রোগজীবাণু বিস্তারে সহায়ক একটি মাধ্যম হলো খাবার। তাই পরিপূরক খাবার শিশুকে পরিপাক তন্ত্রে রোগসৃষ্টিকারী জীবাণুর সংস্পর্শে নিয়ে আসতে পারে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে-জীবাণু লক্ষ্য করা গেছে, তা হলো ইশকেরিশিয়া কোলাই; অন্যগুলো হলো: শিগেলা, ভিব্রিও কলেরি এবং সালমোনেলা।

একটি গুরুতর বিষয় হলো, ব্যাকটেরিয়ার কারণে সামান্য সংক্রামিত খাবারের জীবাণুও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বহুগুণ বৃদ্ধি পেতে cv‡iwe‡kl করে ২০-৪০° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা খাবারের বেলায় এমন ঘটেবিস্তারিত

-->

19-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

 

জন্মগত ঠোঁট কাটা ও তালুকাটা

জন্মগতভাবে অনেক বাচ্চার মুখের উপরের তালু এবং অনেক সময় ঠোঁট দুই পাশ থেকে এসে মাঝ বরাবর মিলতে ব্যর্থ হয়, ফলে তালু ও ঠোট এর মাঝখানে ফাকা থাকে। এরকম ফাঁকা/কাটা মুখের একপাশে বা দুই পাশের থাকতে পারে। প্রতি ৬০০-৮০০ বাচ্চার মধ্যে গড়ে ১টি শিশুর জন্মগত তালু ও ঠোট কাটা থাকে। এর সঠিক কারণ যদিও জানা নেই, তবে জীনগত সমস্যা কিছুক্ষেত্রে দায়ী। বেশিরভাগ সমস্যাই অপারেশনের ফলে সমাধান করা সম্ভব এবং বাচ্চার মুখশ্রী ও  কথা বলা সব স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।

কিভাবে হয়? 

গর্ভাবস্থায় চতুর্থ সপ্তাহে (প্রথম মাসের শেষের দিকে) বাচ্চার মুখমন্ডল তৈরী হওয়া শুরু হয়, দুই পাশ থেকে দুই দুই ভাগে। ৬-৮ সপ্তাহে দুপাশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে একত্রিত হয়ে বাচ্চার মুখের উপরের তালু (Hard palate) তৈরী হয়। পরে একত্রিত স্থান থেকে সামনের দিকে ও পেছনদিকে অগ্রসর হয়ে যথাক্রমে ঠোট ও আলজিহবা গঠিত হয়। গর্ভের ১০ম সপ্তাহে বাচ্চার মুখ পুরোপুরি গঠিত হয় এবং নাক আলাদা হয়ে নির্দিষ্ট স্থানে আসতে থাকে।

অনেক ক্ষেত্রে দুই পাশ থেকে এসে তালু এবং কখনও ঠোট পুরোপুরি মিলে না, মাঝখানে ১টি ফাঁকা স্থান থাকে। কখনও তালুর পেছনের তালুতে মাঝখানে ফাঁকা থাকে। ঠোঁট ও তালু এর যে কোনটি অথবা  উভয়টি কাটা থাকার

 

শতকরা হার হল-

-    শুধু ঠোটে কাটা-প্রায় ২৫ভাগ;

-    শুধু তালুতে কাটা-প্রায় ২৫ ভাগ;

-    তালু ও ঠোট দুটিই কাটা-প্রায় ৫০ ভাগ।

কারণ:

প্রকৃত কারণ জানা নেই। তবে জীনগত সমস্যা কিছুটা ভূমিকা  রাখে, কেননা এ ধরনের সমস্যা নিয়ে জন্ম নেয়া প্রতি ৩টি বাচ্চার ১ জনের অন্যান্য ক্রুটিও থাকে (ক্রোমোজম বা জীনগত)। তবে বাকী ২ ভাগ ক্ষেত্রে পারিবারিক ইতিহাস থাকে না, এমনি এমনিই হয়। অন্যদিকে ঠোট বা তালু কাটা নিয়ে জন্মানো মা বা বাবার সন্তানদের মধ্যে এই সমস্যা হবার প্রবণতা খুব বেশি নয়। তাছাড়া গর্ভকালীন বাবা বা মায়ের কোন কাজ কর্ম বা আচরনের সাথেও এই সমস্যার কোন যোগ সাজস নেই।

তালু কাটা থাকায় খাবার গ্রহনে সমস্যা:

শিশু দুধ খাবার সময় মায়ের নিপল জিহবার সাহায্যে উপরের তালুর সাথে চাপ দেয় এবং চোয়ালের মাংসপেশির চাপ ও তালুর নরম অংশের চাপে দুধ বের হয়ে আসে। তালুর কাটা/ফাঁকা কতটুকু তার উপর নির্ভর করে, বাচ্চার দুধ খেতে কি পরিমাণ সমস্যা হবে। মূলত এ ক্ষেত্রে তালু কাটা থাকায় জোর চাপ সৃষ্টি করতে পারে না, তা ছাড়া যে নেগেটিভ প্রেসার তৈরী হবার কথা সেটাও তৈরী হয় না। অন্যদিকে বাচ্চার মুখে বেশি বাতাস প্রবেশ করে এবং  বাচ্চার পেট বাতাসে ভর্তি হয়ে যায়।

কিভাবে খাওয়াবেন?

বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতির মধ্যে যেটি সুবিধাজনক হয় সেভাবেই খাওয়াতে হবে। এক্ষেত্রে ডাক্তার, নার্সের পরামর্শ নেয়া জরুরী। পদ্ধতিগুলি হল-

-          বুকের দুধ ব্রেস্ট পাম্প দিয়ে বের করে বোতলে করে খাওয়ানো।

-          বুকের দুধ এবং কৌটার দুধ দুটিই খাওয়ানো যাতে বাচ্চার পুষ্টি ঠিকমত হয়।

-          মা তার দুধ যতটুকু সম্ভব তালুর দিকে চেপে ধরে ফাঁকা স্থান বন্ধ করার চেষ্টা করবনে, যাতে বাচ্চা ভালভাবে টানতে পারে।

-          নরম বোতল/ফিডার ব্যবহার করা যাতে চাপ দিলে দুধ সহজে বের হয়ে আসে এবং লম্বা নিপলযুক্ত বোতল (তালু কাটা বাচ্চাদের জন্য বিশেষভাবে তৈরী) বাবহার করা।

-          অনেক সময় নাকে নল দিয়ে  বাচ্চাকে খাওয়ানো লাগতে পারে।

এ সব বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ানো বেশ কষ্টসাধ্য, অনেক ক্ষেত্রে অসম্ভব। তাই মা এর হতাশ হলে চলবে না।

চিকিৎসা:

ঠোট কাটা থাকলে তা যদিও দেখতে খারাপ দেখায়, কিন্তু বাচ্চা অন্য কোন সমস্যা হয় না, সাধারণত ঠোটের সাথে নাকের কোন এক পাশে বা মাঝখানে ফাঁকা থাকে। বাচ্চার বয়স ৩ মাস হলেই ঠোটের অপারশেন করে জোড়া লাগানো সম্ভব।

 

            তালুর ফাঁকা স্থান অপারেশন করতে হয় ৬ মাস - ১বছরের মধ্যে, কেননা তখন বাচ্চা ২-১ টা কথা বলতে শিখে। অনেক সময় অপারেশনের পরও বাচ্চার কথা বলার সমস্যা থেকে যায়। তালু জোড়া লাগাতে মুখের ভেতরের অংশ থেকে টিস্যু (কলা) নিয়ে ফাঁকা স্থান ভরাট করা হয়। অনেক সময় নাকের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করার জন্য ফ্যারিনগোপ্লাস্টি  নামে আরেকটি অপারেশন করার প্রয়োজন হয়।

            এ সব বাচ্চাদের প্রায়ই কানে ইনফেকশন হয়। সে ক্ষেত্রে নাক-কান-গলার বা শিশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

অন্যান্য চিকিৎসা:

ক্লেফ্‌ট বা কাটা- কোন স্থানে কি পর্যায়ে তার উপর নির্ভর করে আরও বিভিন্ন চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে, যেমন-

-          পরবর্তিতে উপরের তালুর ফলো আপ সার্জারী করা লাগতে পারে।

-          অপারেশনের পূর্বে মাড়ি, চোয়াল সোজা করতে ইলাস্টিক প্রেস ব্যবহার করা লাগতে পারে।

-          অনেক ক্ষেত্রে ১০ বছর বয়সের সময় তালুতে হাড় প্রতিস্থাপন করার প্রয়োজন হয়।

-          দাঁত বা মাড়ির চিকিৎসা।

-          সৌন্দর্য বর্ধনকারী বিভিন্ন অপারশেন।

-          প্রয়োজন অনুযায়ী কোন ১টি বা সবগুলি চিকিৎসাই প্রয়োজন হতে পারে।

বাবা মার জন্য বক্তব্য:

জন্মগত সমস্যা নিয়ে জন্ম নেয়া বাচ্চা-বাবা মার জন্য সবসময়ই কষ্টের। তাছাড়া এত অল্প বয়সে অপারশেন করানো তাদের জন্য ভয়ের ব্যাপার। তবে মনে রাখতে হবে, বর্তমানে অপারেশনের ফলে অধিকাংশ ঠোঁট ও তালু কাটা রোগই সম্পূর্ণ ভাল করা সম্ভব এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সৌন্দর্য, কথা বলা বা খাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোন সমস্যাই অবশিষ্ট থাকে না।

            বাংলাদেশে শিশু সার্জারী ও প্লাস্টিক এন্ড রিকন্ডাকটিভ সার্জারী বিভাগে এ অপারেশন করা হয়। এছাড়াও প্রতিবছর বিভিন্ন দেশি বিদেশী  à¦à¦¨.জি.ও ক্যাম্প করে এই ত্রুটি দূর করে থাকে।

যা মনে রাখতে হবে:

1.       গর্ভাবস্থায় মুখের গঠন এর সময় দুই পাশ থেকে কোষ এসে যদি পুরোপুরি মিলতে ব্যর্থ হয় তবে জন্মগত ঠোঁট ও তালুকাটা শিশুর জন্ম হয়।

2.      এর প্রকৃত কারণ অজানা, তবে তিন ভাগের এক ভাগের ক্ষেত্রে জীনগত সমস্যা দেখা যায়।

3.      সঠিক সময়ে সঠিকভাবে অপারেশন করাতে পারলে দেখার সৌন্দর্য, খাওয়া ও কথা বলা সবই ঠিকভাবে করা সম্ভব।

19-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

চিকেন পক্স / জল বসন্ত

জলবসন্ত বা চিকেনপক্স - হাম ও ডেঙ্গুর মতো এক ধরনের ভাইরাস জনিত রোগ। বাংলাদেশে এর প্রকোপ এবং ভয়াবহতা উন্নত বিশ্বের তুলনায অনেক বেশি। জলবসন্ত গুটি বসন্তের মতো প্রাণসংহারী রোগ না হলেও রোগটি নিয়ে জনমনে নানা ধরনের কুসংস্কার ছাড়াও ভীতি রয়েছে। জলবসন্তকে  à¦à¦–ন আর একটি অতি সাধারণ রোগ মনে করা হয় না। অতি সমপ্রতি বাংলাদেশেও এর টিকা পাওয়া যাচ্ছে।

 

চিত্র; ভেরিসেলা জোস্টার  à¦­à¦¾à¦‡à¦°à¦¾à¦¸

 

আমাদের দেশে শীতের শুরুতে এর প্রকোপ বেশি হলেও সব ঋতুতেই জল বসন্তের রোগী কম-বেশি দেখা যায়। জলবসন্ত হয়  ভেরিসেলা জোস্টার  à¦¨à¦¾à¦®à§‡à¦° ভাইরাস দ্বারা, যা আক্রান্ত রোগীর স্নায়ুতন্ত্রের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় দীর্ঘদিন ঘাপটি মেরে বসে তাকতে পারে। পরবর্তী সময়ে যখন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়( বৃদ্ধ বয়সে, এইডস আক্রান্ত হলে এবং অন্যান্য কারণে) তখন নতুনরূপে ফিরে আসে।।

যে ভাবে প্রকাশ পায়:

জ্বর অথবা, শরীর ব্যথা এসব উপসর্গের মাধ্যমে অন্যান্ন ভাইরাস রোগের মতোই শুরু হয় এ রোগ। একদিন পর গায়ে অসংখ্য ছোট ছোট ফোসকার মতো  ওঠে। ফোসকাগুলো বেশ চুলকায়। চার-পাঁচদিন পর ফোসকাগুলো ফেটে যায়। এ সময়ের মধ্যে সেকেন্ডারী ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।

কিভাবে ছড়ায়:

এটি একটি ছোঁয়াচে  রোগ। জলবসন্ত সাধারণত রোগীর একেবারে সংস্পর্শে এলে তার কফ, শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে নির্গত হওয়া জীবানু অথবা বসন্তের কারণে সৃষ্ট ক্ষতের নিবিড় সংস্পর্শে রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।

কখন ছড়ায়:

আক্রান্ত ব্যক্তি ফুসকা ওঠার পর প্রথম দুদিন বেশি জীবাণু ছড়াতে পারে। তবে প্রথম পাঁচ দিন সুস্থ ব্যক্তি রোগীর সংস্পর্শে  à¦à¦²à§‡ আক্রান্ত হতে পারে। ছয় দিন পর থেকে সে ভয় আর থাকে না। এ কারণে আক্রান্ত শিশুকে প্রথম পাঁচ দিন স্কুলে যেতে দিতে নেই, এমনকি অন্যান্য শিশু থেকে আলাদা করে রাখাই উত্তম। শিশুর একবার  এ রোগ হলে পরবর্তিতে তার এই রোগের প্রতিরোধ  ক্ষমতা জন্মায় এবং পরবর্তী সময়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা  খুবই কম।

অনেকের ধারনণা, পক্স হলেই দ্বিতীয়বার হওয়ার  সম্ভয়াবনা নেই।  এ ধথারণাটিও ঠিক নয়। বরং হারপিস রোগীর সংস্পর্শে এলে, তাদের পুষ্টিহীনতা, এইডস ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেলে একাধিকবার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

যেসব জটিলতা দেখা যায়:

ক. নিউমোনিয়া :

মেরিকায় এক পরিসংখানে দেখানো হয়, জলবসন্ত আক্রান্তদের নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিশ। দেখা গেছে, এক বছরের কম বয়সী শিশু এবং বয়োবৃদ্ধদের মৃত্যুহার বেশি। জলবসন্ত থেকে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হার এক বছরের কম বয়সের প্রতি একলাখেআটজন, এক থেকে চৌদ্দ বছর বয়সের প্রতি এক লাখে দুজন, বয়স্কদের বেলায় লাখে ২৫ জন । এইডস আক্রান্তদের এই চিত্র খুবই মারাত্মক। এইডস রোগীদের প্রায় ৫০ শতাংশ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং মৃত্যুর হার অনেক বেশি।

খ. মায়োকার্ডাইটিস বা হৃদরোগ:

জলবসন্তে আক্রান্তদের মায়োকার্ডাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি আছে। তবে এ সংক্রান্ত কোনো পরিসংখ্যান আমাদের জানা নেই।

গ. এনকেফালাইটিস বা মস্তিস্কের ইনফেকশন: এটি একটি জটিল সমস্যা। আক্রান্ত শিশুদের বেশিরভাগ পরিণতি মৃত্যু। তবে জলবসন্ত থেকে এনকেফালাইটিস আক্রান্ত হওয়ার হার খুব কম।

 

ভ্যাক্সিন :

এই ভ্যাক্সিন অনেক ক্ষেত্রেই রোগ হওয়া থেকে এবং রোগ সৃষ্ট জটিলতা থেকে রক্ষা করে এবং পরবর্তিতে  পুনরায় হওয়ার ঝুকি কমায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভ্যাক্সিন নেবার পরও রোগ হলেও তা খুবই সামান্য ধরনের হয় এবং জটিলতা দেখা দেয় না । তাদের ক্ষেত্রে অল্প জ্বর হয়, চামড়া ফোস্কা কম  পড়ে। বাংলাদেশে বেসরকারীভাবে এই টিকা    ভ্যারিল রিস্ক  নামে পাওয়া যায়।

ডোজ : বাচ্চাদের ১ বার ।  à§§à§ª বছরের উপর থেকে বড়দের  ১-২ মাস পার্থক্যে ২ ডোজ।

ভ্যাক্সিন কিভাবে কাজ করে ?

১২ মাস বয়সের উপরের বাচ্চা ও শিশুদের দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে চিকেনপক্স ভাইরাসটিকেই দূর্বল করে শরীরে প্রবেশ করানো হয় এবং দেহে মৃদু রোগ সৃষ্টি করা হয়,যা পরবর্তিতে রোগ  à¦ªà§à¦°à¦¤à¦¿à¦°à§‹à¦§ ক্ষমতা  গড়ে তুলতে সাহায্য করে। বাহুর উপরীংশে চামগড়ার নিচে দিতে হয। কখনই শিরায় দেয়া যাবে না।

কাদের নেয়া উচিত :

-          ১ বছরের বেশী বয়সের সকল শিশু, বাচ্চা

-          যারা আগে টিকা নেননি এমন বয়স্ক বাচ্চা বা সাবালক ব্যক্তি

-          যারা স্কুল, হাসপাতাল, বেবি কেয়ার ও ডে কেয়ার সেন্টারে কাজ করেন

যারা নিতে পারবেন না :

-          যদি কারও এই ভ্যাক্সিনে বা  ভ্যাক্সিনে ব্যবহৃত ঔষধে প্রচন্ড এলার্জি থাকে।

-          গর্ভবর্তী মহিলা অথবা যারা ১ মাসের মধ্যে গর্ভধারণে আগ্রহী

-          ক্যান্সার, এইডস্‌ বা কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকারী কোন রাগে ভুগছেন।

-          প্রচন্ড জ্বর এবং মারাত্মক কোন অসুখে অসুস্থ।

-          গত ১ মাসে MMR  à¦ªà§‹à¦²à¦¿à¦“ ইত্যাদি লাইভ ভ্যাক্সিন নিয়ে থাকলে ।

টিকা নেবার পূর্বে :নিচের সমস্যাগুলি ডাক্তার/নার্সকে বলুন ।

-          অসুস্থ, জ্বর।

-          কোন টিকায় মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকলে।

-          কোন টিকায় মারাত্মক এলার্জি হযে থাকলে।

-          গত ১ মাসে কোন  লাইভ টিকা নিযে থাকলে।

-          গর্ভবর্তী হলে।

টিকার বিরুপ প্রতিক্রিয়াঃ

সাধারণভাবে কার্যকর এবং নিরাপদ। বিরুপ প্রতিক্রিয়া একেরাবেরই বিরল, তবু যা হতে পারে তা হল-

-          অতি মাত্রায় জ্বর, লাল দাগ, ক্লান্তি বা অবসাদ।

-          সর্দি বা ঠান্ডা, কাশি, চোখ ফোলা, গ্রন্থির প্রদাহ।

-          ইনজেকশনের স্থানে ব্যাথা, ফোলা ও লাল

এক্ষেত্রে করণীয় :

সাধারণতঃ  এই  সকল সমস্যা ২-৩ দিনেই কেটে যায়। এ ক্ষেত্রে-

-          ইনজেকনের স্থানে ঠান্ডা ভেজা কাপড় দিয় চাপ দেবেন।

-          প্রচুর পরিমানে তরল খাবার খাবেন।

 

যা মনে রাখা প্রয়োজন:

  1. জলবসন্ত বা চিকেনপক্স হাম ও ডেঙ্গুর মত

19-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

ব্রংকিয়োলাইটিস

 

নিউমোনিয়ার মতো ব্রংকিয়োলাইটিস শিশুদের একটি সাধারণ রোগ। এ-রোগে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ ঘটে, যার ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হতে পারে। সময় বিশেষে প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট হতে পারে। সাধারণত দুই বছরের কম-বয়সী শিশুরা এ-রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। শীতকাল ও বসন্ত কালের শুরুতে এ- রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। ছেলেদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে এ-রোগ বেশি দেখা যায়।

কারণঃ

সাধারণত ভাইরাসের মাধ্যমে এই রোগ হয়ে থাকে। রেসপিরেটরী সিনসিটিয়াল ভাইরাস (RSV) এ- রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। তাছাড়া, এডেনো ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, রাইনো ভাইরাস ও এন্টারো ভাইরাস এ-রোগের কারণ হতে পারে। যে-মায়েরা ধুমপান করে তাদেও বাচ্চাদের মধ্যে এ-রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি

দেখা গেছে।

 

লক্ষণ

এ-রোগে আক্রান্ত হলে বাচ্চাদের সাধারণত সর্দি- কাশি, হাঁচি, জ্বর, ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়। তাছাড়া, কমবেশি শ্বাসকষ্ট হবে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শব্দ হতে পারে। এই সময় শিশুদের খেতে অসুবিধা হতে পারে। এ-রোগ হলে শিশুকে তরলজাতীয় খাবার বেশি দিতে হয় এবং জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল দিতে হবে।

কখন ডাক্তারের কাছে নিতে হবেঃ

শিশুর শ্বাসকষ্ট যদি বেড়ে যায়

শিশুর যদি বমি হয়

তরলজাতীয় খাবার খেতে নাপারে

শিশুর ত্বক,বিশেষকরে ঠোট,নাক যদি নীলচে হয়,

শিশুর যদি  হার্টের জন্মগত কোনো সমস্যা থাকে,

 

মা-র জন্য কিছু উপদেশঃ

শিশুকে আরামপ্রদ পরিবেশে ঢিলে-ঢালা পোশাকে রাখতে হবে;

তরল খাবার পরিমাণমত দিতে হবে, যাতে পানিশূন্যতা না হয়;

বুকের দুধ নিয়মিত খাওয়াতে হবে;

কিছুক্ষণ পরপর শ্বাস-প্রশ্বাস ও শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

 

হাসপাতালে চিকিৎসা

এ-রোগের জন্য শিশুরা যেধরনের চিকিৎসা হাসপাতালে বা ¯^v¯’¨‡K‡›`ª পেয়ে থাকে তা হলো:

·        শিশুকে অক্সিজেন দেওয়া হয়,

·        ঠান্ডা ঘরে রাখা হয়, যাতে পানিশূন্যতা দেখা না দেয়।

·        মাথা ও বুক বালিশের উপর একটু উঁচু করে রাখা হয়, যাতে ঘাড়     ও গলার অবস্থান শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য সহায়ক হয়।

·        কোনো কোনো সময় শিরায় স্যালাইনজাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়।

·        সাধারণত কোনো এন্টিবায়োটিকের দরকার হয় না। কিন্তু সঙ্গে ব্যাকটেরিয়াজনিত

·        সংμমণ থাকলে এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয়।

·        এ-রোগের সাথে জন্মগত হৃদরোগ থাকলে এন্টিভাইরাল অর্থাৎ ভাইরাস ধ্বংসকারী ওষধু দেওয়া হয়।

·        সাধারণত ব্রংকোডাইলেটরজাতীয় ওষুধ, যেমন সালবিউটামল দেওয়া হয়।

·        করটিকোস্টারয়েড দিয়ে এ-রোগের চিকিৎসার বিষয়টি নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে।

¯^v¯’¨ সংলাপ অগ্রহায়ণ ১৪১৩

 

 

19-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

মায়ের দুধ এবং শিশুর বিকাশ

 

মায়ের দুধ নবজাতকের জন্য একটি আদর্শ খাবার। শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে-ওঠা, মানসিক বিকাশ ও সুস্থতা নিশ্চিত করতে জন্মের পর থেকে প্রথম ৬ মাস শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানোর গুরুত্ব অপরিসীম। একটি শিশুর বৃদ্ধি বলতে বুঝায় বয়সের সাথে সাথে তার ওজন, উচ্চতা, মাথার মাপ, ইত্যাদিও পরিবর্তন। মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থাতেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়। আর বিকাশ হলো একটি শিশুর বয়সের সাথে সাথে ক্রমান্বয়ে তার কর্মক্ষমতা, বুদ্ধি ও আচরণের পরিবর্তন। যেমন শিশুর ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ বয়স হলে সে মাকে কিংবা অন্য লোককে দেখে হাসে (social smile), ৩ মাস বয়সে তার ঘাড় শক্ত হয়, ইত্যাদি।

শিশুর বিকাশের মূল অংশ হলো মস্তিস্ক (brain)| মস্তিস্ক গঠিত হয় অসংখ্য স্নায়ুকোষ (neuron) এবং এগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সংযোগের মাধ্যমে। শিশুর মস্তিস্কে যতবেশি সংযোগ তৈরি হবে সে ততবেশি মেধাবী এবং সামাজিক ও মানবিক গুণসম্পন মানষু হিসেবে গড়ে উঠবে। এই সংযোগ বাড়ানোর উৎকষ্টৃ সময় হচ্ছে শিশুর শৈশব (০-৫ বছর)। পরিবারের সবার মধ্যে আনন্দঘন পরিবেশে সযতে ড়ব বেড়ে-ওঠা একটি শিশু ভবিষ্যতে সুনাগরিক হিসেবে চিহ্নিত হবে।

 

বুকের দুধ কিভাবে শিশুর বিকাশে

সহায়তা করে

বুকের দুধে এমন বিশেষ কিছু উপাদান রয়েছে যা  মসিত্মষ্কে সড়বায়ুকোষ এবং এগুলোর মধ্যকার সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করে। Decosahexaenoic acid বুকের দুধে বেশি পরিমাণে থাকে। এটি সড়বায়ুকোষের আবরণ তৈরিতে কাজে লাগে, যা

জীবনের প্রম ৩ মাসে অতি দ্রুত সঞ্চিত হয়। এছাড়া, বুকের দুধের choline, taurine এবং অন্যান্য পেপটাইড এবং oligosaccharide উপাদানও স্নায়ুকোষ গঠনে সহায়তা করে। বুকের দুধের কার্যকর আয়রন (লৌহ) কমবয়সী শিশুর

রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে এবং তা শিশুর বুদ্ধি  বিকাশ (cognitive development)-Gi সাথে সরাসরি জড়িত। বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মায়ের কোলে শিশুর অবস্থান, মায়ের স্পর্শ, মায়ের স্নেহময় দৃষ্টি, মৃদু সুরে গান, ইত্যাদি শিশুর মস্তিস্কে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে, যা সন্তান এবং মায়ের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করে। মায়ের কোলে শিশু নিরাপদ বোধ করে, যা বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এই নিরাপত্তার মাধ্যমে শিশু শান্ত স্বভাবের হয় ও পরবর্তী কালে তার আত্মবিশ্বাস জন্মে। বিভিন্ন সমীক্ষায় বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বুকের দুধ-খাওয়া শিশুদের বুদ্ধিমত্তার মাত্রা প্রক্রিয়াজাত দুধ (formula milk)-LvIqv শিশুদের তুলনায় ৩.১৬ গুণ বেশি। এসব সমীক্ষায় আরো দেখা যায়, কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ-করা শিশুদের ক্ষেত্রে এই পার্থক্য আরো বেশি, যার মাত্রা ৫.১৮। যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৩ সালে ২২,৩৯৯ জন শিশুর ওপর পরিচালিত একটি জরিপে যারা ৬ মাস শুধু বুকের দুধ খেয়েছে এবং যারা কখনো বুকের দুধ খায় নি এমনসব শিশুর মধ্যে বিকাশের দিকগুলো তুলনা করা হয়েছে। ফলাফলে দেখা গেছে, যারা কখনো বুকের দুধ খায় নি তাদেও ১৭ শতাংশের কথা বলায় বিলম্ব (expressive language delay), ১০ শতাংশের কথা বুঝতে বিলম্ব (receptive language delay) হচ্ছে এবং ৬ শতাংশ সুক্ষ্ম শারীরিক ক্রীয়া (fine motor skill) এবং ৫ শতাংশের সাধারণ শারীরিক ক্রীয়া (gross motor skill)-msক্রান্ত সমস্যায় ভুগছে। বাংলাদেশে সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, যেসব শিশু প্রথম ৬ মাস শুধু বুকের দুধ খেয়েছে তাদের বিকাশাঙ্ক (development quotient) যারা প্রথম ৬ মাস শুধু বুকের দুধ খায় নি তাদের তুলনায় ১.৪ মাত্রা বেশি।  à¦†à¦¨à§à¦ªà¦¾à¦¤à¦¿à¦• হারে সামাজিক বিকাশ, সুক্ষ্ম চলনক্ষমতা (fine motor adaptive skill) এবং ভাষার বিকাশের ক্ষেত্রেও একই রকম  à¦«à¦²à¦¾à¦«à¦² লক্ষ করা গেছে। এই সমীক্ষাটি একটি গ্রামে ক্ষুদ্র পরিসরে করা হয়েছে। অতএব শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য  à¦œà¦¨à§à¦®à§‡à¦°  à¦ªà¦° থেকে প্রথম ৬ মাস শুধু বুকের দুধ এবং ৬ মাস পর থেকে বুকের দুধের পাশাপাশি অন্যান্য খাবার নিশ্চিত করতে হবে।   à¦¤à¦¾à¦¹à¦²à§‡à¦‡ আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের মানুষ হবে বুদ্ধিদীপ্ত এবং সুনাগরিক।

শিশুর জন্য মায়ের দুধ: সাধারণ ভুল-ভ্রান্তি

শিশু জন্মের পর থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে মায়ের দুধ পান Ki‡em„wói আদিকাল থেকেই এটি একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে: বর্তমান আধুনিক যুগেও মায়ের দুধ বিষয়ে আমাদের সমাজে অনেক ভ্রান্ত ধারণা ও কুসংস্কার বিদ্যমান। অথচ আমাদের মত দরিদ্র দেশে সঠিক নিয়মে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মায়ের দুধ খাওয়ানো সম্ভব হলে লক্ষ লক্ষ শিশু অকাল মৃত্যুর হাত থেকে  রেহাই পেতো এবং অসংখ্য শিশু অপুষ্টিসহ অন্যান্য মারাত্মক অসুস্থতা থেকে রক্ষা পেতো। আমাদের দেশে মায়েরা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর ব্যাপারে যেসব সাধারণ ভুলগুলে করে থাকেন সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি নিচে উল্লেখ

করছি এবং প্রকৃতপক্ষে কী করণীয় সে-সম্পর্কেও আলোকপাত করছি:

১। বুকের দুধ খাওয়ানো কখন শুরু করবেন এ-বিষয়ে মায়েদের মধ্যে নানা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দেখা যায়। এ-বিষয়ে ¯^”Q ধারণা খুব কম ক্ষেত্রেই দেখা যায়। বিশেষ করে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করলে সমস্যাটি আরো তীব্র হয়। সন্তান প্রসব যে-প্রদ্ধতিতেই হোক না কেন, শিশুকে

মায়ের দুধ খাওয়ানো শুরু করতে হবে জন্মের পরপরই। সময়ের হিসেবে অবশ্যই শিশুর বয়স এক ঘণ্টা পূর্ণ হওয়ার আগেই। মনে রাখতে হবে: বুকের দুধ দিতে অপ্রত্যাশিত বিলম্ব শিশুর জন্য অনেক জটিলতা ও সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

২। মায়ের দুধ খাওয়ানো শুরু করার আগে সাধারণত দেখা যায় (বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে) শিশুকে মধু, মিশ্রি, চিনির পানি, গুকোজের শরবত, সাধারণ পানি, ইত্যাদি দেওয়া হয়। এটি শিশুর জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই একটিমাত্র কারণে নবজাতকের শরীরে নানা

ধরনের সংক্রমণ, অত্যধিক বমি, খাবারে অনীহা, ইত্যাদি জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ-ক্ষেত্রে করণীয় হলো: জন্মের পর শিশুকে বুকের দুধ ছাড়া অন্য কিছুই খাওয়ানো যাবে না।

৩। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় শিশুর জন্মের পর মায়ের বুক থেকে অত্যন্ত গাঢ় ও পুষ্টিকর যে শালদুধ নিঃসৃত হয়, সেটি গলিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। অথচ শালদুধের পুষ্টিগুণ ও জীবাণুরোধক

গুণাগুণ সাধারণ দুধের চেয়ে অনেক বেশি এবং এটি নবজাতকের জন্য অত্যাবশ্যকীয় একটি খাবার, এমনকি প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে। এছাড়াও, শালদুধ নিঃশেষ হলে সাধারণ দুধের নিঃসরণ স্বাভাবিক ও পর্যাপ্ত হয়।

৪। বুকের দুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে নিঃসৃত হতে প্রাকৃতিক নিয়মেই ৩-৪ দিন সময় লাগে। এসময় পর্যন্ত যতটুকু বুকের দুধ পাওয়া যায় প্রকৃতপক্ষে শিশুর জন্য সেটুকুই যথেষ্ট। অনেক সময় অধৈর্য হয়ে অনেকেই শিশুকে গুঁড়াদুধ খাওয়ানো শুরম্ন করে দেন, যা অত্যন্ত মারাত্মক একটি ভূল। কোনোমতেই এ-কাজ করতে নেই। এতে শিশুর নানা ধরনের অসুস্থতার পাশাপাশি মায়ের দুধের স্বাভাবিক নিঃসরণ বিস্তারিত

-->

19-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

বাচ্চাদের পেটের ব্যথা

 

            বাচ্চারা প্রায়ই পেটের ব্যথা বলে। হালকা ব্যথা বা মারাত্মক বিভিন্ন ধরনের পেটে ব্যথা হতে পারে। মারাত্মক ব্যথার মধ্যে এপনেডিসাইটিস অন্যতম। এ ছাড়াও কোষ্টকাঠিন্য, ইনফেকশন, ফুড পয়জনিং বা মাসেল স্ট্রেইনিং ইত্যাদি নানা কারণে ব্যাথ্যা হতে পারে। অনেক সময় প্রচন্ড স্ট্রেস বা  প্রেসারেও পেটে ব্যাথা হতে পারে। বাচ্চাদের পেটে ব্যথার জন্য প্রায়ই বাবা মাকে ডাক্তার বা হাসপাতালের ইমার্জেন্সীতে দৌড়াতে হয়। পেটে ব্যথার কারণ প্রায়ই সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। তবে অনেক সময়ই পেটের ব্যথা স্থায়ী হয়, তবে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

কারণসমূহ:

যে সমস্যা থেকে পেটে ব্যথা হতে পারে তা হলো-

১। খাদ্যনালী সম্পর্কীত: কোষ্ট কাঠিন্য, ইরেটেবল বা

২। ইনফেকশন: খাদ্যনালী, কিডনী, প্রস্রাবের থলির ইনফেকশন এমনকি বুকে বা কানের ইনফেকশন থেকেও পেটে ব্যাথ্যা মনে হতে পারে।    

৩। খাদ্য সম্পর্কীত: অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ, ফুড পয়জনিং, এলার্জি জনিত।

৪। সার্জিক্যাল: এপেনডিসাইটিস, খাদ্যনালীর প্যাচ খাওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়া।

৫। অন্যান্য: মাংসে স্ট্রেইন, মাইগ্রেইন, মেয়েদের মাসিকের পূর্বের ব্যাথা, আঘাত জনিত ব্যাথা।

৬। বিষক্রিয়া: বিপদজনক/বিষ জাতীয় দ্রব্য, সাবান পানি ইত্যাদি খেয়ে ফেললে পেটে ব্যাথ্যা হতে পারে।

 

বার বার পেটে ব্যাথা:

            কোন কোন বাচ্চার প্রায়ই কিছুদিন পর পর পেটে ব্যথা হয়- যা বাচ্চার বাবা মাকে চিন্তিত করে। এবং প্রায়ই এসব ক্ষেত্রে কারণ বা শারিরিক সমস্যা পাওয়া যায় না। অনেক ক্ষেত্রেই ব্যপারটি মানসিক। বচ্চারা পেটে ব্যথা অনুভব করে যখনই তারা পারিপার্শ্বিকতা, পরিবেশ বা আশে পাশের মানুষকে পছন্দ করতে পারছে না। এমন কোন বিষয় যেমন- স্কুল, পরীক্ষা বা বন্ধু বান্ধব বা তার কাছে অসনীয় সেই ক্ষেত্রেই বাচ্চা পেটে ব্যথা অনুভব  করতে পারে। তবে সব ক্ষেত্রেই পেটে ব্যথা মানসিক ভাবা ঠিক না। এ  ক্ষেত্রে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

 

গুরুতর পেটে ব্যাথা:

এপেনডিসাইটিস এ এত তীব্র পেটে ব্যথা হয় যে বাচ্চার হাসপাতালে  ভর্তি হয়ে অপারেশন করানো জরুরী হয়ে পড়ে। এপেনডিক্স হল খাদ্যনালীর একটি ছোট বর্ধিত অংশ যার এক মুখ খাদ্যনালীতে অন্যমুখ বন্ধ এর ভেতরের নালীটি কোন কারণে বন্ধ হয়ে ইনফেকশন  হলে এপেনডিসাইটিস হয়। যে কোন বয়সে হতে পারে তবে শিশু অবস্থায় খুবই বিরল। এই ব্যথাটা সাধারণত নাভির  কাছ থেকে শুরু হয়, পরে নিচে নেমে ডান পাশে স্থীর হয়। এ ক্ষেত্রে বাচ্চার পেটে তীব্র ব্যাথা হয় যে পেটে ধরলই ব্যাথা লাগে। কাশি বা হাটা চলাতেও ব্যাথা বাড়ে। জ্বর, বমি, পাতলা পায়খানা, অরুচি থাকতে পারে।

            এ অবস্থায় দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। অপারেশন করে এপেনডিক্স ফেলে দিলে ভাল। কিছু ক্ষেত্রে ঔষধেও ব্যাথা কমে যায়।

রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষা:

অনেক ক্ষেত্রে রোগ এতটাই স্পষ্ট যে, শারিরিক পরীক্ষা যথেষ্ট। কিছু কিছু ল্যাবরেটরী টেস্টের প্রয়োজন হয়। যেমন-

v     রক্তের পরীক্ষা:

v     প্রস্রাব, পায়খানা পরীক্ষা।

v     এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাম।

 

চিকিৎসা:

ব্যথার কারণের উপর নির্ভর করে চিকিৎসা। অনেকক্ষেত্রে বাসায় বিশ্রাম নিয়ে, বেশি করে পানি ও কিছু ঔষধে বাচ্চার পেটে ব্যাথা ভাল হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি ও অপারশেন করা জরুরী হয়ে পড়ে।

 

বাসায় যেভাবে বাচ্চার যত্ন নেবেন:

ব্যাথা কমানোর জন্য সাধারণ পরামর্শ হল:

v     পর্যাপ্ত বিশ্রাম: প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ ঠান্ডা খাবার, পানি, জুস। জোর করে বাচ্চাকে সব কিছু খাওয়াবেন না।

v     ভাত, কলা, রুটি, টোস্ট ইত্যাদি খেতে উৎসাহিত করুন।

v     পেটে হালকা গরম পানির বোতল বা ব্যাগ রাখুন বা হালকা গরম পানিতে বাচ্চাকে গোসল দেয়ান।

v     প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ দিন। প্রয়োজনে বমির ঔষধ দিতে পারেন।

 

যে অবস্থায় জরুরীভাবে ডাক্তারের কাছে/ হাসপাতালে নিতে হবে:

v     প্রচন্ড ব্যাথা, দীর্ঘ স্থায়ী ব্যথা।

v     জ্বর, কাপুনিসহ ব্যথা।

v     ব্যথা যদি স্থান পরিবর্তন করে।

v     বাচ্চা যদি ফ্যাকাশে হয়ে যায়, অজ্ঞান হয়ে যায়, প্রচন্ড ঘামে।

v     ২৪ ঘন্টার বেশি সময় ধরে প্রচন্ড বমি হয়।

v     খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ বন্ধ করে দেয়।

v     বমি বা প্রস্রাব বা পায়খানার সাথে রক্ত যায়।

v     প্রস্রাব বা পায়খানা বন্ধ হয়ে যায় বা দিনে ৪ বারের কম প্রস্রাব করে।

v     ব্যথার সাথে চামড়ায় লাল ছোপ দেখা যায়।

 

যা অবশ্যই মনে রাখতে হবে:

v     বাচ্চাদের পেটের ব্যাথা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিছুক্ষণ পর কোন বিশেষ চিকিৎসা ছাড়া এমনিতেই ভাল হয়ে যায়।

v     ব্যাথার সাথে অন্যান্য বিপদজনক সমস্যা থাকলে দ্রুত ডাক্তারের শরনাপন্ন হোন।

v     এপনডিসাইটিস এবং খাদ্যনালীর প্যাচ খাওয়া বা বন্ধ হওয়া হল খুবই মারাত্মক ধরনের পেটে ব্যাথার কারণ, সে ক্ষেত্রে অপারেশন করার প্রয়োজন  à¦¹à¦¤à§‡ পারে।

 

 

 

19-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

 

ধাতুভাঙা বা যোনিপথের নিঃসরণ

 

ধাতুভাঙা বা যোনিপথের নানা ধরনের নিঃসরণ বাংলাদেশসহ পৃথিবীর স্বল্পোন্নত দেশের মহিলাদেও একটি সাধারণ স্বাস্থ্য mgm¨v| বাংলাদেশে শতকরা ৯০ ভাগ মহিলারই এই সমস্যা রয়েছে। যদিও এটি একটি সাধারণ সমস্যা, অনেক সময় জটিল রোগের উপসর্গ হিসেবেও এটি দেখা দিতে পারে। যোনিপথে অনেক ধরনের নিঃসরণ হতে পারে।

তবে, এগুলোকে দুই শ্রেণীতে ভাগ করা যায়:

 (১) স্বাভাবিক বা ফিজিওলজিক্যাল নিঃসরণ এবং

(২) অস্বাভাবিক বা প্যাথলজিক্যাল নিঃসরণ।

স্বাভাবিক বা ফিজিওলজিক্যাল নিঃসরণ

নিচে বর্ণিত স্থান থেকে যে মিশ্রিত নিঃসরণ হয় তাকে স্বাভাবিক নিঃসরণ হিসেবে গণ্য করা হয়:

যোনিমুখের আশেপাশে অবস্থিত বার্থোলিন, সিবাসিয়াস, সোয়েট (ঘর্ম), এপোক্রাইন,

ইত্যাদি নামের কতগুলো গ্রন্থি থেকে।

যোনিপথ থেকে জরায়ুমুখ এবং জরায়ু থেকে

এসব নিঃসরণের পরিমাণ সাধারণত এমন হয় যে, তা যোনিপথকেই শুধু ভেজা রাখে এবং কাপড়ে কোনো দাগ পড়ে না। কোনো কোনো সময় একটু বেশি হলেও তাকে স্বাভাবিক নিঃসরণ বলেই ধরে নেওয়া হয়।

ঋতুস্রাবের আগে ও গর্ভকালীন সময়ে নিঃসরণ স্বাভাবিক নিয়মেই বেশি হতে পারে।

 

অস্বাভাবিক বা প্যাথলজিক্যাল নিঃসরণঃ

কারণ চিহ্নিত করে চিকিৎসাবিজ্ঞানে অস্বাভাবিক নিঃসরণকে নিম্নোক্ত তিন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে:

 

ক) লিকোরিয়াজনিত নিঃসরণ

যখন স্বাভাবিক নিঃসরণের পরিমাণ অতিরিক্ত হয়, তখন তাকে লিকোরিয়া বলা হয় এবং এটি অস্বাভাবিক শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত হয়। অনেক সময় রোগী বলে থাকে: মাড়ের মত ঘন ধাতু বের হয় এবং শুকিয়ে গেলে কাপড়ে বাদামী রঙের দাগ পড়ে। এ ধরনের ধাতু ভাঙ্গার কিছু কারণ নিচে বণির্ত হলো:

১। সন্তান প্রসবের আগে অনেক ক্ষেত্রে যোনিপথে পিচ্ছিল পদাথ © বের হতে থাকে। এতে ভয়ের কিছু নেই।

২। গর্ভকালীন সময়ে প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল দিয়ে মায়ের হরমোন বাচ্চার শরীরে আসার কারণে মেয়ে শিশুর নিঃস্বরন হতে পারে। সাধারণত ১ থেকে ৫ দিন এই নিঃসরণ চলতে থাকে। তবে, কারো কারো ক্ষেত্রে ১০ দিন পর্যন্ত এ-অবস্থা চলতে পারে এবং এর পর নিঃসরণ এমনিতেই বন্ধ হয়ে যায়।

৩। বয়ঃসদ্ধিকালে সাধারণত প্রথম ঋতুস্রাব বা মাসিক শুরু হবার দুতিন বছর আগে ও বেশি পরিমাণে ধাতু ভাঙতে পারে। এটি ¯^vfvweK নিয়মে ঠিক হয়ে যায়।

৪। অনেক সময় অসুস্থ্থ শরীর, দুঃশ্চিন্তা এবং মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণেও অস্বাভাবিক মাত্রায় নিঃসরণ হতে দেখা যায়।

৫। যারা বসে কাজ করেন কিংবা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করেন, তাদের ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটতে পারে।

৬। যোনিপথে একধরনের অসুখের কারণে অস্বাভাবিক নিঃসরণ হতে পারে। এ-রোগে যোনিপথ দানা-দানা অনুভূত হয় এবং লাল হয়ে যায়। এসময়ে প্রচুর ধাতু ভাঙে।

৭। জন্মনিয়ন্ত্রনের জন্য বড়ি খেলেও অনেক সময়

A¯^vfvweK নিঃসরণ হতে পারে।

৮। কারো ডায়াবেটিস থাকলেও অস্বাভাবিক নিঃসরণ হতে দেখা যায়।

 

খ) প্রদাহজনিত নিঃসরণ

যৌনাঙ্গে প্রদাহজনিত নিঃসরণে অনেকসময় পুঁজ মিশ্রিত থাকে বা সবটাই পুঁজের মত দেখা যায়। অনেক সময় একে ঘিয়া বা সবুজ রঙেরও মনে হয়। নিম্নোক্ত কারণে এধরনের নিঃসরণ হয়ে থাকে:

১। ভালভোভ্যাজাইনাইটিস,

২। গনোরিয়া

৩। ছত্রাক কিংবা অন্য কোনো জীবাণুজনিত রোগের কারণে অস্বাভাবিক নিঃসরণ হতে পারে।

(ছত্রাক বা ক্যানডিডিয়াসিস রোগের সংক্রমণ ঘটলে রোগী বলে থাকে তার ঘন দইয়ের মতো ধাতু ভাঙে এবং মাসিকের আগে বেশি হয়। যোনিপথের চারদিকে প্রচুর চুল্কানি দেখা দেয়) ৪। ট্রাইকোমোনিয়াসিস রোগের আক্রমণেও এমনটি হয়। এ-রোগে নিঃসরণ ফেনাযুক্ত হয়, সবুজ রঙের হয়ে থাকে এবং মাসিকের পরপর বেশি হয়। এক্ষেত্রেও যোনিপথের চারদিকে চুলকানি দেখা দেয়।

৫। সার্ভিসাইটিস মানে জরায়ু মুখে কোনো ধরনের সংক্রমণ। এর কারণেও সাদা-সাদা স্রাব হয়।

৬। জরায়ুর ভিতরের আবরণের নাম এন্ডোমেট্রিয়াম। এখানে কোনো সংক্রমণ দেখা দিলে তাকে এন্ডোমেট্রাইটিস রোগ বলা হয়। এধরনের সংক্রমণের বেলায় সাদা-সাদা স্রাব হতে পারে।

৭। যৌনাঙ্গের ভেতর কোথাও ঘষা-খাওয়ার কারণে সংক্রমণ দেখা দিলেও স্রাব হতে পারে।

 

গ) টিউমারজনিত নিঃসরণ

যোনিপথ, জরায়ুমুখ বা জরায়ুতে কোনো টিউমার হলে প্রথমে সাদা বা ঘিয়া রঙের নিঃসরণ হয় এবং দুর্গন্ধ থাকে না। যখন এতে সংক্রমণ জনিত ঘা হয় তখন নিঃসরণে পুঁজের সাথে রক্ত থাকে এবং দুর্গন্ধযুক্ত হয়। সাধারণত ক্যান্সার হলে এমনটি হয়।

 

পরীক্ষাঃ

সাধারণত রোগীর কাছ থেকে ভালোভাবে সমস্যা সম্পর্কে শুনলে ধারণা করা যায় কী কারণে নিঃসরণ হচ্ছে। এছাড়া, পরীক্ষাগারের ব্যবস্থা থাকলে যোনিপথের নিঃসরণ-এর নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করতে হবে। যদি নিঃসরণ পিচ্ছিল এবং পূজ-মেশানো থাকে, তাহলে ধরে নিতে হবে রোগীর গনোরিয়া বা ক্ল্যামাইডিয়া হয়েছে। নিঃসরণ যদি গাঢ় ফেনাযুক্ত এবং সবজু রঙের হয়, তাহলে ট্রাইকোমোনিয়াসিসের জন্য হয়েছে। যদি দইয়ের মতো হয়, তাহলে ক্যানডিডিয়াসিসের কারণে হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে একেক রোগের জন্য নির্ধারিত চিকিৎসা দেওয়া হয়। যেখানে পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই, সেক্ষেত্রে এমন চিকিৎসা দেওয়া হয় যাতে একসঙ্গে সবগুলো রোগেরই উপশম হয়।

 

প্রতিরোধ

চিকিৎসা বা প্রতিষেধকের চেয়ে প্রতিরোধ সবসময়ই শ্রেয়।

যোনিপথের নিঃসরণের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ মহিলা ধাতুভাঙা/সাদাস্রাব বা লিকোরিয়ার  à¦¶à¦¿à¦•à¦¾à¦°à¥¤  এ-সমস্যা প্র ম মাসিকের দুতিন বছর আগে থেকে দেখা দিতে পারে। এতে ভয় পাবার কিছু †bBGB মর্মে রোগীকে আশ্বসত্ম করতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে এবং সুতি-কাপড় পড়তে হবে। যদি খুব বেশি নিঃসরণ হয়, তাহলে চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে।

 

মাসিকের সময় এখনও আমাদের দেশে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে, রক্ত শোষণের জন্য কাপড়

ব্যবহারের প্রথা রয়েছে। এক্ষেত্রে পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহৃত কাপড় ধুয়ে  à¦†à¦²à¦¨à¦¾à¦° বা খাটের পিছনে অন্ধকারে শুকা

19-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

সালফিনজাইটিস

 

সালফিনজাইটিস হলো ফেলোপিয়ান টিউব অর্থাৎ ডিম্বনালীর প্রদাহ জনিত রোগ। সাধারণত ব্যকটেরিয়া দ্বারা ইনফেকশন হলে বিশেষত যৌনবাহিত রোগের জীবাণু যেমন- গনোরিয়া বা ক্ল্যামাইডিয়া দ্বারা ইনফেকশন হলে এটি হতে পারে। অনেক সময় একে পেলভিক ইনফ্লামেটরী ডিজিজ (সংক্ষেপে PID) ও বলা হয়।                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                         à¦¯à¦¦à¦¿à¦“ এর দ্বারা জরায়ু ও ডিম্বাশয়ের রোগকেও বোঝায়।

      মানব দেহে (স্ত্রী) দুটি ফ্যালোপিয়ান টিউব থাকে। যা জড়ায়ুর ২ পাশে থেকে বের হয়ে ডিম্বাশয় পর্যন্ত বিস্তৃত। দুই পাশে ১টি করে থাকে, যা ডিম্বাশয় থেকে পরিপক্ক ডিম্বক বহন করে, জরায়ুর ভেতরে নিয়ে আসে। সালফিনজাইটিস হলে এই নালীর ভেতরে অতিরিক্ত প্রদাহজনিত তরল বা ক্ষেত্র বিশেষে পুঁজ জমা হয়। ১টি টিউবে ইনফেকশন হলে খুব দ্রুত তা অপর টিউবে ছড়িয়ে পড়ে।

     

মহিলাদের বন্ধাত্বের অন্যতম কারণ হল এই সালফিনজাইটিস। যথাসময়ে দ্রুত চিকিৎসা না নিলে এই ডিম্বনালী স্থায়ীভাবে বন্ধ বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলে ডিম্বাশয় নি:সৃত ডিম্বক জরায়ুরতে প্রবেশ করতে পারে না, নিষিক্ত হতে পারে না। তাই সন্তান ধারন করা সম্ভব হয় না।

 

লক্ষনসমুহ :

ইনফেকশন সামান্য মাত্রায় হলে অনেক ক্ষেত্রেই কোন লক্ষণ প্রকাশ করে না, তবে দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে তা টিউবকে নষ্ট করে দিতে পারে। অথচ রোগী বুঝতেই পারে না। এ ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে যে সব লক্ষণ  দেখা দিতে পারে তা হল-

o       যোনীপথে Aস্বাভাবিক নিঃসরণ (ভিন্ন রং বা গন্ধের)।

o       ২ মাসিকের মধ্যবর্তী সময়ে হালকা রক্তস্রাবের মত।

o       মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা হওয়া

o       ওভুলেশনের সময় ব্যাথা

o       যৌন মিলন কালে ব্যাথা, জহ্বর, তলপেটে কোমরে ব্যাথা।

o       বমি বমি ভাব

o       ঘন ঘন প্রস্রাব

 

এ সব লক্ষণ সাধারণত মাসিকের পরে দেখা দেয়।

 

প্রকার :

২ ধরনের হতে পারে। একিউট ও ক্রনিক।

একিউট সালফিনজাইটিস হলে -

wW¤^bvjx লাল হয়ে ফুলে উঠে,

তরল নিঃসরণ করে।

নালী পথ বন্ধ বা নালীর দেয়াল পর পর লেগে যেতে পারে।

অনেক ক্ষেত্রে পুজ জমতে পারে।

এমনকি নালী ছিড়ে যেতে পারে।

ক্রনিক সালফিনজাইটিস সাধারণত হালকা ধরনের তবে দীর্ঘমেয়াদী হয় এবং প্রায়শই তেমন কোন লক্ষণ দেখা দেয় না। তবে সাধারণত একিউট এটাকের পরেই দেখা দেয়।

কারণ :

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যাকটেরিয়া জীবাণু ঘটিত। শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে যে ব্যাকটেরিয়া সমূহ দায়ী-

o       ক্ল্যামাইডিয়া

o       গনোকক্কাস

o       মাইকোপ্লাসমা

o       স্ট্যাফাইলোকক্কাস

o       স্ট্রেপটোকক্কাস

 

জীবাণুর অনুপ্রবেশ :

ইনফেকশন হতে হলে জীবাণুকে স্ত্রী প্রজনন তন্ত্রে প্রবেশ করতে হবে। বিভিন্ন কারণে এই অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। যেমন-

o       যৌন মিলন (অনিরাপদ)

o       ইন্ট্রা ইউটেরাইন ডিভাইস প্রবেশ

o       এবরশন

o       গর্ভপাত

o       প্রসব

o       এপেনডিসাইটিস

o       পূর্বে যৌনরোগ হযে থাকলে।

 

জটিলতাসমূহ :

 à¦¸à¦ à¦¿à¦• চিকিৎনা না হলে যে যে জটিলতা দেকা দিতে পারে, তা হলো-

o       পুণরায় ইনফেকশন

o       ইনফেকশন পার্শ্ববর্তি অংশে (জরায়ু, ডিম্বাশয়) ছড়িয়ে পড়া

o       পুঁজ জমে যাওয়া (শতকরা ১৫ ভাগ ক্ষেত্রে হয়)

o       যৌন সঙ্গীর দেহে জীবাণু ছড়িয়ে পড়া

o       একটোপিক প্রেগনেন্সি (জরায়ুর ভেতরে না হয়ে পেটে অন্য স্থানে ভ্রুণ বড় হওয়া) এর হার প্রতি ২০জনে ১ জনের।

o       স্থায়ী বন্ধ্যাত্বঃ ১ বার পিআইডি হলে বন্ধ্যাত্বের হাত শতকরা ১৫ ভাগ আর ৩ বার হলে বন্ধ্যাত্ব হবার ঝুঁকি প্রায় ৫০ ভাগ।

 

রোগ নির্ণয় :

o       শারীরিক পরীক্ষা : তলপেটে ব্যাথা, শক্ত চাকা বা বড় লিম্ফ গ্রন্থি।

o        à¦ªà§‡à¦²à¦­à¦¿à¦• পরীক্ষা : যোনী পথের নি:সরণ, স্থানীয় ব্যাথা

o       রক্ত পরীক্ষা : রক্তে শ্বেত কনিকা বৃদ্ধি পেতে পারে।

o       যোনী পথের নি:সরণ পরীক্ষা করা : জীবাণু বের করার জন্য।

o       ল্যাপারোসকোপী : পেটের মধ্যে ফুটো করে ক্যামেরা দিয়ে ডিম্বনালীর অবস্থা দেখা।

 

চিকিৎসা :

রোগের মাত্রা ও অবস্থার উপর নির্ভর করে চিকিৎসা।

১। এন্টিবায়োটিক : শতকরা ৮৫ ভাগ ক্ষেত্রে সঠিক এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে জীবাণু মারা যায়।

২। হাসপাতালে ভর্তি : এ ক্ষেত্রে শিরা পথে ইনজেকশন দেয়ার প্রয়োজন হয়। হাসপাতালে ভর্তি থেকে।

৩। অপারেশন : যদি কোন ভাবেই রোগ নির্মূল না হয় সে ক্ষেত্রে অথবা ভেতরে পুঁজ জমে গেলে নালী ছিড়ে গেলে।

য যা মনে রাখতে হবে :

১। ডিম্বনালী বা ফ্যালোপিয়ান টিউবের প্রদাহ, যা মূলত ব্যকটেরিয়া দ্বারা হয়। তাকে সালফিনজাইটিস বলে।

২। বিস্তারিত

-->

19-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

 

প্রিমেনস্ট্রয়াল সিনড্রোম

 

অধিকাংশ মহিলারা তাদের মাসিক প্রক্কালে কতগুলি শারীরিক ও কিছু মানসিক সমস্যা দেখা দেয়, এদেরকে একত্রে প্রি-মেনস্ট্রয়াল সিনড্রোম বা পি. এম. এস বলে। সাধারণত মাসিক শুরু হলে এ সব সমস্যাও চলে যায়। আবার পরবর্তি মাসিকের  আগে আগে দেখা দেয়। তবে এই সমস্যা একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকমের, হালকা বা মারাত্মক হতে পারে।

 

লক্ষণসমূহঃ

এর লক্ষণ একেক জনের ক্ষেত্রে  একেক রকম। তাছাড়া প্রতিবার প্রত্যেকের ক্ষেত্রে লক্ষণ লক্ষণ নাও দেখা যেতে পারে। যেমনঃ

-         পেট ফাঁপা

-         ব্রণ উঠা

-         উদ্বিগ্নতা

-         অস্বস্তি

-         বিষন্নতা, মন খারাপ (এমনকি আত্মহত্যার চিন্তাও হতে পারে)

-         মনোযোগের সমস্যা

-         ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য

-         দৃঢ়তা ও আত্মপ্রত্যয়ের অভাব

-         যৌন আকাঙ্খা কমে যাওয়া

-         একা একা বোধ করা

-         মাথ্যা ব্যাথা, মাইগ্রেন

-         শরীরের হালকা পানি আসা

-         ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া

-         গরম ও ঘাম বেশি হওয়া

-         শব্দ, আলো বা স্পর্শ বেশি বেশি অনুভব করা।

-         মেজাজ খারাপ থাকা, রাগারাগি করা

-         মানসিক অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন

-         ঘুমের পরিবর্তন, কমে বা বেড়ে যাওয়া

-         স্তন ফুলে যাওয়া, ব্যাথা হওয়া।

 

পি.এম.এস এবং মাসিকঃ

মহিলাদের মাসিক একটি জটিল চক্র, যা হরমোন এর মাত্রার উপর নির্ভর করে এবং এই হরমোন ডিম্বাশয়ে ও মস্তিস্কে তৈরী হয়। ডিম্বাশয় থেকে প্রতি মাসে ১টি (বা একাধিক) ডিম্ব পরিপক্ক হয় এবং নিঃসরন হয়। এ সময় ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, ফলে জড়ায়ুর অভ্যন্তরের আবরণী কলায় কোষ ও রক্তনালী বৃদ্ধি পায়, জড়ায়ুকে গর্ভধারনে উপযোগী করে তোলে। যদি গর্ভধারন না হয়, সে ক্ষেত্রে হরমোনের মাত্রার হঠাৎ হ্রাস পায় এবং জড়ায়ুর অভ্যন্তরে বৃদ্ধি পাওয়া কোষ, আবরণ, রক্তনালী খসে পড়তে থাকে-যাকে মাসিক বা ঋতুস্রাব বলে।

যদিও পিএমএস-এর প্রকৃত কারণ জানা যায়নি, তবে এর কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে যে বিষয় সমুহকে এজন্য দায়ী বলে ধরা হয়। যেমনঃ

1.      মস্তিস্ক এবং হরমোনের প্রভাবঃ আধুনিক গবেষনায় প্রমানিত হয়েছে যে, মস্তিস্কে রাসায়নিক কিছু পরিবর্তন যেমনঃ সেরোস্ট্রেনিন এর সাথে হরমোনের বিক্রিয়ার ফলে পি. এম. এস হয়ে থাকে, যা মাসিকের আগে আগে হয়।

2.     প্রোজেস্টেরন হরমোনঃ প্রোজেস্টরনের মাত্রা মাসিকের আগে সবচেয়ে বেশি তাকে এবং মাত্রা কমে গেলেই মাসিক হয়। একইভাবে পি, এম, এস ও মাসিকের আগে আগে হয় এবং মাসিক শুরু হলে ভাল হয়ে যায়। তাই ভাবা হয় এই প্রোজেস্টেরনই মস্তিস্কে প্রভাব ফেলে এবং পি. এম. এস হয়।

3.     হরমোন সমস্যাঃ

4.     খাদ্যাভাসঃ

5.     স্ট্রেস বা মানসিক চাপঃ

দেখা যায় যে মানসিক চাপ থাকলে পি. এম. এস বেশি হয়, মারাত্মক হয়। তাছাড়া অপারেশন বা কোন দূর্ঘটনার পরও পি. এম. এস বেশি হতে দেখা যায়।

 

প্রি-মেনস্ত্রুয়াল ডিসফোরিক সিনড্রোম (পি.এম.ডি.ডি)

শতকরা ৫ জন ঋতুবতি মহিলা মারাত্মক ধরণের পি. এম. এস এ ভোগেন যার নাম দেয়া হয়েছে পি. এম. ডি. ডি। এটি এত মারাত্মক যে, মহিলা তার স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারে না। একে অনেক সময় এক ধরণের মানসিক রোগ হিসেবেও (ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার) বিবেচনা করা হয়। তবে একে মারাত্মক ধরণের পি. এম. এস হিসেবে ধরাই ভাল কেননা, এটিও মাসিক শুরু হলে ভাল হয়ে যায়।

 

পি. এম. এস রোগ নির্ণয়ঃ

 à¦à¦‡ রোগ নির্ণয়ের জন্য তেমন নির্দিষ্ট কোন টেস্ট নেই, কেননা হরমোনের মাত্রা সাধারণ লিমিটের মধ্যেই থাকে। তাই রোগের ইতিহাস ও লক্ষণ শুনেই রোগ নির্ণয় করা হয়। গড়ে ৩-৪ মাস মাসিকের পূর্ব ও পরের বিভিন্ন সমস্যা ডায়রীতে লিখে রাখলে সহজেই লক্ষণ ও সময়ের মিল পাওয়া যায়, তবে যদি সমস্যাগুলি মাসিকের সময়ও থেকে যায় সে ক্ষেত্রে অন্য রোগের কথা

 à¦šà¦¿à¦¨à§à¦¤à¦¾ করতে হবে।

 

লাইফ স্টাইলের পরিবর্তনঃ

-         নিয়মিত ব্যায়াম-অন্তত সপ্তাহে ৩ দিন। আর মাসিকের আগে প্রতিদিন।

-         ধুমপান বর্জন।

-         ক্যাফেইন জাতীয় খাদ্য ও পানীয় এবং মদ্যপান থেকে দূরে থাকা।

-         যথেষ্ট বিশ্রাম ও ঘুম।

-         মেডিটেশন, হাটা, অন্যান্য খাজে মনোনিবেশ করে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমানো, রিলাক্সেশেন টেকনিক ব্যবহার করা।

 

খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনঃ

গবেষনায় দেখা গেছে, যারা বেশি পরিমাণে চর্বি ও শর্করা জাতীয় খাদ্য যেমনঃ চকোলেট, আইসক্রিম, বিস্কুট বেশি খায়, তাদের পি. এম. এস বেশি হয় এবং তারা এই সময় খাদ্য গ্রহণ বেশি করে। তাই খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন জরুরী।

-   অল্প অল্প করে খাবার খেতে হবে। প্রয়োজনে প্রতি বেলায় বেশি না খেয়ে ৬ বেলায় অল্প অল্প করে খাদ্য গ্রহণ।

-   লবন জাতীয় খাদ্য কম খাওয়া।

-   তাছাড়া ফলমূল, সব্জি, শস্য জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া।

-   বিস্তারিত

-->

19-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

পলিসিসটিক ওভারিয়ান সিনড্রোম

 

 

পলিসিসটিক ওভারিয়ান সিড্রোম হলে মহিলাদের মাসিক অনিয়মিত (কম কম) হয়, সন্তান জন্মদান ক্ষমতা কমে যায়, ডায়বেটিস দেখা দিতে পারে। এর প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায় নি।

ওভারি বা ডিম্বাশয় :

স্বাভাবিক অবস্থায় ওভারি থেকে মাহিলাদের হরমোন ইস্ট্রোজেন প্রচুর পরিমাণে নিঃসৃত হয় এবং সামান্য পরিমাণ পুরুণ হরমোন-টেস্টোস্টেরন ও  সামান্য পরিমাণ গর্ভকালীন হরমোন প্রজেস্টেরন নিঃসৃত হয়। তবে গর্ভকালীন সময়ে এবং ওভুলেশনের পর প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। পলিসিসটিক ওভারিয়ান সিনড্রোমে পুরুষ হরমোনের মাত্রা বেশ বৃদ্ধি পায়।

 

 

কারণ:

এর প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়য়নি। তবে বেশকিছু ক্ষেত্রে বংশ পরম্পরায় এই রোগ হতে দেখা যায়। এছাড়াও মহিলাদের যাদের  ওজন বেশি স্থূলকায় তাদের বেলায় সমস্যা বেশি হতে দেখা যায় এবং আধুনিক কালের গবেষনায় পাওয়া গেছে যে, যাদের ওজন বেশি, সাথে পলিসসটিক ওভারিয়ান সিনড্রোম আছে, তাদের মধ্যে ইনসুলিনের প্রভাব কম অর্থাৎ ডায়বেটিস হবার সম্ভবনা খুব বেশি।

 

লক্ষণ বা সমস্যা:

পলিসিসটিক ওভারিয়ান সিনড্রোম যে সব শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় তা বিস্তারিত

-->

19-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

পেপ টেস্ট

 

জরায়ু মুখের ক্যান্সার আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বে মহিলাদের ক্যান্সার জনিত মৃত্যুর অন্যতম কারণ। আর এই ক্যান্সার খুব প্রাথমিক অবস্থায় ধরতে পারলে ক্যান্সার সম্পূর্ণ নির্মূল করা সম্ভব। জরায়ু মুখের কোষের কোন অস্বাভাবিক পরিবর্তন খুব সহজে একটি সাধারণ পরীক্ষা দ্বারা দ্রুত নির্ণয় করা সম্ভব - যার নাম পেপ টেস্ট।

 

এই পরীক্ষা দ্বারা হাজার হাজার মহিলার জরায়ু মুখের ক্যান্সার প্রাথমিক অবস্থাতেই নির্ণয় করে প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে। ১৮ - ৭০ বছর বয়সী মহিলাদের, যারা কোন না কোন সময় যৌন সক্রীয় ছিল-তাদের নিয়মিত প্রতি ২ বছরে ১ বার করে পেপ টেস্ট করা উচিৎ। জরায়ু মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত অধিকাংশ মহিলাই পেপ টেস্ট করান নি বা কখনও করালেও নিয়মিত করান নাই।

 

জরায়ু মুখের ক্যান্সারঃ

জরায়ু মুখের ক্যান্সার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের (HPV) সংক্রমণের ফলে হয়ে থাকে যা মূলত যৌন মিলনের সময় চামড়া থেকে সরাসরি সংক্রমিত হয়। এই ভাইরাসের সংক্রমণ এতই বেশী যে যৌন সক্রিয় ব্যক্তিদের মাঝে এর উপস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক| গবেষণায় দেখা যায় যে, প্রতি ৫ জন (যৌনভাবে সক্রিয়) মহিলার ৪ জনেরই জীবন কখনও না কখনও HPV দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন। যদিও হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণ কমন, বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই তা স্বাভাবিক ভাবে শরীর থেকে চলে যায়। ১ থেকে ২ বছর সময় লাগতে পারে, এবং এর জন্য কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। কখনও কখনও এই ভাইরাস স্থায়ী ভাবে বসবাস করে এবং জরায়ু মুখের কোষ ধ্বংস করতে থাকে। এই পরিবর্তন যদি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা না যায় ও প্রতিরোধ করা না যায়, সে ক্ষেত্রে জরায়ু মুখে ক্যান্সার হতে পারে।

 

পেপ টেস্টের পদ্ধতিঃ

এটি খুব সহজ একটি পরীক্ষা, গাইলোকলজিস্ট, ডাক্তার এমনকি নার্সও তা করতে পারেন। এই পরীক্ষার সময় স্পেকুলাম নামক ১টি যন্ত্র যোনীপথে প্রবেশ করানো হয় এবং ফলে জরায়ু মুখটি (সার্ভিক্স) স্পষ্ট দেখা যায়। ১টি ছোট পাতলা কাঠি (স্প্যাকুলা) বা ব্রাশের সাহায্যে জড়ায়ু মুখ থেকে ঘা র কিছু কোষ সংগ্রহ করা হয়। কোষগুলিকে ১টি কাঁচের স্লাইড ঘষে তা ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ২ দিনের মধ্যেই রিপোর্ট পাওয়া সম্ভব।

এই পরীক্ষাটি মহিলার জন্য কিছুটা বিব্রতকর, তবে এতে ব্যাথা পাওয়া যায় না। বেশী ব্যথা হলে তা অবশ্যই ডাক্তার বা গাইনি বিশেষজ্ঞকে জানাতে

হবে।

 

পেপ টেস্টে অস্বাভাবিক বা খারাপ রিপোর্টঃ

অস্বাভাবিক রিপোর্ট বলতে সাধারণত হয় হাইগ্রেড (যা বেশী মারাত্মক) বা লো গ্রেড (কম মারাত্মক) অস্বাভাবিকত্ব পাওয়া যায়। অর্থাৎ জরায়ু মুখের কোষগুলি স্বাভাবিক কোষের চেয়ে আলাদা, ব্যতিক্রম। তবে এর মানে ক্যান্সার হয়েছে তা নয়। অনেকের ক্ষেত্রেই অস্বাভাবিক রিপোর্ট আসলে কিছু দিনের বিরতিতে কয়েক দফা পেপ টেস্ট করা হয়। অনেক ক্ষেতে এমনিতেই ঐ কোষ বা ক্ষতগুলি সেরে যায়। তাই ক্ষত বা অস্বাভাবিকত্বের মাত্রার উপর।

 

 

নির্ভর করে কতদিন বিরতিতে পেপ টেস্ট করতে হবে তা গাইনী বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে।

পরবর্তী পরীক্ষাঃ

যদি হাইগ্রেড বা লোগ্রেড A¯^vfvweKZ¡ পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে দ্রুত গাইনী বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। উনি কলপোস্কপি করে স্থানটি আরও ভালভাবে দেখে সিদ্ধান্ত নিবেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা দিবেন।

 

টিকা নেয়া থাকলেও পেপ টেস্ট জরুরীঃ

প্রতি ২ বছর পর পর পেপ টেস্ট করা জরুরী যদি ভ্যাক্সিন নেয়া থাকে তবুও। কেননা HPV এর ভ্যাক্সিন মূলত সবচেয়ে কমন বা বেশী প্রচলিত ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, কিন্তু সব ধরনের ক্যান্সার বা ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে পারে না।

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

1.      ১৮ - ৭০ বসরের সকল মহিলা সবাইকে প্রতি ২ বছরে ১ বার প্যাপ টেস্ট করা জরুরী ।

2.     পেপ টেস্ট এ অস্বাভাবিকত্ব মানেই ক্যান্সার নয়। তাই গাইনী বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

 

 

19-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

 

মেনোরেজিয়া বা অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ

 

 à¦‹à¦¤à§à¦¸à§à¦°à¦¾à¦¬ বা মাসিকের সময় অতিরিক্ত পরিমাণে রক্ত গেলে অথবা সাতদিনের বেশি সময় ধরে রক্তস্রাব হলে তাকে একটি স্বাস্থ্য সমস্যা বলে গণ্য করা হয়। এই স্বাস্থ্য-mgm¨v‡K ইংরেজিতে মেনোরেজিয়া বলা হয়। এ ধরনের মাসিক-সংক্রান্ত সমস্যা কিশোরীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। শতকরা বিশভাগ ক্ষেত্রে কিশোরীদের মধ্যে বয়ঃসন্ধিকালে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

 

মেনোরেজিয়ার কারণ

প্রথম মাসিক হওয়ার দুই বছর পর্যন্ত মস্তিস্কে অবস্থিত হাইপোথ্যালামাস, পিটুইটারি গ্রন্থি এবং wW¤^vk‡qi মধ্যে যে-সম্পর্ক থাকে তা পরিণত হয় না। ফলে, অনেক ক্ষেত্রেই wW¤^vYy না-ফুটেই অনিয়মিতভাবে মাসিক হয় এবং অতিরিক্ত রক্তস্রাব হয়। রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় এবং থাইরয়েড গ্ল্যান্ডে সমস্যা থাকলেও মেনোরেজিয়া দেখা দেয়।

 

 à¦‰à¦ªà¦¸à¦—

·        মাসিকের সময় প্রচুর পরিমাণে রক্ত যেতে পারে

·        সাত দিনের বেশি রক্তস্রাব চলতে পারে

·        মাসিকের আগে বা পরে অল্প-অল্প রক্ত যেতে পারে

 

 à¦ªà§à¦°à¦¾à¦¥à¦®à¦¿à¦• চিকিৎসা

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত কিশোরীকে মাসিক সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিলে এবং মানসিকভাবে শরীরের এই পরিবর্তনকে গ্রহণ করতে তাকে সাহায্য করলে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এছাড়া, প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিলে, রক্তশূন্যতা

 

 à¦®à§‡à¦¡à¦¿à¦•à§‡à¦² চিকিৎসা

 à¦‰à¦ªà¦°à§‹à¦•à§à¦¤ প্রাথমিক চিকিৎসায় বর্ণিত সহজ পদক্ষেপে সমস্যার সমাধান না-হলে কিছু পরীক্ষা করাতে হবে, যেমন রক্তের পরীক্ষা (বিশেষ করে যেসব পদার্থ দিয়ে রক্ত জমাট বাঁধে সেগুলো ঠিকমত আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা)।

থাইরয়েড-এর কিছু পরীক্ষা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তলপেটের আলট্রাসোনোগ্রাফিরও প্রয়োজন হতে পারে।

এসব পরীক্ষায় যদি কোনো শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ে, তাহলে সে-অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হবে।

 à¦¹à¦°à¦®à§‹à¦¨ চিকিৎসা

থাকলে আয়রন ট্যাবলেট খেলে রোগীর উপকার হয়। আক্রান্ত কিশোরীকে প্রচুর পরিমাণে টাটকা ফল, শাক-সব্জি ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে এবং কম পরিমাণে লবণ, চা ও কফি খেতে পরামর্শ দিতে হবে।

প্রাথমিক চিকিৎসায় যদি সমস্যর সমাধান না-হয় এবং মেডিকেল পরীক্ষা-নিরীক্ষায়ও যদি কোনো সমস্যা ধরা না-পড়ে, তাহলে হরমোন দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। wW¤^vYy না-ফুটেই মাসিক হয় এমন অনেক ক্ষেত্রে প্রজেস্টেরন নামক হরমোনের

 à¦…ভাব থাকে। এ-কারণে বাইরে থেকে প্রজেস্টেরন হরমোন শরীরে গ্রহণ করতে হয়। জম্মনিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত খাবার বড়িতেও এই হরমোন থাকে বলে তা দিয়েও মেনোরেজিয়া রোগীদের চিকিৎসা করা যায়। হরমোন চিকিৎসা সাধারণত মাসিকের প্রথম দিন থেকে শুরু করতে হয় এবং দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত চালিয়ে গেলে মাসিক স্বাভাবিক হয়ে যায়।

যথাসময়ে মেনোরেজিয়ার সঠিক চিকিৎসা না-করালে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। অতএব এ-সমস্যাকে অবহেলার চোখে দেখা উচিত নয়।

19-01-2013 মা ও শিশু স্বাস্থ্য

যোনীপথে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ

 

যোনী পথে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ বলতে সাধারণ মাসিকের রক্তপাত ছাড়া অন্যান্য কোন কারণে রক্তপাতকে বোঝায়। হরমোনের সমস্যা, ইনফেকশন, আঘাত এমনকি ক্যান্সারের কারণেও তা হতে পারে। তাই এ ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।

     নিয়মিত মাসিক রক্তস্রাবের সময় জরায়ুর ভেতরের আবরণী কলা, যা মূলত গর্ভধারনের জন্য ফুলে উঠে ও ঘন হয়, যদি গর্ভধারণে ব্যর্থ হয়, সে ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে খসে পড়ে এবং রক্তপাত হয়। এ ক্ষেত্রে রক্তের বর্ণ উজ্জব­ লাল বাদামী বা কালচে রং এর হতে পারে। সাথে সাথে খসে পড়া আবরনী কলা ও রক্তনালী থাকে। রক্তস্রাব শেষে আবার নতুন করে মাসিক চক্র শুরু হয়, নতুন আবরণী কলা তৈরী হয়।

 

মাসিক চক্র বা পিরিয়ডঃ

মাসিক চক্র ও পিরিয়ড একেক মহিলার ক্ষেত্রে একক ধরনের হয়ে থাকে। কারও কারও ক্ষেত্রে রক্তস্রাব ৩ দিন থেকে ১০ দিনও হতে পারে এবং প্রতি ৩ থেকে ৬ সপ্তাহ অন্তর অন্তর হতে পারে। এ ছাড়াও বয়স, খাদ্যাভাস, মানসিক চাপ, অনুস্থতা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে তা পরিবর্তিত হতে পারে। রক্তপাতের পরিমাণও বিভিন্ন ধরনের হতে পার। সাধারণত ৪-৫০ এম. এল।

     অনেকের মাসিকের সময় তলপেটে মোচড়ানো ব্যাথা হয়। ব্যাথা নাভির নিচে হয় এমনকি কোমরের পিছনে বা পায়ের দিকেও হতে পারে। অনেকের পেট ব্যাথা, ভারী ভারী লাগা, ব্রন হওয়া মানসিকভাবে উদ্বিগ্ন, রগচটাভাব, স্তনে ব্যাথা ইত্যাদি সমস্যাও হয়ে তাকে যা স্বাভাবিক|

 

অনিয়মিত রক্তক্ষরনের কারণঃ

অনেক ক্ষেত্রেই প্রকৃত কারণ সজানা বা বোঝা যায় না। তবে নিম্নোক্ত কারণেও হতে পারে।

-         হরমোন পরিবর্তন।

-         জন্মবিরতিকরণ পিল, ইঞ্জেকশন, আই ইউ ডি ব্যবহার।

-         যোনীপথের বা জরায়ুর ইনফেকশন।

-         জরায়ুতে পলিপ বা ফাইব্রয়েড থাকলে।

 

-         যোনীপথে আঘাত।

-         কিছু কিছু ঔষধ (এন্টিকোয়াগুলেন্ট, এন্টিএপিলেপটিক)

-         রক্তের সমস্যা (ব্লি­à¦¡à¦¿à¦‚ ডিসঅর্ডার)

-         থাইরয়েডের সমস্যা।

 

-         জরায়ু, জরায়ু মুখের ক্যান্সার

 

রোগ নির্ণয়ঃ

অনেক ক্ষেত্রে রোগের ইতিহাস ও শারিরিক পরীক্ষা করেই রোগ বা কারণ নির্ণয় করা যায়। তাছাড়াঃ

-         প্রেগন্যান্সি টেস্ট

-         রক্তের পরীক্ষা

-         জরায়ু মুখের কোষ নিয়ে পরীক্ষা (পেপ টেস্ট)

-         আল্ট্রা-সনোগ্রাফী

-         ডি এন্ড সি

 

চিকিৎসাঃ

মূল কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা। যেমন :

-         এন্টি ইনফ্লামেটরী ঔষধ

-         এন্টি বায়োটিক

-         গর্ভনিরোধক ঔষধ পরিবর্তন

-         হরমোন থেরাপী

-         ফাইব্রয়েড, পলিপ ও ক্যান্সার হলে অপারেশন।

ঘরে ঘরে নিজের করণীয়ঃ

-         পর্যাপ্ত ঘুম, বিশ্রাম, সুষম পুষ্টিকর খাবার

-         নিয়মিত ব্যায়াম

ব্যাথা কমানোর জন্য উপেদশঃ

-         বিশ্রাম, হাঠুভাঙ্গা করে পেটের সাথে চেপে ধরে কাত হয়ে শোয়া

-         তলপেটে গরম সেক, গরম পানির বোতল চেপে ধরা

-         হালকা গরম পানিতে গোসল

-         পাতলা, ঢিলে-ঢালা কাপড় পরিধান

-         নিয়মিত ব্যায়াম - ব্যাথার স্থানে হালকা করে ম্যাসাজ

-         প্যারাসিটাল জাতীয় ব্যাথানাশক (এসপিরিন নয়)

-         ভিটামিন বি-১ ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাড়্য গ্রহণ

 

যা মনে রাখতে হবেঃ

1.      হরমোন পরিবর্তন,জন্মবিরতিকরণ পিল, ইঞ্জেকশন, আই ইউ ডি ব্যবহার,যোনীপথের বা জরায়ুর ইনফেকশন,পলিপ বা ফাইব্রয়েড থাকলে বা যোনীপথে আঘাত ইত্তাদি নানা কারনে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হতে পারে।

2.     মূল কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়। এন্টি ইনফ্লামেটরী ঔষধ, এন্টি বায়োটিক, হরমোন থেরাপী ইত্তাদির মাধমে চিকিৎসা করা হয়।

৩।  এ ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।